করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের মুখে ভারত। এ অবস্থায় বাংলাদেশ থেকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া দেশটি ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। সীমান্ত খোলা রেখেই বাংলাদেশিদের জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ভারত ভ্রমণে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকায় দেশটির হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।
রোববার রাজধানীর মহাখালীতে শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে করোনা টিকার বুস্টার ডোজ গ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের কোভিড-১৯ টিকার বুস্টার ডোজ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, ‘আমরা আপাতত ভিসা দেব এবং সীমান্ত খোলা রাখব। তবে অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়ানো গেলে সবচেয়ে ভালো হবে।
‘১১ জানুয়ারি থেকে ভারতীয় নাগরিকসহ বিদেশ থেকে আসা সব ভ্রমণকারীকে সাত দিন কোয়ারেন্টিনের আওতায় আনা হচ্ছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন অনুষ্ঠানে বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাকে জানিয়েছেন যে ভারতে দিনে লাখের ওপর আক্রান্ত হচ্ছে। বিদেশে যাওয়া-আসার বিষয়ে আমরা সবাইকে নিরুৎসাহিত করছি। আমাদের জনসাধারণকে বাঁচাতে, বিশেষ করে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ভ্রমণে স্বাস্থ্যনিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রোববার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৬৩২ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে ১৩ শতাংশ বেশি। দৈনিক নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার বেড়ে ১০ দশমিক ২১ শতাংশে পৌঁছেছে।
মহামারির দুই বছরে ভারতে শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ৫৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। গত এক দিনে আরও ৩২৭ জন মারা যাওয়ায় দেশটিতে কোভিডে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৮৩ হাজার ৭৯০ জন।
আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত দেশের বৃহত্তম রেলওয়ে সেতু ‘যমুনা রেলসেতু’।
এটি উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে যমুনার বুকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলবে।
রাজধানী ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হলো এটি উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে। একই সঙ্গে দুই অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য বদলের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হলো।
যমুনা রেলসেতুর পূর্ব প্রান্তে ইব্রাহিমাবাদ রেল স্টেশনে মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি ও জাইকার সাউথ এশিয়া ডিপার্টমেন্টের ডিরেক্টর জেনারেল ইতো তেরুকি।
এর আগে বিষয়টি নিশ্চিত করেন যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান।
তিনি জানান, মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর থেকে সেতুর আপ ও ডাউন দুটি লেন দিয়ে ব্রডগেজ ও মিটারগেজ সব ট্রেন পূর্ণমাত্রায় চলাচল করবে।
প্রমত্তা যমুনা নদীর ওপর নির্মিত যমুনা সেতু ১৯৯৮ সালে চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগের পাশাপাশি রেল যোগাযোগও স্থাপিত হয়। চালু হওয়ার প্রায় ১০ বছর পর ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। সেই থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হচ্ছিল।
বিশাল এ সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে ২০২০ সালের ৩ মার্চ যমুনা বহুমুখী সেতুর ৩০০ মিটার উজানে আলাদা রেলওয়ে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং ওই বছরের ২৯ নভেম্বর রেলসেতুটি নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন করা হয়। এ রেলসেতুর প্রথম পিলার নির্মাণে ২০২১ সালের মার্চে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়।
দেশের দীর্ঘতম এ রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের প্রথম নির্মাণ ব্যয় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা নির্ধারিত হলেও পরে তা ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়। এর মধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ অর্থায়ন করেছে দেশি উৎস থেকে এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
দেশের সর্ববৃহৎ এ রেলওয়ে সেতুর নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করেছে জাপানি কোম্পানি ওটিজি ও আইএইচআই জয়েন্টভেঞ্চার। জাপানি ৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিশাল এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে।
জাপান, ভিয়েতনাম, নেপাল, অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন ও বাংলাদেশের ৭ হাজারেরও বেশি কর্মীর ৪ বছরের পরিশ্রমে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয়।
সেতুটিতে ৫০টি পিলার, প্রতি দুই পিলারের মাঝে একটি করে মোট ৪৯টি স্প্যান রয়েছে। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার হলেও দুই দিকে ৭ দশমিক ৬৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে অ্যাপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট এবং লুপ, সাইডিংসহ মোট ৩০ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী আন্তনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেন পারাপারের মধ্য দিয়ে দেশের বৃহত্তম এই রেলসেতু দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ওই দিন সাধারণ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ৫০ কিলোমিটার গতিতে ৬ মিনিটে ট্রেন সেতু পার হলেও আজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর থেকে সেতুর ওপর দিয়ে উভয় লেনে ট্রেন চলবে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে।
যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী তানভীরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সমান্তরাল ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের এ সেতুর প্রতিটি স্প্যানের ওপর জাপানিদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রেললাইন বসানো হয়েছে। এর ফলে সেতুর ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করতে পারবে।
যমুনা রেলসেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আগের রেলসেতুতে লোডের সীমাবদ্ধতা ছিল। ৪৩ দশমিক ৭ কিলো নিউটন পার মিটারের কম লোডের ট্রেন চলতে পারত। সে ক্ষেত্রে শুধু মিটারগেজ ট্রেনে পণ্য সরবরাহ করা যেত।
‘আমাদের এ অঞ্চলের ব্রডগেজের চাহিদা বেশি। ইন্ডিয়া থেকে প্রচুর মালামাল আমদানি করা হয়। রেল যোগাযোগ চালু হলে ব্যবসায়ীরা সমুদ্রপথে মালামাল আমদানি না করে রেলপথেই করতে পারবেন। শুধু তাই নয়, সেতুটি দিয়ে এখন সব ধরনের মালবাহী ট্রেন চলাচলও করতে পারবে নির্বিঘ্নে। তবে ডাবল ইস্ট্র্যাক যাকে বলা হয়, অর্থ্যাৎ দুই ট্রেন একই সঙ্গে চলতে পারবে না।’
আরও পড়ুন:আগামী রবিবারের মধ্যে বকেয়া বেতন পরিশোধের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ রেলওয়ের অস্থায়ী (টিএলআর) শ্রমিকরা তাদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন।
রাজধানীর রেলভবনে সোমবার টিএলআর কর্মচারীদের পক্ষ থেকে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
এর আগে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফাহিমুল ইসলাম আন্দোলনরত টিএলআর শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ২৩ মার্চের মধ্যে পরিশোধের আশ্বাস দেন।
সাংবাদিকদের ব্রিফকালে তিনি বলেন, ইন্টিগ্রেটিড বাজেট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিং সিস্টেম (আইবাস) সংক্রান্ত জটিলতার কারণে রেলওয়ের টিএলআর শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধে সমস্যা ছিল। সে সমস্যা সমাধানে অর্থ বিভাগ ও মন্ত্রণালয় পর্যায়ে অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আশা করা যাচ্ছে, আগামী রবিবারের মধ্যে টিএলআর শ্রমিকদের বকেয়া বেতন তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে।’
এপ্রিল থেকে তাদের বেতন প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে পরিশোধ করা সম্ভব হবে বলেও জানান সচিব ফাহিমুল।
তার এ আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে টিএলআর শ্রমিকরা তাদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। তবে রবিবারের মধ্যে বকেয়া বেতন পরিশোধ করা না হলে তারা পুনরায় আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে জানান।
ব্রিফিংকালে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আফজাল হোসেনসহ রেলপথ মন্ত্রণালয় ও রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং টিএলআর শ্রমিকদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টা মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্বরাষ্ট্রসচিব নাসিমুল গনি এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বক্তব্য দেন।
মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ এবং রাজশাহীর পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম।
সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় হওয়া মামলা ৩০ দিনের মধ্যে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরে হাইকোর্টের রায় বহাল রয়েছে।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে তৎকালীন সময়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিলটি রাষ্ট্রপক্ষ সোমবার প্রত্যাহারের আবেদন করে।
আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বিভাগ লিভ টু আপিলটি খারিজের আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ। রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আবদুল কাইয়ুম, ব্যারিস্টার ওমর ফারুক ও ব্যারিস্টার কামারুন মাহমুদ দীপা।
আজকের এ আদেশের ফলে সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলা ৩০ দিনের মধ্যে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করে বিচারে বাধা রইল না বলে জানান ব্যারিস্টার আবদুল কাইয়ুম।
প্রেক্ষাপট
এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর স্বামীকে আটকে রেখে নারীকে (২০) ধর্ষণের ঘটনায় ওই নারীর স্বামী বাদী হয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং দুজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন।
ঘটনার পর আসামিরা পালিয়ে যান। তবে তিন দিনের মধ্যে ছয় আসামি ও সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও র্যাব।
আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে ঘটনার দায় স্বীকার করেন। তাদের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষায় আটজন আসামির মধ্যে ছয়জনের ডিএনএর মিল পাওয়া যায়। ২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পুলিশ।
সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি অপহরণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ ও দলবদ্ধ ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অভিযোগ গঠন করেন।
একই আদালতে ২০২২ সালের ১১ মে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় করা চাঁদাবাজি ও ছিনতাই মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়।
একপর্যায়ে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এ মামলার বিচার চেয়ে বাদী হাইকোর্টে রিট করেন। সে রিটের রুলের শুনানি শেষে ২০২২ সালের ১৫ ডিসেম্বর এক হাইকোর্ট বেঞ্চ ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলা ৩০ দিনের মধ্যে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের রায় দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
আরও পড়ুন:চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের (ডিএফপি) নিবন্ধিত তালিকা থেকে ২০১৩ সালে সাপ্তাহিক ‘একতা’ পত্রিকার নাম বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত স্থগিত করে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে জারি করা রুল শুনানি চলাকালে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের এবং বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ রবিবার এ আদেশ দেন।
এ আদেশের ফলে কয়েক দশকের পুরোনো সাপ্তাহিকটি প্রকাশে আর কোনো আইনি বাধা থাকল না।
রিটকারীর পক্ষে আইনজীবী হাসান তারিক চৌধুরী আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান।
তিনি বলেন, “২০১৩ সালে ডিএফপির তালিকাভুক্ত গণমাধ্যমের তালিকা থেকে সাপ্তাহিক ‘একতা’ পত্রিকার নাম বাদ দেওয়া হয়। মূলত সমালোচনা সহ্য করতে না পেরে অন্যায়ভাবে ওই সিদ্ধান্ত নেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।”
আইনজীবী আরও বলেন, ‘গত ১৭ নভেম্বর পত্রিকাটির ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মোসলেম উদ্দিন ওই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেন। রুলে ডিএফপির ওই সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
‘রুল শুনানি চলাকালে আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই স্থগিতাদেশ জারি করেছেন। এর ফলে সাপ্তাহিক একতা প্রকাশে বাধা কাটল।’
আরও পড়ুন:আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনযাত্রায় যাত্রী হয়রানি ও প্রতারণা এড়াতে বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত অ্যাপ ব্যবহার করে অথবা সরাসরি কাউন্টার থেকে যাত্রীদের টিকিট কেনার পরামর্শ দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
গত ১৪ মার্চ থেকে ঈদযাত্রার ট্রেনগুলোর টিকিট বিক্রি শুরু হয়।
বিপুল চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু অসাধু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান টিকিট কালোবাজারি করতে পারে। ক্ষেত্রবিশেষে বিভিন্ন আইডি থেকে কেনা টিকিট বেআইনিভাবে বিভিন্ন মাধ্যমে বিক্রির চেষ্টা করতে পারে। এতে যাত্রী সাধারণের হয়রানি ও প্রতারণার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত অ্যাপ (রেল সেবা) ব্যবহার করে কিংবা সরাসরি কাউন্টার থেকে টিকিট কেনার পরামর্শ দিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ে।
ঈদযাত্রায় (২৪ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত) একটি আইডি থেকে সর্বোচ্চ একবার চারটি টিকেট কেনা যাবে। এ ক্ষেত্রে আইডিধারী ব্যক্তির সহযাত্রীদের নামও ইনপুট দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। অনুরূপভাবে ফেরত যাত্রার ক্ষেত্রেও (৩ এপ্রিল থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত) একটি আইডি থেকে সর্বোচ্চ একবার চারটি টিকিট কেনা যাবে।
ঈদযাত্রার শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে। বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত অ্যাপ (রেল সেবা) এবং নির্ধারিত কাউন্টার ব্যতীত অন্য কোথাও ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে না।
কোনো যাত্রী বাংলাদেশ রেলওয়ের নির্ধারিত অ্যাপ (রেল সেবা) এবং নির্ধারিত কাউন্টার ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা স্থান থেকে টিকিট কিনলে তিনি নিশ্চিতভাবে প্রতারিত হবেন।
আরও পড়ুন:জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে উদারতা দেখিয়েছে, তা সত্যিই অসাধারণ।
রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে শনিবার সন্ধ্যায় জাতিসংঘপ্রধানের সম্মানে আয়োজিত প্রধান উপদেষ্টার ইফতার পার্টিতে তিনি এ কথা বলেন।
কক্সবাজার এবং এর আশেপাশের এলাকায় সমাজ, অর্থনীতি ও পরিবেশের ওপর নাটকীয় প্রভাব সত্ত্বেও ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। এ অসাধারণ উদারতার জন্য গুতেরেস বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত বিশ্বজুড়ে অনেক সীমান্তই বন্ধ। আপনারা যে অসাধারণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তা অনুসরণ করা উচিত।’
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গারা যে আতিথেয়তার সুবিধা পাচ্ছেন, তাদের জীবনে এর কোনো বিকল্প ছিল না।
বাংলাদেশের সংস্কার উদ্যোগের প্রতি পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করে গুতেরেস বলেন, ‘এটি দেশটিকে বিশ্বের অন্যতম নিখুঁত গণতন্ত্রে পরিণত করতে সাহায্য করবে।’
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভুয়া তথ্য মোকাবিলায় জাতিসংঘের সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের আশীর্বাদ আমাদের প্রয়োজন। বিশেষ করে একটি বিষয় মোকাবিলা করতে আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। তা হলো ভুয়া তথ্য, যা আমাদের হত্যা করছে।’
জাতিসংঘপ্রধানের বাংলাদেশ সফর সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এ সফর জাতির জন্য আনন্দ বয়ে এনেছে। আমরা রমজানের মাঝামাঝি সময় পার করছি।
‘কিন্তু আপনার সফরের কারণে এবার ঈদের আনন্দ আগেই বিরাজ করছে। আপনি আপনার সফর দিয়ে আমাদের ঈদ আনন্দের সূচনা করেছেন।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য