নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপে বিএনপির না যাওয়ার সিদ্ধান্তটি রাজনীতিতে সংঘাতের নতুন শঙ্কা তৈরি করেছে। দলটি স্পষ্টতই নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে ফিরে গেছে। রাজপথে কর্মসূচি বাড়ানোর পাশাপাশি পুলিশের সঙ্গে, ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়াচ্ছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ বলছে, নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি মীমাংসিত। এখানে বদলের আর কোনো জায়গা নেই।
দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তি স্পষ্টতই ৯ বছর আগে ২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল-পরবর্তী অবস্থানে ফিরে যাচ্ছে।
সে সময় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কথার লড়াইয়ের পর সংঘাতে জড়ায় দুই পক্ষ। এতে ঝরে বহু প্রাণ, সম্পদহানি ছিল ব্যাপক।
দুই পক্ষই আবার অনড় অবস্থান নেয়ার ইঙ্গিত দেয়ার পর প্রায় এক দশক আগের অচলাবস্থা ফিরে আসছে কি না, এ নিয়ে আলোচনা এরই মধ্যে শুরু হয়ে উঠেছে।
বিষয়টি কেবল কথার লড়াইয়ে সীমিত নয়। হবিগঞ্জের শায়েস্তানগরে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের কয়েক ঘণ্টা সংঘর্ষের পর সিরাজগঞ্জে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সংঘাতে জড়ানোর ছবি এসেছে গণমাধ্যমে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাব্বীর আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এবারও বিএনপি আন্দোলনে গেলে দেশে কিছু তো অস্থিতিশীল হবেই।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি সংলাপে যাচ্ছে না। এটা দলের জন্য কোনো ইতিবাচক ফল নিয়ে আসবে না। বরং সংলাপে গিয়ে গঠনমূলক প্রস্তাব রাখলে সেটা তাদের জন্য আরও ভালো ফল নিয়ে আসত। পরে তাদের দাবি না মানা হলে তারা বলতে পারত, তারা বলার পরও তাদের দাবি মানা হয়নি।’
তবে দেড় দশক ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির পক্ষে ২০১৩ থেকে ২০১৪-এর শুরু আর ২০১৫ সালের মতো পরিস্থিতি তৈরি সহজ হবে না বলে মনে করেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের এই অধ্যাপক।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আন্দোলন হবে আন্দোলনের মতো। আন্দোলন হবে সত্যের জন্য, মুক্তির জন্য।’
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আবার ২০১৩ সাল হবে কি না, জানি না। কেউ তো কারও ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে কিছু করে না। তবে দেশটা এখন একজনের হাতের ইশারায় নাচছে। ডিজিটালি মৃত্যু হচ্ছে। মানুষ পঙ্গু হয়ে আছে। সেই পঙ্গুত্ব থেকে উতরাতে হলে কঠোর আন্দোলনে যেতেই হবে।’
আন্দোলন হলে আবার সহিংসতা, মানুষের প্রাণহানি, সম্পদ নষ্ট হবে- এ বিষয়টি তুলে ধরলে গয়েশ্বর বলেন, ‘পাকিস্তানিদের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে আমরা যুদ্ধ করিনি? স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করা হয়নি?’
বিএনপির এই হুমকির জবাবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আন্দোলন বিরোধী দল করতেই পারে। কিন্তু আন্দোলনের নামে কেউ যদি গান পাউডার দিয়ে বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়, বাসে অন্তঃসত্ত্বাকে পুড়িয়ে মারে, সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারে, তাদের দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রতিহত করবে।
‘আওয়ামী লীগ জনগণের দল। জনগণের জানমালের নিরাপত্তার জন্য আওয়ামী লীগ যা করণীয় তাই করবে।’
ক্ষমতাসীন দলের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘মনে হচ্ছে বিএনপি ২০১৩-১৪ সালের মতো দেশে অগ্নিসন্ত্রাস করতে পারে। যদি তারা এমনটা করতে যায়, তাহলে আমরা তাদের রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করব।’
২০১১-১২ সালের মতো বাগ্যুদ্ধ
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের বাকি আর দুই বছরের মতো। এরই মধ্যে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্পষ্টতই ঘোষণা দিয়েছেন ‘ফয়সালা হবে রাজপথে।’
দলটির এখন রাজপথে তাদের প্রধান দাবি হিসেবে তুলে ধরছে দলীয় প্রধান বেগম খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া। তবে এই দাবিতে জেলায় জেলায় কর্মসূচিতে লোকসমাগমের আরেক উদ্দেশ্যও আছে।
মির্জা ফখরুল আরেক দিন বলেছেন, এই কর্মসূচি তাদের ‘ওয়ার্ম-আপ’ তথা গা গরম। এর ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘আপনারা দেখেছেন খেলার আগে ফুটবলাররা ওয়ার্ম-আপ করে। ঠিক তেমনি সারা দেশে আন্দোলনের ওয়ার্ম-আপ শুরু হয়েছে।’
ওদিকে এর জবাব দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, বিএনপি যতই ওয়ার্ম-আপ করুক, কোনো কাজ হবে না। তাদের ভোটে আসতে হবে দলীয় সরকারের অধীনেই।
সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি বলেছেন, ‘সরকার পতন, আন্দোলন এসব মুখরোচক শব্দবৃষ্টি করে কোনো লাভ নেই। নির্বাচনে জনগণ থেকে প্রত্যাখ্যান আর আন্দোলনে চরম ব্যর্থতাই বিএনপির একমাত্র প্রাপ্তি।’
বিএনপি দুই দফা আন্দোলনে নেমে ব্যর্থ হয়ে গত সংসদ নির্বাচনে আসার বিষয়টিই বারবার ইঙ্গিত করছেন সরকারদলীয় নেতারা।
ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘গাধা যেমন পানি ঘোলা করে খায়, বিএনপিও পানি ঘোলা করে নির্বাচনে আসবে।’
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কেউ নির্বাচনে না এলে মানুষ বসে থাকবে না। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে দুই বছর কথার এমন লড়াই দেখা গিয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপে বিশেষভাবে উৎসাহী বিএনপি
বিএনপির নেতা ও মাঠের কর্মীদের তথ্য বলছে, দলটির এই সক্রিয় হয়ে ওঠার পেছনে একটি অনুষঙ্গ হচ্ছে বাংলাদেশের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একটি পদক্ষেপ। বাহিনী হিসেবে র্যাব ও এর ছয় কর্মকর্তা ও পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে বিএনপি বিশেষভাবে আগ্রহী হয়েছে।
দলটি মনে করে, তারা ২০১৩ ও ২০১৫ সালে যে আন্দোলন করেছিল, সে সময় সরকার যে কঠোর ভূমিকা নিয়েছিল, এই পরিস্থিতিতে এসে তারা তা পারবে না।
২০১৩ থেকে ২০১৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এবং পরে ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে টানা কয়েক মাস বিএনপির আন্দোলনে সহিংসতা ছিল ব্যাপক। সে সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকাও ছিল কঠোর।
বিএনপির অভিযোগ, সে সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তাদের অনেক নেতাকর্মীকে তুলে নেয়া হয়েছে, যাদের সিংহভাগই পরে আর ফেরেনি, অনেককে গুলি করা হয়েছে। এতে কর্মসূচিতে অংশ নেয়া নেতাকর্মীর সংখ্যা ক্রমেই কমেছে। একপর্যায়ে ২০১৫ সালে বিএনপির ডাকা অবরোধ কর্মসূচি অকার্যকর হয়ে যায়। তখন থেকেই বড় ধরনের কোনো কর্মসূচিতে আর যাচ্ছে না দলটি।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের পর নেতারা মনে করছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাঁধন এবার কিছুটা হলেও আলগা থাকবে। আর এই ধারণায় সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির নানা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণও বেশি দেখা যাচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত ২৪ ডিসেম্বর গাজীপুরে দলটির সমাবেশে বলেছেন, ‘র্যাবের সাত কর্মকর্তাকে আমেরিকা ভিসা বাতিল করে দিয়েছে। এই সরকারের পতন ঘণ্টা বেজে গেছে।’
অচলাবস্থা শুরু যেভাবে
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের আন্দোলনের মুখে বিএনপি সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংযোজন করে। সে সময় বিধান করে, সবশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হবেন এই সরকারের প্রধান।
দুটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা গঠন হয় এভাবে। ২০০৬ সালে তৃতীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কে হবেন, এ বিষয়টি নিয়ে বাধে গোল।
সে সময়কার বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার বিচারপতিদের অবসরের বয়সসীমা দুই বছর বাড়ানোর পর এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি হয় যে, ওই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হবেন কে এম হাসান। তবে তাকে মেনে নিতে প্রস্তুত ছিল না আওয়ামী লীগ। এর কারণ হাসান তার রাজনৈতিক জীবনে ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক।
এ নিয়ে ঝঞ্ছাবিক্ষুব্ধ পরিস্থিতিতে ২০০২ সালের ২২ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যায় বিএনপির নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির মতোই এই নির্বাচনকে প্রতিহতের ডাক দিয়ে রাজপথে অবস্থান নেয় আওয়ামী লীগ ও সমমনারা।
এ পরিস্থিতিতে ওই বছরের ১১ জানুয়ারি জারি হয় জরুরি অবস্থা। দুই বছর পর জাতীয় নির্বাচনে জিতে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে উচ্চ আদালতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা চ্যালেঞ্জ করে একটি রিটের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
আবেদনটি করা হয়েছিল তখন বিএনপি সরকার ক্ষমতায়। ২০০৪ সালে হাইকোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বৈধ বলে ঘোষণা করে রায় দিয়েছিল। ওই রায়ের বিরুদ্ধে রিট আবেদনকারী পক্ষ আপিল বিভাগে গিয়েছিল।
আইনজীবী এম সলিম উল্লাহসহ কয়েকজন এ আবেদনটি করেন। সলিমুল্লাহর মৃত্যু হলে আব্দুল মান্নান খান নামে আরেকজন আইনজীবী রিট আবেদনটিকে এগিয়ে নেন।
২০১১ সালের ১০ মে আসে আপিল বিভাগের রায়। এই সরকারব্যবস্থাকে অসাংবিধানিক উল্লেখ করে তা বাতিল করে দেয়া হয়। পরে জাতীয় নির্বাচন ৩০ জুন এই সরকারব্যবস্থা বিলোপ করে জাতীয় সংসদ। সেদিনেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, যেকোনো পরিস্থিতির জন্য সরকার দায়ী থাকবে।
২০১২ সালে কর্মসূচি বাড়িয়ে পরে সংঘাত
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপের পর ২০১২ সাল থেকে রাজপথে কর্মসূচি বাড়াতে শুরু করে বিএনপি ও তার জোট ২০ দল। ২০১৩ থেকে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন-পরবর্তী এক সপ্তাহ চলে সংঘাত। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরানোর দাবি ও নির্বাচন বানচালে সহিংস আন্দোলনে শত শত মানুষ পেট্রলবোমায় প্রাণ হারায়, হাজার হাজার মানুষ হয়েছে আহত। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতি হারায়, রপ্তানিতে প্রভাব পড়ার শঙ্কা জাগে।
ভোট শেষে বিএনপির জোট কর্মসূচি স্থগিত করলেও ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি ওই নির্বাচনের এক বছর পূর্তির দিন আবার সহিংস অবরোধে ফিরে যায়। এরপর এক মাসের বেশি সময় চলে সংঘাত-সহিংসতা। আবার বহু প্রাণ জ্বলে যায় পেট্রলবোমায়।
তবে সরকার অবস্থান থেকে সরেনি।
পরে আসে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সে সময় বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বদলে নিয়ে আসে ‘সহায়ক সরকার’-এর দাবি। তবে ওই সরকারের রূপরেখা কেমন হবে, সেটি দিতে পারেনি দলটি।
পরে আওয়ামী লীগের অধীনেই ভোটে আসে বিএনপি। তখন নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে দুই পক্ষের বিবাদের আপাত অবসান হয়েছে বলে ধরা হলেও ভোট শেষে বিএনপি আবার ‘দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়’ অবস্থানে ফিরে যায়।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নামে করা আটটি মামলার কার্যক্রম বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়েছে।
এসব রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
গত বছরের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ রুল মঞ্জুর করে রায় দিয়েছিলেন। রায়ে মামলাগুলো বাতিল করা হয়।
উচ্চ আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল প্রমুখ।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার ও রাসেল আহমেদ।
বাস পোড়ানোর অভিযোগে দারুস সালাম থানায় ২০১৫ সালের ২৯ জানুয়ারি, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০ ফেব্রুয়ারি, ১ মার্চ, ৩ মার্চ এবং যাত্রাবাড়ী থানায় ২৪ জানুয়ারি, ২৩ জানুয়ারি ও ২৪ জানুয়ারি এসব মামলা করা হয়। পরে এসব মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
এ অবস্থায় ২০১৭ সালে পৃথকভাবে মামলার কার্যক্রম বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন বেগম খালেদা জিয়া। তখন হাইকোর্ট রুল জারি করে মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল মঞ্জুর করে রায় দেন হাইকোর্ট।
বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবীরা বলেন, আদালত ওইসব মামলায় রুল অ্যাবসলিউট করেছেন। এর অর্থ হলো মামলাগুলো বাতিল হয়ে গেল। এ মামলাগুলো আর থাকল না।
তারা জানান, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে করা এসব বানোয়াট মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নবগঠিত কমিটি।
এতে কমিটির কিশোরগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি, স্বৈরাচারের অন্যতম দোসর, তিনি ছিলেন ফ্যাসিস্টের ১৫ বছরের অন্যতম সহযোগী। হাজার হাজার মানুষকে গুম, খুন, হত্যা করে বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দেওয়া, আয়নাঘরে বন্দি করেছেন, বনবাসে পাঠিয়েছেন, পাচার করেছেন, নির্মমভাবে অত্যাচার করে হত্যা করার ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার যতটুকু দায় রয়েছে, কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল)-এর সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নুরও ততটুকু দায় রয়েছে।
‘স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার অন্যতম সহযোগী চুন্নুর বিরুদ্ধেও কিশোরগঞ্জের ছাত্রসমাজ অবিলম্বে ব্যবস্থা নেবে। সে যে স্পর্ধা দেখাচ্ছে, সে যে মাঠে আসতে চাচ্ছে, আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, তাকে ছাত্রসমাজ রুখে দেবে।’
দুপুরে জেলা পাবলিক লাইব্রেরিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিশোরগঞ্জ জেলার নবগঠিত কমিটির পরিচিতি ও কর্মপরিকল্পনা সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলন হয়।
এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সদস্য সচিব আরিফ সোহেল ৩২১ সদস্যের কমিটির অনুমোদন দেন। এতে ইকরাম হোসেনকে কিশোরগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক ও ফয়সাল প্রিন্সকে সদস্য সচিব করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার উদ্দেশে ইকরাম হোসেন বলেন, ‘দিল্লিতে বসে আপনি যদি কোনো ধরনের চক্রান্ত করেন, ষড়যন্ত্র করেন, তাহলে আপনি ইতিমধ্যে লক্ষ করেছেন, এই তরুণ বিপ্লবীরা ঘুমিয়ে যায় নাই। আপনি যে স্পর্ধা দেখিয়েছেন ছাত্রলীগ, যুবলীগের গুন্ডা বাহিনী, তারা দুই হাজার ছাত্র-জনতাকে শহীদ করার পরও ন্যূনতম তাদের ভ্রুক্ষেপ নেই, তাদের কোনো অনুশোচনা নেই।
‘আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, যাদের হাতে দুই হাজার ছাত্র-জনতার রক্ত লেগে আছে, যারা ছাত্র-জনতাকে পঙ্গু করেছে, নিঃস্ব করেছে, তাদের আওয়ামী লীগের ব্যানারে কোনো রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। কিশোরগঞ্জেও আওয়ামী লীগের ব্যানারে কোনো রাজনীতি চলবে না। যারাই স্পর্ধা দেখাবে, আমরা তাদের প্রতিহত করব।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সদস্য সচিব ফয়সাল প্রিন্স, মুখ্য সংগঠক শরিফুল হক জয়, মুখপাত্র সাব্বিরুল হক তন্ময়, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান রনি, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ইয়াজ ইবনে জসীম, যুগ্ম সদস্য সচিব আদিফুর রহমান, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক রহমত উল্লাহ চৌধুরী হাসিনসহ অনেকে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তাদের একজন বলেন, ‘কিশোরগঞ্জ পৌরসভায় প্রকল্পের নামে শত শত কোটি টাকা লুটপাট করেছে ফ্যাসিস্টরা। এলজিইডি, রোডস এন্ড হাইওয়ে, পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলীরা টাকার পাহাড় গড়েছে।
‘আন্দোলনে নিহত ও আহতদের নিয়ে মামলা বাণিজ্য হয়েছে। আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রকৃতপক্ষে যারা দোষী, তাদের বিরুদ্ধেই মামলা করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘৬ মাস পরে কমিটি হইছে। কমিটি দরকার তাই হইছে। আমাদের দরকার দেশকে সংস্কার করা। ৫ আগস্টের পর কারা বাসস্ট্যান্ড দখল করছে, তা কি আমরা জানি না? যতদিন পর্যন্ত দেশটাকে সুন্দর করতে না পারি, ততদিন পর্যন্ত থাকব।
‘আমরা ক্ষমতার জন্য এখানে আসিনি। চাকরির বাজারও দখল করে রেখেছে। মন্ত্রীর ছেলে মন্ত্রী হবে, এমন বাংলাদেশ আমরা চাই না।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুমের শিকার হয়ে গোলাম আযমের মৃত্যু হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা ও মহানগর জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নারায়ণগঞ্জের সাবেক এমপি শামীম ওসমানের উদ্দেশে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের তৎকালীন জামায়াতের আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা করে শহরের এক গডফাদার নারায়ণগঞ্জের সড়কে ৭২ ফুট লম্বা ব্যানার টানিয়েছিলেন।
‘ডিসি, এসপির উপস্থিতিতে গডফাদার শামীম ওসমান বলেছিলেন, আমার বিরুদ্ধে খুনের অগ্রিম মামলা করে রাখেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পতিত আওয়ামী সরকারের জুলুমের শিকার হয়ে গোলাম আযম সাহেব মারা যান।’
তিনি বলেন, ‘গডফাদার আজ কোথায়? নারায়ণগঞ্জে নেই। এত অহংকার, দাম্ভিকতা ভালো না। সন্ত্রাসকে কখনও প্রশ্রয় দিতে হয় না। না হলে দুনিয়াতেই তার করুণ পরিণতি ভোগ করতে হয়।’
নারায়ণগঞ্জ মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির মুহাম্মদ আব্দুল জব্বারের সভাপতিত্বে ওই সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, ঢাকা অঞ্চল দক্ষিণের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসাইনসহ অনেকে।
আরও পড়ুন:স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন (এলজিআরডি) ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে বর্তমান সরকার শিগগিরই পদক্ষেপ নেবে।
তিনি বলেন, ‘প্রথমত এটা অত্যন্ত ইতিবাচক যে, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও এক ধরনের ঐকমত্য তৈরি হচ্ছে। দেশের মানুষ তৎকালীন ক্ষমতাসীন ওই দলের অগণতান্ত্রিক এবং একগুঁয়েমি মনোভাব ও কার্যকলাপ মেনে নিতে পারেনি বলেই ৫ আগস্টের আগে ও পরে তাদের মধ্যে দলটি নিষিদ্ধ করার বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এমন ঐকমত্য তৈরি হলে সরকারের জন্য যেকোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা সহজ হবে।’
বার্তা সংস্থা বাসসকে শুক্রবার দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন আসিফ মাহমুদ।
রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে সরকার শিগগিরই কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, সাধারণ মানুষ কিংবা রাজনৈতিক দল, যে বা যারাই হই না কেন, আমরা এ দেশের জনগণকে রিপ্রেজেন্ট করি। ফলে ৫ আগস্টের পরে জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা ও চাওয়ার জায়গা আছে, সেগুলোকে প্রাধান্য দেওয়াটাই আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। সে জায়গা থেকে বিএনপির পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের যে দাবি উঠেছে, আমি বিষয়টিকে সাধুবাদ জানাতে চাই।’
অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, ‘বিচারিক প্রক্রিয়া ছাড়াও চারটি আইন রয়েছে, যেখানে সরকার নির্বাহী আদেশে যেকোনো দলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। তবে এটার লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্কটা (আইনি কাঠামো) কী হবে, এ বিষয়ে সরকার এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।’
আরও পড়ুন:অভিনেত্রী ও নির্মাতা মেহের আফরোজ শাওনকে হেফাজতে নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে ডিএমপি ডিবির যুগ্ম কমিশনার তালেবুর রহমান ইউএনবিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, মেহের আফরোজ শাওনকে তার নিজ বাসা থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে। রাষ্ট্রবিরোধী মন্তব্য করার কারণে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
সম্প্রতি শাওনের রাজনৈতিক অবস্থান ও কিছু মন্তব্যকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা হয়। এরই মধ্যে আজ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিল ডিবি।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির মঙ্গলবার এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘শেখ হাসিনার শাসনামলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ কর্তৃক সংঘটিত সকল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের যথাযথ বিচার ও সন্ত্রাসীদের সাজা নিশ্চিত করার দাবিতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।’
এতে বলা হয়, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে ভূমিকা পালনকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ এবং প্রতিষ্ঠানের প্রধান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করা হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ফেনীর যুবদল নেতা শহিদ মোহাম্মদ মাসুদের পরিবারকে একটি নতুন বাড়ি উপহার দিচ্ছেন।
মাসুদ বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন।
সোনাগাজী উপজেলার চর-চান্দিয়া গ্রামে মঙ্গলবার নবনির্মিত বাড়ির চাবি মাসুদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর একটি প্রতিনিধি দল এ হস্তান্তর কার্যক্রম সম্পন্ন করবে।
এ উপলক্ষে চর-চান্দিয়ায় একটি অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
এ ছাড়াও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ও আবদুল আউয়াল মিন্টু, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা, সদস্য সচিব ও অন্যান্য সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন। এতে ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন চলাকালে শহিদ পরিবারের মধ্যে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হবে।
ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার যুবদল নেতা মাসুদকে ২০১৬ সালে পুলিশ মিথ্যা মামলায় ধরে নিয়ে যায়। পুলিশের অত্যাচার-নির্যাতনের কারণে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তিনি বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।
মাসুদের স্ত্রী ও নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে বর্তমানে অসহায় অবস্থায় জীবনযাপন করছেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য