‘হামার (আমার) গ্রামত (গ্রামে) অনেক শীত বাহে। সূর্য পড়িলেই (অস্ত গেলেই) শীত আরও বেশি লাগেছে (লাগে)। কম্বলত শীত মানিবার চায় না।’
বলছিলেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বালিয়া গ্রামের ৭৫ বছর বয়সী আমজাদ হক।
আমজাদের মতোই শীতে জর্জরিত উত্তরের এই জেলা। ঘন কুয়াশায় তেমন দেখা মিলছে না সূর্যের। ডিসেম্বরের শুরু থেকে শীত পড়তে শুরু করলেও তীব্রতা বেড়ে যায় মাসের শেষ দিক থেকে।
ঠাকুরগাঁওয়ে এ বছর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়েছে গত সোমবার। আবহাওয়া অফিস বলছে, আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রা আরও কমে ৭-এ নেমে আসবে।
গত কয়েক দিন ধরে দিনের বেশির ভাগ সময় থাকছে কুয়াশাচ্ছন্ন। যখন সূর্যের দেখা মিলছে তখন বয়ে যাচ্ছে কনকনে ঠান্ডা বাতাস। রাতে বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা।
এমন ঠান্ডায় বিপাকে পড়েছেন এই অঞ্চলের নিম্ন আয়ের মানুষ। তারা প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে কাজে যেতে পারছেন না। আবার ঠান্ডার মধ্যে কাজ করায় অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন শীতজনিত রোগে। পর্যাপ্ত গরম কাপড়ের অভাবে শিশু ও বয়স্করাও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
সদর হাসপাতালের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ঠাকুরগাঁওয়ে প্রতি বছর শীতজনিত রোগে দেড় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়।
জেলা সিভিল সার্জন নূর নেওয়াজ আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ জেলায় শীতের তীব্রতা অনেক বেশি। এত মানুষ শীতের সময় বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় যে হাসপাতালে জায়গা দেয়া সম্ভব হয় না।
‘শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে পর্যাপ্ত গরম কাপড় পরতে হবে। শিশুদের যেন ঠান্ডা না লাগে সে জন্য বিশেষ করে মায়েদের সচেতন থাকতে হবে।’
দরিদ্র মানুষকে শীতের হাত থেকে বাঁচাতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কম্বল দেয়ার কথা জানানো হলেও অনেকের অভিযোগ তারা কিছুই পাননি।
বৃদ্ধ আমজাদ হক বলেন, ‘হামার কপালত (ভাগ্যে) কোনো দিন একটাও শীতের কাপড় জুটেনি।’
তবে জেলা প্রশাসনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এরই মধ্যে ২৬ হাজার ৩০০ কম্বল পেয়েছে প্রশাসন। আরও ৮ লাখ টাকা এসেছে শীতবস্ত্র ও কম্বল কেনার জন্য।
এমন তথ্যে স্থানীয় একজন বলেন, ‘শীত পালাইলে কি হামাক কম্বল দেবে সরকার?’
জেলা প্রশাসক মাহাবুবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত যে বরাদ্দ এসেছে তা যথেষ্ট নয়। আমরা আরও ২৫ লাখ টাকা ও ১ লাখ কম্বল চেয়েছি। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সঙ্গেও কথা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি বেসরকারি সংগঠন আমাদের মাধ্যমে কম্বল বিতরণ করেছে।’
একই অবস্থা উত্তরের আরেক জেলা নীলফামারীর। গত এক সপ্তাহে এখানে ১০ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। ঘন কুয়াশার কারণে সূর্য দেখা দিচ্ছে দুপুর ১২টার পর। তাও দুই থেকে তিন ঘণ্টার জন্য। এর সঙ্গে আছে দিন-রাতের বিভিন্ন সময় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি।
ডিমলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষক বাবুল হোসেন জানান, আরও কয়েক দিন এরকম ঠান্ডা থাকবে।
শীতে নিম্ন আয়ের মানুষের ভোগান্তি সবচেয়ে বেশি। বাড়ি থেকে বের হলেও ঠান্ডায় কষ্ট পেতে হয় আবার না বের হয়েও উপায় নেই।
নীলফামারী শহরের গাছবাড়ি এলাকার বৃদ্ধ রিকশাচালক মকবুল হোসেন বলেন, ‘এবার ঠান্ডা দেরিতে নামিছে। কয়েক দিন থাকি বেশি ঠান্ডা লাগেছে। বিকালের পর থেকে খুব ঠান্ডা নামে। এত ঠান্ডাত রাস্তাত মানসি (মানুষ) না থাকায় কামাই কমি গেইছে।’
শহরের উত্তর হাড়োয়া এলাকার আমিনা বেগম বলেন, ‘খুব কষ্ট করি থাকিবার নাগে (থাকতে হয়) রাইতোত। বয়স হয়া গেইছে। আগের কম্বলটা পুরান হয়া গেইছে। আরও কম্বল নাগে। ঠান্ডার জন্যে খুব কষ্ট হইছে এ্যালা (এখন)।’
শীত বাড়ায় হাসপাতালে বেড়েছে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা ও সর্দি-কাশি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ আব্দুল আউয়াল নিউজবাংলাকে জানান, গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়ার রোগী ১০ গুণ এবং নিউমোনিয়া ও সর্দি-কাশির রোগী চারগুণ বেড়েছে।
শীতার্তদের সহায়তার বিষয়ে ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ময়নুল হক বলেন, ‘আমাদের এই ইউনিয়ন তিস্তাবেষ্টিত হওয়ায় এখানে শীত বেশি। এখানকার অন্তত পাঁচ হাজার মানুষকে শীতবস্ত্র দেয়া প্রয়োজন। এখনও পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র পাওয়া যায়নি।’
এই বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেজবাহুর রহমান জানান, প্রথম দফায় প্রতি ইউনিয়নে ৪৭০টি করে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। অধিদপ্তর থেকে ৮ লাখ ৮১ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সেগুলো দিয়ে ৩ হাজার ২০টি কম্বল কেনার প্রক্রিয়া চলছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় জানিয়েছে, এই জেলার ৬০টি ইউনিয়ন ও চারটি পৌরসভায় ৩০ হাজার ৮০টি কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। অধিদপ্তর থেকে উপজেলা ও পৌরসভা পর্যায়ে কম্বল কেনার জন্য বরাদ্দ এসেছে। সেই টাকায় কেনার প্রক্রিয়া চলছে। এ ছাড়া জেলা পর্যায়েও আট লাখ টাকার কম্বল কেনা হচ্ছে।
ঘন কুয়াশার কারণে মেহেরপুরে বেশ বেলা পর্যন্ত যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে।
বাসচালক মো. গোলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঘন কুয়াশায় সামান্য দূরের জিনিসও ভালোভাবে দেখা যাচ্ছে না। সব সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। আমরা দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছি।’
ট্রাকচালক মো. সামাদ বলেন, ‘প্রচণ্ড শীতে গাড়ির স্টিয়ারিং ধরে রাখাই কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, মেহেরপুরে মঙ্গলবার সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি।
সবজি ব্যবসায়ী মনোয়ার বলেন, ‘আমাদের সকালবেলা ক্ষেতে গিয়ে সবজি তুলে এনে বিক্রি করতে হয়। কয়েক দিন ধরে ঘন কুয়াশা আর বাতাসে কাজ করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। ক্ষেতে গেলে গাছের সঙ্গে লেগে থাকা কুয়াশায় কাপড় ভিজে ঠান্ডা লাগছে।’
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল থেকে জানা যায়, ঠান্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যাও বাড়ছে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে ফিশিং বোটের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে চারজন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পতেঙ্গা থানাধীন ১৫ নম্বর ঘাটে নোঙর করা একটি ফিশিং বোটে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
দগ্ধরা হলেন- ৫৫ বছর বয়সী জামাল উদ্দিন, ৪৫ বছর বয়সী মাহমুদুল করিম ও মফিজুর রহমান এবং ২৮ বছর বয়সী এমরান। এদের মধ্যে প্রথম তিনজনের শরীরের ৮০-৮৫ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গিয়েছে। অন্যজনের শরীর পুড়েছে অন্তত ২০ শতাংশ।
চমেক হাসপাতালে বার্ন ও ক্যাজুয়ালটি ইউনিটের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আহত চারজনের মধ্যে তিনজনের বড় ধরনের বার্ন হয়েছে। এই ধরনের রোগীদের অবস্থা ভালো থাকে না।’
চট্টগ্রাম সদরঘাট নৌ-থানার ওসি একরাম উল্লাহ বলেন, ‘মাছ ধরার ট্রলারে ইঞ্জিন থেকে সৃষ্ট আগুনে ৪ জন দগ্ধ হয়েছে। তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ প্রকাশ্যে দুর্নীতি করার ঘোষণা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে লালপুর উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যের এক পর্যায়ে দুর্নীতি করার ঘোষণা দেন এ সংসদ সদস্য।
তার বক্তব্যের অংশবিশেষের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।
প্রকাশিত ওই ভিডিওতে আবুল কালাম আজাদকে বলতে শোনা যায়, ‘পাঁচটা বছর (২০১৪-২০১৮) বেতন ভাতার টাকা ছাড়া আমার কোনো সম্পদ ছিল না; আগামীতেও থাকবে না। এবার (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ) নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সেই টাকা আমি তুলব। যেভাবেই হোক তুলবই। এতটুক অনিয়ম আমি করবই। এটুকু অন্যায় করব, আর করব না।’
প্রকাশ্যে সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্য বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শারমিন আখতার। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। উনার বক্তব্য উনি বলেছেন, এখানে আমার কোনো কথা নেই।’
বক্তব্যর বিষয়ে সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমার বক্তব্যে এটা বোঝাতে চেয়েছি যে, অনেকেই এরকম করে। আমার বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি জেলা শাখার সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সরকারি অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে একজন সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্য খুব দুর্ভাগ্যজনক। সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্যে তার সহকারী এবং দলীয় নেতা-কর্মীরা দুর্নীতিতে উৎসাহিত হবেন। এটা একদিকে যেমন পরিষ্কারভাবে শপথের লংঘন, অন্যদিকে নির্বাচনি বিধিরও লংঘন।
‘নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী, নির্বাচনি প্রচারকাজে একজন সংসদ সদস্য ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারেন না।’
সংসদ সদস্যের কাছে গঠনমূলক বক্তব্যেরও প্রত্যাশার কথা জানান তিনি।
মানিকগঞ্জ শহরের প্রবেশপথে যানজট নিরসনে ও পথচারীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
পৌরসভা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড ও পৌর সুপার মার্কেটের সামনের সড়ক ও ফুটপাত থেকে শতাধিক হকার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান করা হয়।
প্যানেল মেয়র তসলিম মিয়া জানান, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অস্থায়ী কিছু ব্যবসায়ীরা ফুটপাত ও সড়কের একাংশ দখল করে ব্যবসা করে আসছেন। এতে করে শহরে যানজটের সৃষ্টি হয় এবং পথচারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পথচারীদের সুবিধার্থে যানজট দূর করতেই এই উচ্ছেদ অভিযান।
উচ্ছেদ অভিযানে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জহিরুল আলম, পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ মো. তসলিম মিয়া ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানাসহ থানা পুলিশ ও পৌরসভার কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠির রাজাপুরে নদীর তীর থেকে এক ভ্যানচালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো যুবকের মামুন হোসেন, যার বয়স ২৫ বছর। তিনি রাজাপুরের পশ্চিম সাতুরিয়া গ্রামের মোকসেদ আলীর ছেলে।
ভ্যানচালক মামুন দুই দিন আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন জানিয়ে রাজাপুর থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, ‘স্থানীয়দের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে সাতুরিয়া গ্রামের ইদুরবাড়ি এলাকায় কচা নদীর তীর থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয়। লাশের ময়নাতদন্তসহ পরবর্তী সময়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে, তবে এটি হত্যা নাকি দুর্ঘটনা, সেটি তদন্তে বের হবে।’
এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পূর্ব পূয়ালী গ্রামের আব্দুর রহিম হাওলাদারের একমাত্র ছেলে রাব্বি হাওলাদার।
২৫ বছর বয়সী রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট। ডাক্তারের পরামর্শ তার কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে। বর্তমানে তার চিকিৎসার জন্য প্রায় ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
রাব্বির কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য এতো টাকা লাগবে শোনার পর থেকেই তার কৃষক বাবা সাহায্যের জন্য ছুটছেন চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ স্থানীয় বিত্তবানদের কাছে। কেন না তার সবকিছুই বিক্রি করে দিলেও এক থেকে দেড় লাখ টাকার বেশি জোগাড় করার সামর্থ্য হচ্ছে না।
রাব্বি বর্তমানে ঢাকার মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এমন অবস্থায় কৃষক বাবা তার সন্তানকে বাঁচাতে দেশবাসীর কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন। দেশের বিত্তবানরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেই হয়ত বেঁচে যাবে তার সন্তান।
রাব্বির পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাব্বি হাওলাদার কয়েক মাস আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (সেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে যান তার পরিবার। সেখানে চিকিৎসক তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত চিকিৎসা চলছিল রাব্বির, কিন্তু কিছুদিন আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরই মধ্যে প্রায় আড়াই লাখ টাকার ওপরে শুধু হাসপাতাল ও ওষুধের বিল দিতে হয়েছে। দরিদ্র এই পরিবারটি আত্মীয়স্বজনসহ সবার সহায়তায় ওই বিল দেয়া সম্ভব হয়।
রাব্বির মা রেভা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘এভাবে আর কয়দিন চিকিৎসা করাতে পারব জানি না। কারণ আমাদের সামর্থ্য শেষ হয়ে এসেছে। শুধু টাকার অভাবে তাকে ভালো কোনো হাসপাতালেও নিতে পারছি না, কিন্তু কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য অপারেশনের ধকল সহ্য করার মতো সুস্থ অবস্থায় আনা খুব জরুরি।’
রাব্বির বাবা আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে অনুরোধ করা হচ্ছে আপনাদের ভালোবাসা ও সাহায্য আমাদের খুব প্রয়োজন। কারণ শুধু টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় আমার একমাত্র ছেলে অকালে ঝরে যাবে তা আমার জীবন থাকতে মানতে পারছি না।’
তাকে কেউ সাহায্য করতে চাইলে ০১৯৯৭-২২৮৯৭৫ ও ০১৯৮৭-৩৬৬৫৬৮ (বিকাশ-পার্সোনাল) নাম্বারে পাঠাতে পারেন ও যোগাযোগ করতে পারেন।
আরও পড়ুন:ফরিদপুর সদরে যৌনপল্লি থেকে দুই তরুণীকে উদ্ধার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় ওই পল্লির এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মো. হাসানুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার রাতে এসব তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃত পারুল বেগম ওরফে পারু (৪৮) জেলার রথখোলা যৌনপল্লির বাসিন্দা।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন আপন (৩০), জহির (৩০) ও ববি (৩৮)।
গ্রেপ্তার না হওয়া এ তিনজনের মধ্যে ববি যৌনপল্লির সর্দারনি হিসেবে পরিচিত। আপন ও জহিরের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় পাওয়া যায়নি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পার্লারে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে চাঁদপুরের কচুয়া থানা এলাকা থেকে এক তরুণীকে গত ১০ মার্চ ঢাকায় নিয়ে আসেন আপন। দুই দিন সেখানে রেখে তাকে (তরুণী) তিন ব্যক্তির হাতে তুলে দেন তিনি। ওই তিন ব্যক্তি ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় তরুণীকে রথখোলা যৌনপল্লিতে এনে পারুর কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। পরের দিন একটি সাদা কাগজে তরুণীর স্বাক্ষর নিয়ে জানানো হয়, এখন থেকে তিনি যৌনপল্লির লাইসেন্সধারী সদস্য।
এতে আরও বলা হয়, মেয়েটিকে পারুর বাসায় রেখে ববি ও অন্যদের মাধ্যমে জোর করে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হয়। এর মাঝে মেয়েটি বাড়িতে যোগাযোগের জন্য একজন খদ্দেরকে তার ছোট বোনের মোবাইল নম্বর দেন। পরে ওই খদ্দেরের মোবাইল কলের মাধ্যমে মেয়েটির সন্ধান পায় তার পরিবার। এরপর তার মা ও ফুফা রথখোলায় এসে তাকে দেখতে পেয়ে স্থানীয় থানা পুলিশকে জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পুলিশ যৌনপল্লিতে অভিযান চালানোর পর ফেনীর পূর্ব ছাগলনাইয়ার আরেক তরুণীও তাকে উদ্ধারে পুলিশের সাহায্য চান। ওই তরুণী জানান, তাকেও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে ঢাকার মিরপুরের একটি বাসায় এক রাত রেখে রথখোলা যৌনপল্লিতে এনে পারুর কাছে বিক্রি করা হয়।
কোতোয়ালি থানার ওসি হাসানুজ্জামান জানান, যৌনপল্লিতে তরুণীকে নেয়ার ঘটনায় তার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফাহিম ফয়সাল মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে অভিযান চালিয়ে পারুল বেগম ওরফে পারুকে গ্রেপ্তার করে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।
নোয়াখালীর কবিরহাটে পুকুরের পানিতে ডুবে সহোদর দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের রামেশ্বপুর গ্রামের ছর আলী মাঝি বাড়ির পুকুরে বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো দুই শিশু হলো সাত বছর বয়সী বিবি ফাতেমা বেগম ও তার চার বছরের ভাই আবিদ হোসেন। শিশুদ্বয় ছর আলী মাঝি বাড়ির আবদুল হাইয়ের সন্তান।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি হুমায়ন কবির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘দুই ভাই-বোন সকালে ঘরের পাশে পুকুরে দাঁত ব্রাশ করতে যায়। এ সময় হাত-মুখ ধোয়ার সময় একজন পুকুরে পড়ে গেলে আরেকজন উদ্ধার করতে পানিতে নামে।
‘পরে দুজনই পানিতে ডুবে যায়। একপর্যায়ে পরিবারের সদস্যরা দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত বলে জানান।’
তিনি আরও বলেন, ‘মরদেহ স্বজনরা নিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য