পটুয়াখালীর পায়রা সেতুর টোল প্লাজায় ট্রাকচাপায় এক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শওকত হোসেন পটুয়াখালী পুলিশ লাইনে কর্মরত ছিলেন।
তার বাড়ি বরিশালের হিজলাতলা গ্রামে। আহত রফিকুল ইসলামের বাড়ি বরিশাল কোতোয়ালি থানার কর্ণকাঠীতে। তারা মামাতো-ফুপাতো ভাই।
দুমকী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সালাম জানান, পায়রা সেতুর টোল প্লাজায় শওকত ও রফিকুল মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। এ সময় একটি ট্রাক ওই মোটরসাইকেলটিকে চাপা দিলে তারা আহত হন।
স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) নেয়ার পথে শওকতের মৃত্যু হয়।
ওসি আরও জানান, ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে।
শওকতের মরদেহ বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
অন্তর্বর্তী সরকার দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে মধ্য বা দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের চেয়ে স্বল্পমেয়াদি সংস্কারের দিকে মনোনিবেশ করেছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা সংস্কারের চেষ্টা করছ। তবে তা হবে স্বল্পমেয়াদি; মধ্যমেয়াদি বা দীর্ঘমেয়াদি নয়। আমরা একটি ফুটপ্রিন্ট রেখে যাচ্ছি, যেটার ওপর দিয়ে পরবর্তী সরকার হাঁটবে।’
‘আমরা নিশ্চিত যে নির্বাচিত সরকার আমাদের পদচিহ্ন এড়াতে পারবে না। কারণ আমরা যা কিছু করছি তা জনগণের কল্যাণের জন্য। জনগণই এ পথ অনুসরণ করতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে।’ সূত্র: ইউএনবি
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ভবনে পিকেএসএফ দিবস-২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
‘অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির জন্য অর্থায়ন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ৩৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করে পিকেএসএফ।
অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার নির্বাচিত সরকারের এখতিয়ার হওয়া উচিত। নির্বাচিত সরকারের অনুপস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এ ধরনের সংস্কার উদ্যোগ গ্রহণ সমীচীন নয়।’
বর্তমান সরকার তার কাজের মাধ্যমে এগিয়ে যাবে জানিয়ে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিদেশি ও দ্বিপাক্ষিক সংস্থা সবাই সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। আমাদের ক্যাপাসিটি আছে, সৃজনশীলতা আছে। আমরা এগিয়ে যাব।’
স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘অনেক সুউচ্চ ভবন-অবকাঠামো থাকলেও দেশে ভালো প্রতিষ্ঠানের অভাব রয়েছে। সততার অভাব রয়েছে। প্রতিষ্ঠান ভালো না হলে, যতই প্রজেক্ট করা হোক না কেন, সেটার বাস্তবায়ন হয় না।’
পিকেএসএফকে একটি বিশ্বমানের সংস্থা উল্লেখ করে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘শুধু ঋণ দেয়া নয়, প্রতিষ্ঠানগুলোকে উন্নত করতেও কাজ করেছে পিকেএসএফ। এর গ্রহণযোগ্যতা দাতা সংস্থাগুলোর কাছে অনেক বেশি।’
পিকেএসএফের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক বদিউর রহমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুল কাদের।
১৯৮৯ সালের ১৩ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত পিকেএসএফ দেশব্যাপী দুই শতাধিক সহযোগী সংস্থাকে (পিও) ঋণযোগ্য তহবিল সরবরাহ করে থাকে। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত পিকেএসএফের সহযোগী সংস্থাগুলোর সদস্য সংখ্যা সম্মিলিতভাবে ২ কোটি, যার ৯২ শতাংশই নারী।
বর্তমানে ফাউন্ডেশনের মোট ঋণগ্রহীতার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৫২ লাখ, যার মধ্যে ৯২ দশমিক ৭৬ শতাংশই নারী।
বঙ্গোপসাগরের নাফ নদী মোহনা থেকে আবারও দুটি ট্রলারসহ ছয়জনকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। রড-সিমেন্টসহ মালামাল নিয়ে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে তাদেরকে ধরে নিয়ে যাএয়া হয়। এর আগে সম্প্রতি সময়ে জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।
টেকনাফ-সেন্টমার্টিন বোট মালিক সমিটির সভাপতি আবদুর রশিদ বুধবার বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার টেকনাফ থেকে দুটি ট্রলার রড-সিমেন্টসহ মালামাল নিয়ে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে আরাকান আর্মির সদস্যরা সাগর মোহনা থেকে তাদের ধরে নিয়ে যায়। এ সময় ট্রলারের ছয়জন স্টাফ ছিল, যারা সবাই সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা। ধরে নিয়ে যাওয়া ট্রলারের মধ্যে আমার একটি রয়েছে। বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলাোবাহিনীদকে অবহিত করা হয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ‘মালামাল ভর্তি দুটি ট্রলারসহ ছয়জনকে মিয়ানমারে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। তবে কিভাবে এ ঘটনা ঘটেছে এবং কারা ধরে নিয়ে গেছে সে বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি।’
তবে এ ধরনের ঘটনার বিষয়ে কেউ অবহিত করেননি বলে জানিয়েছেন টেকনাফ-২ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদ।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জলবায়ু সংকট মোকাবেলা এবং পৃথিবী ও মানব কল্যাণকর নতুন সভ্যতা গড়ে তুলতে এক নতুন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কাঠামো প্রয়োজন।
বুধবার জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে এলডিসি’র উচ্চ পর্যায়ের তিনি একথা বলেন। সূত্র: বাসস
আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কপ-২৯ সম্মেলনের ফাঁকে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
রুদ্ধদ্বার এই বৈঠকে পাঁচটি প্রধান জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ স্বল্পোন্নত দেশ- নেপাল, মালাউই, গাম্বিয়া, লাইবেরিয়া ও বাংলাদেশের নেতারা যোগ দেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের একটি নতুন অর্থনৈতিক কাঠামো দরকার, যা পৃথিবী ও মানুষের জন্য কল্যাণকর হবে।’
একইসঙ্গে বিশ্বের তরুণদের জন্য একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ার লক্ষ্যে জাতিসংঘের পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠিত ‘সামিট ফর দ্য ফিউচার’-এর প্রতিও সমর্থন জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা এমন অর্থনৈতিক কাঠামো তৈরি করেছি যার ভিত্তি হচ্ছে- ভোগ, ভোগ আর ভোগ। এটি শুধু বর্জ্য, বর্জ্য ও বর্জ্য উৎপাদন করে। আমাদেরকে শূন্য বর্জ্যের বিশ্ব গড়তে হবে।’
প্রতি বছর কপ জলবায়ু সম্মেলন করা উচিত নয় উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বিশ্বের কী প্রয়োজন তা আমরা জানি এবং এর জন্য আমাদের একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা উচিত। এটি দেশ অনুযায়ী হওয়া উচিত। আমাদের দীর্ঘমেয়াদি (বর্জ্য) অপসারণের পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।
‘আমাদের প্রতি বছর এখানে জমায়েত করার দরকার নেই। প্রতি বছর আলোচনার জন্য মিটিং করা সময়সাপেক্ষ, অপচয়কর ও অপমানজনক।’
বর্তমান দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্বের বেশিরভাগ চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে জলবায়ু আলোচনার জন্য একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গির আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে স্বল্পোন্নত দেশগুলো সবচেয়ে বড় অবিচারের সম্মুখীন হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের বলতে চাই যে আমরা আপনাদের বিষয়ে গুরুত্ব দেই। জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমনের জন্য একটি বৃহত্তর তহবিল সংস্থান করতে স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে জোরালো আলোচনা এবং ঐকান্তিক প্রক্রিয়া গড়ে তুলতে হবে।’
আরও পড়ুন:বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলে করা সব চুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশ করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার রাজধানীর বনানীতে জুলাই-আগস্ট গণ-আন্দোলনে চক্ষু হারানো, চক্ষু ক্ষতিগ্রস্ত এবং নিম্নবিত্ত মানুষের চক্ষু সেবার উদ্দেশ্যে প্রখ্যাত চক্ষু বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে বিনামূল্যে চক্ষুসেবা ক্যাম্পের উদ্বোধনকালে তিনি এই আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এখন জনগণের একটাই দাবি, শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে গত ৫ আগস্ট পর্যন্ত যত চুক্তি করেছেন সেই চুক্তিগুলো অন্তর্বর্তী সরকার প্রকাশ করুক। তিনি দেশের কত বড় ক্ষতি করে গেছেন তার প্রমাণ তো আমরা দেখতে পাই।’
‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় এই চক্ষুসেবা ক্যাম্প কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
রিজভী বলেন, ‘বিএনপিকে দমন-নিপীড়নই ছিল শেখ হাসিনার নীতি। তার পরিণাম হয়েছে ভয়াবহ। সঙ্গী-সাথী ফেলে স্বার্থপরের মতো পালিয়ে গেছেন তিনি।
‘শেখ হাসিনা শুধু নিজের ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব পার্শ্ববর্তী দেশের কাছে জিম্মি করে দিয়েছিলেন।’
‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে ‘চক্ষু সেবা ক্যাম্প’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সিনিয়র সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল, বিএনপির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ-সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, বিএনপি নেতা তাবিথ আউয়াল, ইশরাক হোসেন, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, সদস্য মাসুদ রানা লিটন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এই ‘চক্ষু সেবা ক্যাম্প’-এর কার্যক্রম চলে বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩ পর্যন্ত। এতে প্রায় ৪০০ জন সেবা গ্রহণ করেন।
বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, জুনিয়র কনসালটেন্ট এবং স্বেচ্ছাসেবকসহ ২৫ জনের একটি মেডিক্যাল টিম ‘চক্ষু সেবা ক্যাম্প’ কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকার আদানি নামে ভারতের একটা কোম্পানির সঙ্গে বিদ্যুতের অত্যন্ত অসম চুক্তি করেছে। আদানির কাছ থেকে কেনা এক ইউনিটের দাম ১২ টাকা, পৃথিবীর কোথাও এত দাম দিয়ে বিদ্যুৎ কেনা হয় না।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা আদানির সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন একটা অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে- তাকে যদি কখনও পালাতে হয় তাহলে আদানি তাকে অর্থায়ন করবে। জনগণের কল্যাণের জন্য শেখ হাসিনা আদানির সঙ্গে কোনো চুক্তি করেননি। না হলে আদানি কেন হুমকি দেবে? শেখ হাসিনার কোনো দেশপ্রেম ছিল না। তার ছিল ভারত-প্রেম।’
রুহুল কবির রিজভী প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘মার্কেট ও বাজারগুলো এখনও আওয়ামী সিন্ডিকেটের দখলে। দাম কমানোর জন্য সরকার শুল্ক কমিয়েছে। তারপরও কি দাম কমছে? কমছে না। কারণ সিন্ডিকেটবাজদের সরকার গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এই বিষয়গুলো যদি সরকার না দেখে তাহলে পরাজিত ফ্যাসিস্টরা নানাভাবেই মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে এবং মাঝে মাঝেই ভূত-পেত্নীর মতো আওয়াজ দেবে।’
আরও পড়ুন:টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাঁশবাহী গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লেগে আরোহী দুই বন্ধু নিহত হয়েছেন।
বুধবার সন্ধা ৭টার দিকে উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়নের হাজীগঞ্জ এলাকায় এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়নের জোরদিঘী ফজরগঞ্জ এলাকার প্রবাসী মো. আলমগীর হোসেনের ছেলে জুয়েল রানা ও রফিকুল ইসলামের ছেলে শাহাদত।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে জোরদিঘী বাজার এলাকা থেকে সাগরদিঘী বাজারের উদ্দেশে ঘুরতে বের হন দুই বন্ধু। পথে বাঁশবাহী একটি মহিষের গাড়ি ওভারটেক করতে গেলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল আরোহী দুই বন্ধুর মৃত্যু হয়।
সাগরদিঘী ইউপির সদস্য আনোয়ার হোসেন জানান, মোটরসাইকেল নিয়ে দুই বন্ধু ঘুরতে গিয়ে রাস্তায় দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে। মর্মান্তিক এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকিবুল ইসলাম এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন:কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা ছুড়ে আট যাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার মামলায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহিদুল হকসহ তিন আসামির প্রথম দফার রিমান্ড শেষে বুধবার বিকেলে আদালতে আনা হয়।
কুমিল্লা সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক ফারহানা সুলতানা তিন আসামির ফের দু’দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। আগামী ২৭ নভেম্বরের মধ্যে রিমান্ড কার্যকর করার আদেশ দেয়া হয়।
রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া অপর দুই আসামি হলেন সংসদ সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব কিবরিয়া মজুমদার এবং কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম সেলিম। এর আগে গত ১১ নভেম্বর একই আদালতে দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা জেলা জজ আদালতের পিপি ও মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী কাইমুল হক রিংকু।
এদিকে প্রথম দফার রিমান্ড শেষে বুধবার আদালতে আনা হয় সাবেক আইজিপি শহীদুল হক, যুগ্ম সচিব কিবরিয়া মজুমদার ও আওয়ামী লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম সেলিমকে। এমন খবরে সকাল থেকেই আদালত প্রাঙ্গণে ভিড় করেন গণমাধ্যমকর্মীরা। তবে সকাল পেরিয়ে দুপুর হয়ে যায়।
আইনানুগ আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হতে দেরি হওয়া এবং আদালত প্রাঙ্গণে কঠোর নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে আনা হয় তিন আসামিকে। এ সময় উত্তেজিত জনতা সাবেক আইজিপিসহ তিনজনকে ভর্ৎসনাসর্না করেন। উত্তেজিত জনতাকে সামাল দিতে পুলিশ সদস্যদের হিমশিম খেতে হয়।
আদালতে দীর্ঘ ৪০ মিনিট ধরে শুনানি চলে। শুনানিতে বাদী ও বিবাদী পক্ষের আইনজীবীরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এ সময় আসামিরাও তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
এজলাসের বাইরে ব্যাপক উপস্থিতি ছিলো লক্ষণীয়। এ সময় তিনটি গাড়িতে করে সেনা সদস্যরা আদালতে উপস্থিত হন। রিমান্ড শুনানি শেষে আসামিদের বিশেষ নিরাপত্তায় আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
শুনানি শেষে কুমিল্লা বারের পিপি ও মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী কাইমুল হক রিংকু বলেন, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পেট্রোল বোমা মেরে ৮ যাত্রীকে হত্যার সঙ্গে সাবেক আইজিপি শহীদুল হক, বেনজির আহমেদ, কুমিল্লার সাবেক পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তী জড়িত। তারা সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক মুজিব ও চৌদ্দগ্রামের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমানের সঙ্গে পরিকল্পনা করে এমন ন্যক্কারজনক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে ৩ ফেব্রুয়ারি চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুরে আইকন পরিবহনের একটি বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের ঘটনায় আটজনের মৃত্যু হয়। এই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ ৬৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ।
তবে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১১ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা আদালতে একই ঘটনায় পাল্টা মামলা করেন নাশকতাকবলিত বাসটির তত্ত্বাবধায়ক পরিচয়দানকারী আবুল খায়ের।
বর্তমান মামলাটিতে সাবেক রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক, সাবেক আইজিপি শহিদুল হক, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, কুমিল্লার সাবেক পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তীসসহ ১৩০ জনের নাম উল্লেখসহ অন্তত ১৯০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন:বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬-এর (সংশোধিত ২০১৩) ৫৭ ধারায় করা মামলা বাতিল করেছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার এই রায় দেয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইশতিয়াক আহমেদ। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন ভূঁইয়া।
আইনজীবীরা বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে হয়রানি করতে চট্টগ্রামের আদালতে এ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। আমরা আদালতকে বলেছি, একজনের ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে হয়রানি করতে মামলা করা হয়েছে। মামলার বিষয়বস্তুর সঙ্গে তাদের বিন্দুমাত্র সংশ্লিষ্টতা নেই। দীর্ঘদিনেও কোনো তথ্য-প্রমাণ হাজির করতে পারেননি বাদী।’
২০১৬ সালের ৩ অক্টোবর চৌধুরী ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকীর কথিত ফেসবুকে স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেয়া এবং জাতির জনককে অবমাননার অভিযোগে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের আদালতে তথ্য-প্রযুক্তি আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদের সুজন এই অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে তা মামলা হিসেবে গ্রহণ করতে বোয়ালখালী থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য