এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ফাইভ পেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের ক্যান্টিনে কর্মরত মো. জাবেদ হোসেন নামে এক কর্মচারী।
সে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে।
একই স্কুল থেকে জাবেদ জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ফাইভ এবং সাধারণ গ্রেডে মেধাবৃত্তি পেয়েছিল।
জাবেদ নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের টেকদাশের দিয়া গ্রামের বাসিন্দা। দুই ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় জাবেদ। ছোট বোন একটি স্কুলে প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। জাবেদের বাবা রমজান আলী কৃষিকাজের পাশাপাশি বিভিন্ন মাটির জিনিসপত্রও বিক্রি করেন। মা জান্নাতুল ফেরদৌস গৃহিণী।
চরম অর্থনৈতিক সংকটেও জাবেদকে পড়াশোনা করিয়েছেন তার মা-বাবা।
জাবেদের মামা মো.সোহেল বিজয় একাত্তর হলের ক্যান্টিনে বাবুর্চি হিসেবে কর্মরত। এই বছরের আগস্টে মামার কাছে বেড়াতে আসে জাবেদ হোসেন। কিছুদিন থাকার পর মামার পরামর্শে ক্যান্টিনের কাজে যোগ দেয় জাবেদ।
পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে ছুটি নিয়ে জাবেদ অক্টোবরে বাড়িতে যায়। নভেম্বরে এসএসসি পরীক্ষা হয়। পরীক্ষা শেষে ডিসেম্বরের শুরুর দিকে ফের কাজে যোগ দেয় এই পরীক্ষার্থী।
এর পর থেকে ক্যান্টিনের কাজের পাশাপাশি প্রতিদিন বিকেলে নীলক্ষেতের একটি দোকানে কম্পিউটারও শিখছে জাবেদ হোসেন। রাতে এসে যোগ দেয় কাজে।
পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিনের ঘটনা বর্ণনা দিয়ে জাবেদ হোসেন বলে, ‘দুপুরের দিকে আমি ক্যান্টিনে তরকারি আনা-নেয়ার কাজ করছি। সামান্য টেনশন কাজ করছিল। বেলা দেড়টার দিকে আব্বু ফোন দিয়ে আমার পরীক্ষার রোল আর রেজিস্ট্রেশন নম্বর আমার চাচাতো বোনের মোবাইলে পাঠাতে বলেন। তখনও আমি কাজ করছি।’
‘একটু পর আমার চাচাতো বোন ফোন দিয়ে বলে, আমি ফেল করেছি। আমি পাভজি খেলতাম সে জন্যই রসায়ন পরীক্ষায় ফেল আসছে বলে সে। সেটা শুনে আমার কান্না চলে আসে। এর পরই চিৎকার করে বলে, আমি জিপিএ ফাইভ পেয়েছি। তখন এতই খুশি হয়েছি, বলে বোঝানো সম্ভব না। কাজের সব কষ্ট মুহূর্তেই ভুলে যাই। দ্বিগুণ উৎসাহে কাজ শুরু করি,’ যোগ করে জাবেদ।
‘আমার রেজাল্টের খবর ক্যান্টিনে খেতে বসা বড় ভাইয়েরা শুনে ফেলেন। তারা আমাকে মিষ্টি খাওয়ান। অনেকে বিভিন্ন উপহারও দিয়েছেন।’
এখন কী পরিকল্পনা জানতে চাইলে জাবেদ হোসেন বলে, ‘ঢাকার কোনো একটা কলেজে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছে আছে। ক্যান্টিনের কাজটাও চালিয়ে যাব। বড় হয়ে ভালো কোনো পেশায় কাজ করতে চাই।’
আরও পড়ুন:কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া নিয়মিত চালু না রাখার অভিযোগ উঠেছে ক্যাফেটেরিয়া পরিচালকের বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থীদের কথা না ভেবে নিজের সুবিধা মতো ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ রাখায় দুর্ভোগ পোহাতে হয় আবাসিক হলে থাকা শিক্ষার্থীদের।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবগত থাকলেও ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
কুবির আবাসিক শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে জানান, ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ রাখার বিধান না থাকলেও সপ্তাহে প্রতি শুক্রবার দুপুরের পর থেকে শনিবার পর্যন্ত পরিচালক মান্নু ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ রাখেন। এতে বাধ্য হয়ে খাবারের জন্য বাইরের হোটেলগুলোর দিকে ঝুঁকতে হয় শিক্ষার্থীদের।
যার ফলে অতিরিক্ত সময় এবং অর্থ ব্যয় হয় বলে জানান তারা। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অনেক সময় উচ্চ মূল্যে নিম্নমানের খাবার পরিবেশনের অভিযোগ আছে বাইরের হোটেল মালিকদের বিরুদ্ধে।
এ ছাড়াও পচা, বাসি ও মানহীন খাবার পরিবেশন, পোড়া তেলে পচা মাছ ভাজা, নিম্নমানের চাল, পোকা খাওয়া সবজি ও বাসি তরকারিসহ খাবারের প্লেটে পোকা-মাকড় পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে ক্যাফেটেরিয়া পরিচালক মান্নুর বিরুদ্ধে।
এসব বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ফারহান বলেন, ‘ক্যাফেটেরিয়ার নানান সমস্যার বিষয়ে আমরা অনেক আগে থেকে বলে আসছি অথচ এ বিষয়ে প্রশাসনের কার্যকরী ভূমিকা নিতে দেখা যায় না। আমরা বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরা ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের উপর নির্ভর করতে হয়। এভাবে যদি তাদের খেয়াল খুশি মতো ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ রাখে দিনশেষে আমাদেরকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে শনিবারেও খোলা রাখার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট আহ্বান জানাচ্ছি।’
নিয়মিত ক্যাফেটেরিয়ায় খাবার খায় এমন আরেক শিক্ষার্থী তাওহীদুল ইসলাম বলেন, ‘কখনো খাবারে চুল, পোকা, বাসি খাবারও পরিবেশন করছে এ ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক। অস্বাস্থ্যকর খাবারের পরিবেশ কখনো শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশের অংশ হতে পারে না। যা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে। প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া।’
বন্ধ রাখার বিষয় জানতে চাইলে ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক মান্নু মজুমদার বলেন, ‘এটা নতুন কী? এটা অনেক আগে থেকে এভাবে পরিচালনা করে আসছি। শনিবারে ক্লাস না থাকায় শিক্ষার্থীদের খাবারের চাহিদা অনেক কম থাকে। দেশের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ক্যাফেটেরিয়া খোলা রাখলে লোকসান হয়। তাই আমি শনিবারের বন্ধ রাখি। এ বিষয়ে প্রশাসন অবগত আছে।’
শনিবারে ক্লাস না থাকায় শিক্ষার্থীদের চাপ কম থাকলেও পাঁচ আবাসিক হলের শিক্ষার্থীর একটা অংশ এ ক্যাফেটেরিয়ার উপর নির্ভর করে থাকে। এমতাবস্থায় ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ রাখাটা স্বাভাবিকভাবে দেখছেন না শিক্ষার্থীরা।
বন্ধের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের অবগত আছে কিনা জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা কার্যালয়ের পরিচালক অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি অবগত আছি। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে আমি মান্নুকে বলে দিব যেন শনিবারে ক্যাফেটেরিয়া খোলা রাখে।’
এ কথা বলার পরও এ শনিবার আসলেও আগের চিত্র দেখা গেছে, বরাবরের মতই তালা ঝুলছে কুবির ক্যাফেটারিয়া।
ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় ২৮৬টি কলেজের ৭৫ হাজার ৮৪৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। পাসের হার ৭০ দশমিক ৪৪ শতাংশ। তবে অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীদের একটি অংশের অভিযোগ, শিক্ষাবোর্ডের প্রযুক্তিগত ত্রুটি বলি হয়েছেন তারা। ফল প্রকাশের আগ মুহূর্তে নতুন করে রোল নম্বর নির্ধারণ করায় তাদের ফল পাল্টে গেছে।
ফেল করা শিক্ষার্থীদের অনেকের দাবি, প্রবেশপত্রে থাকা রোল নম্বরই তারা পরীক্ষার খাতায় লিখেছিলেন। অথচ ফল প্রকাশের তারা জানতে পারেন যে প্রবেশপত্র ও রোল নম্বর বদলে গেছে। নতুন প্রবেশপত্র অনুযায়ী তাদেরকে ফল নিতে হয়েছে। আর রোল নম্বর পাল্টে যাওয়ায় তাদেরকে অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে।
ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ভালুকা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন ৫৬ পরীক্ষার্থী। পাস করেন মাত্র ১৬ জন। তাদের একজন কাকন আক্তার তার নতুন রোল নম্বরে অনলাইনে অনুসন্ধান করে দেখেন, নিজের নামের পরিবর্তে সুসং দুর্গাপুর সরকারি মহাবিদ্যালয়ের মাজহারুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থীর নাম আসে।
একই ঘটনা ঘটেছে ওই কলেজের ইসরাত জাহান জেরিনসহ নতুন রোল পাওয়া ৫১ শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে। ভালুকার মর্নিং সান স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও বাটাজোর সোনার বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, গফরগাঁও উপজেলার হুরমত উল্লাহ কলেজসহ আরও কয়েকটি কলেজের পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।
পরীক্ষায় প্রবেশপত্রের রোল নম্বর জটিলতার বিষয়টি নিয়ে পরদিন সোমবার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালামের কাছে যান কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। সেখানে তারা দাবি করেন, কলেজগুলো কারসাজি করে এমনটি করেছে। শতভাগ পাস করানোর জন্য কিছু শিক্ষার্থীকে গ্যারান্টি দিয়ে এনে ভর্তি করে তাদের শুধু পাস করানো হয়েছে। বাকিদের ফেল করানো হয়ে থাকতে পারে।
এ সময় শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন ভালুকা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এরপর শিক্ষা বোর্ডের সামনে মানববন্ধন করেন অকৃতকার্য এসব শিক্ষার্থী।
বাস্তবেই এ বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষার ফল পরিবর্তন হয়েছে নাকি বিষয়টি অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীদের বোঝার ভুল- এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে নিউজবাংলা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের নিজস্ব জনবল সংকট রয়েছে। এ অবস্থায় এই বোর্ডের কাজটি করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও যশোর শিক্ষা বোর্ড। প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে ফল প্রকাশের আগমুহূর্তে ধরা পড়ে জটিলতা। পরীক্ষার খাতায় লেখা বিভিন্ন শিক্ষার্থীর রোল নম্বরে অন্য শিক্ষার্থীর ফল আসতে থাকে। এমন অবস্থায় বিষয়টি সমাধানে কাজ করে শিক্ষা বোর্ড। পরে রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও খাতার সঙ্গে মিল করে ফল তৈরি করা হয়।
তবে এমনটা মানতে নারাজ ফেল করা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। তারা মনে করেন, খাতায় লেখা রোল নম্বর এবং পরে ফলাফলের জন্য দেয়া অন্য রোল নম্বরের জন্যই ভুল ফল এসেছে। তাই আবারও খাতা দেখে সুষ্ঠুভাবে ফল তৈরি করে তা প্রকাশ করতে হবে। নয়ত অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে বোর্ডের সামনে লাগাতার মানববন্ধন করা হবে।
এদিকে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, একটি মহল অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীদের উসকানি দিয়ে ক্ষেপিয়ে তুলছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা জানি যে কোন রাজনৈতিক নেতা এসব কোমলমতি শিক্ষার্থীকে নিয়ে রাজনীতি করছে। এক রাজনৈতিক নেতা বোর্ডে একটি কাজে সুপারিশ করেছিলেন। সেটি না মানায় ফেল করা শিক্ষার্থীদের উস্কে দেয়া হচ্ছে। এসব বিষয় ইতোমধ্যে গোয়েন্দা সংস্থাকেও জানানো হয়েছে।’
তবে শিক্ষার্থীরা বাইরের কারও ইন্ধনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ভালুকা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী কাকন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘খাতায় লেখা রোল নম্বরে ফল প্রকাশ না করে নতুন রোল নম্বরে প্রকাশ করার কারণেই ফেল করেছি। আমার আত্মবিশ্বাস রয়েছে যে পাস করব। কারও ইশারায় আমরা ক্ষুব্ধ হয়ে মানববন্ধন করিনি। আমাদের খাতাগুলো নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করে আবারও দেখে ফল প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি।’
একই কলেজের অধ্যক্ষ মো. হাফিজ উদ্দিন সুমন বলেন, ‘এমন ফলাফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আমাদের দায়ী করেছেন। অথচ এসব বিষয়ে আমাদের কিছুই করার নেই। ফেল করা শিক্ষার্থীরা আসলেই ফেল করেছে কিনা, তা বোর্ডই ভালো বলতে পারবে।’
একই বক্তব্য দিয়েছেন মর্নিং সান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আতাউর রহমান জুয়েল।
ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মো. সামছুল ইসলাম বলেন, ‘৮ হাজারের মতো শিক্ষার্থীর রোল নম্বর ডুপ্লিকেশন হয় প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে। পরে সূক্ষ্মভাবে বিষয়টি তদারকি করে ফল প্রকাশের এক মাস আগে নতুন প্রবেশপত্র পাঠানো হয় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে। রোল নম্বর পরিবর্তনের সঙ্গে ফলের কোনো সম্পর্ক নেই।’
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. গাজী হাসান কামালের সঙ্গে কথা বলে নিউজবাংলা। তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে এমনটি হয়েছে। ফল প্রস্তুত করা হয় রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে। এ জন্য রোল নম্বর প্রয়োজন নেই। যেগুলোতে সমস্যা হয়েছে, সেগুলো খুব সতর্কতার সঙ্গে করা হয়েছে। ফল সঠিক রয়েছে। তারপরও লিখিতভাবে আবেদন করলে পুনরায় খাতা দেখে সমাধান করা হবে।’
আরও পড়ুন:জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে (জবি) সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে নিতে সবাইকে নিয়ে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে চান বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম।
উপাচার্যের সভাকক্ষে শনিবার বিকেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নানাক্ষেত্রেই সংকটের মধ্যে রয়েছে। আমি বিষয়গুলো সম্পর্কে অবগত আছি। আমার দায়িত্ব পালনকালে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাইকে নিয়ে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যেতে চাই। তাই সবার সহযোগিতা কামনা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সদ্য প্রয়াত উপাচার্যের অকাল মৃত্যুর কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক কাজ পিছিয়ে আছে। সেগুলো দ্রুত সময়ে শেষ করে কাজে গতিশীলতা আনার জন্য শনিবারেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজ চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
উপাচার্য আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রায় সাংবাদিকদের ভূমিকা থাকে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে দক্ষ সাংবাদিক তৈরি করতে আমি সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবো। যাতে তারা আরও বেশি দক্ষ হয়ে আমাদের সহযোগিতা করতে পারে।’
উপাচার্যকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সুবর্ণ আস সাইফ এবং সাধারণ সম্পাদক মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে প্রশাসনের সঙ্গে সাংবাদিকরা একযোগে কাজ করে যাবে বলে জানান।
এ সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি মুজাহিদ বিল্লাহ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইউছুব ওসমান, দপ্তর, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. মেহেদী হাসান, অর্থ সম্পাদক রিদুয়ান ইসলামসহ সংগঠনটির অন্য নেতা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমকে এ সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে গাছ, বই ও কলম উপহার দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয় অধিশাখার উপসচিব মোছা. রোখছানা বেগম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির ষষ্ঠ ও প্রথম নারী উপাচার্য।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় অনুভূত হওয়া ৫ দশমিক ৬ রিখটার স্কেলের ভূমিকম্প ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের দেয়ালের ফাটল বড় করেছে।
খসে পড়েছে ছাদের বিভিন্ন আস্তরণ, ভেঙে পড়েছে রিডিং রুমের দরজার উপরে থাকা কাঁচের জানালা। ভেঙে পড়া এই কাঁচের উপর দিয়ে রিডিং রুম থেকে তাড়াহুড়ো করে বের হতে গিয়ে কিছু শিক্ষার্থীর হাত-পা ছিলে গেছে।
ভূমিকম্পের সম্ভাব্য ক্ষতি থেকে বাঁচতে একজন শিক্ষার্থী তিন তলা থেকে নিচে লাফ দিয়েছেন। তবে তিনি আহত হননি।
এদিকে এত কিছুর পরও এই প্রতিবেদন লেখার আগ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের খোঁজ-খবর নিতে হলে আসেননি হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান। এটা আরও বেশি ক্ষুব্ধ করে তুলেছে শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীদের দাবি, তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আর কোনো জগন্নাথ হলের অক্টোবর ট্রাজেডি চান না। অবিলম্বে হল সংস্কার বা নতুন হল নির্মাণের দাবি তাদের। একইসঙ্গে তারা শিক্ষার্থীবান্ধব প্রাধ্যক্ষ এবং হাউজ টিউটর চান।
এর আগে ১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর প্রাচীন জগন্নাথ হলের একটি আবাসিক ভবনের ছাদ ধসে সংঘটিত হয় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। এতে প্রাণ হারান ৩৯ জন ছাত্র, কর্মচারী ও অতিথি। এরপর থেকেই প্রতি বছর দিনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এটি জগন্নাথ হল ট্রাজেডি নামেও পরিচিত।
আহমেদ উল্লাহ সিয়াম নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘নতুন করে আর জগন্নাথ হলের মতো মুহসীন হল ট্রাজেডি দেখতে চাই না। প্রশাসনের ঘুম ভাঙ্গবে কবে? কোটি কোটি টাকা অপব্যয় করে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বেষ্টিত মল চত্বরকে নষ্ট করা হচ্ছে। অথচ মুহসীন হলের শিক্ষার্থীদের জীবন কখন নাই হয়ে যায় তা বলা মুশকিল। এটা নিয়ে আশ্বাসের পর আশ্বাসই দেয়া হয়েছে। কোনো প্রকার দৃশ্যমান কাজ হয়নি। অথচ শিক্ষকদের, কর্মচারীদের জন্য ভবন তৈরী হলে তা ৬ মাস, ১ বছর, ২ বছরেই দৃশ্যমান হয়।’
তিনি বলেন, ‘এটা প্রকাশ্যে বৈষম্য, অবহেলা। অবিলম্বে বিল পাশ করে মুহসীনসহ সকল ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিপরীতে নতুন ভবন তৈরী করা হোক। না হয় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়া হোক। কারণ লেখাপড়ার চেয়ে জীবনের দাম অনেক বেশি।’
ফেসবুক আরেক শিক্ষার্থী লিখেন, হুট করে মুহসীন হল ট্রাজেডিতে একজনকেও হারিয়ে শোক পালন করতে চাই না। সকলে নিরাপদে থাকুক এটা প্রশাসনকে নিশ্চিত করতেই হবে। এটা আমাদের মৌলিক অধিকার। বাজেট স্বল্পতার অজুহাতে এ মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত না করা হোক। না হলে কিন্তু ঘাতক প্রশাসনের ঘুম হারাম করে দেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
তবে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমানের দাবি তিনি হলে এসেছেন। কিছু শিক্ষার্থী তাকে নাও দেখতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘আমি এবং হলের হাউজ টিউটররা শিক্ষার্থীদের কল্যাণে রাত-দিন পরিশ্রম করছি। কোনো ঘটনা ঘটলেই এগুলোর সমাধান করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবহিত করি। আজকে ঘটনা ঘটার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়াররা আমার হল পরিদর্শন করেছেন। আমরা তৎপর না হলে কি এতো দ্রুত কেউ রেসপন্স করে?’
হলের প্রাধ্যক্ষ বলেন, ‘আমার হলের যে পলেস্তারা খসে পড়ার ছবি শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে পোস্ট করছে এগুলো অনেক আগের। এগুলো ঠিক করার জন্য কয়েকমাস আগে বিশ্ববিদ্যালয়কে অবহিত করেছি। খুব দ্রুত এগুলোর ঠিক করা হবে। আর শিক্ষার্থীদের তাড়াহুড়ো করে বের হওয়ার কারণেই রিডিং রুমের দরজার উপর থাকা কাঁচের জানালা ভেঙে পড়েছে। খুব দ্রুত এগুলোর সংস্কার করা হবে। আমরাও চাই না কোন শিক্ষার্থীর জীবন ঝুঁকিতে থাকুক।’
তবে প্রাধ্যক্ষকের হলে আসার দাবির বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, উনি মিথ্যা কথা বলছে। উনি আসেনি সেটা হান্ড্রেড পারসেন্ট সত্য। হলের একজন নিরাপত্তাকর্মীও জানিয়েছেন তিনি এখন পর্যন্ত হলের প্রাধ্যক্ষকে দেখেননি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষক সমিতির ২০২৪ সালের কার্যকরি পরিষদের নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। ফলে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় বিনা নির্বাচনেই জয়ী হয়েছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ইকবাল রউফ মামুন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না পেয়ে নীল দলের পুরো প্যানেলকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে ইকবাল রউফ মামুন বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের সময় ছিল। আমাদের কাছে ১৫টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল। সবই নীল দলের প্রার্থীদের। আর কোনো প্যানেল বা স্বতন্ত্র হিসেবে কেউই মনোনয়নপত্র জমা দেননি। যেহেতু নীল দলের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল না, আমরা তাদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করেছি।’
জয়ী হওয়ার ফলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে পুনরায় দায়িত্ব পালন করবেন পুষ্টি ও খাদ্য-বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া ও অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা। এ ছাড়া সহ-সভাপতির দায়িত্বে থাকবেন অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস ছামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. মো. মিজানুর রহমান।
সদস্য হিসেবে থাকবেন অধ্যাপক ড. জিয়াউর রহমান, অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির, অধ্যাপক ড. শফিউল আলম ভূইয়া, অধ্যাপক ড. নেসার হোসাইন, অধ্যাপক ড. সীমা জামান, অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান, অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল, অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ এবং অধ্যাপক ড. সিকদার মনোয়ার মোর্শেদ। এই নেতারা আগামী এক বছর শিক্ষক সমিতির দায়িত্ব পালন করবেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয় বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। দলটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ‘সাদা দল গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী একটি পেশাজীবী সংগঠন। নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনে বিশ্বাসী বলে দলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ফোরামের নির্বাচনে সবসময় অংশ নিয়ে আসছে। কিন্তু এবার বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণের পরিবেশ অনুকূল বলে আমরা মনে করি না।’
লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমরা মনে করি, দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিতে আসন্ন শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার চেয়ে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং ভোটাধিকার নিশ্চিত করার দাবিতে পরিচালিত আন্দোলনের গুরুত্ব অনেক বেশি। আমরা চাই না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন শিক্ষক সমিতি নির্বাচিত হোক যেটি ভোটাধিকার হরণকারী অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিস্ট সরকারের হাতকে শক্তিশালী করবে।’
আরও পড়ুন:দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতিসহ সর্বত্তে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের ভূমিকা কোনো অংশেই কম নয়। ক্রীড়া আঙ্গিনায় নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে একই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে। অর্থাৎ শঙ্খচিলের মতো বিশ্বের বুকে নিজেদেরকে মেলে ধরেছে নারীরা।
আর এ ক্ষেত্রে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় নারী শিক্ষার্থীরাও কোনো দিক থেকে পিছিয়ে নেই। পরীক্ষার খাতায় যেমন নিজেদেরকে প্রথম তালিকায় রেখেছেন, ঠিক তেমনি ক্রীড়া আঙ্গিনায় নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছেন কুবির নারী শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের ক্রীড়া ক্ষেত্রে উৎসাহী করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছে নানা উদ্যোগ। মেয়েদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ আগ্রহী করতে ব্যাডমিন্টন, কারাম, ভলি বল, ক্রিকেট-ফুটবল সহ নানা রকম উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস ক্লাব।
সম্প্রতি শেখ হাসিনা হল ও নবান ফয়জুন্নেছা হলে নারী শিক্ষার্থীদের নিয়ে ব্যাডমিন্টন খেলার আয়োজন করা হয়। এছাড়া আন্তঃবিভাগ টুর্নামেন্টগুলোতে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদেরও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়। সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের উৎসাহী করতে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদেরও ক্রীড়া ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করায় ভাইস চ্যান্সেলর স্কলারশিপ দেয়া হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও খেলাধুলায় আগ্রহী হচ্ছে।
মেয়েরা ক্রিকেট, ভলি বল, ব্যাডমিন্টনের মত বিভিন্ন খেলায় অংশগ্রহণ করছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তানজিম আবিদা নৌশিন বলেন, ‘আমরা সাধারণত দেখি মেয়েরা খেলাধুলায় অংশগ্রহণ কম করে, স্পোর্টস স্কলারশিপ দিয়ে এই আগ্রহের জায়গাটা মেয়েদের মাঝে আরও প্রবল হয়েছে। আশা করা যায় সামনের দিনগুলোয় এই প্রতিযোগিতা আরও বাড়বে। আরও অনেক মেয়ে নিজ প্যাশন থেকে বিভিন্ন খেলায় অংশগ্রহণ করতে চাইবে।’
সম্প্রতি ক্রীড়া ক্ষেত্রে ভাইস চ্যান্সেলর স্কলারশিপ পাওয়া চৈতি চাকমা বলেন, ‘খেলাধুলায় মেয়েদের আগ্রহী করতে বিভিন্ন খেলার টুর্নামেন্ট আয়োজনের পাশাপাশি ভাইস চ্যান্সেলর স্পোর্টস স্কলারশিপ প্রদানেরও উদ্যোগ নিয়েছেন উপাচার্য তথা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ওনার এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয় এবং এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলে আমরা মনে করি।’
ক্রীড়া কমিটির নারী সদস্য রেইজওয়ানা আফরিন রূম্পা বলেন, ‘পড়াশোনার পাশাপাশি শরীরচর্চা ও খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এই প্রথম মেয়েদের খেলাধুলার জন্য ক্রীড়া মেধা বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। সবগুলো বিভাগ থেকে মেয়েদের ডাকা হচ্ছে। আমরা চাচ্ছি আমাদের ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও খেলাধুলায় এগিয়ে যাক। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। আশা করছি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরা পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলায়ও এগিয়ে যাবে।’
ক্রীড়া কমিটির আহবায়ক জিল্লুর রহমান বলেন, ‘গত কয়েক বছর সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ ও পৃষ্ঠপোষকতার কারণে ছেলেদের পাশাপাশি খেলাধুলায় এগিয়ে যাচ্ছে দেশের নারীরাও। এখন খেলাধুলায় আমাদের মেয়েরা ভালো করছে। বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে মেয়েরাও খেলাধুলায় উৎসাহিত হয়ে আন্তঃবিভাগ ও হল কেদ্রিক বিভিন্ন খেলায় অংশগ্রহন করছে। ছেলেদের পাশাপাশি আমাদের মেয়েরাও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ছড়িয়ে দিতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য