নিজ দল বিএনপির সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হয়েছেন তৈমূর আলম খন্দকার। প্রার্থিতা ঘোষণার পর দল থেকে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। কিন্তু তৈমূরের দাবি, এটি বিএনপির একটি কৌশল। তবে স্থানীয় নেতাকর্মীদের বক্তব্য- দলের নয়, এটি তৈমূরের নিজেদের ভোট টানার কৌশল।
নিউজবাংলাকে তৈমূর বলেছেন, আমার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থাটা দলের কৌশলগত অবস্থান। বরং কেন্দ্রীয় ও জেলার সব নেতাকর্মী আমাকে সমর্থন করছেন। আমার পক্ষে তারা ভোটের প্রচারেও অংশ নিচ্ছেন। তাছাড়া দলে বিভাজন এলেও আমার সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক কখনোই শেষ হবে না।’
তৈমূরের এই বক্তব্য নিয়ে নিউজবাংলা কথা বলেছে জেলা বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে। তারা বলছেন উল্টো কথা। বিএনপির নেতাকর্মীরা মনে করছেন, দলে পদ হারিয়ে তৈমূর নিজেই কৌশল করে বিএনপির সমর্থনের কথা বলছেন। উদ্দেশ্য, বিএনপির ভোটগুলো যেন তার পক্ষেই পড়ে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির জ্যোষ্ঠ সহ-সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ‘দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে তাকে সমর্থন করার প্রশ্নই ওঠে না। দলের চূড়ান্ত পর্যায় থেকে নির্দেশনা আছে যে দলীয় সরকারের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে যাবে না। এটাই হল আমাদের রাজনৈতিক কৌশল।’
তৈমূর কোন কৌশলের কথা বলছেন- প্রশ্ন রেখে সাখাওয়াত বলেন, ‘এটা দলের কৌশল হলে দল তো আমাকেও বলত তাকে সাপোর্ট করার জন্য। তেমন কোনো নির্দেশনা তো দেয়া হয়নি। বরং বলা হয়েছে- তার পক্ষে কেউ কাজ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
‘দল যদি কৌশলগত কারণে তার এই সিদ্ধান্তে মৌন সমর্থন দিয়ে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হল কেন? বিএনপি নির্বাচন বর্জন করে প্রার্থীকে মৌন সমর্থন দেবে আর এটাকে কৌশল হিসেবে বলা হবে- বিষয়টি হাস্যকর।’
নারায়ণগঞ্জ ছাত্রদলের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান রনি বলেন, ‘উনি আমাদের সিনিয়র নেতা। আমরা তার লিডারশিপে সামনে বড় ধরনের আন্দোলনের স্বপ্ন দেখছিলাম। সেখানে উনি এমন একটা কাজ করলেন যে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির জন্য একটি বাজে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি হল। ওনার এই সিদ্ধান্তে আমরা খুবই হতাশ। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে আমরা ওনাকে সমর্থন করব সেটা কখনোই হবে না।
‘তৈমূর আলম খন্দকারকে আমি খুবই সম্মান করি। ওনার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্কও খুব ভাল। কিন্তু আমি তো দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে পারব না।
‘ওই ঘটনার পর মহাসচিব ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা আমাকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, জেলা ছাত্রদল কোনোভাবেই যেন তার নির্বাচনী প্রচারে না থাকে। আমি সে অনুযায়ী আমার কর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছি।’
তৈমুরের সঙ্গে বিএনপির কারা কাজ করছেন জানতে চাইলে মশিউর রহমান রনি বলেন, ‘উনি দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। দলে ওনার অনেক অনুসারী ও শুভাকাঙ্ক্ষী আছেন। তারা হয়তো তাকে সমর্থন করে থাকতে পারেন। কিন্তু সেটাকে ঢালাওভাবে কেন্দ্রীয় বিএনপি-জেলা বিএনপির সমর্থন বলা ভুল হবে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী বলেন, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে তৈমূরকে মূলত সমর্থন দিচ্ছেন কিছু সুবিধাবাদী নেতাকর্মী। তারা নারায়ণগঞ্জে নিজেদের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্য ওসমান পরিবারের ছত্রছায়ায় থাকেন।
তৈমূরের পক্ষে প্রচারে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে অন্যতম চারজন হলেন- বন্দর উপজেলার সাবেক বিএনপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, ফতুল্লা থানা বিএনপির আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির সদস্য আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, ফতুল্লা থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রিয়াদ মো. চৌধুরী ও কুতুবপুর ইউনয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু। তিনি বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছিলেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ওই চার নেতার সঙ্গে কথা বলে নিউজবাংলা।
মনিরুল আলম সেন্টু বলেন, ‘২০১৮ সালে সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেয়ায় আমাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। তাই পরবর্তীতে আমি আওয়ামী লীগে যোগ দেই। কিন্তু আমি তৈমূর আলম খন্দকারকে সমর্থন করছি না।’
বন্দর উপজেলা বিএনপির সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল বলেন, ‘আমি তৈমুর সাহেবকে সমর্থন করছি কারণ তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী। তাকে সমর্থন করতে কোনো অসুবিধা নেই। দল থেকেও আমাদের এমন কিছু বলা হয়নি। এটা দলের কৌশল। আর কৌশল না হলে তো দল থেকে প্রেস কনফারেন্স করে এই সিদ্ধান্ত জানাত যে তৈমূর সাহেবের পক্ষে কাজ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ওসমান পরিবারের সঙ্গে সখ্য’র বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেলিম ওসমান সাহেব আমার এলাকার এমপি। আর আমি উপজেলা চেয়ারম্যান। আমরা যে দলই করি না কেন উন্নয়ন কাজের জন্য এমপির কাছে যেতেই হয়। সেজন্য অনেকে মনে করে আমি তার লোক। কিন্তু তার সঙ্গে আমার রাজনৈতিক মতাদর্শে কোনো মিল নেই।’
ফতুল্লা থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রিয়াদ মোহম্মদ চৌধুরী বলেন, ‘আমি শুরুতে তৈমূর সাহেবের ভোটের প্রচারে ছিলাম। দলের সিদ্ধান্ত জানার পর আর সেখানে যাইনি। আমার কাছে ব্যক্তির চেয়ে দল বড়।’
ফতুল্লা থানা বিএনপির আহ্বায়ক ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তাকে তৈমূরের নির্বাচনী প্রচারে সব সময় দেখা গেছে বলে নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছে একাধিক সূত্র।
আরও পড়ুন:ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে যৌথবাহিনীর অভিযানে একজনকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলাঝাড়ি বাজারের করতোয়া নদীসংলগ্ন এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়।
দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর জুবায়ের হোসেন সিয়ামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক্টরসহ চালক রাজু ইসলাম ও শান্ত আহমেদকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
আদালতের রায়ে রাজু ইসলামকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন করায় দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। তবে রাজু ইসলাম অর্থদণ্ডের অর্থ পরিশোধ করায় ট্রাক্টর দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় মাত্র এক মাসের ব্যবধানে একই ক্লিনিকে সিজারিয়ান ডেলিভারির সময় দুই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ সোমবার (৭ জুলাই) রাতে মুন্নি খাতুন (২৫) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী সিজারিয়ান অপারেশনের সময় মারা যান। এর আগে ৮ জুন ওই ক্লিনিকেই আখি খাতুন (২২) নামের আরেক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। পরপর এমন দু’টি মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্লিনিক মালিকের ছেলে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেস্টা করছে বলে জানাগেছে।
সোমবার রাতে মুন্নির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্লিনিক মালিক আবুল হোসেনের ব্রাকপাড়া এলাকার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। পরে তারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহত মুন্নি খাতুন উপজেলার তারাগুনিয়া ব্রাকপাড়া এলাকার মঞ্জু হোসেনের মেয়ে। আর নিহত আখি খাতুন পূর্ব কবিরাজপাড়া গ্রামের ইমনের স্ত্রী।
মুন্নির পরিবারের সদস্যরা জানান, গর্ভাবস্থায় জটিলতা দেখা দিলে সোমবার তাকে উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা ঝুঁকির কথা বলে কুষ্টিয়া বা রাজশাহীতে রেফার করার পরামর্শ দেন। সন্ধ্যায় তাকে তারাগুনিয়া থানার মোড় বাজারের আবুল হোসেনের মালিকানাধীন তারাগুনিয়া ক্লিনিক নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তৃপক্ষ সিজারিয়ানে সম্মত হয়। কিন্তু রাত ৯টার দিকে অপারেশনের সময়ই মুন্নির মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে তারাগুনিয়া ক্লিনিকের মালিক আবুল হোসেন বলেন, “রোগী কীভাবে মারা গেছে সেটা ডাক্তাররাই ভালো বলতে পারবেন। আমি নিজে অপারেশনে ছিলাম না, তাই কিছু জানি না। টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”
অপারেশনকারী চিকিৎসক ডা. সফর আলী বলেন, “রোগীকে ওটিতে আনার আগে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ওষুধ প্রয়োগ করেন। আমরা ওটিতে ঢুকেই দেখি রোগী স্ট্রোক করেছে। এরপর দ্রুত নবজাতকের প্রাণ রক্ষায় সিজারিয়ান সম্পন্ন করি।”
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, “একই প্রতিষ্ঠানে পরপর দুই প্রসূতির মৃত্যু অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি। আজই ক্লিনিকটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, “গতকাল রাতে তারাগুনিয়া এলাকার একটি ক্লিনিকে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ক্লিনিক এলাকায় উত্তেজনা ও হট্টগোলের আশঙ্কায় আমি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পাঠাই। পরে জানতে পারি, নিহত নারীর এলাকা থেকে কিছু লোকজন ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে হামলা চালায়। আমরা দ্রুত সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। শুনেছি দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করে নিয়েছে।”
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল হাই সিদ্দিকী বলেন, এক মাসের মধ্যে দুইজন রোগীর মৃত্যু অত্যান্ত দুঃখজনক। ঘটনায় কর্তৃপক্ষকে বলবো তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।
একই ক্লিনিকে এক মাসের ব্যবধানে দুই প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ভোলা-২ (বোরহানউদ্দিন-দৌলতখানের) সাবেক সংসদ সদস্য মো: হাফিজ ইব্রাহিমের নামে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে সেলিম নামে এক ব্যক্তির দেওয়া অভিযোগটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করা হয়েছে।
রোববার বিকেলে বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড়মানিকায় শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের আয়োজনে বৃক্ষরোপন কর্মসূচিতে গণমাধ্যমকর্মীদের দেয়া স্বাক্ষাতকারে এ দাবি করেন হাফিজ ইব্রাহিম।
এর আগে দৈনিক ইত্তেফাক, সমকাল, যায়যায়দিন সহ বেশ কয়েকটি পত্রিকার ডিজিটাল প্লাট ফরমে একটি সংবাদে দেখা যায়, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে হাফিজ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ তুলে সেলিম নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের হাফিজ ইব্রাহিম বলেন, সংবাদটি ডিজিটাল প্লাট ফরমে প্রকাশ হওয়ার পর আমার নজরে আসে। আমি মনোযোগ দিয়ে তার অভিযোগ শুনি। যে ব্যক্তি আমার নামে জমি দখলের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি আমার নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা না। আমি খবর নিয়ে জেনেছি, তিনি ভোলা-১ সদর আসনের বাসিন্দা ভোলা সদর আসনের সাবেক এমপি ও মন্ত্রী মরহুম মোশারেফ হোসেন শাহজাহানের বাড়ির পাশে তার বাড়ি। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সেলিম নামে ওই ব্যক্তির সাথে তার আপন ভাতিজি জামাইয়ের দীর্ঘদিন ধরে জমি-জমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে তার ভাতিজি জামাই তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে থাকতে পারে এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। এমনকি ওই বিষয়ে ভোলা সদর থানায় মামলা রয়েছে।
হাফিজ ইব্রাহিম আরও বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। পতিত সরকারের পলাতক একটি কুচক্রী মহল বিএনপির নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে ও দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা এই ঘটনার পেছনে যে আসল সত্য রয়েছে তা উদঘাটন করুন।
জুলাই-আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজশাহী মহানগরীর একটি থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করেছে র্যাব-৫।
রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর টিকাপাড়া এলাকার একটি বালুর স্তূপের আনুমানিক ২ ফুট গভীর থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়।
সোমবার সকালে র্যাব-৫ এর মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
অভিযানে একটি ৭.৬২ মি.মি. বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন এবং এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৫; সিপিএসসি’র একটি আভিযানিক দল জানতে পারে, ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন লুট হওয়া অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি দুষ্কৃতকারীরা বোয়ালিয়া থানাধীন টিকাপাড়া এলাকায় লুকিয়ে রেখেছে। পরে নিরপেক্ষ সাক্ষীদের উপস্থিতিতে অভিযান চালিয়ে বালুর স্তূপের ভেতর থেকে বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করে র্যাবের গোয়েন্দা দল।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাসস’কে জানান, এটি পুলিশের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র। তবে কোন থানার অস্ত্র সেটি নিশ্চিত করা যায়নি। কারণ পিস্তলের গায়ে বাট নম্বর ঘষা-মাজার চিহ্ন স্পষ্ট। উদ্ধারকৃত বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি বোয়ালিয়া থানায় জিডির পর হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্তব্য