× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
10 strategies to increase fertility
google_news print-icon

গর্ভধারণ সক্ষমতা বাড়ানোর ১০ কৌশল

গর্ভধারণ
গর্ভধারণের চেষ্টা করেও সফল হচ্ছেন না অনেক নারী। সন্তান ধারণের সক্ষমতা বাড়াতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসাপদ্ধতি। তবে খাদ্যাভ্যাসসহ কিছু শারীরিক কৌশল অনুসরণেও বাড়তে পারে গর্ভধারণের সম্ভাবনা। এ ধরনের ১০টি সহায়ক কৌশল জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। 

গর্ভধারণের সঠিক ও কার্যকর উপায় বলতে গেলে নানা রহস্যে ঘেরা। ফলে গর্ভধারণে সক্ষম নারীও অনেক সময় জটিলতায় ভুগতে পারেন। আবার খাদ্যাভ্যাসসহ কিছু শারীরিক কারণেও বিলম্বিত হতে পারে গর্ভধারণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবার আগে জানতে হবে নিজের শরীরকে। যত্ন নিতে হবে শরীরের। এ ছাড়া কিছু অভ্যাস মেনে চললে গর্ভধারণের জটিলতা অনেকটাই কমে আসতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর নর্থওয়েস্টার্ন মেডিসিনস রিপ্রোডাকটিভ এন্ডোক্রাইনোলজি অ্যান্ড ইনফার্টিলিটি বিভাগের কৃত্রিম প্রজনন শাখার পরিচালক ও ইনফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞ ড. ম্যারি অ্যালেন পাভোনের মতে, গর্ভধারণে আগ্রহী নারীর জন্য সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো নিজের শরীর, বিশেষত ঋতুচক্রকে জানা।

পাভোন বলেন, ‘ঋতুচক্রের বিরতি কত দিনের সেটা সবার আগে জানা দরকার। এতে করে নারী তার যৌন মিলনের সময় নির্দিষ্ট করতে পারবেন ও গর্ভধারণের চেষ্টা চালাতে পারবেন।’

বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট লাইভ সায়েন্সের এক প্রতিবেদনে নারীর গর্ভধারণের সম্ভাবনা বাড়াতে ১০টি সহায়ক কৌশলের কথা বলা হয়েছে। নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য বাংলায় প্রকাশ করা হচ্ছে কৌশলগুলো।

গর্ভধারণ সক্ষমতা বাড়ানোর ১০ কৌশল

. ঋতুচক্রের পুনরাবৃত্তির তথ্য সংরক্ষণ

সন্তান গ্রহণে ইচ্ছুক নারীর প্রতি মাসে তার পিরিয়ডের প্রথম দিনটির তারিখ লক্ষ রাখা উচিত। প্রতি মাসেই সমান দিনে পিরিয়ড শুরু হলে তা নিয়মিত বলে ধরে নেয়া হয়। তবে এর হেরফের হলে অনিয়মিত পিরিয়ড হিসেবে গণ্য হয়। দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যালেন্ডারে এ তথ্যের ভিত্তিতে নারীর ওভুলেশন কখন হচ্ছে, তা অনেকটা সঠিকভাবে অনুমান করা যায়। ওভুলেশন হচ্ছে নারীর ডিম্বাশয় থেকে একটি ডিম নিঃসরণ। ডিম্বাণু নির্গত হওয়ার পর সেটি ফেলোপিয়ান টিউবের নিচের দিকে চলে যায়, আর সেখানেই শুক্রাণু কোষ এই ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করে।

ঋতুচক্রের পুরো বিষয়টি হিসাবে রাখতে গ্লোওভুলেশনের মতো বেশ কিছু পিরিয়ড ট্র্যাকার অ্যাপ অনলাইনে পাওয়া যায়। আমেরিকান প্রেগন্যান্সি অ্যাসোসিয়েশনের মতে, নারীর ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু নির্গত হওয়ার ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত কার্যকর থাকে। অন্যদিকে নারী দেহে প্রবেশের পর পুরুষের শুক্রাণু পাঁচ দিন পর্যন্ত কার্যক্ষম থাকতে পারে।

. ওভুলেশনের দিকে দৃষ্টি রাখা

ইনফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞ ড. ম্যারি অ্যালেন পাভোন বলছেন, ‘সাধারণত পিরিয়ডের দুই সপ্তাহ আগে একজন নারীর ওভুলেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়। অবশ্য যাদের ক্ষেত্রে ঋতুচক্র ব্যাহত হয়, তাদের ওভুলেশনের সময় নির্ণয় করা বেশ কঠিন। তবে সাধারণত পরবর্তী পিরিয়ডের আগের ১২ থেকে ১৬ দিন আগে এটি ঘটতে পারে।’

নেচার জার্নালে ২০১৯ সালে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে দেখা যায়, ঋতুচক্রের দৈর্ঘ্য নারীভেদে আলাদা হতে পারে। সেই সঙ্গে নারীর রজঃশীল থাকার বছরগুলোর বিভিন্ন সময়ে ওভুলেশনের সময় ও দৈর্ঘ্যও বদলে যেতে পারে। এ কারণে ওভুলেশনের সময়কে খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারলে নারীর গর্ভধারণ সহজ হয়। মাসের কোন সময়টি গর্ভধারণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত, সেটি বের করার অনেক উপায় আছে।

ওভুলেশন প্রেডিকশন কিটের সাহায্যে নারীর কখন ওভুলেশন হচ্ছে, সেটা অনুমান করার ঝামেলা কমে যায়। ওষুধের দোকানে বিক্রি হওয়া এ কিটগুলো মূত্রে লিউটেনাইজিং হরমোনের মাত্রা পরীক্ষা করে। প্রতি মাসে ওভুলেশনের সময় এর মাত্রা বৃদ্ধি পায় ও ডিম্বাশয়কে ডিম্বাণু নির্গত করতে প্রস্তুত করে। আমেরিকান প্রেগন্যান্সি অ্যাসোসিয়েশনের মতে, পজিটিভ ফল আসার পরের তিন দিন কোনো দম্পতির যৌন মিলনের মাধ্যমে গর্ভধারণের জন্য সেরা সময়।

ওভুলেশন কখন হবে সেটা বের করার আরেকটি উপায় হচ্ছে সার্ভিক্যাল শ্লেষ্মার দিকে খেয়াল রাখা। এই প্রক্রিয়ায় নারীর যৌনাঙ্গে শ্লেষ্মার পরিমাণ ও ধরন নিয়মিত পরীক্ষা করতে হয়।

মা ও শিশু স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করা এনজিও মার্চ অফ ডাইমসের মতে, ওভুলেশনের ঠিক আগে যখন একজন নারী সবচেয়ে সক্রিয় অবস্থায় থাকেন, তখন শ্লেষ্মার পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং পাতলা, স্বচ্ছ ও পিচ্ছিল হয়ে যায়। সার্ভিক্যাল শ্লেষ্মা এভাবে পিচ্ছিল হয়ে শুক্রাণুকে ডিম্বাণুর কাছে পৌঁছাতে সহায়তা করে। ফার্টিলিটি অ্যান্ড স্টেরিলিটি জার্নালে ২০১৩ সালে প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধে বলা হয়েছে, যেসব নারী ছয় মাসে নিয়মিত নিজেদের সার্ভিক্যাল শ্লেষ্মা পরখ করেন তাদের গর্ভধারণের সম্ভাবনা ২.৩ ভাগ বেশি।

ফার্টিলিটি অ্যান্ড স্টেরিলিটি জার্নালের মতে, শরীরের তাপমাত্রা নিরীক্ষণও ওভুলেশন পর্যবেক্ষণের অন্যতম পদ্ধতি। এ ক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে বিছানা ছাড়ার আগে নির্দিষ্ট সময়ে দেহের তাপমাত্রা মাপতে হবে এবং প্রতিদিনের তাপমাত্রার চার্ট করতে হবে। ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগানের হেলথ সিস্টেমের মতে, নারীর ডিম্বাশয় ডিম্বাণু ছাড়ার প্রস্তুতির সময় দেহের তাপমাত্রা হালকা কমে যায়। এ সময় দেহের গড় তাপমাত্রা থাকে ৯৭ থেকে ৯৭.৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটের (৩৬.১ থেকে ৩৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস) মধ্যে। ডিম্বাণু ছেড়ে দেয়ার ২৪ ঘণ্টা পর দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় ও বেশ কয়েক দিন সে অবস্থায় থাকে।

ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগানের হেলথ সিস্টেমের তথ্য অনুযায়ী, ওভুলেশনের পরপর একজন নারীর দেহের সাধারণ তাপমাত্রা ৯৭.৬ থেকে ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৩৬.৪ থেকে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস) হতে পারে। তারা বলছে, ওভুলেশনের পর ডিম্বাণু ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা সক্রিয় থাকে।

ওভুলেশনের সময় দেহের মূল তাপমাত্রা খুব কম মাত্রায় পরিবর্তিত হয় বলে ডিজিটাল থার্মোমিটার বা বিশেষ বেজাল থার্মোমিটার ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

গর্ভধারণ সক্ষমতা বাড়ানোর ১০ কৌশল

. ফার্টাইল উইন্ডোর সময় বিকল্প দিনে যৌন মিলন

আমেরিকান সোসাইটি ফর রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিনের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফার্টিলিটি উইন্ডো (ডিম্বাণু নিগর্ত হওয়ার প্রস্তুতি ও নির্গত হওয়ার পরে কার্যকর থাকার সময়) সাধারণত ছয় দিনের। ওভুলেশনের দিন এবং এর আগের পাঁচ দিন। প্রতি মাসে একজন নারী এই সময়টাতেই জন্মদানে সবচেয়ে বেশি সক্ষম বা উর্বর থাকেন।

অনেক নারী গর্ভধারণের সঠিক সময় জানতে ফার্টিলিটি-ট্র্যাকিং অ্যাপ ব্যবহার করেন। তবে বিএমজে সেক্সুয়াল অ্যান্ড রিপ্রোডাকটিভ হেলথে ২০২০ সালে প্রকাশিত এক রিভিউ অনুযায়ী, এই অ্যাপ বা ওয়েবসাইট কতটুকু নিখুঁত সেটা নিয়ে খুব বেশি গবেষণা হয়নি।

অবস্টেট্রিকস অ্যান্ড গায়নোকলজি জার্নালে ২০১৬ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা ৫০টি প্রচলিত ফার্টিলিটি ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ও অ্যাপ পরখ করে দেখেছেন। লাইভ সায়েন্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই অ্যাপ ও সাইটগুলো প্রায়ই উদ্ভট ফল দিচ্ছিল। অনেক ফার্টিলিটি উইন্ডোর দিন-তারিখ একেবারে ভুলভাবে জানাচ্ছিল।

পাভোন বলেন, ‘ফার্টিলিটি উইন্ডোর সময়ে প্রতিদিন যৌন মিলনে অংশ নেয়া দম্পতিদের গর্ভধারণের হারে খুব বেশি পরিবর্তন দেখা যায় না। এই হার ৩৭ শতাংশ। ফার্টিলিটি উইন্ডোর বাইরে অন্য দিনগুলোতে যৌন মিলনে অংশ নেয়াদের ক্ষেত্রে এ হার ৩৩ শতাংশ।

পাভোনের মতে, মাসজুড়ে নিয়মিত যৌন মিলনে অংশ নিলেই বরং গর্ভধারণের সম্ভাবনা বেশি বৃদ্ধি পায়।

গবেষকরা অ্যাপল অ্যাপ স্টোরের শত শত গর্ভধারণ ক্ষমতাসংক্রান্ত অ্যাপ ঘেঁটে দেখেছেন। এসব অ্যাপের তথ্য ২০১৯ সালে প্রকাশিত হয় কানাডার জার্নাল অফ অবস্টেট্রিকস অ্যান্ড গায়নোকলজিতে। অ্যাপগুলোর ৩১টিতে ভুলভ্রান্তির ছড়াছড়ি ছিল। তবে কয়েকটি বেশ কার্যকর। এর মধ্যে সেরা তিনটি অ্যাপ হচ্ছে:

গ্লো.ওভুলেশন অ্যান্ড পিরিয়ড ট্র্যাকার (Glow.Ovulation & Period Tracker)

ফার্টিলিটি ফ্রেন্ড এফএফ অ্যাপ (Fertility Friend FF App)

ক্লু: হেলথ অ্যান্ড পিরিয়ড ট্র্যাকার (Clue: Health & Period Tracker)

গর্ভধারণ নিয়ে প্রচলিত অনেক মিথ রয়েছে। তবে এগুলোর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি পাওয়া বেশ কঠিন। যেমন- অনেকে মনে করেন যৌন মিলনের সময় বিশেষ কোনো পজিশন সন্তান ধারণের সম্ভাবনাকে ব্যাহত করে। তবে এর কোনো প্রমাণ নেই। পাভোন বলেন, যৌন মিলনের পর একজন নারীর নির্দিষ্ট সময় চিৎ হয়ে শুয়ে থাকার সঙ্গে তার গর্ভধারণের সম্ভাবনা বৃদ্ধিরও কোনো সংযোগ নেই।

পাভোন অবশ্য বলেছেন, পানিভিত্তিক কিছু ভ্যাজিনাল লুব্রিকেন্ট পাওয়া যায়, যা শুক্রাণুর সচলতাকে আটকে দিতে পারে। তার পরামর্শ, লুব্রিকেন্ট প্রয়োজন হলে অ্যাস্ট্রোগ্লাইড বা কে-ওয়াই জেলির বদলে প্রি-সিড ব্যবহার করা।

গর্ভধারণ সক্ষমতা বাড়ানোর ১০ কৌশল

. দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা

একজন নারীর ওজন তার গর্ভধারণের সামর্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। অতিরিক্ত ওজন বা অনেক কম ওজন গর্ভধারণের সম্ভাবনাকে কমিয়ে দেয়। পাভোন বলছেন, সাধারণ বডি মাস ইনডেক্সের (বিএমআই) একজন নারীর চেয়ে অতিরিক্ত ওজনের নারীর গর্ভধারণে দ্বিগুণের বেশি সময় লাগতে পারে। আর যেসব নারীর ওজন অনেক কম তাদের ক্ষেত্রে চার গুণ সময় লাগতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শরীরে চর্বির পরিমাণ বেশি থাকলে তা অতিরিক্ত এস্ট্রোজেন তৈরি করে। এটি ওভুলেশন প্রক্রিয়া ব্যাহত করে। হিউম্যান রিপ্রোডাকশন জার্নালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে গবেষকদের দাবি, যেসব দম্পতির দুজনই অতিরিক্ত ওজনের এবং যাদের বিএমআই অন্তত ৩৫ (বিএমআই অনুযায়ী ২৫-২৯.৯ পর্যন্ত অতিরিক্ত ওজন ও ৩০ এর বেশি স্থূলকায় বা ওবিস ধরা হয়) তাদের গর্ভধারণের ক্ষেত্রে সাধারণ দম্পতির চেয়ে ৫৫ থেকে ৫৯ শতাংশ পর্যন্ত সময় বেশি লেগেছে।

পিএলওএস ওয়ান জার্নালে ২০২০ সালে প্রকাশিত এক গবেষণা অনুসারে, বিএমআই বৃদ্ধি পেলে নির্দিষ্ট সময়সীমায় নারীর গর্ভধারণের ক্ষমতা কমে আসে। গবেষকরা চীনের সন্তান গ্রহণে ইচ্ছুক ৫০ হাজার দম্পতির ওপর করা এক গবেষণার ডেটা ঘেঁটে এ তথ্য পেয়েছেন।

অ্যান্ড্রোলজিয়া জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুরুষের ওবিসিটি বা স্থূল দেহের জন্য হরমোন উৎপাদনের জন্য নিয়োজিত এন্ডোক্রিন সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং শুক্রাণুর কার্যক্ষমতা ও ঘণত্ব কমে যেতে পারে। এর প্রভাব পড়ে নারীর গর্ভধারণের ওপর।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ উইসকনসিন হসপিটালস অ্যান্ড ক্লিনিকস অথরিটি জানিয়েছে, যেসব নারীর ওজন অনেক কম (বিএমআই ১৮ এর নিচে) তাদের পিরিয়ড অনিয়মিত হতে পারে বা ওভুলেশন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে করে গর্ভধারণের প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।

. গর্ভাবস্থার আগে ভিটামিন খাওয়া

যেসব নারী গর্ভধারণের চেষ্টায় আছেন তাদের ভিটামিন খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পাভোন। এতে করে গর্ভাবস্থায় দেহের উপযোগী ভিটামিন তিনি আগে থেকেই চিহ্নিত করতে পারবেন।

পাভোন প্রতিদিন মাল্টিভিটামিন খেতে বলেন। তবে তাতে ন্যূনতম ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক অ্যাসিড থাকতে হবে। এটি এক ধরনের বি-ভিটামিন, যা শিশুর মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ড মজবুত করতে সহায়তা করে।

জন্মের সময় শিশুর কোনো ধরনের ত্রুটি এড়াতে গর্ভধারণের অন্তত এক মাস আগে থেকে নারীদের প্রতিদিন ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক অ্যাসিড গ্রহণ করতে বলে দ্য সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)।

আগে থেকে ফলিক অ্যাসিড খাওয়া শুরু করাটা ভালো। এর কারণ, নিউরাল টিউব যা গর্ভধারণের তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে শিশুর মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডে পরিণত হয়। ওই সময়ে অধিকাংশ নারী বুঝতেও পারেন না যে তিনি গর্ভবতী।

গর্ভধারণ সক্ষমতা বাড়ানোর ১০ কৌশল

. স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া

আমেরিকার দাতব্য স্বাস্থ্য সংস্থা মেয়ো ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভধারণের জন্য নির্দিষ্ট কোনো খাদ্যতালিকা না থাকলেও, স্বাস্থ্যকর খাবার একজন নারীর দেহে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ও আয়রনের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদানে সুষম অবস্থা বজায় রেখে গর্ভধারণে সহায়তা করে। এর অর্থ হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ফল, সবজি, সুষম প্রোটিন, বার্লি-ওটমিল জাতীয় হোল গ্রেইন, দুগ্ধজাত পণ্য ও চর্বিযুক্ত স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।

ফলিক এসিডযুক্ত সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার পাশাপাশি একজন নারী সবুজ শাক-সবজি, ব্রকোলি, ভিটামিন ও মিনারেল যুক্ত রুটি ও সিরিয়াল, বিনস, লেবু জাতীয় ফল ও কমলার রস খেতে পারেন।

মেয়ো ক্লিনিকের মতে, গর্ভধারণের প্রক্রিয়া শুরুর সময় পারদের উচ্চ মাত্রা সমৃদ্ধ মাছ কম খাওয়া উচিত। এর কারণ পারদ গর্ভবতী নারীর রক্ত প্রবাহে মিশে যেতে পারে, যা শিশুর বেড়ে ওঠায় ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। ২০১৯ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি পারদযুক্ত খাদ্য গ্রহণ নারী ও পুরুষ উভয়ের বন্ধ্যাত্ব ডেকে আনতে পারে।

কিছু গবেষণায় গর্ভাবস্থায় নারীদের ক্যাফিন থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গর্ভবতী নারী যদি ২০০ মিলিগ্রাম ক্যাফিন (দুই কাপ কফির কম) পান করেন তাহলে গর্ভের সন্তানের কোনো ঝুঁকি নেই। তবে ২০২০ সালে বিএমজে এভিডেন্স বেজড মেডিসিনের রিভিউ গবেষণায় দেখা যায়, গর্ভবতী নারী বা সন্তান গ্রহণের ইচ্ছুক নারীদের জন্য ক্যাফিনের কোনো নির্দিষ্ট নিরাপদ মাত্রা নেই।

. কঠিন বা ভারী ব্যায়াম কমানো

২০২০ সালের মার্চে হিউম্যান রিপ্রোডাকশন জার্নালের প্রকাশিত এক নিবন্ধে বিজ্ঞানীরা জানান, প্রতিদিনের শারীরিক সক্রিয়তা একজন নারীর দেহকে গর্ভধারণ ও সন্তান জন্মদানের জন্য প্রস্তুত করে। এতে করে তাদের জন্মদান ক্ষমতা সংক্রান্ত সমস্যাও কমিয়ে দেয়।

তবে লাইভ সায়েন্সের প্রতিবেদন অনুসারে, যে সব নারী অতিরিক্ত ব্যায়াম করেন বা নিয়মিত ভারী কাজ করেন তাদের ওভুলেশন প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে।

যে সব নারী ভারী ব্যায়াম করেন তাদের রজঃচক্রে ব্যাঘাত ঘটতে দেখেছেন চিকিৎসকেরা। লাইভসায়েন্সকে পাভোন বলেন, নারী গর্ভধারণ করতে চাইলে ব্যায়ামের পরিমাণ কমাতে হবে।

. বয়স বাড়লে কমে উর্বরতা

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে নারীর সন্তান জন্মদান ক্ষমতা বা উর্বরতা কমতে থাকে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বদলাতে থাকা ডিম্বাণু ও মান কমে যাওয়াই এর মূল কারণ। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউটেরিন ফাইব্রয়েডস, ফেলোপিয়ান টিউবে ব্লক ও এন্ডোমেট্রিওসিসের মতো অন্যান্য স্বাস্থ্য ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়। যে কারণে উর্বরতা কমে যেতে পারে।

পাভোন বলেন, ‘৩০ বছরের পর নারীদের জন্মদান ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। ৩৭ বছরের পর তা আরও কমে যায় এবং ৪০ এর পর তা অনেকখানি হ্রাস পায়।‘

হ্রাস পাওয়ার অর্থ গর্ভধারণে বেশি সময় লাগতে পারে।

গর্ভধারণ সক্ষমতা বাড়ানোর ১০ কৌশল

. ধূমপান মদ্যপানে ক্ষতি

ধূমপানের কারণে নারী ও পুরুষ উভয়েরই বন্ধ্যাত্বের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আমেরিকান সোসাইটি অফ রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিনের মতে, সিগারেটের নিকোটিন ও কার্বন মনোক্সাইডের মতো রাসায়নিক নারীর ডিম্বাণু নষ্ট হওয়ার হারকে ত্বরান্বিত করে।

মেয়ো ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধূমপান নারীর ডিম্বাশয়ের জীর্ণতা তৈরি করে এবং দ্রুত এর ডিম্বাণুকে নিঃশেষ করে দেয়। ২০২০ সালে রিপ্রোডাকটিভ বায়োলজি অ্যান্ড এন্ডক্রাইনোলজি জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, জন্মদান ক্ষমতা হ্রাসের সঙ্গে ধূমপানের যোগাযোগ রয়েছে।

বিএমজে জার্নালে ২০০৯ সালে প্রকাশিত এক গবেষণা বলছে, নারীদের সেকেন্ড হ্যান্ড স্মোক (পরোক্ষ ধূমপান) থেকেও দূরে থাকা উচিত। পরোক্ষ ধূমপানও গর্ভধারণের ক্ষমতায় প্রভাব ফেলতে পারে। গর্ভাবস্থা বা গর্ভ ধারণ প্রক্রিয়ায় থাকার সময় মারিজুয়ানা গ্রহণ থেকেও বিরত থাকা উচিত।

গর্ভধারণের ইচ্ছা থাকলে মদ্যপানে ইস্তফা দেয়াটি নিরাপদ। তবে, ২০০৯ সালে হিউম্যান রিপ্রোডাকশন জার্নালে ১,৭০৮ জন নারীকে নিয়ে ডেনিশ বিজ্ঞানীদের একটি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। এতে বিজ্ঞানীদের দাবি, পাঁচ বছর ধরে চলা তাদের গবেষণায় নিয়মিত মদ্যপান, অত্যাধিক মদ্যপান ও জন্মদানের ক্ষমতার মধ্যে কোনো যোগসূত্র পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে, অবস্টেট্রিকস অ্যান্ড গায়নোকলজিতে ২০১৭ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় অর্ধেক নারী গর্ভাবস্থায়, গর্ভধারণের ঠিক আগে বা যখন তারাও জানেন না যে গর্ভধারণ করতে যাচ্ছেন সে সময় মদ্যপান করেন।

দ্য আমেরিকান কলেজ অফ অবস্টেট্রিকস অ্যান্ড গায়নোকলজির মতে, মাঝারি মাত্রায় মদ্যপান (দিনে ১-২ বার) বা বেশি মদ্যপান (দিনে দুই বা ততোধিকবার মদ্যপান) একজন নারীর গর্ভধারণের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে।

পাভোনও একমত এ বিষয়ে। তার মতে, গর্ভধারণের পর নিরাপদ মাত্রায় মদ্যপান বলে কিছু নেই।

১০. কখন সাহায্য লাগবে সেটা জানুন

পাভোন বলেন, ‘নারীর বয়স ৩৫ বছরের ওপরে হলে এবং জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ছাড়া নিয়মিত যৌন সম্পর্কের পর ছয় মাসের মধ্যে সন্তানসম্ভবা না হলে নারী ও পুরুষ উভয়েরই বন্ধ্যাত্বের পরীক্ষা করানো উচিত।’

পাভোনের মতে, যে সব নারীর বয়স ৩৫ বছরের নিচে, তারা জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার না করে এক বছর নিয়মিত যৌন সম্পর্কের পরেও গর্ভধারণ করতে না পারলে তার সঙ্গীর বন্ধ্যাত্বের পরীক্ষা করানো উচিত।

গর্ভধারণ সক্ষমতা বাড়ানোর ১০ কৌশল

পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমে করণীয়

পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (পিসিওএস) একটি হরমোনজনিত সমস্যা। নারীর বন্ধ্যাত্বের অন্যতম কারণ এটি। আমেরিকায় প্রজননক্ষম ৬-১২ শতাংশ নারী এ রোগে ভোগেন।

পিসিওএস চিহ্নিত করার জন্য নির্দিষ্ট কোনো পরীক্ষা নেই, তবে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসকেরা নিচের তিনটি লক্ষণের অন্তত দুটি খোঁজার চেষ্টা করেন:

ওভুলেশন হ্রাস পাওয়ায় পিরিয়ড না হওয়া অথবা অনিয়মিত হওয়া।

সাধারণ মাত্রার চেয়ে বেশি পুরুষ হরমোনের কারণে মুখে শরীরে পশমের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, চুল পাতলা হয়ে যাওয়া।

ডিম্বাশয়ে একাধিক সিস্ট হওয়া।

নারীরা কেন এ ধরনের সমস্যায় ভোগেন সে ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা এখনও পরিষ্কার নন। তবে গর্ভধারণের চেষ্টা করার সময়ে অনেকের মধ্যে সমস্যগুলো ধরা পড়ে।

পিসিওএসজনিত বন্ধ্যাত্ব ও ওজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। থেরাপিউডিক অ্যাডভান্সেস ইন রিপ্রোডাকটিভ হেলথ জার্নালে ২০১৯ সালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে দাবি করা হয়, পিসিওএসে আক্রান্ত ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ নারী অতিরিক্ত ওজন বা ওবিসিটিতে ভুগছেন। স্বাস্থ্যকর খাবার ও নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস পিসিওএসে আক্রান্ত নারীর প্রজনন সংক্রান্ত সমস্যা কমাতে সক্ষম।

মেটফরমিন ও লেট্রোজোলের মতো অনেকগুলো ওষুধ ওভুলেশনে সাহায্য করে এবং ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম। ইনসুলিনের মাত্রা উচ্চ হলে পিটুইটারি গ্ল্যান্ড থেকে হরমোন নিঃসরণের মাত্রা বেড়ে যায়, যা ওভুলেশন প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে।

আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে ল্যাপারোস্কোপিক ওভারিয়ান ড্রিলিং। আমেরিকান সোসাইটি ফর রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিনের তথ্য অনুসারে, এ পদ্ধতিতে একজন সার্জন বাড়তি হরমোন কমাতে ডিম্বাশয়ে ছোট কয়েকটি ফুটো করে দেন। তবে রোগীকে পুরো অজ্ঞান করে করা এ সার্জারি পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত নয়। অনেক সময় এতে ডিম্বাশয়ের ক্ষতি হতে পারে, যা হিতে বিপরীত ফল ডেকে আনতে পারে।

বিকল্প পদ্ধতিগুলো কাজ না করলে চিকিৎসকেরা ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (টেস্ট টিউব বা এ ধরনের কোনো পদ্ধতিতে গর্ভধারণ) করার অনুমোদন দেন।

এনডোমেট্রিওসিস আক্রান্তদের গর্ভধারণ

প্রজননতন্ত্রের আরেকটি রোগ এনডোমেট্রিওসিস। আমেরিকায় প্রতি ১০ জন নারীর একজন এই রোগে আক্রান্ত হন। এক্ষেত্রে জরায়ুতে পাওয়া টিস্যু নারীর ডিম্বাশয় বা ফেলোপিয়ান টিউবেও তৈরি হতে শুরু করে।

জার্নাল অফ অবস্টেট্রিকস অ্যান্ড গায়নোকলজি অফ ইন্ডিয়ার করা ২০১৫ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, মৃদু এনডোমেট্রিওসিসও প্রজননক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। রোগের তীব্রতা বেশি হলে তা নারীর শ্রোণি অঞ্চলকে ক্ষতিগ্রস্ত এবং ফেলোপিয়ান টিউবে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে।

এনডোমেট্রিওসিসে আক্রান্ত নারীর পক্ষেও গর্ভধারণ করা সম্ভব। আর একবার গর্ভবতী হলে এনডোমেট্রিওসিস আক্রান্ত নন এমন নারীর সঙ্গে তার গর্ভাবস্থার কোনো পার্থক্য নেই।

যুক্তরাজ্যের এনডোমেট্রিওসিস সংক্রান্ত দাতব্য সংস্থা এনডোমেট্রিওসিস ইউকের মতে, ওষুধের সাহায্যে চিকিৎসায় প্রজনন সক্ষমতা বৃদ্ধি পায় না। আমেরিকার দাতব্য স্বাস্থ্য সংস্থা মেয়ো ক্লিনিকের মতে, এই ওষুধগুলোর মাধ্যমে রোগীর হরমোন নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এতে করে তার জরায়ুর টিস্যুর বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং নতুন টিস্যু তৈরিতেও বাধা সৃষ্টি করে। তবে ওষুধগুলো হরমোনের ওপর নির্ভরশীল বলে (এগুলো সাধারণত জন্মনিয়ন্ত্রণ, ওভুলেশন পদ্ধতিকে আটকে দেয়া বা অ্যাস্ট্রোজেনের পরিমানকে কমানোর ওষুধ) এটি নারীর গর্ভধারণে বাধা দেয়।

আমেরিকান সোসাইটি ফর রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিনের মতে, একেক নারীর ওপর এনডোমেট্রিওসিস একেকভাবে প্রভাব ফেলে। যে কারণে চিকিৎসা পদ্ধতিও আলাদা।

জার্নাল অফ অবস্টেট্রিকস অ্যান্ড গায়নোকলজি অফ ইন্ডিয়ার করা ২০১৫ সালের গবেষণাটিতে দেখা গেছে, এনডোমেট্রিয়াল ও স্কার টিস্যু সার্জারি করে আপসারণ করলে প্রজনন ক্ষমতা বাড়তে পারে এবং এনডোমেট্রিওসিসের ব্যথা দূর করতে পারে।

প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধির অন্যান্য পদ্ধতি যেমন, আইভিএফ, ওভুলেশন ঘটানো, কৃত্রিম ইনসেমিনেশন ও নারীর ডিম্বাশয়কে উদ্দীপ্ত করে ডিম্বাণু উৎপন্ন করার অন্য প্রক্রিয়াগুলো একজন এনডোমেট্রিওসিস আক্রান্ত নারীকে গর্ভধারণে সহায়তা করতে পারে।

তবে বিষয়টি এনডোমেট্রিওসিসের তীব্রতা, নারীর বয়স ও প্রজনন সংক্রান্ত অন্যান্য কোনো জটিলতা আছে কি না তার ওপর নির্ভরশীল। এনডোমেট্রিওসিস ইউকের মতে, প্রজনন ক্ষমতা বাড়ানোর চিকিৎসায় চিন্তার বিষয় হচ্ছে এর মাধ্যমে অনেক সময় ডিম্বাশয় বাড়তি উদ্দীপনা গ্রহণ করে। এতে একাধিক ডিম্বাণু নিষিক্ত হয় এবং একাধিক সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আরও পড়ুন:
বঙ্গ বিডিতে ডয়চে ভেলের সিরিজ ‘এশিয়ার নারীরা’
সৌদি নারীরা চালাবেন ট্যাক্সি
নান্দাইল পেল প্রথম নারী চেয়ারম্যান
অনলাইনে নারীদের নিলামের চেষ্টা; আটক ৩
রিতু, আনাইয়ের পর প্রস্তুত আছেন আরও ৩০ ফুটবলার

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Waterproof smartphone Realmia C3 X feature

পানিরোধী স্মার্টফোন রিয়েলমি সি৭৫এক্সের বৈশিষ্ট্য

পানিরোধী স্মার্টফোন রিয়েলমি সি৭৫এক্সের বৈশিষ্ট্য রিয়েলমি সি৭৫এক্স স্মার্টফোন
রিয়েলমি সি৭৫এক্স স্মার্টফোনটি পানি, ধুলো ও দুর্ঘটনাজনিত পতনেও ফোনকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে সক্ষম। কারণ এই স্মার্টফোনটি আইপি৬৯, আইপি৬৮, আইপি৬৬ রেটিং সম্বলিত এবং মিলিটারি গ্রেড শক রেজিস্ট্যান্স সার্টিফাইড। আইপি৬৬ পানির শক্তিশালী জেটের বিরুদ্ধে, আইপি৬৮ পানির নিচে এবং আইপি৬৯ হাই-প্রেসার, হাই-টেম্পারেচার পানির জেটের বিরুদ্ধে ফোনকে রক্ষা করে।

ব্যবহারকারীদের কথা মাথায় রেখে ব্র্যান্ডগুলো স্মার্টফোনে নতুন নতুন প্রযুক্তি যুক্ত করছে। টেকসই ও স্থায়িত্বের নিশ্চয়তা দিতে যুক্ত করা হচ্ছে এসব প্রযুক্তি। একইসঙ্গে লুকিং বাড়ানোর জন্য গুরুত্ব পাচ্ছে ফোনের রং ও অন্যান্য বাহ্যিক ডিজাইনও। সম্প্রতি দেশের বাজারে আসা এমন একটি স্মার্টফোন হলো রিয়েলমি সি৭৫এক্স। আর্মরশেল প্রোটেশন-যুক্ত ড্যামেজ-প্রুফ ফিচার ফোন এটি। মধ্যম বাজেটের ফোনটি দিয়ে করা যাবে আন্ডারওয়াটার ফটোগ্রাফিও। চলুন এক নজরে দেখা যাক কী আছে নতুন এই স্মার্টফোনটিতে।


আইপি ৬৯ রেটিং


রিয়েলমি সি৭৫এক্স স্মার্টফোনটি পানি, ধুলো ও দুর্ঘটনাজনিত পতনেও ফোনকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে সক্ষম। কারণ এই স্মার্টফোনটি আইপি৬৯, আইপি৬৮, আইপি৬৬ রেটিং সম্বলিত এবং মিলিটারি গ্রেড শক রেজিস্ট্যান্স সার্টিফাইড। আইপি৬৬ পানির শক্তিশালী জেটের বিরুদ্ধে, আইপি৬৮ পানির নিচে এবং আইপি৬৯ হাই-প্রেসার, হাই-টেম্পারেচার পানির জেটের বিরুদ্ধে ফোনকে রক্ষা করে।

এ সার্টিফিকেশন অনুযায়ী, ফোনটি ০.৫ মিটার পানির নিচে ১০ দিন পর্যন্ত সম্পূর্ণ অক্ষত থাকে। এ ছাড়া ২.৫ মিটারে ১২ ঘণ্টা, ২ মিটারে ১ ঘণ্টা এবং ১.৫ মিটার পানির নিচে ৩০ মিনিট ডুবে থাকাসহ উচ্চচাপের পানি স্প্রে, এমনকি ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার গরম পানির স্প্রেতেও কার্যক্ষম থাকে। এ জন্য দুর্ঘটনাবশত পানিতে পড়ে যাওয়া, বৃষ্টিতে ভেজা কিংবা অ্যাডভেঞ্চারের মতো পরিস্থিতিতে ফোনটি থাকবে সম্পূর্ণ নিরাপদ।


ক্যামেরা


রিয়েলমি ‘সি৭৫এক্স’-এ রয়েছে ৫০ মেগাপিক্সেলের একটি রিয়ার ক্যামেরা। এছাড়া পেছনের প্যানেলে একটি ফ্লিকার লেন্স রয়েছে। যেটিকে অক্সিলারি লেন্সও বলা হয়। ফ্লিকার বা অক্সিলারি এই লেন্সের প্রধান কাজ হলো আলোর ফ্রিকোয়েন্সি শনাক্ত করা, যা ছবি তোলার সময় গ্লেয়ার কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া পেছনের প্যানেলে সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য আরো একটি বাম্প রাখা হয়েছে। তবে পুরোপুরি বন্ধ রাখা এই বাম্পটি সেন্সর এরিয়া হিসেবেও কাজ করে। বাম্পটিতে দুইবার টাচ করলে কিউআর কোড স্ক্যান করা যাবে। এছাড়া ফোনটিতে রয়েছে একটি ৮-মেগাপিক্সেল সেলফি ক্যামেরা।


ব্যাটারি সক্ষমতা


রিয়েলমি ‘সি৭৫এক্স’ এ রয়েছে- ৪৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জ সক্ষমতার ৫৬০০এমএএইচ ব্যাটারি। ৫ মিনিটের চার্জেই ফোনে কথা বলা যায় ৩ ঘণ্টা। আর একবার পুরোপুরি চার্জ সম্পূর্ণ হলে ৭ ঘণ্টা টানা গেমিং, ১৩.২ ঘণ্টা ধারাবাহিক ইউটিউব ভিডিও প্লে এবং ২৪ ঘণ্টার স্ট্যান্ডবাই সম্ভব স্মার্টফোনটি দিয়ে।


এসব বৈশিষ্ট্য ছাড়াও রিয়েলমি ‘সি৭৫এক্স’ গ্রাহকদের দেবে এই সেগমেন্টের বেস্ট এআই এক্সপেরিয়েন্স। ডিভাইসটিতে আছে- গুগল জেমিনি চ্যাটবট এবং এটি ব্যবহারকারীদের প্রশ্নের উত্তর, দ্রুততম সময়ে কোনো কিছু অনুসন্ধান, অ্যাপগুলোর মধ্যে নির্বিঘ্ন এআই স্মার্ট লুপ, এআই ইমেজ এডিটিং অর্থাৎ ব্লারি বা ঘোলা ছবিকে স্পষ্ট করা ইত্যাদি ফিচার আছে। ৬/১২৮ জিবি ভ্যারিয়েন্টের রিয়েলমি‘সি৭৫এক্স’স্মার্টফোনটি পাওয়া যাচ্ছে ১৭,৯৯৯ টাকায়। ফলে মধ্যম বাজেটের এই স্মার্টফোনটি হতে পারে প্রযুক্তি প্রেমীদের জন্য একটি দারুণ ডিভাইস।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The simple solution to e commerce website for domestic entrepreneurs

দেশীয় উদ্যোক্তাদের জন্য ই-কমার্স ওয়েবসাইটের সহজ সমাধান দেশীকমার্স

দেশীয় উদ্যোক্তাদের জন্য ই-কমার্স ওয়েবসাইটের সহজ সমাধান দেশীকমার্স

দ্রুত পরিবর্তনশীল এই ডিজিটাল যুগে, বিশেষ করে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের ব্যবসায়ীদের (এসএমই) জন্য সহজলভ্য এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য ই-কমার্স সমাধানের প্রয়োজনীয়তা আগের চেয়ে অনেক বেশি। কিন্তু ক্ষুদ্র এবং মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করা যথেষ্ট জটিল এবং ব্যয়বহুল একটি কাজ। এই কাজটিকেই সহজ করছে দেশীকমার্স।

দেশীকমার্স মূলত একটি SaaS সলিউশন যেটি দিয়ে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলা যায়। ক্ষুদ্র এবং মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য ই-কমার্সকে সহজলভ্য করার স্বপ্ন নিয়ে দেশীকমার্সের যাত্রা শুরু ২০১৮ সালে। কোম্পানিটি এখন ১৫০-র অধিক দেশী উদ্যোক্তাকে ই-কমার্স ওয়েবসাইটের সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

স্বপ্ন এবং সাধ্যের ব্যবধান ঘুচানোর পথে

বিগত কয়েক দশকে প্রযুক্তির উৎকর্ষের সাথে সাথে মানুষের কেনাকাটার ধরনে পরিবর্তন এসেছে বিশেষ করে ই-কমার্সের উত্থানের ফলে ব্যবসায়িক জগতে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন সম্পন্ন হয়েছে। এই পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত একটি গ্রামের একজন মধু বা আম বিক্রেতার পক্ষেও সরাসরি ঢাকার একজন কাস্টমারের কাছে পণ্য বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে।

২০১৮ সালে ঢাকাভিত্তিক BluBird Interactive Ltd.-এর একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে DeshiCommerce। প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ওঠে এই উপলব্ধি থেকে — দেশীয় ব্যবসায়ীরা অনলাইনে পণ্য বিক্রি করতে নানা সমস্যায় পড়েন। বিশেষ করে প্রযুক্তিগত জটিলতা এবং ওয়েবসাইট তৈরীর উচ্চ খরচ SME-দের ই-কমার্সে প্রবেশের স্বপ্নে বাধা দেয়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য DeshiCommerce এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে যেটা দিয়ে নামমাত্র খরচে মাত্র কয়েক মিনিটে একটি দ্রুতগতির ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়।

একটা সময় ছিল যখন ভালো মানের একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরী করতে কয়েক মাস এবং কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করতে হতো। দেশীকমার্স সেটাকে নিয়ে এসেছে মাত্র কয়েক মিনিট এবং কয়েকশো থেকে হাজার টাকার মধ্যে। DeshiCommerce-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা আশিক হাসান বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো—বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের জন্য ই-কমার্স সলিউশনকে সহজলভ্য ও সহজে ব্যবহারযোগ্য করে তোলা। যাতে তারা সহজেই অনলাইন ব্যবসা শুরু করে সফলতা পেতে পারেন।”

দেশীয় বাজারকে মাথায় রেখে ডিজাইন

দেশীকমার্স প্ল্যাটফর্মটি বাংলাদেশের বাজার ও ব্যবসার ধরন অনুযায়ী ডিজাইন করা হয়েছে। এখানে রয়েছে কাস্টমাইযেবল ডিজাইন, সহজ পণ্য ব্যবস্থাপনা, অর্ডার রিটার্ন রিফান্ড ম্যানেজমেন্ট, পেমেন্ট ও ডেলিভারি অপশন ব্যবহারের সুবিধা। প্ল্যাটফর্মটি RedX, Pathao, Steadfast-এর মতো লোকাল লজিস্টিকস এবং bKash, SSLCommerz-এর মতো পেমেন্ট গেটওয়ের সাথে ইন্টিগ্রেটেড — যা ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে করে আরও সহজ।

ব্যবসার আকার অনুযায়ী দেশীকমার্স-এর বিভিন্ন প্রাইস প্যাকেজ রয়েছে যাতে উদ্যোক্তারা নিজেদের উপযোগী প্ল্যান বেছে নিতে পারেন।দেশীকমার্স মূলত SME দের উদ্দেশ্য করে তৈরী হলেও অনেক বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানও দেশীকমার্স ব্যবহার করে তাদের ই-কমার্স বিজনেস পরিচালনা করছে। দেশীকমার্স-এর আর একজন সহ-প্রতিষ্ঠাতা কাজী শাহীন বলেন, “এর বড় কারণ হলো - দেশীকমার্স সহজে ব্যবহার করা খুব সহজ, মাত্র কয়েক মিনিটে আপনার সাইট রেডি হয়ে যাবে এবং আপনি সহজেই 'স্কেল' করতে পারবেন।”

ইকমার্স উদ্যোক্তাদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ

ডিজিটাল টুল ব্যবহারে উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দেশীকমার্স গুরুত্ব দিয়ে দেখে। তাই দেশীকমার্স বিভিন্ন ভিডিও ও লেখার মাধ্যমে টিউটোরিয়াল, প্রিন্টযোগ্য পিডিএফ ইবুক এবং নিয়মিত ওয়েবিনার আয়োজন করে। সেইসাথে রয়েছে অনলাইন ও অন-সাইট প্রশিক্ষণের সুবিধা যা পরিচালনা করেন অভিজ্ঞ ট্রেইনাররা।

দেশীকমার্স একটি পূর্ণাঙ্গ বাংলা ই-কমার্স ব্লগও চালায়, যেখানে মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি, টুল ব্যবহারের কৌশল, মার্কেট রিসার্চ, ও ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির নানা আপডেট প্রকাশিত হয়। এসব তথ্য উদ্যোক্তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞানের ভাণ্ডার হিসেবে কাজ করে।

ভবিষ্যতে কী?

২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বেটা ভার্সনে চালু হওয়ার পর থেকে দেশীকমার্স ইতোমধ্যেই ১৫০-এর বেশি অ্যাক্টিভ ইউজার পেয়েছে। ব্যবহারকারীদের মতামতের ভিত্তিতে তারা প্রতিনিয়ত প্ল্যাটফর্ম উন্নয়ন করে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে দেশীকমার্স প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হতে যাচ্ছে AI-ভিত্তিক ফিচার—যেমন স্বয়ংক্রিয় প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন লেখা ও পার্সোনালাইজড প্রোডাক্ট রেকমেন্ডেশন—যা ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতাকে আরও উন্নত করবে।

দেশীকমার্স শুধু বাংলাদেশে থেমে থাকতে চায় না। ভবিষ্যতে কোম্পানিটি অন্যান্য এশিয়ান দেশ, ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও নিজেদের বিস্তার ঘটাতে চায়। উদ্ভাবন, নির্ভরযোগ্যতা ও পার্টনারশিপের ওপর ভর করে তারা হতে চায় গ্লোবাল ই-কমার্স ইকোসিস্টেমের অন্যতম চালিকাশক্তি।

বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতি যেমন বাড়ছে, তেমনি দেশীকমার্স-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলো স্থানীয় ব্যবসাগুলোর অনলাইন জগতে টিকে থাকা এবং বেড়ে ওঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

মন্তব্য

লাইসেন্স পেল স্টারলিংক

লাইসেন্স পেল স্টারলিংক

মার্কিন এনজিএসও সেবাদাতা স্টারলিংকের লাইসেন্স অনুমোদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। আজ সোমবার এই লাইসেন্স অনুমোদন করেন তিনি।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) গত ২৫ মার্চ ‘নন-জিওস্টেশনারি অরবিট (এনজিএসও) স্যাটেলাইট সার্ভিস অপারেটর ইন বাংলাদেশ শীর্ষক লাইসেন্সিং গাইডলাইন জারি করে। ওই গাইডলাইনের আওতায় স্টারলিংক সার্ভিস বাংলাদেশ নন-জিওস্টেশনারি অরবিট (এনজিএসও) স্যাটেলাইট সার্ভিস অপারেটর লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য প্রযোজ্য ফি এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বিটিআরসি বরাবর আবেদন করেছে। প্রতিষ্ঠানটির অনুকূলে আবেদন করা লাইসেন্স ইস্যুর জন্য গত ২১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ২৯৪তম কমিশন সভায় নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

স্টারলিংক বাংলাদেশের ইন্টারনেটে নতুন সংযোজন। শ্রীলঙ্কার পরে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশে বৈশ্বিক এই স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান যাত্রা শুরু করল।

এ প্রসঙ্গে ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময়ে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের উপর্যুপরি ইন্টারনেট বন্ধের প্রতিবাদে স্টারলিংককে বাংলাদেশের নিয়ে আসা একটা গণদাবিতে পরিণত হয়েছিল।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে বিনিয়োগবান্ধব হিসেবে একটা বার্তা পৌঁছে দেওয়ার ইচ্ছা ছিল প্রধান উপদেষ্টার। বাংলাদেশের হাওর বাওড় দ্বীপাঞ্চলে, দুর্গম পার্বত্য এলাকায়, বিশেষভাবে উপকূলীয় দুর্যোগ প্রবণ এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন এবং মানসম্পন্ন ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যেসব অঞ্চলে এখনো ফাইবার পৌঁছেনি সেখানে দ্রুততম সময়ে মানসম্পন্ন ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়ার চাহিদার প্রেক্ষিতে প্রধান উপদেষ্টা স্বউদ্যোগী হয়ে স্পেইসএক্স সিইও ইলন মাস্ককে ফোন করে ৯০ দিনের মধ্যে স্টারলিংককে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করার আহ্বান জানান। এ লক্ষ্য অর্জনে বিডা, বিটিআরসি, ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় নিবিড়ভাবে কাজ করেছে।’

ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, স্টারলিংকের সেবাগুলো মধ্যে একটা প্রাথমিক সেবা হচ্ছে নিরবচ্ছিন্ন উচ্চগতির ইন্টারনেট, যেখানে লোডশেডিংয়ের সঙ্গে সঙ্গে ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাবে না, যেটা আইএসপির ক্ষেত্রে হয়। অনেক ক্ষেত্রে যদি লম্বা সময় ধরে লোডশেডিং থাকে, মোবাইল টাওয়ারের ব্যাটারির ব্যাকআপ ফুরিয়ে গেলে মোবাইল ইন্টারনেটেও বিঘ্ন ঘটে। স্টারলিংকের ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যা হবে না।

তিনি বলেন, আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে, বাংলাদেশে ফাইবার নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি সীমিত। উপরন্তু এই ফাইবার নেটওয়ার্কের উল্লেখযোগ্য অংশ টেলকো গ্রেডের নয়। বাংলাদেশের অন্তত ৬৫ শতাংশ টেলিযোগাযোগ টাওয়ার এখনো ফাইবারাইজেশনের বাইরে। সেখানে মাইক্রোওয়েভ দিয়ে সেবা দেওয়া হয়, যার ধারণ ক্ষমতা খুবই সীমিত। আবার আমাদের মোবাইল নেটওয়ার্কের যে কাভারেজ ও ক্যাপাসিটি আছে, তাতেও সমস্যা আছে। হাইওয়ে মোবিলিটি কভারেজের সমস্যা আছে। স্টারলিংক এসব সমস্যার সমাধান করবে।

তিনি জানান, স্টারলিংক বাংলাদেশের মোবাইল এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বাজারকে প্রতিযোগিতামূলক করবে। এর মাধ্যমে ভয়েস কল এবং ডেটা বান্ডেলভিত্তিক গতানুগতিক ইন্টারনেট সেবাদান ব্যবস্থা ডিজিটাল সার্ভিস কেন্দ্রিক নতুন রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, স্টার্লিংকের সার্ভিসের ফলে কমিউনিকেশন ইন্ডাস্ট্রিতে ডিরেগুলেশনের সূচনা হবে। প্রতিযোগিতা বাড়বে, শহর কিংবা গ্রামভেদে নিরবচ্ছিন্ন এবং মানসম্পন্ন উচ্চগতির ইন্টারনেট প্রাপ্তির নিশ্চয়তা তৈরি হবে।

মন্তব্য

মহাবিস্ময়কর সৃষ্টি ‘আঙ্গুলের ছাপ’

মহাবিস্ময়কর সৃষ্টি ‘আঙ্গুলের ছাপ’

বর্তমান অত্যাধুনিক যুগে জীবন চলার পথে যেকোনো কাজেই এগিয়ে যান না কেন, আঙ্গুলের ছাপ ছাড়া প্রশ্নবিদ্ধসহ প্রতিবন্ধকতায় সম্মুখীন হবেন। আর আপনিই যে আপনি, তা কেবল আঙ্গুলের ছাপেই শনাক্তপূর্বক বলে দিবে। মজার ব্যাপার হলো যে আপনার আঙ্গুলের ছাপ শুধুই আপনার; সারা পৃথিবীতে প্রায় সাড়ে ৮০০ কোটি মানুষের ছাপের সঙ্গে কোনো মিল হবে না। শুধু তাই নয়, সৃষ্টির গোড়া থেকে শুরু করে যত মানুষ এই ধরায় এসেছেন এবং পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার আগ পর্যন্ত যত মানুষ আসবেন, কারও আঙ্গুলের ছাপের সঙ্গে মিল তথা এক হবে না। আঙ্গুলের এই ব্যতিক্রম ছাপের ব্যাপারে এখন বিজ্ঞানীরা জোর গলায় বললেও এ কথাটি ১৪০০ বছর আগেই পবিত্র কোরআন শরিফের সুরা ক্বিয়ামাহ (মক্কায় অবতীর্ণ)-তে উল্লেখ করা হয়েছে। আর যেভাবেই বলি না কেন, আঙ্গুলের ছাপ আল্লাহতায়ালার মহাবিস্ময়কর সৃষ্টি।

এ প্রেক্ষাপটে উল্লেখ্য, বর্তমানে আধুনিক বিজ্ঞান কি বলেছে জানেন? এ ব্যাপারে বিজ্ঞান বলে যে গর্ভাবস্থায় যখন ভ্রূণের মাত্র ১০ সপ্তাহ বয়স, তখন তার আঙ্গুলের ছাপ গঠিত হয়। আর সেটা সারাজীবন একই থাকে; পরিবর্তন হয় না। কোনো দুই ব্যক্তির আঙ্গুলের ছাপ কখনই এক হয় না। এমনকি জমজ ভাই-বোনদের ক্ষেত্রেও না। কিন্তু কেন? এর কারণ মায়ের গর্ভে প্রতিটি শিশুর বেড়ে ওঠার পরিবেশ একেবারেই আলাদা হয়; যা তাদের আঙ্গুলের ছাপের ওপর প্রভাব ফেলে। এ ছাড়া আপনার আঙ্গুলের ছাপে আরও অনেক রহস্য লুকিয়ে আছে? এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে আঙ্গুলের ছাপ কেবল আপনাকে শনাক্ত করবে, তাই নয়। একইসঙ্গে আপনার জ্বিনগত দিক দিয়ে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য বহন করে। গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের আঙ্গুলের ছাপ আঁকা-বাঁকা, তাদের বহুমূত্র ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বেশি থাকে। এই রকম আরও নানা রোগের চিহ্ন বহন করে থাকে, যা এখনো গবেষণার পর্যায়ে আছে।

এক সময় শুধু অপরাধীকে ধরতে আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এখন বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নাগরিকদের পরিচয়ের জন্য; যেমন- আইডেন্টেটি কার্ড ও পাসপোর্ট বইসহ বায়োমেট্রিক্স তথ্য সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে এই ছাপ ব্যবহার করা হয়। তা ছাড়া বাংলাদেশে মোবাইল সিম কিনতে আঙ্গুলের ছাপ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এমনকি, অনেক অফিসে ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে পাসওয়ার্ডের পরিবর্তে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যবহৃত হচ্ছে। এই আঙ্গুলের ছাপের বিষয়টি আল্লাহর কুদরতের এক অকাট্য প্রমাণ বৈ কিছু নয়। পবিত্র কোরআনে ১৪০০ বছর আগেই আল্লাহতায়ালা এই সৃষ্টির কথা বলেছিলেন। আর এতে এটাই প্রমাণ করে, কোরআন কখনো মানুষের লেখা নয়; বরং মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত এক পরিপূর্ণ জীবনবিধান। ১৬৮৪ সালে সর্বপ্রথম ইংলিশ ফিজিশিয়ান, উদ্ভিদ বিজ্ঞানী এবং অনুবীক্ষণ যন্ত্রবিদ ‘নিহোমিয়া গ্রিউ’ বৈজ্ঞানিক দৈনিক-ই প্রকাশ করে এতে করতল ও আঙ্গুলের ছাপের রহস্যের সংযোগ সূত্রের ধারণার উত্থাপন করেন। তবে ১৬৮৪ সালের পূর্বে ফিঙ্গার প্রিন্ট সম্পর্কে আর কোনো বিজ্ঞানীর আলোকপাতের কথা পাওয়া যায় না। এর পরবর্তীতে দীর্ঘ বিরতির পর ১৮০০ সালের পর ফিঙ্গার প্রিন্ট পুনরায় জোরভাবে বৈজ্ঞানিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং এ ক্ষেত্রে তারা বিভিন্ন আঙ্গিকে গুরুত্ব দেন। এসব বিজ্ঞানীদের মধ্য উল্লেখযোগ্য হলেন, জেন জিন্সেন, সৈয়দ মুহাম্মাদ কাজী আজিজুল হক (খুলনা) ও ব্রিটিশ কর্মকর্তা এওয়ার্ড হেনরি। অবশ্য ১৬৮৫ সালে ডার্চ ফিজিসিয়ান ‘গোভার্ড বিডলো’ এবং ইটালিয়ান বিজ্ঞানী ‘মারসিলো বিডলো’ এনাটমির ওপর বই প্রকাশ করে ফিঙ্গার প্রিন্টের ইউনিক গঠনের ওপর নানা বিষয় তুলে ধরেন। প্রকাশ থাকে, খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০ অব্দে ব্যবসায়িক কাজে ছোট ছোট শুকনো কাদার খণ্ডে ব্যাবিলিয়ানদের আঙ্গুলের ছাপ দেওয়ার রীতি প্রচলিত ছিল। আর ১৮৯১ সালে আর্জেন্টিনার হুয়ান ভুসেটিস অপরাধী ধরার পদ্ধতি আবিষ্কার করার মাধ্যমে আধুনিক যুগের আঙুলের ছাপের ব্যবহার শুরু করেন।

কথা প্রসঙ্গে আবার আল কোরআনের কথাই ফিরে আসি। এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য, আল্লাহতায়ালা যখন কোরআনে বারবার বিচার দিবস ও পুনরুত্থানের কথা বলেছেন। তখন কাফিররা এই বলে হাসাহাসি করত যে পচাগলা হাড়গুলোকে কীভাবে একত্রিত করা যাবে? একজনের অস্থির সঙ্গে অন্যজনেরগুলো কি বদল হবে না? এ ব্যাপারে আল্লাহ রাব্বুল আল আমিন প্রতি-উত্তরে বলেছেন, ‘মানুষ কি মনে করে যে আমি তার অস্থিসমূহ একত্রিত করতে পারব না? বরং আমি তার অঙ্গুলিগুলোর ডগা পর্যন্ত সঠিকভাবে সন্নিবেশিত করতে সক্ষম’ (আল কিয়ামাহ, আয়াত ৩-৪)। বস্তুত এখানে মহান রব ফিঙ্গার প্রিন্টের সক্রিয়তার ওপর ইঙ্গিত দিয়েছেন। আর আল্লাহতায়ালা কেবল মানুষের অস্থিতে মাংস পরিয়েই উত্থিত করবেন না; বরং এমন নিখুঁতভাবে মানুষকে পুনরায় জীবিত করবেন, যেমন- জীবদ্দশায় তার আঙ্গুলের সূক্ষ্ম রেখা পর্যন্ত সুবিন্যস্ত ছিল। এখানে এটাই ইঙ্গিত করা হয়েছে যে পুনরুত্থানে কত নিখুঁতভাবে পুনরায় মানুষকে হুবহু অবয়ব দেওয়া হবে। কাফিররা বলে গলা পচা অস্থি একজনেরগুলোর সঙ্গে অন্যজনেরগুলো কি মিশ্রিত হবে না? এ ক্ষেত্রে আল্লাহ বুঝিয়ে দিয়েছেন যে অস্থি মিশ্রিত হওয়া তো দূরে থাক; বরং নিখুঁতভাবে তিনি মানুষকে পুনরুত্থিত করবেন।

আসলে যেভাবেই বলি না কেন, ফিঙ্গার প্রিন্ট প্রকারান্তরে ডেটা ব্যাংক বলে অভিহিত। কেননা জ্বিনের মধ্য সন্নিবেশিত প্রায় সব বৈশিষ্ট্য, শুধু শারীরিক গঠনই নয় বরং চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য পর্যন্ত আঙ্গুলের ছাপে এনকোড করা থাকে। তাই আল্লাহ এখানে কাফিরদের জবাব ও জ্ঞানীদের জন্য নিদর্শন দিয়েছেন যে শুধু মাত্র আঙ্গুলের ডগার প্রিন্ট দিয়ে যদি একটি মানুষের সম্যক বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। তবে প্রত্যেক মানুষকে তার নিজের অস্থি দিয়ে পুনর্বিন্যস্ত করা কোনো ব্যাপারই না। এ সূত্র ধরে হয়তো অনেকেই বায়োমেট্রিকস বায়োলজিক্যাল ডেটা পরিমাপ এবং বিশ্লেষণ করার প্রযুক্তি সম্পর্কে অবহিত আছেন। এখানে গ্রিক শব্দ ইওঙ, যার অর্থ জীবন বা প্রাণ এবং গবঃৎরপ হলো পরিমাপ করা। মূলত বায়োমেট্রিকস এমন একটি প্রযুক্তি, যেখানে কোনো ব্যক্তির গঠনগত এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত বা শনাক্ত করা হয়। এ ক্ষেত্রে ফিঙ্গার প্রিন্টের ব্যাপারে আগেই উল্লেখ করেছি, একজনের আঙ্গুলের ছাপ বা টিপ-সই অন্য কোনো মানুষের সঙ্গে মিল নেই। আর এটি মাথায় রেখে প্রথমেই আঙ্গুলের ছাপ ডেটাবেইসে সংরক্ষণ করা হয় এবং পরবর্তী সময়ে ফিঙ্গার প্রিন্ট রিডারের মাধ্যমে আঙ্গুলে ছাপ ইনপুট নিয়ে ডেটাবেইজে সংরক্ষিত আঙ্গুলের ছাপের সঙ্গে তুলনাপূর্বক যেকোনো ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়। আসলে ফিঙ্গার প্রিন্ট রিডার হচ্ছে বহু ব্যবহৃত একটি বায়োমেট্রিক ডিভাইস, যার সাহায্যে মানুষের আঙ্গুলে ছাপ বা টিপসইগুলো ইনপুট হিসেবে গ্রহণ করে, তা পূর্ব থেকে সংরক্ষিত আঙ্গুলের ছাপ বা টিপসইয়ের সঙ্গে মিলিয়ে পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। তবে যারা দৈহিকভাবে আঙ্গুলের কাজ করেন, সে ক্ষেত্রে রেখাগুলো মিলে বা মুছে গেলে, এই পরীক্ষায় জটিলতার কথা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

উপর্যুক্ত বর্ণনার প্রেক্ষিতে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, আঙ্গুলের ছাপ আল্লাহতায়ালার মহাবিস্ময়কর সৃষ্টি।

লেখক: বিশিষ্ট গবেষক, অর্থনীতিবিদ এবং লেখক হিসেবে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সম্মাননা ও পদকপ্রাপ্ত।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
1 Mbps Internet for 5 rupees

৫০০ টাকায় ১০ এমবিপিএস ইন্টারনেট

প্রত্যাখান মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের
৫০০ টাকায় ১০ এমবিপিএস ইন্টারনেট

ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের এখন থেকে ৫০০ টাকায় ৫ এমবিপিএসের বদলে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)। তবে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি অডিটোরিয়ামে টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের (টিআরএনবি) আয়োজিত ‘ইন্টারনেট সেবা: সমস্যা, সম্ভাবনা ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত জানান আইএসপিএবির সভাপতি ইমদাদুল হক।

তিনি বলেন, গৃহীত সিদ্ধান্ত আজ থেকেই কার্যকর হবে। এখন থেকে ৫০০ টাকায় দ্বিগুণ গতির ইন্টারনেট পাবেন গ্রাহকরা। সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা পেলে আগামীতে ৫০০ টাকায় ২০ এমবিপিএস ইন্টারনেট দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে ব্রডব্যান্ডের স্পিড সর্বনিম্ন ২০ এমবিপিএস হওয়া উচিত। যেসব ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্সের (আইএসপি) এই গতির ইন্টারনেট দেওয়ার সক্ষমতা আছে, তাদের লাইসেন্স দ্রুত আপগ্রেড করা উচিত।’

তবে আইএসপিএবির এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।

এক বিবৃতিতে সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতি সর্বনিম্ন ১০ এমবিপিএস করা গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। সরকার ইতোমধ্যে সাবমেরিন ক্যাবল ব্যান্ডউইথের মূল্য ১০ শতাংশ কমিয়ে এনেছে। পাঁচ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারে গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তাছাড়া ফাইবারের জটিলতা নিরসন করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ভারত থেকে প্রোভাইডাররা ইন্টারনেট কিনছেন মাত্র ৮০ টাকায় ১ জিবিপিএস, অথচ গ্রাহকরা কিনছে লাখ টাকায়। গ্রাহকদের প্রত্যাশা ছিল ইন্টারনেটের সর্বনিম্ন গতি হবে ২০ এমবিপিএস এবং সর্বোচ্চ হবে ১০০ এমবিপিএস।’

গ্রাহকদের ওপর বিটিআরসির এ সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া অন্যায় এবং অযৌক্তিক হবে বলে জানায় সংগঠনটি।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The new variant of the A3 Pro is on the market

বাজারে এলো অপো এ৫ প্রো-এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট

বাজারে এলো অপো এ৫ প্রো-এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট অপো এ৫ প্রো

বৈশ্বিক প্রযুক্তি ব্র্যান্ড অপো বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে তাদের বহুল আলোচিত টেকসই স্মার্টফোন অপো এ৫ প্রো-এর একটি নতুন ভ্যারিয়েন্ট বাজারে এনেছে। এই নতুন সংস্করণে রয়েছে উল্লেখযোগ্য আপগ্রেড, যার মধ্যে রয়েছে ৮ জিবি র্যা০ম এবং ২৫৬ জিবি রম, যা নিশ্চিত করে আরও উন্নত পারফরম্যান্স ও পর্যাপ্ত স্টোরেজ সুবিধা— স্মার্টফোনটি এখন সারা দেশে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ২৬,৯৯০ টাকায়।


স্মার্টফোন ফটোগ্রাফিতে একেবারে নতুন মাত্রা যোগ করেছে অপো এ৫ প্রো-এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট, যার সঙ্গে রয়েছে আন্ডারওয়াটার ফটোগ্রাফি মোড — একটি ব্যতিক্রমী ফিচার যা ডিভাইসটিকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তোলে। এই নতুন ফিচারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা পানির নিচে অনায়াসে চমৎকার সব ছবি তুলতে পারবেন, যা অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী ও ফটোগ্রাফি প্রেমী মানুষদের জন্য একেবারে গেম-চেঞ্জার।

বাজারে এলো অপো এ৫ প্রো-এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট


বিশ্বের প্রথম স্মার্টফোন হিসেবে আইপি৬৬, আইপি৬৮, এবং আইপি৬৯ সার্টিফিকেশনপ্রাপ্ত অপো এ৫ প্রো নতুনভাবে ‘টেকসই স্মার্টফোনকে’ সংজ্ঞায়িত করেছে। ডিভাইসটির জন্য ইন্ডাস্ট্রি-লিডিং সার্টিফিকেশনগুলো পানি, ধুলাবালি ও আঘাতের বিরুদ্ধে অতুলনীয় সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করে। তাই প্রতিকূল পরিবেশে বা দৈনন্দিন ব্যবহারে এই স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য আদর্শ সঙ্গী।


তবে অপো এ৫ প্রো-কে বিশেষ করে তোলে শুধু এর টেকসই গঠনই নয়। মজবুত নির্মাণের পাশাপাশি এটির উচ্চমানের ফটোগ্রাফি সক্ষমতা। এই স্মার্টফোনটিতে রয়েছে এআই-চালিত ফিচার, যা মোবাইল ফটোগ্রাফিকে নিয়ে গেছে এক নতুন উচ্চতায়।

বাজারে এলো অপো এ৫ প্রো-এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট


এআই ইরেজার ২.০ এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা খুব সহজেই ছবির অপ্রয়োজনীয় অংশ মুছে ফেলতে পারেন, আর এআই রিফ্লেকশন রিমুভার গ্লেয়ার বা প্রতিফলন দূর করে আরও পরিষ্কার ও প্রফেশনাল লুকিং ছবি দেয়। এআই আনব্লার ফিচার ঝাপসা বা ফোকাস হারানো ছবিকে আবার স্পষ্ট করে তোলে, ফলে প্রতিটি মুহূর্ত ধরা পড়ে নিখুঁতভাবে।


এছাড়াও এআই ক্লিয়ারিটি এনহান্সার ছবির প্রতিটি খুঁটিনাটি নিখুঁতভাবে এডিট করে উপহার দেয় ঝকঝকে, হাই-ডেফিনিশন ইমেজ। অভ্যন্তরীণ প্রযুক্তির দিক থেকে, অপো এ৫ প্রো-এ ব্যবহার করা হয়েছে স্মার্ট কালারওস ১৫ লাইট, যা চালিত হচ্ছে শক্তিশালী ট্রিনিটি ইঞ্জিনের মাধ্যমে। এই শক্তিশালী কম্বিনেশন নিশ্চিত করে স্মুথ, স্থিতিশীল ও দক্ষ পারফরম্যান্স—হোক সেটা মাল্টিটাস্কিং, ভিডিও দেখা বা যেকোনো অ্যাপ ব্যবহার। ইউজার অভিজ্ঞতাকে আরও উন্নত করতে, অপো দিচ্ছে ৪৮ মাসের ফ্লুয়েন্সি প্রোটেকশন, যা নিশ্চিত করে যে দীর্ঘদিন ব্যবহারের পরেও ডিভাইসটি আগের মতোই পারফর্ম করবে ও সাড়া দেবে।


অপো এ৫ প্রো সম্পর্কে আরও জানতে ভিজিট করুন অপো বাংলাদেশ-এর অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/OPPOBangladesh অথবা অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://www.oppo.com/bd/.

মন্তব্য

বাংলাদেশ
New Years new years new market in the market apo Reno 3G

নববর্ষের নব-প্রেরণায় বাজারে ‘অপো রেনো ১৩ ৫জি’

নববর্ষের নব-প্রেরণায় বাজারে ‘অপো রেনো ১৩ ৫জি’ অপো রেনো ১৩ ৫জি
এই বৈশাখে গরমে যখন সবাই হাঁসফাঁস করে, নেমে পড়ে সুইমিং পুল, নদী কিংবা ঝর্ণায়- তখন উৎসবমুখর দারুণ সময় কাটাতে প্রয়োজন ‘অপো রেনো১৩ ৫জি’ এর মতো সম্পূর্ণ ‘ওয়াটার প্রুফ’ বা পানিরোধী স্মার্টফোন। এই মোবাইলে রয়েছে- ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষস্থানীয় আইপি৬৯ রেটিং; আন্ডারওয়াটার ফটোগ্রাফি সক্ষমতা- যাতে পানির নিচেও স্মৃতিময় মুহূর্তগুলো ক্যামেরাবন্দি করা সম্ভব। ‘অপো রেনো১৩ ৫জি’ আপনাকে দেবে কোনো প্রোটেক্টিভ কেস এর সহায়তা ছাড়াই মুগ্ধকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করার সুযোগ।

লাল-সাদা রঙ ও বর্ণিল উচ্ছলতায়, গানের সুরে সুরে ভিন্ন আনন্দ এবং আমেজে দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। বাংলা নতুন বছরের এই উৎসবমুখর সময়ে অপো বাংলাদেশ প্রযুক্তিপ্রেমীদের আনন্দ বহুগুণে বাড়িয়ে দিতে নিয়ে এসেছে পারফেক্ট স্মার্টফোন ‘অপো রেনো১৩ ৫জি’।


এই বৈশাখে গরমে যখন সবাই হাঁসফাঁস করে, নেমে পড়ে সুইমিং পুল, নদী কিংবা ঝর্ণায়- তখন উৎসবমুখর দারুণ সময় কাটাতে প্রয়োজন ‘অপো রেনো১৩ ৫জি’ এর মতো সম্পূর্ণ ‘ওয়াটার প্রুফ’ বা পানিরোধী স্মার্টফোন। এই মোবাইলে রয়েছে- ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষস্থানীয় আইপি৬৯ রেটিং; আন্ডারওয়াটার ফটোগ্রাফি সক্ষমতা- যাতে পানির নিচেও স্মৃতিময় মুহূর্তগুলো ক্যামেরাবন্দি করা সম্ভব। ‘অপো রেনো১৩ ৫জি’ আপনাকে দেবে কোনো প্রোটেক্টিভ কেস এর সহায়তা ছাড়াই মুগ্ধকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করার সুযোগ।


অপোর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ‘এআই লাইভ ফটো’ ফিচার শাটার ট্যাপ করার কিছু সময় আগেও এবং পরেও ছবি ক্যামেরাবন্দি করতে সক্ষম, যা কি না ছবিগুলোকে অকেবারেই প্রাণবন্ত ও জীবন্ত শর্ট ক্লিপস তৈরি করে।


মন-মাতানো এমন সব ছবি ক্যামেরাবন্দি করার পর- ‘অপো রেনো১৩ ৫জি’ এ আরো রয়েছে এআই-পাওয়ারড এডিটিং টুলস। যাতে ছবির অপ্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সহজেই মুছে ফেলা যায়, আর এ জন্য রয়েছে এআই ইরেজার ২.০; এছাড়া ছবিতে সূর্যের আলো কিংবা পানির যেকোনো অযাচিত আবহ বা ইফেক্ট সহজেই এআই রিফ্লেকশন রিমুভার দিয়ে মুছে ফেলা সম্ভব; মুঠোবন্দি করা ছবি আরো স্পষ্ট করা যাবে এআই আনব্লার টুলস ব্যবহার করে এবং ছবির ডিটেইল নিশ্চিত করবে এআই ক্লিয়ারিটি এনহেন্সার। তাই ছবি তোলা থেকে শুরু করে এডিট এবং সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করার পুরো প্রক্রিয়াটি নির্বিঘ্ন করবে ‘অপো রেনো১৩ ৫জি’।

বাংলাদেশের অপো’র সব আউটলেট ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এখন-ই পাওয়া যাচ্ছে, ‘অপো রেনো১৩ ৫জি’ এবং এই মোবাইলের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে মাত্র ৬৯ হাজার ৯৯০ টাকা।

তাই এই নববর্ষে শুধু ছবি তোলা নয়, হয়ে উঠুন এই উৎসবের অংশও। জীবনের সবটা পুরোপুরিভাবে আবিষ্কার করুন ‘অপো রেনো১৩ ৫জি’ এর মাধ্যমে।

মন্তব্য

p
উপরে