নতুন বছরে দেশে সরকার পরিবর্তন হবে বলে আশা করছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি সেই সরকারের নাম দিয়েছেন জনগণের সরকার।
নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সংলাপ বর্জনের কারণ ব্যাখ্যা করে বিএনপি নেতা বলেছেন, দেশে যে সংকট, সেটির প্রধান বিষয় নির্বাচন কমিশন নয়, নির্বাচনকালীন সরকার।
ছাত্রদলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সকাল সোয়া ১০টার দিকে ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলের নেতৃত্বে ৫০-৬০ জন নেতা-কর্মী রাজধানীর জিয়ার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হন।
এ সময় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ নানা স্লোগান দেন তারা। এর কিছুক্ষণ পর উপস্থিত হন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। নেতা-কর্মীদের নিয়ে সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং মোনাজাত করেন তিনি।
নতুন বছরের প্রত্যাশার কথা জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, ‘আমরা প্রত্যাশা করি, এই নববর্ষে জনগণ মুক্ত হবে, গণতন্ত্র মুক্ত হবে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন এবং দেশে অবশ্যই আমরা একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হব।’
দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘নববর্ষে জাতীয়তাবাদী দল, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’
প্রধান সংকট নির্বাচনকালীন সরকার
রাষ্ট্রপতির সংলাপের প্রসঙ্গ তুলতেই ফখরুল বলেন, ‘আমরা এই সংলাপকে অর্থহীন মনে করছি। বর্তমান রাজনৈতিক সংকট সেটি কোনো নির্বাচন কমিশন গঠনের সংকট নয় বা আইন তৈরি করারও সংকট নয়। প্রধান যে সংকট সেটি হচ্ছে নির্বাচনকালীন কোন রকম সরকার থাকবে? সেটি হচ্ছে প্রধান সংকট।
‘যদি আওয়ামী লীগ সরকার থাকে তাহলে সে নির্বাচনের কোনো মূল্যই হতে পারে না। অর্থই হতে পারে না। অবশ্যই আমরা যেটা বলেছি নির্বাচনকালীন একটি নিরপেক্ষ-নির্দলীয় সরকার থাকতে হবে। যারা নিরপেক্ষভাবে একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করবে এবং তাদের পরিচালনায় একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সংগঠনের প্রতি প্রত্যাশা জানিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অতন্ত্র ও আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বন্দি অবস্থায় অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। সেই সময় ছাত্রদলের নেতারা আজকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে এসেছেন। পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও মোনাজাত শেষে নেতা-কর্মীরা শপথ নিয়েছেন। দেশনেত্রীকে মুক্তি এবং বিদেশে নিয়ে সুচিকিৎসার আন্দোলন আরও বেগবান করবে এবং ২০২২ সালে তারা সফল হবে।’
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এত অল্পসংখ্যক নেতা-কর্মীর প্রসঙ্গে ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল বলেন, ‘আজ ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ দিনটি উপলক্ষে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার অনুমতি চাওয়া হলে প্রশাসন থেকে মাত্র ৪০ জন নেতা-কর্মী আসার অনুমতি দেয়।
‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতার মাজার, এখানে আমাদের শ্রদ্ধার জায়গা, ভালোবাসার জায়গা। এ জায়গার সঙ্গে আমাদের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। আমরা চাইনি এখানে কোনো বিশৃঙ্খলা হোক। এ জন্য প্রশাসনের বেঁধে দেয়া নিয়মের মধ্যেই থেকেছি।’
আরও পড়ুন:মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আলোচিত ব্যবসায়ী আদম তমিজী হককে পুলিশের তত্ত্বাবধানে রিহ্যাব সেন্টারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
রোববার দুপুরে মিন্টোরেডে নিজ কার্যালয়ে এ কথা জানান তিনি। এর আগে শনিবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
হারুন বলেন, আদম তমিজী হকের বিরুদ্ধে দক্ষিণখান থানায় একটি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া রমনা থানায় তার নামে ওয়ারেন্ট ইস্যু রয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে শনিবার তাকে গ্রেপ্তার করেছি।
তিনি বলেন, আদম তমিজী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসে বিভিন্ন ধরনের অসংলগ্ন কথা বলেছেন। তিনি যে দেশে খেয়ে পড়ে মানুষ হয়েছেন, তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যে দেশে আছে সেই দেশেরই পাসপোর্টটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসে পুড়িয়ে ফেলেছেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, আদম তমিজী ইসরায়েলকে আহ্বান জানিয়েছেন তাকে বাংলাদেশ থেকে উদ্ধার করার জন্য। যুক্তরাষ্ট্রের মেরিন সেনাকে বলছেন সরকার তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, তাকে উদ্ধার করার জন্য। আরও বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেছেন, সেটিও আপনারা দেখেছেন।
ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, আসলে এসব কথা শুনে আমার কাছে যেটা মনে হয়েছে, আসলেই তিনি কী মানসিক ভারসাম্যহীন। তা না হলে একটি লোক এভাবে কথা বলে কেন? তিনি অনেকগুলো বিয়ে করেছেন, পারিবারিক অনেক সমস্যা রয়েছে। বিভিন্ন কারণেই মনে হয়েছে তিনি ভারসাম্যহীন। যার কারণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ভারসাম্যহীন এটা তো আমরা বলতে পারছি না।
তিনি বলেন, তাই তিনি যদি মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে থাকেন তার জন্য আদম তমিজীকে ডাক্তারের কাছে পাঠিয়েছি। সেখানে ডাক্তাররা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তিনি যদি মানসিকভাবে ঠিক থাকেন তখন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবো।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, যদি ডাক্তাররা বলেন, পুরোপুরি ভারসাম্যহীন কিংবা মানসিক ভারসাম্যহীন, তাহলে আমাদের কিছু করার নেই। কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যদি করে থাকেন তাহলে এর পেছনে কেউ আছেন কি না, সেটা তদন্ত করে বের করবো।
মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে বিকল্পধারা বাংলাদেশের (বিডিবি) যুগ্ম মহাসচিব মাহী বদরুদ্দোজা চৌধুরীর।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে রোববার শুনানি শেষে মাহী বি চৌধুরীর আপিল মঞ্জুর করে তার প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করা হয়।
শুনানি শেষে বেরিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এবারে বিএনপি নির্বাচনে আসলে আরও বেশি উৎসবমুখর পরিবেশে ও আরও বেশি কোয়ালিফাইড নির্বাচনটা হতো।’
৭ জানুয়ারি নির্বাচন হলেও সরকার বেশিদিন টিকবে না বলা হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন হয়েই যাবে কি না, বিষয়টা এ রকম না। নির্বাচনটা আসলে হয়েই যাচ্ছে, হয়েই যাবে। নির্বাচন না হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছি না, তবে নির্বাচন কতটুকু গ্রহণযোগ্য হলো সেটা নির্বাচন হওয়ার পরে বলা যাবে।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বলা যাবে নির্বাচন কতটুকু গ্রহণযোগ্য হয়। নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কেমন হয়, নির্বাচনী পরিবেশ ঠিক রাখা যায় কি না, নির্বাচন কমিশন কেমন কাজ করে, সবকিছু নির্ভর করছে এই নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। সরকার কীভাবে দেশ চালাবে, কতদিন চলবে, এসব নির্বাচনের ওপর নির্ভর করছে।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘বর্তমানে এমন কোনো পরিস্থিতি নাই যে নির্বাচন হবে না। আবার নির্বাচন হলে সরকার পড়ে যাবে, সে রকমও দেখছি না।’
সামগ্রিকভাবে নির্বাচন নিয়ে কতটা আশাবাদী জানতে চাইলে মাহী বি চৌধুরী বলেন, ‘আমি অনেক বেশি আশাবাদী। পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়। আমাদের দেশে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিয়ে মানুষ খুব বেশি আশা প্রকাশ করে না।
‘৭ তারিখের পরে দেখা যাবে, বোঝা যাবে, আমরা বলতে পারব দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ভবিষ্যতে সম্ভব কি সম্ভব না। সে জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’
এর আগে তো আরও দুটি দলীয় সরকার অধীনে নির্বাচন হয়েছে। সেই দুই নির্বাচন ভালো হয়েছে কি না জানতে চাইলে মাহী বি চৌধুরী বলেন, ‘গত দুটি নির্বাচন ভালো হয়নি। গত দুটি নির্বাচন যেসব কারণে ভালো হয়নি সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে এই নির্বাচন কমিশন ও সরকার শুভ উদ্যোগ গ্রহণ করবেন, এটা প্রত্যাশা করি। কতটুকু প্রত্যাশা পূরণ হবে, সেটা ৭ জানুয়ারির পরে বলা যাবে।’
ওই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এক সাংবাদিক বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন ৮ হাজারের বেশি নির্বাচন করেছে। এখন পর্যন্ত কোনো বিতর্ক নির্বাচন করেনি। এখানে অনিয়ম দেখেছে, সেখানেই তারা পদক্ষেপ নিয়েছে। আপনার কি মনে হয় এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব?’
জবাবে মাহী বি চৌধুরী বলেন, ‘এই পুরো জিনিসটি নির্ভর করে পুরো রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপর আমার কাছে মনে হয়। আমি আশা ও প্রত্যাশা করছি এই নির্বাচন কমিশনের ও সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও সদিচ্ছা রয়েছে। সেটা কতটুকু সফল হলো তারা আসলেই কী করবেন, সেটার জবাব ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে দেয়া সম্ভব না।’
আরও পড়ুন:জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণে চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে আয়োজন হতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঢাকা ম্যারাথন-২০২৪।
বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার থেকে শুরু হয়ে ৩০০ ফিট রাস্তায় ম্যারাথনটি অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে রোববার সকালে আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে বঙ্গবন্ধু ম্যারাথনের লোগো উন্মোচন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, এবারের আয়োজনটিও বিগত বছরগুলোর মতো ফুল ম্যারাথন (৪২ দশমিক ১৯৫ কিলোমিটার) ও হাফ ম্যারাথন (২১ দশমিক ০৯৭ কিলোমিটার) হিসেবে অনুষ্ঠিত হবে।
এ বছর আনুমানিক ৩০ জন পুরুষ ও মহিলা এলিট রানার ফুল ম্যারাথনে এবং আরও আনুমানিক ৩০জন পুরুষ ও মহিলা সাফ অর্থাৎ সাউথ এশিয়ান দেশগুলোর রানারসহ মোট ৬০ জন বিদেশি ম্যারাথনার ফুল ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ম্যারাথনটিতে অংশ নিতে রোববার থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করা যাবে।
এবারের ম্যারাথনে তিনটি ক্যাটাগরিতে পুরুষ ও নারী বিভাগে পুরস্কার দেয়া হবে। এলিট ও সাফ দৌড়বিদদের ফুল ম্যারাথন ও বাংলাদেশি দৌড়বিদদের ফুল ও হাফ ম্যারাথন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেয়া হবে।
প্রতিযোগিতায় ১০ পুরুষ ও নারী এলিট রানার, ১০ পুরুষ ও নারী সাফ রানার, ৩০ বাংলাদেশি পুরুষ ও নারী ফুল ম্যারাথন এবং ২০ বাংলাদেশি পুরুষ ও নারী হাফ ম্যারাথনারকে আকর্ষণীয় সম্মাননা দেয়া হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম মজুমদার ও পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এবারের আয়োজনে সার্বিক দায়িত্ব পালন করবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এ ছাড়াও কো-অর্গানাইজার হিসেবে থাকবে আর্মি স্পোর্টস কন্ট্রোল বোর্ড, ট্রাস্ট ইনোভেশন লিমিটেড ও নেটওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ লিমিটেড।
টেকনিক্যাল পার্টনার হিসেবে থাকছে বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন।
গোল্ড স্পন্সর হিসেবে রয়েছে- আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, সিটি ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, যমুনা ব্যাংক ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড।
পার্টনার হিসেবে রয়েছে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় বাদ পড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর আপিলের শুনানি শুরু হয়েছে নির্বাচন কমিশনে তথা ইসিতে।
আগামী ছয় দিন বাদ পড়া প্রার্থীদের আপিল শুনানি চলবে। রোববার থেকে শুরু হওয়া এ আপিল আবেদন চলবে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
প্রতিদিন ১১০ জন করে প্রার্থীর আপিল শুনানি হবে।
সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এ আপিল শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে রায় প্রকাশ করা হবে। রায়ে প্রার্থী সন্তুষ্ট না হলে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এর আগে নির্বাচন কমিশনের ১০টি অঞ্চলে রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক ৭৩১ প্রার্থী বাতিল হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ৫৬১ জন প্রার্থী ইসিতে আপিল আবেদন করেন। ১৭০ জন বাতিল হওয়া প্রার্থী মনোনয়ন ফিরে পেতে আবেদন করেননি।
শুনানিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের পাশাপাশি কমিশনাররা উপস্থিত রয়েছেন। প্রার্থীর পক্ষে তার আইনজীবী ও প্রার্থী স্বশরীরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে উপস্থিত আছেন।
এবারের সংসদ নির্বাচনে ২৯টি দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে দুই হাজার ৭১২ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন।
ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আপিল আবেদন শেষ হয় শনিবার। শুনানি ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে।
আগামী নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ দেবেন ১৮ ডিসেম্বর।
নির্বাচনি প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি।
আরও পড়ুন:বিএনপি স্থায়ী কমিটি সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে আইসিইউতে নেয়া হয়েছে। শুক্রবার রাতে তার শারীরিক অবস্থায় অবনতি হওয়ায় কেবিন থেকে আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে মহান আল্লাহর দরবারে দেশবাসীর মাধ্যমে দোয়া চেয়েছেন তার পরিবার।
বিএনপি ভাইস-চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ শারীরিক অবস্থার সার্বিক খোঁজ খবর রাখছেন বলেও জানান শায়রুল।
গত ১৭ জুন দলীয় পদযাত্রায় অংশ নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ। সেখানে চিকিৎসকদের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২৭ জুন সিঙ্গাপুর যান তিনি।
সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। হাসপাতালের নিউরোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট অধ্যাপক ইউ শেন শাই তখন জানান, খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ব্রেনের বহির্ভাগে একটি ‘স্ফেনয়েড উইং মেনিনজিওমা’ টিউমার রয়েছে।
টানা দুই মাস চিকিৎসা শেষে ৫ সেপ্টেম্বর দেশে ফেরেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
আলোচিত ব্যবসায়ী আদম তমিজী হককে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এর আগে শনিবার সন্ধ্যার পর তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
গুলশানের বাসা থেকে গ্রেপ্তারের পর রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। সেখানে তার বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন ডিবির সদস্যরা।
ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘ডিবি কার্যালয়ে এনে আদম তমিজী হককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।’
জানা গেছে, আদম তমিজী হকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে একটি সার্চ ওয়ারেন্টও রয়েছে।
ডিবি জানায়, দেশের পাসপোর্ট পুড়িয়ে ফেলা, প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বাজে মন্তব্যসহ বেশকিছু অভিযোগ রয়েছে আদম তমিজী হকের বিরুদ্ধে।
আদম তমিজী হকের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর দক্ষিণখান থানায় একটি মামলা হয়। আনিছুর রহমান নাঈম নামে এক ব্যক্তি মামলাটি দায়ের করেন, যা ১৫ নভেম্বর এজাহারভুক্ত হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আদম তমিজী হক ইচ্ছাকৃতভাবে তার কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। এছাড়া তিনি সরকারবিরোধী বিভিন্ন ধরনের আপত্তিকর, মানহানিকর ও উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এতে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
অন্যদিকে, সাইরা সিদ্দিকী তানহার এক মামলায় ঢাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আদম তমিজী হকের বিরুদ্ধে একটি সার্চ ওয়ারেন্ট জারি করেছে। ওই সার্চ ওয়ারেন্টের কপি গুলশান থানায় পৌঁছেছে।
গত ১৬ ও ১৭ নভেম্বর রাতে আদম তমিজী হকের গুলশান-২ নম্বরের ১১১ নম্বর রোডের ৮ নম্বর বাসায় যান র্যাব সদস্যরা। তখন তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করলে আত্মহত্যার হুমকি ও নিজের স্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেন আদম তমিজী হক।
এর আগে ১৩ নভেম্বর রাত ১২টায় এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় ফেরেন আলোচিত এই ব্যবসায়ী।
জিএম শাখাওয়াত হোসেন রাজধানীর মতিঝিল এলাকার একটি সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা। গত ৪ ডিসেম্বর দুপুরে অফিসের কাজে রিকশায় ওয়ারী থানার র্যাংকিন স্ট্রিট দিয়ে যাচ্ছিলেন। ওই সময়ে কয়েকটি রিকশায় কয়েকজন লোক এসে বড় ভাই বলে ডেকে সালাম দিয়ে তার গতিরোধ করে। পরে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে পকেটে থাকা ২৪ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারী চক্রটি।
এ ছিনতাইয়ের ঘটনায় জিএম শাখাওয়াত হোসেন বাদী হয়ে ওয়ারী থানায় একটি ডাকাতি মামলা করেন। মামলার ছায়া তদন্তে নেমে চক্রের হোতাসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওয়ারী বিভাগ।
রাজধানীর মগবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে গত ৬ ডিসেম্বর দুপুরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন চক্রের হোতা সজল সিদ্দিক (৪৭), আবুল হোসেন (৪৭), রফিকুল ইসলাম সবুজ (২৬), মো. আরেফিন (৪৩), মো. আমির আলী (৫৫), মোমিন প্রামাণিক (৫৬) ও মো. শাহিন (৩২)।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, ‘মতিঝিল থেকে একটি সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা রিকশা দিয়ে ওয়ারী এলাকায় যাওয়ার সময় সালাম দিয়ে তার গতিরোধ করে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
‘ওয়ারীর ঘটনার পরেও চক্রটি ধারাবাহিকভাবে একইভাবে ছিনতাই করে আসছিল। ছিনতাই করা অবস্থায় চক্রের তিনজনকে মগবাজার থেকে হাতে-নাতে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওয়ারী এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
ডিএমপির ডিবি প্রধান বলেন, ‘সালাম দিয়ে ছিনতাই করা এই চক্রে আটজন সদস্য রয়েছে। তাদের মধ্যে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চক্রের সদস্যরা ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে সালাম দিয়ে ছিনতাই করে আসছিল।
‘চক্রের হোতা সজলের বিরুদ্ধে ছিনতাই, ডাকাতিসহ দেশের বিভিন্ন থানায় ১৯ মামলা, আবুলের বিরুদ্ধে ৮টি, সবুজের বিরুদ্ধে ৭টি, আরেফিনের বিরুদ্ধে ৫টি ছিনতাই মামলা, আমির আলীর বিরুদ্ধে ৩টি ছিনতাই মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।’
গ্রেপ্তার সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তারা একই কায়দায় প্রতি মাসে ১৫ থেকে ১৬টি ছিনতাই করত।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন বলেন, ‘ওয়ারীর মামলায় গ্রেপ্তার সাতজনের মধ্যে দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য