রুগ্ণ শিল্পের দায়দেনা অবসায়নে টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। তবে নন-টেক্সটাইল খাতের কারখানা পায়নি এ বিশেষ সুবিধা। নিজেদের শিল্পপ্রতিষ্ঠান বাঁচাতে রুগ্ণ শিল্পের এসব মালিক ঋণের দায়মুক্তি চেয়ে আবেদন করবেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
রুগ্ণ শিল্পের পুনর্বাসন বিষয়ে রোববার এফবিসিসিআই স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় এসব তথ্য তুলে ধরেন ব্যবসায়ীরা।
কারখানা মালিকরা জানান, ঋণের দায় নিয়ে নতুন ব্যবসায়িক উদ্যোগ নেয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে খেলাপি বিবেচনায় অর্থঋণ আদালতে মামলার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চান নন-টেক্সটাইল খাতের ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দায় অবসায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। কিন্তু তাতে সংকটের সুরাহা হয়নি। এ অবস্থায় রুগ্ণ শিল্পের মালিকরা ঋণ দায়মুক্তির অনুরোধ জানিয়ে শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিতে যাচ্ছেন।
২০০৯ সালে তৎকালীন সরকার রুগ্ণ শিল্পের পুনর্বাসন ও দায়দেনা নিষ্পত্তির জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছিল। টাস্কফোর্স রুগ্ণ শিল্পগুলোকে গার্মেন্টস, টেক্সটাইল ও নন-টেক্সটাইল এ তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করে।
পরে টাস্কফোর্সের সুপারিশে সরকার ২৭৯টি গার্মেন্টস ও ১০০টি টেক্সটাইলের দায়দেনা অবসায়ন করে। তখন নন-টেক্সটাইল খাত নিয়ে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত জানায়নি অর্থ মন্ত্রণালয়। তারপর দীর্ঘদিন ঝুলে আছে এ খাতের ব্যবসায়ীদের ভাগ্য।
দেশের ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই রোববার রুগ্ণ শিল্পবিষয়ক এক সভা করে।
সভায় স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ছাদেক উল্ল্যাহ চৌধুরী বলেন, ‘রুগ্ণ শিল্পের পুনর্বাসনে ১৯৯৮ সালে মুন্সেফ কমিটি গঠন হয়েছিল। তখন ১০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করে আওয়ামী লীগ সরকার। পরে এর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৮ সালে এফবিসিসিআই নতুন করে রুগ্ণ শিল্পের ডাটাবেজ তৈরি করেছে। এ নিয়ে কাজ চলমান থাকলেও সবাইকে সুবিধা দেয়া সম্ভব হয়নি।’
এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ‘রুগ্ণ শিল্পের সহায়তা ও পুনর্বাসনের জন্য এফবিসিসিআইতে একটি আলাদা ডেস্ক করা হবে। তালিকা করে রুগ্ণ শিল্পকে সহায়তা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সংকট সুরাহা করতে হবে।’
কমিটির ডিরেক্টর-ইন-চার্জ তাহমিন আহমেদ বলেন, ‘পোশাক ও বস্ত্র খাতের বাইরে থাকা রুগ্ণ কারখানার ঋণ দায়মুক্তির অনুরোধ করে শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠানো হবে। রুগ্ণ শিল্পের মালিকদের বাঁচাতে সবার সহায়তা দরকার।’
সভায় স্ট্যান্ডিং কমিটির মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, কো-চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন এ. ফেরদৌস, এম নজরুল ইসলাম, সরকার মো. সালাউদ্দিন, এ কে এম খোরশেদ আলম খানসহ ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইনে আয়কর পরিশোধের ক্ষেত্রে চার্জ নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে ই-রিটার্ন দিতে করদাতারা ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে চার্জ পরিশোধ করতে পারবেন।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্ট বা পিএসডি থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে সব ব্যাংক, এমএফএস, পেমেন্টে সার্ভিস প্রোভাইডার, পেমেন্টে সিস্টেম অপারেটর ও আন্তর্জাতিক পেমেন্টে স্কিমের প্রধান নির্বাহী বরাবর পাঠানো হয়েছে।
অন্যদিকে অনলাইনে রিটার্ন দাখিলে ভ্যাট অফিসকে সহায়তার নির্দেশনা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। অনলাইনে ভ্যাট রিটার্ন দাখিল করতে ভ্যাটদাতাদের দেশের সব ভ্যাট কমিশনারেট, বিভাগীয় দপ্তর এবং সার্কেল অফিসকে সহায়তার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, চলতি ২০২৪-২৫ করবর্ষের রিটার্ন দাখিল ও কর পরিপালন সহজের লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গত ৯ই সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইন রিটার্ন দাখিল সিস্টেম ই-রিটার্ন করদাতাদের জন্য উন্মুক্ত করেছে। ই-রিটার্ন সিস্টেম থেকে ইন্টারনেট ব্যাংকিং, কার্ড পেমেন্ট ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (এমএফএস) বা পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) ওয়ালেট-এর মাধ্যমে করদাতারা আয়কর পরিশোধ করতে পারছেন।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, করদাতাদের অধিকতর উৎসাহ প্রদান ও অনলাইনে আয়কর পরিশোধ সহজ করার লক্ষ্যে ই-রিটার্ন সিস্টেম থেকে কার্ড পেমেন্ট, ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও এমএফএস বা পিএসপি ওয়ালেটের মাধ্যমে আয়কর পরিশোধের ক্ষেত্রে ফি বা চার্জ নির্ধারণ করে দেয়া হলো।
বাংলাদেশে ইস্যুকৃত কার্ড ও ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবহার করে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত লেনদেনে গ্রাহকের কাছ থেকে লেনদেনপ্রতি সর্বোচ্চ ২০ টাকা (ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত) এবং ২৫ হাজার টাকার ঊর্ধ্বে লেনদেনপ্রতি সর্বোচ্চ ৫০ টাকা (ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত) আদায় করা যাবে।
এছাড়া এমএফএস বা পিএসপি ওয়ালেট ব্যবহার করে লেনদেনে গ্রাহকের কাছ থেকে লেনদেনপ্রতি ১ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ৩০ টাকা (ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত) আদায় করা যাবে। এ লেনদেনের বিপরীতে কোনো চার্জ ব্যাক প্রযোজ্য হবে না। এটা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, মানুষের জীবিকার সঙ্গে সম্পর্কিত হওয়ায় ঋণ প্রাপ্তি একটি মৌলিক অধিকার। জীবিকার অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে ঋণ পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলনের একটি সাইডলাইন ইভেন্টে বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেন।
জলবায়ু সম্মেলনস্থলে বাংলাদেশে প্যাভিলিয়নে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস যৌথভাবে ‘একটি বৈশ্বিক সংলাপ: ক্ষুদ্র কৃষকদের জন্য অর্থায়ন সুবিধা’ শীর্ষক ইভেন্টের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়াজ হামিদুল্লাহ। এতে উপস্থিত ছিলেন নেদারল্যান্ডসের জলবায়ু দূত বোরবোন-পারমার ডাচ প্রিন্স জেইম বার্নার্ডো।
ডাচ প্রিন্স কীভাবে ঋণ, বিমা, বিনিয়োগ, গবেষণা ও অর্থায়ন কৃষি উৎপাদন বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে তা উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ইন্টারন্যাশনাল রাইস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ইভোন পিন্টো।
তিনি বলেন, কৃষকদের জন্য ঋণ সহজলভ্য হওয়ার পর থেকে বিশ্বব্যাপী ধান উৎপাদন বেড়েছে।
ডাচ উদ্যোক্তা উন্নয়ন ব্যাংক এফএমওর পরিচালক জোরিম শ্রাভেন ঋণ প্রাপ্তির অধিকারের বিষয়ে নৈতিক সমর্থন দেয়ায় অধ্যাপক ইউনূসের প্রশংসা করেন এবং জানান, এটি মানুষের তথ্য জানার অধিকার সম্পর্কিত।
অধ্যাপক ইউনূস তার বক্তব্যে বলেন, ‘যদি একজন কৃষককে ঋণের সুবিধা দেয়া হয়, তবে সে উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারে।’
প্রত্যেক ব্যবসায় টাকা এবং বিনিয়োগের প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একজন কৃষক শুধুমাত্র ফসল উৎপাদন করেন না, তিনি তা বাজারে বিক্রি করেন।’
আরও পড়ুন:চীনের দুটি প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে লিথিয়াম ব্যাটারি ও সোলার প্যানেল তৈরির কারখানা স্থাপনের পাশাপাশি স্যাটেলাইট কানেকশনের জন্য বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান ন্যামস মোটরস লিমিটেড।
চীনের প্রতিষ্ঠান দুটি হলো ওয়েলবে কমিউনিকেশন টেকনোলজি লিমিটেড ও বেইজিং হাইরুন হাওশেং টেকনোলজি লিমিটেড।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) প্রধান কার্যালয়ে গত ১০ নভেম্বর চীনের একটি বিনিয়োগকারী দলের সঙ্গে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যানের সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় লিথিয়াম ব্যাটারি ও সোলার প্যানেলে চীনের দুই প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশি অটোমোবাইল প্রতিষ্ঠান ন্যামস মোটরস লিমিটেডের যৌথ বিনিয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
এ বিনিয়োগ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, পরিবেশের দূষণ কমানো ও নতুন চাকরির ক্ষেত্র তৈরি করবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।
সভায় যৌথ বিনিয়োগের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ন্যামস মোটরস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শফিকুজ্জামান, পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল এ কে এম আবদুর রহমান, চিফ অপারেটিং অফিসার নুরউদ্দিন জাহাঙ্গীর, সহকারী পরিচালক মোকাম্মেল হোসেন এবং ওয়েলবে কমিউনিকেশন টেকনোলজি লিমিটেড ও বেইজিং হাইরুন হাউশেং টেকনোলজি লিমিটেডের পক্ষে প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ারম্যান ওয়াং তিক বেঞ্জামিন, মার্কেটিং ডিরেক্টর চিউং তুং পিউ বিল, নির্বাহী পরিচালক লিউ মেইশু, ম্যানেজার প্যান কিয়াং, চিফ ইন্জিনিয়ার তং ইয়োংঝ্যাং, ম্যানেজার ওয়াং গুইয়াং ও প্রকৌশলী পলাশ কুমার সেন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:দেশের প্রান্তিক কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ক্ষুদ্রবীমা খাতে নতুন দুটি কৃষিবীমা চালু করেছে বাংলাদেশ মাইক্রোইন্স্যুরেন্স মার্কেট ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (বিএমএমডিপি)। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের অর্থায়নে এবং সুইসকন্টাক্ট বাংলাদেশ-এর বাস্তবায়নে প্রকল্পটি ক্লাইমেট মাইক্রোইন্স্যুরেন্স ইনোভেশন ফান্ড-উদয় এবং ক্লাইমেট রিস্ক রেজিলিয়েন্স ফান্ড-অভয় নামে দুটি রূপান্তরমূলক উদ্যোগ চালু করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উদয় তহবিলটি জলবায়ু-সচেতন মাইক্রোইন্স্যুরেন্স পণ্যে উদ্ভাবনের জন্য আর্থিক সহায়তা দেবে। আর অভয় তহবিলটি পুনঃবীমাকারীদের সক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
বিএমএমডিপির টিম লিডার পারভেজ মোহাম্মদ আশেক বলেন, ‘এই তহবিলগুলো জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় আর্থিক সহনশীলতা বাড়াতে প্রয়োজন। এর মাধ্যমে কৃষক ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জলবায়ু ঝুঁকির সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য নিরসনে ভূমিকা রাখবে।’
ঢাকায় সুইস দূতাবাসের ডেপুটি হেড অফ মিশন কোরিনি হেঙ্কোজ পিগনানি বলেন, ‘জলবায়ু ঝুঁকি, স্বাস্থ্য সংকট এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের বিরুদ্ধে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দিতে ক্ষুদ্রঋণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশে জলবায়ু-সহনশীল কৃষি মাইক্রোইন্স্যুরেন্সের উদ্ভাবনী সম্ভাবনা’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনাও অনুষ্ঠিত হয়। এতে সুইস দূতাবাস, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ব্লু মার্বেল মাইক্রোইন্স্যুরেন্স ইনকরপোরেশন, এমপাওয়ার সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজেস লিমিটেড এবং কেএম দাস্তুর অ্যান্ড কোং লিমিটেডের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।
আলোচনায় বিশেষজ্ঞ বক্তারা জলবায়ু সহনশীলতা তৈরিতে উদ্ভাবনী উদ্যোগ ও অংশীদারত্বের গুরুত্ব আরোপ করেন।
দেশের জনগণের জীবনযাত্রাকে সহজ করতে কাজ করতে চান বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর সোমবার তিনি এ মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘মুদ্রাস্ফীতির ফলে ভোক্তাদের যে পরিমাণ খরচ বেড়েছে, সেই তুলনায় ক্রয়ক্ষমতা বাড়েনি। কোনো মন্ত্রের মাধ্যমে তো দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।
‘এ ব্যাপারে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করতে চাই। দেশের জনগণের জীবনযাত্রাকে কিছুটা সহজ করতে চাই।’
সেখ বশির উদ্দিন বলেন, ‘শুরু থেকেই আমি ছাত্র-জনতার আন্দোলনের চেতনার পক্ষে ছিলাম। আমি কোনো রাজনৈতিক দল, নিজের কোম্পানি ও আত্মীয়-স্বজন কারও কোনো প্রতিনিধিত্ব করছি না এখন। সবার সহযোগিতা নিয়ে কাজ করতে চাই।’
অন্তর্বর্তী সরকারে রোববার যুক্ত হওয়া ব্যবসায়ী সেখ বশির উদ্দিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সামলানোর দায়িত্ব পেয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এর আগে সালেহউদ্দিন আহমেদ অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। এখন সালেহউদ্দিন আহমেদ শুধু অর্থ মন্ত্রণালয় সামলাবেন।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। এখন তিনি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও পালন করবেন।
আরও পড়ুন:চলতি নভেম্বর মাসের প্রথম ৯ দিনে দেশে মোট ৬৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, দৈনিক হিসাবে যা গড়ে প্রায় ৭ কোটি ২৮ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
রোববার প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, অক্টোবরের একই সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ৭৩ কোটি ৯৮ লাখ ডলার। অর্থাৎ গত মাসের তুলনায় চলতি মাসের এই সময় পর্যন্ত ৮ কোটি ৪৮ লাখ ডলার কম রেমিট্যান্স এসেছে।
এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে দেশে আসা রেমিট্যান্সের পরিমাণ ১৯ কোটি ৯৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে সর্বোচ্চ ৪২ কোটি ১৯ লাখ ৪০ হাজার ডলার।
বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এই নয় দিনে রেমিট্যান্স এসেছ তিন কোটি ১৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার। পাশাপাশি বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার দেশে এসেছে।
রেমিট্যান্স প্রবাহ বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৩ থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত দেশে এসেছে ৬১ কোটি ২৫ লাখ ৮০ হাজার ডলার এবং ১ থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৪ কোটি ২৪ লাখ ১০ হাজার ডলার।
গত জুন মাসে দেশে ২৫৩ কোটি ৮৬ লাখ ডলার রেমিট্যান্স আসে। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। ওই মাসে আসা রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৯১ কোটি ডলার, যা গত ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
তবে আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর এই প্রবণতা স্থিতিশীল হতে শুরু করে এবং ওই মাসেই রেমিট্যান্স আসে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ডলার। এরপর সেপ্টেম্বরে আসে ২৪০ কোটি ৪৮ লাখ ডলার এবং অক্টোবরে তা সামান্য হ্রাস পেয়ে আসে ২৩৯ কোটি ৫১ লাখ ডলার।
আরও পড়ুন:বস্ত্র ও পোশাকশিল্পে উদ্ভাবনকে এগিয়ে নিতে টেক্সটাইল ট্যালেন্ট হান্ট (টিটিএইচ) সিজন-৯- এর উদ্বোধন করেছে টেক্সটাইল টুডে ইনোভেশন হাব।
ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে শনিবার গ্র্যান্ড লঞ্চিং হয়।
সেন্ট্রো টেক্স লিমিটেড প্রেজেন্ট ও ইউরো ডাই-সিটিসি পাওয়ার্ড টেক্সটাইল ট্যালেন্ট হান্ট সিজন-৯-এর উদ্দেশ্য হলো এ খাতে কর্মরত ব্যক্তিদের মধ্যে উদ্ভাবনী সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেয়া ও বৃহত্তরভাবে ব্যবসায় উদ্ভাবনের প্রসার।
বুটেক্সের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জুলহাস উদ্দিন টেক্সটাইল ট্যালেন্ট হান্ট সিজন-৯-এর গ্র্যান্ড লঞ্চিং ঘোষণা করেন।
তিনি টেক্সটাইল টুডে ইনোভেশন হাবের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও তারেক আমিনকে অভিনন্দন জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, অনন্ত কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনামুল হক খান, ইনস্টিটিউশন অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড টেকনোলজিস্টের (আইটিইটি) আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার এহসানুল করিম কায়সার, বাংলাদেশ গার্মেন্টস বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশন (বিজিবিএ) সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন পাভেল, বাংলাদেশ এপারেল ইউথ লিডার্স এসোসিয়েশন (বায়লা) সভাপতি আবরার হোসেন সায়েম এবং মাসকো গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক এটিএম মাহাবুবুল আলম চৌধুরী।
টিটিএইচ জাজেস প্যানেলের চেয়ারম্যান এবং বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. আইয়ুব নবী খান এবং সদস্য সচিব মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন শিয়াকসহ আরও অনেক বিশিষ্ট শিল্প নেতা, বিশেষজ্ঞ, কারখানার মালিক ও সাংবাদিকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
টিটিএইচ অষ্টম সিজনের মতো সিজন-৯-এ জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রায় ১০০ জন শিক্ষার্থীকে নির্বাচিত করা হবে। তারা প্রশিক্ষণ ও গ্রুমিং, আইডিয়া অডিশন, অ্যাপটিটিউড টেস্ট এবং নিবিড় তত্ত্বাবধানে গবেষণা বা উদ্ভাবনী প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে উদ্ভাবনী মাস্টারমাইন্ডে (IMs) রূপান্তরিত হবেন।
সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
সেরা ১০০ ইনোভেশন মাস্টারমাইন্ড ৩০ লাখ টাকা সমমানের প্রশিক্ষণ পাবেন। তারা ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত বৃত্তিও পাবেন।
প্রতিটি প্রকল্পে তিনজন ইনোভেশন মাস্টারমাইন্ড এসব প্রকল্পে যুক্ত থাকবেন। একই সঙ্গে থাকবেন শিল্প বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ ও টেক্সটাইল টুডে ইনোভেশন হাবের নিজস্ব সমন্বয়কারী।
এভাবে প্রতিটি দল গঠন করা হবে। তাদের ফলাফল টেক্সটাইল টুডে ইনোভেশন হাব ইনোভেশন কনফারেন্স নামে একটি প্রদর্শনীর মাধ্যমে শিল্পের সঙ্গে শেয়ার করবে।
প্রতিযোগিতার পর, গ্র্যান্ড ফিনালেতে গ্রুপ এবং ব্যক্তিগত উভয় বিভাগে চ্যাম্পিয়ন এবং প্রথম রানার আপ এবং দ্বিতীয় রানার আপদের মোট ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রাইজমানি দেয়া হবে।
উদ্ভাবনশীলতাকে সংহত করতে ইচ্ছুক যেকোনো শাখার যেকোনো স্নাতক স্তরের শিক্ষার্থীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবেন।
টেক্সটাইল টেলেন্ট হান্ট সম্পর্কে আরও তথ্যের জন্য যোগাযোগ করা যাবে বিজনেস ডেভেলপমেন্ট হেড আমজাদ হোসেন মনিরের ০১৭৭৫-৯৯৯৭৪৮ নম্বরে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য