গর্ভধারণের সঠিক ও কার্যকর উপায় বলতে গেলে নানা রহস্যে ঘেরা। ফলে গর্ভধারণে সক্ষম নারীও অনেক সময় জটিলতায় ভুগতে পারেন। আবার খাদ্যাভ্যাসসহ কিছু শারীরিক কারণেও বিলম্বিত হতে পারে গর্ভধারণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবার আগে জানতে হবে নিজের শরীরকে। যত্ন নিতে হবে শরীরের। এ ছাড়া কিছু অভ্যাস মেনে চললে গর্ভধারণের জটিলতা অনেকটাই কমে আসতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর নর্থওয়েস্টার্ন মেডিসিনস রিপ্রোডাকটিভ এন্ডোক্রাইনোলজি অ্যান্ড ইনফার্টিলিটি বিভাগের কৃত্রিম প্রজনন শাখার পরিচালক ও ইনফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞ ড. ম্যারি অ্যালেন পাভোনের মতে, গর্ভধারণে আগ্রহী নারীর জন্য সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো নিজের শরীর, বিশেষত ঋতুচক্রকে জানা।
পাভোন বলেন, ‘ঋতুচক্রের বিরতি কত দিনের সেটা সবার আগে জানা দরকার। এতে করে নারী তার যৌন মিলনের সময় নির্দিষ্ট করতে পারবেন ও গর্ভধারণের চেষ্টা চালাতে পারবেন।’
বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট লাইভ সায়েন্সের এক প্রতিবেদনে নারীর গর্ভধারণের সম্ভাবনা বাড়াতে ১০টি সহায়ক কৌশলের কথা বলা হয়েছে। নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য বাংলায় প্রকাশ করা হচ্ছে কৌশলগুলো।
১. ঋতুচক্রের পুনরাবৃত্তির তথ্য সংরক্ষণ
সন্তান গ্রহণে ইচ্ছুক নারীর প্রতি মাসে তার পিরিয়ডের প্রথম দিনটির তারিখ লক্ষ রাখা উচিত। প্রতি মাসেই সমান দিনে পিরিয়ড শুরু হলে তা নিয়মিত বলে ধরে নেয়া হয়। তবে এর হেরফের হলে অনিয়মিত পিরিয়ড হিসেবে গণ্য হয়। দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যালেন্ডারে এ তথ্যের ভিত্তিতে নারীর ওভুলেশন কখন হচ্ছে, তা অনেকটা সঠিকভাবে অনুমান করা যায়। ওভুলেশন হচ্ছে নারীর ডিম্বাশয় থেকে একটি ডিম নিঃসরণ। ডিম্বাণু নির্গত হওয়ার পর সেটি ফেলোপিয়ান টিউবের নিচের দিকে চলে যায়, আর সেখানেই শুক্রাণু কোষ এই ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করে।
ঋতুচক্রের পুরো বিষয়টি হিসাবে রাখতে গ্লোওভুলেশনের মতো বেশ কিছু পিরিয়ড ট্র্যাকার অ্যাপ অনলাইনে পাওয়া যায়। আমেরিকান প্রেগন্যান্সি অ্যাসোসিয়েশনের মতে, নারীর ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু নির্গত হওয়ার ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত কার্যকর থাকে। অন্যদিকে নারী দেহে প্রবেশের পর পুরুষের শুক্রাণু পাঁচ দিন পর্যন্ত কার্যক্ষম থাকতে পারে।
২. ওভুলেশনের দিকে দৃষ্টি রাখা
ইনফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞ ড. ম্যারি অ্যালেন পাভোন বলছেন, ‘সাধারণত পিরিয়ডের দুই সপ্তাহ আগে একজন নারীর ওভুলেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়। অবশ্য যাদের ক্ষেত্রে ঋতুচক্র ব্যাহত হয়, তাদের ওভুলেশনের সময় নির্ণয় করা বেশ কঠিন। তবে সাধারণত পরবর্তী পিরিয়ডের আগের ১২ থেকে ১৬ দিন আগে এটি ঘটতে পারে।’
নেচার জার্নালে ২০১৯ সালে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে দেখা যায়, ঋতুচক্রের দৈর্ঘ্য নারীভেদে আলাদা হতে পারে। সেই সঙ্গে নারীর রজঃশীল থাকার বছরগুলোর বিভিন্ন সময়ে ওভুলেশনের সময় ও দৈর্ঘ্যও বদলে যেতে পারে। এ কারণে ওভুলেশনের সময়কে খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারলে নারীর গর্ভধারণ সহজ হয়। মাসের কোন সময়টি গর্ভধারণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত, সেটি বের করার অনেক উপায় আছে।
ওভুলেশন প্রেডিকশন কিটের সাহায্যে নারীর কখন ওভুলেশন হচ্ছে, সেটা অনুমান করার ঝামেলা কমে যায়। ওষুধের দোকানে বিক্রি হওয়া এ কিটগুলো মূত্রে লিউটেনাইজিং হরমোনের মাত্রা পরীক্ষা করে। প্রতি মাসে ওভুলেশনের সময় এর মাত্রা বৃদ্ধি পায় ও ডিম্বাশয়কে ডিম্বাণু নির্গত করতে প্রস্তুত করে। আমেরিকান প্রেগন্যান্সি অ্যাসোসিয়েশনের মতে, পজিটিভ ফল আসার পরের তিন দিন কোনো দম্পতির যৌন মিলনের মাধ্যমে গর্ভধারণের জন্য সেরা সময়।
ওভুলেশন কখন হবে সেটা বের করার আরেকটি উপায় হচ্ছে সার্ভিক্যাল শ্লেষ্মার দিকে খেয়াল রাখা। এই প্রক্রিয়ায় নারীর যৌনাঙ্গে শ্লেষ্মার পরিমাণ ও ধরন নিয়মিত পরীক্ষা করতে হয়।
মা ও শিশু স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা এনজিও মার্চ অফ ডাইমসের মতে, ওভুলেশনের ঠিক আগে যখন একজন নারী সবচেয়ে সক্রিয় অবস্থায় থাকেন, তখন শ্লেষ্মার পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং পাতলা, স্বচ্ছ ও পিচ্ছিল হয়ে যায়। সার্ভিক্যাল শ্লেষ্মা এভাবে পিচ্ছিল হয়ে শুক্রাণুকে ডিম্বাণুর কাছে পৌঁছাতে সহায়তা করে। ফার্টিলিটি অ্যান্ড স্টেরিলিটি জার্নালে ২০১৩ সালে প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধে বলা হয়েছে, যেসব নারী ছয় মাসে নিয়মিত নিজেদের সার্ভিক্যাল শ্লেষ্মা পরখ করেন তাদের গর্ভধারণের সম্ভাবনা ২.৩ ভাগ বেশি।
ফার্টিলিটি অ্যান্ড স্টেরিলিটি জার্নালের মতে, শরীরের তাপমাত্রা নিরীক্ষণও ওভুলেশন পর্যবেক্ষণের অন্যতম পদ্ধতি। এ ক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে বিছানা ছাড়ার আগে নির্দিষ্ট সময়ে দেহের তাপমাত্রা মাপতে হবে এবং প্রতিদিনের তাপমাত্রার চার্ট করতে হবে। ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগানের হেলথ সিস্টেমের মতে, নারীর ডিম্বাশয় ডিম্বাণু ছাড়ার প্রস্তুতির সময় দেহের তাপমাত্রা হালকা কমে যায়। এ সময় দেহের গড় তাপমাত্রা থাকে ৯৭ থেকে ৯৭.৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটের (৩৬.১ থেকে ৩৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস) মধ্যে। ডিম্বাণু ছেড়ে দেয়ার ২৪ ঘণ্টা পর দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় ও বেশ কয়েক দিন সে অবস্থায় থাকে।
ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগানের হেলথ সিস্টেমের তথ্য অনুযায়ী, ওভুলেশনের পরপর একজন নারীর দেহের সাধারণ তাপমাত্রা ৯৭.৬ থেকে ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৩৬.৪ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস) হতে পারে। তারা বলছে, ওভুলেশনের পর ডিম্বাণু ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা সক্রিয় থাকে।
ওভুলেশনের সময় দেহের মূল তাপমাত্রা খুব কম মাত্রায় পরিবর্তিত হয় বলে ডিজিটাল থার্মোমিটার বা বিশেষ বেজাল থার্মোমিটার ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
৩. ফার্টাইল উইন্ডোর সময় বিকল্প দিনে যৌন মিলন
আমেরিকান সোসাইটি ফর রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিনের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফার্টিলিটি উইন্ডো (ডিম্বাণু নিগর্ত হওয়ার প্রস্তুতি ও নির্গত হওয়ার পরে কার্যকর থাকার সময়) সাধারণত ছয় দিনের। ওভুলেশনের দিন এবং এর আগের পাঁচ দিন। প্রতি মাসে একজন নারী এই সময়টাতেই জন্মদানে সবচেয়ে বেশি সক্ষম বা উর্বর থাকেন।
অনেক নারী গর্ভধারণের সঠিক সময় জানতে ফার্টিলিটি-ট্র্যাকিং অ্যাপ ব্যবহার করেন। তবে বিএমজে সেক্সুয়াল অ্যান্ড রিপ্রোডাকটিভ হেলথে ২০২০ সালে প্রকাশিত এক রিভিউ অনুযায়ী, এই অ্যাপ বা ওয়েবসাইট কতটুকু নিখুঁত সেটা নিয়ে খুব বেশি গবেষণা হয়নি।
অবস্টেট্রিকস অ্যান্ড গায়নোকলজি জার্নালে ২০১৬ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা ৫০টি প্রচলিত ফার্টিলিটি ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ও অ্যাপ পরখ করে দেখেছেন। লাইভ সায়েন্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই অ্যাপ ও সাইটগুলো প্রায়ই উদ্ভট ফল দিচ্ছিল। অনেক ফার্টিলিটি উইন্ডোর দিন-তারিখ একেবারে ভুলভাবে জানাচ্ছিল।
পাভোন বলেন, ‘ফার্টিলিটি উইন্ডোর সময়ে প্রতিদিন যৌন মিলনে অংশ নেয়া দম্পতিদের গর্ভধারণের হারে খুব বেশি পরিবর্তন দেখা যায় না। এই হার ৩৭ শতাংশ। ফার্টিলিটি উইন্ডোর বাইরে অন্য দিনগুলোতে যৌন মিলনে অংশ নেয়াদের ক্ষেত্রে এ হার ৩৩ শতাংশ।
পাভোনের মতে, মাসজুড়ে নিয়মিত যৌন মিলনে অংশ নিলেই বরং গর্ভধারণের সম্ভাবনা বেশি বৃদ্ধি পায়।
গবেষকরা অ্যাপল অ্যাপ স্টোরের শত শত গর্ভধারণ ক্ষমতাসংক্রান্ত অ্যাপ ঘেঁটে দেখেছেন। এসব অ্যাপের তথ্য ২০১৯ সালে প্রকাশিত হয় কানাডার জার্নাল অফ অবস্টেট্রিকস অ্যান্ড গায়নোকলজিতে। অ্যাপগুলোর ৩১টিতে ভুলভ্রান্তির ছড়াছড়ি ছিল। তবে কয়েকটি বেশ কার্যকর। এর মধ্যে সেরা তিনটি অ্যাপ হচ্ছে:
গ্লো.ওভুলেশন অ্যান্ড পিরিয়ড ট্র্যাকার (Glow.Ovulation & Period Tracker)
ফার্টিলিটি ফ্রেন্ড এফএফ অ্যাপ (Fertility Friend FF App)
ক্লু: হেলথ অ্যান্ড পিরিয়ড ট্র্যাকার (Clue: Health & Period Tracker)
গর্ভধারণ নিয়ে প্রচলিত অনেক মিথ রয়েছে। তবে এগুলোর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি পাওয়া বেশ কঠিন। যেমন- অনেকে মনে করেন যৌন মিলনের সময় বিশেষ কোনো পজিশন সন্তান ধারণের সম্ভাবনাকে ব্যাহত করে। তবে এর কোনো প্রমাণ নেই। পাভোন বলেন, যৌন মিলনের পর একজন নারীর নির্দিষ্ট সময় চিৎ হয়ে শুয়ে থাকার সঙ্গে তার গর্ভধারণের সম্ভাবনা বৃদ্ধিরও কোনো সংযোগ নেই।
পাভোন অবশ্য বলেছেন, পানিভিত্তিক কিছু ভ্যাজিনাল লুব্রিকেন্ট পাওয়া যায়, যা শুক্রাণুর সচলতাকে আটকে দিতে পারে। তার পরামর্শ, লুব্রিকেন্ট প্রয়োজন হলে অ্যাস্ট্রোগ্লাইড বা কে-ওয়াই জেলির বদলে প্রি-সিড ব্যবহার করা।
৪. দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
একজন নারীর ওজন তার গর্ভধারণের সামর্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। অতিরিক্ত ওজন বা অনেক কম ওজন গর্ভধারণের সম্ভাবনাকে কমিয়ে দেয়। পাভোন বলছেন, সাধারণ বডি মাস ইনডেক্সের (বিএমআই) একজন নারীর চেয়ে অতিরিক্ত ওজনের নারীর গর্ভধারণে দ্বিগুণের বেশি সময় লাগতে পারে। আর যেসব নারীর ওজন অনেক কম তাদের ক্ষেত্রে চার গুণ সময় লাগতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শরীরে চর্বির পরিমাণ বেশি থাকলে তা অতিরিক্ত এস্ট্রোজেন তৈরি করে। এটি ওভুলেশন প্রক্রিয়া ব্যাহত করে। হিউম্যান রিপ্রোডাকশন জার্নালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে গবেষকদের দাবি, যেসব দম্পতির দুজনই অতিরিক্ত ওজনের এবং যাদের বিএমআই অন্তত ৩৫ (বিএমআই অনুযায়ী ২৫-২৯.৯ পর্যন্ত অতিরিক্ত ওজন ও ৩০ এর বেশি স্থূলকায় বা ওবিস ধরা হয়) তাদের গর্ভধারণের ক্ষেত্রে সাধারণ দম্পতির চেয়ে ৫৫ থেকে ৫৯ শতাংশ পর্যন্ত সময় বেশি লেগেছে।
পিএলওএস ওয়ান জার্নালে ২০২০ সালে প্রকাশিত এক গবেষণা অনুসারে, বিএমআই বৃদ্ধি পেলে নির্দিষ্ট সময়সীমায় নারীর গর্ভধারণের ক্ষমতা কমে আসে। গবেষকরা চীনের সন্তান গ্রহণে ইচ্ছুক ৫০ হাজার দম্পতির ওপর করা এক গবেষণার ডেটা ঘেঁটে এ তথ্য পেয়েছেন।
অ্যান্ড্রোলজিয়া জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুরুষের ওবিসিটি বা স্থূল দেহের জন্য হরমোন উৎপাদনের জন্য নিয়োজিত এন্ডোক্রিন সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং শুক্রাণুর কার্যক্ষমতা ও ঘণত্ব কমে যেতে পারে। এর প্রভাব পড়ে নারীর গর্ভধারণের ওপর।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ উইসকনসিন হসপিটালস অ্যান্ড ক্লিনিকস অথরিটি জানিয়েছে, যেসব নারীর ওজন অনেক কম (বিএমআই ১৮ এর নিচে) তাদের পিরিয়ড অনিয়মিত হতে পারে বা ওভুলেশন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে করে গর্ভধারণের প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।
৫. গর্ভাবস্থার আগে ভিটামিন খাওয়া
যেসব নারী গর্ভধারণের চেষ্টায় আছেন তাদের ভিটামিন খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পাভোন। এতে করে গর্ভাবস্থায় দেহের উপযোগী ভিটামিন তিনি আগে থেকেই চিহ্নিত করতে পারবেন।
পাভোন প্রতিদিন মাল্টিভিটামিন খেতে বলেন। তবে তাতে ন্যূনতম ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক অ্যাসিড থাকতে হবে। এটি এক ধরনের বি-ভিটামিন, যা শিশুর মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ড মজবুত করতে সহায়তা করে।
জন্মের সময় শিশুর কোনো ধরনের ত্রুটি এড়াতে গর্ভধারণের অন্তত এক মাস আগে থেকে নারীদের প্রতিদিন ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক অ্যাসিড গ্রহণ করতে বলে দ্য সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)।
আগে থেকে ফলিক অ্যাসিড খাওয়া শুরু করাটা ভালো। এর কারণ, নিউরাল টিউব যা গর্ভধারণের তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে শিশুর মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডে পরিণত হয়। ওই সময়ে অধিকাংশ নারী বুঝতেও পারেন না যে তিনি গর্ভবতী।
৬. স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া
আমেরিকার দাতব্য স্বাস্থ্য সংস্থা মেয়ো ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভধারণের জন্য নির্দিষ্ট কোনো খাদ্যতালিকা না থাকলেও, স্বাস্থ্যকর খাবার একজন নারীর দেহে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ও আয়রনের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদানে সুষম অবস্থা বজায় রেখে গর্ভধারণে সহায়তা করে। এর অর্থ হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ফল, সবজি, সুষম প্রোটিন, বার্লি-ওটমিল জাতীয় হোল গ্রেইন, দুগ্ধজাত পণ্য ও চর্বিযুক্ত স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।
ফলিক এসিডযুক্ত সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার পাশাপাশি একজন নারী সবুজ শাক-সবজি, ব্রকোলি, ভিটামিন ও মিনারেল যুক্ত রুটি ও সিরিয়াল, বিনস, লেবু জাতীয় ফল ও কমলার রস খেতে পারেন।
মেয়ো ক্লিনিকের মতে, গর্ভধারণের প্রক্রিয়া শুরুর সময় পারদের উচ্চ মাত্রা সমৃদ্ধ মাছ কম খাওয়া উচিত। এর কারণ পারদ গর্ভবতী নারীর রক্ত প্রবাহে মিশে যেতে পারে, যা শিশুর বেড়ে ওঠায় ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। ২০১৯ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি পারদযুক্ত খাদ্য গ্রহণ নারী ও পুরুষ উভয়ের বন্ধ্যাত্ব ডেকে আনতে পারে।
কিছু গবেষণায় গর্ভাবস্থায় নারীদের ক্যাফিন থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গর্ভবতী নারী যদি ২০০ মিলিগ্রাম ক্যাফিন (দুই কাপ কফির কম) পান করেন তাহলে গর্ভের সন্তানের কোনো ঝুঁকি নেই। তবে ২০২০ সালে বিএমজে এভিডেন্স বেজড মেডিসিনের রিভিউ গবেষণায় দেখা যায়, গর্ভবতী নারী বা সন্তান গ্রহণের ইচ্ছুক নারীদের জন্য ক্যাফিনের কোনো নির্দিষ্ট নিরাপদ মাত্রা নেই।
৭. কঠিন বা ভারী ব্যায়াম কমানো
২০২০ সালের মার্চে হিউম্যান রিপ্রোডাকশন জার্নালের প্রকাশিত এক নিবন্ধে বিজ্ঞানীরা জানান, প্রতিদিনের শারীরিক সক্রিয়তা একজন নারীর দেহকে গর্ভধারণ ও সন্তান জন্মদানের জন্য প্রস্তুত করে। এতে করে তাদের জন্মদান ক্ষমতা সংক্রান্ত সমস্যাও কমিয়ে দেয়।
তবে লাইভ সায়েন্সের প্রতিবেদন অনুসারে, যে সব নারী অতিরিক্ত ব্যায়াম করেন বা নিয়মিত ভারী কাজ করেন তাদের ওভুলেশন প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে।
যে সব নারী ভারী ব্যায়াম করেন তাদের রজঃচক্রে ব্যাঘাত ঘটতে দেখেছেন চিকিৎসকেরা। লাইভসায়েন্সকে পাভোন বলেন, নারী গর্ভধারণ করতে চাইলে ব্যায়ামের পরিমাণ কমাতে হবে।
৮. বয়স বাড়লে কমে উর্বরতা
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে নারীর সন্তান জন্মদান ক্ষমতা বা উর্বরতা কমতে থাকে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বদলাতে থাকা ডিম্বাণু ও মান কমে যাওয়াই এর মূল কারণ। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউটেরিন ফাইব্রয়েডস, ফেলোপিয়ান টিউবে ব্লক ও এন্ডোমেট্রিওসিসের মতো অন্যান্য স্বাস্থ্য ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়। যে কারণে উর্বরতা কমে যেতে পারে।
পাভোন বলেন, ‘৩০ বছরের পর নারীদের জন্মদান ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। ৩৭ বছরের পর তা আরও কমে যায় এবং ৪০ এর পর তা অনেকখানি হ্রাস পায়।‘
হ্রাস পাওয়ার অর্থ গর্ভধারণে বেশি সময় লাগতে পারে।
৯. ধূমপান ও মদ্যপানে ক্ষতি
ধূমপানের কারণে নারী ও পুরুষ উভয়েরই বন্ধ্যাত্বের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আমেরিকান সোসাইটি অফ রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিনের মতে, সিগারেটের নিকোটিন ও কার্বন মনোক্সাইডের মতো রাসায়নিক নারীর ডিম্বাণু নষ্ট হওয়ার হারকে ত্বরান্বিত করে।
মেয়ো ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধূমপান নারীর ডিম্বাশয়ের জীর্ণতা তৈরি করে এবং দ্রুত এর ডিম্বাণুকে নিঃশেষ করে দেয়। ২০২০ সালে রিপ্রোডাকটিভ বায়োলজি অ্যান্ড এন্ডক্রাইনোলজি জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, জন্মদান ক্ষমতা হ্রাসের সঙ্গে ধূমপানের যোগাযোগ রয়েছে।
বিএমজে জার্নালে ২০০৯ সালে প্রকাশিত এক গবেষণা বলছে, নারীদের সেকেন্ড হ্যান্ড স্মোক (পরোক্ষ ধূমপান) থেকেও দূরে থাকা উচিত। পরোক্ষ ধূমপানও গর্ভধারণের ক্ষমতায় প্রভাব ফেলতে পারে। গর্ভাবস্থা বা গর্ভ ধারণ প্রক্রিয়ায় থাকার সময় মারিজুয়ানা গ্রহণ থেকেও বিরত থাকা উচিত।
গর্ভধারণের ইচ্ছা থাকলে মদ্যপানে ইস্তফা দেয়াটি নিরাপদ। তবে, ২০০৯ সালে হিউম্যান রিপ্রোডাকশন জার্নালে ১,৭০৮ জন নারীকে নিয়ে ডেনিশ বিজ্ঞানীদের একটি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। এতে বিজ্ঞানীদের দাবি, পাঁচ বছর ধরে চলা তাদের গবেষণায় নিয়মিত মদ্যপান, অত্যাধিক মদ্যপান ও জন্মদানের ক্ষমতার মধ্যে কোনো যোগসূত্র পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, অবস্টেট্রিকস অ্যান্ড গায়নোকলজিতে ২০১৭ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় অর্ধেক নারী গর্ভাবস্থায়, গর্ভধারণের ঠিক আগে বা যখন তারাও জানেন না যে গর্ভধারণ করতে যাচ্ছেন সে সময় মদ্যপান করেন।
দ্য আমেরিকান কলেজ অফ অবস্টেট্রিকস অ্যান্ড গায়নোকলজির মতে, মাঝারি মাত্রায় মদ্যপান (দিনে ১-২ বার) বা বেশি মদ্যপান (দিনে দুই বা ততোধিকবার মদ্যপান) একজন নারীর গর্ভধারণের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে।
পাভোনও একমত এ বিষয়ে। তার মতে, গর্ভধারণের পর নিরাপদ মাত্রায় মদ্যপান বলে কিছু নেই।
১০. কখন সাহায্য লাগবে সেটা জানুন
পাভোন বলেন, ‘নারীর বয়স ৩৫ বছরের ওপরে হলে এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ছাড়া নিয়মিত যৌন সম্পর্কের পর ছয় মাসের মধ্যে সন্তানসম্ভবা না হলে নারী ও পুরুষ উভয়েরই বন্ধ্যাত্বের পরীক্ষা করানো উচিত।’
পাভোনের মতে, যে সব নারীর বয়স ৩৫ বছরের নিচে, তারা জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার না করে এক বছর নিয়মিত যৌন সম্পর্কের পরেও গর্ভধারণ করতে না পারলে তার সঙ্গীর বন্ধ্যাত্বের পরীক্ষা করানো উচিত।
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমে করণীয়
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (পিসিওএস) একটি হরমোনজনিত সমস্যা। নারীর বন্ধ্যাত্বের অন্যতম কারণ এটি। আমেরিকায় প্রজননক্ষম ৬-১২ শতাংশ নারী এ রোগে ভোগেন।
পিসিওএস চিহ্নিত করার জন্য নির্দিষ্ট কোনো পরীক্ষা নেই, তবে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসকেরা নিচের তিনটি লক্ষণের অন্তত দুটি খোঁজার চেষ্টা করেন:
ওভুলেশন হ্রাস পাওয়ায় পিরিয়ড না হওয়া অথবা অনিয়মিত হওয়া।
সাধারণ মাত্রার চেয়ে বেশি পুরুষ হরমোনের কারণে মুখে ও শরীরে পশমের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, চুল পাতলা হয়ে যাওয়া।
ডিম্বাশয়ে একাধিক সিস্ট হওয়া।
নারীরা কেন এ ধরনের সমস্যায় ভোগেন সে ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা এখনও পরিষ্কার নন। তবে গর্ভধারণের চেষ্টা করার সময়ে অনেকের মধ্যে সমস্যগুলো ধরা পড়ে।
পিসিওএসজনিত বন্ধ্যাত্ব ও ওজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। থেরাপিউডিক অ্যাডভান্সেস ইন রিপ্রোডাকটিভ হেলথ জার্নালে ২০১৯ সালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে দাবি করা হয়, পিসিওএসে আক্রান্ত ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ নারী অতিরিক্ত ওজন বা ওবিসিটিতে ভুগছেন। স্বাস্থ্যকর খাবার ও নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস পিসিওএসে আক্রান্ত নারীর প্রজনন সংক্রান্ত সমস্যা কমাতে সক্ষম।
মেটফরমিন ও লেট্রোজোলের মতো অনেকগুলো ওষুধ ওভুলেশনে সাহায্য করে এবং ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম। ইনসুলিনের মাত্রা উচ্চ হলে পিটুইটারি গ্ল্যান্ড থেকে হরমোন নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে যায়, যা ওভুলেশন প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে।
আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে ল্যাপারোস্কোপিক ওভারিয়ান ড্রিলিং। আমেরিকান সোসাইটি ফর রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিনের তথ্য অনুসারে, এ পদ্ধতিতে একজন সার্জন বাড়তি হরমোন কমাতে ডিম্বাশয়ে ছোট কয়েকটি ফুটো করে দেন। তবে রোগীকে পুরো অজ্ঞান করে করা এ সার্জারি পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত নয়। অনেক সময় এতে ডিম্বাশয়ের ক্ষতি হতে পারে, যা হিতে বিপরীত ফল ডেকে আনতে পারে।
বিকল্প পদ্ধতিগুলো কাজ না করলে চিকিৎসকেরা ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (টেস্ট টিউব বা এ ধরনের কোনো পদ্ধতিতে গর্ভধারণ) করার অনুমোদন দেন।
এনডোমেট্রিওসিস আক্রান্তদের গর্ভধারণ
প্রজননতন্ত্রের আরেকটি রোগ এনডোমেট্রিওসিস। আমেরিকায় প্রতি ১০ জন নারীর একজন এই রোগে আক্রান্ত হন। এক্ষেত্রে জরায়ুতে পাওয়া টিস্যু নারীর ডিম্বাশয় বা ফেলোপিয়ান টিউবেও তৈরি হতে শুরু করে।
জার্নাল অফ অবস্টেট্রিকস অ্যান্ড গায়নোকলজি অফ ইন্ডিয়ার করা ২০১৫ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, মৃদু এনডোমেট্রিওসিসও প্রজননক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। রোগের তীব্রতা বেশি হলে তা নারীর শ্রোণি অঞ্চলকে ক্ষতিগ্রস্ত এবং ফেলোপিয়ান টিউবে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে।
এনডোমেট্রিওসিসে আক্রান্ত নারীর পক্ষেও গর্ভধারণ করা সম্ভব। আর একবার গর্ভবতী হলে এনডোমেট্রিওসিস আক্রান্ত নন এমন নারীর সঙ্গে তার গর্ভাবস্থার কোনো পার্থক্য নেই।
যুক্তরাজ্যের এনডোমেট্রিওসিস সংক্রান্ত দাতব্য সংস্থা এনডোমেট্রিওসিস ইউকের মতে, ওষুধের সাহায্যে চিকিৎসায় প্রজনন সক্ষমতা বৃদ্ধি পায় না। আমেরিকার দাতব্য স্বাস্থ্য সংস্থা মেয়ো ক্লিনিকের মতে, এই ওষুধগুলোর মাধ্যমে রোগীর হরমোন নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এতে করে তার জরায়ুর টিস্যুর বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং নতুন টিস্যু তৈরিতেও বাধা সৃষ্টি করে। তবে ওষুধগুলো হরমোনের ওপর নির্ভরশীল বলে (এগুলো সাধারণত জন্মনিয়ন্ত্রণ, ওভুলেশন পদ্ধতিকে আটকে দেয়া বা অ্যাস্ট্রোজেনের পরিমানকে কমানোর ওষুধ) এটি নারীর গর্ভধারণে বাধা দেয়।
আমেরিকান সোসাইটি ফর রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিনের মতে, একেক নারীর ওপর এনডোমেট্রিওসিস একেকভাবে প্রভাব ফেলে। যে কারণে চিকিৎসা পদ্ধতিও আলাদা।
জার্নাল অফ অবস্টেট্রিকস অ্যান্ড গায়নোকলজি অফ ইন্ডিয়ার করা ২০১৫ সালের গবেষণাটিতে দেখা গেছে, এনডোমেট্রিয়াল ও স্কার টিস্যু সার্জারি করে আপসারণ করলে প্রজনন ক্ষমতা বাড়তে পারে এবং এনডোমেট্রিওসিসের ব্যথা দূর করতে পারে।
প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধির অন্যান্য পদ্ধতি যেমন, আইভিএফ, ওভুলেশন ঘটানো, কৃত্রিম ইনসেমিনেশন ও নারীর ডিম্বাশয়কে উদ্দীপ্ত করে ডিম্বাণু উৎপন্ন করার অন্য প্রক্রিয়াগুলো একজন এনডোমেট্রিওসিস আক্রান্ত নারীকে গর্ভধারণে সহায়তা করতে পারে।
তবে বিষয়টি এনডোমেট্রিওসিসের তীব্রতা, নারীর বয়স ও প্রজনন সংক্রান্ত অন্যান্য কোনো জটিলতা আছে কি না তার ওপর নির্ভরশীল। এনডোমেট্রিওসিস ইউকের মতে, প্রজনন ক্ষমতা বাড়ানোর চিকিৎসায় চিন্তার বিষয় হচ্ছে এর মাধ্যমে অনেক সময় ডিম্বাশয় বাড়তি উদ্দীপনা গ্রহণ করে। এতে একাধিক ডিম্বাণু নিষিক্ত হয় এবং একাধিক সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আরও পড়ুন:ভিভো এক্স৬০ প্রো ও এক্স৭০ প্রো অনেকটাই জনপ্রিয় হয়েছে দেশে। এবার ক্যামেরা প্রযুক্তিকে জোর দিয়ে এক্স সিরিজের আরেকটি স্মার্টফোন আনছে চীনা প্রতিষ্ঠান ভিভো।
নতুন স্মার্টফোন হবে ভিভো এক্স৮০ ফাইভজি।
৬.৭৮ ইঞ্চির অ্যামোলেড ডিসপ্লের ভিভো এক্স৮০ ফাইভজি ফোনটিতে দেয়া হয়েছে ১২০ হার্জের রিফ্রেশ রেট। ফোনটির ডিসপ্লে রেজ্যুলেশন ১০৮০*২৪০০ পিক্সেল, রেশিও ২০:৯।
৪ ন্যানোমিটার প্রযুক্তির মিডিয়াটেক অক্টা-কোর ৯০০০ ডাইমেনসিটির প্রসেসর, অ্যান্ড্রয়েড ১২ অপারেটিং সিস্টেমের সঙ্গে ফানটাচ ১২ ইউআই।
ভিভোর ক্যামেরা প্রযুক্তি বাংলাদেশের তরুণদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছে। এই জনপ্রিয়তা আরও বাড়াতে ক্যামেরা লেন্স নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কার্ল জেইসের সঙ্গে পার্টনারশিপে যুক্ত হয়েছে ভিভো। লেন্স তৈরিতে জেইসের ১৭৫ বছরের ইতিহাস রয়েছে। এক্স৮০ ফাইভজি স্মার্টফোন বাজারে চলে আসলে, জেইসের ক্যামেরা লেন্সযুক্ত ভিভোর তৃতীয় স্মার্টফোন হবে এটি।
ভিভো এক্স৮০ ফাইভজি ফোনে রয়েছে পেশাদার সিনেমাটোগ্রাফির ক্যামেরা। ফোনটিতে রয়েছে ৫০ মেগাপিক্সেলের ট্রিপল ক্যামেরা, ৩২ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা। যা দিয়ে রেকর্ড করা যাবে ফোর-কে ভিডিও।
৮ ও ১২ জিবি র্যামের সঙ্গে এতে থাকছে কয়েকটি রম ভ্যারিয়েন্ট, যার মধ্যে ১২৮, ২৫৬ জিবি রম।
ফোনটিতে দেয়া হয়েছে দীর্ঘস্থায়ী ও ৮০ ওয়াট ফার্স্ট চার্জিংয়ের ৪৫০০ এমএএইচের ব্যাটারি। যা ৫০ শতাংশ চার্জ হবে ১১ মিনিটে।
ফ্ল্যাগশিপটির দাম বাংলাদেশের বাজারে কত হবে সে বিষয়ে কিছু বলেনি ভিভো।
আরও পড়ুন:দেশে প্রথম রিপল হলোগ্রাফিক ডিজাইনের মোবাইল ফোন আনছে রিয়েলমি। রিয়েলমি ৯ ফোরজি ফোনটি বাংলাদেশের বাজারে ছাড়া হবে রোববার।
এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির হিরো প্রোডাক্ট লাইন নম্বর সিরিজের এ ডিভাইসটির ক্যামেরা পারফরম্যান্স ও ডিজাইন গোটা বিশ্বে তরুণদের মাঝে সাড়া ফেলেছে।
রিয়েলমি ৯ ফোরজি ডিভাইসে বিশ্বের প্রথম রিপল হলোগ্রাফিক ডিজাইন সল্যুশন নিয়ে আসা হয়েছে। বলা হচ্ছে, এর মধ্য দিয়ে ডিজাইন টেকনোলজিতে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা।
রিয়েলমি ৯ ডিভাইসে ব্যবহার করা হয়েছে ‘গ্রেডিয়েন্ট যোগ স্টারলাইট’ ডিজাইন। যা অনেক নামি ব্র্যান্ডের প্যাকেজিং কৌশলের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে উন্মোচিত হওয়া কোকাকোলা স্টারলাইট, লুইস ভ্যুইটনের স্টারলাইট অ্যাক্সেসরিজ কালেকশন ও মেইসন মারজিয়েলা এবং স্টোন আইল্যান্ডের ডিজাইনে একই রকম টুইঙ্কলিং স্টার ইফেক্ট ব্যবহার করা হয়েছে এতে।
রিয়েলমি ৯-এর টেক্সচার মরুভূমির বালির পরিবর্তন দ্বারা অনুপ্রাণিত। এই ডায়নামিক ডেজার্ট রিপল ইফেক্ট তৈরির জন্য রিয়েলমি স্বাধীনভাবে ইন্ডাস্ট্রির প্রথম ‘রিপল হলোগ্রাফিক গ্রেডিয়েন্ট কোটিং প্রসেস’ তৈরি করেছে এবং উদ্ভাবনী উপায়ে ‘সুপার কোটিং প্রসেস’ প্রয়োগ করেছে।
এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে টেক্সচারযুক্ত পণ্য তৈরি করার সময় স্যাচুরেটেড ও প্রাণবন্ত রং ফুটিয়ে তোলা সম্ভব।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এই ইফেক্ট অর্জনে কঠিন প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে তারা। ফোনটির বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন পুরুত্ব আছে, সবচেয়ে পুরু এলাকাটি ৪২০ ন্যানোমিটার সাধারণ কালো আবরণের ১০ গুণ পুরুত্বে পৌঁছেছে।
ফিল্মটি যত পুরু হবে তত বেশি বাস্তবসম্মত হবে এবং এর ফলাফলও তত স্বাভাবিক হবে এবং সবশেষ যেটি তৈরি হবে তা হবে আরও টেক্সচারযুক্ত।
ফোনটি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে রিয়েলমির ওয়েবসাইট (https://www.realme.com/bd/realme-9) ভিজিটের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:ব্রিটিশ ইউটিউবার ও র্যাপার জেজে ওলাটুনজি, অনলাইনে যিনি কেএসআই নামে পরিচিত। দুটি ইউটিউব চ্যানেলে তার মোট ৪০ মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। যেসব সেলিব্রেটি ক্রিপ্টোকারেন্সি টেরা (লুনা) হোল্ড করতেন, তার মধ্যে তিনিও একজন।
টুইটার পোস্টে গত ১২ মে কেএসআই নিজেই জানিয়েছিলেন, তার ২৮ লাখ ডলার সমমূল্যের লুনা এক দিনের মধ্যেই ১ হাজার ডলার হয়ে গেছে। তার টুইটার অনুসারীদের কয়েকজন বিষয়টি নিয়ে মজা করলেও দুঃখ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। তবে তিনি নিজেও টুইটের মধ্যে হাসির ইমোজি যুক্ত করে দিয়েছেন।
এদিকে বিটকয়েনের দাম কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রিপ্টোকারেন্সির অন্যান্য মুদ্রাতেও এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। এরই মধ্যে দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও আমেরিকার ওয়ালস্ট্রিটের তালিকাভুক্ত ক্রিপ্টো মুদ্রার কেনাবেচার অনলাইন প্ল্যাটফর্ম কয়েনবেজ।
বিটকয়েন, ইথারিয়ামের মতো দাম হারিয়েছে অন্যান্য অল্টা কয়েনেরও। তবে সবচেয়ে বেশি দাম হারিয়েছে ক্রিপ্টো মুদ্রা টেরা (লুনা)। প্রতিশ্রুত মুদ্রা হিসেবে পরিচিতি পাওয়া লুনা ৯৯ শতাংশ দাম হারিয়েছে মুহূর্তেই। গত মাসে ক্রিপ্টোকারেন্সির তালিকায় শীর্ষ ১০-এ থাকা ১২০ ডলার দামের লুনা গত ১২ মে এক দিনের মধ্যেই ১ ডলারের নিচে নেমে আসে।
ভবিষ্যতে দাম বাড়বে এই আশায় যারা লুনা আঁকড়ে ধরেছিলেন, তারা ব্যাপক মাত্রায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় লুনা হোল্ডারদের হতাশা ব্যক্ত করতে দেখা যায়। এর মধ্যে একজন ব্রিটিশ ইউটিউবার কেএসআই।
কেএসআই বলছেন, তিনি লুনা ধরে রাখবেন। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, সহসা লুনার দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান প্রভাব ফেলেছে ক্রিপ্টোমুদ্রাতেও। ভার্চুয়াল সম্পদে আস্থা হারাচ্ছে মানুষ, এর বদলে দৃশ্যমান সম্পদ কিনতে চাইছে সবাই। ফলে দাম বাড়ছে সোনা ও ডলারের মতো মুদ্রার।
আরও পড়ুন:প্রায় ৩ হাজার ৪০০ বছর আগে ফারাও সম্রাজ্যের অধিপতি ছিলেন তুতেন খামেন। ১৯২৫ সালে, লুক্সরের (প্রাচীন থিবস) কাছে ভ্যালি অফ কিং-এ তুতেনখামেনের সমাধি আবিষ্কারের ৩ বছর পর, ইংরেজ প্রত্নতাত্ত্বিক হাওয়ার্ড কার্টার ফারাও তুতেন খামেনের মমির চারপাশে আবৃত উপাদানের ভাঁজে লুকানো দুটি ছোরা খুঁজে পান। গবেষকরা বলছেন, এর মধ্যে একটি ছোরা তৈরি হয়েছে উল্কা থেকে প্রাপ্ত লোহা থেকে।
তুতেন খামেনের ডান উরুতে মোড়ানো ছিল একটি লোহার ছোরা, যার হাতল ছিল সোনার এবং শেয়ালের মুখাকৃতির সোনার খাপে ঢাকা ছিল। আর দ্বিতীয় ছোরাটি পাওয়া যায় ফারাওর পেটের ভেতর এবং এই ছোরাটি ছিল সম্পূর্ণ সোনার তৈরি।
তবে প্রত্নতাত্ত্বিকদের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল লোহার ছোরাটিই। কারণ ব্রোঞ্জ যুগে লোহা ছিল বিরল এবং সে সময় সোনার থেকেও একে মূল্যবান ভাবা হতো। যদিও প্রাচীন মিশর খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ ছিল।
তবে প্রত্নতত্ত্ববিদরা বলছেন, মিশরের ওল্ড কিংডমের (তৃতীয় সহস্রাব্দ) সময় পাওয়া লোহার বস্তুগুলো সম্ভবত উল্কা থেকে আসা ধাতু থেকে উৎপাদিত হয়েছিল। তুতের যুগের মিশরীয়রা শ্রদ্ধার সঙ্গে এটিকে ‘আকাশ থেকে লোহা’ বলে ডাকত।
মিলানের পলিটেকনিক ইউনির্ভাসিটি, ইতালির পিসা ইউনিভার্সিটি ও কায়রোর যাদুঘরের গবেষকরা এক নতুন গবেষণায় তুতেন খামেনের ছোরার লোহার সঙ্গে ১ হাজার ২৫০ মাইল ব্যাসার্ধের মধ্যে পড়া ১১টি উল্কাপিণ্ডের সঙ্গে তুলনা করেছেন। ২০০০ সালে মার্সা মাতরুহের কাছে আবিষ্কৃত খড়গা নামে পরিচিত উল্কাপিণ্ডের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মিলে যায়।
পোর্টেবল এক্স-রে ফ্লুরোসেন্স স্পেক্টমেটরি স্পেক্টোমেট্রির মাধ্যমে পরীক্ষা করে দেখা গেছে তুতেন খামেনের ছোরায় নিকেল ১০.৮ শতাংশ ও কোবাল্টের পরিমাণ ০.৫৮ শতাংশ। যা অনেকটা উল্কাপিণ্ড থেকে প্রাপ্ত লোহার মতো। গবেষকরা বলছেন, খুব সম্ভব তুতেন খামেনের ছুরিও উল্কা থেকে প্রাপ্ত লোহা দিয়েই তৈরি।
নতুন এ গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফলের আলোকে তুতেন খামেনের সময় প্রাচীন মিশরে উল্কা থেকে প্রাপ্ত লোহার ব্যবহার নিয়ে আরও বিস্তর গবেষণার সুযোগ উন্মুক্ত হয়েছে।
তুতেন খামেন ছিলেন মিশরীয় ১৮তম ফারাও সম্রাট। মাত্র ৯ বছর বয়সে তিনি সিংহাসনে বসেন ও ১৯ বছর বয়সে প্রাণ হারান। গবেষকরা বলছেন, তার একটি পা ভাঙা ছিল ও সেখান থেকে সৃষ্ট গ্যাংগ্রিনেই তিনি মারা যান। তিনি ছিলেন ফারাও সম্রাট আখেনাতেনের পুত্র।
আরও পড়ুন:মঙ্গল নিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে মহাকাশ উদ্যোক্তাদের আগ্রহের শেষ নেই। বিশ্বের শীর্ষধনী ইলন মাস্ক তো মঙ্গলগ্রহে মানব বসতিই স্থাপন করতে চান। শুধু ইলনই নয়, নাসাও জানতে চায় মঙ্গল সম্পর্কে। মঙ্গলকে কী মানব বসতির জন্য উপযোগী করা যাবে, সেখানে কি কখনো প্রাণের অস্তিত্ব ছিল। এগুলো মঙ্গল সম্পর্কে খুব মৌলিক প্রশ্ন। যার উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছে নাসা।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলে প্রাণের সন্ধান ও জীবনধারণ নিয়ে গবেষণার জন্য পাঠানো নাসার পারসিভারেন্স রোভার তার মিশনের একটি বড় মুহূর্তে পৌঁছেছে।
বিজ্ঞানীরা ধারণা করে আসছেন, মঙ্গলে আদিমকালের প্রাণের অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যেতে পারে গ্রহটির অ্যানসিয়েন্ট ডেল্টা এলাকায়। আর মঙ্গলবারই ছয় চাকার রোবটটি এনসিয়েন্ট ডেল্টাতে উঠতে শুরু করবে। বলা হয়ে থাকে, এখন পর্যন্ত যতগুলো মিশন ভিন্ন গ্রহে পাঠানো হয়েছে তার মধ্যে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পারসিভারেন্সের সক্ষমতা সবচেয়ে বেশি।
নাসার পাঠানো এই রোবটটি এরই মধ্যে মঙ্গলে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। প্রথমবারের মতো পারসিভারেন্স রোভারই মঙ্গলে অক্সিজেন উৎপাদন করেছে। হাইটেক এই রোবট ড্রোন হেলিকপ্টারও মঙ্গলের আকাশে উড়িয়েছে।
অতীতে মঙ্গলে কোনো প্রাণ ছিল কি না তা যাচাইয়ের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো শিলা পরীক্ষা করে দেখা। পারসিভারেন্স শুধু শিলা পরীক্ষা করেই দেখে না। শিলা সংগ্রহ করে অ্যানসিয়েন্ট ডেল্টার নিচে এনে সে শিলাগুলোকে জড়ো করবে। নাসার লক্ষ্য হলো ২০৩০-এর দশকে বিস্তারিত গবেষণার জন্য এই শিলাগুলোকে পৃথিবীতে নিয়ে আসা।
পারসিভারেন্স রোভারকে মঙ্গলে মিশনে পাঠানো হয়েছে প্রাণের অনুসন্ধানের জন্য। তাকে যেখানে নামানো হয় সেই স্থানটির নাম জেজেরো ক্রেটার। ধারণা করা হয়। সেখানে একসময় হ্রদ ছিল। ফলে সেখানে একসময় অণুজীবের মতো প্রাণের অস্তিত্ব থাকা অস্বাভাবিক নয়।
পরবর্তী সময়ে বিজ্ঞানীরা জেজেরো ক্রেটারের কাছেই অ্যানসিয়েন্ট ডেল্টা সন্ধান পায়। এর আকৃতিতে গবেষকদের ধারণা এর পাশে নদীর মতো প্রবাহ ছিল। ফলে একসময় সেখানে প্রাণ থাকা খুবই সম্ভব। তাই পারসিভারেন্সের অ্যানসিয়েন্ট ডেল্টার যাত্রায় উচ্ছ্বসিত মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।
অ্যানসিয়েন্ট ডেল্টা প্রকৃত অর্থে এমন একটি কাঠামো, যা নদীর বয়ে আনা পলি দিয়ে তৈরি হয়। যেখানে থাকে জীবন ধারণের উপাদান, ফলে একসময় সেখানে অণুজীবের জীবন ধারণ অস্বাভাবিক কিছু নয়।
আরও পড়ুন:ছোট ভিডিও-শেয়ারিংয়ের জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম টিকটক সম্প্রতি বাংলাদেশে তাদের #StitchKindness শীর্ষক রমজান ক্যাম্পেইন শেষ ঘোষণা দিয়েছে।
ক্যাম্পেইনটি রমজানের চেতনাকে ধারণ এবং ব্যবহারকারীদের মধ্যে দয়া ও দানের বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছে। রোজা ও ঈদ উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রচারিত পাঁচটি হ্যাসট্যাগের ক্যাম্পেইনটি এরইমধ্যে ১৭০ কোটির বেশিবার দেখা হয়েছে।
ক্যাম্পেইনটিতে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, প্রখ্যাত মেকআপ শিল্পী সুমাইয়া মীম, জনপ্রিয় টিকটক কনটেন্ট নির্মাতা শাহাত বিন সেলিম এবং সুনেহরা তাসনিম।
টিকটকের বিজ্ঞাপনটি প্রতীকী হলেও ব্যাপকভাবে প্রসংশিত হয়। বিনোদনের একটি মাধ্যম হলেও এর মাধ্যমে টিকটকের কমিউনিটির উন্নতি এবং বাংলাদেশিদের একত্রিত করার মনোভাব ফুটে উঠেছিল।
#StitchKindness হ্যাশট্যাগটি প্রায় ১০০ কোটিবার দেখা হয়েছে। ভিডিওগুলোতে তুলে ধরা হয়েছে নিঃস্বার্থ ও পরিশ্রমী মানুষদের, যারা রোজার সময় অন্যদের সাহায্য করেছেন এবং কঠিন পরিস্থিতিতেও তাদের দায়িত্ব পালন করে গেছেন।
সারা দেশের কনটেন্ট নির্মাতারা এই ক্যাম্পেইন উপলক্ষ্যে টিকটক বিজ্ঞাপনের সাথে তাদের ভিডিওগুলো স্টিচ করে একটি চেইন অব কাইন্ডনেস তৈরি করেছেন। ক্যাম্পেইনটি রমজান মাসে ‘আনসান হিরোদের’ প্রচেষ্টাকে সম্মানিত করেছে।
আরেকটি হ্যাশট্যাগ, #MaheRamadan যা ৩ কোটি ১৯ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে। টিকটক কমিউনিটির মধ্যে রজমান মাসের সারমর্ম ও চেতনা ছড়িয়ে দিতে ক্যাম্পেইনটি কাজ করেছে। এ ছাড়া #RojarDin উদ্যোগ টিকটক ব্যবহারকারীদের সেহরি এবং ইফতারের সময় স্বাস্থ্য সচেতনতা ও নিজের যত্ন সম্পর্কে জানান দিয়েছে। প্ল্যাটফর্মটিতে এটি ৩১৯.৯ মিলিয়নবার দেখা হয়েছে। ব্যবহারকারীরা #RamadanRecipe হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে রমজানের প্রিয় খাবারের ভিডিওগুলোও শেয়ার করেছেন, যা ৮৫.৮ মিলিয়নেরও বেশি দেখা হয়েছে।
ক্যাম্পেইনটি শেষ হয়েছে দেশের অন্যতম বড় উৎসব- ঈদ-উল-ফিতর উদযাপনের মধ্য দিয়ে। আনন্দময় এই উৎসবকে উদযাপন করতে টিকটক কমিউনিটি #KhushirEid হ্যাসট্যাগটি ব্যবহার করে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছে। হ্যাসট্যাগটি ও প্রায় ১৮৭.৩ মিলিয়নবার দেখা হয়েছে। এ ছাড়া ঈদ উপলক্ষ্যে এক্সক্লুসিভ কিছু ফিল্টার ও ইন অ্যাপ ইফেক্ট চালু করেছিল টিকটক।
রমজান মাস সবসময়ই আত্মিক উন্নয়ন, উদযাপন ও জমায়েতের মাস হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে, তা অনলাইনে হোক বা অফলাইনে। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে টিকটক পবিত্র রমজান মাসের চেতনা সারাবিশ্বের সকল কমিউনিটির সাথে উদযাপন করেছে। এ ছাড়া এর লক্ষ্য ছিল সৃজনশীলতাকে অনুপ্রাণিত করা এবং বিশ্বব্যাপী টিকটকের ক্রমবর্ধমান কমিউনিটির জন্য আনন্দ বয়ে আনা।
আরও পড়ুন:ইকমার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর চট্টগ্রাম বিভাগের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের ডাক দিয়ে যাত্রা শুরু দ্য চেঞ্জমেকার্স টিম।
ই-ক্যাবের স্থানীয় সদস্য রাফসান কমিউনিকেশনের স্বত্ত্বাধিকারী জহিরুল আলম, ব্যাচেলর ডটকমের সঞ্জয় চৌধুরীসহ চট্টগ্রামের ই-ক্যাব সদস্যরা এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
দ্য চেঞ্জমেকার্স টিমের সদস্য ওয়াসিম আলিম (বাংলামেডস), জিয়া আশরাফ (চালডাল), তাসদীখ হাবীব (ক্লিন ফোর্স লিমিটেড), জিসান কিংশুক হক (আরটিএস এন্টারপ্রাইজ), ফাতিমা বেগম (আদি বিডি), মোজাম্মেল হক মৃধা (কিনলে ডট কম), আবু সুফিয়ান নিলাভ (নিজল ক্রিয়েটিভ), বিপ্লব ঘোষ রাহুল (ই-কুরিয়ার) প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
টিমের সদস্য জিসান কিংশুক হক বলেন, 'চট্টগ্রামে আমরা ই-ক্যাবের একটি বিভাগীয় অফিস করতে চাই। সদস্য বান্ধব বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে এই শিল্প নগরীতে ই-ক্যাবকে আরও বিকশিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।'
তিনি বলেন, 'আমাদের পরকিল্পনা আছে পর্যায়ক্রমে সারা দেশের ইক্যাব সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করার।'
এসব মতবিনিময় সভা থেকে উঠে আসা বিভিন্ন সুপারিশ ভবিষ্যতে তারা সদস্যদের কল্যাণে বাস্তবায়ন করতে চান বলেও জানান।
মন্তব্য