রাজধানীতে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েছেন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) এক সদস্য।
আব্দুল হান্নান নামের এই পুলিশ সদস্য রোববার বাসে অজ্ঞান পার্টির শিকার হন।
আব্দুল হান্নানের বড় ভাই আব্দুল মোমেন ওরফে বাবুল রোববার রাতে বলেন, ‘আমার ভাই এএসআই মীর আব্দুল হান্নান এপিবিএন হেডকোয়ার্টারের অধীনে বিমানবন্দরে কর্মরত। কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে রোববার বিকেলে গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরায় যাওয়ার উদ্দেশে বিমানবন্দর থেকে বাসে ওঠেন।
‘কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর যাওয়ার পর বাসের সিটে অচেতন অবস্থায় তাকে পড়ে থাকতে দেখেন আশপাশের মানুষ। তার পকেটে থাকা মোবাইল ফোন থেকে পথচারীরা আমাদের জানালে আমরা সেখান থেকে উদ্ধার করে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল নিয়ে আসি। এখানে তার পাকস্থলী পরিষ্কার করা হয়েছে। এখনও জ্ঞান ফেরেনি। তার কাছ থেকে কত টাকা বা আর কী খোয়া গেছে, তা জানতে পারিনি।’
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘অচেতন অবস্হায় আব্দুল হান্নানকে এখানে আনার পর পাকস্থলী পরিষ্কার করা হয়। পরে তাকে মিটফোর্ড হাসপাতালে রেফার করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।’
‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দলগুলো পুলিশ বাহিনীকে নিজেদের মতো করে চালাতে চায়। দেশের রাজনৈতিক শক্তি ও আমলাতন্ত্রের সদিচ্ছার অভাবে পুলিশ বাহিনীর পরিবর্তন সম্ভব নয়।’
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক এসব কথা বলেছেন।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে নিজের লেখা একটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শহীদুল হক। নিজের দীর্ঘ কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা ‘পুলিশ জীবনের স্মৃতি: স্বৈরাচার পতন থেকে জঙ্গি দমন’ বইটিতে স্থান পাওয়া বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।
শহীদুল হক বলেন, ‘আমাদের দেশের রুলিং পার্টি- তারা মনে করে পুলিশ তাদের নিজস্ব সম্পত্তি। তারা চায় তারা যা বলবে পুলিশ তাই করবে। এমপি চান তিনি যা বলবেন থানার ওসি সেটাই করবেন। এসব চ্যালেঞ্জ ও প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে কাজ করা খুবই কঠিন।
‘রাজনৈতিক অপশক্তির কাছে আমি মাথানত করিনি। চাকরিতে থাকা অবস্থায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও পিছপা হইনি। তবে আমার মতো তো সবাই পারবে না। এজন্য একটা সিস্টেম চালু করা উচিত যাতে পুলিশ নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে।’
সাবেক আইজিপি বলেন, ‘পুলিশ বিচারব্যবস্থার একটি বড় অংশ। তারা নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে না পারলে ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেম কখনও কার্যকর হবে না। পুলিশকে স্বাধীনতা দিতে হবে। জুডিশিয়াল সার্ভিস দিতে হলে আইনের পরিবর্তন জরুরি।
‘আমি দায়িত্বে থাকার সময় উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু তা আর হয়নি। সেটা হয়নি আমলাদের কারণে। আর এটি হোক তা রাজনীতিকরা তো চাইবেনই না। রাজনীতিক ও আমলাদের মন-মানসিকতার পরিবর্তন না ঘটলে সুশাসন কথাটা স্লোগানেই সীমাবদ্ধ থাকবে।’
পুলিশের এই সাবেক প্রধান আরও বলেন, ‘পুলিশকে অনেক বৈরী পরিবেশের মধ্যে কাজ করতে হয়। সবাই পুলিশের সেবা চায়। কিন্তু কেউই পুলিশকে পছন্দ করে না। পুলিশকে বুঝতে হলে পুলিশের কাছে যেতে হবে। পুলিশকে আস্থায় নিতে হবে। সেসঙ্গে পুলিশকেও ঔপনিবেশিক মন-মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’
বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক সচিব কবি ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী ও সাবেক আইজিপি মোহাম্মদ নুরুল হুদা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:ভারতের গম রপ্তানি বন্ধ ও চিনি রপ্তানি সীমিত করার খবরে দেশের বাজারে বেড়ে গেছে আটা-ময়দা ও চিনির দাম। আবার কোরবানির ঈদ সামনে রেখে কাঁচা চামড়ায় ব্যবহারের বাড়তি চাহিদা মাথায় নিয়ে আগাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে লবণের দামও।
দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্যের মজুত চাহিদার চেয়ে বেশি থাকার পরও এসবের অতিরিক্ত মূল্যবদ্ধিকে অযৌক্তিক মনে করছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে মিল মালিকদের কাছে ডিলারদের তালিকা চেয়েছে ব্যবসায়ী সংগঠনটি। এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এফবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত পর পর দুটি বৈঠকেও ডিলারদের তালিকা চাওয়া হয়।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মজুত, আমদানি, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি বিষয়ে শনিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন কাঁচাবাজার বণিক সমিতির সঙ্গে বৈঠকে ডিলারদের তালিকা চাওয়া হয়।
এদিকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজধানীসহ সারা দেশে বিভিন্ন সংস্থার নিয়মিত মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে। কোথাও কোনো কারসাজির ঘটনা দেখলেই পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। পণ্যগুলোর সরবরাহকারী কোম্পানির কারখানায়ও অভিযান চালিয়ে আমদানি, মজুত ও সরবরাহ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
তবে মধ্যস্বত্বভোগী ডিলাররা বরাবরই থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। সাম্প্রতিক সময়ে ভোজ্যতেল ইস্যুতেও ডিলারদের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।
সামনে কোরবানির ঈদ। বাজারে চাহিদাযোগ্য সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামে স্থিতিশীলতা রাখতে এবার এফবিসিসিআই আটা, ময়দা, চিনি, লবণ ইত্যাদি পণ্যের ডিলারদের তালিকা চেয়েছে মিল মালিকদের কাছে।
মোহাম্মদপুর টাউন হলে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বক্তব্য দেন এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। ভোগ্যপণ্যের বৈশ্বিক বাজার সংকট এবং কোরবানির ঈদকে পুঁজি করে দেশের বাজার অস্থির না করে সরকার নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রি করতে ব্যবসায়ীদৈর প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এ বিষয়ে তিনি বাজার কমিটিকে বিশেষভাবে তদারকি করারও নির্দেশনা।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ করে বাবু বলেন, ‘কোনো ব্যবসায়ী পণ্য মজুত করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করলে এবং সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করে বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করলে এফবিসিসিআই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারকে সুপারিশ করবে। কোনো ডিলার এ সংকটের জন্য দায়ী হলে তার ডিলারশিপ বাতিলে মিল মালিকদের প্রতি চাপ প্রয়োগ এবং সরকারের কাছেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জোর সুপারিশ করা হবে।’
কোন কোম্পানির ডিলার কোথায় কারা তার তথ্য নেই এফবিসিসিআইতে। তাই তিনি চিনি, লবণ, আটা, ময়দা ইত্যাদি পণ্যের ডিলারদের তালিকা এফবিসিসিআইতে পাঠানোর জন্য মিল মালিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
বৈঠকে বাজার সমিতিগুলোকে দোকানিদের নিয়ে মসলা, লবণ, চিনি ইত্যাদি খাতভিত্তিক সভা করার পরামর্শ দেয়া হয়। দোকানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যতালিকা টানানোসহ সীমিত মুনাফায় ব্যবসা পরিচালনা করতে সংশ্লিষ্ট মার্কেটের ব্যবসায়ীদের বাধ্য করতেও সমিতিগুলোকে ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু।
এফবিসিসিআইর এই সিনিয়র সহ-সভাপতি আবারো ১৫ দিন পর পর সয়াবিন তেলের দাম সমন্বয়ের সুপারিশ করেন।
বৈঠকে বাজারে স্থিতিশীলতা রাখতে প্রয়োজনের তুলনায় বাড়তি পণ্য না কিনতে ভোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান এফবিসিসিআইর পরিচালক আবু মোতালেব।
মোহাম্মদপুর টাউন হল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন কাঁচাবাজার বণিক সমিতির সভাপতি মো. লুৎফর রহমান (বাবুল) জানান, যেসব দোকানি পণ্য মজুত ও সরকার নির্ধারিত মূল্যের বেশি দামে পণ্য বিক্রির চেষ্টা করেছে, সমিতি তাদের দোকান বন্ধ করে দিয়েছে। বাজার স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে ভবিষ্যতেও অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে একই ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র পরিচালক বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, হারুন অর রশীদ, মোহাম্মদপুর টাউন হল সিটি করপোরেশন বাজার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মুসলিম উদ্দিন শিকদার প্রমুখ।
আরও পড়ুন:ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পুরাতন ভবনের জরুরি বিভাগের সিঁড়ি থেকে ভ্রূণ পাওয়া গেছে।
আংশিক মাথা ও হাতসহ ভ্রূণটি উদ্ধার করেছে হাসপাতালের কর্মচারীরা।
ঢামেকের পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলায় ওঠার ঢালু সিঁড়িতে শনিবার বিকেলে ভ্রূণটি পড়ে ছিল। পরে জরুরি বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার জিল্লুর রহমান খবর পেয়ে ভ্রূণ উদ্ধার করে মর্গে রেখে দেন।
জিল্লুর বলেন, ‘কোনো এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর গর্ভপাত হওয়ার পর ভ্রূণটি ফেলে রেখে যান। ভ্রুণের আংশিক মাথা ও হাত ছাড়া অন্য কিছু বোঝার কায়দা নেই।’
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলায় ওঠার ঢালু সিঁড়ি দিয়ে ২৪ ঘণ্টাই লোকজনের আনা ঘোনা। হাসপাতালের লোকজন ও রোগিরা সিঁড়িটি ব্যবহার করেন। সেখানে কীভাবে ভ্রূণটি ফেলে গেল, আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।’
একুশে গানের রচয়িতা, বরেণ্য লেখক ও সাংবাদিক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীকে শেষ শ্রদ্ধা জানালেন বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন ও নেতারা।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে শনিবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তার মরদেহ নিয়ে আসা হয়। এরপরই হয় জানাজা।
এর আগে জাতীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য রাখা হয়েছিল গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ। সেখানে তারই রচিত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটি গেয়ে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
জানাজার আগে তার স্মরণে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘বাঙালি যতদিন থাকবে, বাংলা ভাষা যতদিন থাকবে, ততদিন গাফ্ফার চৌধুরী থাকবেন। সাংবাদিক সমাজের অপূরণীয় ক্ষতি হলো, এই ক্ষতি আর কোনো দিন পূরণ হবে না।
‘তাকে সবাই শ্রদ্ধা করেন, ভালোবাসেন। সাংবাদিক সমাজ তাকে গভীরভাবে ভালোবাসেন।’
২৮ জুন প্রেস ক্লাবে গাফ্ফার চৌধুরীর স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানানো হয়।
জানাজা শেষে বেলা ৪টায় শুরু হয় শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব। প্রথমেই শ্রদ্ধা জানায় জাতীয় প্রেস ক্লাব, এরপর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং। তারপর একে একে শ্রদ্ধা জানায় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, এডিটরস গিল্ড, ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন ও গণমাধ্যম।
বেলা সাড়ে ৪টার দিকে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের উদ্দেশে গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ প্রেস ক্লাব থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে স্ত্রীর কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
যুক্তরাজ্য থেকে বেলা ১১টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহবাহী কফিন পৌঁছায়।
গত ১৯ মে লন্ডনের একটি হাসপাতালে মারা যান ৮৮ বছর বয়সী গাফ্ফার চৌধুরী। তিনি কয়েক মাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে নিবন্ধিত স্বাধীন বাংলার প্রথম পত্রিকা ‘সাপ্তাহিক জয় বাংলা’র প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। বরিশালের উলানিয়ার চৌধুরী বাড়িতে তার জন্ম ১৯৩৪ সালের ১২ ডিসেম্বর।
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী উলানিয়া জুনিয়র মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে হাইস্কুলে ভর্তি হন। ১৯৫০ সালে ম্যাট্রিক পাস করে ভর্তি হন ঢাকা কলেজে।
১৯৫৩ সালে তিনি ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৮ সালে বিএ অনার্স পাস করেন গাফ্ফার চৌধুরী।
আরও পড়ুন:রাজধানীর শাহজাহানপুর গুলবাগ এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে গায়ে আগুন দিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
১৮ বছরের ওই গৃহবধূর নাম মিম আক্তার। তিনি চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
দগ্ধ অবস্থায় তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।
দগ্ধ গৃহবধূর মা পারভিন আক্তারের অভিযোগ, মিমের স্বামী ওই এলাকায় ফ্লেক্সিলোড ও লন্ড্রি ব্যবসা করেন। প্রতিদিন অনেক মেয়েরা আসেন ওই দোকানে। এক মেয়ের সঙ্গে তিনি সম্পর্কে জড়ান।
এ নিয়ে তার মেয়ের সঙ্গে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে রুমে গিয়ে কেরোসিন ঢেলে শরীরে আগুন দেয়। পরে দগ্ধ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পারভিন আক্তার আরও অভিযোগ করেন, ‘তিন বছর আগে আমার মেয়ের সঙ্গে প্রেম করে তারা বিয়ে করে। আমার মেয়ে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
‘৬ মাস আগে স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আমার মেয়ে হারপিক খায়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার পর বাসায় নিয়ে যাই।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘শাহজাহানপুর বাগিচা এলাকা থেকে মিম নামের এক নারীকে দগ্ধ অবস্থায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্নে ভর্তি করা হয়েছে।
‘চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার শরীরের ৯৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন:সরকারের নির্দেশেই ছাত্রদলের ওপর হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেছেন, হামলার নির্দেশদাতা ও হামলাকারীরা কেউই ছাড় পাবে না। সবার বিচার হবে।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী যুবদল আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মোশাররফ এ কথা বলেন।
রাজপথ থেকেই এ সরকারকে ধাক্কা দিতে হবে উল্লেখ করে বিএনপির এ বর্ষীয়াণ নেতা বলেন, ‘ছাত্রদল সেই ধাক্কা দেয়ার সূচনা করেছে। ছাত্রদল যে আন্দোলন শুরু করেছে তাতে সবাইকে অংশ নিতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে।’
মোশাররফ বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন- বাংলাদেশ যাবে কোন পথে ফয়সালা হবে রাজপথে। এখন বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধভাবে ছাত্রদলের পাশে থেকে একই ইস্যুতে আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলনের বিকল্প নেই।
‘আমাদের এই আন্দোলনের ইস্যু সরকারের পদত্যাগ, অবৈধ সংসদ বাতিল ও খালেদা জিয়ার মুক্তি। আমাদের ইস্যু একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন। যে নির্বাচনে জনগণ নিজের ভোট নিজে দেবে, ইভিএমের মাধ্যমে না। আমি আহ্বান জানাবো, যারা এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও দেশের জনগণের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে চান তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নেমে আসুন।’
ছাত্রদলের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হামলার নিন্দা জানিয়ে মোশাররফ বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আমাদের ছেলেদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়েছে; আমাদের এক ছাত্রী নেত্রীকে মারধর করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীরা এসব অপকর্ম করছে। এ ধরনের ঘৃণ্য আচরণের জন্য নিন্দা জানাই, ক্ষোভ জানাই, ঘৃণা জানাই।’
পাল্টা আক্রমণের বিকল্প নেই মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘মার খাওয়াই একমাত্র কাজ নয়। রক্ত দিয়ে প্রতিবাদের খাতায় নাম লেখালে হবে না। বাধা এলে পাল্টা বাধা দিতে হবে। আক্রমণ হলে পাল্টা আক্রমণ করতে হবে। পাল্টা আক্রমণের মাধ্যমে তাদের প্রতিহত করতে হবে।’
যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্নার সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরব প্রমুখ।
আরও পড়ুন:রাজধানীর শ্যামপুর পোস্তগোলা ব্রিজের উপরে গাড়ির ধাক্কায় এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিহতের বয়স আনুমানিক ৪০ বছর। তবে তার নাম পরিচয় জানা যায়নি।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
গুরুতর আহত অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রাত ৯টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পথচারী জুয়েল রানা বলেন, ‘শ্যামপুর পোস্তগোলা ব্রিজের উপরে কোনো একটি গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর আহত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে ছিলেন তিনি। পরে আমরা তাকে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসি।’
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনিবলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে। আমরা এখন নিহতের নাম পরিচয় জানার চেষ্টা করছি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য