× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
The customers money is deducted due to a mechanical error stuck in the card
google_news print-icon

কার্ড আটকে যান্ত্রিক ত্রুটিতে, টাকা কাটে গ্রাহকের

কার্ড-আটকে-যান্ত্রিক-ত্রুটিতে-টাকা-কাটে-গ্রাহকের
নেটওয়ার্ক সমস্যায় কার্ড আটকে চরম ভোগান্তিতে পড়েন গ্রাহকরা। ছবি: নিউজবাংলা
টাকা তোলার সময় কার্ড আটকে যাওয়ার পর নতুন কার্ড নিতে বাধ্য হওয়া রফিকুল বলেন, ‘সে ক্ষেত্রে কার্ডের চার্জ আমাদের দিতে হবে কেন? আমার ভুলে তো আর কার্ড আটকে যায়নি। মেশিনের ত্রুটির কারণে কার্ড আটকে গেছে। তাহলে অর্থদণ্ড কেন গ্রাহকের পকেট থেকে যাবে?’

রাত ২টা। হঠাৎ নিকটাত্মীয়ের ফোনে ঘুম ভেঙে বাসা থেকে বের হন রফিকুল ইসলাম। বাসার পাশেই ব্যাংকের বুথ থেকে টাকা তুলে গন্তব্য হাসপাতাল। কিন্তু নেটওয়ার্ক সমস্যায় আটকে গেল কার্ড। অনেকক্ষণ চেষ্টাতেও কার্ড অথবা টাকা কোনোটাই বের হলো না।

রফিক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওই রাতে টাকার খুব দরকার ছিল, কিন্তু পেলাম না। নেটওয়ার্ক যন্ত্রণা, মেশিন হ্যাং হওয়াসহ নানা কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। কার্ড পেতে সময় লেগেছে সাত দিন। চেক না থাকায় ওই সাত দিন টাকা তোলা যায়নি। ধার করে চলতে হয়েছে।’

সেই কার্ড বিনা মূল্যে পাননি রফিক। তার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে সে জন্য।

আইনজীবী নাহিদা খানমের ব্যাংক হিসাব আইএফআইসি ব্যাংকে। কার্ড আটকে যাওয়ার পর দুবার নতুন কার্ড নিতে হয়েছে তাকে। এ জন্য ৩০০ করে মোট ৬০০ টাকা কাটা হয়েছে তার ব্যাংক হিসাব থেকে।

বুথে কার্ড আটকে যাওয়ার কী কারণ, তার মধ্যে একটি ভুল পাসওয়ার্ড একাধিকবার দেয়া। এটি গ্রাহকের ভুল। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কার্ড আটকে যায় কারিগরি ত্রুটিতে, যাতে গ্রাহকের কোনো দায় থাকে না।

রফিক বলেন, ‘সে ক্ষেত্রে কার্ডের চার্জ আমাদের দিতে হবে কেন? আমার ভুলে তো আর কার্ড আটকে যায়নি। মেশিনের ত্রুটির কারণে কার্ড আটকে গেছে। তাহলে অর্থদণ্ড কেন গ্রাহকের পকেট থেকে যাবে?’

সোনালী ব্যাংকের কার্ড বিভাগের কর্মকর্তা এস এম কোরবান আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আগে বুথে কার্ড আটকে গেলে পুরোনো কার্ড গ্রাহকরা ফেরত পেতেন। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, বুথে আটকে গেলে গ্রাহক জানানোর সঙ্গে সঙ্গে কার্ড ডেস্ট্রয় করতে হবে। পরে নতুন কার্ড ইস্যু করতে হয়।’

কারিগরি ত্রুটির দায় তো গ্রাহকের নয়। তাহলে তাকে কেন চার্জ দিতে হবে- এই প্রশ্নে এ ব্যাংকার বলেন, ‘সামান্য কিছু চার্জ। সেটা এমন কিছু নয়।’

ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক সময় নেটওয়ার্কের কারণে কার্ড আটকে যায়। সাধারণত আবেদনের এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন কার্ড ইস্যু করা হয়। এতে সামান্য চার্জ দিতে হয়।’

সেই চার্জ ‘সামান্য’ হলে গ্রাহকের বদলে ব্যাংক কেন এর দায় নেবে না, সেই বিষয়টি আর বলেননি এই ব্যাংকার।

ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজ্যুমারস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন মালেক এ প্রসঙ্গে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কার্ড আটকে গেলে নতুন কার্ড ইস্যু করার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে গ্রাহকের পকেট কেটে চার্জ রাখা অন্যায়। কারণ এখানে তো গ্রাহকের ভুল নেই। বুথে সমস্যার কারণে কার্ড আটকে গেছে। তাহলে গ্রাহক টাকা দেবে কেন?’

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম কার্ড আটকে যাওয়ার পুরো দায় দিয়েছেন গ্রাহকের ওপর। আর তার দৃষ্টিতে নতুন কার্ডের জন্য যে টাকা কাটা হয়, সেটা সামান্য।

এ-সংক্রান্ত এক প্রশ্নে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘অনেক সময় গ্রাহকরা কার্ডের পিন নম্বর ভুল দেয় বা একবারের জায়গায় তিনবার কার্ড পাঞ্চ দিয়ে ভুল করে, তখন তো কার্ড আটকে যাবে। এটাতে গ্রাহকের দায়। এ জন্য ব্যাংক তো কার্ড ফ্রি দেবে না। নতুন কার্ড ইস্যুর ক্ষেত্রে সামান্য চার্জ নেয় এবং এই চার্জ গ্রাহকদের দিতে হবে।’

তবে বুথের কারিগরি ত্রুটির কারণে যে কার্ড আটকে যায়, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র কিছু বলেননি।

দুর্ভোগের শেষ নেই

গ্রাহকদের সহজে সার্বক্ষণিক সেবা দিতে ব্যাংকগুলো চালু করেছে অটোমেটেড টেলার মেশিন বা এটিএম সেবা। উদ্দেশ্য ২৪ ঘণ্টা সাত দিনই গ্রাহক পাবেন নিরবচ্ছিন্ন সেবা। অথচ বুথে টাকা তুলতে গ্রাহকের ভোগান্তির যেন শেষ নেই।

নেটওয়ার্ক সমস্যা, কার্ড আটকে যাওয়া, টাকা না থাকা, টাকা বের না হওয়া, বুথ থেকে জাল-ছেঁড়া নোট বের হওয়াসহ নানা রকম হয়রানির শিকার হচ্ছেন গ্রাহকরা। এ ছাড়া রয়েছে বুথের নিরাপত্তা ও পরিবেশ নিয়ে অভিযোগ। তবে বুথে কার্ড আটকে গেলে গ্রাহককে ভোগান্তি পোহাতে হয় সবচেয়ে বেশি।

নিয়ম অনুযায়ী বুথে কার্ড আটকে গেলে নিরাপত্তাকর্মীকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। পরে সেখানে থাকা রেজিস্টার্ড বইতে কার্ড আটকে যাওয়ার সময় ও বিষয় বিস্তারিত লিখে আলাদা একটি কাগজে গার্ডকে দিয়ে সই নেয়া হয়। এরপর সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে বিষয়টি জানানোর পর সর্বোচ্চ সাত কর্মদিবসের মধ্যে নতুন কার্ড ইস্যু করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১৫ দিন বা এক মাস পার হলেও নতুন কার্ড মেলে না। বেশির ভাগ এটিএম বুথে গিয়ে গ্রাহকরা এসব অভিযোগ করলেও ব্যাংকগুলো বিষয়টি গুরুত্ব দেয় না বলে অভিযোগ রয়েছে।

ব্যবসায়ী লিয়াকত আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কার্ড থাকার কারণে চেক বই এখন আর তোলা হয় না। কিন্তু কার্ড আটকে গেলে বিপদের শেষ থাকে না।’

কার্ড আটকে গেলে সেই টাকা ফিরে পেতেও আরও দুর্ভোগ। যে টাকা বুথে আটকে যাচ্ছে, তা ফিরে পেতে অপেক্ষা করতে হয় ৭ থেকে ৫০ দিন। এমনকি সেই টাকা আর কখনও পাওয়া যায়নি- এমন অভিযোগও আছে।

সংবাদকর্মী আবদুল্লাহ আল মামুন। ব্র্যাক ব্যাংক ও সাউথইস্ট ব্যাংকের বুথ থেকে অন্য ব্যাংকের হিসাব থেকে ১৫ হাজার টাকা তোলার চেষ্টা করেও পারেননি। তবে এসএমএস আসে, টাকা কেটে নেয়া হয়েছে। পরে কাস্টমার কেয়ারে জানান তিনি। সেই টাকা ফেরত পান প্রায় দুই মাস পর।

রফিকুল আলম নামে একজন এই সমস্যায় পড়েছেন দুবার। ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করে একবার টাকা ফেরত পেয়েছেন ৪৫ কর্মদিবস পর।

এখনও তার সাড়ে ৬ হাজার টাকা আটকে আছে। ব্যাংকের হেল্পলাইন থেকে বলা হয়েছে, তিন থেকে পাঁচ দিনের ভেতর টাকা ফেরত দেবে। কিন্তু পাঁচ দিন পার হয়ে গেলেও এখনও টাকা আসেনি। কবে ফেরত পাবেন সেটিও জানেন না।

আটকে গেলেই নতুন এটিএম কার্ড

কার্ড ব্যবস্থাপনা নিয়ে ২০১৬ সালে নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। জানানো হয়, ব্যাংকের এটিএম বুথে কোনো গ্রাহকের কার্ড আটকে গেলে সরাসরি তা ফেরত না দিয়ে নতুন করে ইস্যু করতে হবে। গ্রাহকের আবেদনের সাত দিনের মধ্যে এ কার্ড দেয়ার ব্যবস্থা করার বাধ্যবাধকতাও জুড়ে দেয়া হয়।

আটকে যাওয়া কার্ডের তথ্য নিয়ে কেউ যেন জালিয়াতির সুযোগ না পায়, সে জন্য সতর্কতামূলক এ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

এর আগে এটিএম বুথে আটকে যাওয়া কার্ড ব্যাংকের পক্ষ থেকে সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের যে শাখায় অ্যাকাউন্ট রয়েছে ওই শাখা বা সুবিধামতো শাখায় পাঠানো হতো। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আটকে যাওয়া কার্ডটি ফেরত পেতেন গ্রাহক।

কিন্তু পরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, এটিএম বুথে কার্ড আটকে গেলে হুবহু ওই কার্ড ফেরত না দিয়ে নতুন কার্ড দিতে হবে।

কার্ড আটকে যায়, সমস্যা কার?

কারওয়ান বাজার মোড়ে বেসরকারি একটি ব্যাংকের বুথের সামনে কথা হয় মোর্শেদ আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘পাঁচ বছর ধরে কার্ড ব্যবহার করে আটকে গেছে পাঁচ-সাতবার। দুর্বল নেটওয়ার্কই এ ক্ষেত্রে দায়ী বলে মনে হয়।

তিনি বলেন, ‘ঠিকমতো কমান্ড করার পরও কার্ডে সমস্যা হয়। এ ক্ষেত্রে স্মার্ট ব্যবস্থাপনা দরকার। আটকে গেলেও দ্রুত সময়ের মধ্যে তা ফেরত দেয়া দরকার।’

তসলিম সরদার নামে আরও একজন বলেন, ‘অনেক বুথই মেয়াদোত্তীর্ণ। রক্ষণাবেক্ষণে অর্থ ব্যয় করা হয় না। কার্ড নিয়ে কমান্ড করলে অনেক সময় দীর্ঘ সময় নেয়। অনেক সময় টাকা আগে বের হয়, কার্ড পরে।

‘আবার কার্ড বের হলেও টাকা বের হয় না। রসিদও পাওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক অর্থ ব্যয় করে না। অথচ বছর শেষে ঠিকই কার্ড সেবা বাবদ অর্থ কেটে নেয়া হয়। এ ক্ষেত্রে দায় ব্যাংকের।’

অনেক সময় এক ব্যাংকের কার্ড অন্য ব্যাংকের বুথে দিলে আটকে যায়। অনভিজ্ঞ অনেক গ্রাহক এলোমেলো বাটন চাপ দেয়ার পরও আটকে যেতে পারে কার্ড।

আইটি ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা

এটিএম বুথের কারিগরি ত্রুটির কারণে যেন কোনো গ্রাহকের কার্ড আটকে না যায় সে জন্য নিয়মিতভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করার নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু অনেক ব্যাংকই এই নির্দেশনা পরিপালনে উদাসীন বলে অভিযোগ আছে গ্রাহকদের।

প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাংকগুলো তথ্যপ্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বাড়ালেও সেটা পর্যাপ্ত নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশ থাকলেও অনেক ব্যাংক মানসম্মত এটিএম মেশিন আনে না।

আবার অনেক ব্যাংক এখনও এটিএম সেবার জন্য মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ এক্সপিসহ ২০০০, ২০০৭, ২০১০ এই ধরনের পুরোনো অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করছে, যা নতুন করে আপডেট নিচ্ছে না।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সহযোগী অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা ব্যাংক টু ব্যাংক ভেরিফাই করে। কোন ব্যাংক কী ধরনের প্রযুক্তি, কোন পদ্ধতি ব্যবহার করছে এটা সম্পূর্ণ এসব বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। ব্যাংকের সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার, নেটওয়ার্ক, ব্যাংকের জনবল কেমন, কোন পদ্ধতিতে কাজ করছে এ সবকিছু ভেরিফাই করে।’

এটিএম ও কার্ড সংখ্যা

১৯৯২ সালে দেশে প্রথম এটিএম বুথ চালু হয়। বর্তমানে সারা দেশে ১২ হাজার ৫৬৭টি এটিএম বুথ রয়েছে। এর মধ্যে ৮ হাজার ৭৬৭টি শহরাঞ্চলে ও ৩ হাজার ৮০০টি গ্রামাঞ্চলে রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ তথ্য বলছে, বর্তমানে ব্যাংকগুলোর ইস্যু করা মোট ডেবিট, ক্রেডিট ও প্রি-পেইড কার্ডের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৭০ লাখ ৫৪ হাজার ৮৬৭টি।

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Will be commissioned to increase trade with Pakistan Trade Advisor

পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে কমিশন করা হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে কমিশন করা হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

পাকিস্তানের সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক বাণিজ্য বাড়াতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কমিশন করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, আমরা পাকিস্তান থেকে যাতে প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে আমদানি করতে পারি সেজন্য এ কমিশন করা হবে। একই সঙ্গে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের বেশকিছু সমঝোতা স্বাক্ষর হবে বলে জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা উভয় পক্ষ খুব খোলামেলা আলোচনা করেছি। আমরা দুই দেশের বাণিজ্য বাড়াতে একমত হয়েছি। খাদ্য ও কৃষি উন্নয়নে আমরা কাজ করতে চাই। কিছু কিছু মধ্যবর্তী পণ্য যৌথভাবে উৎপাদনে যেতে পারলে উভয় দেশ উপকৃত হবে। খাদ্য ও কৃষি পণ্যে জোর দেওয়া হয়েছে। আমাদের ফল আমদানি ও রপ্তানি নিয়ে কথা হয়েছে। আমরা আনারস রপ্তানির কথা বলেছি। স্থানীয়ভাবে চিনি উৎপাদনে পাকিস্তানের সাহায্য চেয়েছি। তারা সব বিষয়ে আমাদের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘এন্টি-ডাম্পিং বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এর বাহিরেও আমাদের পাকিস্তান হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড আমদানির ওপর এন্টি-ডাম্পিং ট্যাক্স আরোপ করেছিল আমরা সেটা সরিয়ে নিতে অনুরোধ করেছি। তারা এটা রাখবে আশা করি। আমরা পাকিস্তান বাজারে ডিউটি ফ্রি ১ কোটি কেজি চা রপ্তানির কথা জানিয়েছি। পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী আরো তিনদিন থাকবেন, এটা নিয়ে আরো আলোচনা হবে। পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের বেশকিছু সমঝোতা স্বাক্ষর হবে। এরমধ্যে জয়েন্ট ট্রেড কমিশন গঠন, কানেক্টিভিটি বৃদ্ধি। এই ট্রেড কমিশন বন্ধ ছিল না। সেখানে কিছু আলোচনা হতো।’

তিনি বলেন, ‘আমরা দুই দেশের মধ্যে ট্রেড এন্ড ইনভেস্টমেন্ট কমিশন করতে চাই। আমাদের দুই দেশে ব্যবসার প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।’

পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ালে ভারতের সঙ্গে আরো বৈরিতা বাড়বে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার কাজ হচ্ছে বাণিজ্যে সক্ষমতা তৈরি করা। এ বিষয় নিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করুন। এটা আমার কনসার্ন নয়। আমরা দেশের স্বার্থে কাজ করছি। বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য দেশের স্বার্থে অন্য যে যে দেশের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানো প্রয়োজন হয় আমরা সেটা করব।’

তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য নই। আমার কাছে সবার আগে দেশের স্বার্থ। দেশের স্বার্থে আমাদের যা যা করণীয় সেটা আমরা করব। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের যে পাওনা-দেনা ছিল সেটা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা বাণিজ্যের কোনো বিষয় না। আর এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।’

বাণিজ্য সচিব বলেন, ‘প্রায় দেড় দশক বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের বাণিজ্য ছিল না বললেই চলে। তারা আমাদের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে আগ্রহ দেখিয়েছে। আমরাও বাণিজ্য বাড়াতে অসুবিধা দেখি না। আমাদের উভয় দেশের স্বার্থ সমুন্নত রেখে এ বাণিজ্য বাড়ানো যায়। আমাদের উপদেষ্টা ধারণা দিয়েছেন পাকিস্থানে কি কি বিষয় রপ্তানি করতে পারে। আমরা পাকিস্তান থেকে বেশি আমদানি করি কিন্তু রপ্তানি করি কম। আমরা চাই এটা পরিবর্তন হোক। আমরাও যাতে বেশি রপ্তানি করতে পারি। এতে বাংলাদেশের জন্য লাভজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।’

বাংলাদেশ পাকিস্তানের দিকে ঝুঁকছে কিনা এমন প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা সবার দিকে ঝুঁকছি।, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ঝুঁকছি। ভারত থেকেও পেঁয়াজ আনছি। সর্বাগ্রে বাংলাদেশের স্বার্থ, যেখানে দেশের স্বার্থ আছে, সেখানেই ঝুঁকছি।’

বাণিজ্যসচিব মাহবুবর রহমান বলেন, ‘গত দেড় দশক পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য তেমন ছিল না বললেই চলে। খাদ্য ও পাথরসহ বিভিন্ন পণ্য আমরা নানা দেশ থেকে আমদানি করি, প্রতিযোগিতা দরে পাকিস্তান থেকে এসব পণ্য আনা গেলে সমস্যা নেই। একই সঙ্গে আমাদের রপ্তানি বাড়ানোর গুরুত্ব দিয়েছি। বর্তমানে পাকিস্তান থেকে ইম্পোর্ট করি বেশি, রপ্তানি কম করি। আমরা রপ্তানি বাড়াতে পারলে দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে। গত অর্থবছর পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ আমদানি করেছে ৭৮৭ মিলিয়ন ডলার এবং পাকিস্তানে রপ্তানি করেছে ৭৮ মিলিয়ন ডলার।’

বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে এ বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্থানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার, বাংলাদেশে পাকিস্থানের হাইকমিশনের রাজনৈতিক কাউন্সিলর কামরান ধাংগাল, বাণিজ্য ও বিনিয়োগবিষয়ক প্রতিনিধি জাইন আজিজ এবং বাণিজ্য সহকারী ওয়াকাস ইয়াসিন।

মন্তব্য

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে আগ্রহী পাকিস্তান

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে আগ্রহী পাকিস্তান

বাংলাদেশে সফররত পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান আজ রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) কার্যালয়ে চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।

সাক্ষাৎকালে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, সংস্কৃতি ও জীবনাচরণের দিক দিয়ে দুদেশের মানুষের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। আর পাকিস্তানের টেক্সটাইল ও বিশেষ করে জুয়েলারি পণ্য এদেশের মানুষের মাঝে বেশ চাহিদা রয়েছে।

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উন্নয়নে এফটিএ স্বাক্ষরের জন্য এদেশের বেসরকারি খাত সবসময়ই সরকারকে প্রস্তাব দিয়ে আসছে এবং পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের এফটিএ স্বাক্ষর হলে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সম্প্রসারিত হবে।

তিনি বলেন, দুদেশের মধ্যে সরাসরি বিমান ও কার্গো যোগাযোগ চালু হলে ব্যবসায়িক যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে।

পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান উভয় দেশই রপ্তানির ক্ষেত্রে তৈরি পোষাক এবং টেক্সটাইল খাতের ওপর অধিক মাত্রায় নির্ভরশীল। দুদেশেরই রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণের ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ইউরোপের দেশগুলোসহ কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহৃত পোশাকের নতুন ডিজাইনের মাধ্যমে পুনঃব্যবহারের জনপ্রিয়তা ক্রমশ বাড়ছে। যেখানে দুদেশের পোষাক খাতের উদ্যোক্তাদের মনোনিবেশ করা আবশ্যক। যার মাধ্যমে রপ্তানি বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।

পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, পূর্ব আফ্রিকা ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে দুদেশের পণ্য রপ্তানি বাড়াতে একযোগে কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও সিমেন্ট, চিনি, পাদুকা ও চামড়া প্রভৃতি খাতে পাকিস্তান বেশ ভালো করছে এবং বাংলাদেশ চাইলে পাকিস্তান থেকে এ পণ্যগুলো আমদানি করতে পারে। পাশাপাশি ঔষধ খাতে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা পাকিস্তানের জন্য বেশ কার্যকর হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।

তিনি আরও বলেন, দুদেশের কৃষি কাজ এবং পণ্যের উৎপাদনে নতুন প্রযুক্তি ও মূল্য সংযোজন বৃদ্ধি করা গেলে এখাতে বৈশ্বিক বিলিয়ন ডলার অর্থনীতিতে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের রপ্তানির সুযোগ তৈরি হবে।

জাম কামাল খান জানান, পাকিস্তানের পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে শিগগিরই বাংলাদেশে ‘সিঙ্গেল কান্ট্রি এক্সিবিশন’-এর আয়োজন করা হবে। যার মাধ্যমে দুদেশের বেসরকারি খাতের সম্পর্ক আরও জোরাদারের সুযোগ তৈরি হবে।

এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার, ডিসিসিআই জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহ-সভাপতি মো. সালিম সোলায়মান, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা এবং পাকিস্তান হাইকমিশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
New digital bank

নতুন ডিজিটাল ব্যাংক দেওয়ার উদ্যোগ

নতুন ডিজিটাল ব্যাংক দেওয়ার উদ্যোগ

নতুন করে ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগামী ২৭ আগস্ট পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। এর আগে গত ১৩ আগস্টের এক সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হলেও ব্যাংকখাতের বর্তমান বাস্তবতায় কয়েকজন পরিচালক নতুন কোনো ব্যাংকের অনুমোদনের বিপক্ষে মত দেন।

২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অনুমোদন পাওয়া নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি এবং কড়ি ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা কাটেনি।

সূত্র জানায়, ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এখনো বাংলাদেশে পুরোপুরি তৈরি হয়নি। একই সময়ে কয়েকটি প্রচলিত ব্যাংক আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না। এসব কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অনেকেই নতুন লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়ে সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন।

তবে পরিকল্পনা থেমে নেই। আগ্রহীদের কাছ থেকে নতুন ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য আবেদন চাওয়া হতে পারে শিগগির। ২০২৩ সালে প্রথমবারের মতো ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক আবেদন আহ্বান করে। তখন ৫২টি আবেদন জমা পড়ে। প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে ৯টি প্রস্তাব পাঠানো হয় পরিচালনা পর্ষদের সভায়।

এর মধ্যে নগদ ও কড়ি ছাড়াও স্মার্ট ডিজিটাল ব্যাংক, নর্থ ইস্ট ডিজিটাল ব্যাংক এবং জাপান-বাংলা ডিজিটাল ব্যাংককে লেটার অব ইনটেন্ট (এলওএল) দেওয়া হয়। অন্যদিকে বিকাশ, ডিজি টেন এবং ডিজিটাল ব্যাংককে পৃথক লাইসেন্স না দিয়ে ডিজিটাল ব্যাংকিং উইং খোলার অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের আবেদন বাতিল করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আগেরবার রাজনৈতিক বিবেচনায় যে প্রক্রিয়ায় ডিজিটাল ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল, এবার তার চেয়ে অনেক স্বচ্ছ ও কঠোর মানদণ্ডে নতুন আবেদনগুলো যাচাই করা হবে।

মন্তব্য

সাড়ে ৭ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ

সাড়ে ৭ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ ঋণ

২০২৪ সালের শেষ নাগাদ দেশের ব্যাংক খাতের দুর্দশাগ্রস্ত বা ঝুঁকিপূর্ণ ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে ২ লাখ ৮১ হাজার কোটি টাকা। ২০২৩ সাল শেষে দুর্দশাগ্রস্ত ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সদ্য প্রকাশিত ‘ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্ট ২০২৪’-এ এসব তথ্য ওঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের শেষে এ ধরনের ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। ১ বছরে তা ৪৪.২১ শতাংশে গিয়ে পৌঁছেছে, যা মোট বিতরণকৃত ঋণের প্রায় অর্ধেক। আইএমএফের সংজ্ঞা অনুযায়ী, খেলাপি, পুনঃতফসিল এবং অবলোপনকৃত (রাইট-অফ) ঋণকে সম্মিলিতভাবে ‘দুর্দশাগ্রস্ত ঋণ’ হিসেবে গণ্য করা হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, ২০২৪ সালের শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা, পুনঃতফসিলকৃত ঋণ ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬৬১ কোটি টাকা এবং রাইট-অফ করা ঋণের পরিমাণ ৬২ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক প্রভাব, দুর্নীতি ও তদবিরের মাধ্যমে দেওয়া ঋণ এখন খেলাপিতে রূপ নিচ্ছে। আগে এসব তথ্য গোপন থাকলেও এখন আইএমএফের চাপের মুখে বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিতভাবে এসব তথ্য প্রকাশ করছে।

প্রতিবেদনে আরও ওঠে এসেছে, ২০২৪ সালে দেশের ব্যাংক খাত চরম চাপের মুখে পড়ে, বিশেষ করে মূলধন পর্যাপ্ততার ক্ষেত্রে। সিআরএআর (ক্যাপিটাল টু রিস্ক-ওয়েইটেড অ্যাসেট রেসিও) মাত্র ৩.০৮ শতাংশে নেমে আসে, যেখানে তা কমপক্ষে ১০ শতাংশ থাকার কথা। সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক ও বেশকিছু ইসলামী ব্যাংক।

মূলধন অনুপাত ও লিভারেজ অনুপাত যথাক্রমে ০.৩০ শতাংশে নেমে এসেছে, যা গোটা ব্যাংক খাতের কাঠামোগত দুর্বলতা এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার অভাব স্পষ্ট করে।

তবে ব্যাংক খাতের তারল্য পরিস্থিতি এখনো তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল রয়েছে। অ্যাডভান্স-ডিপোজিট রেশিও (এডিআর) ৮১.৫৫ শতাংশে পৌঁছেছে, যা এখনো বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত সীমার মধ্যে রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, দেশের আর্থিক খাত সামগ্রিকভাবে স্থিতিশীল থাকলেও খেলাপি ঋণ, বৈদেশিক মুদ্রার চাপ এবং সুশাসনের অভাব এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সময়োপযোগী নীতিমালা, কঠোর তদারকি এবং প্রযুক্তিনির্ভর ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই এই খাতকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Signature of Memorandum of Understanding between Border Bank and ABC Real Estate

সীমান্ত ব্যাংক এবং এবিসি রিয়েল এস্টেট এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

সীমান্ত ব্যাংক এবং এবিসি রিয়েল এস্টেট এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

সীমান্ত ব্যাংক এবং এবিসি রিয়েল এস্টেট এর মধ্যে সম্প্রতি এবিসি রিয়েল এস্টেট এর প্রধান কার্যালয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই সমঝোতা স্মারকের আওতায় গ্রাহকেরা এবিসি রিয়েল এস্টেট এর ফ্ল্যাট ক্রয়ে সীমান্ত ব্যাংক এর হোমলোন ”সীমান্ত নিবাস” গ্রহনের ক্ষেত্রে হ্রাসকৃত ইন্টারেস্ট রেট ও লোন প্রসেসিং ফি সুবিধা পাবেন ।

সীমান্ত ব্যাংকের হেড অব বিজনেস মোঃ শহিদুল ইসলাম এবং এবিসি রিয়েল এস্টেট এর পরিচালক সৌগত ঘোষ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে সাক্ষর করেন। এ সময় সীমান্ত ব্যাংকের রিটেইল অ্যাসেট ও লাইবিলিটি এর ইনচার্জ মোহাম্মদ মাসুদ সাজ্জাদ, এবিসি রিয়েল এস্টেট এর জেনারেল ম্যানেজার (সেলস) মোহাম্মদ জাকির হোসেন-সহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উভয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের রিয়েল এস্টেট পরিষেবা বিকাশে যৌথভাবে কাজ করার বিষয়ে বদ্ধ পরিকর।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Lead Platinum Certificate Peel Waltons Eviod Mold and Die Factory

লিড প্লাটিনাম সনদ পেল ওয়ালটনের পরিবেশবান্ধব মোল্ড অ্যান্ড ডাই ফ্যাক্টরি

লিড প্লাটিনাম সনদ পেল ওয়ালটনের পরিবেশবান্ধব মোল্ড অ্যান্ড ডাই ফ্যাক্টরি

পরিবেশবান্ধব কারখানার স্বীকৃতি হিসেবে লিড প্লাটিনাম সনদ অর্জন করলো বাংলাদেশের সুপারব্র্যান্ড ও টেক জায়ান্ট ওয়ালটনের মোল্ড অ্যান্ড ডাই ফ্যাক্টরি কমপ্লেক্স। টেকসই উন্নয়ন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও পানির সাশ্রয়ী ব্যবহার এবং পরিবেশবান্ধব অবস্থানের কারনে লিড সনদ প্রদান করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি)। লিড সনদ অর্জনের মধ্য দিয়ে গ্রিন ফ্যাক্টরি স্থাপনায় ওয়ালটনের ঝুড়িতে যুক্ত হলো আরেকটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।

বুধবার (২০ আগস্ট, ২০২৫) রাজধানীতে ওয়ালটন করপোরেট অফিসে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে লিড প্লাটিনাম সনদ গ্রহণ করেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র চেয়ারম্যান এস এম শামছুল আলম এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর এস এম মাহবুবুল আলম।

অনুষ্ঠানে ওয়ালটনের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণসহ লিড সনদ অর্জনের ক্ষেত্রে কারিগরি সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ৩৬০-ডিগ্রি টোটাল সলিউশন লিমিটেডের আন্তর্জাতিক গ্রিন বিল্ডিং বিশেষজ্ঞ অনন্ত আহমেদ ও অন্য কর্মকর্তাগণ।

লিড সনদ অর্জনের প্রতিক্রিয়ায় ওয়ালটন হাই-টেকের চেয়ারম্যান এস এম শামছুল আলম বলেন, পরিবেশবান্ধ কারখানার স্বীকৃতি হিসেবে ওয়ালটন মোল্ড অ্যান্ড ডাই কারখানা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ও মর্যাদাপূর্ণ লিড প্লাটিনাম সনদ অর্জন করায় ওয়ালটন পরিবার অত্যন্ত আনন্দিত। আমরা চাই- ভবিষ্যত প্রজম্মের জন্য একটি সুন্দর ও বাসযোগ্য পৃথিবী রেখে যেতে। সেজন্য কারখানা থেকে শুরু করে পণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়া সর্বত্র টেকসই ও পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন ও গ্রিন ফ্যাক্টরি স্থাপনে লিড সনদ ওয়ালটনকে আরো বেশি উৎসাহিত করবে।

মর্যাদাপূর্ণ পরিবেশবান্ধব লিড সনদ অর্জনে কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করায় ৩৬০-ডিগ্রি টোটাল সলিউশনকে ধন্যবাদ জানান ওয়ালটন হাই-টেকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এস এম মাহবুবুল আলম। তিনি বলেন, পরিবেশ সুরক্ষায় ওয়ালটন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখার লক্ষ্যে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার আলোকে ওয়ালটন কারখানায় পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন গ্রিন প্রকল্প ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রাকৃতিক সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে জিরো কার্বন নিঃসরণ, সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও পানির ব্যবহারের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে গ্রিন স্ট্রাকচারাল ডিজাইন তৈরি করা হয়েছে। রুফটপ সোলার পাওয়ার প্রজেক্ট, ফ্লোটিং বা ভাসমান সোলার পাওয়ার প্রজেক্ট, রেইন ওয়াটার বা বৃষ্টির পানির সর্বোচ্চ ব্যবহার ও পুনঃব্যবহার নিশ্চিত, অ্যাডভান্সড ভেন্টিলেশন সিস্টেম, প্লাস্টিক ও মেটাল রিসাইক্লিং ইত্যাদি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। পরিবেশ সুরক্ষায় ওয়ালটনের এসব গ্রিন ইনিশিয়েটিভ অব্যাহত থাকবে।

আন্তর্জাতিক গ্রিন বিল্ডিং বিশেষজ্ঞ অনন্ত আহমেদ জানান, বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স শিল্পখাতে ওয়ালটনই প্রথম বিশ্বব্যাপী মর্যাদাপূর্ন লিড প্লাটিনাম সনদ অর্জন করেছে। এই সনদ একটি বিল্ডিং বা প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব এবং কর্মক্ষমতা মূল্যায়ন করে। এর মাধ্যমে একটি বিল্ডিং কতটুকু পরিবেশ-বান্ধব, তা বোঝা যায়। লিড সনদ দেয়ার ক্ষেত্রে শক্তি ও পানির ব্যবহার, কার্বন নিঃসরণ, উপকরণ নির্বাচন এবং অভ্যন্তরীণ পরিবেশগত গুণমানসহ বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করা হয়। এসব বিষয়ে কোন বিল্ডিং বা প্রকল্প কত স্কোর করে, তার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরণের লিড সার্টিফিকেশন প্রদান করা হয়। ওয়ালটনের মোল্ড অ্যান্ড ডাই ফ্যাক্টরি সর্বোচ্চ স্কোর পাওয়ায় লিড প্লাটিনাম সনদ অর্জন করেছে।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক টেকসই মানদন্ড অনুসরণে ৩ লাখ ৭৬ হাজার বর্গফুট জায়গাজুড়ে গ্রিন স্ট্রাকচারাল ডিজাইনে মোল্ড অ্যান্ড ডাই কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। কারখানায় বৈদ্যুতিক আলোর চেয়ে দিনের আলোর পর্যাপ্ত ব্যবহারের জন্য ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি স্থাপন করা হয়েছে ২.১ মেগাওয়াটের রুফটপ সোলার পাওয়ার পয়েন্ট। ওয়ালটন যে পরিমাণ বিদ্যুৎ তৈরি করছে, তার চেয়েও কম পরিমাণ বিদ্যুৎ কারখানায় ব্যবহার করছে। এছাড়া কারখানার আভ্যন্তরীণ পরিবেশ ও বাতাসকে আরামদায়ক রাখতে ব্যবহার করা হয়েছে অ্যাডভান্সড ভেন্টিলেশন সিস্টেম। বৃষ্টির পানি ব্যবহার ও পুণঃব্যবহারেরও ব্যবস্থা রয়েছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
NRBC Bank AGM held

এনআরবিসি ব্যাংকের এজিএম অনুষ্ঠিত

এনআরবিসি ব্যাংকের এজিএম অনুষ্ঠিত

এনআরবিসি ব্যাংকের ১২তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় গত বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, লভ্যাংশ, ২০২৫ সালের জন্য নিরীক্ষক নিয়োগ ও তাদের সম্মানী অনুমোদন করা হয়। ২১ আগস্ট, ২০২৫, বৃহস্পতিবার, কুর্মিটোলা গল্ফ ক্লাবে ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক ও চেয়ারম্যান মো. আলী হোসেন প্রধানিয়ার সভাপতিত্বে হাইব্রিড পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত সভায় স্বশরীর ও অনলাইন প্লাটফর্মে স্বতন্ত্র পরিচালক, উদ্যোক্তা ও শেয়ারহোল্ডারবৃন্দ অংশ নেন।

সভায় স্বতন্ত্র পরিচালক ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ, এফসিএ, স্বতন্ত্র পরিচালক ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান মো. নুরুল হক, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. আবুল বশর, মো. আনোয়ার হোসেন ও ব্যারিস্টার মো: শফিকুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ড. মো. তৌহিদুল আলম খান, ডিএমডি ও সিএফও হারুনুর রশীদ এবং কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আহসান হাবিব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় শেয়ারহোল্ডারদের অনলাইন প্লাটফর্মে প্রদত্ত সর্বোচ্চ ভোটের মাধ্যমে ৪ টি এজেন্ডা পাস করা হয়। এছাড়া অনলাইন এবং সশরীরে উপস্থিত বিনিয়োকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. আলী হোসেন প্রধানিয়া।

এজিএমে অংশগ্রহণকারী সকল স্বতন্ত্র পরিচালক, শেয়ারহোল্ডার, গ্রাহক ও বিনিয়োগকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে চেয়ারম্যান মো. আলী হোসেন প্রধানিয়া বলেন, আমানতকারী ও সাধারন বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় এনআরবিসি ব্যাংকের নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আমরা ব্যাংকে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করার মাধ্যমে নতুন পরিচালনা পর্ষদ আমনতকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও শেয়ারহোল্ডারদের প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবে বলে আমি প্রত্যাশা করি। তিনি আরও বলেন, ঋণশৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে ব্যাংকের গুণগত সম্পদ ও মুনাফা বৃদ্ধি করাই এই পর্ষদের লক্ষ্য। এক্ষেত্রে, তিনি সবাইকে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ, এফসিএ, বলেন, ব্যাংকের প্রতি গ্রাহকদের আস্থার কারণে আমানতের পরিমান ২০ হাজার কোটি টাকার মাইলফলক অতিক্রম করেছে। সুবিস্তৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে টেকসই ব্যবসায়িক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এই পরিকল্পনা সফল হলে শেয়ারহোল্ডারগণ তাদের বিনিয়োগের কাঙ্খিত সুফল পাবেন বলে আমরা আশাবাদী।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী ড. মো. তৌহিদুল আলম খান বলেন, আমানতকারী ও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এনআরবিসি ব্যাংকের প্রাণশক্তি। আমরা দক্ষ পরিচালনা পর্ষদের নেতৃত্বে ব্যাংকের স্বার্থ সংরক্ষণের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। কমপ্লায়েন্স, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমরা আমানতকারী ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ নিশ্চিত করতে চাই।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে যাত্রা করা এনআরবিসি ব্যাংক পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত হয় ২০২১ সালে। বর্তমানে সারাদেশে ব্যাংকটির ১০৯টি শাখা এবং ৪১৫টি উপশাখার মাধ্যমে প্রথাগত ব্যাংকিং সেবার পাশাপাশি শরীয়াহভিত্তিক ইসলামী ব্যাংকিং সেবাও প্রদান করছে।

মন্তব্য

p
উপরে