পুঁজিবাজারে প্রায় চার মাসের দর সংশোধনের আভাস আরও স্পষ্ট হলো টানা ছয় দিনের উত্থানে। দীর্ঘ হতাশার অবসান ঘটিয়ে শেয়ারগুলো এই চার মাসে হারিয়ে ফেলা দর একটু একটু করে ফিরে পাচ্ছে।
গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া দর সংশোধনের পর এমন টানা সূচক বৃদ্ধি আর দেখা যায়নি।
এর আগে গত ৩১ আগস্ট থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা আট দিন সূচক বেড়েছিল। ১২ সেপ্টেম্বরের দর সংশোধন শুরুর দিন সূচক ৭৪ পয়েন্ট বেড়েও পরে কমে যায় ৫৬ পয়েন্ট। বিনিয়োগকারীরা ভেবেছিল টানা উত্থানের পর দুয়েক দিন পতন এমন কোনো ঘটনা নয়। কিন্তু এর পর ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়, দর সংশোধন শুরু হয়েছে।
এই সংশোধনের আগে জুনের শেষ থেকে আড়াই মাস টানা বেড়েছিল পুঁজিবাজার। এমন উত্থানের পর সংশোধন অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু এই দর সংশোধনের সময় বেশ কিছু ইস্যু সামনে আসে, যা বাজারে আস্থার সংকট তৈরি করে।
পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ নিয়ে দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যকার মতভিন্নতার বিষয়টি সামনে চলে আসার পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি তৈরি হয়। এর মধ্যে বছর শেষে ব্যাংক-বিমা-আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় চাপসহ আরও কিছু বিষয় সামনে চলে আসে। যে কারণে অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে টানা দরপতন হতে থাকে।
ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে সূচক ও শেয়ারদর একটু একটু করে বাড়তে থাকলেও সেটি তেমন গুরুত্ব পায়নি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।
বছরের শেষ চার কর্মদিবসের তিন দিন সূচক বৃদ্ধির পর নতুন বছরের প্রথম পাঁচ কর্মদিবসেও তা অব্যাহত থাকে।
এই পাঁচ দিনেই সূচক বাড়ল ২৩০.৭৯ পয়েন্ট আর নয় দিনে বাড়ল ৩৫৭.৫৭ পয়েন্ট।
এর আগে গত ৩১ আগস্ট থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা আট দিন সূচব বেড়েছিল ৩৭৮.৪৮ পয়েন্ট।
কেবল সূচক নয়, লেনদেনের খরাও কাটতে শুরু করেছে। গত ২১ নভেম্বরের পর লেনদেন প্রথমবারের মতো দেড় হাজার কোটি টাকার ঘর ছাড়াল।
সেদিন লেনদেন ছিল এক হাজার ৭৮৬ কোটি ২৭ লাখ ১৮ হাজার টাকা। ৩৩ কর্মদিবস পর বৃহস্পতিবার লেনদেন হলো এক হাজার ৬৮৩ কোটি ৪৭ লাখ ৬৮ হাজার টাকা।
আগের দিন লেনদেন ছিল ১ হাজার ৪১৪ কোটি ১৬ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। এক দিনেই লেনদেন বেড়েছে ২৬৯ কোটি ৩১ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
দিন শেষে সূচক বেড়েছে ৫৭.৫১ পয়েন্ট। সূচক দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৯৮৭.৪৫ পয়েন্ট।
তবে সূচক বাড়লেও বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমেছে। দিন শেষে বেড়েছে ১৬৪টি কোম্পানির দর, কমেছে ১৭৯টির দর। অপরিবর্তিত ছিল ৩৫টির।
সূচকের এই অবস্থান গত ৭ ডিসেম্বরের পর সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসিকে নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বৈঠকের দিন উত্থানে সেদিন সূচক ছিল ৭ হাজার ৪৮.৯৯ পয়েন্ট।
এদিন ৯টি কোম্পানির দর বেড়েছে এক দিনে যত বাড়া সম্ভব ততটাই। এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে দুটি ছাড়া বাকিগুলোর দর টানা কমছিল।
বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমলেও সূচক বাড়ার প্রধান কারণ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের দর বৃদ্ধি। ব্যাংক খাতও সূচক বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে।
এ ছাড়া প্রকৌশল খাতের ৫০ শতাংশ, মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৪৫ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে।
বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারালেও লেনদেনে সেরা ছিল বিমা খাত। বেশ কয়েক মাস পর এক দিনে আড়াইশ কোটি টাকা ছাড়াল এই খাতের লেনদেন। এর মধ্যে আবার জীবন বিমা খাতে লেনদেন ছিল সাধারণ বিমার প্রায় দ্বিগুণ।
এরপর যথাক্রমে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, ব্যাংক, ওষুধ ও রসায়ন, বস্ত্র ও প্রকৌশল খাত ছিল পরের অবস্থানে।
সব মিলিয়ে ৭টি খাতে লেনদেন হয়েছে একশ কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে বিমা ও বিবিধ খাতে লেনদেন ছিল দুই শ কোটি টাকার বেশি।
সূচক বাড়িয়েছে যেসব কোম্পানি
সূচক বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির। শেয়ারদর ২.৯৭ শতাংশ বাড়ার পর কোম্পানিটি সূচকে যোগ করেছে ৫.২৫ পয়েন্ট।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা লাফার্জ হোলসিম সিমেন্টের পর ৪.৭৬ শতাংশ বাড়ায় সূচকে যোগ হয়েছে ৫.১৯পয়েন্ট।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের তিতাস গ্যাসের শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৯৫ শতাংশ। এতে সূচক বেড়েছে ৪.৪২ পয়েন্ট।
বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির দর বেড়েছে ৭.৯ শতাংশ। এতে সূচক বেড়েছে ৩.৩১ পয়েন্ট।
টেলিকম খাতের গ্রামীণফোন সূচক উত্থানে ৩.১ পয়েন্ট, বিএটিবিসি ২.৮ পয়েন্ট। ডেল্টা লাইফ ২.৬৩ পয়েন্ট, পাওয়ারগ্রিড ২.৪১ পয়েন্ট, এনআরবিসি ২.৩২ পয়েন্ট আর ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ ২.৩১ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানির কারণেই সূচকে যোগ হয়েছে ৩৩.৭৪ পয়েন্ট।
অন্যদিকে রেনাটার দর ০.৬৬ পয়েন্ট কমায় সূচক কমেছে ১.০১ পয়েন্ট। সোনালী পেপার, জেনেক্স ইনফোসিস, ইউনিলিভার রেকিট বেনজিনজার, ফরচুর সুজ, ন্যাশনাল লাইফ, লাভেলো আইসক্রিম, ফারইস্ট লাইফ ও সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল সূক কিছুটা কমেছে। তবে এই ১০টি কোম্পানি মিলিয়ে সূচক খুব বেশি কমাতে পেরেছে-এমন নয়।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
বৃহস্পতিবার সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ বেড়েছে ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপয়ার্ডের দর। এতে ১২ টাকা দরের শেয়ার দর পৌঁছেছে ১৩ টাকা ২০ পয়সায়।
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার দর আবার দিনের দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়েছে। কোম্পানিটির দর ৯.৮৯ শতাংশ বেড়ে এক শ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
লভ্যাংশ ও প্রথম প্রান্তিক ঘোষণার পর ১০ কর্মদিবসে ৪৯ টাকা ৯০ পয়সা থেকে দ্বিগুণের বেশি বেড়ে হয়ে গেছে ১০৪ টাকা ৬০ পয়সা।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা ডেসকোর শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৯৭ শতাংশ, চতুর্থ স্থানে থাকা তিতাস গ্যাসের দর ৯.৯৪ শতাংশ, পঞ্চম শতাংশে থাকা মীর আক্তার হোসেন লিমিটেডের দর বেড়েছে ৯.৯২ শতাংশ।
আরও চারটি কোম্পানির শেয়ার দর এদিন নয় শতাংশের বেশি বেড়েছে। এর মধ্যে আলহাজ্ব টেক্সটাইলের দর ৯.৮৭ শতাংশ, বসুন্ধরা পেপার মিলসের দর ৯.৮৭ শতাংশ, এনআরবিসি ব্যাংকের দর দর ৯.৮১ শতাংশ ও ডেল্টা লাইফের শেয়ার দর বেড়েছে ৯.০৩ শতাংশ।
দশম স্থানে থাকা বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির দর বেড়েছে ৭.৯০ শতাংশ। এই কোম্পানিটির দরও এর চেয়ে বেশি বাড়া সম্ভব ছিল না এক দিনে।
আরও দুটি কোম্পানির দর ৭ শতাংশের বেশি, ২টির দর ৬ শতাংশের বেশি, ৪টির দর ৫ শতাংশের বেশি, ৮টির দর ৪ শতাংশের বেশি, ১১টির দর ৩ শতাংশের বেশি, ২৩টির দর বেড়েছে ২ শতাংশের বেশি।
দর পতনের শীর্ষ ১০
সবচেয়ে বেশি শেয়ার দর হারিয়েছে লাভেলো আইসক্রিমের দর ৮.৭৮ শতাংশ। পাঁচ শতাংশের বেশি শেয়ার দর হারিয়েছে তিনটি কোম্পানির। এর মধ্যে ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দর ৫.৪০ শতাংশ, এমারেল্ড অয়েলের দর ৫.৩৪ শতাংশ এবং অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের দর কমেছে ৫.০২ শতাংশ।
চার শতাংশের বেশি শেয়ার দর কমেছে ছয়টি কোম্পানির। এর মধ্যে সিভিও পেট্টোকেমিক্যালের দর ৪.৭৬ শতাংশ, ঢাকা ডাইংয়ের দর ৪.৭৪ শতাংশ, সুহিৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের ৪.৫০ শতাংশ, সোনালী পেপারের দর ৪.২৪ শতাংশ, পেপার প্রসেসিংয়ের দর ৪.১৪ শতাংশ এবং ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টের দর কমেছে ৪.১১ শতাংশ।
আরও ১৫টির দর ৩ শতাংশের বেশি, এবং ৩৫টির দর কমেছে ২ শতাংশের বেশি।
লেনদেনে সেরা যেসব কোম্পানি
টাকার অংকে এদিন সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সে। ১১৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকায় কোম্পানিটির ৫৬ লাখ ৪৭ হাজার ৩০৮ টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারে লেনদেন হয়েছে ১১২ কোটি ১২ লাক টাকা। হাতবদল হয়েছে ৭৪ লাখ ৫৫ হাজার ৫০৩টি শেয়ার।
এছাড়া বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনে ৭৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, পাওয়ারগ্রিডের ৬৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা, লাফার্জ হোলসিমে ৪৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা, ফরচুন সুজে ৪০ কোটি ৭১ লাখ টাকা, ওয়ান ব্যাংকে ৩৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানিতে ৩৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা এবং লাভেলো আইসক্রিমে লেনদেন হয়েছে ৩১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
দশম স্থানে থাকা অ্যাকটিভ ফাইনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রধান সূচকের উত্থান হলেও সার্বিক সূচক কমেছে চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১ ও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১, কমেছে ৬৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১৩ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ৭০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০, কমেছে ১৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৭৩ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:টানা দুই দিন উত্থানের পর তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও ঢাকার পুঁজিবাজারে বইছে সুবাতাস।
সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৭ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট করে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগেরই দাম বেড়েছে। ১০৯ কোম্পানির দরপতন এবং ৫৩ কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৩০ কোম্পানির।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও বইছে চনমনে হাওয়া। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১০২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৭ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭, কমেছে ৫১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে সিএসইতে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবারের লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে; বেড়েছে সবকটি সূচক।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে পতন দিয়ে শুরু হয়েছে লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে এবং বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় দাম বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের। দরবৃদ্ধির ২৪৫ কোম্পানির বিপরীতে দর কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দিনের শুরুতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৯০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট। সূচক কমলেও বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ১০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৫, কমেছে ২৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম দুই ঘণ্টায় লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গত সপ্তাহের উত্থানের ধারা ধরে রেখে এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে থাকলেও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৯, কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর ৩০ মিনিটে ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি টাকা। ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২২, কমেছে ৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম আধা ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৩০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:ঢাকার পুঁজিবাজারে গত এক সপ্তাহের লেনদেনে বেড়েছে সূচক ও মূলধন। তবে পুঁজিবাজার ইতিবাচক দিকে মোড় নিলেও কমেনি মন্দ কোম্পানির শেয়ারের দৌরাত্ম্য।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাপ্তাহিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত পাঁচ কার্যদিবসে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় থাকা দশ কোম্পানির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানি মাত্র দুটি।
বাকি আট কোম্পানির মধ্যে মধ্যম মানের ‘বি’ ক্যাটাগরির সংখ্যা তিন এবং লভ্যাংশ না দেওয়া এমন মন্দ কোম্পানির সংখ্যা পাঁচ।
সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে শীর্ষে উঠে এসেছে নিউ লাইন ক্লোথিংস লিমিটেড। কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের সর্বশেষ লভ্যাংশ দিয়েছে ২০২১ সালে।
কোম্পানিটির সর্বশেষ বার্ষিক সভা হয়েছে ২০২২ সালে। এরপর থেকে বিনিয়োগকারীদের কোনো ধরনের লভ্যাংশ না দিয়ে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে আছে কোম্পানিটি।
লেনদেনে শীর্ষ কোম্পানিগুলোর মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে থাকা অ্যাপোলো ইস্পাত কমপ্লেক্স লিমিটেড কোম্পানিটিও ‘জেড’ ক্যাটাগরির। কোম্পানিটি ২০১৬ সালের পর আর কোনো লভ্যাংশ না দিয়েও হয়ে উঠেছে বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, ‘তারল্য সংকটের মধ্যে সূচকের উত্থান হওয়ায় দ্রুত মুনাফা পাওয়ার আশায় অনেক বিনিয়োগকারী খারাপ শেয়ারে অর্থলগ্নি করছেন। এতে করে মন্দ কোম্পানির শেয়ার ফুলেফেঁপে উঠলেও ঝুঁকি বাড়ছে পুঁজিবাজারে।’
তিনি বলেন, ‘বাজারে ভুল তথ্য ছড়িয়ে সুবিধাভোগী কিছু কোম্পানি এসব মন্দ কোম্পানিকে টার্গেট করেই অর্থ লোপাটের পরিকল্পনা করছে। শুধু কোম্পানিই নয়, বাজার অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে অনেক ব্রোকারেজ হাউসও জড়াচ্ছে কারসাজিতে।’
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি প্রতারণামূলক সফটওয়্যার ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীদের প্রায় ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে চার ব্রোকারেজ হাউসের বিরুদ্ধে।
সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে পিছিয়ে আছে ব্যাংক খাত। পাঁচ কর্মদিবসে এ খাতে শেয়ারের দাম কমেছে ২৩ দশমিক ৭২ শতাংশ। গত সপ্তাহে এ খাতের সূচক ৬৪৮ পয়েন্ট থেকে কমে ৪৯৪ পয়েন্টে নেমে এসেছে।
ব্যাংকের পাশাপাশি দাম কমেছে বিমা খাতেও। পাঁচ কার্যদিবসে বিমা খাতে শেয়ারের দাম কমেছে ১৬ দশমিক ৬২ শতাংশ।
ব্যাংক-বিমা পিছিয়ে পড়লেও ভালো অবস্থানে রয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার। এ খাতে শেয়ারের দাম বেড়েছে ৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ। এ ছাড়া জ্বালানি খাতে শেয়ারের দাম বেড়েছে ৩৫ শতাংশের ওপরে।
সর্বোপরি পাঁচ কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ২২ পয়েন্ট, ব্লু-চিপ ডিএস-৩০ বেড়েছে ৬ এবং শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএস বেড়েছে ৭ পয়েন্ট।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে ১৮৩ কোম্পানির দাম বেড়েছে, কমেছে ১৬৬টির দাম এবং অপরিবর্তিত আছে ৪৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে সপ্তাহের ব্যবধানে গড় লেনদেন ১ শতাংশের মতো কমলেও মোট বাজার মূলধন বেড়েছে ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
প্রথাগত লেনদেনের বাইরেও সপ্তাহজুড়ে ব্লক মার্কেটে ১০৬ কোটি টাকার শেয়ার বেচাকেনা হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শেয়ার বিক্রি করে এসিআই লিমিটেড। কোম্পানিটি পাঁচ দিনে ব্লক মার্কেটে ২৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করে।
সপ্তাহব্যাপী লেনদেনে সবচেয়ে বেশি রিটার্ন আসে সিরামিক খাত থেকে। রিটার্নের হিসাবে তলানিতে আছে আর্থিক খাত, জীবনবিমা ও সাধারণ বিমা। সর্বোপরি মার্কেট রিটার্ন বেড়েছে দশমিক ৫০ শতাংশ।
গত সপ্তাহে প্রথমবারের মতো পুঁজিবাজার সংস্কারে গঠিত টাস্কফোর্স বিএসইসির কাছে নিজেদের প্রাথমিক দুটি সুপারিশ জমা দেয়।
মার্জিন ঋণ ও মিউচুয়াল ফান্ড সংক্রান্ত এসব সুপারিশ আমলে নেওয়া হলে শেয়ারবাজারের অস্থিরতা অনেকটাই কমে আসবে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে। বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বাড়ে ১০ পয়েন্ট।
শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএস ৩ এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ বাড়ে ৪ পয়েন্ট।
লেনদেনের শুরুতেই দাম বাড়ে ১৭৭ কোম্পানির, কমে ১৩৩টির এবং অপরিবর্তিত থাকে ৭৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে ১৭০ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
লেনদেনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক বাড়ে ২৮ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ১১০ কোম্পানির মধ্যে দাম বাড়ে ৭০, কমে ২২ এবং অপরিবর্তিত থাকে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম। মোট শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন ছাড়ায় ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য