মাদারীপুর জেলাসহ পাশের গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ও শরীয়তপুরের নড়িয়া এলাকার ১৫৭ যুবক লিবিয়ার একটি জেলখানায় বন্দি জীবনযাপন করছেন। দালালের হাতে লাখ লাখ টাকা দিয়ে সর্বস্বান্ত এখন তাদের পরিবার। টাকা গেলেও ফিরে পেতে চান প্রিয়জন ও স্বজনদের।
অবৈধ পথে বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা সম্প্রতি বেড়ে গেছে। মাদারীপুর জেলাজুড়ে বেড়েছে দালালদের দৌরাত্ম্য। তাদের খপ্পরে পড়ে শুধু অর্থ নয়, প্রাণও দিতে হচ্ছে অনেক যুবককে।
ভুক্তভোগীদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রথমে চক্রের সদস্যরা ইতালিতে উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখায়। নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা নিয়ে আগ্রহী যুবকদের লিবিয়ায় পাঠিয়ে সেখানে তুলে দেয়া হয় সংঘবদ্ধ মাফিয়াদের হাতে। এরপর তাদের নির্যাতনের ভিডিও পরিবারের কাছে পাঠিয়ে আদায় করা হয় লাখ লাখ টাকা। পরিবার মুক্তিপণ দিতে ব্যর্থ হলে জীবন দিতে হয় চক্রের হাতে।
যারা টাকা দেয়, দালালরা তাদের ছাড়িয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে নৌকা বা ট্রলারে তুলে দেয়। নৌকাডুবিতে অনেকের সলিলসমাধি হচ্ছে সাগরে। ভাগ্যক্রমে কেউ কেউ ইতালির তীরে পৌঁছালেও বেশির ভাগই হয় লিবিয়ার কোস্টগার্ডের হাতে ধরা পড়ে জেলখানায় বন্দি হয়, নতুবা নৌকাডুবিতে প্রাণ দেয়।
যারা কারারুদ্ধ হয়, তাদের ছাড়িয়ে আনার আশ্বাস দিয়ে দালালরা পরিবারের কাছ থেকে আরেক দফা অর্থ হাতিয়ে নেয়। এভাবেই দালালচক্রের ফাঁদে পড়ে ভিটেমাটি, সোনাদানা হারিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে নিরীহ পরিবারগুলো।
প্রায় এক বছর আগে লিবিয়া হয়ে ইতালির উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয় মাদারীপুরসহ গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ও শরীয়তপুরের নড়িয়ার দুই শতাধিক যুবক। স্থানীয় বিভিন্ন দালালের মাধ্যমে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে তারা প্রথমে লিবিয়ায় পৌঁছায়।
এরপর তাদের তুলে দেওয়া হয় লিবিয়ায় থাকা অন্য দালালদের হাতে। সেখানে শুরু হয় নির্যাতন। তাদের নৌকায় (গেম) করে ইতালিতে পাঠানোর কথা বলে পারিবারের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয় আরও ৪-৫ লাখ টাকা। তারপর দালালরা ভুক্তভোগীদের নৌকায় তুলে দেয়। কিছু দূর যাওয়ার পর লিবিয়ার মাফিয়াদের দিয়ে আটক করানো হয় তাদের।
পরে ছাড়ানোর নাম করে আবার ৪-৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয় দেশে পরিবার-পরিজনের কাছ থেকে। সন্তান বা স্বজনকে বাঁচাতে এভাবে তিন দফা দালালদের হাতে লাখ লাখ টাকা তুলে দিতে বাধ্য হয় প্রতিটি পরিবার।
সর্বশেষ তিন মাস আগে নৌপথে ইতালিতে পাড়ি দেওয়ার পথে কোস্টগার্ডের কাছে ধরা পড়ে যায় দুই শতাধিক যুবক। পরে তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় লিবিয়ার ‘আল-জাহারা খামছাখামছিল ৫৫’ নামক কারাগারে।
এসব যুবক এখন জেলখানায় অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তাদের ছাড়িয়ে আনার জন্য লিবিয়ার স্থানীয় দালালদের টাকা দিয়েও প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্বান্ত এখন পরিবারগুলো। দালালদের খপ্পরে পড়ে প্রতিটি পরিবারকে ইতিমধ্যে গুনতে হয়েছে প্রায় ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা।
কোনো উপায় না থাকায় স্বজনদের দেশে ফিরিয়ে আনার আকুতি জানিয়ে ভুক্তভোগী ১৫৭ পরিবার মাদারীপুর প্রেস ক্লাব ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কয়েক দফা মানববন্ধন করেছে। কারারুদ্ধদের মধ্যে ১২০ জন মাদারীপুর জেলার। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং মাদারীপুর জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।
পরিবারগুলোর অভিযোগ, এ যুবকদের ইতালিতে নেওয়ার জন্য লিবিয়ায় অবস্থানরত দালাল চক্রের মূলহোতা সোহেল নামের এক ব্যক্তি তাদের থেকে টাকা নেন। পরে ভুক্তভোগীরা ধরা পড়লে তাদের ছাড়ানোর জন্য সোহেল পরিবারের কাছ থেকে আবার টাকা নেন। কয়েক দফায় তিনি প্রায় ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
সোহেলের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার নগরপুর উপজেলার কনোরা এলাকায়। সোহেলের সহযোগী হিসেবে কনোরা ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আফজাল হোসেন টাকা সংগ্রহ করেন বলে জানা যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মাদারীপুরসহ পাশের জেলাগুলোয় এখনও সক্রিয় বেশ কয়েকটি দালাল চক্র। এলাকার চিহ্নিত মানব পাচারকারী দালালদের মধ্যে রয়েছেন মাদারীপুর সদর উপজেলার চরমুগরিয়ার কুমারের ট্যাক এলাকার আম্বিয়া বেগম, সদর মিঠাপুর এলাকার আলমগীর মুন্সী, সদর পেয়ারপুর ইউনিয়নের বরাইল বাড়ি এলাকার সবুজ মিঞা, রাজৈর মহিষমারি এলাকার সজীব, রাজৈর বলগ্রাম এলাকার মাসুদ ও মিরাজ মাদবর, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার রফিক মাতবর। এ রকম শত শত দালাল নিয়ে গড়ে উঠেছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। তবে এসব বন্ধে প্রশাসনের ব্যর্থতাকে দায়ী করছেন সাধারণ মানুষ।
এদিকে ভুক্তভোগী পরিবারের চাপে পড়ে ঘর ছেড়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। মুঠোফোনে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা বিষয়টি অস্বীকার করেন। অভিযুক্তদের পরিবারের সঙ্গে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা কিছুই জানেন বলে দাবি করেন। এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়ে অনেকে ঘরে তালা দিয়ে উধাও হয়েছেন।
মাদারীপুর সদর চরমুগিরা কুমারেরট্যাক এলাকায় মানব পাচারের সঙ্গে যুক্ত হিসেবে অভিযুক্ত সাবেক নারী ইউপি সদস্য আম্বিয়া বেগমকে পাওয়া যায় তার বাড়িতে।
তার মাধ্যমে লিবিয়ায় গিয়ে ওই এলাকার ১৪ জন যুবক বর্তমানে লিবিয়ার জেলে আটক থাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে লিবিয়া যাওয়ার জন্য কেউ টাকা দেয়নি। আমি শুধু আমার বোনজামাইকে পাঠানোর জন্য টাকা নিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে তারা মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’
শুধু লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার নামেই নয়, ইউরোপের অন্যান্য দেশ থেকে ইতালি যাওয়ার নামেও চলছে দালালদের প্রতারণা। চলতি বছরের ৩ আগস্ট মাদারীপুরের পাঁচ যুবককে রোমানিয়ায় আটকে রেখে ভুক্তভোগী পরিবারের কাছ ভিডিওবার্তা পাঠিয়ে ১০ লাখ টাকা করে দাবি করেছিল একটি দালাল চক্র।
ভুক্তভোগী পরিবার থানায় অভিযোগ করলেও পরে দালালদের সঙ্গে সমঝোতা হলে মামলা তুলে নেন তারা। সংগত কারণেই দালালচক্রটি ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়।
মাদারীপুর জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিদেশে যেতে নিয়মিত প্রতারিত হওয়ার ঘটনা ঘটলেও মামলা করতে আগ্রহ দেখায় না অধিকাংশ ভুক্তভোগী পরিবার। আবার মামলা করলেও পরে সমঝোতা করে নেয় তারা।
সম্প্রতি মানব পাচার আইনে মামলা করার সংখ্যা বেড়েছে। ২০১৭ সালে জেলায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা হয় দুটি। পরের বছর হয় মাত্র একটি। এ দুই বছরে কেউ গ্রেপ্তার হননি। ২০১৯ সালে তিনটি মামলায় তিনজন গ্রেপ্তার হন। পরের বছর মামলা বেড়ে দাঁড়ায় ৩১টিতে, আর গ্রেপ্তার হন ৩৫ জন।
২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩০টিরও বেশি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ২৯ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। কিন্তু গ্রেপ্তারের কিছু দিন পর অধিকাংশই জামিনে বের হয়ে আবার মানব পাচারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন।
দালালদের প্রলোভনে লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে মারা গিয়েছেন মাদারীপুর জেলার অনেক যুবক। কেউ কেউ অবৈধভাবে বিদেশ গিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আবার অনেক যুবক নিখোঁজ আছেন বছরের পর বছর ধরে। পরিবারের লোকজন এখনও তাদের পথ চেয়ে বসে আছেন।
গত বছরের ১৬ মে ৮৩ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী লিবিয়া থেকে নৌকায় ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে তিউনিসিয়া সীমান্তে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এরপর তিউনিসিয়ার সেনাবাহিনী উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে ৩৩ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে জীবিত উদ্ধার করে। পরে জনা যায়, ৩৩ জনের মধ্যে ৩০ জনই ছিলেন মাদারীপুরের। ওই নৌকায় থাকা মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের নয়ারচর গ্রামের সেন্টু মণ্ডলের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা রাজীব হোসেন বলেন, ‘সাগর পাড়ি দিতে ঝুঁকি আছে, এ কথা জেনেও সবাই যায়। সবাই দালালের প্রলোভনে পড়ে সব ভুলে যায়। পরে দালালরা তাদের জিম্মি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে নিঃস্ব করে দেয় পুরো পরিবারকে।’
লিবিয়ার জেলখানায় বন্দি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বলগ্রামের বাসিন্দা সামিউলের মা রেবা বেগম বলেন, ‘বলগ্রাম এলাকার মিরাজ নামে এক দালালের মাধ্যমে ছেলেকে লিবিয়ায় পাঠিয়েছি। সেখান থেকে ইতালি যাওয়ার “গেম করানোর” জন্য শিপন নামে এক দালালকে টাকা দিই। এ পর্যন্ত আমার ১৫ লাখ টাকা গেছে। এখন আমি আমার ছেলে সামিউলকে জেল থেকে বের করে দেশে ফিরিয়ে আনতে চাই।’
মাদারীপুর সদর রাজারহাট এলাকার লিমা বেগমের স্বামী সুজন মাতুব্বর বন্দি রয়েছেন লিবিয়ার একটি কারাগারে। লিমা বেগম বলেন, ‘আমরা মোশারফ নামে এক দালালের মাধ্যমে লিবিয়া পাঠিয়েছি আমার স্বামী সুজন মাতুব্বরকে।
ইতালি যাওয়ার পথে তিনবার পুলিশের কাছে ধরা খাইছেন তিনি। তিনবারই অনেক টাকার বিনিময়ে তাকে ছাড়ানো লাগছে। এখনও তিনি জেলে আছেন। আমি আমার স্বামীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা চাই।’
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ‘ইতালি যাওয়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি মাদারীপুর জেলায়। বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে পুলিশের কাছে আসেন পরিবারের লোকজন। এর বাইরে সাধারণত কেউ অভিযোগ করেন না। তবে পুলিশ নিজস্ব উৎস থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালায়। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে মামলা করার জন্য উৎসাহী করা হয়।’
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘আমরা দালাল চক্রের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে আছি। লিবিয়ায় যারা বন্দি আছে, তাদের অধিকাংশই অবৈধ পথে সেখানে গিয়েছে। তার পরও তাদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে চেষ্টা করছি। তাদের স্বজনরা লিখিত দিয়েছেন।
‘প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানানো হয়েছে। দেখা যাক কী করা যায়। কেউ যাতে অবৈধ পথে বিদেশ যেতে না পারে, সে ব্যাপারে আমরা সবাইকে সচেতন করছি। আমরা দালালদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য