হাজারীবাগ থেকে সাভারে স্থানান্তরিত চামড়া শিল্পনগরীর হাজার সমস্যা থাকলেও চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। করোনা মহামারির মধ্যেও অব্যাহত আছে এ খাতের ইতিবাচক ধারা। তবে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন চোখ রাঙাচ্ছে; আগামী দিনগুলোতে কী হবে, তা নিয়ে আতঙ্কে এ খাতের রপ্তানিকারকরা।
দীর্ঘদিন ধরে সংকটে ছিল এ খাতের রপ্তানি। আশা করা হয়েছিল, সাভার চামড়া শিল্পনগরী চালুর পর চামড়াশিল্পের নতুন পথচলা শুরু হবে; বাড়বে রপ্তানি। তবে শুরুতেই তা হোঁচট খায়। এই শিল্পনগরী রপ্তানি বাড়াতে কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা এই নগরী এমনকি বন্ধ করে দেয়ারও সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। পরিবেশ অধিদপ্তরও একই অবস্থান নিয়েছে।
তারপরও চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে আগের চেয়ে বেশি বিদেশি মুদ্রা দেশে আসছে। করোনাভাইরাস মহামারিতে এ খাতের রপ্তানিতে ধস নেমেছিল। তবে এখন মেঘ কাটতে শুরু করেছে। আবারও সুদিন ফিরে আশার আলো দেখাচ্ছে খাতটি। চামড়াশিল্প নগরীর সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান হলে এ খাতের রপ্তানি আরও বাড়বে বলে আশা করছেন রপ্তানিকারকরা।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে ৫৬ কোটি ৪০ লাখ ডলারের বিদেশি মুদ্রা দেশে এনেছেন এ খাতের রপ্তানিকারকরা। বর্তমান বিনিময়হার (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ৮০ পয়সা) হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ৪ হাজার ৮৩৯ কোটি টাকা, যা ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২৬ দশমিক ৪১ শতাংশ বেশি। আর নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১ দশমিক ২৭ শতাংশ বেশি।
আর এই আয়ের ৬১ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকাই এসেছে জুতা রপ্তানি থেকে।
২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে এই খাত থেকে ৪৪ কোটি ৬১ লাখ ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ।
রপ্তানিকারকরা আশার কথা শুনিয়ে বলেছেন, তৈরি পোশাকের মতো চামড়া খাতেও প্রচুর অর্ডার আসছে। আগামী দিনগুলোতেও রপ্তানির বর্তমান ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের প্রধান বাজার হচ্ছে ইউরোপের দেশগুলো। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, জাপানসহ আরও কয়েকটি দেশে রপ্তানি হয় এই পণ্য।
মহামারি করোনার কারণে প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করে এই দেশগুলো। ছোট-বড় সব ধরনের শপিং মল খুলে যায়। মানুষজনও পুরোদমে কেনাকাটা করতে থাকে। অর্থনীতিতে আবার গতি ফিরে আসে। অন্যান্য পণ্যের মতো চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের চাহিদাও বাড়তে থাকে। সে কারণেই রপ্তানি বাড়ছে বলে জানিয়েছেন রপ্তানিকারকরা।
লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে জুতার মোট বাজারের ৫৫ শতাংশ চীনের দখলে। ভারত ও ভিয়েতনামেরও ভালো অবস্থান আছে। বিশ্বে জুতার বাজারে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮তম। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের এ খাতে অবদান মাত্র ১ দশমিক ৭ শতাংশ।
করোনার পর তৈরি পোশাকের মতো চামড়া খাতের রপ্তানিতেও নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। প্রধান রপ্তানিকারক দেশ চীনের কিছু অর্ডার বাংলাদেশে আসতে শুরু করেছে। ভিয়েতনাম থেকেও অর্ডার আসছে। এসব সুযোগ ভালোমতো কাজে লাগাতে পারলে ভবিষ্যতে রপ্তানি আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা।
প্রতি বছর চামড়া খাত থেকে যে বিদেশি মুদ্রা দেশে আসে, তার প্রায় ১৫ শতাংশ রপ্তানি করে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার। প্রতিষ্ঠানটি জার্মানি, ইতালিসহ ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশে জুতা রপ্তানি করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাতেও জুতা রপ্তানি শুরু করেছে অ্যাপেক্স।
অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে চামড়া খাতের রপ্তানিতে বেশ খারাপ অবস্থা চলছিল। করোনার ধাক্কায় তা আরও নাজুক হয়। তবে এখন আশার আলো দেখা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে ভালোই যাবে আগামী দিনগুলো।’
তিনি বলেন, ‘জুতাসহ চামড়াজাত সব পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। দুই বছর ধরে যারা কোনো জুতা বা চামড়ার পণ্য কেনেনি, তারা এখন কিনছে। সে কারণেই রপ্তানি বাড়ছে।’
আগামী দিনগুলোতে এ খাতের রপ্তানি আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করে নাসিম মঞ্জুর বলেন, ‘সব দেশের সঙ্গে বিমান চলাচল শুরু হয়েছিল। বিমানবন্দরগুলোতে অবস্থিত বড় বড় ব্র্যান্ডের দোকানগুলো খুলেছিল; লোকজনের যাতায়াত বেড়েছিল। বিক্রিও হচ্ছিল প্রচুর।’
নাসিম মঞ্জুর বলেন, ‘ভ্রমণের সময় লোকজন চামড়ার তৈরি নানা ধরনের লাগেজ ব্যবহার করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় সেগুলোরও চাহিদা বেড়েছিল।’
‘সবকিছু মিলিয়ে চামড়া খাতে আমরা আশার আলো দেখছি। আশা করছি, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছর থেকেই আমরা এ খাত থেকে আগের মতো বিদেশি মুদ্রা আয় করতে পারব।’
তবে সাভার চামড়া শিল্পনগরী নিয়ে ক্রেতারা এখনও খুশি নয় জানিয়ে মেট্রোপলিটন চেম্বারের সাবেক সভাপতি নাসিম মঞ্জুর জানান, সাভার চামড়া শিল্পনগরীর পরিবেশ নিয়ে মোটেই খুশি নন ক্রেতারা। ওখানকার চামড়া দিয়ে কোনো পণ্য উৎপাদন করলে ক্রেতারা কেনেন না। তাই বাধ্য হয়ে শিল্পনগরীর বাইরে তৃতীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কাঁচামাল কিনে পণ্য উৎপন্ন করে থাকেন রপ্তানিকারকরা।
করোনার পর চামড়া রপ্তানিতে নতুন করে যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, সেটা ধরে রাখতে সাভার শিল্পনগরীর পরিবেশ উন্নয়নে সরকার ও ট্যানারি শিল্পমালিকদের জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান এই শিল্পোদ্যোক্তা।
করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন প্রসঙ্গে নাসিম মঞ্জুর বলেন, ‘এটাই এখন আমাদের বড় চিন্তার বিষয়। বুঝতে পারছি না কী হবে? যদি আবার সব কিছু বন্ধ হয়ে যায়, দেশে দেশে লকডাউন শুরু হয়, তাহলে তো আমাদের রপ্তানিও কমে যাবে।’
চামড়া ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান নিউজবাংলাকে বলেন, চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি দামও খানিকটা বেড়েছে। সে কারণেই রপ্তানি আয় বেশি আসছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। অনেক দিন পর চামড়া খাতের রপ্তানিতে ভালো প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। এই সুযোগটিই আমাদের কাজে লাগাতে হবে। আর যদি সেটা আমরা করতে পারি, তাহলে আমরা এই খাতকে আবার আগের অবস্থায় নিয়ে যেতে পারব।’
জুতা রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বে-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের রপ্তানিতে ঝিলিক দেখা যাচ্ছে। কারণ চীন থেকে সরে কিছু ক্রয়াদেশ বাংলাদেশে এসেছে। নতুন কিছু ক্রেতাও বাংলাদেশে এসেছে। এরা ভবিষ্যতেও ক্রয়াদেশ দেবে। ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রে চাহিদা বাড়ছে। সব মিলিয়ে আগামী দিনগুলোতে ক্রয়াদেশ আরও বাড়বে বলে আশা করা যায়।’
রপ্তানির ইতিহাস
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে ১১৩ কোটি ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তা বেড়ে ১১৬ কোটি ডলারে দাঁড়ায়।
২০১৬-১৭ অর্থবছরে আয় আরও বেড়ে হয় ১২৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার, যা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে চামড়াশিল্প থেকে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি আয়।
এরপর থেকেই ধস নামে এ খাতের রপ্তানিতে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তা ১০৮ কোটি ৫৪ লাখ ডলারে নেমে আসে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা আরও কমে ১০২ কোটি ডলারে নামে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে তা নামে ৭৯ কোটি ৭৬ লাখ ডলারে।
বর্তমান হালচাল
মহামারির মধ্যেও ২০২০-২১ অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি থেকে ৯৪ কোটি ১৭ লাখ ডলারের বিদেশি মুদ্রা দেশে এনেছেন রপ্তানিকারকরা। টাকার হিসাবে এই অর্থের পরিমাণ ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি। আগের বছরের চেয়ে রপ্তানি বেড়েছিল ১৮ শতাংশ। অর্থবছরের প্রথম ভাগে এ খাতের রপ্তানিতে ধস নামলেও দ্বিতীয় ভাগে এসে তা ঘুরে দাঁড়িয়ে প্রবৃদ্ধিতে ফিরে আসে।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের শুরু থেকেই চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে ইতিবাচক ধারা লক্ষ্য করা যায়।
প্রতি মাসেই বেড়েছে রপ্তানি। সবশেষ তথ্যে দেখা যাচ্ছে, অর্থবছরের প্রথমার্ধে অর্থাৎ জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে এ খাতের রপ্তানি থেকে ৫৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার দেশে এসেছে। প্রবৃদ্ধি হয়েছে সাড়ে ২৬ শতাংশ। লক্ষ্যের চেয়ে আয় বেড়েছে ১১ দশমিক ২৭ শতাংশ।
এই আয়ের মধ্যে ৩৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার এসেছে চামড়ার জুতা রপ্তানি থেকে। ১৫ কোটি ডলার এসেছে চামড়া দিয়ে তৈরি ব্যাগ, লাগেজ, মানিব্যাগ, বেল্টসহ অনান্য পণ্য রপ্তানি করে। কাঁচা ও ওয়েট-ব্লু চামড়া রপ্তানি করে এই ছয় মাসে আয় হয়েছে ৭ কোটি ডলারের মতো।
সম্ভাবনা যেন হাতছাড়া না হয়
চামড়া খাতকে এক সময় সম্ভাবনাময় মনে করা হলেও এটি ধীরে ধীরে খারাপের দিকে যাচ্ছিল। দ্বিতীয় শীর্ষ এই রপ্তানি খাত এখন চতুর্থ স্থানে নেমে এসেছে।
রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে চামড়াশিল্প নগরী সাভারে স্থানান্তর নিয়ে দীর্ঘ জটিলতার কারণেই এ শিল্পের এই হাল বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।
পরিবেশবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে ২০০৩ সালে হাজারীবাগ থেকে চামড়া শিল্পনগরী সাভারে স্থানান্তরে প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। তিন বছরের মধ্যে প্রকল্প শেষের কথা ছিল। তবে দেড় যুগ শেষ হতে চললেও এই শিল্পনগরী এখনও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠেনি।
প্রকল্প শেষ না হলেও ২০১৭ সালে উচ্চ আদালত হাজারীবাগের চামড়া কারখানা বন্ধের ঘোষণা দেয়। ফলে সব কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে বেশ কিছু চামড়া কারখানার বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) সনদ ছিল। এ সনদের সুবাদে তারা জাপান, কোরিয়াসহ ইউরোপ-আমেরিকায় চামড়া রপ্তানি করতে পারত। হাজারীবাগে কারখানা বন্ধ হওয়ায় সেই সনদ ও বায়ার (বিদেশি ক্রেতা) হারায় চামড়াশিল্প কারখানাগুলো।
এত দীর্ঘ সময়েও সাভারের চামড়া শিল্পনগরী পূর্ণাঙ্গভাবে প্রস্তুত না হওয়ায় এখনও এলডব্লিউজির সনদ ফিরে পায়নি কারখানাগুলো। একই সঙ্গে নতুন বাজার সৃষ্টি হয়নি।
সনদ না থাকায় জাপান, কোরিয়াসহ ইউরোপ-আমেরিকায় এলডব্লিউজির আওতায় চামড়া রপ্তানি করতে পারছে না কারখানাগুলো।
আর এ বিধিনিষেধের কারণে এসব কারখানা থেকে কাঁচামাল নিয়ে পণ্য উৎপন্ন করে সে পণ্য রপ্তানিও করতে পারছে না রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো।
অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, ‘এখন যে সুযোগটি আমাদের এসেছে, সেটা যদি হাতছাড়া হয়ে যায়, তাহলে হয়তো আমাদের চামড়াশিল্প আর কোনো দিনই ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। তাই সরকারের প্রতি আমার অনুরোধ, সাভার চামড়া শিল্পনগরীকে পরিবেশবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে যা কিছু করা প্রয়োজন, তাই যেন করা হয় এবং তা যেন দ্রুততর সময়ের মধ্যে করা হয়।’
আরও পড়ুন:National Single Window (NSW) প্রকল্প কর্তৃক “Celebrating Half a Million CLPs & Seminar on Paperless Customs & Conferring e-Return Champion Certificate to the Tax Payers” শীর্ষক অনুষ্ঠান ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, লা মেরিডিয়ান, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, মাননীয় উপদেষ্টা, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জনাব শেখ বশির উদ্দিন, মাননীয় উপদেষ্টা, বাণিজ্য মন্ত্রনালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রনালয়, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত জনাব লুৎফে সিদ্দিকী এবং মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জনাব মো: আবদুর রহমান খান, এফসিএমএ, সচিব, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ এবং চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, দপ্তর/সংস্থার প্রধানগণ/উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা BSW প্ল্যাটফর্মের ইতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে আলোকপাত করেন।
BSW সিস্টেমটি বাণিজ্য প্রক্রিয়া সহজ ও স্বচ্ছ করার মাধ্যমে আমদানি ও রপ্তানিকারকগণের খরচ হ্রাস করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
গত ০২ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রি: তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে BSW পোর্টাল উদ্বোধন ও আংশিকভাবে সিস্টেমটি চালু করা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে, সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট ইস্যুকারী ১৯ টি সংস্থার মধ্যে ৭ টি সংস্থার (DoE, DGDA, EPB, DoEX, BNACWC, BEPZA and BEZA) ক্ষেত্রে Go-Live এর কার্যক্রম শুরু করা হয়। ইতোমধ্যে অন্য ১২ টি সংস্থাও (BAEC, BGMEA, BKMEA, BSTI, BTRC, CAAB, , DLS, , DoF, PQW, , BAERA, BIDA, CCIE) BSW সিস্টেমে যুক্ত হয়েছে এবং অনলাইনে সাটির্ফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট প্রদানের কার্যক্রম সম্পাদন করছে।
বিগত ২ জুলাই ২০২৫ তারিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড হতে পরিপত্র জারীর মাধ্যমে সকল সংস্থার (১৯ টি) ক্ষেত্রেই BSW সিস্টেম এর মাধ্যমে CLP প্রদানের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। BSW এর মাধ্যমে এ পযর্ন্ত মোট ৫,৭৮,৪৯১টি সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট অনলাইনে ইস্যু করা হয়েছে।
অনলাইনে ইস্যুকৃত এসব সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিটসমূহের মধ্যে ৮৪ শতাংশের ক্ষেত্রে আবেদন দাখিলের ১ ঘণ্টার মধ্যে এবং ৯৫ শতাংশের ক্ষেত্রে আবেদন দাখিলের ১ দিনের মধ্যেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পাদিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য মুহূর্তগুলো:
• Celebrating Half a Million CLPs: BSW প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ইতোমধ্যে ০৫ (পাঁচ) লক্ষ সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট (CLP) ইস্যুর মাইলফলক অতিক্রম করায়, এ কৃতিত্বপূর্ণ অর্জন উদযাপন করা হয়। এছাড়াও BSW এর কার্যকারিতা এবং ব্যবসায়ী ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য এর প্রত্যাশিত সুবিধাগুলো তুলে ধরা হয়। অধিকন্তু সার্টিফিকেট, লাইসেন্স ও পারমিট (CLP) ইস্যুর ফলে বিভিন্ন অংশীজনদের অভিজ্ঞতা ভিডিও ক্লিপের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়।
• Seminar on Paperless Customs: বাংলাদেশের বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পেপারলেস Customs. WTO –TFA Agreement এর আর্টিকেল ১০.৪ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভবিষ্যৎ কাস্টমস এর রূপরেখা হিসেবে Paperless Customs বিষয়ে একটি উপস্থাপনা প্রদান করা হয়। Paperless Customs বাস্তবায়ন হলে পন্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে জবাবদিহিতা ও কার্যকারিতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে ।
• Conferring e-Return Champion Certificate to the Tax Payers: বিগত কর বছরে সর্বাধিক অনলাইন রিটার্ন দাখিলকারী ০৫ টি প্রতিষ্ঠানকে “e-Return Champion” সম্মাননা প্রদান করা হয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো ১) সোনালী ব্যাংক পিএলসি, ২) ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড, ৩) ব্র্যাক, ৪) বুরো বাংলাদেশ, ৫) রেনেটা পিএলসি
প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথিবৃন্দ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং বিভিন্ন অংশীজনগণ তাঁদের বক্তব্যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোকপাত করেন।
NSW প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের জন্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিবৃন্দ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে ধন্যবাদ জানিয়ে BSW এবং e-Return সিস্টেমের অধিকতর উন্নয়নের জন্য ভূমিকা রাখতে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
প্রকল্প দুটি সফল করার ক্ষেত্রে সকল সহযোগী সংস্থা, উন্নয়ন অংশীদার, বেসরকারি খাতের সকল অংশীজন এবং সম্মানিত সকল করদাতাগণের দৃঢ় ভূমিকার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
রাজশাহী উপশহরে নতুন একটি উপশাখা চালু করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও তারেক রেফাত উল্লাহ খান ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ রাজশাহী উপশহরে দড়িখরবোনা রোডের মনোয়ারা ম্যাক্স টাওয়ারে আনুষ্ঠানিকভাবে উপশাখাটি উদ্বোধন করেন।
ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিওও মো: সাব্বির হোসেন, সিনিয়র জোনাল হেড ফর নর্থ এ. কে. এম. তারেক এবং ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্কের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজশাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অর্থকরী ফসল - আম ও রেশমের মতো জন্য বিখ্যাত। এই উপশাখা চালুর ফলে এখানকার ব্যবসায়িক ও ব্যক্তি পর্যায়ের গ্রাহকরা অত্যাধুনিক ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।
ব্র্যাক ব্যাংক গ্রাহকদের সর্বোত্তম ব্যাংকিং সেবা প্রদানের লক্ষ্যে তাদের মাল্টি-চ্যানেল ডিস্ট্রিবিউশন স্ট্র্যাটেজির অংশ হিসেবে উপশাখা নেটওয়ার্ক চালু করেছে।
নতুন উপশাখাটি একটি বিস্তৃত পরিসরে আধুনিক ব্যাংকিং সেবার ব্যবস্থা করবে, যা একক ও প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহকদের জন্য আরও সুবিধাজনক হবে। এখানে গ্রাহকরা অ্যাকাউন্ট খোলা, নগদ জমা ও উত্তোলন, ডিপোজিট পেনশন স্কিম, ইএফটিএন (EFTN) ও আরটিজিএস (RTGS) ব্যবহার করে অর্থ স্থানান্তর, রেমিটেন্স, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ, ক্রেডিট কার্ড, স্টুডেন্ট ফাইল, কনজিউমার লোন, ডেবিট কার্ড ও চেকবুক প্রসেসিং, আস্থা অ্যাপ নিবন্ধন, স্কুল ব্যাংকিং, সঞ্চয়পত্র এবং আরও অনেক সেবা গ্রহণ করতে পারবেন, তবে বৈদেশিক মুদ্রা সংক্রান্ত সেবা এখানে প্রদান করা হবে না।
২৯৪টি শাখা ও উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস ও ১,১২১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বাংলাদেশে অন্যতম বৃহৎ ব্যাংকিং নেটওয়ার্ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি.:
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেয়ার ভিশন নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি. ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত দেশের অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একটি ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘BRACBANK’ প্রতীকে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন হয়। ২৯৪টি শাখা ও উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১,১২১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং ৮ হাজারেরও বেশি মানুষের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট ও রিটেইল সেগমেন্টেও সার্ভিস দিয়ে আসছে। ব্যাংকটি দৃঢ় ও শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে এখন সকল প্রধান প্রধান মাপকাঠিতেই ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে অবস্থান করছে। আঠারো লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বিগত ২৩ বছরেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়মানুবর্তিতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
শরীয়াহ্ ভিত্তিক ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসিতে সর্বস্তরের জনগণ ও প্রতিষ্ঠানের জন্য শরীয়াহ্ নীতিমালার আলোকে আমানত হিসাব ও সঞ্চয় প্রকল্প চালু রয়েছে। এ সকল আমানত হিসাব ও সঞ্চয় প্রকল্পে সকলের বেশ আগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে। নিজ নিজ প্রয়োজনানুসারে ব্যাংকের ১৭৪ টি শাখা ও উপ-শাখায় আমানত হিসাব ও সঞ্চয় প্রকল্প সমূহের সেবা গ্রহণের জন্য ইউনিয়ন ব্যাংক সর্বস্তরের জনগণ ও প্রতিষ্ঠানকে জানাচ্ছে সু-স্বাগতম।
জনাব আখতারুদ্দিন মাহমুদ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে ব্যাংক এশিয়া পিএলসি-তে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা পদে যোগদান করেছেন।
জনাব মাহমুদ ব্যাংকিং ও ফাস্ট মুভিং কনজ্যুমার গুডস (এফএমসিজি) সেক্টরে মানবসম্পদ নেতৃত্বে দুই দশকেরও বেশি সময়ের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন দক্ষ ব্যবস্থাপক। ব্যাংক এশিয়ায় যোগদানের পূর্বে তিনি ব্র্যাক ব্যাংকে হেড অফ হিউম্যান রিসোর্সেস হিসেবে কর্মরত ছিলেন, যেখানে তিনি মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার কৌশলগত নীতি, সাংগঠনিক সংস্কৃতি শক্তিশালীকরণ এবং ট্রান্সফরমেটিভ এইচআর প্র্যাকটিস চালু করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনায় সাংগঠনিক উন্নয়ন, প্রতিভা বিকাশ ও নেতৃত্ব সৃষ্টি এবং কর্মীর উদ্যোগকে ব্যবসায়িক কৌশলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার ক্ষেত্রে জনাব মাহমুদ ইন্ডাস্ট্রিতে বিশেষভাবে পরিচিত। তার মানবসম্পদ কেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠানে শক্তিশালী টিম গঠন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মপরিবেশ গড়ে তোলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
তার যোগদান ব্যাংক এশিয়ার কর্মকৌশলকে ব্যবসায়িক লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সমন্বয় করার অঙ্গীকারকে আরও দৃঢ় করা এবং নেতৃত্বকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আরেকটি মাইলফলক হিসেবে গণ্য হবে। জনাব মাহমুদ একজন এক্সিকিউটিভ এমবিএ এবং এভিয়েশনে স্নাতক ডিগ্রীধারী।
রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের স্কুল শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান চর্চায় উৎসাহিত করতে বিকাশ ও বিজ্ঞান চিন্তার আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো বিজ্ঞান উৎসবের আঞ্চলিক পর্ব। ঢাকা’র পর বিভাগীয় এই শহর দু’টির উৎসবে প্রায় ১০০টি স্কুলের ১৫০০-এর বেশি শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী ও গবেষণাধর্মী বিভিন্ন প্রকল্প প্রদর্শন, কুইজ, বিজ্ঞানবিষয়ক আলোচনা এবং প্রশ্নোত্তর পর্বসহ নানান আয়োজনের মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর হয়ে উঠে বিজ্ঞান চর্চার এই আয়োজন।
সম্প্রতি রংপুর পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং রাজশাহীর টিচার্স ট্রেনিং কলেজ -এ আয়োজিত এই উৎসবে দুই বিভাগ থেকে ১২০টির বেশি প্রকল্প প্রদর্শন করে শিক্ষার্থীরা। খুদে বিজ্ঞানীদের প্রদর্শিত নানান উদ্ভাবনী প্রকল্পের মধ্য থেকে প্রতিটি বিভাগে সেরা দশ প্রকল্পকে পুরস্কৃত করা হয়। পাশাপাশি, রংপুর উৎসবে কুইজে অংশগ্রহণকারী ৮০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে দুই ক্যাটাগরিতে ২৫ জন ও রাজশাহীতে ৫৫০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২১ জন কুইজ বিজয়ীকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।
রংপুরে উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডীন ড. মিজানুর রহমান, পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. কে এম জালাল উদ্দীন আকবর ও বিকাশ এর ইভিপি ও রেগুলেটরি অ্যান্ড কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্ট এর প্রধান হুমায়ুন কবির। রাজশাহীতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট এর অধ্যক্ষ বিশ্বজিৎ ব্যানার্জি ও বিকাশ এর রেগুলেটরি এন্ড কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্ট এর ভাইস-প্রেসিডেন্ট সায়মা আহসান এবং বিজ্ঞানচিন্তার নির্বাহী সম্পাদক আবুল বাসার ।
বাড়তি চমক হিসেবে ছিলো বিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন স্টল, বিজ্ঞান ভিত্তিক জাদুর প্রদর্শনী, লেখক, গণিতবিদ, বিজ্ঞান বক্তাদের বক্তব্য ও শিক্ষার্থীদের প্রশ্নোত্তর পর্ব, সংগীতানুষ্ঠান এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।
বিভাগীয় পর্যায়ে বিজ্ঞান প্রকল্পে ও কুইজ বিজয়ী শিক্ষার্থীদের নিয়ে পরবর্তীতে ঢাকায় জাতীয় পর্যায়ে চূড়ান্ত বিজ্ঞান উৎসব আয়োজন করা হবে। সারাদেশ থেকে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হবে।
মেটলাইফ বাংলাদেশের গ্রাহকরা এখন থেকে বীমা আবেদনের ঝুঁকি পর্যালোচনা বা আন্ডাররাইটিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ইমেইলের মাধ্যমে ডিজিটাল পলিসি ডক্যুমেন্ট পেয়ে যাবেন। এই উদ্যোগ দেশের বীমা খাতে গ্রাহককেন্দ্রিক উদ্ভাবনের এক নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে।
সাধারণত, বীমা আবেদনের ঝুঁকি পর্যালোচনার পর কাগজে প্রিন্ট করা পলিসি ডক্যুমেন্ট গ্রাহককে সরবরাহ করতে কয়েকদিন সময় লাগে। এই নতুন উদ্ভাবনের ফলে এখন গ্রাহকরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ইমেইলে ডিজিটাল পলিসি ডক্যুমেন্ট পাবেন, যা তাদের জন্য আরও অনেক সুবিধাজনক হবে। উল্লেখ্য, গ্রাহক কাগজে ছাপানো পলিসি ডকুমেন্টও পাবেন। গ্রাহকের প্রয়োজনীয় সব তথ্য পাওয়া সাপেক্ষে এই ডিজিটাল সেবা প্রদান করা হবে।
ডিজিটাল পলিসি ডক্যুমেন্টে থাকবে গ্রাহকের পূরণকৃত আবেদনপত্র, বীমা পলিসির বিস্তারিত তথ্য, একটি স্বাগত বার্তা এবং শর্তাবলি। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক ডক্যুমেন্টের মতো, বীমা সম্পর্কিত ডক্যুমেন্টও সংরক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি। ডিজিটাল চ্যানেল যুক্ত হওয়ায় এখন গ্রাহকরা আরও সহজে তাদের বীমা ডক্যুমেন্ট নিরাপদে সংরক্ষণ করতে পারবেন এবং প্রয়োজনে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবহার করতে পারবেন।
“মেটলাইফে, আমাদের লক্ষ্য হলো গ্রাহকদের জন্য বীমা সহজ, দ্রুত এবং আরও সহজলভ্য করা। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডিজিটাল পলিসি ডক্যুমেন্ট ইস্যু চালু করে, আমরা কেবল প্রক্রিয়াটি দ্রুততর-ই করছি না, সেই সাথে গ্রাহকদের বীমা অভিজ্ঞতায় নতুনত্ব নিয়ে আসছি। এই উদ্ভাবনটি সুরক্ষা এবং সুবিধার সমন্বয় করার ক্ষেত্রে আমাদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটায় এবং নিশ্চিত করে যে আমাদের গ্রাহকরা যেন তাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহে মনোনিবেশ করতে পারেন,” আলা আহমদ, মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা, মেটলাইফ বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে মেটলাইফ প্রায় ১০ লাখ গ্রাহককে আর্থিক সুরক্ষা দিয়ে আসছে। মেটলাইফের বিস্তৃত জীবনবীমা সেবা এবং ডিজিটাল উদ্যোগ দেশের আর্থিক নিরাপত্তা ও আস্থার উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
দেশে প্রথমবারের মতো সিটি ব্যাংকের গ্রাহকেরা নিজস্ব ব্যাকিং অ্যাপ ‘সিটি টাচ’ থেকে সরাসরি গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের পলিসি কিনতে পারবেন। নতুন এই ফিচারটির মাধ্যমে গ্রাহকেরা যেকোনো সময়, যেকোনো স্থান থেকে বিভিন্ন ধরনের পলিসি সম্পর্কে জানা, তাৎক্ষণিক পলিসি কেনা, এমনকি ইন্স্যুরেন্স ক্লেইম জমা দিতে পারবেন। ইন্স্যুরেন্স খাতে এই নতুনত্ব প্রমাণ করে যে, ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স একত্রিত হলে তা গ্রাহকদের জন্য আরও উন্নত সুবিধা এবং আর্থিক নিরাপত্তা দিতে পারে।
গার্ডিয়ান এর অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী শেখ রকিবুল করিম এফসিএ বলেন, “ইন্স্যুরেন্সকে সবার জন্য সহজ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ, তবে জীবন ও স্বপ্নকে সুরক্ষা দিতে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক প্রযুক্তি ও ডিজিটাল উদ্ভাবনকে কাজে লাগিয়ে আমরা দ্রুত, নির্ভরযোগ্য ও ঝামেলামুক্ত সেবা নিশ্চিত করছি। এ অংশীদারিত্বের ফলে গ্রাহকেরা খুব সহজেই অনলাইনে এখন তাদের ইন্স্যুরেন্স সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজ করতে পারবেন।”
সিটি ব্যাংকের ডিএমডি এবং হেড অফ রিটেল ব্যাংকিং মোঃ অরূপ হায়দার বলেন, “সিটি ব্যাংকই প্রথম ব্যাংক যারা বাজারে ব্যাংকান্সুরেন্স চালু করে। স্থানীয় ব্যাংকিং ইন্ডাষ্ট্রিতে ডিজিটাল সমাধান আনার ক্ষেত্রেও আমরা এগিয়ে আছি। তাই ব্যাংকিং অ্যাপে সরাসরি বীমা পণ্য চালু করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ব্যাংক হওয়া একটি স্বাভাবিক অগ্রগতি ছিল, যার ফলে আমাদের গ্রাহকদের বিস্তৃত পরিসরের আর্থিক সমাধান প্রদান করা হচ্ছে।”
গার্ডিয়ান সব সময় ইন্স্যুরেন্সকে আরও সহজলভ্য ও স্বচ্ছ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আর সে লক্ষ্যেই প্রতিষ্ঠানটি আধুনিক ও আন্তর্জাতিকমানের সেবার অনুশীলন অনুসরণ করে আসছে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সূচনা দিয়ে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল তা এখন এ অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আরও বিস্তৃত হয়েছে এবং এর ফলে বাংলাদেশের ডিজিটাল ইন্স্যুরেন্স খাতে গার্ডিয়ানের নেতৃত্ব আরও সুদৃঢ় হয়েছে।
মন্তব্য