কক্সবাজারে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লেগেছে আইওএম হাসপাতালে। নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট।
নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ।
তিনি জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রথমে কাজ শুরু করে উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট। পরে কক্সবাজার থেকে আরও দুটি ইউনিট যোগ দিয়েছে।
আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ১৪-এর অধিনায়ক নাইমুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ক্যাম্পে জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা পরিচালিত হাসপাতালে আগুন লেগেছে। আমাদের লোকজন পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। এখনও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। কীভাবে আগুন লেগেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’
উখিয়ার বালুখালীতে গত বছরের ২২ মার্চ আগুনে পুড়ে মারা যায় ১৫ জন রোহিঙ্গা। তখন ১০ হাজারের মতো ঘর পুড়ে গিয়েছিল।
তিন দিনের মাথায় অবশেষে মিয়ানমারে আটকে রাখা বাংলাদেশি তিন পণ্যবাহী জাহাজ ছেড়ে দিয়েছে আরাকান আর্মি।
মিয়ানমার থেকে পণ্য নিয়ে টেকনাফ স্থলবন্দরে আসার পথে নাফ নদীর মোহনা থেকে বৃহস্পতিবার তিনটি কার্গো আটক করা হয়েছিল।
টেকনাফ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এতেশামুল হক বাহাদুর সোমবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে আটক কার্গো জাহাজের মধ্যে দুটি বাংলাদেশ-মিয়ানমার নাফ নদের জলসীমা নাইক্ষ্যংদিয়া থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। অন্যটি সেখানে ছিল।
টেকনাফ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এতেশামুল হক বাহাদুর বলেন, পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তারা মিটিংয়ে বসেছেন। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন থেকে পণ্যবাহী চারটি কার্গো জাহাজ কক্সবাজার জেলার টেকনাফ স্থলবন্দরের উদ্দেশে আসার পথে আরাকান আর্মি আটক করে তাদের জিম্মি করে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুটি করে পর্যায়ক্রমে চারটি কার্গো আটক করে এ সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী।
আরাকান আর্মির সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে ছাড়পত্র নিয়ে গত শনিবার একটি কাঠবাহী কার্গো বন্দরে আসে। তিন দিন পর বাকি তিনটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
মিয়ানমারে সংঘাতের মধ্য দিয়ে আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের বেশির ভাগ এলাকা দখলে নেয়। এ সংঘাতের প্রভাব পড়েছে টেকনাফ স্থলবন্দরের সীমান্ত বাণিজ্যে। বেশ কিছুদিন ধরে বন্দরের আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।
বিচ্ছিন্নভাবে যেসব পণ্য আমদানি হয়, তাও ইয়াঙ্গুন শহর থেকে। এ শহর থেকে আসার পথে নাফ নদীতে প্রবেশ করতে রাখাইন রাজ্যের সীমান্ত হয়ে আসতে হয়।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, কার্গো জাহাজগুলোতে ৫০ হাজার বস্তা শুঁটকি, সুপারি, কফিসহ বিভিন্ন পণ্যের আনুমানিক ৫০ কোটি টাকার মালামাল রয়েছে।
আরও পড়ুন:ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে বরাদ্দের বিপরীতে রোগীর খাবার পরিবেশনে অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলা থেকে তিন সাংবাদিককে খালাস দিয়েছে আদালত।
রংপুর সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুল মজিদ সোমবার দুপুর একটার দিকে এ আদেশ দেন।
খালাস পাওয়া তিন সাংবাদিক হলেন জাগোনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি তানভীর হাসান তানু, বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিনিধি আবদুল লতিফ লিটু ও প্রতিদিনের বাংলাদেশের প্রতিনিধি রহিম শুভ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন আসামিপক্ষের বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল নোমান ও রংপুর জজ কোর্টের আইনজীবী ফাহিম আহম্মেদ।
আইনজীবী আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিরুদ্ধে কোনো তথ্য ও প্রমাণাদি উপস্থিত না করতে পারায় আসামিদের খালাস দিয়েছে আদালত। আমরা এ রায়ে খুশি।
‘কারণ ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সাংবাদিকরা যেন সত্য তুলে ধরতে না পারে, তাদের কলমকে থামাতে এ আইনের অপব্যবহার করা হয়েছে। আমি এ মামলাটির শুরু থেকে সাংবাদিকদের আইনি সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে আসছি। রায়ে আমিও আনন্দিত।’
এদিকে রায়ের খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানাজানি হওয়ার পর থেকে সাংবাদিকসহ অনেকে মিষ্টি বিতরণ করেছেন।
হাসপাতাল নিয়ে প্রকাশিত সংবাদটি ‘মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট এবং জনরোষ সৃষ্টিকারী ও মানহানিকর’ দাবি করে ২০২১ সালের জুলাইয়ে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ নাদিরুল আজিজ বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫(১)(ক), ২৫(১)(খ), ২৯(১), ৩১(১) ও ৩৫(১) ধারায় মামলাটি করেন।
এ মামলায় তানুকে গ্রেপ্তার করা হলে দেশব্যাপী সাংবাদিকসহ সব মহলে ব্যাপক প্রতিবাদ জানানো হয়। পরে ২০ ঘণ্টার ব্যবধানে সাংবাদিক তানভীর হাসান তানুকে জামিন দেয় আদালত।
এর আগে গত ৫ জুলাই অনলাইন সংবাদমাধ্যম জাগো নিউজে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে রোগীদের খাবার নিয়ে ‘দিনে বরাদ্দ ৩০০ হলেও করোনা রোগীদের খাবার দেয়া হচ্ছে ৭০ টাকার!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।
আরও পড়ুন:টানা তিন দিন ধরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পানির সংকটে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল।
পানি না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা।
এদিকে দুই দিন ধরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে ৩০০ থেকে ৩৫০ জন রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে ভর্তি থাকেন হাসপাতালে। ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালে রোগী ও স্বজনসহ সহস্রাধিক মানুষ অবস্থান করছেন। প্রতিদিন এখানে ২০ হাজার লিটার পানি প্রয়োজন।
হাসপাতালটিতে শনিবার বেলা ১১টা থেকে শৌচাগারসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
সরেজমিনে সোমবার গিয়ে দেখা যায়, রোগী ও তাদের স্বজনরা বাইরে থেকে পানি এনে জরুরি কাজ সারছেন।
এদিকে পানি সংকটে শৌচাগার থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। হাসপাতালের পক্ষ থেকে পানির জন্য বিকল্প কোনো ব্যবস্থাও করা হয়নি।
শৌচাগারে ব্যবহারের জন্য পানিও লোকজনকে কিনে আনতে হচ্ছে। রোগীর স্বজনরা আশপাশের দোকান থেকে কিনে কিংবা অনেক দূর থেকে হেঁটে ফিল্টার ও বাসাবাড়ি থেকে বোতল, বালতিতে করে পানি নিয়ে আসছেন।
বিশুদ্ধ পানি না থাকায় রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
জেলার তাড়াইল উপজেলার রাউতি গ্রামের বাসিন্দা শাহিনুল ইসলাম জানান, গত তিন দিন যাবত তার চাচাত বোনকে নিয়ে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
তিনি বলেন, ‘আসার পর থেকে দেখলাম বাথরুমে পানি নেই। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে বলার পর তিনি জানিয়েছিলেন আজকের মধ্যেই সমস্যা সমাধান হবে। কিন্তু আজকে তিন দিন হয়ে গেলেও সমস্যাটি সমাধান হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম দিন কোনো রকম আশপাশে গিয়ে জরুরি প্রয়োজন সেরে এসেছি। দ্বিতীয় দিন রোগীসহ বিপদে পড়েছি। পরে নিচে নেমে অটোরিকশা করে শহরের খরমপট্টি এলাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় গিয়ে গোসলসহ প্রয়োজনীয় কাজ সেরে এসেছি।’
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার কাশোরারচর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল কাদির বলেন, ‘একটা সরকারি হাসপাতালের টয়লেটে পানি নেই, এটা হতে পারে? ময়লা আর দুর্গন্ধে আশপাশেও থাকা যাচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘অসুস্থ মানুষ সুস্থ হওয়ার জন্য হাসপাতালে আসে। আর এই হাসপাতালের যে পরিবেশ, তাতে একজন সুস্থ মানুষও অসুস্থ হতে সময় লাগবে না।’
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবুজর গিফারী জানান, রবিবার রাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে খবর পেয়ে দুটি গাড়িতে করে ৮ হাজার ৬০০ লিটার পানি দেওয়া হয়েছে।
গতকাল রাত ১১ টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সেখানে কাজ করেছেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের (ভারপ্রাপ্ত) তত্ত্বাবধায়ক ডা. নূর মোহাম্মদ শামসুল আলম সমস্যার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, রবিবার রাতে ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমে যে পরিমাণ পানি আনা হয়েছিল, সে পানি দিয়ে গতকাল রাত থেকে সকাল পর্যন্ত চলছে। এখন আবার জনস্বাস্থ্য থেকে খাবার পানি আনা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ছয় তলায় ১০ ঘোড়ার একটি বড় মোটর রয়েছে। ২০২০ সালে লাগানো মোটরটি প্রায়ই সমস্যা করে। কিন্তু এবার একেবারে বিকল হয়ে যাওয়ায় পানির সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:নরসিংদীর রায়পুরায় ট্রেনের ধাক্কায় ইজিবাইক দুমড়েমুচড়ে গিয়ে চালকসহ দুজন নিহত হয়েছেন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের অরক্ষিত হাসনাবাদ রেল ক্রসিংয়ে রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মো. জহিরুল ইসলাম বাসসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
নিহত দুজন হলেন রায়পুরা উপজেলার আদিয়াবাদ ইউনিয়নের নয়াচর এলাকার প্রয়াত আবদুল কাদিরের ছেলে ইজিবাইক চালক বাচ্চু মিয়া (৫০) এবং একই এলাকার কলিম উদ্দিনের ছেলে মন্নাফ মিয়া (৪৮)।
পুলিশ ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, একজন যাত্রীসহ ব্যাটারিচালিত একটি ইজিবাইক হাসনাবাদ অরক্ষিত রেল ক্রসিং পার হচ্ছিল। ওই সময় কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী একটি ট্রেন ইজিবাইকটিকে ধাক্কা দিলে এটি ছিটকে পড়ে দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ইজিবাইক চালক বাচ্চু মিয়া ও যাত্রী মন্নাফ মিয়া নিহত হন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে হাসনাবাদ রেল ক্রসিংটি অরক্ষিত রয়েছে। কোনো গেটম্যান কিংবা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না থাকায় প্রায়ই এখানে দুর্ঘটনা ঘটে।
নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি ও পরিচয় শনাক্ত করেছে।’
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে টানা দুই দিন ধরে পানি না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন চিকিৎসা নিতে আসা শত শত রোগী ও তাদের স্বজনরা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, রোববারের মধ্যেই সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
রোগী নিয়ে গত তিন দিন ধরে হাসপাতালে আছেন নিকলী উপজেলার সিংপুর গ্রামের বাসিন্দা আতিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘বাথরুমে পানি নেই। ময়লা আর দুর্গন্ধে আশপাশেও থাকা যাচ্ছে না। রোগী বা সাথের কারও বাথরুমে যেতে হলে নিচ তলায় যেতে হচ্ছে।’
তিনি জানান, এ অবস্থায় রোগীর চিকিৎসায় সময় দেবেন নাকি পানি আনতে দৌড়াবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না।
হাসপাতালে রোগী নিয়ে এসেছেন সদর উপজেলার নীলগঞ্জের বাসিন্দা জুবেদা খাতুন।
তিনি রোববার সকালে বলেন, ‘অসুস্থ মানুষ সুস্থ হওয়ার জন্য হাসপাতালে আসে। আর এ হাসপাতালের যে পরিবেশ, তাতে একজন সুস্থ মানুষও অসুস্থ হতে সময় লাগবে না।’
৫৫ বছর বয়সী এ নারী জানান, লিফট থাকলেও সেটার ব্যবহার না জানায় বারবার সিড়ি বেয়ে নিচে নামতে হচ্ছে তার।
জেলা সদর উপজেলার কাটাবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের সমস্যার দিক একটুও চিন্তা করেন না।’
চিকিৎসার ক্ষেত্রে রীতিমতো অবহেলার শিকার হচ্ছেন দাবি করে এ যুবক বলেন, ‘এখানে নামমাত্র সেবা প্রদান করা হচ্ছে। কারও কোনো সমস্যা হলে সময়মতো ডেকেও ডাক্তার পাওয়া যায় না।’
সদর উপজেলার কাশোরারচর এলাকার বাসিন্দা আবদুল কাদির বলেন, ‘দৈনন্দিন জীবনে সবচেয়ে প্রয়োজন পড়ে পানির। কিন্তু এখানে সেই ব্যবস্থাটাই নেই। একটা মানুষ জরুরি প্রয়োজনে বাথরুমে গিয়ে যখন দেখেন পানিটাই নাই, তখন কোন ধরনের সমস্যায় পড়েন, সেটা তো বুঝতেই পারছেন।
‘এ সমস্যাটা কিছুক্ষণের জন্য হলে হতেই পারে। সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু টানা দুই দিন যাবত এই হাসপাতালে পানি নেই। অথচ কর্তৃপক্ষের কোনো মাথাব্যথা নেই।’
জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের (ভারপ্রাপ্ত) তত্ত্বাবধায়ক ডা. নূর মোহাম্মদ শামসুল আলম সমস্যার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, ছয় তলায় ১০ ঘোড়ার একটি বড় মোটর রয়েছে। ২০২০ সালে লাগানো মোটরটি প্রায়ই সমস্যা করে। কিন্তু এবার একেবারে বিকল হয়ে যাওয়ায় পানির সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। আজকের মধ্যেই সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদর থেকে এক কিলোমিটার দূরে কুঞ্জবন গ্রাম। এ গ্রামের পূর্ব পাশ দিয়ে বয়ে গেছে আত্রাই নদী।
এ নদীর দুই পারের সড়কের পাশে অসংখ্য গাছ। বহতা সে নদীর স্বচ্ছ জলে পরিযায়ী পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে থাকে চারপাশ।
শীতের শুরু থেকেই অসংখ্য পরিযায়ী পাখি এসে আবাস গড়েছে আত্রাই নদীতীরের পুরো কুঞ্জবন এলাকাজুড়ে। তাদের কিচিরমিচির শব্দে এখন ঘুম ভাঙে নদীর দুই পারের বসবাসকারী মানুষদের। নিরাপদে পাখিগুলোর বসবাসের জন্য উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় সামাজিক সংগঠন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ১১ বছর ধরে নওগাঁর মহাদেবপুরের আত্রাই নদীর কুঞ্জবন এলাকাজুড়ে অতিথি পাখি আসছে শীত মৌসুমে। শীতপ্রধান দেশ থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য পরিযায়ী পাখিরা এসে কুঞ্জবনের নদীতে আশ্রয় নেয়।
শীতের শুরুতে আসতে থাকে পাখি। নদীতে বছরের চার থেকে পাঁচ মাস পাখিগুলো থাকে। সারা দিন নদীতে থাকলেও রাতে তারা ফিরে যায় পাশের রামচন্দ্রপুর, মধুবনসহ কয়েকটি স্থানের গাছে। ভোরে আবারও ফিরে আসে আত্রাই নদীতে।
প্রতিদিনই পরিযায়ী এসব পাখি দেখতে দূরদুরান্ত থেকে আসেন নানা বয়সী দর্শনার্থীরা।
পাখি দেখতে নওগাঁ শহরের তাজের মোড় থেকে এসেছেন সারোয়ার হোসেন দম্পতি।
কথা হলে সারোয়ার বলেন, ‘আত্রাই নদীতে পাখির কলরবে পুরো কুঞ্জবন এলাকা যেন মুখরিত হয়ে গেছে। এখানে এসে আমাদের খুব ভালো লাগছে। পাখিগুলোকে কেউ যেন বিরক্ত না করে, সেই দিকে প্রশাসনের খেয়াল রাখতে হবে।’
নওগাঁ শহরের চকদেবপাড়া থেকে আসা সজিব হোসেন বলেন, ‘প্রতি বছর এখানে অনেক পরিযায়ী পাখির সমাগম ঘটে বলে জানতে পেরে এসেছি। এতগুলো পাখি একসাথে কখনো দেখিনি। খুব ভালো লাগছে এখানে এসে।
‘নদীতে ড্রেজার মেশিন নামিয়ে বা কেউ যাতে পাখিগুলোকে শিকার না করে, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে কর্তৃপক্ষের।’
মহাদেবপুর উপজেলা সদরের সুমন হোসেন বলেন, ‘আমরা কয়েকজন বন্ধু-বান্ধবী মিলে পাখিগুলো দেখতে এসেছি। শীত মৌসুম ছাড়া এখানে এত পাখির বিচরণ হয় না।
‘স্থানীয় সামাজিক সংগঠনের পাশাপাশি যদি সরকারিভাবে পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাহলে আগামীতে এই এলাকায় পাখিদের আরও বেশি আগমন ঘটবে এবং সেই সাথে এটাকে ঘিরে বিনোদনের কেন্দ্র গড়ে তোলা যেতে পারে বলে মনে করছি।’
কথা হয় স্থানীয় বিচিত্র পাখি উৎপাদন গবেষণা পরিষদ নামের সামাজিক সংগঠনের পরিচালক মুনসুর সরকারের সঙ্গে।
এ পাখিপ্রেমী বলেন, ‘পরিযায়ী পাখিদের নিরাপদ অবস্থানের জন্য নদীর পানিতে বেশ কিছু বাঁশ দিয়ে ঘের তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি উড়ে এসে পানিতে পড়ছে।
‘কেউ গা ভাসিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কেউ গা পরিষ্কার করছে। আবার কেউ বাঁশের ওপর বসে আরাম করছে।’
তিনি বলেন, ‘চলতি শীত মৌসুমে বালিহাঁস, সরালি হাঁস, পানকৌড়ি, রাতচোরাসহ প্রায় ১৫ প্রজাতির পরিযায়ী পাখির বিচরণ ঘটেছে আত্রাই নদীতে। এ ছাড়া পিয়াং হাঁস, পাতি সরালি, লেঙজাহাঁস, বালিহাঁস, পাতিকুট, শামুকখোল, পানকৌড়ি, ছন্নি হাঁসসহ প্রায় ১২ জাতের দেশি পাখির সমাগম ঘটেছে।’
মুনসুর সরকার আরও বলেন, ‘কেউ যেন পাখি শিকার বা মাছ শিকার করতে গিয়ে পাখিদের বিরক্ত না করে, সে জন্য আমরা কাজ করছি। মাঝে মাঝেই আমরা মাইকিং করে জনসাধারণকে সতর্ক করছি।
‘সরকারি উদ্যোগ নিয়ে এখানে পাখিদের নিরাপদ আবাসস্থল হতে পারে।’
এ বিষয়ে মহাদেবপুর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শিল্পী রায় বলেন, ‘আত্রাই নদীতে যেসব স্থানে পাখিদের অবাধ বিচরণ আছে, সেই সব স্থানে যাতে কেউ নৌকা দিয়ে মাছ শিকার করার কারণে পাখিদের অবাধ বিচরণে বাধাগ্রস্ত না হয় এবং কেউ যেন পাখি শিকার করতে না পারে, সে বিষয়ে মৎস্য অফিসের পক্ষ থেকে নজরদারি রয়েছে।
‘এ ছাড়া কেউ যদি পাখি শিকার করে, আমরা জানতে পারলে বন বিভাগের সাথে সমন্বয় করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। স্থানীয় সামাজিক সংগঠনগুলোও পাখির অবাধ বিচরণে কাজ করে যাচ্ছে।’
আরও পড়ুন:ঠাকুরগাঁও রোড রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ট্রেনে কাটা পড়ে মানুষের মৃত্যু ঠেকানোর পাশাপাশি যাত্রীদের অধিকার রক্ষার জন্য ১০ দফা দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও রোড রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে শনিবার দুপুরে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন যাত্রী অধিকার আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহাবুব আলম রুবেল।
এ কর্মসূচি ১৫ দিন পর্যন্ত চলবে। ওই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক, রাজনীতিক, সংস্কৃতিকর্মী, শিক্ষার্থীসহ অনেকেই বক্তব্য দেন এবং বিভিন্ন দাবির কথা তুলে ধরেন।
ঠাকুরগাঁওয়ের সংবাদকর্মী মজিবর রহমান খান বলেন, ‘এই প্ল্যাটফর্মে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমার দাবি এখানে দুইটি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। এখানে দুর্ঘটনা রোধে একটি ওভারব্রিজ নির্মাণ করা জরুরি।’
সাংবাদিক তানভীর হাসান তানু বলেন, ‘এ দাবি কোনো ব্যক্তির স্বার্থে নয়; এ দাবি আমাদের সকলের। পরিকল্পিতভাবে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের কাজ না হওয়ায় এখানে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে; মানুষ মরছে।’
সাংবাদিক সোহেল রানা বলেন, ‘এই প্ল্যাটফর্মের দিকে তাকালেই আপনারা দেখবেন বিগত সময়ে এখানে অপরিকল্পিত কাজ হয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মের ডিজাইন কী ছিল, আমাদের অজানা। এখাসে ট্রেন থেকে ওঠানামা করতে যাত্রীদের দুর্ভোগ হয়।
‘প্ল্যাটফর্মে ট্রেন দাঁড়ালে অনেক ফাঁকা থাকে। ফলে অনেকে পিছলে পড়ে ট্রেনের নিচে পড়ে এবং মৃত্যু ঘটে। ট্রেন বাঁশি না বাজিয়ে অনেক সময় ছেড়ে দেয়। এতেও ঘটে দুর্ঘটনা। আমরা যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বলছি। আশা করি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।’
সাংবাদিক মঈনুদ্দীন তালুকদার হিমেল বলেন, ‘এখানে টিকিটের কালোবাজারি হয়। এটি একটি বড় সমস্যা। আমরা এ কালোবাজারিদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবের দাবি জানাই। আমরা যাত্রীদের সুবিধার্থে বগি অনুযায়ী নাম্বার প্লেটের দাবি জানাই।’
সংস্কৃতিকর্মী রেজওয়ানুল হক রেজু বলেন, ‘আমাদের দাবিগুলো যৌক্তিক। সম্প্রতি এই প্ল্যাটফর্মে এসব সমস্যার কারণে একাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সমস্যাগুলো সমাধান না হলে এ সংখ্যা আরও বাড়বে। আমরা আর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু দেখতে চাই না।’
যাত্রী অধিকার আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহাবুব আলম রুবেল দাবিগুলো উত্থাপন করে বলেন, ‘ঠাকুরগাঁও রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রী দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্ল্যাটফর্মের উচ্চতা বৃদ্ধি করে ট্রেনের বগির দরজার সমান করতে হবে। প্ল্যাটফর্ম ও ট্রেনের বগির মধ্যকার ফাঁকা স্থান পূরণ করতে প্ল্যাটফর্ম প্রশস্ত করতে হবে। ঠাকুরগাঁও রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের বিরতির সময় বর্তমান ৩ মিনিট থেকে বাড়িয়ে ৫ মিনিট করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ট্রেন হুইসেল দেওয়ার পর সাথে সাথে না ছেড়ে মিনিমাম ৩০ সেকেন্ড পর ছাড়া, যাত্রীদের নিজ বগির অবস্থান বোঝার জন্য প্ল্যাটফর্মে ট্রেনের সকল বগির নাম্বার সঠিক জায়গায় ঝুলিয়ে রাখতে হবে। ট্রেন প্ল্যাটফর্মে আসার ঠিক আগ মুহূর্তে স্টেশনের মাইকের মাধ্যমে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের ট্রেনে ওঠানামা করতে গিয়ে যে দুর্ঘটনাগুলো হয়, সে বিষয়ে সতর্ক করা। রাতে গোটা প্ল্যাটফর্মে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘টিকিট কালোবাজারি বন্ধে কর্তৃপক্ষকে যথাযথ ব্যবস্থা করতে হবে এবং দুই প্ল্যাটফর্মের মাঝে একটি ওভারব্রিজ নির্মাণ করতে হবে। আমরা গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শেষে সংশ্লিষ্টদের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করব।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য