২০৪১ সালে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আবার আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, তখন হয়তো নেতৃস্থানীয় অনেকে জীবিত নাও থাকতে পারেন। তবে তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে একযোগে ছাত্রলীগকে চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনায় যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০৪১ সাল পর্যন্ত তো আমি থাকব না, বাঁচবও না। বাট আমরা একটি কাঠামো দিয়ে গেলাম… কাজেই আমাদের ছাত্রলীগের প্রত্যেকটি ছেলেমেয়েকে কিন্তু… এ ছাত্ররাই তো শিক্ষিত জাতি হিসেবে গড়ে উঠবে। সেভাবেই তৈরি হতে হবে। কারণ ’৪১-এর বাংলাদেশ, যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, সেই বাংলাদেশের সৈনিক হিসেবে নিজেদের এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে।’
যেসব দেশ বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন নিয়ে একদিন ব্যঙ্গ করেছিল, সেসব দেশের তুলনায় দারিদ্র্যের হার অন্তত এক ভাগ হলেও কমানোর চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন সরকারপ্রধান।
উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে ছাত্রলীগের প্রতিটি কর্মীকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ধারণ করে গড়ে ওঠার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সতর্ক করেছেন, লোভের ফাঁদে পড়ে কেউ যেন পিছলে না যায়।
বাংলাদেশের সক্ষমতা বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিতে চান বলেও জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘যারা একদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে ব্যঙ্গ করেছিল, বলেছিল- স্বাধীন হয়ে বাংলাদেশ কী করবে, একটা বাস্কেট কেস হবে, আমার লক্ষ্য হচ্ছে সেই দেশে দারিদ্র্যের যে হার আছে তার থেকে যদি এক পার্সেন্টও কম হয়, তা এক পার্সেন্ট কম হলেও আমি বাংলাদেশ থেকে দারিদ্র্যের হার কমাব। এটাই আমার লক্ষ্য, এটা আমি দেখাতে চাই, হ্যাঁ এটা আমি পারি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র, এগুলো আমি মাথায়ও রাখি না, বিভ্রান্তও না। কারণ সারা জীবনই দেখেছি এগুলো হচ্ছে, হবেই। কিন্তু একটি আদর্শ নিয়ে চলতে গেলে, একটি লক্ষ্য স্থির করে চললে আর বাংলাদেশের তৃণমূলের, সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে গেলে, যারা ওপরে থেকে বেশি বেশি খায়, বেশি বেশি পায়, তাদের তো একটু দুঃখ থাকেই।
‘তারা ভাবে যে আমাদের বোধ হয় জায়গা হবে না। সে জন্য ষড়যন্ত্র করতেই থাকে। কিছু লোকের তো লক্ষ্যই থাকে একটা পতাকা পেতে হবে, একটু ক্ষমতায় যেতে হবে ইত্যাদি। এই ধরনের যাদের আকাঙ্ক্ষা বেশি, তারা তো দেশের মানুষের ভাগ্যের কথা চিন্তা করে না। তারা ষড়যন্ত্র নিয়ে থাকে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘নীতি আদর্শ নিয়ে চললে পরে, সৎপথে চললে পরে যেকোনো বাধা অতিক্রম করা যায় এবং সেটি প্রমাণ করেছি আমরা।’
পদ্মা সেতু বদলে দিয়েছে দেশের ভাবমূর্তি
একটি সিদ্ধান্ত থেকেই বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘যেদিন পদ্মা সেতু নিয়ে আমাদের ওপর দোষারোপ করল, দুর্নীতি হয়েছে, যেটিকে আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিলাম এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংক যখন প্রমাণ করতে পারেনি, তার পরই বিশ্ববাসী বা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো যাদের কাছ থেকে একসময় ঋণ নিলে তারা মনে করত, আমাদের খুব করুণা করল, আমি কিন্তু সেই চিন্তা থেকে বাংলাদেশকে সরিয়ে এনেছি।’
বাংলাদেশ এখন পরনির্ভরশীল নয় দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা এখন পরনির্ভরশীল না, আমাদের উন্নয়ন প্রকল্প আমরা স্ব-অর্থে করতে পারি। সেটি আমরা দেখিয়েছি। পদ্মা সেতু যে আমরা নিজেদের অর্থায়নে করতে পারি, সেটি আমরা প্রমাণ করে দিয়েছি। এই একটি সিদ্ধান্ত থেকে কিন্তু বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পাল্টে গেছে। এখন কেউ আমাদের করুণা করতে সাহস পায় না। বরং সমীহ করতে পারে। এটি আমাদের ধরে রাখতে হবে।’
আওয়ামী লীগের সব সহযোগী সংগঠনকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আবার যেন কখনও এই হায়েনার দল এসে এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেয়া হবে না।’
তিনি বলেন, ‘ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে সৃষ্ট দল কিন্তু ছাত্রলীগও না বা আওয়ামী লীগও না বা আমাদের সহযোগী সংগঠনও না। আমাদের দল গণমানুষের দল। অধিকার হারা মানুষের কথা বলে কিন্তু এই সংগঠন তৈরি। এই কথা সব সময় মাথায় রাখতে হবে। এটিই আমাদের গর্বের বিষয়। কাজেই সেই গর্বটি থাকতে হবে, কিন্তু অহমিকা নয়। সেখানে বিনয়ী হতে হবে। আর দেশের মানুষকে ভালোবাসতে হবে।’
আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়তে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘নিজেদের গড়ে তুলবা আদর্শবান কর্মী হিসেবে। খেয়াল রাখবা, কোনো লোভের বশবর্তী হয়ে পা পিছলে পড়ে যেও না যেন। নিজেকে শক্ত করে, সততার পথে থেকে এগিয়ে যাবে, সংগঠন শক্তিশালী করবে, জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে কাজ করবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় কাজ করবে, সেভাবেই নেতৃত্ব গড়ে উঠবে।’
করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে ছাত্রলীগের সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, সবাইকে মাস্ক পরতে হবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
বঙ্গবন্ধু হত্যা পরাজয়ের প্রতিশোধ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে আরও আগেই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে পারত বলে বিশ্বাস করেন প্রধানমন্ত্রী। মাত্র সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করাকে ‘অসাধ্য সাধন’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বোধ হয় এত দ্রুত একটি বিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তুলবেন, তা স্বাধীনতাবিরোধী চক্র, মহান মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতাকারী যে সমস্ত বড় দেশ আমাদের স্বাধীনতাকে সমর্থন করেনি, বরং ওই ঘাতক পাকিস্তানিদের সহযোগী ছিল তারা এটা মেনে নিতে পারেনি- বাংলাদেশের অভ্যুত্থান। সেই প্রতিশোধটি নিয়েছিল তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করে, তাদের পরাজয়ের প্রতিশোধ। এটিই তারা গ্রহণ করেছিল। এটিই তারা করেছিল। সেই জিঘাংসা চরিতার্থ করেছিল।’
এ সময় ছাত্রলীগের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ছাত্রলীগকে কিন্তু সব সময় সেই আদর্শ নিয়ে গড়ে উঠতে হবে। ক্ষমতা, লোভ, লালসা- এগুলো ঊর্ধ্বে উঠে নিজেদের আদর্শ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। জাতির পিতার আদর্শটি যদি একবার ধারণ করা যায়, তাহলে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়া কঠিন কাজ নয়।’
বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী, কারগারের রোজনামচা, চীন ভ্রমণ নিয়ে রচিত বইগুলো ছাত্রলীগ ও সংগঠনটির সাবেক নেতাদের অবশ্যই পড়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তাহলেই জাতির পিতার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হওয়া সম্ভব বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘যদি দেশপ্রেম না থাকে, জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধ না থাকে, তাহলে ক্ষমতায় বসে শুধু ক্ষমতাকে উপভোগ করা যায়, দেশের উন্নতি করা যায় না।’
ক্ষমতা নয়, মানুষের জন্য দেশে ফিরেছেন হাসিনা
দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের লক্ষ্য নিয়েই ১৯৮১ সালের ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ দিনে দেশে ফিরে আসার কথা স্মরণ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
তিনি বলেন, ‘ক্ষমতার লোভে যেনতেনভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা আমি কখনই করিনি বা পদের লোভও আমার ছিল না। আমার অবর্তমানে আওয়ামী লীগ আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করেছিল। সেখানেও আমার শর্ত ছিল, কাউন্সিলের একটি মানুষও যদি কোনো দিন আপত্তি করে আমি থাকব না।’
দল পরিচালনা করতে গিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা কখনও ভুল করেন না। হয়তো ওপরের কিছু নেতারা বিভ্রান্ত হন বা ক্ষমতার লোভে পড়ে যান। কিন্তু আমার তৃণমূলের নেতাকর্মীরা কখনও ভুল করেন না।’
তারই আলোকে ছাত্রলীগকে নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘সংগঠনটি গড়তে হবে। কারণ সংগঠনেই থাকে শক্তি।’
খালেদা দিয়েছিল অস্ত্র, আ.লীগ দিয়েছে কাগজ-কলম
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনীতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আমি ছাত্রলীগের হাতে কাগজ-কলম তুলে দিয়েছিলাম। সেটি একটি চ্যালেঞ্জের সময় ছিল। কারণ খালেদা জিয়া ধমক দিয়েছিল যে ছাত্রদলের অস্ত্রই নাকি যথেষ্ট আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে। সে দিয়েছিল অস্ত্র, বোমা, গুলি। এটি জিয়াউর রহমানের আমল থেকে শুরু। এরশাদ, খালেদা জিয়াও তাই করেছে। আর আমি দিয়েছি কাগজ-কলম, অর্থাৎ পড়াশোনা শেখো, দেশকে ভালোবাসো, দেশের জন্য কাজ করো।’
শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি- ছাত্রলীগের এই মূলনীতি মেনে সবাইকে পড়াশোনার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি কারও নাম বলব না। একটু বলতে চাই। অল্পশিক্ষিত বা স্বশিক্ষিত বা অশিক্ষিত নেতৃত্ব একটি দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। আজকে সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে একটি দেশকে আমরা উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেছি।’
ছাত্রলীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এখনও যদি নিজের গ্রামে ছুটিতে বাড়িতে গিয়ে নিজের গ্রামে কোনো মানুষ যদি নিরক্ষর থাকে তাদের সাক্ষরতার ব্যবস্থা করা, ছোট ছোট বাচ্চাদের ভলান্টারি শিক্ষা দিতে হবে।’
দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা একটি শিক্ষা দিয়ে গেছে মানুষকে, ধন=-সম্পদ কোনো কিছু কাজে লাগে না, অর্থ-সম্পদ কোনো কিছু কাজে লাগে না।’
‘কাজেই অহেতুক অর্থের পেছনে না ছুটে মানুষের জন্য কাজ করা, একজন রাজনৈতিক নেতার কাজ। সেটি মাথায় রাখতে হবে। মহান অর্জনের জন্য আত্মত্যাগ দরকার।’
আরও পড়ুন:জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে সরকারি সফর করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। শুক্রবার তাকে বহনকারী হেলিকপ্টার উপজেলার গোপীনাথপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে। হেলিকপ্টার থেকে নামার পর জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। সেখানে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আগামী এক মাসের ভেতর আলুর দাম কিছুটা বাড়তে পারে। আমরা আলু রপ্তানীতে প্রণোদনা দিচ্ছি এবং রপ্তানিতে সহযোগিতা করছি। চাহিদা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।
গোপীনাথপুর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে বগুড়ার দুঁপচাচিয়া উপজেলার মর্তুজাপুর গ্রামে গিয়ে উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জুম্মার নামাজ আদায়ের পর তার শ্বশুর মরহুম আব্দুর রাজ্জাক আকন্দের কবর জিয়ারত করেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টাককে ও হেলিকপ্টার দেখতে উৎসুক লোকজনের ভিড়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসছেন এমন খবর গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানাজানি হয়।
সরকারি সফরসূচি অনুযায়ী, বাণিজ্য উপদেষ্টার হেলিকপ্টার শুক্রবার সকাল ১১ টায় গোপীনাথপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে। সকাল থেকে প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত হন। সকাল ১০টার আগেই গণমাধ্যম কর্মীরাও গোপীনাথপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আসেন। তখন থেকেই উৎসুক জনতা গোপীনাথপুর উচ্চবিদ্যালয়ের দুটি ফটকে বাণিজ্য উপদেষ্টা ও হেলিকপ্টার দেখতে ভিড় করছিলেন। তবে দেড় ঘন্টা বিলম্বে দুপুর পৌঁনে একটার দিকে উপদেষ্টাকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে।
গোপীনাথপুর এলাকার আবু রায়হান তার দুই বছরের নাতিকে কাঁধে নিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টাকে ও হেলিকপ্টার দেখতে আসেন। তিনি বলেন, আমার নাতি হেলিকপ্টার দেখার বয়না ধরেছে। নাতিকে কাঁধে নিয়ে হেলিকপ্টার দেখতে এসেছি। বাণিজ্য উপদেষ্টা গোপীনাথপুরে এসেছেন। গোপীনাথপুরের বাসিন্দা হিসেবে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। আগে কখনও সরকারের কোনা মন্ত্রী গোপীনাথপুরের এসেছিল কি না তা জানি না।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, মৎস্য খাতে এ দেশের বিজ্ঞানীদের অবদান গর্ব করার মতো। তাই মৎস্য সম্পদ রক্ষায় গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
শুক্রবার সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী তৃতীয় ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স ফর সাসটেইনেবল ফিশারিজ (আইসিএসএফ)-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন উপদেষ্টা। টেকসই মৎস্য ব্যবস্থাপনা ও গবেষণার উন্নয়ন, উদ্ভাবনী প্রযুক্তি বিনিময় এবং অংশীজনদের মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, অতিরিক্ত মাছ শিকার এবং অবৈধ জাল যেমন চায়না জাল ও ট্রল ডোর ব্যবহার করে মাছ শিকার অত্যন্ত দুঃখজনক। এতে মাছের ক্ষতি হচ্ছে এবং ভবিষ্যতের কথা কেউ ভাবছে না।
মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, শীতকালে কৃষিকাজে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে বর্ষা মৌসুমে সেই বিষ পানিতে মিশে মাছের ক্ষতি করছে। কীভাবে কৃষিতে বালাইনাশকের ব্যবহার কমিয়ে উৎপাদন বাড়ানো যায় এবং মৎস্যসম্পদ রক্ষা করা যায় সে লক্ষ্যে কৃষি খাতে বালাইনাশক ব্যবহার সীমিত করতে ইতোমধ্যে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ইলিশের প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, চলতি বছর ইলিশ আহরণের পরিমাণ কমে যাওয়ায় বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, বৃষ্টি সময়মতো না হওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন, দূষণ এবং নদীর নাব্যতা হ্রাসসহ নানা কারণে ইলিশ আহরণ কমে গেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে মিঠা পানির মাছচাষ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ ও মানসম্মত খাদ্য নিশ্চিত করতে মিঠা পানির মাছের চাষ বাড়াতে হবে। তাই মাছের বৈচিত্র রক্ষা এবং হাওড়, নদীসহ প্রজনন ক্ষেত্রগুলো সংরক্ষণে জোর দিতে হবে।
হাওড়ের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হাওড়ে অপরিকল্পিত সড়ক বা অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করা যাবে না। হাওড় গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটকে সমন্বয় করে কীভাবে হাওড় রক্ষা করা যায়, সে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
সম্মেলনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলাম। মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নির্মল চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র, পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এটিএম মাহবুব-ই-এলাহি, কোয়ালিটি ফিডস লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম কায়সার রহমান।
সম্মেলনের মূল প্রবন্ধ স্পিকার হিসেবে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল ওয়াহাব। তিন দিনব্যাপী ওই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ১১টি সেশনে প্রায় আড়াই শতাধিক বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে।
দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে চিকিৎসকদের ‘মানবিক চিকিৎসক’ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, চিকিৎসকদের সবসময় রোগীদের প্রতি মানবিক ব্যবহার এবং তাদের সেবার মাধ্যমে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে হবে।
শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদে মা ও শিশু হাসপাতাল পরিদর্শন করতে এসে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। মা ও শিশু হাসপাতালের কনফারেন্স কক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নূরজাহান বেগম বলেন, ঢাকায় সবক্ষেত্রে বিশেষ বিশেষ হাসপাতাল থাকলেও চট্টগ্রামে জনসাধারণের তুলনায় তা খুবই অপ্রতুল। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল এবং চট্টগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতালের মাধ্যমে সরকারিভাবে চিকিৎসা সেবা দেয়া হলেও এখানকার জনসাধারণের তুলনায় তা খুব কম। তার ওপর সরকারি হাসপাতালগুলোতে যন্ত্রপাতির সংকট এবং বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার কারণে ঠিকমতো চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব হতো না। বর্তমান সরকার দায়িত্বে নেওয়ার পর এসব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
জাপানে সামনে ১ হাজার দক্ষ নার্স পাঠানো হবে জানিয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাপান সফরে গিয়ে যে ১লাখ দক্ষ জনবল নেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন জাপান সরকারকে, তারই ধারাবাহিকতায় জাপানে সামনে ১ হাজার দক্ষ নার্স পাঠানো হবে। আমাদের বাইরে নানা ক্ষেত্রে দক্ষ এবং প্রশিক্ষিত জনবল পাঠানোর সুযোগ থাকলেও নানা অব্যবস্থাপনা, দক্ষতা এবং প্রশিক্ষণের অভাবে আমরা তা পারছি না।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, সারাদেশে সরকারিভাবে আমাদের ১০হাজার চিকিৎসক এবং ১২হাজার নার্সের সংকট রয়েছে। সে সংকট কাটানোর লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে ৩হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছে, সামনে আরও ২হাজার নিয়োগ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। নার্সের সংকট নিরসনে সাড়ে ৩ হাজার নার্স নিয়োগ করা হবে।
উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম বলেন, সরকার সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে ক্যান্সার এবং হার্টের রিং এর দাম কমিয়েছে। সামনে তিনশ’ ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে। ডেঙ্গুর কিটের দাম সরকারিভাবে ৩৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সারাদেশে উপজেলা হাসপাতালগুলোতে বিষধর সাপের কামড়ের রোগীদের জন্য এনটিভেনম সরবরাহ করা হচ্ছে। চিকিৎসা খাতের সংকট দূর করার জন্য আরও ৩৫০কোটি টাকার বিভিন্ন সরঞ্জাম এবং ওষুধ আমদানি করা হবে।
মা ও শিশু হাসপাতালের সভাপতি সৈয়দ মো. মোরশেদ হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. শেখ ফজলে রাব্বী, চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গভর্নিং বডির সদস্য ড. মনজুরুল ইসলাম, মা ও শিশু হাসপাতালের সহসভাপতি আবদুল মান্নান রানা, ডা. কামরুন্নাহার দস্তগীর, যুগ্ম সম্পাদক জাহিদ হাসান, মো. সগীর, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. রেজাউল করিম প্রমুখ।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, মৎস্য খাতে এ দেশের বিজ্ঞানীদের অবদান গর্ব করার মতো। মৎস্যসম্পদ রক্ষায় গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। তাই সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
উপদেষ্টা আজ সকালে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী তৃতীয় ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স ফর সাসটেইনেবল ফিশারিজ (আইসিএসএফ)-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। টেকসই মৎস্য ব্যবস্থাপনা ও গবেষণার উন্নয়ন, উদ্ভাবনী প্রযুক্তি বিনিময় এবং অংশীজনদের মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ কনফারেন্স আয়োজন করা হয়।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, অতিরিক্ত মাছ শিকার, অবৈধ জাল যেমন চায়না জাল ও ট্রল ডোর ব্যবহার করে মাছ শিকার অত্যন্ত দুঃখজনক। যারা এভাবে সাময়িক লাভের জন্য মাছ শিকার করছে, তারা প্রকৃত মৎস্যজীবী নয়। এতে মাছের ক্ষতি হচ্ছে এবং ভবিষ্যতের কথা কেউ ভাবছে না। মৎস্য অধিদপ্তর ও বিএফআরআইকে এ বিষয়ে সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব নিতে হবে।
মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, শীতকালে কৃষিকাজে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে বর্ষা মৌসুমে সেই বিষ পানিতে মিশে মাছের ক্ষতি করছে। কীভাবে কৃষিতে বালাইনাশকের ব্যবহার কমিয়ে উৎপাদন বাড়ানো যায় এবং মৎস্যসম্পদ রক্ষা করা যায়— সে লক্ষ্যে কৃষিখাতে বালাইনাশক ব্যবহার সীমিত করতে ইতোমধ্যে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ইলিশের প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, এ বছর ইলিশ আহরণের পরিমাণ কমে যাওয়ায় বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে বৃষ্টি সময়মতো না হওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন, দূষণ এবং নদীর নাব্যতা হ্রাসসহ নানা কারণে ইলিশ আহরণ কমে গেছে। তবে ইলিশ যাতে সাধারণ মানুষের পাতে পৌঁছায়, সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সংশ্লিষ্টদের তিনি আরো গুরুত্বপ্রদানের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে মিঠা পানির মাছ চাষ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাছের প্রাপ্যতা বাড়লেও তা নিরাপদ কিনা, সে বিষয়েও নজর দিতে হবে। নিরাপদ ও মানসম্মত খাদ্য নিশ্চিত করতে মিঠা পানির মাছের চাষ বাড়াতে হবে। তিনি আরো বলেন, মাছের বৈচিত্র্যের দিক থেকে বাংলাদেশ অনন্য। তাই মাছের বৈচিত্র রক্ষা এবং হাওড়, নদীসহ প্রজননক্ষেত্রগুলো সংরক্ষণে জোর দিতে হবে। নদীগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে সরকার সামগ্রিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
হাওড়ের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হাওড়ে অপরিকল্পিত সড়ক বা অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করা যাবে না। হাওড় গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটকে সমন্বয় করে কীভাবে হাওড় রক্ষা করা যায়, সে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
কনফারেন্সের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলাম। তিনি বলেন, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণার মাধ্যমে মাছ, গবাদিপশু ও ফসলের উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করছে, যা দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণ ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তিনি আরও বলেন, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এ খাতে আরও ব্যাপক অবদান রাখতে সক্ষম হবেন। দেশে উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন বৃহৎ পরিসরে উৎপাদনের সুযোগ তৈরি হলে শুধু দেশের চাহিদা পূরণ নয়, বরং তা বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেরও পথ খুলে দেবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নির্মল চন্দ্র রয়ের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্র, পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধক্ষ অধ্যাপক ড. এটিএম মাহবুব-ই-এলাহি, কোয়ালিটি ফিডস লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম কায়সার রহমান।
কনফারেন্সের কী-নোট স্পিকার হিসেবে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল ওয়াহাব।
তিন দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ১১টি সেশনে প্রায় আড়াই শতাধিক বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে। এতে দেশি-বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্ট খাতের বিজ্ঞানী ও গবেষকরা অংশ নিচ্ছেন।
অধূমপায়ীদের সুরক্ষা এবং তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় মৎস্য অধিদপ্তরের অফিস প্রাঙ্গণ শতভাগ তামাকমুক্ত রাখার বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে তামাক বিরোধী সংগঠন তাবিনাজ (তামাক বিরোধী নারী জোট)। সভাটি আজ বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আব্দুর রউফ। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিচালক (প্রশাসন), পরিচালক (অভ্যন্তরীণ মৎস্য), প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, উপপরিচালক, সিনিয়র সহকারী পরিচালক, সহকারী পরিচালক ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাসহ প্রায় ৪০ জন কর্মকর্তা।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আতাউর রহমান মাসুদ। তিনি তামাকজাত দ্রব্যের ভয়াবহ ক্ষতিকর দিক এবং এর বহুমুখী প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তাবিনাজের পরিচালক সীমা দাস সীমু তার বক্তব্যে ধোঁয়ামুক্ত ও ধোঁয়াযুক্ত তামাকজাত দ্রব্য এবং গবেষণালব্ধ তথ্য তুলে ধরেন। তাবিনাজ কর্মী শারমিন কবীর বীণা গ্রামীণ তামাক চাষ ও এর ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোকপাত করেন।
উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা অফিস প্রাঙ্গণ শতভাগ তামাকমুক্ত রাখতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ ও কর্মপরিকল্পনা দেন।
সুপারিশসমূহ:
১. অফিস প্রাঙ্গণে ধূমপানের জন্য কোনো স্মোকিং জোন থাকবে না।
২. ক্যান্টিনে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হবে।
৩. দেশব্যাপী মৎস্য অধিদপ্তরের সকল অফিস প্রাঙ্গণকে শতভাগ তামাকমুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হবে।
৪. সকল অফিস প্রাঙ্গণে ‘তামাকমুক্ত এলাকা’ লেখা সম্বলিত সাইনেজ প্রতিস্থাপন করা হবে।
সভায় উপস্থিত কর্মকর্তারা তামাকমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার প্রয়াসে সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস প্রদান করেন।
অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে স্নাতকে (অনার্স) তথ্য প্রযুক্তি ও ইংরেজি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
আধুনিক পাঠ্যক্রম প্রণয়নের পাশাপাশি তা বাস্তবায়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা দেওয়া হবে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজে গতকাল বুধবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের এটুআই প্রকল্পের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ এসব কথা বলেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন শিক্ষাক্রমের আইসিটি বিষয়ের ‘টিচিং, লার্নিং অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্ট স্ট্র্যাটেজি’ শীর্ষক এ কর্মশালার প্রথম সেশনে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও এটুআই প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক মো. রশিদুল মান্নাফ কবীর।
উপাচার্য বলেন, কলেজগুলোতে তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষাদানে শিক্ষক সংকটসহ নানা সমস্যা রয়েছে। এ বিষয়ে সহায়তার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সব টেকনিক্যাল কলেজ ও কম্পিউটার কাউন্সিলের সাথে আলোচনা করছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের কলেজ শিক্ষার্থীদের মেধার ঘাটতি নেই। সঠিক দিকনির্দেশনা পেলে তারা সহজেই তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ হয়ে উঠবে।
শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক, সময়োপযোগী ও কর্মমুখী তথ্য প্রযুক্তি পাঠ্যক্রম প্রণয়নে সরকারের এটুআই প্রোগ্রাম ও শিক্ষাবিদদের প্রতি আহ্বান জানান অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ।
কর্মশালার দ্বিতীয় সেশনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরুল ইসলাম।
দিনব্যাপী এ কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন কলেজের ৮টি বিভাগের ৪০ জন তথ্য প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ড. নাজমা তারা এবং মির্জা মোহাম্মদ দিদারুল আনাম।
এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মন্তব্য