‘চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড’ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১১ সালে। ২০১৪ সালের মধ্যে এ বাইপাস সড়কের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি। ইতিমধ্যে তিন দফায় বেড়েছে ব্যয় ও সময়। গত বছরের শুরুতে সংশোধনীর মাধ্যমে ৮৫৬ কোটি টাকার মূল প্রকল্পটির ব্যয় ছাড়িয়েছে ২ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকা। সবশেষ মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে ডিসেম্বরে।
গত বছরের জানুয়ারিতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘চট্টগ্রাম সিটি আউটার রিং রোড’ প্রকল্পের ব্যয় বাড়ে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। ওই সভায় পাস হওয়া ছয় প্রকল্পের তিনটিই ছিল সংশোধিত প্রকল্প।
সব মিলে বছরের প্রথম এ সভায় অনুমোদিত নতুন প্রকল্প এবং সংশোধিত প্রকল্পে বাড়তি অর্থায়নের মোট ব্যয় ছিল ৯ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে সংশোধনীতে ব্যয় ছিল ৬ হাজার ৩২ কোটি টাকার বেশি।
শুধু বছরের প্রথম একনেক বৈঠকই নয়, বছরজুড়েই নতুন প্রকল্পের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ছিল সংশোধিত প্রকল্প। করোনাসহ নানা কারণে গত অর্থবছরে মাত্র ১৩টি একনেক সভা হয়। এসব সভায় মোট ১৩৩টি প্রকল্প অনুমোদন হয়, যার মধ্যে ৩৭টিই ছিল সংশোধিত প্রকল্প। অর্থাৎ গত বছর অনুমোদন পাওয়া সাড়ে তিনটি প্রকল্পের মধ্যে একটিতে সময় ও ব্যয় বেড়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, ১৩৩টি প্রকল্পের মধ্যে নতুন প্রকল্পের ব্যয় ও সংশোধিত প্রকল্পে বাড়তি অর্থায়নের মোট ব্যয় ছিল এক লাখ ৪১ হাজার ২৫১ কোটি টাকা। এর মধ্যে সংশোধিত প্রকল্পগুলোতে বাড়তি ব্যয় কমপক্ষে ৩৭ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা।
উন্নয়ন প্রকল্প একবার শুরু হলে নানা কারণে তা আর শেষ হতে চায় না। বছরের পর বছর ঝুলে থাকে এসব প্রকল্প। কোনোটিতে জমি অধিগ্রহণে সমস্যা, কোনোটিতে বারবার প্রকল্প পরিচালক বদল, কোথাওবা টেন্ডার জটিলতা থাকে। আবার প্রাথমিক প্রস্তুতি ছাড়া প্রকল্প শুরু করেও তা দীর্ঘদিন ধরে ঝুলতে থাকে।
চলতি বছরেও শুরুতেই একনেকে উঠেছে প্রকল্প সংশোধন। ৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বছরের প্রথম একনেকে ১০টি প্রকল্প অনুমোদন পায়। এর মধ্যে সাতটিই ছিল সংশোধিত। নতুন ও পুরোনো প্রকল্পের বাড়তি অংশ মিলে অনুমোদিত প্রকল্পের মোট ব্যয় ছিল ১১ হাজার ২২১ কোটি টাকা। এর মধ্যে সংশোধিত প্রকল্পগুলোর বাড়তি ব্যয় ৭ হাজার ২৪০ কোটি টাকা।
তবে অনেক সময় সংগত কারণেও প্রকল্প সংশোধনের প্রয়োজন পড়ে। যেমন- কিছু প্রকল্পে করোনার কারণে বিলম্ব হয়েছে। তবে সংশোধিত প্রকল্পের অনেকগুলোই বেশ আগে শুরু হওয়া, যা করোনার আগেই শেষ হওয়ার কথা ছিল।
‘কুষ্টিয়ায় মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন’ শিরোনামে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১২ সালে। ২০১৪ সালে এটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পাঁচবার সময় এবং ব্যয় বাড়ানো হলেও শেষ হয়নি কাজ। ষষ্ঠ দফায় সময় বাড়িয়ে প্রকল্পটির সংশোধনী একনেকে অনুমোদন হয় গত অক্টোবরে।
এভাবে বারবার সংশোধনীতে ২৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্প ৬৮২ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। আর সময় বেড়েছে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। এতে তিন বছরের প্রকল্প গড়াচ্ছে ১২ বছরে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাও কাজে আসছে না
চলতি মেয়াদে ক্ষমতায় এসে যথাসময়ে প্রকল্প শেষ করতে বারবার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একাধিকবার এ নিয়ে নির্দেশনাও দিয়েছেন।
২০২০ সালের একনেকে বিরক্তি প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রকল্প সংশোধন করে সময় ও খরচ বাড়ানো বন্ধ করতে হবে। বারবার সংশোধন, বারবার টাকা বাড়ানো– এ ধরনের ধারা বন্ধ করুন। প্রকল্প যে সময়ে নেবেন, সেই সময়ে শেষ হওয়া উচিত। সময় বাড়িয়ে নিয়ে আসেন, ব্যয়ও আরও বাড়িয়ে নিয়ে আসেন; এটা হতে পারে না।’
তবে ২০২১ সালের প্রথম একনেকে ‘কুষ্টিয়ায় মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন’ প্রকল্পের মেয়াদ ষষ্ঠ দফায় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হলে প্রধানমন্ত্রী সেটি ফেরত পাঠান। প্রকল্পের অনিয়ম খতিয়ে দেখারও নির্দেশ দেন তিনি।
বছরের প্রথম একনেকেও সংশোধন
চলতি বছরেও শুরুতেই একনেকে উঠেছে প্রকল্প সংশোধন। ৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বছরের প্রথম একনেকে ১০টি প্রকল্প অনুমোদন পায়। এর মধ্যে সাতটিই ছিল সংশোধিত। নতুন ও পুরোনো প্রকল্পের বাড়তি অংশ মিলে অনুমোদিত প্রকল্পের মোট ব্যয় ছিল ১১ হাজার ২২১ কোটি টাকা। এর মধ্যে সংশোধিত প্রকল্পগুলোর বাড়তি ব্যয় ৭ হাজার ২৪০ কোটি টাকা।
বিভিন্ন প্রকল্পের ক্ষেত্রে দেখা যায়, প্রথমে প্রকল্পের শুধু সময় বাড়ানো হয় এবং এরপর ব্যয় বাড়িয়ে প্রকল্প সংশোধন করা হয়। বিশেষত শিডিউল রেট, ডিজাইন ও স্পেসিফিকেশন পরিবর্তন, ভূমি অধিগ্রহণ ব্যয় বৃদ্ধি, নতুন আইটেম অন্তর্ভুক্তকরণ বা কর্মপরিধি বৃদ্ধির নামে কৌশলে প্রকল্পগুলো সংশোধন করা হয়।
চলতি বছরের প্রথম একনেকেও প্রকল্পের বারবার সংশোধনী নিয়ে কথা ওঠে। একনেক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘বারবার প্রকল্প সংশোধন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। তবুও নানা সময় প্রকল্পে বারবার সংশোধন হয়।
তবে বিশেষ বিবেচনায় এটা হতে পারে। চলমান কোনো কাজের পরের পর্যায় শুরু করতে দেরি হলে এবং এতে সাধারণ মানুষ উপকারবঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা থাকলে সে ক্ষেত্রে প্রকল্প সংশোধন করে সময় ও কাজ চালিয়ে নেয়া যেতে পারে।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকল্প প্রস্তাব তৈরিতে অদক্ষতা এবং বাস্তবায়ন কাজে ধীরগতির কারণে প্রতি বছরই শতাধিক প্রকল্প মাঝপথে সংশোধন করতে হচ্ছে। এতে একদিকে সময়মতো প্রকল্পের সুফল পাওয়া যায় না; অন্যদিকে দীর্ঘ সময় ধরে প্রকল্পের কাজ চলায় ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। আবার বেশি প্রকল্প হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে অর্থায়নেও সমস্যা হচ্ছে।
অর্থনীতিবিদ জায়েদ বখত নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রকল্পের বাস্তবায়নে দেরি হলে সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যয়ও বাড়ে। সরকারের সম্পদের অপচয় হয়। এটা আমাদের অদক্ষতার কারণেও হয় আবার করোনার মতো নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণেও হয়। তবে অদক্ষতার কারণেই বেশি হয়। এটা বাজেটের ওপর অনেক চাপ তৈরি করে।
‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণেই প্রকল্পে দেরি হয়। জমি অধিগ্রহণ সময়মতো না করা, কারিগরি দুর্বলতা, কিছুদিন কাজ করার পর প্রকল্প পরিচালক বদল হওয়া এর মধ্যে অন্যতম। এসব কারণে কিছু কিছু প্রকল্প বাস্তবায়নে যুগ পেরিয়ে যাচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানে একটি হাইপাওয়ার কমিটি গঠন করা যেতে পারে। যারা আন্তমন্ত্রণালয় সমন্বয় করে যথাসময়ে প্রকল্প শেষ করার দিকটি দেখভাল করবে।’
আরও পড়ুন:রমজানের মধ্যে শসার বাজার চড়া দাম থাকলেও বর্তমানে শসাচাষিরা দাম পাওয়া নিয়ে বেশ বিপাকে পড়েছেন।
এমন দুঃসময়ে শসাচাষিদের পাশে দাঁড়িয়েছে দেশের অন্যতম রিটেইল চেইন সুপারশপ ‘স্বপ্ন’।
সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়, ন্যায্য দাম না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার শসাচাষিরা। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে চার টাকায়। ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না চাষিরা।
এমন সময় সেই শসাচাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ন্যায্যমূল্যে কৃষিপণ্যটি কেনে ‘স্বপ্ন’ কর্তৃপক্ষ। সেই শসা এখন খোলাবাজারের চেয়ে কম দামে স্বপ্ন আউটলেটে পাওয়া যাচ্ছে।
খোলা বাজারে বৃহস্পতিবার ৪০ টাকা কেজিতে শসা বিক্রি করতে দেখা গেলেও স্বপ্ন আউটলেটে তা ১২ টাকা কেজিতে গ্রাহকরা কিনতে পেরেছেন। এরই মধ্যে দিনাজপুরের খানসামার ওই এলাকা থেকে দুই টন এবং ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট এলাকা থেকে ছয় টন শসা কিনেছে স্বপ্ন প্রতিনিধি।
বর্তমানে তাদের উৎপাদিত শসা পৌঁছে গেছে স্বপ্নর আউটলেটে। স্টক থাকা অবধি এ অফার গ্রাহকরা পাবেন।
স্বপ্নর নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির বলেন, ‘আমরা শসাচাষিদের দুর্ভোগের কথা জানতে পেরেছি নিউজের মাধ্যমে। আমরা দিনাজপুর, ময়মনসিংহসহ বেশ কিছু এলাকার কৃষকের দুর্ভোগের কথা জানার পর তাদের কাছ থেকে শসা কিনেছি ন্যায্য মূল্যে।
‘অন্যান্য ব্যবসায়ীদেরও কৃষকদের জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান থাকবে। মধ্যস্বত্বভোগীদের লাভবান না করে কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি সেতুবন্ধের চেষ্টা করে আসছে স্বপ্ন। এ চেষ্টা সবসময় অব্যাহত থাকবে।’
এ প্রসঙ্গে স্বপ্নর হেড অফ পার্চেজ সাজ্জাদুল হক বলেন, “বিভিন্ন গণমাধ্যমে শসাচাষিদের সংকটের খবর দেখার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিই যে, কৃষকদের পাশে আমরা দাঁড়াব। দিনাজপুর, ময়মনসিংহসহ বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে এরই মধ্যে ৮ টন শসা আমরা কিনেছি।
“দুঃসময়ে কষ্টে থাকা অনেক কৃষকদের পাশে ‘স্বপ্ন’ এর আগেও দাঁড়িয়েছে। সামনেও পাশে থাকবে।”
দিনাজপুরের খানসামা এলাকার কৃষক সাকিব হোসেন বলেন, ‘প্রায় এক বিঘা জমিতে শসা চাষ করেছিলাম এবার। শসার বীজ, সারসহ নানা কাজে লাখ টাকা খরচ হয় আমার, কিন্তু ১০ রমজান অবধি কিছু শসা বিক্রি করার পর বাজারে শসার দাম কমে যায়। প্রতি কেজি ১০ টাকা, এরপর পাঁচ টাকা এবং সবশেষে আরও কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়। অনেক শসা নষ্ট হয়ে যায়। অনেক লোকসান হচ্ছিল।’
তিনি আরও বলেন, “আমার এলাকার এক সাংবাদিক নিউজ করার পর এসিআই কোম্পানির ‘স্বপ্ন’ থেকে যোগাযোগ করে আমার অনেকগুলো শসা কিনে নিয়েছেন উনারা। এতে করে লোকসানের অনেক ঘাটতি পূরণ হয়েছে আমার। তাদের অশেষ ধন্যবাদ।”
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়িয়ে রেকর্ড ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের সাড়ে তিন মাসে অষ্টমবারের মতো স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হলো।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৃহস্পতিবার বৈঠক করে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। নতুন নির্ধারিত এই দাম বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী- ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৫ টাকা বেড়ে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বেড়ে ১ লাখ ১৪ হাজার ২০২ টাকা, ১৮ ক্যারেট প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৬৫৬ টাকা বেড়ে ৯৭ হাজার ৮৮৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৩৮৮ টাকা কমে ৭৮ হাজার ৮০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সবশেষ দশ দিন আগে ৮ এপ্রিল বাজুস ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৭৪৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা নির্ধারণ করে। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে স্বর্ণের সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়। ১০ দিনের ব্যবধানে আবারও দাম বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে দেশের স্বর্ণের বাজারে উচ্চ দামের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হলো।
অবশ্য স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের আরও বেশি অর্থ গুনতে হবে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে স্বর্ণের গহনা বিক্রি করা হয়। সেসঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় ন্যূনতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হবে ১ লাখ ২৯ হাজার ১১৯ টাকা।
এদিকে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা নির্ধারণ করা আছে।
আরও পড়ুন:বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
খোলা সয়াবিন তেলের দাম কমার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি।
সয়াবিন তেলের দাম নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘…১৪৯ টাকা যেটা খোলাবাজারে ছিল, সেটাকে দুই টাকা কমিয়ে ১৪৭ টাকা সর্বোচ্চ খোলাবাজারে সয়াবিন তেল বিক্রি হবে।
‘আর আমাদের সয়াবিন তেলের প্রতি লিটার, বোতল যেটা, পেট বোতলে যেটা, যেটার মধ্যে সিল করা থাকে, সেইটা আমাদের নির্ধারিত ছিল ১৬৩ টাকা। সেইখান থেকে বৃদ্ধি করে ১৬৭ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে।’
খোলা সয়াবিন তেলের পাঁচ লিটারের বোতলের দামের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আর খোলাবাজারে সয়াবিন তেল পাঁচ লিটারের বোতল ৮০০ টাকা ছিল। সেটাকে ৮১৮ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে।’
পাম অয়েলের দাম নিয়ে টিটু বলেন, ‘সুপার পাম অয়েল তেল প্রতি লিটার, এটা আগে নির্ধারণ করা ছিল না। এবার আমরা নির্ধারণ করে দিচ্ছি। সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১৩৫ টাকা লিটার।
‘তো এই চারটা পণ্যের দাম, এইটা কিন্তু আমরা নির্ধারণ করলাম না। আমাদের যারা অ্যাসোসিয়েশনের, তাদের রিকমেন্ডেশনে এবং আমাদের ট্যারিফ কমিশনের অনুমোদনক্রমে উনারা উনাদের অ্যাসোসিয়েশন থেকে চিঠি দিয়ে আগামীকাল থেকে এই মূল্য উনাদের মিল গেট থেকে উনারা কার্যকরী করবে।’
আরও পড়ুন:কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্প্রতি জানিয়েছিল যে আর কোনো ব্যাংককে একীভূতকরণের সুযোগ দেয়া হবে না। তবে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে বিদেশি ব্যাংক আলফালাহকে অধিগ্রহণের জন্য ব্যাংক এশিয়াকে অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নতুন মাত্রার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক এশিয়া বিদেশি ব্যাংক আলফালাহকে অধিগ্রহণের পরিকল্পনা করছে। সূত্র: ইউএনবি
করাচিভিত্তিক ব্যাংক আলফালাহ বুধবার (১৭ এপ্রিল) পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জকে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, ব্যাংক আলফালাহ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংক এশিয়া লিমিটেডের বাংলাদেশ পরিচালনা, সম্পদ ও দায় অধিগ্রহণের জন্য প্রাপ্ত বাধ্যবাধকতামুক্ত ইঙ্গিতমূলক প্রস্তাবের ক্ষেত্রে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।
এতে বলা হয়, ব্যাংক আলফালাহ বাংলাদেশের ব্যাংক এশিয়ার জন্য যথাযথ কার্যক্রম শুরুর জন্য স্টেট ব্যাংক অফ পাকিস্তানের অনুমোদন চাইছে।
ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল আর কে হুসেইন বলেন, ‘এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং এটি একীভূতকরণ নিয়ে খুব বেশি আলোচনার অংশ নয়।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে দুই ব্যাংকের নির্বাহীদের সঙ্গে বৈঠকে অধিগ্রহণের বিষয়টি চূড়ান্ত রূপ পাবে বলে।
বিষয়বস্তু অবহিত না করে ওয়ালটনের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থিভাবে ‘রূপান্তর’ শিরোনামের একটি নাটক প্রচার করায় বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান ‘লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট’কে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে ওয়ালটন।
পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সব ধরনের বিজ্ঞাপনী চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিষয়টির জন্য ওয়ালটন গ্রুপ ক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিকট আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে।
ওয়ালটনের পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান ‘লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট’ এর স্বত্বাধিকারী মোহন আহমেদকে মঙ্গলবার ওই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়।
ওয়ালটনের পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট রাইসুল ইসলাম রিয়াদ স্বাক্ষরিত আইনি নোটিশে উল্লেখ করে যা বলা হয়, ‘আপনি লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান এর স্বত্বাধিকারী। আপনার প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে আপনার নির্মিত ছয়টি নাটকে ওয়ালটন ফ্রিজ ব্র্যান্ডিং করতে সম্মত হয়। শর্ত থাকে যে, উক্ত নাটকসমূহে দেশের আইন, নীতি, নৈতিকতা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হয় এরকম কোনো বিষয় অর্ন্তভুক্ত হবে না। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক যে, উক্ত নাটকসমূহের মধ্যে ‘রূপান্তর’ নাটকটিতে এমন কিছু বিষয় অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে, যাতে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে ও মানুষের অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে।’
নোটিশে আরও বলা হয়, ‘ওয়ালটন কর্তৃপক্ষকে নাটকটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে পূর্বে অবহিত না করে রূপান্তর নাটক প্রচার করায় আপনার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হলো এবং সেই সঙ্গে কেন আপনার বিরুদ্ধে ওয়ালটনের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থিভাবে নাটক প্রচারের জন্য আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা নোটিশ প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে জানানোর জন্য বলা হলো।’
এর আগে ফেসবুক-ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম থেকে ‘রূপান্তর’ নাটকটি প্রত্যাহারের জন্য বিজ্ঞাপনী সংস্থাকে নির্দেশ দেয় ওয়ালটন। তাৎক্ষণিকভাবে ফেসবুক-ইউটিউবসহ সব মাধ্যম থেকে নাটকটি প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
এরপর বিজ্ঞাপনী সংস্থার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে ওয়ালটন গ্রুপের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থি নাটকে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কেন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে বিজ্ঞাপনী সংস্থা ‘লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট’কে লিগাল নোটিশ দেয় ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ।
আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ওয়ালটনের ভাষ্য, দেশের মানুষের ধর্মীয় ও সামাজিক অনুভূতিতে আঘাত করে এমন কোনো কর্মকাণ্ড কখনও তারা সমর্থন করে না এবং এসব কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকে না। অনাকাঙ্ক্ষিত এই বিষয়টির জন্য ওয়ালটন গ্রুপ মর্মাহত এবং সম্মানিত ক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিকট আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন:রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন রূপালী ব্যাংক পিএলসির মহাব্যবস্থাপক মো. ফয়েজ আলম। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকার কর্তৃক পদোন্নতিপ্রাপ্ত হয়ে তিনিসহ রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন ব্যাংকের আট জন মহাব্যবস্থাপককে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পদোন্নতি দেয়া হয়।
ডিএমডি হিসেবে পদোন্নতি হওয়ার আগে তিনি রূপালী ব্যাংক পিএলসিতে মহাব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
মো. ফয়েজ আলম ১৯৯৮ সালে বিআরসির মাধ্যমে সিনিয়র অফিসার পদে রূপালী ব্যাংকে যোগদান করেন। কর্মজীবনে ব্যাংকের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শাখার শাখা ব্যবস্থাপক, জোনাল অফিস এবং প্রধান কার্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। পেশাগত প্রয়োজনে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপ ও আরব অঞ্চলের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণসহ দেশ-বিদেশে ব্যাংকিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও সেমিনারে অংশগ্রহণ করেছেন।
ফয়েজ আলমের জন্ম ১৯৬৮ সালে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার যোগীরনগুয়া গ্রামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে বিএ অনার্সসহ এমএ পাশ করার পর এমফিল ডিগ্রিও অর্জন করেন খ্যাতিমান এই ব্যাংকার।
পেশাগত জীবনের বাইরে ফয়েজ আলম একজন সফল লেখকও। বাংলাদেশে তিনি অগ্রণী উত্তর উপনিবেশী তাত্ত্বিক, প্রাবন্ধিক ও কবি হিসেবে বিশেষ খ্যাতিমান। এডওয়ার্ড সাঈদের বিখ্যাত গ্রন্থ অরিয়েন্টালিজম-এর অনুবাদক হিসেবেও তার আলাদা খ্যাতি আছে। তার পনেরটির বেশি গ্রন্থ এ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে।
ভোজ্যতেলের ওপর শুল্ক অব্যাহতির সময়সীমা শেষ হয়েছে সোমবার (১৫ এপ্রিল)। এ অবস্থায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিভিওআরভিএমএফএ) সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে।
বিভিওআরভিএমএফএ’র নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম মোল্লার পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, কাঁচামাল আমদানি ও ভোজ্যপণ্য উৎপাদনে কর অব্যাহতির মেয়াদ ১৫ এপ্রিল শেষ হচ্ছে বিধায় পরদিন ১৬ এপ্রিল থেকে ভ্যাট অব্যাহতির আগের নির্ধারিত মূল্যে পণ্য সরবরাহ করা হবে।
নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের বোতল ১৭৩ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতল ৮৪৫ টাকা ও এক লিটার পাম তেল ১৩২ টাকায় বিক্রি করা হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গত ফেব্রুয়ারিতে পরিশোধিত ও অপরিশোধিত (অপরিশোধিত) সয়াবিন ও পাম তেলের মূল্য সংযোজন কর ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করে।
এদিকে মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। ভোজ্যতেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজার দরের সঙ্গে সমন্বয় করা যেতে পারে, তবে সময় লাগবে।
‘ভোজ্যতেলের নতুন চালান আমদানির ক্ষেত্রে দাম বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য