× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Assassination of Professor Saida Questions about the security of the housing project
google_news print-icon

অধ্যাপক সাইদা হত্যা: আবাসন প্রকল্পের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন

অধ্যাপক-সাইদা-হত্যা-আবাসন-প্রকল্পের-নিরাপত্তা-নিয়ে-প্রশ্ন
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আবাসন প্রকল্প’র প্রধান ফটক। ছবি: নিউজবাংলা
অধ্যাপক সাইদা খালেক হত্যার পর তার ছেলে ইফখার বিন জহির মায়ের খুনের জন্য প্রকল্প এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, ‘এতো বড় আয়তনের প্রকল্প অথচ সেই অনুযায়ী কোনো নিরাপত্তাকর্মী নেই। প্রকল্পের দায়িত্বশীলদের গাফিলতি রয়েছে। তাদের অব্যবস্থাপনার কারণেই মাকে হারালাম।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সাইদা খালেক খুন হওয়ার পর ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আবাসন প্রকল্প’র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

প্রায় ৮৫ একর জমির ওই আবাসন প্রকল্পের নিরাপত্তায় কোনো জোরদার ব্যবস্থা নেই। প্রকল্প এলাকার বিভিন্ন জায়গায় প্রাচীর ভাঙ্গা। পুরো এলাকায় নেই কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা ও সড়ক বাতি। প্রকল্পের নিরাপত্তায় প্রতি শিফটে মাত্র তিনজন নিরাপত্তাকর্মী নিয়োজিত। মূল ফটক দিয়ে কেউ ভেতরে ঢোকা বা বের হওয়ার সময় রেজিষ্ট্রার খাতায়ও তা লিপিবদ্ধ করা হয় না।

অধ্যাপক সাইদা খালেক হত্যার পর তার ছেলে ইফখার বিন জহির মায়ের খুনের জন্য প্রকল্প এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, ‘এতো বড় আয়তনের প্রকল্প অথচ সেই অনুযায়ী কোনো নিরাপত্তাকর্মী নেই। প্রকল্পের দায়িত্বশীলদের গাফিলতি রয়েছে। তাদের অব্যবস্থাপনার কারণেই মাকে হারালাম।’

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ১৯৯০ সালে কাশিমপুরের পানিশাইল এলাকায় শুরু হয় শিক্ষকদের এই বিশাল আবাসন প্রকল্প। ৮৫ একর এলাকার বেশিরভাগ স্থানেই ঝোপঝাড় ও নির্জন। বর্তমানে প্রকল্পটিতে ৬২৮টি প্লট ও ৬৪০ জন সদস্য রয়েছেন।

প্রায় ৩২ বছর আগে আবাসন প্রকল্পটি গড়ে উঠলেও সেখানে বাড়ি নির্মাণ করে বসতি গড়েছেন মাত্র তিন-চারজন শিক্ষক ও তাদের পরিবার। তিন মাস আগে ২৮০ নম্বর প্লটে বাড়ি নির্মাণ শুরু করেন অধ্যাপক সাইদা খালেক। এজন্য প্রকল্প এলাকার পাশেই একটি ভাড়া বাড়িতে ওঠেন তিনি। সেখানে থেকেই নিয়মিত নির্মাণাধীন বাড়ির কাজ তদারকি করতেন।

সরেজমিনে প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আবাসন প্রকল্প’র মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেই দেখা গেল একজন নিরাপত্তাকর্মী। তবে কোথায় এবং কার কাছে যাচ্ছেন সে বিষয়ে তিনি কিছুই জিজ্ঞেস করেননি।

উঁচু গাছপালা ঘেরা প্রকল্পটিতে দিনের বেলাতেই ভুতুড়ে পরিবেশ। হেঁটে ১০ মিনিট যাওয়ার পর চোখে পড়ল অধ্যাপক সাইদা খালেকের নির্মাণাধীন একতলা বাড়িটি। এর পাশেই আবাসন প্রকল্পের গেষ্ট হাউজ। তবে সেখানেও কোন মানুষজনের দেখা মিললো না।

আবাসন প্রকল্পের ভেতর থেকে শাক-সবজি ও কলা সংগ্রহ করে পাশের বাজারে বিক্রি করেন মো. শরিফ মিয়া। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘প্রায় তিন থেকে চারমাস আগে ২৮০ নম্বর প্লটে বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেন অধ্যাপক সাইদা খালেক। সেই থেকে প্রতিদিনই আসলে ম্যাডামকে দেখতাম। তিন-চারজন রাজমিস্ত্রি কাজ করতেন, তাদের সঙ্গে ম্যাডামকে কথাবার্তা বলতে দেখতাম।’

শরিফ মিয়া বলেন, ‘হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার আনোয়ারুলকে প্রতিদিনই কাজ করতে দেখতাম। ঘটনার দিনও তাকে দেখেছি। ম্যাডাম প্রতিদিনই একটি পোষা কুকুর নিয়ে আসতেন। তবে ঘটনার দিন কুকুরটা নিয়ে আসেননি।’

প্রকল্পের বাসিন্দা আশিকুর রহমান বলেন, ‘ম্যাডাম প্রতিদিনই আসা-যাওয়ার জন্য পশ্চিম দিকের রাস্তা ব্যবহার করতেন। উনার মরদেহ পাওয়া গেছে পূর্ব দিকের রাস্তার পাশে। সেখানে তিনি কিভাবে গেলেন এবং কেন গেলেন ঠিক বুঝতে পারছিনা।’

আশিকুর রহমান আরও বলেন, ‘ম্যাডাম নিখোঁজের খবর পাওয়ার পর পুলিশ-ডিবি, ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল, প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ আমরা সবাই পুরো এলাকায় খোঁজাখুঁজি করেছি। অথচ যে রাস্তা দিয়ে সবাই যাতায়ত করেছে সেই রাস্তার পাশেই পড়ে ছিলো তার মরদেহ। তিনদিন ধরে মরদেহটি সেখানে পড়ে ছিল, অথচ কারও চোখেই পড়েনি।’

অধ্যাপক সাইদা খালেক নিখোঁজের ঘটনার দিন প্রকল্পের মূল ফটকে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন সিকিউরিটি ইনচার্জ জয়নাল আবেদিন। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘অধ্যাপক সাইদা ম্যাডাম কখনও মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেন না। তিনি পশ্চিম পাশের এক নম্বার গেইট ব্যবহার করতেন। ওই গেট সবসময় বন্ধ থাকতো। শুধুমাত্র ম্যাডামের কাছে একটি চাবি ছিলো, যা দিয়ে তিনি গেইট খুলে আসা-যাওয়া করতেন।’

আবাসন প্রকল্প এলাকায় প্রতিদিন কারা আসছেন এবং বের হচ্ছেন সে তথ্য চাইলে নিরাপত্তাকর্মী জয়নাল একটি রেজিষ্ট্রার খাতা খুলে দেখান। কিন্তু ওই খাতায় ১১, ১২ ও ১৩ জানুয়ারির কোনো তথ্যই লেখা নেই।

ঘটনার দিন রাজমিস্ত্রি আনোয়ারুল কোন গেট দিয়ে বের হয়েছেন, জানতে চাইলে জয়নাল বলেন, ‘সকালে আনোয়ারুল কাজে আসেন। তখন আমি দায়িত্বে ছিলাম না। দুপুর দুইটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত আমি মূল ফটকের দায়িত্বে ছিলাম। কিন্তু ওই সময়ে আনোয়ারুলকে বের হতে দেখিনি।’

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আবাসন প্রকল্পের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী বলেন, ‘অধ্যাপক সাইদা খালেকের অনাকাঙ্খিত দুর্ঘটনাটি আমাদেরকে অনেক শিক্ষা দিয়েছে। আমাদের নিরাপত্তাব্যবস্থায় ঘাটতি ছিল না তা না। আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত না।’

তিনি বলেন, ‘প্রকল্প এলাকায় মাত্র চারটি পরিবার থাকে। তাদের বাড়িতেই শুধু বিদ্যুতের ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা শিগগিরই পুরো প্রকল্প এলাকায় সড়ক বাতি ও সিসি ক্যামেরা স্থাপন করব। এছাড়াও নিরাপত্তা বেষ্টনিগুলো সংস্কার করা হবে। এজন্য প্রকল্পের প্রত্যেক সদস্যকে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি ডাকা হয়েছে।’

অধ্যাপক সাইদা খালেকের ভাড়া বাড়ির মালিক মোশারফ হোসেন মৃধা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘৮-৯ মাস আগে আমার বাড়ি ভাড়া নেন তারা। ম্যাডাম ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন। মাঝেমধ্যে তার ছেলে ও ছেলের স্ত্রী আসতেন।’

উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবাসন প্রকল্পে চলছিল অধ্যাপক সাইদা খালেকের বাড়ি নির্মাণের কাজ। প্রকল্প এলাকার পাশেই একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। গত ১১ জানুয়ারি নিখোঁজ হন এই অধ্যাপক। এর দুদিন পর ১৩ জানুয়ারি তার মেয়ে সাদিয়া কাশিমপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তদন্তে নামে পুলিশ।

১৪ জানুয়ারি গাইবান্ধা থেকে ওই প্রকল্পের রাজমিস্ত্রি আনোয়ারুল নামে আটক করে পুলিশ। আটকের পর তার দেয়া তথ্যে কাশিমপুর এলাকার শিক্ষক আবাসন প্রকল্প থেকে অধ্যাপক সাইদার মরদেহ উদ্ধার হয়।

আনোয়ারুল পুলিশের কাছে স্বীকার করেন,দৈনিক মজুরি দেয়ার সময় সাইদার কাছে অনেক টাকা ছিল। তা দেখে লোভ সামলাতে পারেননি তিনি। একপর্যায়ে নির্মাণাধীন বাড়ি থেকে ৪০০ গজ দূরে অধ্যাপকের ওড়না দিয়েই তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে মরদেহ ঝোপে ফেলে পালিয়ে যান তিনি।

আরও পড়ুন:
অধ্যাপক সাইদা হত্যা: আনোয়ারুল ৩ দিনের রিমান্ডে
অধ্যাপক সাইদা হত্যা: আনোয়ারুলকে ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
The committee was set on fire in the Sundarbans to investigate 5 acres of forest land

সুন্দরবনের আগুনে পুড়ল ৪ একর বনভূমি, তদন্তে কমিটি

সুন্দরবনের আগুনে পুড়ল ৪ একর বনভূমি, তদন্তে কমিটি সুন্দরবনের একটি অংশে ধরা আগুন। ছবি: ইউএনবি
ইউএনবি জানায়, তিন কিলোমিটার দূরে মরা ভোলা নদী থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি নিয়ে আগুন নেভানো হয়েছে। বনে আগুনের ওই এলাকায় মাঝেমধ্যে ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। আগুনে এরই মধ্যে প্রায় ৪ একর বনভূমি পুড়ে গেছে।

বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের একটি অংশের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

ইউএনবি জানায়, তিন কিলোমিটার দূরে মরা ভোলা নদী থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি নিয়ে আগুন নেভানো হয়েছে। বনে আগুনের ওই এলাকায় মাঝেমধ্যে ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। আগুনে এরই মধ্যে প্রায় ৪ একর বনভূমি পুড়ে গেছে।

বার্তা সংস্থাটি জানায়, রবিবার সকালে সুন্দরবনের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে বন বিভাগ এবং ফায়ার সার্ভিস নিশ্চিত করেছে।

তদন্তে কমিটি

এদিকে সুন্দরবনে আগুনের ঘটনায় বন বিভাগ রবিবার ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ওই কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম জানান, শনিবার রাতভর বন বিভাগ এবং গ্রামবাসী মিলে আগুন নেভানোর কাজ করে। ভোলা নদী থেকে পানি নিয়ে তারা জ্বলতে থাকা আগুনেব ছিটিয়েছে। রবিবার সকাল ৮টার দিকে তাদের সঙ্গে ফায়ার ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভানোর কাজে যুক্ত হয়। ৩ কিলোমিটার দূরে মরা ভোলা নদীতে পাইপ লাইন বসিয়ে পানি নিয়ে আগুন নেভানোর কাজ চলছে। এরই মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

ডিএফও কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম আরও জানান, রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বনে আগুন জ্বলতে দেখা যায়নি। তবে বিচ্ছিন্নভাবে মাঝেমধ্যে কোনো কোনো স্থানে ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। ধোঁয়া দেখলে সঙ্গে সঙ্গে পাইপ দিয়ে সেখানে পানি ছিটানো হচ্ছে। আগুনে প্রায় ৪ একর বনের ক্ষতি হয়েছে।

ডিএফও কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিমের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৪ মে সুন্দরবনে আগুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী সুন্দরবনের ২৪, ২৫ এবং ২৭ নম্বর কম্পার্টমেন্টাল এলাকায় মৌয়ালদের পাশ (অনুমতি) দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। এ বছর ১ এপ্রিল থেকে সুন্দরবনে মধু আহরণ মৌসুম শুরু হবে।

ডিএফও কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিমের ধারণা, মৌসুম শুরুর আগেই অবৈধ কোনো মৌয়াল সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারে। মৌয়ালের মশাল অথবা বিড়ি সিগারেটের অংশ থেকে সুন্দরবনে আগুন ধরতে পারে। এ ছাড়া আইন ভঙ্গ করে কোনো কোনো রাখাল ভোলা নদী পাড়ি দিয়ে তাদের গবাদি পশু নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করে। ওই রাখালদের ফেলে রাখা বিড়ি-সিগারেটের আগুন থেকেও সুন্দরবনে আগুনের ঘটনা ঘটতে পারে।

তিনি আরও জানান, সুন্দরবনে আগুনের সূত্রপাত এবং জীববৈচিত্র্যের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব জানতে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) দ্বীপেন চন্দ্র দাসকে।

কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা বিপুলেশ্বর চন্দ্র দাস এবং কলমতেজি টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম।

কমিটির সদস্যদের আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান ডিএফও।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) দ্বীপেন চন্দ্র দাস জানান, সুন্দরবনে যে স্থানে আগুন লেগেছে, ওই এলাকার দেড় কিলোমিটারজুড়ে ফায়ার লেন কাটা হয়েছে। আগুন ফায়ার লেন অতিক্রম করতে পারেনি।

তিনি আরও জানান, শনিবার সকালের পর থেকে বন বিভাগের সদস্যরা একটানা আগুন নেভানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আগুনে কিছু বলা এবং নলবন পুড়ে সামান্য ক্ষতি হয়েছে।

বাগেরহাটের শরণখোলা ফায়ার স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা আফতাব-ই-আলম জানান, সুন্দরবনে জ্বলতে থাকা আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সুন্দরবনে জ্বলতে থাকা আগুন প্রায় ৯০ শতাংশ নিভে গেছে। এই মুহূর্তে কোথাও আগুন জ্বলতে দেখা যাচ্ছে না। তবে মাঝেমধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। ধোঁয়া দেখলেই সঙে সঙ্গে পানি ছিটানো হচ্ছে। সন্ধ্যার মধ্যে আগুন সম্পূর্ণ নেভানো সম্ভব হবে।

এ নিয়ে ১৯ বছরে সুন্দরবনে ২৯ বার আগুনের ঘটনা ঘটে। গত ৪ মে সুন্দরবনে আগুন লাগে।

বিভিন্ন সময়ে সুন্দরবনে আগুনে এ পর্যন্ত প্রায় ৮৫ একর বনভূমি পুড়ে গেছে।

আরও পড়ুন:
আমিনবাজারে পাওয়ার গ্রিডের আগুন নিয়ন্ত্রণে
ভাষানটেকের বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে
শাহজাদপুরে সৌদিয়া হোটেলে আগুনে প্রাণ গেল চারজনের
অগ্নিকাণ্ড: নিরাপত্তার স্বার্থে সাজেক ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করছে প্রশাসন
খিলগাঁওয়ের গ্যারেজ পট্টির আগুন নিয়ন্ত্রণে

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Parents bodies recovered from the residence in Gazipur

গাজীপুরে বসতঘর থেকে মা, বাবা, সন্তানের মরদেহ উদ্ধার

গাজীপুরে বসতঘর থেকে মা, বাবা, সন্তানের মরদেহ উদ্ধার প্রতীকী ছবি
মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

গাজীপুরের কাশিমপুরে রবিবার নিজ বসতঘর থেকে এক দম্পতি ও তাদের সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, রবিবার সকালে কাশিমপুরের গোবিন্দবাড়ী এলাকার একটি বাসা থেকে নাজমুলের মরদেহ ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় এবং তার স্ত্রী খাদিজা ও শিশু কন্যা নাদিয়ার লাশ বিছানা থেকে উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরও জানান, ধারণা করা হচ্ছে, নাজমুল নিজে ফাঁসিতে ঝোলার আগে স্ত্রী ও সন্তানকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন। পারিবারিক ঝগড়া-বিবাদের জেরে এর আগে নাজমুল ব্লেড দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন জায়গা রক্তাক্ত করে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

আরও পড়ুন:
গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ, ছুটির পর চালু বিভিন্ন কারখানা
গজারিয়ায় নিখোঁজের দুই দিন পর নৌযান শ্রমিকের লাশ উদ্ধার
গাজীপুরে ট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশার চালকসহ তিনজন নিহত
ঈদ বোনাসসহ বিভিন্ন দাবিতে গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ
শ্রমিক অসন্তোষ, গাজীপুরে মহাসড়ক অবরোধ

মন্তব্য

বাংলাদেশ
A written petition against the teacher

ছাত্রীকে ‘কুপ্রস্তাব’ ও হত্যার হুমকির অভিযোগে শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত আবেদন

ছাত্রীকে ‘কুপ্রস্তাব’ ও হত্যার হুমকির অভিযোগে শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত আবেদন ঠাকুরগাঁও ডিসি কার্যালয়। ছবি: নিউজবাংলা
হরিপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আরিফুজ্জামান বলেন, ‌‘ওই শিক্ষার্থীর বাবার লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমাকে চিঠি দেওয়া হয়। আমি তদন্তের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছি। অভিযোগ ও সার্বিক বিষয়ে তদন্ত শেষে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ঠাকুরগাঁওয়ে এক স্কুলছাত্রীকে কুপ্রস্তাব, বিভিন্ন সময় ভয়ভীতি দেখানো এবং হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে লিখিত বিচারের আবেদন করেছেন ছাত্রীর বাবা।

অভিযুক্ত শিক্ষক জেলার হরিপুর উপজেলার কাঁঠালডাঙ্গী রুহুল আমিন মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ে পাঠদান করেন।

গত ২৯ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক বরাবর ওই শিক্ষার্থীর বাবার স্বাক্ষরিত লিখিত আবেদনে বলা হয়, ‘অভিযুক্ত শিক্ষক...আমার নাবালিকা মেয়েকে বিভিন্ন প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তার সাথে অসামাজিক ও অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করার চেষ্টা করছে। আমার দরিদ্রতার সুযোগ নিয়ে আমার মেয়েকে পবিত্র ধর্মগ্রন্থে হাত রেখে শপথ করায় ওই শিক্ষকের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করলে সে যেন কাউকে না জানায়, যদি সম্পর্ক স্থাপন না করে, তাহলে পরীক্ষায় কম নাম্বার দিয়ে ফেল করাবে, ক্লাসে মারপিট করবে এবং এর পরেও যদি বেশি বাড়াবাড়ি করে তাহলে কৌশলে আমার মেয়ের সাথে তোলা ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেবে। এমনকি মৃত্যুরও হুমকি দেয় ওই শিক্ষক।’

ওই আবেদনে তিনি আরও বলেন, ‘এমন পরিস্থিতে পরবর্তীতে আমার মেয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। সবসময় মানসিক দুশ্চিন্তায় ভোগে। আমি বিষয়টি প্রধান শিক্ষকের কাছে জানালে প্রধান শিক্ষক বলেন, এর আগেও এ রকম আরও কয়েকটি ঘটনা ওই অভিযুক্ত শিক্ষক ঘটিয়েছে। সেগুলো স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করা হয়েছে।

‘আওয়ামী লীগের দাপট ও টাকার বিনিময়ে সেগুলো ধামাচাপা দিয়েছে। তার একটি কিশোর গ্যাং আছে, যারা তাকে এ বিষয়ে সহযোগিতা করে।’

স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, ‘ওই স্কুলের অফিস সহায়ক...এ অপকর্মগুলো ঘটানোর সহযোগিতা করে থাকে। এবারও বিষয়টি স্থানীয়ভাবে প্রভাব খাটিয়ে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। আমি অতি দরিদ্র বলে আমাকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।’

এ আবেদনে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করে সঠিক বিচার ও শাস্তির দাবি জানান এ অভিভাবক।

পরবর্তী সময়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের শিক্ষা ও কল্যাণ শাখা আবেদন আমলে নিয়ে সহকারী কমিশনার খাদিজাতুল কুবরা ফারিহা স্বাক্ষরিত ৭৮ নম্বর স্মারকে হরিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কাগজ পাঠানো হয়।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে কাগজ পাওয়ার পর হরিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হরিপুর মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

গত ১১ মার্চ হরিপুর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রাইহানুল ইসলাম মিঞা স্বাক্ষরিত সংশ্লিষ্ট দপ্তরের এক কাগজে ১৭ মার্চ ওই বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত শিক্ষকসহ ম্যানেজিং কমিটি ও অন্যান্য শিক্ষকদের উপস্থিতিতে শুনানির দিন ধার্য করা হয়।

কিন্তু এর আগের দিন ১৬ মার্চ অভিযোগকারী ওই শিক্ষার্থীর বাবা স্বাক্ষরিত এক আবেদনে তিনি বলেন, শুনানির জন্য ধার্য দিনে পারিবারিক অসুবিধার কারণে তিনি উপস্থিত থাকতে পারবেন না। একই আবেদনে অভিযুক্ত শিক্ষক একমত হয়ে স্বাক্ষর করেন।

এদিকে গুরুতর অভিযোগের পরও নির্ধারিত দিনে শুনানি না হওয়ায় এবং শুনানির জন্য অভিযোগকারীর সময়ক্ষেপণে স্থানীয়দের মাঝে সন্দেহ দেখা দেয়।

স্থানীয় এক ব্যক্তির ভাষ্য, ‘অভিযোগকারীকে নানা রকমভাবে প্রভাব দেখানো হচ্ছে। চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য। কিন্তু আমরা তদন্ত চাই।

‘অভিযোগের তদন্তের ভিত্তিতে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা চাই। ঘটনার পর থেকে ওই অভিভাবককে যে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে, তা তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।’

নাম না প্রকাশের শর্তে ওই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র ও ঢাকায় একটি বেসরকারি ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি চাই এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক। ওই শিক্ষক যদি এহেন কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকে, তাকে শাস্তির আওতায় আনা হোক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো পবিত্র জায়গায় যাতে এসব কর্মকাণ্ড ভবিষ্যতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে ব্যবস্থা করা হোক।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও নারীঘটিত অসামাজিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছিল। সে স্থানীয় প্রভাব এবং আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে বিষয়গুলো ধামাচাপা দেয় এবং এই অভিযোগকারীদেরও স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মাধ্যমে ভয়ভীতি এবং আর্থিক মাধ্যমে সুরাহা করার চেষ্টা করে।

‘এভাবে অপরাধী বারবার পার পেয়ে যাওয়ার কারণে একই কর্মকাণ্ড বারবার ঘটানোর সুযোগ পেয়ে যায়।’

অভিযোগ করার পর তদন্তের দিন-তারিখ কেন পেছানোর আবেদন করলেন জানতে চাইলে ওই স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, ‘আগামী রবিবার স্থানীয়ভাবে বসার কথা আছে। সেখানে নাকি ওই শিক্ষককে জরিমানা ও বরখাস্ত করা হবে। তাই আমি সময় চেয়ে আবেদন করেছি।’

কারা এমন সিদ্ধান্ত নেবে জানতে চাইলে তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ অন্য শিক্ষকদের কথা বলেন।

এ বিষয়ে কাঁঠালডাঙ্গী রুহুল আমিন মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমিও অভিযুক্ত শিক্ষকের তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তি দাবি করছি। এর আগেও তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ আছে। বাদী ও বিবাদী যেকোনো মাধ্যমে যদি মীমাংসাও করে ফেলে, তার পরেও অভিযোগের সার্বিক দিক বিবেচনা করে আমি প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে একটি সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।

‘তদন্ত যেন নিরপেক্ষ হয়, সে দাবিও জানাচ্ছি। আর যেখানে একটি তদন্ত হচ্ছে, সেখানে আমাদের আলাদাভাবে বসার প্রশ্নই আসে না। কোনো কারণে চাপে পড়ে মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছেন কি না অভিযোগকারী, সেটিও তদন্তের বিষয়।’

স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোজাফ্ফর আলী বলেন, ‘যখন ঘটনার সময় বলা হচ্ছে তখন আমি ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্বে ছিলাম না। এখন তদন্ত চলছে।

‘আমরা তদন্তে সহযোগিতা করছি, এতটুকুই। এখন বাদী, বিবাদী যদি নিজেরাই মীমাংসা করে ফেলে, আমাদের কী করার আছে?’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে কোনো কথা বলতে চাননি।

পরে সাক্ষাৎকার দেবেন জানালেও তাকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করে পাওয়া যায়নি। খুদেবার্তা পাঠালেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

অপর অভিযুক্ত ওই বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী বলেন, ‘বিষয়টি তো মিটমাট হয়ে গেছে।’

কীভাবে মিটমাট হলো জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর না দিয়ে তাকে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেন।

হরিপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রাইহানুল ইসলাম মিঞা বলেন, ‘এ ঘটনায় আমাদের তদন্ত চলমান। একটি নির্দিষ্ট দিনে শুনানির কথা থাকলেও অভিযোগকারীর আবেদনের ভিত্তিতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি। পরবর্তী সময়ে শুনানির দিন জানিয়ে দেওয়া হবে।’

হরিপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আরিফুজ্জামান বলেন, ‌‘ওই শিক্ষার্থীর বাবার লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমাকে চিঠি দেওয়া হয়। আমি তদন্তের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছি। অভিযোগ ও সার্বিক বিষয়ে তদন্ত শেষে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

আরও পড়ুন:
স্কুলছাত্রী ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত শিক্ষককে আদালতে মারধর
ঠাকুরগাঁওয়ে স্কুলশিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ
সরকারি প্রাথমিকে সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষকের যোগদান ১২ মার্চ
প্রাথমিকের ৬ হাজার ৫৩১ সহকারী শিক্ষকের যোগদানে বাধা নেই
গৃহবধূকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার অভিযোগ

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Rohingya boats Rescued 20 BGB members and many missing

রোহিঙ্গাবাহী নৌকাডুবি: উদ্ধার ২৫, বিজিবি সদস্যসহ নিখোঁজ অনেকে

রোহিঙ্গাবাহী নৌকাডুবি: উদ্ধার ২৫, বিজিবি সদস্যসহ নিখোঁজ অনেকে ডুবে যাওয়া নৌকা থেকে উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু। ছবি: নিউজবাংলা
শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা মো. ইসমাইল বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা পশ্চিমপাড়ার কাছাকাছি পৌঁছালে সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে ডুবে যায়। সেখানে অর্ধশতাধিক শিশুসহ নারী, পুরুষ ছিল বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় একজন বিজিবির সদস্যও নিখোঁজ রয়েছে বলে খবর পাচ্ছি।’

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় কক্সবাজারের টেকনাফে শুক্রবার মধ্যরাতে ঢেউয়ের কবলে পড়ে রোহিঙ্গাবাহী একটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নারী, পুরুষ, শিশুসহ ২৫ জনকে উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

নৌকা ডুবে বিজিবির এক সদস্যসহ নিখোঁজ রয়েছেন বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা।

টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়া এলাকার সমুদ্রে গতকাল রাত আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

নিখোঁজ বিজিবির সদস্য একজন সিপাহী। তিনি শাহপরীর দ্বীপে কর্মরত ছিলেন।

টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান বলেন,‌ ‌‘মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকাডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত শিশুসহ ২৫ জন রোহিঙ্গাকে জীবত উদ্ধার করা হয়েছে। সাগরে বিজিবির উদ্ধার অভিযান চলছে।’

নিখোঁজ বিজিবি সদস্যের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।

এ বিষয়ে শাহপরীর দ্বীপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাবোঝাই একটি অনুপ্রবেশের খবরে বিজিবি অভিযানে গেলে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এতে বিজিবির এক সদস্যসহ বেশ কিছু রোহিঙ্গা নিখোঁজ থাকার খবর পেয়েছি। আমি ঘটনাস্থলে যাচ্ছি।’
স্থানীয় নৌকার মালিক মো. আমিন বলেন, ‘মাঝরাতে সাগরে রোহিঙ্গাবোঝাই নৌকা ধরতে যাওয়ার কথা বলে ওই বিজিবির সদস্য আমার নৌকাটি নিয়ে যায়। পরে রোহিঙ্গা বহনকারী নৌকাটি কূলে নিয়ে আসার পথে সাগরে ঢেউয়ের স্রোতে ডুবে যায়। এতে ২৫ জনের মতো রোহিঙ্গা জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিজিবির এক সিপাহী নিখোঁজ রয়েছে। তাকে উদ্ধারে সাগরে তল্লাশি চলছে।’

শাহপরীরদ্বীপের পশ্চিমপাড়া নৌ ঘাটের পাহারাদার আবদুল মান্নান বলেন, ‘শুক্রবার মধ্যরাতে রোহিঙ্গাবাহী নৌকা কূল ঘেঁষে যাওয়ার সময় টহলরত বিজিবির সদস্যরা দেখতে পায়। তখন ঘাট থেকে একটি নৌকা নিয়ে তাদের আটকে দেয়। তারপর কীভাবে রোহিঙ্গাবাহী ট্রলার ডুবে যায়, সেটা জানি না। তবে এ ঘটনায় ২৫ রোহিঙ্গাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।

‘এ ঘটনায় বিজিবির এক সদস্যসহ ৪০ জনের মতো রোহিঙ্গা নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের খুঁজতে ঘাটের একাধিক নৌকায় সাগরে তল্লাশি চালাচ্ছে জেলেরা।’

শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা মো. ইসমাইল বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা পশ্চিমপাড়ার কাছাকাছি পৌঁছালে সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে ডুবে যায়। সেখানে অর্ধশতাধিক শিশুসহ নারী, পুরুষ ছিল বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় একজন বিজিবির সদস্যও নিখোঁজ রয়েছে বলে খবর পাচ্ছি।’

নৌকাডুবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শাহপরীরদ্বীপের পশ্চিমপাড়া জেলে ঘাটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল গফুর বলেন, ‘গভীর রাতে শাহপরীরদ্বীপ পশ্চিমপাড়া বরাবর রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা অনুপ্রবেশ সময় ডুবে যাওয়ার ঘটনা শুনেছি। এ ঘটনায় অন্য নৌকায় উদ্ধার করতে যাওয়া বিজিবির এক সদস্যও নিখোঁজ থাকার খবর জেলেরা অবহিত করেন।

‘এ ছাড়া বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গাকেও উদ্ধার করা হয়েছে বলে জেনেছি।’

আরও পড়ুন:
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত গুতেরেসের
রোহিঙ্গা সংকট: জাতিসংঘ মহাসচিবের সফরকালে জরুরি পদক্ষেপ চায় একশনএইড
যৌন নিপীড়ন: টেকনাফের সেই শিক্ষকের নামে বিভাগীয় মামলা
রোহিঙ্গাদের খাবারের জন্য বরাদ্দ অর্ধেকের বেশি কমাচ্ছে জাতিসংঘ
আরাকান আর্মির হাতে আটক ২৯ জেলেকে ফিরিয়ে আনল বিজিবি

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Workers in Gazipur

গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ, ছুটির পর চালু বিভিন্ন কারখানা

গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ, ছুটির পর চালু বিভিন্ন কারখানা বিক্ষোভ চলাকালে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কয়েকটি কারখানায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরে সেনাবাহিনী, শিল্প পুলিশসহ যৌথ বাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। ছবি: ইউএনবি
শ্রমিকরা শনিবার সকাল সাড়ে আটটা থেকে আধা ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখার পর কারখানা কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নেয়।

গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানা বন্ধের প্রতিবাদে শ্রমিকদের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখার পর বেশ কয়েকটি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়। আন্দোলন থেমে গেলে বিভিন্ন কারখানা আবার চালু করা হয়।

শ্রমিকরা শনিবার সকাল সাড়ে আটটা থেকে আধা ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখার পর কারখানা কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নেয়।

বিক্ষোভ চলাকালে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কয়েকটি কারখানায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরে সেনাবাহিনী, শিল্প পুলিশসহ যৌথ বাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

স্থানীয়দের ভাষ্য, গাজীপুর মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার জায়ান নিটওয়্যার ফ্যাশন লিমিটেড নামের কারখানায় কয়েক দিন আগে শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে বাকবিতণ্ডার জেরে কারখানার তিন কর্মকর্তাকে মারধর করেন শ্রমিকরা। এ ঘটনায় একটি মামলায় কয়েকজন শ্রমিককে গ্রেপ্তার হয়। এসবের জেরে ওই কারখানায় উত্তেজনা চলছিল।

এমন বাস্তবতায় শনিবার থেকে ওই কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। আজ সকালে কারখানায় গিয়ে অনির্দিষ্টকালের বন্ধের নোটিশ দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়েন শ্রমিকরা।

পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক এসে অবস্থান নিয়ে সকাল সাড়ে আটটা থেকে প্রায় আধা ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। ওই সময় আশপাশের কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা তাদের সঙ্গে যোগ দেন। তারা আরও কারখানায় গিয়ে ইট-পাটকেল ছোড়েন।

গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) এ কে এম জহিরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, শিল্প পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সড়ক থেকে তাদের দ্রুত সরিয়ে দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করে। ওই শ্রমিক আন্দোলনের জেরে আশপাশের অন্তত ১০ থেকে ১২টি কারখানা এক দিনের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়। আন্দোলন থেমে গেলে আবার অধিকাংশ কারখানা চালু করা হয়।

শিল্পাঞ্চলের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে পুলিশের বাড়তি সদস্য মোতায়েন রয়েছে বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন:
বকেয়া বেতন পরিশোধের আশ্বাস, রেলের অস্থায়ী শ্রমিকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার
গাজীপুরে ট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশার চালকসহ তিনজন নিহত
ঈদ বোনাসসহ বিভিন্ন দাবিতে গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ
শাহবাগে ধর্ষণের বিচার দাবি ৩০ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের
শ্রমিক অসন্তোষ, গাজীপুরে মহাসড়ক অবরোধ

মন্তব্য

পাহাড়ের চূড়ায় নান্দনিক মসজিদ

পাহাড়ের চূড়ায় নান্দনিক মসজিদ বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু স্থানে নির্মিত মসজিদটির নাম ‘দারুস সালাম জামে মসজিদ’। এর অবস্থান পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ভ্যালির রুইলুই পাড়ায়। ছবি: বাসস
রাজধানী ঢাকা থেকে সাজেকে ঘুরতে আসা পর্যটক সোহেল আরমান বাসসকে বলেন, ‘চার বছর আগেও একবার এখানে এসেছিলাম। মসজিদ না থাকায় তখন জামায়াতে নামাজ আদায় করতে পারিনি। তবে এবারে এসে মসজিদের এমন নিরব-নির্মল পরিবেশে সৃষ্টিকর্তার ইবাদত করতে পেরে অন্যরকম প্রশান্তি অনুভব করছি।’

যেখানে সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো দিগন্ত বিস্তৃত পাহাড়ের সারি, রোদের সাথে শুভ্র মেঘদলের নিত্য লুকোচুরি খেলা, সেখানেই নির্মাণ করা হয়েছে নান্দনিক এক মসজিদ। সে মসজিদের মিনার থেকে ভেসে আসে আজানের সুমধুর ধ্বনি।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১ হাজার ৭০০ ফুট উঁচুতে সবুজ পল্লব আর নিসর্গের বুক চিঁড়ে সপ্রতিভ দাঁড়িয়ে আছে একটি মসজিদ। বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু স্থানে নির্মিত মসজিদটির নাম ‘দারুস সালাম জামে মসজিদ’। এর অবস্থান পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ভ্যালির রুইলুই পাড়ায়।

সেনাবাহিনীর দানকৃত এক একর ভূমির ওপর নির্মিত এ মসজিদটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৮৫ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৮ টাকা। এতে যৌথভাবে অর্থায়ন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ।

চার তলা ভিতের ওপর দণ্ডায়মান দৃষ্টিনন্দন মসজিদটি উচ্চতায় ২২ ফুট। এতে রয়েছে চারটি গম্বুজ ও একটি সুউচ্চ মিনার।

মসজিদটির পূর্ব-পশ্চিমের দৈর্ঘ্য ৬৫ ফুট, উত্তর-দক্ষিণের প্রস্থ ৮১ ফুট এবং সামগ্রিক আয়তন ৫ হাজার ২৬৫ বর্গফুট।

সৌন্দর্যে অপরূপ মসজিদটি নির্মাণে ২০২০ সালে যৌথভাবে উদ্যোগ নেয় সেনাবাহিনী ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। একই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি সাজেকের রুইলুই পাড়ায় হ্যালিপ্যাডের পাশে মসজিদটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক চট্টগ্রাম ডিভিশনের তৎকালীন জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমান।

মসজিদের নির্মাণকাজ শেষ হতে সময় লাগে ঠিক দুই বছর। বর্তমানে সেনাবাহিনীর বাঘাইহাট জোনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মসজিদটি পরিচালিত হচ্ছে।

দারুস সালাম জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মো. মনিরুজ্জামান বাসসকে বলেন, ‘২০২২ সালের পহেলা রমজানের এশা এবং খতম তারাবির নামাজের মাধ্যমে এই মসজিদে নামাজ আদায়ের সূচনা হয়। বর্তমানে প্রাত্যহিক পাঁচ ওয়াক্ত জামায়াতের পাশাপাশি জুমা এবং খতম তারাবির নামাজ আদায় করা হয় এখানে।

‘তারাবির জন্য প্রতি বছরের মতো এবারও দুইজন হাফেজ নিয়োগ করা হয়েছে। এসব জামায়াতে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি অসংখ্য পর্যটক অংশ নেন।’

সাজেকে প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে তিন হাজার পর্যটকের সমাগম হয়। আর বিশেষ ছুটির দিনগুলোতে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ থেকে ২০ গুণ, যাদের মধ্যে অধিকাংশই ইসলাম ধর্মাবলম্বী পর্যটক।

মসজিদ না থাকায় এত বছর নামাজ আদায়ে বেশ বিড়ম্বনা পোহাতে হয়েছে মুসলিম পর্যটকদের। তবে এখন স্বাচ্ছন্দ্যেই মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারেন সাজেক ভ্রমণে আসা পর্যটকরা।

প্রকৃতির অবারিত সবুজের মাঝে সুনসান পরিবেশে এমন সৌন্দর্যমণ্ডিত মসজিদে নামাজ পড়ার সুযোগ পেয়ে পর্যটকরা দারুণ উচ্ছ্বসিত।

রাজধানী ঢাকা থেকে সাজেকে ঘুরতে আসা পর্যটক সোহেল আরমান বাসসকে বলেন, ‘চার বছর আগেও একবার এখানে এসেছিলাম। মসজিদ না থাকায় তখন জামায়াতে নামাজ আদায় করতে পারিনি। তবে এবারে এসে মসজিদের এমন নিরব-নির্মল পরিবেশে সৃষ্টিকর্তার ইবাদত করতে পেরে অন্যরকম প্রশান্তি অনুভব করছি।’

দারুস সালাম মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক যুবরাজ বলেন, ‘সেনাবাহিনীর বাঘাইহাট জোন, স্থানীয় কটেজ-রিসোর্ট-রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী এবং পর্যটকদের দান-অনুদানে এই মসজিদের সার্বিক ব্যয় নির্বাহ করা হয়। উঁচু পাহাড়ের কারণে সাজেকে পানি পাওয়া যায় না। ফলে মসজিদে অজুসহ অন্যান্য কাজে ব্যবহার্য সকল পানি কিনে ব্যবহার করতে হয়।

‘প্রতিদিন এ মসজিদে গড়ে ৫ হাজার লিটার পানি লাগে। আর প্রতি লিটার পানিতে ১ টাকা করে দৈনিক ৫ হাজার টাকা খরচ হয় কেবল পানি বাবদ। এ ছাড়া আরও আনুষাঙ্গিক অনেক খরচ রয়েছে। তবে ব্যয়বহুল হলেও সবার সহযোগিতা নিয়ে এ মসজিদে নিয়মিত নামাজ আদায় হচ্ছে।’

আরও পড়ুন:
অগ্নিকাণ্ড: নিরাপত্তার স্বার্থে সাজেক ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করছে প্রশাসন
সাজেকে গোলাগুলি, আটকা পড়েছেন পাঁচ শতাধিক পর্যটক
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে রেকর্ড ৮,২১,৩৪,৩০৪ টাকা
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার ২৯ বস্তা টাকা 
এক মাসের বেশি সময় পর পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত সাজেক

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Awami League BNP clashes in Narsingdi two injured in the clash

নরসিংদীতে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে দুজন নিহত, আহত ১০

নরসিংদীতে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে দুজন নিহত, আহত ১০ নরসিংদীতে দেশীয় অস্ত্র হাতে সংঘর্ষে থাকা লোকজন। ছবি: ইউএনবি
নরসিংদীর পুলিশ সুপার আবদুল হান্নান বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছে বলে শুনেছি। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’

নরসিংদীর রায়পুরায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন।

সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।

রায়পুরার দুর্গম চরাঞ্চল চাঁনপুর ইউনিয়নের মোহিনীপুর গ্রামে শুক্রবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত দুজন হলেন রায়পুরা উপজেলার চাঁনপুর ইউনিয়নের মোহিনীপুর গ্রামের খোরশেদ মিয়ার ছেলে আমিন (২৩) ও একই গ্রামের বারেক হাজীর ছেলে বাশার (৩৫)।

স্থানীয়রা জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চাঁনপুর ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস সালাম মিয়া ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সোহাগের সঙ্গে চাঁনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সামসু মেম্বারের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। দ্বন্দ্বের জেরে বিএনপি নেতা সামসু মেম্বর ও তার সমর্থকরা এলাকাছাড়া ছিলেন। ৫ আগস্টের পর এলাকায় ফিরে আসেন তারা। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। এমনকি দুটি পক্ষই মারামারি ও গোলাগুলি করে।

একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতা সালাম মিয়া ও তার সমর্থকদের এলাকাছাড়া করেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা। সবশেষ শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে সালাম মিয়া ও তার সমর্থকরা এলাকায় ফিরতে চান। এতে বাধা দেন বিএনপি নেতা সামসু মেম্বার ও তার লোকজন।

পরে দেশীয় অস্ত্র, ট্যাঁটা, বল্লম, দা, ছুরি, ককটেল ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দুই পক্ষ সংর্ঘষে জড়িয়ে পড়ে। এতে প্রতিপক্ষের ছোঁড়া গুলিতে একজন এবং ট্যাঁটা ও ছুরিকাঘাতের আরও একজনসহ দুইজন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। ওই সময় সংঘর্ষে আহত হন অন্তত ১০ জন।

নরসিংদীর পুলিশ সুপার আবদুল হান্নান বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছে বলে শুনেছি। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’

আরও পড়ুন:
ফুটপাতে দোকান বসানো নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২০
ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ হস্তান্তর
সিরিয়ায় সংঘর্ষ, প্রতিশোধমূলক হামলায় নিহত হাজার ছাড়াল
ভারতের অভ্যন্তরে ‌খাসিয়াদের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
ঝিনাইদহে দুর্বৃত্তদের গুলিতে চরমপন্থি নেতাসহ তিনজন নিহত

মন্তব্য

p
উপরে