× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
UP election As the candidature is open the heat conflict has decreased
google_news print-icon

ইউপি নির্বাচন: প্রার্থিতা উন্মুক্ত থাকায় কমেছে উত্তাপ-সংঘাত

ইউপি-নির্বাচন-প্রার্থিতা-উন্মুক্ত-থাকায়-কমেছে-উত্তাপ-সংঘাত
নির্বাচন ঘিরে কালকিনি উপজেলার সাহেবরামপুর ইউনিয়নে মাঠে দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে নামে। ছবি: নিউজবাংলা
মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও গোপালগঞ্জে প্রথম থেকে পঞ্চম দফা পর্যন্ত ইউপি নির্বাচনে সংঘাত-সংঘর্ষের চিত্র ছিল দেশের অন্যান্য জেলার মতোই। তবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন দেয়নি এমন ইউপিগুলোতে ছিল তুলনামূলক শান্ত পরিবেশ।

চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ কয়েকটি জেলায় প্রার্থিতা উন্মুক্ত রাখায় সংঘাত-সংঘর্ষ কম হয়েছে।

আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি এমন অনেক জেলায়ও নৌকার প্রার্থীর ভরাডুবি হয়েছে। তৃণমূলে দলের নামে সংঘাতে কয়েকটি ইউনিয়নে প্রাণহানিও ঘটেছে। হামলা-মামলার মুখে এলাকা ছেড়েছেন অনেকে।

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের তিন জেলা মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও গোপালগঞ্জে প্রথম থেকে পঞ্চম দফা পর্যন্ত ইউপি নির্বাচনের সার্বিক বিশ্লেষণে এমন চিত্র উঠে এসেছে। তৃণমূলে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন চান না অধিকাংশ দলীয় নেতা-কর্মীই। তবে ত্যাগী নেতাদের মনোনয়ন দিলে দল শক্তিশালী হবে- এমন দাবিও রয়েছে।

মাদারীপুরের তিনটি আসনেই দুই যুগের বেশি সময় ধরে একক আধিপত্য আওয়ামী লীগের। তারপরও এবার স্থানীয় নির্বাচনে সদর, রাজৈর ও শিবচর উপজেলার ইউনিয়নগুলোতে দলীয় মনোনয়ন দেয়নি আওয়ামী লীগ। এর বাইরে কালকিনি ও ডাসার উপজেলার ১২ ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ৯টি ইউনিয়নেই স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। মাত্র তিনটি ইউনিয়নে জয় পেয়েছে নৌকা।

মাদারীপুর জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্য মতে, প্রথম দফা ইউপি নির্বাচনে শিবচর উপজেলায় ১৪টি ইউনিয়নে কাউকে দলীয়ভাবে মনোনয়ন দেয়নি আওয়ামী লীগ। সেখানে কোনো ধরনের সংঘাত ছাড়াই ব্যাপক ভোটারের উপস্থিতিতে নির্বাচন হয়। উন্মুক্ত প্রার্থিতা থাকায় আওয়ামী লীগ ঘরানার রাজনীতিতে বিশ্বাসীরাই মূলত এসব ইউনিয়নে জয়ী হন। আর নৌকা প্রতীক না থাকায় প্রার্থীদের মধ্যে তেমন সংঘাত-সংঘর্ষও ঘটেনি।

দ্বিতীয় ধাপে কালকিনি ও ডাসার উপজেলায় নৌকার প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়। ‘মনোনয়ন বাণিজ্যে’ অযোগ্য লোককে নৌকার মাঝি করায় সংঘাতের সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে কালকিনির চর দৌলতখান (সিডিখান) ইউনিয়নে নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. চান মিয়া সিকদারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। ভুরঘাটা-মোল্লারহাট সড়কের বটতলা মোড়ে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ সৃষ্টির ঘটনাও ঘটে।

ইউপি নির্বাচন: প্রার্থিতা উন্মুক্ত থাকায় কমেছে উত্তাপ-সংঘাত
ভোটের প্রচারকালে দফায় দফায় সংঘর্ষে মোটরবাইক ভাঙচুর করা হয়। ছবি: নিউজবাংলা

ভোটের প্রচারকালে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় শিকারমঙ্গল, সিডিখান, আলীনগর, ডাসার, কয়ারিয়াসহ প্রায় সব কটি ইউনিয়নে। গত ২৮ অক্টোবর আলীনগর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী হাফিজুর রহমান মিলন সর্দারের বাড়িঘরে ব্যাপক হামলা চালিয়ে ১০টি মোটরবাইক, একটি প্রাইভেট কারসহ কোটি টাকার ক্ষতি করার অভিযোগ ওঠে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাহিদ পারভেজের বিরুদ্ধে।

তবে সাহিদ পারভেজের দাবি, স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনই বরং নৌকা প্রতীক ভেঙেছেন। এর আগে শিকারমঙ্গল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সিরাজুল হক মৃধার লোকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল আলম মালের বাড়িতে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুরসহ অন্তত ২০ জনকে আহত করেন।

ডাসার উপজেলায় গত ২ নভেম্বর ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সবুজ কাজী ও তার সমর্থকদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিম ভাসাই শিকদার ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর চার সমর্থকসহ এক নারী সাংবাদিক আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বিপুল দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে।

৬ নভেম্বর কালকিনির কয়ারিয়া ইউপি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী জাকির হোসেন জমাদার ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী কামরুল হাসান নুর মোহাম্মদ সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণসহ ৫০ মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হন। পুলিশ ১২ জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করেছে।

এ ছাড়া ১০ নভেম্বর দ্বিতীয় দফা ইউপি নির্বাচনে সিডিখানে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী চান মিয়া শিকদার ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মিলন মিয়ার কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন আটজন। তাদের মধ্যে আলমগীর হোসেন প্যাদা নামে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

ইউপি নির্বাচন: প্রার্থিতা উন্মুক্ত থাকায় কমেছে উত্তাপ-সংঘাত
নির্বাচন ঘিরে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনায় মামলা ও আটকের সংখ্যাও কম না। ছবি: নিউজবাংলা

এ ছাড়া একই উপজেলার কয়ারিয়া, শিকারমঙ্গল, লক্ষ্মীপুর, ডাসার উপজেলার গোপালপুর, বালীগ্রাম, ডাসারসহ বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ, হামলা-পাল্টাহামলায় পাঁচ শতাধিক মানুষ আহত হন। এসব ঘটনায় কালকিনি ও ডাসার থানায় ২০টির বেশি মামলা হয়।

তবে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম ধাপে সদর, রাজৈর, শিবচর উপজেলার ২৬টি ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থিতা উন্মুক্ত থাকায় তেমন সংঘাত হয়নি। ভোটার উপস্থিতিও ছিল তুলনামূলক বেশি।

এ ব্যাপারে কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপিকা তাহমিনা সিদ্দিকা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পরাজয় হয়নি। পরাজয় হয়েছে মনোনয়ন বাণিজ্যের। যারা মনোনয়ন পেয়েছেন তারা এক প্রভাবশালী ব্যক্তিকে টাকা দিয়ে নৌকা কিনে এনেছেন। এ কারণে জনগণ মনোনয়ন বাণিজ্যের বিরুদ্ধে তাদের রায় দিয়েছেন। আর মনোনয়ন উন্মুক্ত থাকা ইউপিগুলোতে স্বতন্ত্র হিসেবে বিজয়ীরাও সবাই আওয়ামী লীগ করেন। এসব ইউপিতে হামলা-মামলার ঘটনাও কম ঘটেছে।’

মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ঘাঁটিতে নৌকার প্রার্থী বিজয়ী না হওয়ার পেছনে নানা কারণ থাকতে পারে। দলের ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করা হলে নৌকার পরাজয় হতো না। যেখানে অযোগ্য প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে, সেখানে সংঘর্ষের ঘটনাও বেশি ঘটেছে। আমি মনে করি দলীয় মনোনয়নের বিষয়ে আরো সতর্ক হতে হবে।’

আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান বলেন, ‘মাদারীপুরসহ আশপাশের জেলাগুলো আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি। এখানে অধিকাংশ মানুষই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করে মাদারীপুরের কয়েকটি উপজেলায় নৌকা প্রতীক না দেয়ার অনুরোধ করেছিলাম। তাই এসব স্থানে নৌকা না দেয়ায় বিনা রক্তপাতে নির্বাচন হয়েছে। আগামীতে এ ধারা অব্যাহত রাখতে অনুরোধ করব।’

ইউপি নির্বাচন: প্রার্থিতা উন্মুক্ত থাকায় কমেছে উত্তাপ-সংঘাত
নির্বাচনে গোলাগুলি ও মারামারির ঘটনা ঘটনায় আতঙ্ক বিরাজ করছে এলাকাজুড়ে। ছবি: নিউজবাংলা

মাদারীপুরের পাশের জেলা শরীয়তপুরেও ৬৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪২টিতে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীকবিহীন নির্বাচন হয়েছে। আর আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নে নির্বাচন হয়েছে শরীয়তপুর সদরের ৯ ইউপিতে। এ নয়টি ইউনিয়নে দ্বিতীয় ধাপে নৌকার মনোনয়ন নিয়ে কয়েকজন নির্বাচিত হন। তবে দলীয় প্রার্থীর সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের হামলা-মামলার ঘটনা বেশি ঘটে। এর মধ্যে চিতলিয়া ইউনিয়নে সংঘর্ষের ঘটনায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়। দলীয় প্রার্থীর কর্মীদের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের সংঘর্ষে রক্তাক্ত জনপদে পরিণত হয় এসব ইউনিয়ন। পরে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম ধাপে আ‌ওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নবিহীন নির্বাচন হয়।

শরীয়তপুর নির্বাচন অফিসের তথ্য মতে, তৃতীয় ধাপে গোসাইরহাট উপজেলার ৭, চতুর্থ ধাপে ডামুড্যা উপজেলার ৭ ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার ১২ এবং পঞ্চম ধাপে নড়িয়ার ১৫ ও জাজিরার একটি ইউপিতে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ছাড়া নির্বাচন শেষ হয়। এসব নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ও সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্যদের মধ্যে গোলাগুলি ও মারামারির ঘটনা ঘটলেও দলীয় প্রভাব বিস্তারের ঘটনা ঘটেনি।

আওয়ামী লীগের বাতিঘর খ্যাত গোপালগঞ্জ জেলায় ৬৯টি ইউনিয়নের মধ্যে সদর উপজেলার ১৫টিতে উন্মুক্তভাবে নির্বাচন হয়েছে। অন্যগুলোর মধ্যে কোটালীপাড়ায় ৩টি ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। একটি ইউনিয়নে নির্বাচন হয়নি। বাকি ৫০টিতে দলীয় প্রার্থীদের প্রভাব বিস্তারের মধ্য দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে এসব এলাকা আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হওয়ায় সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা কম ঘটেছে।

তবে নির্বাচন-সংশ্লিষ্টদের দাবি, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়া হয়নি এমন ইউনিয়নগুলোর চেয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট হওয়া ইউপিগুলোতে নির্বাচনি উত্তাপ বেশি ছিল।

আরও পড়ুন:
পুনরায় ভোট গণনা চেয়ে মামলা
বিদ্রোহীদের চ্যালেঞ্জে নৌকা
নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য হত্যা: গ্রেপ্তার আরও ৭
প্যারোলে মুক্তি নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের শপথ
গাইবান্ধায় আ. লীগ প্রার্থীর কার্যালয়ে ‘হামলা’, আহত ৬

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
The unemployed people are lost in employment
কর্মসংস্থান হারিয়ে বেকার সংশ্লিষ্টরা

হারিয়ে যাচ্ছে বর-কনের বাহন পালকি

হারিয়ে যাচ্ছে বর-কনের বাহন পালকি গ্রামবাংলার ঐতিহ্য পালকি। ছবি: নিউজবাংলা

পালকি ছিল এক সময় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য, বর-কনের বাহন। এটা ছাড়া বিয়ের কথা ভাবাই যেত না। সারা দেশের মতো রূপগঞ্জেও একই অবস্থা ছিল। কালের বির্বতনে চিরায়ত গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের ধারক পালকি রূপগঞ্জে আজ আর চোখে পড়ে না। পালকি এখন মিউজিয়াম পিস হয়ে কালের সাক্ষী হয়ে আছে জাদুঘরে। বেহারাদের সুর করে সেই গ্রাম ঘুরে মাঠ-ঘাট-প্রান্তর পেরিয়ে গন্তব্যের কাছে দূর থেকে সেই ছয় বেহারাদের আর দেখা যাচ্ছে না। তাদের ছন্দিত লয়ে হাঁটার সঙ্গে সঙ্গে এ গাঁ থেকে ওগাঁয়ে নাইয়র, বিয়ের কনে বর কিংবা মান্যগন্য ব্যক্তিদের নিয়ে যাওয়ার এ চক্রবিহীন যান সম্ভবত তার অন্তিম যাত্রা করেছে। ছন্দের জাদুকর সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ভাষায়, রবীন্দ্রনাথের কবিতায়, হেমন্তের গানে কিংবা ভুপেন হাজারিকার মাদল তালে চলা পালকি এখন ঐতিহ্যের খাতায় নাম লিখিয়েছে।

সেই ন্যাংটা পুঁটো ছেলেটা আর বলে না পালকি চলে পালকি চলে.....আদুল গাঁয়ে যাচ্ছে কারা হনহনিয়ে। রবি ঠাকুরের ‘বীর পুরুষ’ কবিতার খোকা তার মাকে পালকিতে নিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাতদের সাথে লড়ে যখন ওরা আসে তেড়ে ‘হারে রে রে’ বলে। সেই ভীষণ যুদ্ধের বর্ণনাও দিতে পারে না মাকে। মাও বলতে পারে না, ভাগ্যেস খোকা ছিল তার সঙ্গে। দাদা তার সদ্য বিয়ে হওয়া দিদিকে আর বলে না, আর কটাঁ দিন থাক না দিদি, কেঁদে কেটে কঁকিয়ে, দুদিন বাদে তো নিয়েই যাবে পালকি করে সাজিয়ে। ‘মৈমনসিং গীতিকার’ দেওয়ানা মদিনা ও ছুটবে না পালকিতে আবের পাংখা নিয়ে আর পালকি বহরের সেই পরিচিত দৃশ্য এখন আর দেখা যায় না।

আধুনিক যোগাযোগের গোগ্রাসে পালকি হারিয়ে যাচ্ছে বিস্মৃতির অতল তলে প্রাচীন বাংলার এ বাহনটি। এক সময় গ্রাম-বাংলার হাটবাজারে পালকি সাজিয়ে রাখা হত। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার আগেই পালকিওয়ালাদের কাছে ছুটে যেতেন বরের লোকজন। পালকি কাঠ দিয়ে তৈরি করা হতো। ছয়জন মিলে পালকি বহন করতো। সামনে পেছনে দুজন ও মাঝখানে দুজন করে পালকি কাঁদে নিত। প্রথমে বরকে পালকিতে করে তার নিজ বাড়ি থেকে কনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হতো। বিয়ের কার্যক্রম সম্পূর্ণ হওয়ার পর বর-কনেকে এক সঙ্গে আবার বরের বাড়িতে নিয়ে আসতো।

আসলে পালকি নামটির উৎপত্তি ফারসি ও সংস্কৃত উভয় ইন্দো ভারতীয় ভাষা থেকে আর সেই সঙ্গে ফরাসি থেকেও। পল্লীকবি জসিম উদ্দিন তাঁর স্মৃতি কথায় এ গাঁ থেকে ওগাঁয়ে যাওয়া বেহারাদের পালকি নিয়ে চলার যে বিবরণ দিয়েছেন তা আমাদের আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের অংশ। বিলুপ্ত এ পালকি এখন বিভিন্ন জাদুঘরে শোভা পাচ্ছে। বিয়ে বাড়িতে নব বর-বধুদের আনা নেয়ায় পালকি ব্যবহার করা হতো। চক্রযানের বিপ্লবে পালকির জায়গা দখল করে নিয়েছে আধুনিকতার এ যুগে প্রাইভেটকার, নোহা, বাস ও মাইক্রোবাস। হালের লাঙ্গল যেমন গ্রামেও অচল তেমনি ধনী গরিব নির্বিশেষে সকলের নানা অনুষ্ঠানে ব্যবহার করছে আধুনিক যান্ত্রিক যানবাহন। এসব যানের রমরমা ব্যবসাও এ কারণেই জমে ওঠেছে।

আধুনিকতার ছোঁয়ায় ইদানিং বর-কনের বাহনে যোগ হয়েছে হেলিকপ্টারও। রূপগঞ্জের মুড়াপাড়া এলাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে বর যাত্রা গিয়েছেন সফিক মিয়া। হেলিকপ্টারে বর-কনে বহনের ঘটনা তখন পুরো এলাকায় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। ছড়ায় বলা হতো বউ সাজবে কালকি, চড়বে সোনার পালকি! সোনার বরনী কন্যা এখন আর পালকিবদ্ধ পরিবেশে যাবে না, উঠবে আসল বা নকল ফুলের সাজানো এয়ারকন্ডিশন গাড়িতে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Bus in Pabna Truck driver killed in a collision with truck

পাবনায় বাস- ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকচালক নিহত

পাবনায় বাস- ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকচালক নিহত

মঙ্গলবার (১৭ জুন) ভোর সাড়ে চারটার দিকে পাবনা বাইপাস মহাসড়কের ইয়াকুব ফিলিং স্টেশন এর সামনে দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ট্রাকচালক সেলিম হোসেন (৩৮) মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামের মৃত আব্দুল গনির ছেলে।

আহতরা হলেন- বাসের হেলপার তারেক (৩৫) ট্রাকের হেল্পার আলামিন (৩৫)। তাদের রাজশাহী মেডিকেল। কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ট্রাকচালক সেলিম সুনামগঞ্জ থেকে পাথর ভর্তি করে মাওয়া যাচ্ছিলেন।অপরদিক পাবনা এক্সপ্রেস বাসটি ঢাকা থেকে পাবনা বাস টার্মিনালে যাত্রী নামিয়ে হেলপার আলামিন গাড়ি গ্যারেজ করার জন্য দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে ইয়াকুব ফিলিং স্টেশনের সামনে পৌঁছালে ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

স্থানীয় লোকজন ফায়ার সার্ভিসকে জানালে তাৎক্ষিনক ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম আহত তিনজনকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ট্রাক চালক সেলিম কে মৃত ঘোষণা করেন।

অপরদিকে আহত ট্রাকের হেলপার ও বাসের হেলপারের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্থানান্তর করা হয়।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সদর থানা হেফাজতে আনা হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক ও বাসটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Two pirates with weapons in the Sundarbans 

সুন্দরবনে অস্ত্রসহ দুই ‘জলদস্যু’ আটক 

সুন্দরবনে অস্ত্রসহ দুই ‘জলদস্যু’ আটক 

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে নজির গাজী (৪৯) ও দিদারুল ইসলাম (৩৮) নামে দুই ’জলদস্যুকে’ আটক করেছে পুলিশ। সোমবার রাত সাড়ে ৯টা ও ১১টার দিকে উপজেলার উপকুলবর্তী যতীন্দ্রনগর ও মীরগাং এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। এসময় আটক দুই জলদস্যুর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের ব্যবহৃত নৌকা থেকে একটি একনলা বন্দুক উদ্ধার করে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা।

এর আগে সোমবার রাত আটটার দিকে সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে উঠে আসার সময় স্থানীয়দের ধাওয়ার মুখে অপর কয়েক সহযোগিসহ এসব জলদস্যুরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। আটকরা হলেন— শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের নওশাদ গাজী এবং আশাশুনি উপজেলার চাকলা গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে দিদারুল ইসলাম।

আবু হামজা, সিদ্দিক হোসেন ও আকবর আলীসহ স্থানীয়রা জানায়, রাত সাড়ে আটটার দিকে অপরিচিত পাঁচ/সাত জন ব্যক্তি সুন্দরবন তীরবর্তী যতীন্দ্রনগর বাজারে যায়। এসময় নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার জন্য তারা মাইক্রো বা ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের জন্য কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে সন্দেহের বশবর্তী হয়ে নাম—পরিচয়সহ সুন্দরবন এলাকায় আসার কারণ জানতে চাইলে তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় যতীন্দ্রনগর বাজারে উপস্থিত লোকজন ধাওয়া করে দিদারুলকে ধরে পুলিশকে খবর দেয়। পরবর্তীতে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির ঘটনাস্থলে পৌঁছে নজীরকে আটকের পাশাপাশি তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই চক্রের ব্যবহৃত মাছ শিকারের নৌকার মধ্যে থেকে একটি একনলা বন্দুক ও একটি দা উদ্ধার করে।

এদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছে, জোনাব বাহিনী এখন সুন্দরবনে খুব বেশি তৎপর না। বরং নজীর, তার ভাই নবাব ও ছেলে আব্দুর রহিম এবং মুন্সিগঞ্জ আটিরউপর এলাকার আছাদুলসহ কয়েকজনকে নিয়ে জোনাবের নামে সুন্দরবনে দস্যুতায় লিপ্ত। সোমবার রাতে নজীর আলীকে আটকের পরপরই তার ছেলে আব্দুর রহিম ও ভাই নবাব ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন।

আটক নজীর আলীর ভাষ্য, তিনি সুন্দরবনের ত্রাস কুখ্যাত জোনাব বাহিনীর সদ্যদের উপরে তুলে দেওয়া এবং সুন্দরবনে নামিয়ে দেয়ার কাজ করেন। সোমবার ১০ হাজার টাকার চুক্তিতে জোনাব বাহিনীর দুই সদস্যকে যতীন্দ্রনগর বাজার পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন। বনবিভাগের অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে যেয়ে মাছ শিকারের পাশাপাশি তারা পরিচিত জলদস্যুদের উপরে নিচে উঠানামার কাজ করেন বলেও দাবি তার। উপরে উঠে যাওয়া দুই জলদস্যু উদ্ধারকৃত অস্ত্রটি তার নৌকার মধ্যে রেখে যায় বলেও তিনি দাবি করেন।

দিদারুল জানান, তিনি নজীর আলীর শ্রমিক হিসেবে সুন্দরবনে যাওয়া জেলেদের জিম্মি করারসহ মুক্তিপণ আদায়ের কাজ করেন। লোকারয়ে পৌঁছে দেওয়া দুই জলদস্যুকে সুন্দরবনের পুটেরদুনে এলাকা থেকে নিয়ে আসার কথাও নিশ্চিত করেন তিনি। তবে তার কাছে মোবাইলের পাওয়ার ব্যাঙ্কসহ নানান সরঞ্জামাদির বিষয়ে জানতে চাইলে নিরুত্তর থাকেন।

এদিকে অস্ত্র উদ্ধারসহ দু’জনকে আটকের বিষয়ে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা জানান, নজীরের দেওয়া তথ্যে নৌকায় থাকা ককসিটের নিচে বিশেষ কায়দায় লুকানো অবস্থায় একটি একনলা বন্দুক উদ্ধার হয়েছে। আটকের পর উভয়কে শ্যামনগর থানায় নেওয়া হয়েছে। তারা মাছ শিকারির ছদ্মবেশে সুন্দরবনে প্রবেশ করতেন বলে প্রাথমিক তথ্য মিলেছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাহিনীর নাম—পরিচয়সহ বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।

মন্তব্য

কুমিল্লায় ৪ জনের নতুন ভ্যারিয়েন্টের করোনা শনাক্ত

কুমিল্লায় ৪ জনের নতুন ভ্যারিয়েন্টের করোনা শনাক্ত

কুমিল্লায় চার জনের শরীরে নতুন ভ্যারিয়েন্টের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে এক নারী চিকিৎসকসহ তিনজন পুরুষ রয়েছেন।

শনিবার (১৪ জুন) কুমিল্লা সিটি স্ক্যান এমআরআই স্পেশালাইজড অ্যান্ড ডায়ালাইসিস সেন্টারে করোনা পরীক্ষা শেষে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর বশির এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

করোনায় আক্রান্তরা হলেন, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আবদুল মোমিন (৭০), কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকার ডা. সানজিদা (৩০), বুড়িচং উপজেলার মো. হেলাল আহমেদ (৩৮) এবং সদর উপজেলার মো. ইবনে যুবায়ের (৩৯)।

সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর বশির বলেন, গত তিন দিনে কুমিল্লায় ১৩ জন রোগীর নমুনা সংগ্রহ করা কয়। পরীক্ষা শেষে তাদের মধ্যে চারজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং বাকিদের নগরীর একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নমুনা পরীক্ষায় রিপোর্ট পজিটিভ আসে।

তিনি বলেন, চারজনই বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে একজন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। দুজন এরই মধ্যে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় চলে গেছেন।

তবে আরেকজনের বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি সিভিল সার্জন।

করোনার প্রথম ধাক্কা কেটে যাওয়ার পর এতদিন কুমিল্লায় নতুন করে কেউ শনাক্ত হয়নি। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছিল। কিন্তু এখন আবার নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি দ্বিতীয় ধাপের শুরু হতে পারে এবং এখনই সতর্ক না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
In Chittagong six days Karona identifies 3 

চট্টগ্রামে ছয় দিনে করোনা শনাক্ত ৯ 

চট্টগ্রামে ছয় দিনে করোনা শনাক্ত ৯ 

চট্টগ্রামে নতুন করে আরো একজনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে গত ছয় দিনে মোট ৯ জনের শরীরে এ ভাইরাসের জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। শনিবার (১৪ জুন) সকালে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল আটটা থেকে শনিবার সকাল আটটা) ২৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে একজনের করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। ৪০ বছর বয়সী আক্রান্ত ওই ব্যক্তি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফতেহাবাদ এলাকার বাসিন্দা। তিনি শুক্রবার নগরের এভারকেয়ার হাসপাতালে করোনার পরীক্ষা করান। সেখানেই তার শরীরে করোনার জীবাণু শনাক্ত হয়।

এদিকে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আক্রান্ত নয়জনের মধ্যে পুরুষ ৫ জন এবং নারী ৪ জন। এদের মধ্যে ৭ জন নগরের এবং ২ জন উপজেলার বাসিন্দা।

অন্যদিকে, চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত বেসরকারি পর্যায়ে করোনা শনাক্তকরণের পরীক্ষা চালু আছে। তবে শিগগিরই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) আরটি–পিসিআর পরীক্ষা শুরু করা যাবে বলে আশা করছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Daudkandi Upazila Health Complex was injured in the fire

দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগুন, আহত ৩

দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগুন, আহত ৩

কুমিল্লার দাউদকান্দি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। দূর্ঘটনায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি। তবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রোগীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নেভাতে গিয়ে হাসপাতালের তিনজন কর্মী আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে স্থানীয় ফায়ারসার্ভিস কর্মীরা ছুটে আসে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আহতরা হলেন ইয়াসিন, মেহেদি ও মুছা। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (১৪জুন) বেলা ১১টায় দাউদকান্দি উপজেলা গৌরীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩য় তলায় ষ্টোর রুমে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে হাসাপাতালের ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীদের এবং বহিঃবিভাগে চিকিৎসা সেবা প্রায় দুই ঘন্টা বন্ধ থাকে৷ খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় এবং হাসপাতালে কর্মরত স্টাফদের সহযোগিতায় অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা ১১ টার দিকে হাসপাতালের তিনতলার ষ্টোর রুমে আগুনের ধোয়া দেখা যায়। ধোয়া দেখে পাশের ওয়ার্ডের রোগীর স্বজন ও নার্সরা আগুন আগুন বলে চিৎকার শুরু করে। এ সময় হাসপাতালে থাকা রোগী ও তাদের স্বজনরা দৌঁড়াদৌড়ি শুরু করেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পল্লী বিদ্যু ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে হাসপাতালের আউটসোর্সিংয়ে কর্মরত ইয়াসিন, মেহেদি ও মুছা নামে তিন কর্মচারী আহত হয়েছেন। আহতদের ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে দাউদকান্দি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার মোঃ ইদ্রিস বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসার পর স্থানীয় এবং হাসপাতালে কর্মরত স্টাফদের সহযোগিতায় অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। প্রাথমিক ধারনা বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনে সূত্রপাত, পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে মূল কারণ জানা যাবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, হাসপাতালের ৩য় তলায় ডেঙ্গু রোগীদের ওয়ার্ডের পাশের কক্ষে ষ্টোর রুমে ঔষধসহ রোগীদের সেবার কাজে ব্যবহৃত সব ধরনের মালামালের সাথে কিছু দামী সরঞ্জামও ছিল। ওই কক্ষে আগুনে অধিকাংশ মালামালই পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু মালামাল বের করতে পারলেও তা ভালো আছে কিনা পরবর্তীতে যাচাই করে বলেতে পারবো । আগুনে ক্ষতির পরিমান এখন নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। আর আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং মালামাল বিশেষ করে অক্সিজেন সিলিন্ডার বের করতে গিয়ে আমাদের আউটসোর্সিংয়ে কাজ করা তিনজন আহত হয়েছেন। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে হাসপাতালে অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে দাউদকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন৷

মন্তব্য

বাংলাদেশ
What are the obstacles to the smuggling and the loot of the stone?
জাফলংয়ে হামলা

চোরাচালান ও পাথর লুট নির্বিঘ্ন করতেই কী পর্যটকদের বাধা?

চোরাচালান ও পাথর লুট নির্বিঘ্ন করতেই কী পর্যটকদের বাধা? জাফলংয়ের পাথুরে নদী। ছবি: নিউজবাংলা

ঈদের ছুটিতে সিলেটে বেড়াতে এসে হেনস্তার শিকার হয়েছেন পর্যটকরা। একদিনের ব্যবধানে জাফলংয়ে পর্যটকদের উপর হামলা ও কোম্পানীগঞ্জে পর্যটনকেন্দ্র থেকে পর্যটকদের বের করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। দুটি ক্ষেত্রেই পর্যটকদের বিরুদ্ধে অশ্লীলতা ও পরিবেশ নষ্টের অভিযোগ তোলা হয়েছে। যদিও স্থানীয় একটি অংশের অভিযোগ, নির্বিঘ্নে চোরাচালান ও পাথর লুট করতেই পর্যটকদের বাধা দেয়া হচ্ছে। পর্যটক সমাগম বাড়লে লুটপাট ও চোরাকারবারে সমস্যা হয়। তাই পর্যটকদের আসতে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে দাবি তাদের।

অশ্লীলতার অভিযোগ এনে সোমবার রাতে মৌলভীবাজারের রাজনগরে “রাজনগর রিসোর্ট এন্ড কফি হাউজে” তালা দিয়েছে স্থানীয় একদল লোক। এসময় স্থানীয় থানার পুলিশ সদস্যদেরও ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় দুটি স্থান জাফলং ও কোম্পানীগঞ্জ। সবসময়ই এই দুই এলাকায় পর্যটকদের ভিড় থাকে। ঈদের মতো বড় ছুটিতে ভিড় কয়েকগুণ বেড়ে যায়। সীমান্তবর্তী এই দুই এলাকা দিয়েই ভারত থেকে দেদারছে চোরাই পণ্য আসে। এছাড়া এসব এলাকার পাথুরে নদী ও ছড়া থেকে পাথর লুটপাটও নিত্তকার ঘটনা। গত বছরের ৫ আগস্টের পর চোরাচালান ও পাথর লুট অনেকটা বেড়ে গেছে। প্রশাসনও লুটপাটকারী ও চোরাকারবারীদের ঠেকাতে পারছে না।

জানা যায়, ঈদের পরদিন রোববার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উত্তর রনিখাই ইউনিয়নের পাহাড় থেকে নেমে আসা পাথুরে ছড়া উৎমাছড়া পর্যটনকেন্দ্রে ভিড় করেন অনেক পর্যটক। বিকেলে সেখানে কিছু সংখ্যক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও স্থানীয় কিছু লোক জড়ো হয়ে পর্যটকদের বের করে দেয়। এ রকম একটি ভিডিও সোমবার রাত থেকে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। জড়ো হওয়া যুবকরা পর্যটকদের বিরুদ্ধে অশ্লীলতা, মদ্যপান ও এলাকার পরিবেশ নষ্টের অভিযোগ করেন।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পর্যটকদের বের করে দেয়ার একটি ভিডিওতে এক যুবককে বলতে শোনা যায়, 'এই এলাকা আলিমদের এলাকা, দ্বীনদার এলাকা। কিন্তু এইখানে অনেকে অনেক পরিবেশে থেকে আসে। এসে মদ খায়, আরও অনেককিছু করে, এতে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়। তাই আমাদের আবেদন, আপনারা এখানে আর আসবেন না। তাছাড়া এটি পর্যটনভুক্ত এলাকাও নয়'।

ভিডিওতে আরও বলতে শোনা যায়, ‘এই এলাকার আলেম-ওলামা ও স্থানীয়রা সিদ্ধান্ত নিয়েছে উৎমাছড়াকে পর্যটন করা যাবে না। তাই আপনারা যারা এখানে এসেছেন দয়া করে এখান থেকে চলে যান। আপনারা এখানে থেকে এখানের পরিবেশ নষ্ট করবেন না। এই এলাকার পরিবেশ ঠিক রাখার জন্য আমরা এখানে পর্যটকদের আসতে নিরুৎসাহিত করছি আজকের পর আপনারা এখানে আর কোনদিন আসবেন না’।

পর্যটকদের বের করে দেয়ার এই ভিডিও যুক্ত করে পরিবেশবাদী সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম ফেসবুকে লিখেন, ‘একদিকে চলবে পর্যটক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা অন্যদিকে পর্যটনে বাঁধা! দেশের ভেতরে সরকার ঘোষিত সংরক্ষিত এলাকা ও ব্যক্তি বা গোষ্ঠী মালিকানাধীন জায়গা ব্যতীত কোথাও জনসাধারণের প্রবেশে বাঁধা দেয়া মানুষের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ। মানুষের চলাচলে বাঁধা প্রদান ও হুমকি প্রদান দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু সিলেটে এই অপরাধ ইতিপূর্বেও ঘটেছে।

কিম লিখেন, 'বছর কয়েক পূর্বে গোয়াইনঘাট উপজেলায় এক ঈদে মায়াবন নামে পরিচিত যুগীরকান্দি জলারবনে পর্যটকদের উপর হামলা করা হয়েছিল। এরপর থেকে ওই বনে কোন পর্যটক আর পা রাখেনি। স্থানীয় মাদ্রাসা ওই জলার বনের মাছ ভোগ করে বলে এখানে পর্যটক আসুক তা চায় না। অশ্লীলতার দোহাই দিয়ে যুগীরকান্দি বন বা মায়াবন সবার দৃষ্টির আড়ালে নিয়ে যাওয়া হয়। উতমাছড়ার পাথর লুটে ওই মাদ্রাসার সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা তা জানা প্রয়োজন।'

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ বলেন, ‘উৎমাছড়ায় বেড়াতে যাওয়া জন্য নির্দিষ্ট কিংবা উপযুক্ত রাস্তা নেই। এ জন্য পর্যটকেরা স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িঘর মাড়িয়ে যাতায়াত করেন। এতে তারা অসুবিধায় পড়েন। বৈঠকে এমন দাবি করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই এলাকায় মাদক সেবন ও অশ্লীলতা হয়, এমনটিও দাবি করা হয়েছে’।

উৎমাছড়ায় পর্যটকদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, ‘এ অঞ্চলে এমন ঘটনা আগে কখনোই ঘটেনি। বিষয়টি ইউএনওকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। তিনি তদন্ত করে দেখছেন। ইউএনও জানার চেষ্টা করছেন, বিষয়টি কী?’

এদিকে, সিলেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে পর্যটকদের উপর হামলা চালিয়েছে স্থানীয় কিছু লোক। হামলাকারীরা চোরাকারবারের সাথে সম্পৃক্ত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। সোমবার বিকেলে জাফলং বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কবির হোসেন বলেন, স্থানীয় বখাটেরা পর্যটকদের ওপর হামলা করেছে। পরে সাংবাদিক ও ইউপি সদস্য মিলে ঘটনাস্থলেই বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী বলেন, ‘তুচ্ছ বিষয় নিয়ে পর্যটকদের সঙ্গে ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছিল। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গেই সমাধান হয়ে গেছে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় অনেকের ভুল ধারণা হয়েছে।’

মন্তব্য

p
উপরে