নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে পুরো নারায়ণগঞ্জ রূপ নিয়েছে উৎসবের নগরীতে। চাষাঢ়া মোড়ে নারায়ণগঞ্জের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ভাস্কর্য ‘বিজয় স্তম্ভ’ থেকে যত দূর চোখ যায়, শুধু পোস্টার আর পোস্টার।
পোস্টারের নগরীতে রূপ নিয়েছে বন্দরনগর। পোস্টারের ক্ষেত্রেও রয়েছে প্রার্থীদের সহাবস্থান। আওয়ামী লীগের ‘নৌকা’ কিংবা স্বতন্ত্র প্রার্থীর ‘হাতি’ কিংবা চরমোনাই পির অনুসারীদের ‘হাতপাখা’- ঝুলতে দেখা গেছে সব প্রার্থীর পোস্টার।
শহীদ মিনার প্রাঙ্গণটিও দুপুরের পর থেকে ছিল লোকারণ্য। সবার মাঝেই নির্বাচনি আলাপ। চায়ের কাপের টুংটাং থেকে চটপটি-ফুচকার প্লেটেও ভোটের উত্তাপ।
ফলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দেশে ‘ভোটবিমুখতা’র যে সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন সেই স্রোত ঘুরিয়ে দিয়েছে বলে দৃশ্যত মনে হচ্ছে। অন্তত প্রার্থীদের জমাটি প্রচার আর ভোটারদের আগ্রহ একটি জমজমাট লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে সাধারণ ভোটারদের কেন্দ্রে ফেরার দৃশ্য নজর কাড়লেও দেশজুড়ে সহিংসতার কারণে ভোটের জৌলুসে ছায়া পড়ে। বিভিন্ন আসনে প্রার্থী শূন্য হওয়ায় অনুষ্ঠিত সংসদীয় উপনির্বাচনগুলো ছিল আরও নিরুত্তাপ। ছিল না ভোটের চিরায়ত আমেজ। যেন কোনো হাঁকডাক ছাড়াই হয়ে গেছে ভোট। উপস্থিতির হার ছিল ১৫ থেকে ৩০ শতাংশের মধ্যে।
নারায়ণগঞ্জে এসে বদলে যেতে পারে সেই হিসাব-নিকাশ। গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় নির্বাচনি প্রচার। তার পর থেকে জমাটি প্রচার দেখা গেছে সব প্রার্থীর। নারায়ণগঞ্জ নির্বাচন নিয়ে এক ধরনের শঙ্কার কথা শোনা গেলেও প্রকৃত অর্থে মাঠে তেমন কোনো প্রভাব ছিল না।
বিষয়টি নিয়ে নিউজবাংলার কথা হয় নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল করিম দীপুর সঙ্গে। তিনিও মনে করেন, এর মধ্য দিয়ে নির্বাচনের জন্য সুবাতাস আসছে।
তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনি পরিবেশটা ভিন্ন। সারা দেশের মানুষ যখন ভোটবিমুখ, তখন নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনের ভোটার উপস্থিতির হার ৬০ শতাংশের মতো হয়। ফলে সার্বিকভাবে পরিস্থিতি ভালো থাকায় আশা করা যায় ভোটের দিন বিপুল মানুষের অংশগ্রহণ থাকবে কেন্দ্রে।’
এই নির্বাচনে মেয়র পদে আলোচনায় আছেন মূলত দুজন প্রার্থী। একদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার। তৈমূর ২০১১ সালের সিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হয়ে লড়েছিলেন। কিন্তু এবার বিএনপি নির্বাচনের অংশ না নেয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তিনি। যদিও এরপর তাকে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার পদ থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।
ধারণা করা হচ্ছে, রোববার এই দুইয়ে হবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। তবে ভোটের প্রচারে এই দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর প্রচারে দেখা যায়নি কোনো কাদা ছোড়াছুড়ি কিংবা কটু আক্রমণ।
ভোটের মাঠে দেখা গেছে, নৌকার প্রার্থী আইভী বরাবরই তৈমূরকে ‘কাকা’ বলে সম্বোধন করেছেন। বিপরীতে আইভীকে ‘ভাতিজি’ বলেই ডেকেছেন তৈমূর।
মৌখিক কিছু অভিযোগ একে অন্যের বিরুদ্ধে এনেছেন, কিন্তু সেটা নির্বাচনি পরিবেশকে কোনোভাবে কলুষিত করেনি।
তবে এর মধ্য দিয়ে নির্বাচনি সুবাতাস বয়ে যাওয়ার কোনো ইঙ্গিত দেখছেন না নারায়গঞ্জে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল। তিনি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের বাস্তবতার সঙ্গে সারা দেশের মিল খুঁজলে চলবে না। কারণ এখানকার প্রেক্ষাপট ভিন্ন।’
শামীম ওসমান-সেলিনা হায়াৎ আইভীর চিরায়ত দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘শামীম ওসমানকে ঠেকাতে চায় নারায়ণগঞ্জবাসী। আর সেখানেই আইভীর সাফল্য। ফলে আওয়ামী লীগ জানে এই নির্বাচনে জয় পেতে তাদের খুব একটা সমস্যা হবে না। তাই প্রশাসনিকভাবে তারা খুব একটা এখানে প্রভাব খাটায় না। ফলে নির্বাচন সুষ্ঠু হলেও তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই।’
গত ১৭ দিনের ভোটের প্রচারে আইভী-তৈমূর সমর্থকদের মধ্যে গণ্ডগোল তো দূরে থাক, হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেনি। এমন বাস্তবতায় এই নির্বাচন নিয়ে আশাবাদী সাধারণ মানুষ। যদিও শেষ দিনের প্রচারে নির্বাচনি পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা বলেছেন সবাই, নিজেদের জয়ের ব্যাপারে তারা দারুণ প্রত্যয়ী।
প্রচারের শেষ দিনে সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, তিনি নারায়ণগঞ্জবাসীর ‘দুয়ারে শান্তির বার্তা’ নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে, অত্যাচারের বিরুদ্ধে, অবিচারের বিরুদ্ধে নিশ্চয় এই নৌকা আইভীর নৌকা। এই নৌকা বিজয়ের নৌকা, এই নৌকা বঙ্গবন্ধুর নৌকা। নৌকাকে রুখে দেয়ার ক্ষমতা কারও নেই, কারও নেই, কারও নেই।’
আর তৈমূর আলম খন্দকারের বিশ্বাস, এবার জয় পেতে যাচ্ছেন তিনি। বলেন, ‘একটা জনজোয়ার সৃষ্টি হইছে। নারায়ণগঞ্জের মানুষ করের বোঝা বহন করতে চায় না। মানুষ সিটি করপোরেশন থেকে যে সেবা চায়, তা পায়নি। এ কারণে মানুষ পরিবর্তন চায়।’
আবার নিজের জীবন বাজি রেখে হলেও নারায়ণগঞ্জবাসীর উন্নয়ন করতে চান আইভী। তিনি বলেন, ‘পুনরায় নারায়ণগঞ্জবাসীকে আমি বলব, আমাকে আপনারা পাঁচ বছরের জন্য খেদমত করার সুযোগ দিন। আমি আমার বাবার মতো আপনাদের খেদমত করতে জীবনকে বাজি রেখেছি। যেকোনো সময় আমার জীবনে অনেক কিছু ঘটতে পারে। আমি আপনাদের জন্য মৃত্যুকেও বরণ করে নিতে রাজি আছি।’
বিপরীতে তৈমূর বলেন, ‘আমি রক্ত দিয়ে হলেও নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থাকব। কারণ আমি কোনো দলের প্রার্থী নই।’
এদিকে নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশ নিয়ে স্বস্তিতে আছেন এই নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার।
তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু ভোট আয়োজনে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে যথাযথ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় তিন চাকার ভ্যানের সঙ্গে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় দুই সবজি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।
উপজেলার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া বাসস্ট্যান্ডে শুক্রবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো আবদুস সালাম (৫০) ও ছানোয়ার হোসেন (৪৫) মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কাটিগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। তারা স্থানীয় কাটিগ্রাম বাজারে সবজির ব্যবসা করতেন।
গোলড়া হাইওয়ে থানার ওসি সুখেন্দু বসু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকালে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর বন্দর আড়ত থেকে চাষীদের কাছ থেকে সবজি কিনে তিন চাকার ভ্যানের মাধ্যমে কাটিগ্রাম যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী আবদুস সালাম ও ছানোয়ার হোসেন, কিন্তু ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছালে পাটুরিয়াগামী একটি কাভার্ড ভ্যান ওভারটেক করতে গিয়ে ওই তিন চাকার ভ্যানকে ধাক্কা দেয়।
এতে ঘটনাস্থলেই আবদুস সালাম নিহত হন এবং গুরুত্ব অবস্থায় ছানোয়ার হোসেনকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি জানান, নিহতদের একজনের মরদেহ সদর হাসপাতালে এবং অপরজনের মরদেহ গোলড়া থানায় রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর কাভার্ড ভ্যানের চালক ও হেলপার পালিয়ে গেলেও কাভার্ড ভ্যানটি জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় গোলড়া থানায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:উৎসবমুখর পরিবেশে বৃহস্পতিবার উদযাপন করা হয়েছে ১৩৭তম বন্দর দিবস।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে বন্দর ভবন চত্বরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য ও বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলন করেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।
ওই সময় বোর্ড সদস্য (প্রকৌশল) কমোডর মোহাম্মদ মাহবুবুবর রহমানসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পতাকা উত্তোলনকালে চট্টগ্রাম বন্দরে অবস্থানরত সব জলযান ও জাহাজ থেকে একনাগাড়ে এক মিনিট হুইসেল বাজানো হয়। এরপর বন্দর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহায়েল উপস্থিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে বন্দর দিবসের কেক কাটেন ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দর অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্মচারী পরিষদ, বন্দরের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার ও অন্যান্য সংগঠনের নেতারা।
কর্ণফুলীর মোহনায় ১৩৬ বছর আগে ২৫ এপ্রিল প্রতিষ্ঠা হয়েছিল দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর। ইংরেজ শাসনামলের প্রথম দিকে ইংরেজ ও দেশীয় ব্যবসায়ীরা বার্ষিক এক টাকা সালামির বিনিময়ে নিজ ব্যয়ে কর্ণফুলী নদীতে জেটি নির্মাণ করেন। পরে ১৮৬০ সালে প্রথম দুটি অস্থায়ী জেটি নির্মাণ করা হয়। ১৮৭৭ সালে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার গঠিত হয়।
১৮৮৮ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে দুটি মুরিং নির্মাণ হয়। একই বছরের ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার কার্যকর হয়। এরপর ১৮৯৯ থেকে ১৯১০ সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার এবং আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে যুক্তভাবে চারটি স্থায়ী জেটি নির্মাণ করে। ১৯১০ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে রেলওয়ের সংযোগ সাধন হয়।
১৯২৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দরকে মেজর পোর্ট ঘোষণা করা হয়। সেই থেকেই চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রেখে আসছে।
আরও পড়ুন:শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বন্য হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি গ্রামে বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো ৬০ বছর বয়সী হাজী উমর আলী একই গ্রামের বাসিন্দা।
নালিতাবাড়ী থানার ওসি মনিরুল আলম ভুইয়া জানান, প্রায় তিন-চার দিন ধরে নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি গ্রামের পাহাড়ি ঢালে বোরো ধান ক্ষেতে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫টি বন্য হাতি নেমে আসে। বৃহস্পতিবার রাতে হাতির পালটি বাতকুচি গ্রামের ধান ক্ষেতে যায়। এ সময় উমর আলি ও গ্রামবাসীরা তাদের ফসল বাঁচানোর জন্য মশাল জ্বালিয়ে ডাক ও চিৎকার শুরু করেন।
একপর্যায়ে বন্যহাতির পালটি একটু পিছিয়ে যায়। পরে বাড়িতে যাওয়া সময় পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা হাতির পালটি উমর আলিকে ঘিরে ফেলে ও পা দিয়ে পিষ্ট করে।
বন বিভাগের ময়মনসিংহ মধুটিলা ফরেস্টের রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে নিহত উমর আলির পরিবারকে বন বিভাগের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে তিন লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
থানার ওসি মনিরুল আলম ভুইয়া বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। একই সঙ্গে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
আরও পড়ুন:সিলেটে মধ্যরাতে খোলা মাঠ থেকে একটি স্থানীয় দৈনিক পত্রিকার কম্পিউটার ইনচার্জের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নগরের হাজারিবাগ এলাকার পেছনের মাঠ থেকে বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো অমিত দাস শিবু স্থানীয় দৈনিক উত্তরপূর্বর কম্পিউটার ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। শিবুর গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জে। তিনি নগরের বাগবাড়ি নরসিংটিলা এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) এয়ারপোর্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দেবাংশু কুমার দে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘রাতে কাজ শেষে অফিস থেকে বাসায় ফিরছিলেন অমিত। তার মৃত্যু রহস্যজনক মনে হচ্ছে। পাশেই তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল রাখা ছিল।’
তিনি জানান, রাত ২টার দিকে স্থানীয় লোকজন মরদেহ দেখে থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়।
এসএমপির উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। তার মরদেহের পাশে মোটরসাইকেলটি চাবি লাগানো অবস্থায় রাখা ছিল, তবে মোবাইল ফোন পাওয়া যায়নি। কিন্তু তার মোবাইলের শেষ লোকেশন ঘটনাস্থলেই দেখাচ্ছে।’
আজবাহার বলেন, ‘অমিতের দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। এরপরও ঘটনাটিকে রহস্যজনক ধরে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:গাজীপুরের শ্রীপুরে বহুতল ভবনের ফ্ল্যাট থেকে এক দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় টেবিলের ওপরে একটি চিরকুট পাওয়া যায়।
উপজেলার মুলাইদ গ্রামের ফারুক খানের বহুতল ভবনের নিচ তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে শুক্রবার সকালে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো ইসরাফিল (১৭) শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি থানান হলদি গ্রামের বাসিন্দা ও তার স্ত্রী রোকেয়া খাতুনের (১৫) বাবার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার পস্তারি গ্রাম।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে গত সাত থেকে আট মাস আগে তারা পরিবারের অমতে বিয়ে করেন। তারা দুজনই শ্রীপুরের মুলাইদ গ্রামের ফারুক হোসেনের বহুতল ভবনে ভাড়া থাকতেন। ইসরাফিল স্থানীয় একটি ওয়ার্কসপে ও রোকেয়া স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করতেন।
রোকেয়ার ভাই বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘সাত থেকে আট মাস আগে পরিবারের অমতে তারা বিয়ের সম্পর্কে জড়িয়েছিল। বিয়ের পর তাদের সম্পর্ক ভালোই চলছি। সম্প্রতি ইসরাফিল তার বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল। পরে বৃহস্পতিবার তাদের বুঝিয়ে বাসায় আনা হয়। সকালে তাদের মৃত্যুর খবর পাই।’
ইসরাফিলের বাবা মফিজুল হক জানান, পাশাপাশি ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন তারা। পরিবারের রান্নার কাজ তারা ইসরাফিলের ফ্ল্যাটে করতেন। শুক্রবার সকালে তাদের ফ্ল্যাটের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে ভেতরে যান এবং ইসরাফিলকে ওড়নায় পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় এবং রোকেয়ার মরদেহ খাটের ওপর বিছানায় দেখতে পান।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাখাওয়াত হোসেন জানান, ‘খবর পেয়ে একটি ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রথমে স্ত্রী আত্মহত্যা করে। স্ত্রীর আত্মহত্যার বিষয়টি স্বামী সইতে না পেরে তিনিও আত্মহত্যা করেন।’
এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর মোহনায় জেলের জালে এবার ধরা পড়েছে ২৬ কেজি ২৫০ গ্রাম ওজনের একটি কোরাল মাছ।
পরে সেই মাছটি কুয়াকাটা পৌর মাছ বাজারে বিক্রি করা হয়েছে ৩২ হাজার ৭৫০ টাকায়।
কুয়াকাটা পৌর মাছ বাজারের ‘কুয়াকাটা ফিস পয়েন্টের’ পরিচালক নাসির উদ্দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে মাছটি কেনেন।
তিনি বলেন, ‘সাগর মোহনায় সচরাচর এত বড় মাছ পাওয়া যায় না। আজ দুপুরে মাছটি মার্কেটে আসার পর এক হাজার ২৫০ টাকা কেজি দরে কিনে নেই।’
স্থানীয় জেলেরা জানান, গত মঙ্গলবার কুয়াকাটার বাবলাতলা এলাকার জেলে রাসেল ‘মায়ের দোয়া’ নামের তার ট্রলারটি নিয়ে গভীর সমুদ্রে ইলিশ মাছ ধরতে রওনা হন। পরবর্তীতে বলেশ্বর নদীর সাগর মোহনায় রাত ২টার দিকে রাসেলের জালে এ বিশাল কোরাল মাছটি ধরা পড়ে।
রাসেল বলেন, ‘তীব্র তাপদাহ শুরুর পর থেকে সাগরে মাছ পড়ে না। ভাগ্য সহায় বলে এত বড় মাছ আল্লাহ দিয়েছেন। মাছটি তীরে নিয়ে আসলে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীরা মাছটি ক্রয় করতে চেয়েছেন। পরে কুয়াকাটা মাছ বাজারে এক হাজার ২৫০ টাকা কেজি দরে মাছটি বিক্রি করেছি।’
জানতে চাইলে কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, নদ-নদী এবং সাগরে বিভিন্ন মাছ পাওয়া যায়। সব সময় বড় মাছ ধরা পড়ছে না। সামুদ্রিক কোরাল এর চেয়েও অনেক বড় হয়।
সরকারের দেয়া ৬৫ দিন সাগরে সব ধরনের মাছ ধরার সফল কার্যক্রমের কারণেই এ ধরনের মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:পাবনার সাঁথিয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখার ভল্ট থেকে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ওই ব্যাংকের প্রধান তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তিনজনকে আটক করা হয়। দিনভর নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে তাদের সাঁথিয়া থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। তিনজনকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার আবু জাফর, ব্যবস্থাপক হারুন বিন সালাম ও ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী, যাদের বাড়ি পাবনার বিভিন্ন উপজেলায়।
পুলিশের ভাষ্য, টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী।
সাঁথিয়া থানা ও অগ্রণী ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে অগ্রণী ব্যাংক রাজশাহী বিভাগীয় ও পাবনা আঞ্চলিক শাখা থেকে পাঁচ কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে আকস্মিক অডিটে আসেন অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখায়। অডিট শেষে সেখানে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকার আর্থিক অনিয়ম দেখতে পান তারা। পরে অডিট কর্মকর্তা সাঁথিয়া থানাকে অবহিত করলে পুলিশ অভিযুক্ত তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংক পাবনা আঞ্চলিক শাখার উপমহাব্যবস্থাপক রেজাউল শরীফ বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় অভিযোগ করেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে বিভাগীয় অফিস থেকে পাঁচ সদস্যের অডিট টিম ব্যাংকে অডিট শুরু করে। ওই টিমের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরা দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করে তিনজনের কাছ থেকে নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন। পরে রাতে তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, আটককৃতদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার তাদের আদালতে পাঠানো হবে।
তিনি আরও বলেন, অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য