দুর্ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া না দেখাতে এবং আইন নিজের হাতে তুলে না নিতে সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
একই সঙ্গে ট্রাফিক নিয়ম সম্পর্কে প্রাথমিক থেকে সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন সরকারপ্রধান।
গাড়ির ফিটনেস নিয়মিত চেক করার পাশাপাশি চালকরা যেন হেল্পারকে গাড়ি চালাতে দিতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতেও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
গণভবন প্রান্ত থেকে বুধবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় নবনির্মিত ঢাকা এয়ারপোর্ট মহাসড়কে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজসংলগ্ন পথচারী আন্ডারপাসের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কেউ আইন হাতে তুলে নেবেন না। অ্যাক্সিডেন্ট অ্যাক্সিডেন্টই। দোষ কার সেটা পরে দেখা যাবে।…অনেক অ্যাক্সিডেন্ট এভাবে হয়, ধাক্কা লাগল পড়ে গেল। ড্রাইভারের মনে একটা ভয় থাকে। যদি আমি গাড়ি থামাই আমাকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলবে।
‘সেই ভয়ে সে গাড়ি চালিয়ে যায়। আর যে পড়ে যায়, সে হয়তো বেঁচে যেত। কিন্তু ভীত হয়ে যখন গাড়ি চালিয়ে যায়, চাকার তলে সে সম্পূর্ণ পিষ্ট হয়ে যায়। একটা মানুষের জীবন চলে যায়।’
দোষ কার সেটা খতিয়ে দেখা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিছু হলে যারা ড্রাইভারকে ধরে পেটাবেন, গাড়িতে আগুন দেবেন, গাড়ি পোড়াবেন- এটা কিন্তু ঠিক না। আইন কেউ হাতে তুলে নেবেন না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আছে, সেটা তারাই দেখবে, আইনগত কী ব্যবস্থা নেয়া যায়।’
পথচারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে একটা প্রবণতা আছে। কোনো একটা অ্যাক্সিডেন্ট হলেই সবার আগে গাড়ির ড্রাইভারকে ধরে পেটানো হয়। এমনকি অনেক সময় গণপিটুনি দিয়ে তাকে মেরেই ফেলা হয়। হত্যা করা হয়। যখন একটা দুর্ঘটনা ঘটে, আমার এটা অনুরোধ থাকবে সবার কাছে যে সেই দুর্ঘটনা কেন ঘটল, কী কারণে ঘটল, কার দোষে ঘটল, সেটা বিবেচ্য বিষয়। সেটা খুঁজে দেখা দরকার।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘ট্রাফিক রুলস সম্পর্কে সবার জ্ঞান থাকা দরকার। সেটা মেনে চলা দরকার। ট্রাফিক রুল সবাই মেনে চলবেন, মোবাইল ফোন কানে দিয়ে কথা বলতে বলতে ওই সড়ক দিয়ে চলা বা রেললাইনের পাশ দিয়ে হাঁটা বা রেললাইন পার হওয়া বা সড়ক পার হওয়া- এটা কখনও কেউ করবেন না। এটা বন্ধ করতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দুর্ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে অবশ্যই দেখবে দোষটা কার। প্রায় ছাত্ররা মারা যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় মোবাইল ফোন কানে দিয়ে কথা বলতে বলতে চলছে, অথবা রাস্তা ছেড়ে দিয়ে রাস্তার মাঝখান দিয়ে হাঁটা শুরু করেছে।
যখন একটা যানবাহন চলাচল করে, সেই যানবাহনটার পক্ষে সঙ্গে সঙ্গে ব্রেক কষা সম্ভব হয় না। এটা যান্ত্রিক বিষয়, এটা মাথায় রাখা দরকার।’
এ সময় গাড়ির চালক ও হেল্পারদের উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জানি যে চালকরা দীর্ঘ সময় গাড়ি চালালে অনেক সময় ক্লান্ত হয়ে পড়ে, অনেক সময় ঝিমিয়ে পড়ে, সেটা হয়। সে জন্য আমরা এখন থেকে হাইওয়েগুলোতে চালকদের জন্য বা যারা যাত্রী তাদের জন্য বিশ্রামের ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
সুনির্দিষ্ট দূরত্বের মাঝে একটি করে বিশ্রামাগার বা সার্ভিস স্টেশন থাকবে এবং চালকদের প্রশিক্ষণে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘ড্রাইভাররা যদি ক্লান্ত হয় সেটা তারা বলতে পারেন বা কিছুক্ষণ গাড়ি থামাতে পারেন।
‘কিন্তু ড্রাইভার পাশে বসে বা রেস্ট নিতে গিয়ে হেল্পারকে দিয়ে গাড়ি চালানো, যার কোনো ভারী যান চালানোর মতো দক্ষতা নেই, তাকে দিয়ে চালানোটা ঠিক না। এটা খুব অন্যায় কাজ। এ বিষয়গুলোর দিকে সবাই দৃষ্টি দিলে, বিশেষ করে যারা পথচারী তারা যদি সতর্ক থাকে তাহলে কিন্তু অ্যাক্সিডেন্ট অনেক কম হবে।’
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘রাস্তায় চলাচলের সময় অবশ্যই ট্রাফিক রুল মানতে হবে। শিক্ষার ক্ষেত্রে আমি বলব, প্র্রতিটি স্কুল কলেজে ট্রাফিক রুল সম্পর্কে একেবারে ছোট্ট বেলা থেকে শিক্ষা দেয়া উচিত। প্রত্যেক স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে এই ব্যবস্থা নিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত আমাদের শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বলব, আপনারা এ বিষয়ে উদ্যোগ নেন। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই নির্দেশনাটা দেবেন। তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেক কমবে। তা ছাড়া আমাদের যানবাহনগুলো, ভারী যানবাহনগুলো বাস-ট্রাক সেগুলোতে যান্ত্রিক ত্রুটি আছে কি না সব সময় পরীক্ষা করতে হবে। এ বিষয়টি সবাই নজরে রাখবেন।’
করোনা নিয়ে সতর্কতা
করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ বা ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে অনুরোধ করব, সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন। মাস্ক পরে থাকবেন। দ্রুত যেন এটা ছড়াতে না পারে কিছু নির্দেশনা ইতিমধ্যে আমরা দিয়েছি, সেগুলো মেনে চলবেন। সেটাই আমরা চাই।’
আর তিনটি প্রকল্পের উদ্বোধন
এ সময় সিলেট শহর বাইপাস-গ্যারিসন লিংক ৪ মহাসড়ক, কক্সবাজারের বালুখালী থেকে বান্দরবানের ঘুনধুম সীমান্ত সংযোগ সড়ক এবং রাঙ্গামাটির নানিয়ারচরে চেংগী নদীর ওপর ৫০০ মিটার দীর্ঘ সেতুরও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সড়কের মাধ্যমে অর্থাৎ যোগাযোগের ব্যবস্থা নিচ্ছি। এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গেও আমরা বাংলাদেশকে সংযুক্ত করতে চাচ্ছি।’
তারই অংশ হিসেবে কক্সবাজারের বালুখালী হতে বান্দরবানের ঘুনধুম সীমান্ত সংযোগসড়ক নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এই সড়কটি এশিয়ান হাইওয়ের একটি অংশ হিসেবে প্রস্তাবিত বিধায়, আন্তর্জাতিক এই সড়কটি অন্যান্য সড়ক-মহাসড়ক থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর-পরবর্তী সময়ে আপনারা জানেন যে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটে। সেই সময় এর কাজ কিছুটা ব্যাহত হয়।’
তারপরও নির্ধারিত সময়ে সফলভাবে কাজটি সমাপ্ত হয়েছে বলে মনে করেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে আঞ্চলিক সংযোগ স্থাপন করবে সড়কটি। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করবে। ফলে স্থানীয় জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়ন হবে। কর্মসংস্থান হবে। আয় বৃদ্ধিতে সড়কটি অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।’
‘সড়কটি সীমান্ত সড়কের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে’ বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
পুরো সীমান্ত অঞ্চলে সড়ক নির্মাণের প্রকল্প চলমান আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের দেশটাকে নিরাপদ রাখতে চাই। আগে এখানে বিওপি খুব বেশি ছিল না। আমরা এখানে নতুনভাবে বিওপি স্থাপন করেছি। সীমান্ত সড়ক হয়ে গেলে সীমান্ত রক্ষা আরও সহজ হবে।’
রাঙ্গামাটির নানিয়ারচরে চেংগী নদীর ওপর ৫০০ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে পার্বত্য এলাকার যোগাযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের নতুন দিক উন্মোচিত হলো বলে মনে করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘এই সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের পথও আমরা আরও একধাপ এগিয়ে গেলাম।’
আরও পড়ুন:মাতৃত্বকালে প্রতিবছর দেশে ৬৫ হাজার শিশু এবং সাড়ে ৪ হাজার মা মারা যায় জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘এই সংখ্যা অনেক। যদিও গত বছরের তুলনায় এবার আমরা অন্তত ৫ ভাগ মা ও শিশুর মৃত্যুহার কমাতে সক্ষম হয়েছি। তবুও এখনও বছরে এত মৃত্যু কোনোভাবেই কাম্য নয়।’
তিনি বলেন, ‘তবে বিগত বিএনপি-জামাত সরকারের তুলনায় এ মৃত্যুহার এখন অর্ধেকের বেশি কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি।’
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর মিন্টো রোডের বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেচ্ছা মুজিব কনভেনশন হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগে ৯ থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ’ পালন উপলক্ষ্যে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
মন্ত্রী বলন, ‘এখন আমাদের আগামীর লক্ষ্য পূরণ করতে হবে। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে মাতৃমৃত্যু হার ৭০ শতাংশ কমাতে হবে ও শিশুমৃত্যু হার অর্ধেকে নামিয়ে আনতে হবে। তবে, এই লক্ষ্য অর্জন করতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করতে হবে, মায়েদের হোম ডেলিভারির পরিবর্তে প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারির দিকে মনোযোগী হতে হবে এবং সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রসমূহকে ২৪ ঘণ্টা সার্ভিস ব্যবস্থায় কাজ করতে হবে। মা ও শিশু মৃত্যুহার কমিয়ে আনতে আমরা ইতোমধ্যেই সারা দেশের ৫০০টি সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ২৪ ঘণ্টা সার্ভিস শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে আরও ৪০০টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই ২৪ ঘণ্টা সেবা চালু করা হবে।
‘বর্তমানে প্রাইভেট স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে আশংকাজনক হারে সিজারিয়ান ব্যবস্থা বেড়ে গেছে’ উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ সময় বলেন, ‘দেশে এখন সিজারিয়ান বাচ্চা জন্মের হার আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিনা কারণেই অনেক মায়েরা সিজার করে বাচ্চা নিতে আগ্রহী থাকেন। এটি কাম্য নয়।
‘একবার সিজার করে বাচ্চা নিলে ওই মায়ের পরবর্তীতে বাচ্চা ডেলিভারিতে সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া সারা জীবনের জন্য অন্যান্য সমস্যা নিয়ে চলতে হতে পারে। এটি এভাবে চলতে পারে না। দেশে হোম ডেলিভারি এবং সিজার করে বাচ্চা নেয়া অর্ধেকে নামাতে আমাদের সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আগামী ৯ থেকে ১৪ ডিসেম্বর ৬ দিনব্যাপী পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম। উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য, অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ, মহাপরিচালক শিক্ষা প্রফেসর টিটু মিয়া, মহাপরিচালক নার্সিং, মহাপরিচালক নিপোর্ট এবং ইউএনএফপিএ-এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ক্রিস্টিন ব্লোকসসহ আরও অনেকে। এ ছাড়া জুম অনলাইনে দেশের ৮০টি উপজেলা হাসপাতাল স্বাস্থ্য প্রতিনিধি আলোচনা সভায় যুক্ত ছিলেন।
৪০তম বিসিএস পরীক্ষার নন-ক্যাডার পদের প্রার্থীদের মধ্য থেকে ৮৩ জনকে উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) শরিফুল আলম বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়ে বলেন, “নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে ৪০তম বিসিএস পরীক্ষার নন-ক্যাডার পদের প্রার্থীদের মধ্য হতে ৮৩ জনকে ‘উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তা’ পদে নিয়োগ দিয়ে আজ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। প্রার্থীদেরকে আগামী ১২ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখে সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, নির্বাচন ভবন, আগারগাঁও, ঢাকা বরাবর যোগদানপত্র দাখিল করার জন্য নিয়োগপত্রে বলা হয়েছে।”
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে এই নিয়োগ নির্বাচন কমিশনের কাজে বড় সহায়ক ভূমিকা রাখবে।’
তৈরি পোশাকশিল্প ও এর বাইরে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রম অধিকারকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের বেসরকারি খাত ও অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে কাজ আরও গভীর করতে যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহী বলে জানিয়েছেন ঢাকায় দেশটির দূত পিটার হাস।
বাংলাদেশ তুলা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘তৈরি পোশাক খাতের জন্য সাম্প্রতিক ন্যূনতম মজুরি পর্যালোচনা একটি বস্তুনিষ্ঠ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং প্রমাণভিত্তিক জাতীয় মজুরি নীতির সুস্পষ্ট প্রয়োজনীয়তা প্রদর্শন করেছে, যা গার্মেন্টস শ্রমিকদের সামনে থাকা গুরুতর অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলোকে মোকাবিলা করবে।’ খবর ইউএনবির।
রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন এবং বাংলাদেশে পরিচালিত যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর জন্য একটি স্থিতিশীল ও প্রত্যাশিত পরিচালনার পরিবেশের জন্য শক্তিশালী শ্রম আইন ও তাদের বাস্তবায়ন অত্যাবশ্যক।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা যখন তৈরি পোশাক খাতের দিকে তাকাই, বাংলাদেশে আমাদের মিশনের অন্যতম অগ্রাধিকার হলো উন্নত শ্রমমানের মাধ্যমে উপলব্ধ টেকসই এবং বিস্তৃতভাবে ভাগ করা সমৃদ্ধি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের অব্যাহত প্রবৃদ্ধি ও স্থায়িত্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি আমাকে শ্রম অধিকারের দিকে মনোনিবেশ করায়।’
রাষ্ট্রদূত স্মরণ করিয়ে দেন, গত ১৬ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ‘অ্যাডভান্সিং ওয়ার্কার এম্পাওয়ারমেন্ট, রাইটস অ্যান্ড হাই লেবার স্ট্যান্ডার্ডস গ্লোবালি’ শীর্ষক যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের নতুন স্মারকলিপি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, ‘নতুন এ বৈশ্বিক শ্রম কৌশলটি সব আমেরিকান সরকারি সংস্থাগুলোকে সরকার, শ্রম সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন, সুশীল সমাজ ও বেসরকারি খাতের সঙ্গে সংগঠন এবং সম্মিলিত দরকষাকষির স্বাধীনতার অধিকার প্রচার ও সুরক্ষার জন্য সম্পৃক্ততা জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছে।’
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রে সড়ক দুর্ঘটনায় ইউনিক গ্রুপ ও নতুন ভিশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) মেয়ে নিহত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিমানবন্দরের কাছে স্থানীয় সময় বুধবার এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো ৩৭ বছর বয়সী নাদিহা আলী মো. নূর আলী ও সেলিনা আলী দম্পতির মেয়ে।
নাদিহার পরিবার জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে জানাজার পর সেখানেই তার দাফন সম্পন্ন হবে।
নাদিহা আলীর অকাল মৃত্যুতে ইউনিক গ্রুপের পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে ফুলের মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ঢাকা থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে টুঙ্গিপাড়া এসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে পৌঁছেই তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধের বেদিতে শ্রদ্ধা জানান।
পরে সরকারপ্রধান ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের শহীদ সব সদস্যের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়কপথে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া আসেন। বেলা পৌনে একটার দিকে তিনি ঢাকার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে রওনা হন। পদ্মা সেতু হয়ে তিনি নিজ এলাকায় যান।
নিজ বাসভবনে সন্ধ্যায় নির্বাচনি এলাকা টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে দলের সভাপতি শেখ হাসিনার।
সফরের অংশ হিসেবে শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রী তার নির্বাচনি এলাকা কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
দলীয় একটি সূত্র আরও জানায়, নেতা-কর্মীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনে বেশ উৎফুল্ল ও তার নির্দেশনার জন্য অধীর আগ্রহে বসে আছেন। যদিও নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন যাতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে প্রধানমন্ত্রী এবার কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন না।
আরও পড়ুন:শীতের মৌসুমে এসেও তেমন একটা ঠান্ডা পড়ছে না রাজধানী ঢাকায়। রাতে হালকা শীত শীত ভাব হলেও দিনের আলোয় তার অস্তিত্ব বোঝা যায় কমই। তবে ঢাকার বাইরে শীত এসে গেছে বেশ আগেই। এবার অবশ্য রাজধানীর বুকেও শীতের আভাস, এই অভাস বয়ে এনেছে আকাশ থেকে নেমে আসা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি।
ছিটেফোঁটা বৃষ্টি হচ্ছি কদিন ধরে, এই ছিটেছোঁটা বুধবার থেক গুঁড়ি গুঁড়িতে রূপ নিয়েছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে এখনও। এই বৃষ্টিতে কমছে তাপমাত্রা, বাড়ছে শীত। অবহাওয়ার এমন অবস্থা সামনে অন্তত পাঁচদিন থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বভাসে এসব তথ্য দিয়েছে। পরবর্তী পাঁচ দিনের পূর্বাভাসে অধিদপ্তর বলছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
সারা দেশের দিন ও রাতের তাপমাত্রা ২ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হ্রাস পেরে বলে জানিয়েছে অধিদপ্তর।
আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, উত্তর অন্ধ্র প্রদেশ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি উত্তর দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে লঘুচাপে পরিণত হয়ে বর্তমানে এটি গুরুত্বহীণ হয়ে পড়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, বুধবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে প্রায় সারা দেশেই। এতে তাপমাত্রাও কমেছে। এই সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে যশোরে ২৬ মিলিমিটার। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল কক্সবাজারে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায় ১৭. ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আরও পড়ুন:আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে দেশের ৩৩৮ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) এবং ১১০ জন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) বদলির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৃহস্পতিবার সাংবিধানিক সংস্থাটির পক্ষ থেকে এই অনুমোদন দেয়া হয় বলে একটি সূত্র নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছে।
এর আগে সারা দেশে সব থানার ওসিদের পর্যায়ক্রমে বদলির জন্য নির্বাচন কমিশন চিঠি দিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। তারই ধারাবাহিকতায় মন্ত্রণালয় থেকে প্রথম পর্যায়ে ৩৩৮ থানার ওসিকে বদলির তালিকা পাঠানো হয় ইসিতে।
একই সঙ্গে ১১০ জন ইউএনওকে বদলি করতে নির্বাচন কমিশনে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। সেই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এ অনুমোদন পাওয়া গেল।
ইসির অনুমতির পর এখন এসব ওসি ও ইউএনওকে বদলির আদেশ জারি করা হবে।
মন্তব্য