ভোট গণনা নিয়ে বিরোধের জেরে বগুড়ার বালিয়াদীঘি ইউনিয়নে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কেন গুলি করতে হলো- এই প্রশ্নে কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ম্যাজিস্ট্রেটের দাবি, তারা জনগণের জানমাল রক্ষায় বাধ্য হয়ে গুলি করেছেন। তবে ‘জানমাল রক্ষায়’ সেই গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন চারজন।
এই সরকারি কর্মকর্তাদের দাবি, গুলি করা হয়েছিল ফাঁকা, উদ্দেশ্য ছিল কেন্দ্রে ‘হামলাকারীদের’ ভয় দেখানো। তবে সেগুলো গিয়ে বিদ্ধ হয় মানুষের শরীরে।
ভোট শেষে বুধবার বিকেলে ইউনিয়নের কালাইহাটা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গণনার সময় সংঘর্ষ বাধে। এর আগেও নানা নির্বাচনে এই কেন্দ্রের ভোট গণনা নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। আর গুঞ্জন ওঠে কেন্দ্রে গণনা না করে ভোট নিয়ে যাওয়া হচ্ছে উপজেলা পরিষদে। এ নিয়েই গোলযোগের শুরু।
সেই কেন্দ্রে পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন ছিল আধা সামরিক বাহিনী বিজিবিও। সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর গুলিতেই প্রাণহানি হয়েছে বলে অভিযোগ আছে।
সেই কেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন শাহজানপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘আমরা কেন্দ্রের ভেতরে ছিলাম। বাইরে স্থানীয় নারী-পুরুষরা লাঠিসোটা নিয়ে কেন্দ্রে হামলা শুরু করে। তারা কেন্দ্রের সামনে থাকা গাড়ি ভাঙচুর করে, কক্ষ লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ে।
‘এমনকি তারা বিদ্যালয়ের দরজা জানালা ভেঙে ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তাদের ছোড়া ইটের আঘাতে আমার পা ভেঙে যায়। আমার সঙ্গে থাকা এক আনসার সদস্যরাও আহত হন।’
আসিফ আহমেদ বলেন, ‘ওই সময় উপায় না পেয়ে সরকারি সম্পদ ও জানমাল রক্ষায় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ভোট কেন্দ্রের ভেতর থেকে গুলি করতে বাধ্য হয়। তবে গুলির উদ্দেশ্য ছিল কাউকে হতাহত করা নয়; গুলির শব্দে যেন বিশৃঙ্খলকারীরা পালিয়ে যায়।’
ইউএনও বলেন, ‘আমরা কালাইহাটা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের ভেতরে ভোট গণনা করছিলাম। কিন্তু ওই ইউনিয়নের কয়েকটি কেন্দ্রে আগে থেকে ঝামেলা করছিলেন স্থানীয় কিছু বিশৃঙ্খল জনতা। তারা হট্টগোল করার পাশাপাশি ইটপাটকেল ছুড়ছিল।’
এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ছিলেন ৯ জন। তারা হলেন জাহিদ হোসেন, মো. আব্দুল মতিন, মো. ইউনুছ আলী মণ্ডল, মো. খাদেমুল ইসলাম, মো. মাহবুবর রহমান, মো. শফিকুল ইসলাম, মো. শাকিউল ইসলাম, মো. শাহিন ফেরদৌস, মো. হাবিবুর রহমান।
ইউনিয়নের মোট ভোটার সংখ্যা ২০ হাজার ২৮৭ এবং কেন্দ্র ৯টি।
তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন নৌকা প্রতীকের ইউনুছ আলী মণ্ডল এবং ঘোড়া প্রতীকের মো. মাহবুবর রহমান। এর মধ্যে ইউনুছ আলী পান ৬ হাজার ৫৬০টি ভোট। আর মাহবুবর রহমান ভোট পান ৪ হাজার ৬৪৯টি।
মাহবুব বিএনপির রাজনীতি করেন। তিনি এর আগে টানা দুইবার এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান ছিলেন।
মাহবুব রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বালিয়াদীঘিতে ৯টি কেন্দ্র রয়েছে। এর আগের নির্বাচনগুলোয় ইউনুছ আলী বিজয়ী হতে পারেননি। শুধু নিজের গ্রাম কালাইহাটার ওই ২টি কেন্দ্র ছাড়া, তাও সম্ভব হয়েছে জোরজবরদখল করে ভোটে সিল মারার কারণে।’
সাবেক এই চেয়ারম্যান বলেন, ‘ইউনুছ আলীর মূল দাবি ছিল, তার নাম বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা। স্থানীয়দের উসকে দিয়েছেন তিনি।’
গ্রাম পুলিশের একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে জানান, কেন্দ্রের সামনে নৌকার একটি দল মিছিল করছিল আর স্লোগান দিচ্ছিল। এরপর সেখান থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরা তাদের সরানো চেষ্টা করলে তার মারমুখী হয়ে ওঠে। তারপর গুলি করা হয়।
গুলির পর গ্রাম পুলিশের এই সদস্যও ঘটনাস্থল থেকে সরে আসেন।
ইউএনও আসিফ আহমেদ বলেন, ‘স্থানীয়রা এই কেন্দ্রে ভোট গণনা করার বিপক্ষে ছিল। তাদের দাবি ছিল এর আগে নৌকার প্রার্থী তিনবার নির্বাচনে হেরেছেন। এবার যে করেই হোক তিনি জিততে চাইছেন। এ কারণে তারাই দাবি তুলেছিল ভোট উপজেলায় নিয়ে গুনতে হবে।
‘স্থানীয়দের কালাইহাটা কেন্দ্রে ভোট গণনার বিষয়ে একাধিকবার বোঝানোর চেষ্টা করা হয়। তারা শান্তও হয়েছিল, কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরে আবার উত্তেজিত হয়ে নারীদের নিয়ে স্থানীয়রা কেন্দ্রে আসে। তাদেরও নানাভাবে বোঝানো হয় যে আইন অনুযায়ী কেন্দ্রেই ভোট গণনা করার নিয়ম। আমরা তাই করব। কেন্দ্রে ভোট সুষ্ঠুভাবে গণনা করে ফলাফল এখানে (কেন্দ্র) প্রকাশ করা হবে।’
বালিয়াদীঘির কালাইহাটার সাবেক সদস্য বাবলু জানান, ‘ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে সব লোকজনকে ডেকে এই কেন্দ্রেই ভোট গণনা করে বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা কথা জানান। কিন্তু নৌকা প্রার্থীর লোকজনেরা তা মানতে চাননি।
‘পরে ম্যাজিস্ট্রেট ব্যালট বাক্স নিয়ে সদরে যেতে চাইলে স্থানীয়রা আবার উত্তেজিত হয়ে পড়ে। তারা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। গাড়ি ভাঙে। তারা রাস্তা আটকে রেখেছিল। ওই সময় গুলি করে।’
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ইউনুছ আলী মণ্ডল অবশ্য জানিয়েছেন ভিন্ন কথা।
তিনি বলেন, ‘ভোটগ্রহণ শেষে ব্যালট পেপার কেন্দ্রে গণনা না করেই উপজেলা পরিষদে নিয়ে যেতে ধরেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ আহম্মেদ। ওই সময় আমার কর্মী-সমর্থকরা কেন্দ্রেই ভোট গণনা করতে বলেন। এর পরেও ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ আহমেদ ব্যালট উপজেলা পরিষদে নিয়ে যেতে ধরেন।
‘এ সময় আমার কর্মী-সমর্থকরা বাধা দিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গুলি করেন। তাদের গুলিতে চারজন মারা যান। ওই চারজনই আমার কর্মী-সমর্থক ছিলেন।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে যারা মারা গেছেন তারা হলেন, কুলসুম আক্তার, আলমগীর হোসেন, খোরশেদ ও আব্দুর রশিদ। চারজনই কালাইহাটা গ্রামের বাসিন্দা।
গাবতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়া লতিফুল ইসলাম জানান, বুধবারের সংঘর্ষে নিহত চারজনের মরদেহ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য নেয়া হয়েছে। এর পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী জানান, এই ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলী হায়দার চৌধুরীকে।
তিনি বলেন, ‘এই কমিটি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যাচাই-বাছাই করবেন। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নেয়া পদক্ষেপের (গুলি চালানোর) যৌক্তিকতা, ক্ষয়ক্ষতি বা পরবর্তী কী পদক্ষেপ নেয়া যায় তা জানাবে।’
মামলা
ভোটকেন্দ্রে হামলা, ভাঙচুর, ব্যালট পেপার ছিনতাই ও সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। এতে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।
গাবতলী থানায় বৃহস্পতিবার দুপুরে এই মামলা করেন বালিয়াদিঘীর কালাইহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা জাকির হোসেন।
গাবতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়া লতিফুল ইসলাম বৃহস্পতিবার রাতে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন:কুমিল্লায় চার জনের শরীরে নতুন ভ্যারিয়েন্টের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে এক নারী চিকিৎসকসহ তিনজন পুরুষ রয়েছেন।
শনিবার (১৪ জুন) কুমিল্লা সিটি স্ক্যান এমআরআই স্পেশালাইজড অ্যান্ড ডায়ালাইসিস সেন্টারে করোনা পরীক্ষা শেষে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুমিল্লা সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর বশির এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
করোনায় আক্রান্তরা হলেন, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আবদুল মোমিন (৭০), কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকার ডা. সানজিদা (৩০), বুড়িচং উপজেলার মো. হেলাল আহমেদ (৩৮) এবং সদর উপজেলার মো. ইবনে যুবায়ের (৩৯)।
সিভিল সার্জন ডা. আলী নূর বশির বলেন, গত তিন দিনে কুমিল্লায় ১৩ জন রোগীর নমুনা সংগ্রহ করা কয়। পরীক্ষা শেষে তাদের মধ্যে চারজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং বাকিদের নগরীর একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নমুনা পরীক্ষায় রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
তিনি বলেন, চারজনই বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে একজন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। দুজন এরই মধ্যে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় চলে গেছেন।
তবে আরেকজনের বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি সিভিল সার্জন।
করোনার প্রথম ধাক্কা কেটে যাওয়ার পর এতদিন কুমিল্লায় নতুন করে কেউ শনাক্ত হয়নি। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছিল। কিন্তু এখন আবার নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি দ্বিতীয় ধাপের শুরু হতে পারে এবং এখনই সতর্ক না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
চট্টগ্রামে নতুন করে আরো একজনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে গত ছয় দিনে মোট ৯ জনের শরীরে এ ভাইরাসের জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। শনিবার (১৪ জুন) সকালে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল আটটা থেকে শনিবার সকাল আটটা) ২৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে একজনের করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। ৪০ বছর বয়সী আক্রান্ত ওই ব্যক্তি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফতেহাবাদ এলাকার বাসিন্দা। তিনি শুক্রবার নগরের এভারকেয়ার হাসপাতালে করোনার পরীক্ষা করান। সেখানেই তার শরীরে করোনার জীবাণু শনাক্ত হয়।
এদিকে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আক্রান্ত নয়জনের মধ্যে পুরুষ ৫ জন এবং নারী ৪ জন। এদের মধ্যে ৭ জন নগরের এবং ২ জন উপজেলার বাসিন্দা।
অন্যদিকে, চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত বেসরকারি পর্যায়ে করোনা শনাক্তকরণের পরীক্ষা চালু আছে। তবে শিগগিরই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) আরটি–পিসিআর পরীক্ষা শুরু করা যাবে বলে আশা করছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম।
কুমিল্লার দাউদকান্দি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। দূর্ঘটনায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি। তবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রোগীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নেভাতে গিয়ে হাসপাতালের তিনজন কর্মী আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে স্থানীয় ফায়ারসার্ভিস কর্মীরা ছুটে আসে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আহতরা হলেন ইয়াসিন, মেহেদি ও মুছা। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (১৪জুন) বেলা ১১টায় দাউদকান্দি উপজেলা গৌরীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩য় তলায় ষ্টোর রুমে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে হাসাপাতালের ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীদের এবং বহিঃবিভাগে চিকিৎসা সেবা প্রায় দুই ঘন্টা বন্ধ থাকে৷ খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় এবং হাসপাতালে কর্মরত স্টাফদের সহযোগিতায় অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা ১১ টার দিকে হাসপাতালের তিনতলার ষ্টোর রুমে আগুনের ধোয়া দেখা যায়। ধোয়া দেখে পাশের ওয়ার্ডের রোগীর স্বজন ও নার্সরা আগুন আগুন বলে চিৎকার শুরু করে। এ সময় হাসপাতালে থাকা রোগী ও তাদের স্বজনরা দৌঁড়াদৌড়ি শুরু করেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পল্লী বিদ্যু ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে হাসপাতালের আউটসোর্সিংয়ে কর্মরত ইয়াসিন, মেহেদি ও মুছা নামে তিন কর্মচারী আহত হয়েছেন। আহতদের ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে দাউদকান্দি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার মোঃ ইদ্রিস বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসার পর স্থানীয় এবং হাসপাতালে কর্মরত স্টাফদের সহযোগিতায় অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। প্রাথমিক ধারনা বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনে সূত্রপাত, পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে মূল কারণ জানা যাবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, হাসপাতালের ৩য় তলায় ডেঙ্গু রোগীদের ওয়ার্ডের পাশের কক্ষে ষ্টোর রুমে ঔষধসহ রোগীদের সেবার কাজে ব্যবহৃত সব ধরনের মালামালের সাথে কিছু দামী সরঞ্জামও ছিল। ওই কক্ষে আগুনে অধিকাংশ মালামালই পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু মালামাল বের করতে পারলেও তা ভালো আছে কিনা পরবর্তীতে যাচাই করে বলেতে পারবো । আগুনে ক্ষতির পরিমান এখন নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। আর আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং মালামাল বিশেষ করে অক্সিজেন সিলিন্ডার বের করতে গিয়ে আমাদের আউটসোর্সিংয়ে কাজ করা তিনজন আহত হয়েছেন। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে হাসপাতালে অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে দাউদকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন৷
ঈদের ছুটিতে সিলেটে বেড়াতে এসে হেনস্তার শিকার হয়েছেন পর্যটকরা। একদিনের ব্যবধানে জাফলংয়ে পর্যটকদের উপর হামলা ও কোম্পানীগঞ্জে পর্যটনকেন্দ্র থেকে পর্যটকদের বের করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। দুটি ক্ষেত্রেই পর্যটকদের বিরুদ্ধে অশ্লীলতা ও পরিবেশ নষ্টের অভিযোগ তোলা হয়েছে। যদিও স্থানীয় একটি অংশের অভিযোগ, নির্বিঘ্নে চোরাচালান ও পাথর লুট করতেই পর্যটকদের বাধা দেয়া হচ্ছে। পর্যটক সমাগম বাড়লে লুটপাট ও চোরাকারবারে সমস্যা হয়। তাই পর্যটকদের আসতে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে দাবি তাদের।
অশ্লীলতার অভিযোগ এনে সোমবার রাতে মৌলভীবাজারের রাজনগরে “রাজনগর রিসোর্ট এন্ড কফি হাউজে” তালা দিয়েছে স্থানীয় একদল লোক। এসময় স্থানীয় থানার পুলিশ সদস্যদেরও ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় দুটি স্থান জাফলং ও কোম্পানীগঞ্জ। সবসময়ই এই দুই এলাকায় পর্যটকদের ভিড় থাকে। ঈদের মতো বড় ছুটিতে ভিড় কয়েকগুণ বেড়ে যায়। সীমান্তবর্তী এই দুই এলাকা দিয়েই ভারত থেকে দেদারছে চোরাই পণ্য আসে। এছাড়া এসব এলাকার পাথুরে নদী ও ছড়া থেকে পাথর লুটপাটও নিত্তকার ঘটনা। গত বছরের ৫ আগস্টের পর চোরাচালান ও পাথর লুট অনেকটা বেড়ে গেছে। প্রশাসনও লুটপাটকারী ও চোরাকারবারীদের ঠেকাতে পারছে না।
জানা যায়, ঈদের পরদিন রোববার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উত্তর রনিখাই ইউনিয়নের পাহাড় থেকে নেমে আসা পাথুরে ছড়া উৎমাছড়া পর্যটনকেন্দ্রে ভিড় করেন অনেক পর্যটক। বিকেলে সেখানে কিছু সংখ্যক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ও স্থানীয় কিছু লোক জড়ো হয়ে পর্যটকদের বের করে দেয়। এ রকম একটি ভিডিও সোমবার রাত থেকে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। জড়ো হওয়া যুবকরা পর্যটকদের বিরুদ্ধে অশ্লীলতা, মদ্যপান ও এলাকার পরিবেশ নষ্টের অভিযোগ করেন।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া পর্যটকদের বের করে দেয়ার একটি ভিডিওতে এক যুবককে বলতে শোনা যায়, 'এই এলাকা আলিমদের এলাকা, দ্বীনদার এলাকা। কিন্তু এইখানে অনেকে অনেক পরিবেশে থেকে আসে। এসে মদ খায়, আরও অনেককিছু করে, এতে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়। তাই আমাদের আবেদন, আপনারা এখানে আর আসবেন না। তাছাড়া এটি পর্যটনভুক্ত এলাকাও নয়'।
ভিডিওতে আরও বলতে শোনা যায়, ‘এই এলাকার আলেম-ওলামা ও স্থানীয়রা সিদ্ধান্ত নিয়েছে উৎমাছড়াকে পর্যটন করা যাবে না। তাই আপনারা যারা এখানে এসেছেন দয়া করে এখান থেকে চলে যান। আপনারা এখানে থেকে এখানের পরিবেশ নষ্ট করবেন না। এই এলাকার পরিবেশ ঠিক রাখার জন্য আমরা এখানে পর্যটকদের আসতে নিরুৎসাহিত করছি আজকের পর আপনারা এখানে আর কোনদিন আসবেন না’।
পর্যটকদের বের করে দেয়ার এই ভিডিও যুক্ত করে পরিবেশবাদী সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম ফেসবুকে লিখেন, ‘একদিকে চলবে পর্যটক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা অন্যদিকে পর্যটনে বাঁধা! দেশের ভেতরে সরকার ঘোষিত সংরক্ষিত এলাকা ও ব্যক্তি বা গোষ্ঠী মালিকানাধীন জায়গা ব্যতীত কোথাও জনসাধারণের প্রবেশে বাঁধা দেয়া মানুষের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ। মানুষের চলাচলে বাঁধা প্রদান ও হুমকি প্রদান দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু সিলেটে এই অপরাধ ইতিপূর্বেও ঘটেছে।
কিম লিখেন, 'বছর কয়েক পূর্বে গোয়াইনঘাট উপজেলায় এক ঈদে মায়াবন নামে পরিচিত যুগীরকান্দি জলারবনে পর্যটকদের উপর হামলা করা হয়েছিল। এরপর থেকে ওই বনে কোন পর্যটক আর পা রাখেনি। স্থানীয় মাদ্রাসা ওই জলার বনের মাছ ভোগ করে বলে এখানে পর্যটক আসুক তা চায় না। অশ্লীলতার দোহাই দিয়ে যুগীরকান্দি বন বা মায়াবন সবার দৃষ্টির আড়ালে নিয়ে যাওয়া হয়। উতমাছড়ার পাথর লুটে ওই মাদ্রাসার সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা তা জানা প্রয়োজন।'
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ বলেন, ‘উৎমাছড়ায় বেড়াতে যাওয়া জন্য নির্দিষ্ট কিংবা উপযুক্ত রাস্তা নেই। এ জন্য পর্যটকেরা স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িঘর মাড়িয়ে যাতায়াত করেন। এতে তারা অসুবিধায় পড়েন। বৈঠকে এমন দাবি করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই এলাকায় মাদক সেবন ও অশ্লীলতা হয়, এমনটিও দাবি করা হয়েছে’।
উৎমাছড়ায় পর্যটকদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, ‘এ অঞ্চলে এমন ঘটনা আগে কখনোই ঘটেনি। বিষয়টি ইউএনওকে তদন্ত করতে বলা হয়েছে। তিনি তদন্ত করে দেখছেন। ইউএনও জানার চেষ্টা করছেন, বিষয়টি কী?’
এদিকে, সিলেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে পর্যটকদের উপর হামলা চালিয়েছে স্থানীয় কিছু লোক। হামলাকারীরা চোরাকারবারের সাথে সম্পৃক্ত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। সোমবার বিকেলে জাফলং বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কবির হোসেন বলেন, স্থানীয় বখাটেরা পর্যটকদের ওপর হামলা করেছে। পরে সাংবাদিক ও ইউপি সদস্য মিলে ঘটনাস্থলেই বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী বলেন, ‘তুচ্ছ বিষয় নিয়ে পর্যটকদের সঙ্গে ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছিল। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গেই সমাধান হয়ে গেছে। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় অনেকের ভুল ধারণা হয়েছে।’
নাফ নদীর ভাঙন যেন থামছেই না। টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের জালিয়া পাড়ায় প্রতিদিনই নদীর গর্ভে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি, ভেঙে যাচ্ছে স্বপ্ন। কিছুদিন আগেও যেখানে ছিল ঈদের প্রস্তুতি, হাসি-আনন্দে মুখর পরিবার—আজ সেখানে কান্না আর হাহাকার। প্রবল জোয়ার ও টানা বৃষ্টির তোড়ে শত শত পরিবার এখন আশ্রয়হীন, চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখে। বসতভিটা হারিয়ে কেউ খোলা আকাশের নিচে, কেউ গাছতলায় কিংবা নদীর পাড়েই মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজছে।
‘নাফের পানি ও তুফানে আমার ঘরবাড়ি ভেসে গেছে। ঈদের দিনেও কোরবানি দিতে পারিনি, ছেলেমেয়েদের নতুন জামা কিনতে পারিনি। এর চেয়ে বড় কষ্ট কিছু হতে পারে না।’-বলেন ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা আবুল আলী। আলোকিত শহরের ঈদ আনন্দের বিপরীতে এই দ্বীপে নেই রান্নার হাঁড়ি, নেই নতুন জামার ঝলক, শুধু অসহায়ত্ব আর কান্নার সুর।
ভাঙনের মধ্যে দাঁড়িয়ে এক বৃদ্ধের আহাজারি
বৃদ্ধ আবুল আলী, কাঁপা গলায় হাতের ইশারায় দেখালেন যে জায়গাটিতে দাঁড়িয়ে আছেন, সেখানেই ছিল তার ছোট্ট ঘর। নাফের পানি একরাতে সব ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, ঘর, চুলা, শোবার জায়গা, কিছুই নাই আর। কতবার ঘর তুলুম? আমাদের দেখার কেউ নাই। বারবার আশার বাণী শুনিয়েছেন প্রশাসন। কেউ আজো কিছু দেয়নি। তবে কিছু করবে এমন আশায় আছি।’
ঈদের রান্নাও থেমে গেছে
বৃদ্ধা চলেমা খাতুন বলেন, ‘নাফের পানি চুলোতে ঢুকে ভেঙ্গে গেছে। এখনো রান্না করতে পারি না। ঈদের দিনেও ছেলে-মেয়েদের মুখে ভাত দিতে পারি নাই। নতুন কাপড় তো দূরের কথা। কোরবানিও করা সম্ভব হয় নাই। সাহায্য আসলেও তা আমরা পাই না।’
শুধু আবুল আলী বা চলেমা খাতুনই নন, এমন গল্প আজ জালিয়াপাড়ার শত শত পরিবারের। ঈদের সময় যখন দেশের অন্যপ্রান্তে আনন্দে মুখর প্রতিটি বাড়ি, তখন এই দ্বীপে ঈদ মানে কষ্ট, ভাঙা ঘর, খালি পেট, আর ভেজা চোখ।
আশ্বাস, প্রতিশ্রুতি—কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপ নেই
ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, বহুবার প্রশাসনের লোকজন এসেছেন, ছবি তুলেছেন, কথা দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে কোনো সহায়তা তারা পাননি। ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন,
‘কেবল ছবি তুললে আর রিপোর্ট করলেই কি ঘর ফিরে পাই? আমরা তো বাস্তব সাহায্য চাই।’ এক দশকের বেশি সময় ধরে চলছে নদীভাঙনের আতঙ্ক। শাহপরীর দ্বীপে নাফ নদীর ভাঙন নতুন নয়। ২০১২ সালের ভয়াবহ সামুদ্রিক জোয়ারে এই দ্বীপের চারটি পাড়ার অনেক ঘরবাড়ি, মসজিদ, দোকান সাগরে বিলীন হয়ে যায়। নোনা পানি নষ্ট করে দেয় কৃষিজমি, নিশ্চিহ্ন হয় গ্রাম, গৃহহীন হয়ে পড়ে হাজারো মানুষ। কিন্তু এত বড় অভিজ্ঞতার পরও দীর্ঘমেয়াদি কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
২০২৫ সালের এই ঈদুল আজহার সময়, ইতিহাস যেন আবার নিজের পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে—আর এই পুনরাবৃত্তি শুধু কষ্টের, শুধু কান্নার। ধ্বংসের চিত্র এখনো স্পষ্ট জালিয়াপাড়ার বিভিন্ন স্থানে এখনো পড়ে আছে ভাঙা কাঠামো, উপড়ে যাওয়া গাছের শিকড়, পানির নিচে তলিয়ে যাওয়া ঘরের চিহ্ন। পথচারীদের চোখে-মুখে শোক, মুখে একটাই প্রশ্ন—‘এই ভাঙন কি আর থামবে না?’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন জানান, শাহপরীর দ্বীপের জালিয়া পাড়ায় যেসব বাংলাদেশি নাফ নদীর ভাঙনে বাস্তুচ্যুত হচ্ছে তাদের তালিকা করে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার চন্দনা নদী থেকে মো. আসলাম প্রামানিক (৪২) নামে এক ইজিবাইক চালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে কালুখালী থানা পুলিশ।
বুধবার (১১ জুন) সকাল ৭টার দিকে উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের চন্দনা ব্রিজের নিচ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত আসলাম শেখ পাংশা উপজেলার চরলক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং পিয়ার আলী প্রামানিকের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসলাম শেখ গত মঙ্গলবার ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। রাত পর্যন্ত তিনি আর বাড়িতে ফেরেননি। বুধবার সকালে স্থানীয়রা চন্দনা ব্রিজের নিচে একটি মরদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে মরদেহটি আসলাম শেখের বলে শনাক্ত করেন।
এ বিষয়ে রাজবাড়ীর সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) দেবব্রত সরকার জানান, “প্রথমে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পরে পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করছি, ইজিবাইক ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে আসলাম শেখকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।”
পুলিশ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে এবং প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন নিহত হয়েছে।
সোমবার রাতে উপজেলার তারাবো এলাকায় এ দূর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, তারাবো সুলতানবাগ এলাকার দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সাবেক রূপগঞ্জ প্রতিনিধি মরহুম আবুল হাসান আসিফের ছেলে শাহরিয়ার হাসান আকাশ (২৯) ও অটোরিক্সা চালক অজ্ঞাত (৩৫)।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, সোমবার রাতে তারাবো বিশ্বরোড এলাকা থেকে অটোরিক্সা যোগে তারাবো সুলতানবাগ এলাকার বাড়িতে ফিরছিলেন শাহরিয়ার হাসান আকাশ (২৯) ও তার বন্ধু সায়মন (২৯), তামিম সরকার (২৯)। পথিমধ্যে সাইফিং ফ্যাক্টরীর সামনে একটি হাইয়েস মাইক্রোবাসের সাথে অটোরিক্সাটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে অটোরিক্সাটি দুমড়েমুচড়ে যায়।
এ সময় ঘটনাস্থলেই নিহত হয় অটোরিক্সা চালক অজ্ঞাত (৩৫) এবং আহত হয় অটোরিক্সার যাত্রী শাহরিয়ার হাসান আকাশ (২৯) ও তার বন্ধু সায়মন (২৯), তামিম সরকার (২৯)। তাদের মধ্যে শাহরিয়ার হাসান আকাশ ও তার বন্ধু তামিম সরকারকে গুরুত্বর আহত অবস্থায়
স্থানীয়রা উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা শাহরিয়ার হাসান আকাশকে মৃত ঘোষনা করেন।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, দূর্ঘটনার পর হাইয়েস মাইক্রোবাসের চালক মাইক্রোবাসটি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয় নি।
মন্তব্য