করোনারভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কার মধ্যে চলাচলে বিধিনিষেধে পুঁজিবাজারে লেনদেন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই বলে জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
গত বছরের এপ্রিলে লকডাউন ও জুলাইয়ে শাটডাউনের মধ্যে ব্যাংকের সময়সীমার সঙ্গে সমন্বয় করে যেভাবে লেনদেন চলেছিল, সেভাবেই এবারও লেনদেন চলবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘সংক্রমণ যতই বাড়ুক পুঁজিবাজারের লেনদেন বন্ধ হবে না, যদি ব্যাংকের লেনদেন চালু থাকে।’
লকডাউন ও শাটডাউনের সময় লেনদেন চালু থাকার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, গত বছরে আমরা লেনদেন চালু রেখেছিলাম। এবারও ব্যাংক যেভাবে চলবে পুঁজিবাজার সেভাবেই চলবে। লেনদেন বন্ধ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।’
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণের পর সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলে ৬৬ দিন পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ থাকে। তবে চালু থাকে ব্যাংক।
২০২১ সালের ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউনের ঘোষণা আসার পর বিএসইসি জানায়, ব্যাংক চললে পুঁজিবাজারও চলবে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করার পর লকাউনের আগে দুই কর্মদিবস বড় দরপতন হয়। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক যখন জানায়, সীমিত পরিসরে ব্যাংক চলবে, বিএসইসিও তখন সময় কমিয়ে লেনদেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
শুরুতে সে সময় ব্যাংক চালু থাকে আড়াই ঘণ্টা, পুঁজিবাজার চালু থাকে দুই ঘণ্টা। পরে কিছুদিন পর ব্যাংকে লেনদেনের সময় বাড়ে, সময় বাড়ে পুঁজিবাজারেও।
এই অভিজ্ঞতার মধ্যেও ১ জুলাই থেকে শাটডাউন ঘোষণার পর আবার লেনদেন বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় পুঁজিবাজারে দরপতন হতে থাকে। সে সময় বাংলাদেশ ব্যাংক শুরুতে ব্যাংক বন্ধ থাকবে বলে আদেশও জারি করে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই সে আদেশ প্রত্যাহার করা হয়। ফলে বিএসইসি পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ থাকবে-এমন সিদ্ধান্তও কিছুক্ষণের মধ্যেই পাল্টায়।
গত এক সপ্তাহ ধরে করোনার সংক্রমণ, পরীক্ষার বিপরীতে সংক্রমণের হার যখন বেড়ে যাচ্ছিল, সে সময় আবার বিধিনিষেধের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। তবে এবার আগের দুই বারের মতো পুঁজিবাজারে নেতিবাচক পরিস্থিতি পড়েনি।
রোববার এক দিনে ৫৪ পয়েন্ট সূচকের পতনের পর ওমিক্রন বিধিনিষেধের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হলেও পরের দিনই সূচক বেড়ে যায় ৬১ পয়েন্ট। ফলে এটা বোঝা যায় টানা ৬ কর্মদিবস সূচক বাড়ার পর সেটা সাধারণ দর সংশোধন ছিল মাত্র।
এই সোমবার সন্ধ্যাতেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করা হয়। জানানো হয়, এই বিধিনিষেধ শুরু হবে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে।
বিধিনিষেধে ব্যাংকের লেনদেন কীভাবে চলবে-সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এখনও সিদ্ধান্ত জানায়নি। ফলে বিএসইসির পক্ষেও এখনই লেনদেনের নতুন সময় নির্ধারণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ তুলেছেন সচেতনতার প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারির নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রম থেকে বিনিয়োগকারীদের রক্ষা করতে হলে প্রথমে তাদের (বিনিয়োগকারীদের) সচেতন হতে হবে। সংক্রামন বাড়লে ট্রেডিং হাউজ বা ব্রোকারেজ হাউজে না যাওয়ই ভালো হবে।’
লকডাউন ও শাটডাউনের সময় ব্রোকারেজ হাউজে না গিয়ে ঘরে বসে অনলাইনে বা ফোনেই শেয়ার কেনাবেচার অর্ডার দিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
তবে সংক্ষিপ্ত সময়ে বেশি অর্ডারের লোড নিতে গিয়ে প্রায়ই ট্রেডিং সিস্টেমে গোলযোগ দেখা দেয়, নানা সময় বন্ধ থাকে লেনদেন।
বিএসইসি কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ আশ্বাস দিয়েছেন, এবার আর সেই সমস্যা হবে না। তিনি বলেন, ‘আমাদের অনলাইন ট্রেডিং সিস্টেম আগের তুলনায় আপডেট করা হয়েছে। ডিএসই নতুন এমডি যোগদান করার পর এটি নিয়ে কাজ চলছে।’
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রধান সূচকের উত্থান হলেও সার্বিক সূচক কমেছে চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১ ও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১, কমেছে ৬৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১৩ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ৭০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০, কমেছে ১৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৭৩ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:টানা দুই দিন উত্থানের পর তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও ঢাকার পুঁজিবাজারে বইছে সুবাতাস।
সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৭ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট করে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগেরই দাম বেড়েছে। ১০৯ কোম্পানির দরপতন এবং ৫৩ কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৩০ কোম্পানির।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও বইছে চনমনে হাওয়া। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১০২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৭ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭, কমেছে ৫১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে সিএসইতে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবারের লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে; বেড়েছে সবকটি সূচক।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে পতন দিয়ে শুরু হয়েছে লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে এবং বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় দাম বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের। দরবৃদ্ধির ২৪৫ কোম্পানির বিপরীতে দর কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দিনের শুরুতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৯০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট। সূচক কমলেও বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ১০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৫, কমেছে ২৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম দুই ঘণ্টায় লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গত সপ্তাহের উত্থানের ধারা ধরে রেখে এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে থাকলেও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৯, কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর ৩০ মিনিটে ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি টাকা। ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২২, কমেছে ৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম আধা ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৩০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:ঢাকার পুঁজিবাজারে গত এক সপ্তাহের লেনদেনে বেড়েছে সূচক ও মূলধন। তবে পুঁজিবাজার ইতিবাচক দিকে মোড় নিলেও কমেনি মন্দ কোম্পানির শেয়ারের দৌরাত্ম্য।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাপ্তাহিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত পাঁচ কার্যদিবসে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় থাকা দশ কোম্পানির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানি মাত্র দুটি।
বাকি আট কোম্পানির মধ্যে মধ্যম মানের ‘বি’ ক্যাটাগরির সংখ্যা তিন এবং লভ্যাংশ না দেওয়া এমন মন্দ কোম্পানির সংখ্যা পাঁচ।
সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে শীর্ষে উঠে এসেছে নিউ লাইন ক্লোথিংস লিমিটেড। কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের সর্বশেষ লভ্যাংশ দিয়েছে ২০২১ সালে।
কোম্পানিটির সর্বশেষ বার্ষিক সভা হয়েছে ২০২২ সালে। এরপর থেকে বিনিয়োগকারীদের কোনো ধরনের লভ্যাংশ না দিয়ে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে আছে কোম্পানিটি।
লেনদেনে শীর্ষ কোম্পানিগুলোর মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে থাকা অ্যাপোলো ইস্পাত কমপ্লেক্স লিমিটেড কোম্পানিটিও ‘জেড’ ক্যাটাগরির। কোম্পানিটি ২০১৬ সালের পর আর কোনো লভ্যাংশ না দিয়েও হয়ে উঠেছে বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, ‘তারল্য সংকটের মধ্যে সূচকের উত্থান হওয়ায় দ্রুত মুনাফা পাওয়ার আশায় অনেক বিনিয়োগকারী খারাপ শেয়ারে অর্থলগ্নি করছেন। এতে করে মন্দ কোম্পানির শেয়ার ফুলেফেঁপে উঠলেও ঝুঁকি বাড়ছে পুঁজিবাজারে।’
তিনি বলেন, ‘বাজারে ভুল তথ্য ছড়িয়ে সুবিধাভোগী কিছু কোম্পানি এসব মন্দ কোম্পানিকে টার্গেট করেই অর্থ লোপাটের পরিকল্পনা করছে। শুধু কোম্পানিই নয়, বাজার অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে অনেক ব্রোকারেজ হাউসও জড়াচ্ছে কারসাজিতে।’
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি প্রতারণামূলক সফটওয়্যার ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীদের প্রায় ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে চার ব্রোকারেজ হাউসের বিরুদ্ধে।
সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে পিছিয়ে আছে ব্যাংক খাত। পাঁচ কর্মদিবসে এ খাতে শেয়ারের দাম কমেছে ২৩ দশমিক ৭২ শতাংশ। গত সপ্তাহে এ খাতের সূচক ৬৪৮ পয়েন্ট থেকে কমে ৪৯৪ পয়েন্টে নেমে এসেছে।
ব্যাংকের পাশাপাশি দাম কমেছে বিমা খাতেও। পাঁচ কার্যদিবসে বিমা খাতে শেয়ারের দাম কমেছে ১৬ দশমিক ৬২ শতাংশ।
ব্যাংক-বিমা পিছিয়ে পড়লেও ভালো অবস্থানে রয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার। এ খাতে শেয়ারের দাম বেড়েছে ৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ। এ ছাড়া জ্বালানি খাতে শেয়ারের দাম বেড়েছে ৩৫ শতাংশের ওপরে।
সর্বোপরি পাঁচ কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ২২ পয়েন্ট, ব্লু-চিপ ডিএস-৩০ বেড়েছে ৬ এবং শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ৭ পয়েন্ট।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে ১৮৩ কোম্পানির দাম বেড়েছে, কমেছে ১৬৬টির দাম এবং অপরিবর্তিত আছে ৪৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে সপ্তাহের ব্যবধানে গড় লেনদেন ১ শতাংশের মতো কমলেও মোট বাজার মূলধন বেড়েছে ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
প্রথাগত লেনদেনের বাইরেও সপ্তাহজুড়ে ব্লক মার্কেটে ১০৬ কোটি টাকার শেয়ার বেচাকেনা হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শেয়ার বিক্রি করে এসিআই লিমিটেড। কোম্পানিটি পাঁচ দিনে ব্লক মার্কেটে ২৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করে।
সপ্তাহব্যাপী লেনদেনে সবচেয়ে বেশি রিটার্ন আসে সিরামিক খাত থেকে। রিটার্নের হিসাবে তলানিতে আছে আর্থিক খাত, জীবনবিমা ও সাধারণ বিমা। সর্বোপরি মার্কেট রিটার্ন বেড়েছে দশমিক ৫০ শতাংশ।
গত সপ্তাহে প্রথমবারের মতো পুঁজিবাজার সংস্কারে গঠিত টাস্কফোর্স বিএসইসির কাছে নিজেদের প্রাথমিক দুটি সুপারিশ জমা দেয়।
মার্জিন ঋণ ও মিউচুয়াল ফান্ড সংক্রান্ত এসব সুপারিশ আমলে নেওয়া হলে শেয়ারবাজারের অস্থিরতা অনেকটাই কমে আসবে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে। বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বাড়ে ১০ পয়েন্ট।
শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএস ৩ এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ বাড়ে ৪ পয়েন্ট।
লেনদেনের শুরুতেই দাম বাড়ে ১৭৭ কোম্পানির, কমে ১৩৩টির এবং অপরিবর্তিত থাকে ৭৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৭০ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
লেনদেনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক বাড়ে ২৮ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ১১০ কোম্পানির মধ্যে দাম বাড়ে ৭০, কমে ২২ এবং অপরিবর্তিত থাকে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম। মোট শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন ছাড়ায় ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য