গর্ভধারণের সঠিক ও কার্যকর উপায় বলতে গেলে নানা রহস্যে ঘেরা। ফলে গর্ভধারণে সক্ষম নারীও অনেক সময় জটিলতায় ভুগতে পারেন। আবার খাদ্যাভ্যাসসহ কিছু শারীরিক কারণেও বিলম্বিত হতে পারে গর্ভধারণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবার আগে জানতে হবে নিজের শরীরকে। যত্ন নিতে হবে শরীরের। এ ছাড়া কিছু অভ্যাস মেনে চললে গর্ভধারণের জটিলতা অনেকটাই কমে আসতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর নর্থওয়েস্টার্ন মেডিসিনস রিপ্রোডাকটিভ এন্ডোক্রাইনোলজি অ্যান্ড ইনফার্টিলিটি বিভাগের কৃত্রিম প্রজনন শাখার পরিচালক ও ইনফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞ ড. ম্যারি অ্যালেন পাভোনের মতে, গর্ভধারণে আগ্রহী নারীর জন্য সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো নিজের শরীর, বিশেষত ঋতুচক্রকে জানা।
পাভোন বলেন, ‘ঋতুচক্রের বিরতি কত দিনের সেটা সবার আগে জানা দরকার। এতে করে নারী তার যৌন মিলনের সময় নির্দিষ্ট করতে পারবেন ও গর্ভধারণের চেষ্টা চালাতে পারবেন।’
বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট লাইভ সায়েন্সের এক প্রতিবেদনে নারীর গর্ভধারণের সম্ভাবনা বাড়াতে ১০টি সহায়ক কৌশলের কথা বলা হয়েছে। নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য বাংলায় প্রকাশ করা হচ্ছে কৌশলগুলো।
১. ঋতুচক্রের পুনরাবৃত্তির তথ্য সংরক্ষণ
সন্তান গ্রহণে ইচ্ছুক নারীর প্রতি মাসে তার পিরিয়ডের প্রথম দিনটির তারিখ লক্ষ রাখা উচিত। প্রতি মাসেই সমান দিনে পিরিয়ড শুরু হলে তা নিয়মিত বলে ধরে নেয়া হয়। তবে এর হেরফের হলে অনিয়মিত পিরিয়ড হিসেবে গণ্য হয়। দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যালেন্ডারে এ তথ্যের ভিত্তিতে নারীর ওভুলেশন কখন হচ্ছে, তা অনেকটা সঠিকভাবে অনুমান করা যায়। ওভুলেশন হচ্ছে নারীর ডিম্বাশয় থেকে একটি ডিম নিঃসরণ। ডিম্বাণু নির্গত হওয়ার পর সেটি ফেলোপিয়ান টিউবের নিচের দিকে চলে যায়, আর সেখানেই শুক্রাণু কোষ এই ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করে।
ঋতুচক্রের পুরো বিষয়টি হিসাবে রাখতে গ্লোওভুলেশনের মতো বেশ কিছু পিরিয়ড ট্র্যাকার অ্যাপ অনলাইনে পাওয়া যায়। আমেরিকান প্রেগন্যান্সি অ্যাসোসিয়েশনের মতে, নারীর ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু নির্গত হওয়ার ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত কার্যকর থাকে। অন্যদিকে নারী দেহে প্রবেশের পর পুরুষের শুক্রাণু পাঁচ দিন পর্যন্ত কার্যক্ষম থাকতে পারে।
২. ওভুলেশনের দিকে দৃষ্টি রাখা
ইনফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞ ড. ম্যারি অ্যালেন পাভোন বলছেন, ‘সাধারণত পিরিয়ডের দুই সপ্তাহ আগে একজন নারীর ওভুলেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়। অবশ্য যাদের ক্ষেত্রে ঋতুচক্র ব্যাহত হয়, তাদের ওভুলেশনের সময় নির্ণয় করা বেশ কঠিন। তবে সাধারণত পরবর্তী পিরিয়ডের আগের ১২ থেকে ১৬ দিন আগে এটি ঘটতে পারে।’
নেচার জার্নালে ২০১৯ সালে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে দেখা যায়, ঋতুচক্রের দৈর্ঘ্য নারীভেদে আলাদা হতে পারে। সেই সঙ্গে নারীর রজঃশীল থাকার বছরগুলোর বিভিন্ন সময়ে ওভুলেশনের সময় ও দৈর্ঘ্যও বদলে যেতে পারে। এ কারণে ওভুলেশনের সময়কে খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারলে নারীর গর্ভধারণ সহজ হয়। মাসের কোন সময়টি গর্ভধারণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত, সেটি বের করার অনেক উপায় আছে।
ওভুলেশন প্রেডিকশন কিটের সাহায্যে নারীর কখন ওভুলেশন হচ্ছে, সেটা অনুমান করার ঝামেলা কমে যায়। ওষুধের দোকানে বিক্রি হওয়া এ কিটগুলো মূত্রে লিউটেনাইজিং হরমোনের মাত্রা পরীক্ষা করে। প্রতি মাসে ওভুলেশনের সময় এর মাত্রা বৃদ্ধি পায় ও ডিম্বাশয়কে ডিম্বাণু নির্গত করতে প্রস্তুত করে। আমেরিকান প্রেগন্যান্সি অ্যাসোসিয়েশনের মতে, পজিটিভ ফল আসার পরের তিন দিন কোনো দম্পতির যৌন মিলনের মাধ্যমে গর্ভধারণের জন্য সেরা সময়।
ওভুলেশন কখন হবে সেটা বের করার আরেকটি উপায় হচ্ছে সার্ভিক্যাল শ্লেষ্মার দিকে খেয়াল রাখা। এই প্রক্রিয়ায় নারীর যৌনাঙ্গে শ্লেষ্মার পরিমাণ ও ধরন নিয়মিত পরীক্ষা করতে হয়।
মা ও শিশু স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা এনজিও মার্চ অফ ডাইমসের মতে, ওভুলেশনের ঠিক আগে যখন একজন নারী সবচেয়ে সক্রিয় অবস্থায় থাকেন, তখন শ্লেষ্মার পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং পাতলা, স্বচ্ছ ও পিচ্ছিল হয়ে যায়। সার্ভিক্যাল শ্লেষ্মা এভাবে পিচ্ছিল হয়ে শুক্রাণুকে ডিম্বাণুর কাছে পৌঁছাতে সহায়তা করে। ফার্টিলিটি অ্যান্ড স্টেরিলিটি জার্নালে ২০১৩ সালে প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধে বলা হয়েছে, যেসব নারী ছয় মাসে নিয়মিত নিজেদের সার্ভিক্যাল শ্লেষ্মা পরখ করেন তাদের গর্ভধারণের সম্ভাবনা ২.৩ ভাগ বেশি।
ফার্টিলিটি অ্যান্ড স্টেরিলিটি জার্নালের মতে, শরীরের তাপমাত্রা নিরীক্ষণও ওভুলেশন পর্যবেক্ষণের অন্যতম পদ্ধতি। এ ক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে বিছানা ছাড়ার আগে নির্দিষ্ট সময়ে দেহের তাপমাত্রা মাপতে হবে এবং প্রতিদিনের তাপমাত্রার চার্ট করতে হবে। ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগানের হেলথ সিস্টেমের মতে, নারীর ডিম্বাশয় ডিম্বাণু ছাড়ার প্রস্তুতির সময় দেহের তাপমাত্রা হালকা কমে যায়। এ সময় দেহের গড় তাপমাত্রা থাকে ৯৭ থেকে ৯৭.৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটের (৩৬.১ থেকে ৩৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস) মধ্যে। ডিম্বাণু ছেড়ে দেয়ার ২৪ ঘণ্টা পর দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় ও বেশ কয়েক দিন সে অবস্থায় থাকে।
ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগানের হেলথ সিস্টেমের তথ্য অনুযায়ী, ওভুলেশনের পরপর একজন নারীর দেহের সাধারণ তাপমাত্রা ৯৭.৬ থেকে ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৩৬.৪ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস) হতে পারে। তারা বলছে, ওভুলেশনের পর ডিম্বাণু ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা সক্রিয় থাকে।
ওভুলেশনের সময় দেহের মূল তাপমাত্রা খুব কম মাত্রায় পরিবর্তিত হয় বলে ডিজিটাল থার্মোমিটার বা বিশেষ বেজাল থার্মোমিটার ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
৩. ফার্টাইল উইন্ডোর সময় বিকল্প দিনে যৌন মিলন
আমেরিকান সোসাইটি ফর রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিনের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফার্টিলিটি উইন্ডো (ডিম্বাণু নিগর্ত হওয়ার প্রস্তুতি ও নির্গত হওয়ার পরে কার্যকর থাকার সময়) সাধারণত ছয় দিনের। ওভুলেশনের দিন এবং এর আগের পাঁচ দিন। প্রতি মাসে একজন নারী এই সময়টাতেই জন্মদানে সবচেয়ে বেশি সক্ষম বা উর্বর থাকেন।
অনেক নারী গর্ভধারণের সঠিক সময় জানতে ফার্টিলিটি-ট্র্যাকিং অ্যাপ ব্যবহার করেন। তবে বিএমজে সেক্সুয়াল অ্যান্ড রিপ্রোডাকটিভ হেলথে ২০২০ সালে প্রকাশিত এক রিভিউ অনুযায়ী, এই অ্যাপ বা ওয়েবসাইট কতটুকু নিখুঁত সেটা নিয়ে খুব বেশি গবেষণা হয়নি।
অবস্টেট্রিকস অ্যান্ড গায়নোকলজি জার্নালে ২০১৬ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা ৫০টি প্রচলিত ফার্টিলিটি ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ও অ্যাপ পরখ করে দেখেছেন। লাইভ সায়েন্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই অ্যাপ ও সাইটগুলো প্রায়ই উদ্ভট ফল দিচ্ছিল। অনেক ফার্টিলিটি উইন্ডোর দিন-তারিখ একেবারে ভুলভাবে জানাচ্ছিল।
পাভোন বলেন, ‘ফার্টিলিটি উইন্ডোর সময়ে প্রতিদিন যৌন মিলনে অংশ নেয়া দম্পতিদের গর্ভধারণের হারে খুব বেশি পরিবর্তন দেখা যায় না। এই হার ৩৭ শতাংশ। ফার্টিলিটি উইন্ডোর বাইরে অন্য দিনগুলোতে যৌন মিলনে অংশ নেয়াদের ক্ষেত্রে এ হার ৩৩ শতাংশ।
পাভোনের মতে, মাসজুড়ে নিয়মিত যৌন মিলনে অংশ নিলেই বরং গর্ভধারণের সম্ভাবনা বেশি বৃদ্ধি পায়।
গবেষকরা অ্যাপল অ্যাপ স্টোরের শত শত গর্ভধারণ ক্ষমতাসংক্রান্ত অ্যাপ ঘেঁটে দেখেছেন। এসব অ্যাপের তথ্য ২০১৯ সালে প্রকাশিত হয় কানাডার জার্নাল অফ অবস্টেট্রিকস অ্যান্ড গায়নোকলজিতে। অ্যাপগুলোর ৩১টিতে ভুলভ্রান্তির ছড়াছড়ি ছিল। তবে কয়েকটি বেশ কার্যকর। এর মধ্যে সেরা তিনটি অ্যাপ হচ্ছে:
গ্লো.ওভুলেশন অ্যান্ড পিরিয়ড ট্র্যাকার (Glow.Ovulation & Period Tracker)
ফার্টিলিটি ফ্রেন্ড এফএফ অ্যাপ (Fertility Friend FF App)
ক্লু: হেলথ অ্যান্ড পিরিয়ড ট্র্যাকার (Clue: Health & Period Tracker)
গর্ভধারণ নিয়ে প্রচলিত অনেক মিথ রয়েছে। তবে এগুলোর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি পাওয়া বেশ কঠিন। যেমন- অনেকে মনে করেন যৌন মিলনের সময় বিশেষ কোনো পজিশন সন্তান ধারণের সম্ভাবনাকে ব্যাহত করে। তবে এর কোনো প্রমাণ নেই। পাভোন বলেন, যৌন মিলনের পর একজন নারীর নির্দিষ্ট সময় চিৎ হয়ে শুয়ে থাকার সঙ্গে তার গর্ভধারণের সম্ভাবনা বৃদ্ধিরও কোনো সংযোগ নেই।
পাভোন অবশ্য বলেছেন, পানিভিত্তিক কিছু ভ্যাজিনাল লুব্রিকেন্ট পাওয়া যায়, যা শুক্রাণুর সচলতাকে আটকে দিতে পারে। তার পরামর্শ, লুব্রিকেন্ট প্রয়োজন হলে অ্যাস্ট্রোগ্লাইড বা কে-ওয়াই জেলির বদলে প্রি-সিড ব্যবহার করা।
৪. দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
একজন নারীর ওজন তার গর্ভধারণের সামর্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। অতিরিক্ত ওজন বা অনেক কম ওজন গর্ভধারণের সম্ভাবনাকে কমিয়ে দেয়। পাভোন বলছেন, সাধারণ বডি মাস ইনডেক্সের (বিএমআই) একজন নারীর চেয়ে অতিরিক্ত ওজনের নারীর গর্ভধারণে দ্বিগুণের বেশি সময় লাগতে পারে। আর যেসব নারীর ওজন অনেক কম তাদের ক্ষেত্রে চার গুণ সময় লাগতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শরীরে চর্বির পরিমাণ বেশি থাকলে তা অতিরিক্ত এস্ট্রোজেন তৈরি করে। এটি ওভুলেশন প্রক্রিয়া ব্যাহত করে। হিউম্যান রিপ্রোডাকশন জার্নালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে গবেষকদের দাবি, যেসব দম্পতির দুজনই অতিরিক্ত ওজনের এবং যাদের বিএমআই অন্তত ৩৫ (বিএমআই অনুযায়ী ২৫-২৯.৯ পর্যন্ত অতিরিক্ত ওজন ও ৩০ এর বেশি স্থূলকায় বা ওবিস ধরা হয়) তাদের গর্ভধারণের ক্ষেত্রে সাধারণ দম্পতির চেয়ে ৫৫ থেকে ৫৯ শতাংশ পর্যন্ত সময় বেশি লেগেছে।
পিএলওএস ওয়ান জার্নালে ২০২০ সালে প্রকাশিত এক গবেষণা অনুসারে, বিএমআই বৃদ্ধি পেলে নির্দিষ্ট সময়সীমায় নারীর গর্ভধারণের ক্ষমতা কমে আসে। গবেষকরা চীনের সন্তান গ্রহণে ইচ্ছুক ৫০ হাজার দম্পতির ওপর করা এক গবেষণার ডেটা ঘেঁটে এ তথ্য পেয়েছেন।
অ্যান্ড্রোলজিয়া জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুরুষের ওবিসিটি বা স্থূল দেহের জন্য হরমোন উৎপাদনের জন্য নিয়োজিত এন্ডোক্রিন সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং শুক্রাণুর কার্যক্ষমতা ও ঘণত্ব কমে যেতে পারে। এর প্রভাব পড়ে নারীর গর্ভধারণের ওপর।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ উইসকনসিন হসপিটালস অ্যান্ড ক্লিনিকস অথরিটি জানিয়েছে, যেসব নারীর ওজন অনেক কম (বিএমআই ১৮ এর নিচে) তাদের পিরিয়ড অনিয়মিত হতে পারে বা ওভুলেশন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে করে গর্ভধারণের প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।
৫. গর্ভাবস্থার আগে ভিটামিন খাওয়া
যেসব নারী গর্ভধারণের চেষ্টায় আছেন তাদের ভিটামিন খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পাভোন। এতে করে গর্ভাবস্থায় দেহের উপযোগী ভিটামিন তিনি আগে থেকেই চিহ্নিত করতে পারবেন।
পাভোন প্রতিদিন মাল্টিভিটামিন খেতে বলেন। তবে তাতে ন্যূনতম ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক অ্যাসিড থাকতে হবে। এটি এক ধরনের বি-ভিটামিন, যা শিশুর মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ড মজবুত করতে সহায়তা করে।
জন্মের সময় শিশুর কোনো ধরনের ত্রুটি এড়াতে গর্ভধারণের অন্তত এক মাস আগে থেকে নারীদের প্রতিদিন ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক অ্যাসিড গ্রহণ করতে বলে দ্য সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)।
আগে থেকে ফলিক অ্যাসিড খাওয়া শুরু করাটা ভালো। এর কারণ, নিউরাল টিউব যা গর্ভধারণের তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে শিশুর মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডে পরিণত হয়। ওই সময়ে অধিকাংশ নারী বুঝতেও পারেন না যে তিনি গর্ভবতী।
৬. স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া
আমেরিকার দাতব্য স্বাস্থ্য সংস্থা মেয়ো ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভধারণের জন্য নির্দিষ্ট কোনো খাদ্যতালিকা না থাকলেও, স্বাস্থ্যকর খাবার একজন নারীর দেহে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ও আয়রনের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদানে সুষম অবস্থা বজায় রেখে গর্ভধারণে সহায়তা করে। এর অর্থ হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ফল, সবজি, সুষম প্রোটিন, বার্লি-ওটমিল জাতীয় হোল গ্রেইন, দুগ্ধজাত পণ্য ও চর্বিযুক্ত স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।
ফলিক এসিডযুক্ত সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার পাশাপাশি একজন নারী সবুজ শাক-সবজি, ব্রকোলি, ভিটামিন ও মিনারেল যুক্ত রুটি ও সিরিয়াল, বিনস, লেবু জাতীয় ফল ও কমলার রস খেতে পারেন।
মেয়ো ক্লিনিকের মতে, গর্ভধারণের প্রক্রিয়া শুরুর সময় পারদের উচ্চ মাত্রা সমৃদ্ধ মাছ কম খাওয়া উচিত। এর কারণ পারদ গর্ভবতী নারীর রক্ত প্রবাহে মিশে যেতে পারে, যা শিশুর বেড়ে ওঠায় ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। ২০১৯ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি পারদযুক্ত খাদ্য গ্রহণ নারী ও পুরুষ উভয়ের বন্ধ্যাত্ব ডেকে আনতে পারে।
কিছু গবেষণায় গর্ভাবস্থায় নারীদের ক্যাফিন থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গর্ভবতী নারী যদি ২০০ মিলিগ্রাম ক্যাফিন (দুই কাপ কফির কম) পান করেন তাহলে গর্ভের সন্তানের কোনো ঝুঁকি নেই। তবে ২০২০ সালে বিএমজে এভিডেন্স বেজড মেডিসিনের রিভিউ গবেষণায় দেখা যায়, গর্ভবতী নারী বা সন্তান গ্রহণের ইচ্ছুক নারীদের জন্য ক্যাফিনের কোনো নির্দিষ্ট নিরাপদ মাত্রা নেই।
৭. কঠিন বা ভারী ব্যায়াম কমানো
২০২০ সালের মার্চে হিউম্যান রিপ্রোডাকশন জার্নালের প্রকাশিত এক নিবন্ধে বিজ্ঞানীরা জানান, প্রতিদিনের শারীরিক সক্রিয়তা একজন নারীর দেহকে গর্ভধারণ ও সন্তান জন্মদানের জন্য প্রস্তুত করে। এতে করে তাদের জন্মদান ক্ষমতা সংক্রান্ত সমস্যাও কমিয়ে দেয়।
তবে লাইভ সায়েন্সের প্রতিবেদন অনুসারে, যে সব নারী অতিরিক্ত ব্যায়াম করেন বা নিয়মিত ভারী কাজ করেন তাদের ওভুলেশন প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে।
যে সব নারী ভারী ব্যায়াম করেন তাদের রজঃচক্রে ব্যাঘাত ঘটতে দেখেছেন চিকিৎসকেরা। লাইভসায়েন্সকে পাভোন বলেন, নারী গর্ভধারণ করতে চাইলে ব্যায়ামের পরিমাণ কমাতে হবে।
৮. বয়স বাড়লে কমে উর্বরতা
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে নারীর সন্তান জন্মদান ক্ষমতা বা উর্বরতা কমতে থাকে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বদলাতে থাকা ডিম্বাণু ও মান কমে যাওয়াই এর মূল কারণ। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউটেরিন ফাইব্রয়েডস, ফেলোপিয়ান টিউবে ব্লক ও এন্ডোমেট্রিওসিসের মতো অন্যান্য স্বাস্থ্য ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়। যে কারণে উর্বরতা কমে যেতে পারে।
পাভোন বলেন, ‘৩০ বছরের পর নারীদের জন্মদান ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। ৩৭ বছরের পর তা আরও কমে যায় এবং ৪০ এর পর তা অনেকখানি হ্রাস পায়।‘
হ্রাস পাওয়ার অর্থ গর্ভধারণে বেশি সময় লাগতে পারে।
৯. ধূমপান ও মদ্যপানে ক্ষতি
ধূমপানের কারণে নারী ও পুরুষ উভয়েরই বন্ধ্যাত্বের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আমেরিকান সোসাইটি অফ রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিনের মতে, সিগারেটের নিকোটিন ও কার্বন মনোক্সাইডের মতো রাসায়নিক নারীর ডিম্বাণু নষ্ট হওয়ার হারকে ত্বরান্বিত করে।
মেয়ো ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধূমপান নারীর ডিম্বাশয়ের জীর্ণতা তৈরি করে এবং দ্রুত এর ডিম্বাণুকে নিঃশেষ করে দেয়। ২০২০ সালে রিপ্রোডাকটিভ বায়োলজি অ্যান্ড এন্ডক্রাইনোলজি জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, জন্মদান ক্ষমতা হ্রাসের সঙ্গে ধূমপানের যোগাযোগ রয়েছে।
বিএমজে জার্নালে ২০০৯ সালে প্রকাশিত এক গবেষণা বলছে, নারীদের সেকেন্ড হ্যান্ড স্মোক (পরোক্ষ ধূমপান) থেকেও দূরে থাকা উচিত। পরোক্ষ ধূমপানও গর্ভধারণের ক্ষমতায় প্রভাব ফেলতে পারে। গর্ভাবস্থা বা গর্ভ ধারণ প্রক্রিয়ায় থাকার সময় মারিজুয়ানা গ্রহণ থেকেও বিরত থাকা উচিত।
গর্ভধারণের ইচ্ছা থাকলে মদ্যপানে ইস্তফা দেয়াটি নিরাপদ। তবে, ২০০৯ সালে হিউম্যান রিপ্রোডাকশন জার্নালে ১,৭০৮ জন নারীকে নিয়ে ডেনিশ বিজ্ঞানীদের একটি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। এতে বিজ্ঞানীদের দাবি, পাঁচ বছর ধরে চলা তাদের গবেষণায় নিয়মিত মদ্যপান, অত্যাধিক মদ্যপান ও জন্মদানের ক্ষমতার মধ্যে কোনো যোগসূত্র পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, অবস্টেট্রিকস অ্যান্ড গায়নোকলজিতে ২০১৭ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় অর্ধেক নারী গর্ভাবস্থায়, গর্ভধারণের ঠিক আগে বা যখন তারাও জানেন না যে গর্ভধারণ করতে যাচ্ছেন সে সময় মদ্যপান করেন।
দ্য আমেরিকান কলেজ অফ অবস্টেট্রিকস অ্যান্ড গায়নোকলজির মতে, মাঝারি মাত্রায় মদ্যপান (দিনে ১-২ বার) বা বেশি মদ্যপান (দিনে দুই বা ততোধিকবার মদ্যপান) একজন নারীর গর্ভধারণের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে।
পাভোনও একমত এ বিষয়ে। তার মতে, গর্ভধারণের পর নিরাপদ মাত্রায় মদ্যপান বলে কিছু নেই।
১০. কখন সাহায্য লাগবে সেটা জানুন
পাভোন বলেন, ‘নারীর বয়স ৩৫ বছরের ওপরে হলে এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ছাড়া নিয়মিত যৌন সম্পর্কের পর ছয় মাসের মধ্যে সন্তানসম্ভবা না হলে নারী ও পুরুষ উভয়েরই বন্ধ্যাত্বের পরীক্ষা করানো উচিত।’
পাভোনের মতে, যে সব নারীর বয়স ৩৫ বছরের নিচে, তারা জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার না করে এক বছর নিয়মিত যৌন সম্পর্কের পরেও গর্ভধারণ করতে না পারলে তার সঙ্গীর বন্ধ্যাত্বের পরীক্ষা করানো উচিত।
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমে করণীয়
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (পিসিওএস) একটি হরমোনজনিত সমস্যা। নারীর বন্ধ্যাত্বের অন্যতম কারণ এটি। আমেরিকায় প্রজননক্ষম ৬-১২ শতাংশ নারী এ রোগে ভোগেন।
পিসিওএস চিহ্নিত করার জন্য নির্দিষ্ট কোনো পরীক্ষা নেই, তবে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসকেরা নিচের তিনটি লক্ষণের অন্তত দুটি খোঁজার চেষ্টা করেন:
ওভুলেশন হ্রাস পাওয়ায় পিরিয়ড না হওয়া অথবা অনিয়মিত হওয়া।
সাধারণ মাত্রার চেয়ে বেশি পুরুষ হরমোনের কারণে মুখে ও শরীরে পশমের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, চুল পাতলা হয়ে যাওয়া।
ডিম্বাশয়ে একাধিক সিস্ট হওয়া।
নারীরা কেন এ ধরনের সমস্যায় ভোগেন সে ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা এখনও পরিষ্কার নন। তবে গর্ভধারণের চেষ্টা করার সময়ে অনেকের মধ্যে সমস্যগুলো ধরা পড়ে।
পিসিওএসজনিত বন্ধ্যাত্ব ও ওজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। থেরাপিউডিক অ্যাডভান্সেস ইন রিপ্রোডাকটিভ হেলথ জার্নালে ২০১৯ সালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে দাবি করা হয়, পিসিওএসে আক্রান্ত ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ নারী অতিরিক্ত ওজন বা ওবিসিটিতে ভুগছেন। স্বাস্থ্যকর খাবার ও নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস পিসিওএসে আক্রান্ত নারীর প্রজনন সংক্রান্ত সমস্যা কমাতে সক্ষম।
মেটফরমিন ও লেট্রোজোলের মতো অনেকগুলো ওষুধ ওভুলেশনে সাহায্য করে এবং ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম। ইনসুলিনের মাত্রা উচ্চ হলে পিটুইটারি গ্ল্যান্ড থেকে হরমোন নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে যায়, যা ওভুলেশন প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে।
আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে ল্যাপারোস্কোপিক ওভারিয়ান ড্রিলিং। আমেরিকান সোসাইটি ফর রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিনের তথ্য অনুসারে, এ পদ্ধতিতে একজন সার্জন বাড়তি হরমোন কমাতে ডিম্বাশয়ে ছোট কয়েকটি ফুটো করে দেন। তবে রোগীকে পুরো অজ্ঞান করে করা এ সার্জারি পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত নয়। অনেক সময় এতে ডিম্বাশয়ের ক্ষতি হতে পারে, যা হিতে বিপরীত ফল ডেকে আনতে পারে।
বিকল্প পদ্ধতিগুলো কাজ না করলে চিকিৎসকেরা ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (টেস্ট টিউব বা এ ধরনের কোনো পদ্ধতিতে গর্ভধারণ) করার অনুমোদন দেন।
এনডোমেট্রিওসিস আক্রান্তদের গর্ভধারণ
প্রজননতন্ত্রের আরেকটি রোগ এনডোমেট্রিওসিস। আমেরিকায় প্রতি ১০ জন নারীর একজন এই রোগে আক্রান্ত হন। এক্ষেত্রে জরায়ুতে পাওয়া টিস্যু নারীর ডিম্বাশয় বা ফেলোপিয়ান টিউবেও তৈরি হতে শুরু করে।
জার্নাল অফ অবস্টেট্রিকস অ্যান্ড গায়নোকলজি অফ ইন্ডিয়ার করা ২০১৫ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, মৃদু এনডোমেট্রিওসিসও প্রজননক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। রোগের তীব্রতা বেশি হলে তা নারীর শ্রোণি অঞ্চলকে ক্ষতিগ্রস্ত এবং ফেলোপিয়ান টিউবে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে।
এনডোমেট্রিওসিসে আক্রান্ত নারীর পক্ষেও গর্ভধারণ করা সম্ভব। আর একবার গর্ভবতী হলে এনডোমেট্রিওসিস আক্রান্ত নন এমন নারীর সঙ্গে তার গর্ভাবস্থার কোনো পার্থক্য নেই।
যুক্তরাজ্যের এনডোমেট্রিওসিস সংক্রান্ত দাতব্য সংস্থা এনডোমেট্রিওসিস ইউকের মতে, ওষুধের সাহায্যে চিকিৎসায় প্রজনন সক্ষমতা বৃদ্ধি পায় না। আমেরিকার দাতব্য স্বাস্থ্য সংস্থা মেয়ো ক্লিনিকের মতে, এই ওষুধগুলোর মাধ্যমে রোগীর হরমোন নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এতে করে তার জরায়ুর টিস্যুর বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং নতুন টিস্যু তৈরিতেও বাধা সৃষ্টি করে। তবে ওষুধগুলো হরমোনের ওপর নির্ভরশীল বলে (এগুলো সাধারণত জন্মনিয়ন্ত্রণ, ওভুলেশন পদ্ধতিকে আটকে দেয়া বা অ্যাস্ট্রোজেনের পরিমানকে কমানোর ওষুধ) এটি নারীর গর্ভধারণে বাধা দেয়।
আমেরিকান সোসাইটি ফর রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিনের মতে, একেক নারীর ওপর এনডোমেট্রিওসিস একেকভাবে প্রভাব ফেলে। যে কারণে চিকিৎসা পদ্ধতিও আলাদা।
জার্নাল অফ অবস্টেট্রিকস অ্যান্ড গায়নোকলজি অফ ইন্ডিয়ার করা ২০১৫ সালের গবেষণাটিতে দেখা গেছে, এনডোমেট্রিয়াল ও স্কার টিস্যু সার্জারি করে আপসারণ করলে প্রজনন ক্ষমতা বাড়তে পারে এবং এনডোমেট্রিওসিসের ব্যথা দূর করতে পারে।
প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধির অন্যান্য পদ্ধতি যেমন, আইভিএফ, ওভুলেশন ঘটানো, কৃত্রিম ইনসেমিনেশন ও নারীর ডিম্বাশয়কে উদ্দীপ্ত করে ডিম্বাণু উৎপন্ন করার অন্য প্রক্রিয়াগুলো একজন এনডোমেট্রিওসিস আক্রান্ত নারীকে গর্ভধারণে সহায়তা করতে পারে।
তবে বিষয়টি এনডোমেট্রিওসিসের তীব্রতা, নারীর বয়স ও প্রজনন সংক্রান্ত অন্যান্য কোনো জটিলতা আছে কি না তার ওপর নির্ভরশীল। এনডোমেট্রিওসিস ইউকের মতে, প্রজনন ক্ষমতা বাড়ানোর চিকিৎসায় চিন্তার বিষয় হচ্ছে এর মাধ্যমে অনেক সময় ডিম্বাশয় বাড়তি উদ্দীপনা গ্রহণ করে। এতে একাধিক ডিম্বাণু নিষিক্ত হয় এবং একাধিক সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর র্যাডার ইউনিট বগুড়ায় বুধবার (১৮-৬-২০২৫) নব স্থাপিত জিএম ৪০৩এম আকাশ প্রতিরক্ষা র্যাডার এর উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মানিত বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন, বিবিপি, ওএসপি, জিইউপি, এনএসডব্লিউসি, পিএসসি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আকাশ প্রতিরক্ষা র্যাডার এর উদ্বোধন করেন।
বিমান বাহিনীকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য নতুন নতুন স্থাপনা ও যুদ্ধোপকরণ সংযোজন চলমান রয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় আকাশ প্রতিরক্ষা র্যাডারটি আনুষ্ঠানিকভাবে বিমান বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হলো। ‘বাংলার আকাশ রাখিব মুক্ত’ এই অঙ্গীকারে আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। নতুন অন্তর্ভুক্ত র্যাডারটি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর আকাশ প্রতিরক্ষার সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও, অত্যাধুনিক এ র্যাডারটি বিমান বাহিনীর প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধিতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে।
এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাগণসহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এ বছর ঈদুল আজহায় তরুণ নির্মাতা, পরিবার ও ভ্লগারদের জন্য দারুণ সুযোগ নিয়ে এসেছে বৈশ্বিক প্রযুক্তি ব্র্যান্ড অপো। ঐতিহ্যবাহী গরুর হাটের প্রাণবন্ত ও উষ্ণ পরিবেশকে আরও বেশি উৎসবমুখর করে তুলতে নিয়ে আসা হয়েছে ‘অপো হাটে কী?’ ক্যাম্পেইন।
৩০ মে থেকে আগামী ৬ জুন পর্যন্ত বন্ধু-বান্ধব বা পরিবারের সাথে কাছাকাছি যেকোনো গরুর হাটে গিয়ে বিশেষ মুহূর্তগুলোকে ক্যামেরায় ধারণ করার অনুরোধ জানিয়েছে অপো। হোক সেটা নিখুঁত গরু খোঁজা, দরকষাকষি, হাস্যরসাত্মক কোনো ঘটনা বা পছন্দের গরু বা ছাগলের সাথে মজার কোনো মুহূর্ত! যেখানে প্রতিটি মুহূর্তই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রয়োজনে অংশ নিতে আপনার নিকটস্থ ‘হাটে’ যান। ঈদুল আজহা উপলক্ষে নিয়ে আসা স্পেশাল ইফেক্ট ব্যবহার করতে, টিকটকের ফিল্টার অপশন থেকে ‘অপো হাটে কী’ সার্চ করে অপোর এক্সক্লুসিভ ঈদ এআর ফিল্টার ব্যবহার করুন। হাটে আপনার অভিজ্ঞতা ছবি, রিল বা স্টোরি আকারে ধারণ করুন। আপনার পছন্দের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে #HaateKi ব্যবহার করুন এবং @OPPOBangladesh ট্যাগ করে পোস্ট দিন।
আপনার ঈদের আনন্দ উদযাপনকে আরও বহুগুণ বাড়িয়ে তুলতে সবচেয়ে সৃজনশীল, আবেগঘন ও বিনোদনপূর্ণ এন্ট্রিটি জিতে নিবে অপোর আকর্ষণীয় স্মার্টফোন।
এটি কেবল কনটেন্ট তৈরির ব্যাপার নয়; একইসাথে, ঐতিহ্যকে আধুনিকতার সাথে যুক্ত করার একটি প্রচেষ্টা। সর্বাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে আসা অপোর এই ক্যাম্পেইনে সবাই তাদের সংস্কৃতি, গল্প ও উৎসবকে নতুনভাবে উপস্থাপন করার সুযোগ পাবে।
এ বিষয়ে অপো বাংলাদেশ অথোরাইজড এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটরের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড্যামন ইয়াং বলেন, “ঈদুল আজহার প্রকৃত অনুভূতি তুলে ধরতেই ‘অপো হাট ডায়েরিজ’ নিয়ে আসা হয়েছে, যেন আনন্দ, ঐতিহ্য ও স্মরণীয় মুহূর্তগুলো মানুষ তাদের প্রিয়জনের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে পারে। এ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আমরা তরুণদের সৃজনশীল অভিজ্ঞতাকে বিকশিত করতে চাই, যেখানে সংস্কৃতি আর প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটবে। স্মৃতিময় মুহূর্ত ও একসাথে আনন্দ ভাগাভাগি করার সুযোগ নিয়ে এসেছে এ উৎসব।”
তাই, এবারের ঈদুল আজহায় আনন্দ উদযাপনকে আরও বেশি রঙিন করে তুলুন অপো’র সাথে। ক্যামেরা হাতে সৃজনশীলতাকে বিকশিত করুন, আর ঐতিহ্যকে রাখুন প্রাণবন্ত; কারণ, অপো’র সাথে প্রতিটি মুহূর্তই যেন হয়ে ওঠে অনন্য সৃষ্টি!
ডিজিটাল যুগে পণ্য কিংবা সেবা খাতে দেশের অন্যতম বৃহৎ থার্ড পার্টি মেইনটেন্যান্স প্রতিষ্ঠান ‘সার্ভিসিং২৪’ নিয়ে এসেছে সর্বাধুনিক ও সমন্বিত আইটি অবকাঠামো সমাধান—‘ইনফ্রাস্ট্যাক’ ও ‘এইচসিআই’। আরে এতে খরচ কমবে প্ইরায় ৭০ শতাংশ। ইনফ্রাস্ট্যাক হচ্ছে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ও স্ট্যাক এর সংক্ষিপ্ত রূপ, যেটির মাধ্যমে সম্পূর্ণ ও সমন্বিত অবকাঠামোগত আইটি সেবা প্রদান করা হবে। আর ‘এইচসিআই’ এর অর্থ হাইপার কনভারজড ইনফ্রাস্টাকচার এটি স্টোরেজ ও নেটওয়ার্কিং এর সমন্বয়ে সফ্টওয়্যার-ভিত্তিক ডিস্ট্রিবিউটেড ও কম্পিউট ফ্রেমওয়ার্ক।
সার্ভিসিং২৪ বলছে, এই ইনফ্রাস্ট্যাক এইচসিআই সল্যুশনে গ্রাহকরা মোট ৪টি মডেলে ‘সার্ভিসিং২৪’-এর এর কাছ থেকে সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। এগুলো হচ্ছে- সার্ভার রেন্টাল সার্ভিস, হার্ডওয়্যার রেন্টাল সাপোর্ট, ম্যানেজড আইটি সার্ভিস এবং বান্ডেল রেন্টাল সার্ভিস।
গ্রাহকদের জন্য আরো সুখবর হলো- পুরো সল্যুশনটি সম্পূর্ণ ওপেন সোর্স হওয়ায় কোনো ধরনের অতিরিক্ত লাইসেন্সিং খরচ প্রয়োজন হবে না। পাশাপাশি মাসিক ভাড়া-ভিত্তিক সেবার ফলে বড় অংকের প্রাথমিক বিনিয়োগও লাগবে না। এই সাশ্রয়ী প্রাইভেট ক্লাউড সল্যুশনটি বিশেষভাবে উপযোগী ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান, স্টার্টআপ, মূলধন সীমাবদ্ধ সরকারি সংস্থা, শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বড় শহরের ডেটা সেন্টার এবং পরিবেশবান্ধব আইটি প্রকল্পগুলোর জন্য।
এ বিষয়ে সার্ভিসিং২৪ এর সিইও নাসির ফিরোজ বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং গ্রাহকদের জন্য সাশ্রয়ী, টেকসই ও আধুনিক আইটি সল্যুশন নিশ্চিত করা। ইনফ্রাস্ট্যাক এইচসিআই এর মাধ্যমে তা সম্ভব। এটি গ্রাহকদের সর্বোচ্চ ৭০% পর্যন্ত খরচ সাশ্রয় করবে।”
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হবার পর হতে ‘সার্ভিসিং২৪’ বাংলাদেশের আইটি সাপোর্ট সার্ভিস ল্যান্ডস্কেপের অন্যতম শীর্ষ উদ্ভাবক-এ পরিণত হয়েছে। প্রযুক্তিখাতে বেড়ে চলা চাহিদা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি নিজেকে থার্ড-পার্টি মেইনটেন্যান্স(টিপিএম), ম্যানেজড আইটি সার্ভিসেস, এন্টারপ্রাইজ আইটি সাপোর্ট ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে। কোম্পানিটি হার্ডওয়্যারের লাইফ বর্ধিত করে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ কার্বন ইমিশন কমিয়ে আনার পাশাপাশি টেকসই ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অগ্রণী ভূমিকা রাখছে।
‘সার্ভিসিং২৪’-এর প্রধান প্রধান সেবাগুলো হচ্ছে, থার্ড-পার্টি মেইনটেন্যান্স(টিপিএম), এন্টারপ্রাইজ সার্ভার অ্যান্ড স্টোরেজ সাপোর্ট, ম্যানেজড আইটি সার্ভিসেস, আইটি ইনফ্রাস্ট্র্যাকচার মনিটরিং, এএমসি অ্যান্ড স্পেয়ার পার্টস লাইফসাইকেল ম্যানেজমেন্ট, ক্লাউড সল্যুশন্স অ্যান্ড সাইবার সিকিউরিটি, আইটিএসএম সফ্টওয়্যার অ্যান্ড মোবাইল প্ল্যাটফর্ম ইত্যাদি। প্রতিষ্ঠানটি ব্যাংক, ফার্মাসিউটিক্যালস, অটোমোবাইলস, এফএমসিজি, হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট এবং অন্যান্য কোম্পানিকে আইটি সেবা দিয়ে থাকে।
স্মার্টফোন এখন আর শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং কাজ, বিনোদন ও স্বাস্থ্যসহ দৈনন্দিন জীবনের নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহৃত একটি অপরিহার্য প্রযুক্তি। এসব কাজে নিরবিচ্ছিন্ন ব্যবহার নিশ্চিতে স্মার্টফোনের ব্যাটারি পারফরম্যান্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ব্যবহারকারীদের চাহিদা অনুযায়ী ডিভাইস যেন অতিরিক্ত গরম না হয়, হ্যাং না করে এবং দীর্ঘক্ষণ কার্যকর থাকে—এই সবকিছু মাথায় রেখেই বাজারে এসেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক স্মার্ট ব্যাটারি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম।
স্মার্ট ব্যাটারি: আধুনিক চাহিদার সমাধান
আগে ভালো ব্যাটারি মানে ছিল উচ্চ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ক্ষমতা। কিন্তু এখন ব্যাটারি মূল্যায়নে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক বিবেচনায় নেওয়া হয়। অ্যাডাপটিভ পাওয়ার এলোকেশন, ইউজার বিহেভিয়ার অ্যানালাইসিস এবং তাপ নিয়ন্ত্রণ—এই আধুনিক প্রযুক্তিগুলো ব্যাটারির পারফরম্যান্সকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। যারা বাইরে দীর্ঘ সময় থাকেন, ভিডিও কল, সোশ্যাল মিডিয়া বা নেভিগেশনের মতো ব্যাটারি-নির্ভর কাজে স্মার্টফোন ব্যবহার করেন, তাদের জন্য এসব প্রযুক্তি কার্যকর সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে।
এআই: শক্তির নতুন চালিকাশক্তি
বর্তমান বাজারের বেশিরভাগ স্মার্টফোনেই এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) প্রযুক্তি সংযোজন করা হয়েছে। এটি অ্যাপ প্রিডিকশন, ব্যাকগ্রাউন্ড টাস্ক সীমিতকরণ এবং স্ক্রিন-অফ অপ্টিমাইজেশনের মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় শক্তি খরচ কমিয়ে দেয়। ব্যবহারকারীরা চাইলে নির্দিষ্ট অ্যাপকে অগ্রাধিকার দিতে পারেন কিংবা ব্যাটারি কমে গেলে ‘আল্ট্রা পাওয়ার সেভিং মোড’ চালু করতে পারেন। ফলে ব্যাটারি ব্যাকআপ যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনি ডিভাইস ব্যবহারে ব্যবহারকারীর নিয়ন্ত্রণও বাড়ে।
চার্জিং প্রযুক্তিতে বিপ্লব
শুধু ব্যাটারি ব্যবস্থাপনাই নয়, স্মার্ট চার্জিং প্রযুক্তিতেও এসেছে দারুণ অগ্রগতি। এর উল্লেখযোগ্য উদাহরণ ইনফিনিক্সের নতুন নোট ৫০ সিরিজ। এই সিরিজের প্রতিটি মডেলে রয়েছে ৫২০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি, যার চার্জিং ক্ষমতা ৪৫ ওয়াট থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০০ ওয়াট পর্যন্ত। সেই সঙ্গে রয়েছে ম্যাগচার্জ প্রযুক্তি-ভিত্তিক ৫০ ওয়াটের ওয়্যারলেস চার্জিং সুবিধা।
চার্জিং প্রযুক্তিতেও ব্যবহৃত হয়েছে এআই, যা চার্জিং স্পিড ও ব্যাটারির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, ফলে ব্যাটারির দীর্ঘস্থায়িত্ব ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
স্মার্টফোন ব্যবহারে নতুন মাত্রা
নোট ৫০ সিরিজে যুক্ত হয়েছে ইনফিনিক্সের নিজস্ব এআই♾️ প্রযুক্তি, যা ব্যবহারকারীর আচরণ বিশ্লেষণ করে ডিভাইস পারফরম্যান্স ও অভিজ্ঞতা আরও উন্নত করে। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ফিচারের মধ্যে রয়েছে ডিপ সিক এআই, ওয়ান-ট্যাপ এআই ক্যামেরা এবং এআই নয়েস মিউট।
এছাড়া রয়েছে বায়ো-এক্টিভ হ্যালো লাইট নোটিফিকেশন—যা কাজের বিঘ্ন না ঘটিয়ে প্রয়োজনীয় বার্তা পৌঁছে দেয়।
সব মিলিয়ে ইনফিনিক্স নোট ৫০ সিরিজ শক্তিশালী ব্যাটারি, কার্যকর চার্জিং প্রযুক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সমন্বয়ে স্মার্টফোন ব্যবহারে নতুন এক অভিজ্ঞতা উপহার দিচ্ছে, যা ব্যবহারকারীর আধুনিক চাহিদা পূরণে সক্ষম।
অ্যাস্টন মার্টিন ফরমুলা ওয়ান টিমের সাথে আজ যুগান্তকারী তিন বছর মেয়াদী কৌশলগত অংশীদারিত্বের ঘোষণা দিলো রিয়েলমি। আর এই সহযোগিতার মাইলফলক হিসেবে জিটি ৭ ড্রিম এডিশনের আকর্ষণীয় কো-ব্র্যান্ডেড সংস্করণ নিয়ে এসেছে ব্র্যান্ডটি।
এ বিষয়ে রিয়েলমি’র সিইও স্কাই লি বলেন, “অ্যাস্টন মার্টিন আরামকোর মতো কিংবদন্তি রেসিং টিমের সঙ্গে সহযোগিতা, আমাদের জন্য উদ্ভাবনের সীমানা অতিক্রম করে যাওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কেবল আমাদের নিখুঁত পণ্যগুলোই টিকে থাকার মতো সক্ষমতা অর্জন করে। আমরা আমাদের নতুন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী ব্যবহারকারীদের কাছে অসাধারণ ডিজাইন ও প্রিমিয়াম কারিগরি দক্ষতা নিয়ে যেতে চাই।”
এ বিষয়ে অ্যাস্টন মার্টিন আরামকো ফর্মুলা ওয়ান টিমের হেড অব লাইসেন্সিং অ্যান্ড মার্চেন্ডাইজ ম্যাট চ্যাপম্যান বলেন, “আমাদের প্রথম কো-ব্র্যান্ডেড ফোন উন্মোচনের পাশাপাশি, রিয়েলমিকে টিমে স্বাগত জানাতে পেরে আমরা উচ্ছ্বসিত। জিটি ৭ ড্রিম এডিশনে উচ্চ সক্ষমতা ও উদ্ভাবনী ডিজাইনের সমন্বয় রয়েছে; আগামীর মডেলগুলোতে একযোগে কাজ করার জন্য আমরা অধীর আগ্রহে রয়েছি।”
বৈশ্বিকভাবে দ্রুতবর্ধনশীল স্মার্টফোন ব্র্যান্ড হিসেবে রিয়েলমি, বিশ্বজুড়ে তরুণ ব্যবহারকারীদের প্রত্যাশা ছাড়িয়ে প্রযুক্তিগত অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নির্ভুল প্রকৌশল, অসাধারণ কর্মদক্ষতা ও অনন্য ডিজাইনের জন্য বিখ্যাত অ্যাস্টন মার্টিন ফর্মুলা ওয়ানের সাথে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে রিয়েলমি আগামী প্রজন্মের জন্য অনবদ্য প্রযুক্তি অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করছে।
এই সহযোগিতার মাধ্যমে রিয়েলমি জিটি ৭ ড্রিম এডিশনের মতো একটি অসাধারণ কো-ব্র্যান্ডেড সিরিজ উন্মোচন করা হয়েছে। এই স্মার্টফোনটি কেবল রিয়েলমি’র জিটি সিরিজের ফ্ল্যাগশিপ পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতাই নয়; একইসাথে, এতে আইকনিক দুই পাখার ডিজাইন ও অ্যাস্টন মার্টিনের বিশেষ গ্রিন কালার রয়েছে। এ সহযোগিতার অংশ হিসেবে, দু’পক্ষ প্রতিবছর দুইটি মডেল একযোগে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছে, যা এই অংশীদারিত্বকে আরও বেশি আকর্ষণীয় ও প্রত্যাশিত করে তুলেছে।
রিয়েলমি জিটি ৭ সিরিজের বৈশ্বিক উন্মোচন অনুষ্ঠান আজ ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেখানে জিটি ৭ সিরিজ ও ড্রিম এডিশন সম্পর্কে আরও বিস্তারিত সব তথ্য উন্মোচিত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
তরুণদের প্রিয় প্রযুক্তি ব্র্যান্ড রিয়েলমি বাংলাদেশে তাদের বিশেষ ঈদ ক্যাম্পেইন ঘোষণা করেছে। ব্যবহারকারীদের মাঝে ঈদের আনন্দ ছড়াতে প্রস্তুত ব্র্যান্ডটি। সীমিত সময়ের এ ক্যাম্পেইনটি কেবল বড় কিছু জেতার সুযোগই দিচ্ছে না, বরং প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীর জন্যই নিশ্চিত করছে আকর্ষণীয় উপহার।
লটারির মাধ্যমে সৌভাগ্যবান বিজয়ীদের জন্য ৪টি গ্র্যান্ড প্রাইজ নিয়ে এসেছে রিয়েলমি। এতে প্রথম পুরস্কার বিজয়ী পাবেন ১,০০,০০০ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার বিজয়ী পাবেন ৬০,০০০ টাকা। তৃতীয় পুরস্কারে রয়েছে নির্দিষ্ট রিয়েলমি পণ্যের ক্ষেত্রে আকর্ষণীয় বাই ওয়ান গেট ওয়ান (বোগো) অফার এবং চতুর্থ পুরস্কার হিসেবে থাকছে রিয়েলমি টি২০০ লাইট এয়রবাডস।
এসব পুরস্কার ছাড়াও আরও কিছু নিশ্চিত উপহার নিয়ে এসেছে রিয়েলমি; যেন লটারি যারা জিতবেন না তারাও এ উদযাপনে অংশ নিতে পারেন। ক্রেতাদের মানসিক প্রশান্তি নিশ্চিত করতে রিয়েলমি সি৭৫ বা রিয়েলমি সি৭৫এক্স কেনার ক্ষেত্রে ২ বছরের বাড়তি ওয়ারেন্টি পাওয়া যাবে।
রিয়েলমি ১২ স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে ক্রেতারা পাবেন ২,০০০ টাকার ইনস্ট্যান্ট ক্যাশব্যাক; ফলে, ২৭,৯৯৯ টাকার এই ডিভাইসটি পাওয়া যাবে মাত্র ২৫,৯৯৯ টাকায়।
রিয়েলমি ১৪ সিরিজ কেনার ক্ষেত্রে রিয়েলমি ব্র্যান্ডের আকর্ষণীয় টি-শার্ট পাবেন ক্রেতারা। পাশাপাশি, ক্যাম্পেইনে অংশ নেয়া সকল ক্রেতা বাংলালিংকের অংশীদারিত্বে বিশেষ অফার উপভোগ করার সুযোগ পাবেন।
কেবল সর্বাধুনিক প্রযুক্তি নিশ্চিত করাই নয়, একইসাথে, ব্যবহারকারীদের জন্য আকর্ষণীয় পুরস্কার ও সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা নিয়ে আসার ক্ষেত্রে রিয়েলমি’র ধারাবাহিক প্রচেষ্টার বহিঃপ্রকাশ এই ঈদ ক্যাম্পেইন। উৎসবের এ সময়ে প্রত্যেক ক্রেতাই যেন নিজেকে বিজয়ী মনে করেন, তা নিশ্চিত করতেই দুর্দান্ত সব পুরস্কার ও নিশ্চিত উপহার নিয়ে এসেছে ব্র্যান্ডটি।
ক্যাম্পেইন ও এতে কীভাবে অংশ নিবেন, তা আরও বিস্তারিত জানতে রিয়েলমি বাংলাদেশের অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া পেইজ ও ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
তরুণদের পছন্দের টেক ব্র্যান্ড রিয়েলমি বাংলাদেশের বাজারে তাদের সর্বশেষ স্মার্টফোন রিয়েলমি সি৭১ নিয়ে এসেছে। নিরবচ্ছিন্ন ব্যাটারি পারফরম্যান্স চাইছেন এমন ব্যবহারকারীদের জন্য এই ডিভাইসটি ডিজাইন করা হয়েছে। রিয়েলমি’র নতুন এই ফোনে দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি লাইফ, এআই-সক্ষম ফিচার ও প্রাণবন্ত ডিসপ্লেসহ আধুনিক ও স্টাইলিশ ডিজাইন ব্যবহার করা হয়েছে।
রিয়েলমি সি৭১-এ রয়েছে সুবিশাল ৬,৩০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি ও ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সুবিধা, যা সারাদিন নিরবচ্ছিন্ন সক্ষমতা প্রদান করে। মাত্র ১ ঘণ্টার চার্জেই ব্যবহারকারীরা দুই দিনের জন্য ফোনটি নির্বিঘ্নে ব্যবহার করতে পারবেন, যা এখনকার ব্যস্ত জীবনযাপনের সাথে মানিয়ে যাবে। একইসাথে, এই ব্যাটারি ও চার্জিং দীর্ঘস্থায়ী ও কার্যকর সক্ষমতা নিশ্চিত করে ব্যবহারকারীকে নিশ্চিন্ত রাখতে সহায়তা করে।
রিয়েলমি সি৭১-এর নান্দনিক ও প্রাণবন্ত ডিজাইন তরুণ ব্যবহারকারীদের পছন্দের সঙ্গে মানানসই। এর ‘লাইট পালস’ নোটিফিকেশন ফিচারটি বিশেষ করে, মিটিং বা গুরুত্বপূর্ণ আলাপ চলাকালে কল বা মেসেজ আসার সময় নিঃশব্দে চোখে পড়বে। ফোনটির ১২০ হার্জ রিফ্রেশ রেট ডিসপ্লের ক্ষেত্রে আরামদায়ক ও স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক অনুভূতি নিশ্চিত করে। এই দামের অন্যান্য ফোনের ক্ষেত্রে এই রিফ্রেশ রেট সাধারণত দেখা যায় না; ফলে রিয়েলমি’র এই ফোনটি গেম খেলা, সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল করা বা ভিডিও দেখার অভিজ্ঞতাকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
রিয়েলমি সি৭১-এ এআই-সক্ষম একাধিক ফিচার রয়েছে, যা দৈনন্দিন কাজগুলো আরও সহজ ও সাবলীল করে। এর মধ্যে রয়েছে এআই নয়েজ রিডাকশন কল ২.০, যা কলের ব্যাকগ্রাউন্ডের নয়েজ কমায়। এআই ক্লিয়ার ফেস যা ক্যামেরা পারফরম্যান্সকে আরও সমৃদ্ধ করে। এআই ইমেজ ম্যাটিং, যা সহজেই ব্যাকগ্রাউন্ড এডিট করতে সহায়তা করে। এআই ইরেজার, যা ছবি থেকে অপ্রয়োজনীয় বিষয় অপসারণ করে। এছাড়াও, গুগল জেমিনি ও সার্কেল-টু-সার্চ ব্যবহারকারীদের জন্য এআই সার্চের সুবিধা নিশ্চিত করে। এসব ফিচার একত্রে স্মার্টফোন ব্যবহারে নতুন মাত্রা যোগ করে।
ফোনটিতে রয়েছে ৫০ মেগাপিক্সেলের একটি এআই ক্যামেরা, যা ব্যবহারকারীদের নিখুঁত ও ঝকঝকে ছবি তুলতে সহায়তা করে। এই ডিভাইসে প্রাইমারি ক্যামেরার সাথে রয়েছে- একটি ফ্লিকার লেন্স, যেটি পারিপার্শ্বিক আলো থেকে ফ্লিকার ফ্রিকোয়েন্সি নির্ণয় করে এবং ছবি তোলার সময় ফ্লিকার নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া- রিয়ার প্যানেলে আছে ‘পালস লাইট’ অর্থ্যাৎ আলোর ভিন্ন একটি প্যানেল, যার মাধ্যমে ভাইব্রেশন কিংবা শব্দ ছাড়াই এক ধরনের নোটিফিকেশন পাবেন গ্রাহকরা।
পাশাপাশি, স্মৃতিময় মুহূর্ত ধারণ করার জন্য রয়েছে ৫ মেগাপিক্সেল সেলফি ক্যামেরা। অ্যান্ড্রয়েড ১৫ ভিত্তিক রিয়েলমি’র ইউজার ইন্টারফেস ব্যবহারকারীদের জন্য অনবদ্য অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে। এছাড়া, এর আইপি৬৪ রেটিংয়ের ওয়াটার অ্যান্ড ডাস্ট রেজিজট্যান্স ও সনিকওয়েভ ওয়াটার ইজেকশন প্রযুক্তি ফোনটিকে যেকোনো পরিবেশের জন্য সহনীয় ও টেকসই করে তোলে।
রিয়েলমি সি৭১ দুটি ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাবে। ৪ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবি স্টোরেজের মূল্য মাত্র ১৪,৯৯৯ টাকা এবং ৬ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবি স্টোরেজের মূল্য মাত্র ১৫,৯৯৯ টাকা। স্মুথ মাল্টিটাস্কিং ও অনবদ্য পারফরম্যান্স নিশ্চিত করতে এতে ডায়নামিক মেমরি এক্সপানশন ব্যবহার করা হয়েছে, যা ২ টেরাবাইট পর্যন্ত বৃদ্ধি করে নেয়া সম্ভব।
মন্তব্য