বেক্সিমকো লিমিটেডের বহুল আলোচিত তিন হাজার কোটি টাকার গ্রিন সুকুকের লেনদেন শুরুর দিন পুঁজিবাজারে সূচক কিছুটা বাড়লেও লেনদেন কমে গেছে। সুকুকেও খুব একটা লেনদেন হয়েছে এমন নয়, দিন শেষে হাতবদল হয়েছে ৩৩ কোটি টাকার বন্ড।
নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহে পাঁচ কর্মদিবসই পুঁজিবাজারে সূচক বাড়লেও দ্বিতীয় সপ্তাহে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। প্রথম দিন বড় পতন, তার পরদিন বড় উত্থান, এরপর আবার বড় পতন, শেষ দিনে আবার সূচক বৃদ্ধি।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ওঠানামা করতে করতে সূচকে যোগ হয়েছে ২১ পয়েন্ট। তবে লেনদেন কমে গেছে ৪০০ কোটি টাকার বেশি।
এদিন লেনদেনে প্রধান আকর্ষণ ছিল সুকুক বন্ড। গত এক বছর ধরেই এই বন্ডটি নিয়ে তুমুল আলোচনা হচ্ছে। বন্ডটি যে লভ্যাংশের নিশ্চয়তা দিয়েছে, তা যেকোনো বিবেচনায় আকর্ষণীয়। তারপরেও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের এটি খুব একটা আকৃষ্ট করতে পেরেছে এমন নয়। পরে মূলত ব্যাংকগুলো এই বন্ডের ইউনিট কিনেছে।
বন্ডটি প্রতি বছর ন্যূনতম ৯ শতাংশ লভ্যাংশ দেবে, যার পুরোটাই করমুক্ত। আবার বেক্সিমকো লিমিটেডের লভ্যাংশ ১০ শতাংশের বেশি যতটুকু হবে, তার ১০ শতাংশ সুকুকের লভ্যাংশে যোগ হবে। প্রতি বছর সুকুকের ২০ শতাংশ টাকা তুলে নেয়া যাবে। অথবা এই টাকার বিনিময়ে বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার নেয়া যাবে। সেই শেয়ার দেয়া হবে বাজারদরের ২৫ শতাংশ কম দামে। ফলে সেখানে ৩৩ শতাংশ বেশি মুনাফা হবে। এই বিষয়টি বিবেচনায় নিলে বছরে মুনাফা ১৬ থেকে ১৭ শতাংশ হবে নিশ্চিতভাবেই। এর চেয়ে বেশিও হতে পারে।
পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরুর আগে সুকুকের লেনদেনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়। সেখানে বক্তব্য রাখেন বেক্সিমকো লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান। তিনি দেখান ব্যাংকে টাকা রাখার চেয়ে সুকুকে বিনিয়োগ করা লাভজনক।
পরে ১০০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি বন্ডের লেনদেন শুরু হয় ১১০ টাকায়। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দাম কমতে থাকে। দিন শেষে ১০১ টাকায় শেষ হয় এটি।
এই দিনটি বিনিয়োগকারীদের দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বেড়েছে ১৫৬টির কোম্পানির শেয়ারদর, কমেছে ১৭১টির। অপরিবর্তিত ছিল ৫৫টির।
বছরের প্রথম কর্মদিবস ২ জানুয়ারি লেনদেন ছিল ৮৯৪ কোটি ১৭ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। সেটি বাড়তে বাড়তে ১১ জানুয়ারি হয় ১ হাজার ৯৭৬ কোটি ৮৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকা।
তবে এর পরের দুই দিনে কমতে কমতে সপ্তাহের শেষ দিন দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২৪২ কোটি ৮৪ লাখ ১১ হাজার টাকা।
দিনটিতে সূচক এক দিনের ব্যবধানে আবার ৭ হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়েছে। গত ৭ ডিসেম্বরের পর প্রথমবারের মতো তা এই ধাপ অতিক্রম করে ১১ জানুয়ারি। পর দিন আবার তা নিচে নেমে আসে। তার পরদিন তা ২১ দশমিক ১৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ১৭ পয়েন্টে।
সূচক বাড়াল যেসব কোম্পানি
দিনভর টানাপড়েনের মধ্যে শেষ পর্যন্ত সূচক বৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকায় ছিল রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি পাওয়ার গ্রিডের। আগের দিন দর হারানো কোম্পানিটির দর এদিন বেড়েছে ৬.৮ শতাংশ। কোম্পানিটি সূচকে যোগ করেছে ৪.৯৭ পয়েন্ট।
টেলিকম খাতের গ্রামীণফোনের শেয়ারদর বেড়েছে পরপর দুই দিন। ০.৬২ শতাংশ দর বৃদ্ধিতে কোম্পানিটি সূচকে যোগ করেছে ৪.৩১ পয়েন্টে।
আগের দিন দর হারানো সরকারি কোম্পানি তিতাস গ্যাসের দর এদিন বেড়েছে ৩.৭৭ পয়েন্ট, কোম্পানিটি সূচক বাড়িয়েছে ২.৫৯ পয়েন্ট।
আগের দিন দর হারানোর সর্বোচ্চ সীমায় লেনদেন হওয়া বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ারদর এক দিনের ব্যবধানে লেনদেন হয়েছে দিনের সর্বোচ্চ সীমায়। ৯.৯৫ শতাংশ দর বৃদ্ধিতে সূচকে যোগ হয়েছে ২.৫২ পয়েন্ট।
এ ছাড়া বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্ল কোম্পানি ২.০৬ পয়েন্ট, স্কয়ার ফার্মা ১.৬৭ পয়েন্ট, ব্র্যাক ব্যাংক ১.৬২ পয়েন্ট, লাফার্জ হোলসিম ১.৩৫ পয়েন্ট, ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স ০.৯৭ পয়েন্ট ও লিনডে বিডি ০.৯৫ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে।
সব মিলিয়ে এই ২০টি কোম্পানিই সূচক বাড়িয়েছে ২৩.০১ পয়েন্ট।
অন্যদিকে সূচক সবচেয়ে বেশি পতন হয়েছে রবির দরপতনের কারণে। আগের দিন সূচকে ৪৩ পয়েন্ট যোগ করা কোম্পানিটি পরদিন সূচক কমিয়েছে ৩.০৪ পয়েন্ট।
এ ছাড়া সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, এক্সিম ব্যাংক, আইসিবি, বিএসআরএম, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, পদ্মা অয়েল, ব্যাংক এশিয়া ও প্রাইম ব্যাংকও সূচক কিছুটা কমিয়েছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানির কারণে সূচক কমেছে ৯.১৭ পয়েন্ট।
দর বৃদ্ধির ১০ কোম্পানি
বৃহস্পতিবার সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে রংপুর ফাউন্ডির, ৯.৯৮ শতাংশ। কোম্পানিটির শেয়ারদর ১৮৮ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ২০৭ টাকা ১০ পয়সা।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ারদর বেড়েছে ৯.৯৫ শতাংশ। ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও এপেক্স ফুডের দর বেড়েছে একই হারে। পঞ্চম স্থানে থাকা পেনিনসুল চিটাগাং কোম্পানির দর বেড়েছে ৯.৯২ শতাংশ।
আট শতাংশের বেশি শেয়ারদর বেড়েছে তিনটি কোম্পানির। এর মধ্যে জেমিনি সি ফুডের দর ৮.৭৪ শতাংশ, এএমসিএল (প্রাণ) ৮.৭৪ শতাংশ ও এপেক্স ফুটওয়ারের ৮.৬৯ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে।
সাত শতাংশের বেশি শেয়ারদর বেড়েছে দুটি কোম্পানির। একটি ওয়াটা কেমিক্যাল, যার শেয়ারদর বেড়েছে ৭.৯১ শতাংশ, আরেকটি বিডি অটোস, যার শেয়ারদর বেড়েছে ৭.২২ শতাংশ।
পাওয়ার গ্রিড, মুন্নু ফেব্রিক্স ও পদ্মা লাইফের দর বেড়েছে ছয় শতাংশের বেশি।
দরপতনের ১০ কোম্পানি
লেনদেনে সবচেয়ে বেশি ৮.৬৬ শতাংশ দর হারিয়েছে শ্যামপুর সুগার। ৩০ লাখ ৫ হাজার টাকার মোট ৩৫ হাজার ৭৮২টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের দর কমেছে ৫ শতাংশ।
তিন শতাংশের বেশি দর কমেছে চারটি কোম্পানির। এগুলোর মধ্যে ভ্যানগার্ড এএমএল বিডি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৩.৬৫ শতাংশ, আইএফআইসি ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৩.৪৪ শতাংশ, এসইএমএল এফবিএসএল মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৩.৪০ শতাংশ এবং আইসিবি এএমসিএল সেকেন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৩.১৫ শতাংশ দর কমেছে।
দুই শতাংশের বেশি শেয়ারের দরপতন হয়েছে ১৬টি কোম্পানির। এর মধ্যে পিপলস ইন্স্যুরেন্সের ২.৯৫ শতাংশ, বিডি ফিন্যান্সের ২.৮৬ শতাংশ, ইনটেকের ২.৬২ শতাংশ, এস আলম কোল্ডরোল স্টিলের দর ২.৪৫ শতাংশ ও সোনালী পেপারের ২.৪৪ দর শতাংশ কমেছে।
লেনদেনের এগিয়ে থাকা ১০ কোম্পানি
বৃহস্পতিবার সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ৮০ কোটি ৭৫ লাখ টাকার। ৬৬ লাখ ৬২ হাজার ৬৫০টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা পাওয়ার গ্রিডে লেনদেন হয়েছে ৬০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ৮৩ লাখ ১২ হাজার ৪৮১টি শেয়ার।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা বেক্সিমকো লিমিটেডে ৫৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলে ৪০ কোটি ১৪ লাখ টাকা, আরএকে সিরামিকসে ৩৮ কোটি ১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
এদিন ৩৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ফরচুন সুজে। তিতাস গ্যাসের শেয়া লেনদেন হয়েছে ৩৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার। ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সে লেনদেন হয়েছে ৩৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
এ ছাড়া লাভেলো আইসক্রিমে ২৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা, দ্য পেনিনসুলায় ২৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১২ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক—শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৭ পয়েন্ট। ১৭৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৫৫ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার বাজারে প্রথমার্ধে ৪৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। উত্থানের ধারা একইভাবে বজায় আছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৩ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৭২ কোম্পানির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম। সিএসইতে দিনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রায় ৪ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
তিন দিন ছুটি শেষে পুঁজিবাজারের প্রথম কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টায় সূচকের বড় উত্থান হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১১ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২০ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৪০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
এ সময় ২৫৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ৪৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকার মতোই উত্থানের মধ্য দিয়ে চলছে চট্টগ্রামের লেনদেন, সার্বিক সূচক বেড়েছে ৭২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৫৬টি কোম্পানির মধ্যে ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
মন্তব্য