× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
22 Chief Justices Four became the head of the caretaker President
google_news print-icon

২২ প্রধান বিচারপতি: চারজন হন রাষ্ট্রপতি, তত্ত্বাবধায়কের প্রধান

২২-প্রধান-বিচারপতি-চারজন-হন-রাষ্ট্রপতি-তত্ত্বাবধায়কের-প্রধান
বাংলাদেশের সাবেক চার প্রধান বিচারপতি। এদের মধ্যে আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম ও সাহাবুদ্দিন আহমেদ রাষ্ট্রপতি ও হাবিবুর রহমান ও লতিফুর রহমান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নেতৃত্ব দেন।
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত যে ২২ জন প্রধান বিচারপতি হয়েছেন, তাদের মধ্যে দুজন দেশের রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। এদের মধ্যে একজন হয়েছেন আবার দুবার। দুজন নেতৃত্ব দিয়েছেন নির্বাচনকালীন দুটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের। দুজন মেয়াদ শেষের আগে পদত্যাগ করেছেন। এদের একজন আবার দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। তবে তিনি দেশের বাইরে থাকায় সাজা ভোগ করতে হচ্ছে না।

স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ২২ জন প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে একজন সর্বোচ্চ সাড়ে সাত বছর এবং একজন সর্বনিম্ন এক মাস দায়িত্ব পালন করেছেন।

এই প্রধান বিচারপতিদের মধ্যে দুজন বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। একজন আবার এই পদে ছিলেন দুই মেয়াদে। এদের একজন আবার নির্বাচন আয়োজনের জন্য রাষ্ট্রপতি হয়ে ভোট শেষে আবার পদে ফিরে যান। পাঁচ বছর পর তিনি আবার রাষ্ট্রপতি হন।

দুজন প্রধান বিচারপতি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দুটি জাতীয় নির্বাচনের সময় দায়িত্ব পালন করেছেন।

দুজন প্রধান বিচারপতি নিজে থেকে পদত্যাগ করেছেন, যাদের একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়েছেন। তিনি পদে থাকার সময় দেশের বাইরে ছুটিতে গিয়ে আর ফেরেননি। পরে তার অনুপস্থিতিতেই বিচারের রায় হয়।

৬৭ বছর পূর্ণ হওয়া দ্বাদশ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। একই দিন বৃহস্পতিবার নতুন প্রধান বিচারপতি হিসেবে হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নাম ঘোষণা করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

নতুন প্রধান বিচারপতি শপথ নেবেন শুক্রবার।

মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জন্ম নেয়া বাংলাদেশের প্রথম প্রধান বিচারপতি শপথ নেন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের ঠিক এক বছর পর।

তিনি ছিলেন আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম। তিনি ১৯৭২-এর ১৬ ডিসেম্বর থেকে ১৯৭৫ সালের ৫ নভেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনিই প্রথম প্রধান বিচারপতি, যিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ষষ্ঠ রাষ্ট্রপতি হিসেবে ১৯৭৫-এর ৬ নভেম্বর থেকে ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

দ্বিতীয় প্রধান বিচারপতি হন সৈয়দ এ বি মাহমুদ হোসেন ১৯৭৫ সালের ১৮ নভেম্বর থেকে ১৯৭৮ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।

তৃতীয় প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন দায়িত্বে ছিলেন ১৯৭৮-এর ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৮২ সালের ১১ এপ্রিল পর্যন্ত।

চতুর্থ প্রধান বিচারপতি ফজলে কাদেরী মোহাম্মদ আবদুল মুনিম সবচেয়ে বেশি সময় দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি প্রধান বিচারপতি হন ১৯৮২ সালের ১২ এপ্রিল। পদে ছিলেন ১৯৮৯ সালের ৩০ নভেম্বর। অর্থাৎ ৭ বছর ৭ মাস।

২২ প্রধান বিচারপতি: চারজন হন রাষ্ট্রপতি, তত্ত্বাবধায়কের প্রধান
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত যে ২২ জন প্রধান বিচারপতি হয়েছেন।

পঞ্চম প্রধান বিচারপতি বদরুল হায়দার চৌধুরী ছিলেন ১৯৮৯ সালের ১ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। অর্থাৎ তার মেয়াদ ছিল কেবল এক মাস।

ষষ্ঠ প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদ দায়িত্বে ছিলেন ১৯৯০-এর ১ জানুয়ারি থেকে ১৯৯৫ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর সেনা শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পতনের পর তিনি রাষ্ট্রপ্রধান হয়ে ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করেন। নির্বাচন শেষে আবার তিনি তার আগের পদে ফিরে যান। তার জন্য বাংলাদেশের সংবিধানও সংশোধন করতে হয়েছিল।

তার নেতৃত্বে নির্বাচনে জিতে বিএনপি ৯ বছর পর সরকারে ফেরে।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে সাহাবুদ্দিন আহমেদকে আবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা হয়। সে সময় তিনি পাঁচ বছর মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন।

সপ্তম প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করা প্রথম ব্যক্তি।

২২ প্রধান বিচারপতি: চারজন হন রাষ্ট্রপতি, তত্ত্বাবধায়কের প্রধান
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত যে ২২ জন প্রধান বিচারপতি হয়েছেন।

তিনি ১৯৯৫-এর ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৯৫ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত প্রধান বিচারপতি ছিলেন। ১৯৯৬ সালের জুনের জাতীয় নির্বাচনে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হন। ওই নির্বাচনে ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকারে ফেরে।

দেশের অষ্টম প্রধান বিচারপতি এ টি এম আফজাল দায়িত্বে ছিলেন ১৯৯৫-এর ১ মে থেকে ১৯৯৯ সালের ৩১ মে পর্যন্ত।

নবম প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামাল দায়িত্বে ছিলেন ১৯৯৯ সালের ১ জুন থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

দশম বিচারপতি লতিফুর রহমান ছিলেন ২০০০-এর ১ জানুয়ারি থেকে ২০০১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

তিনি বাংলাদেশের দ্বিতীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় তিনি এই দায়িত্বে ছিলেন।

তবে ২০০৬ সালে আরেক প্রধান বিচারপতি কে এম হাসানের প্রধান উপদেষ্টা হতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক গোলযোগে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জারি হয় জরুরি অবস্থা।

সে সময় বিধান ছিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হবেন সবশেষ দায়িত্ব পালন করা প্রধান বিচারপতি। কিন্তু কে এম হাসান এককালে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন বলে আওয়ামী লীগ তাকে মেনে নিতে রাজি ছিল না।

২০০৮ সালের ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করে জরুরি অবস্থায় ক্ষমতা নেয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার। আট বছর পর ক্ষমতায় ফেরে আওয়ামী লীগ।

২২ প্রধান বিচারপতি: চারজন হন রাষ্ট্রপতি, তত্ত্বাবধায়কের প্রধান
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত যে ২২ জন প্রধান বিচারপতি হয়েছেন।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর উচ্চ আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাই বাতিল হয়। এর ফলে প্রধান বিচারপতির পদটি নিয়ে রাজনৈতিক সমীকরণের বিষয়টি বাতিল হয়ে যায়।

একাদশ প্রধান বিচারপতি মাহমুদুল আমিন চৌধুরী ২০০১-এর ১ মার্চ থেকে ২০০২ সালের ১৭ জুন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

দ্বাদশ প্রধান বিচারপতি মাইনুর রেজা চৌধুরী দায়িত্বে ছিলেন ২০০২-এর ১৮ জুন থেকে ২০০৩ সালের ২২ জুন পর্যন্ত।

ক্রয়োদশ প্রধান বিচারপতি কে এম হাসান ছিলেন ২০০৩-এর ২৩ জুন থেকে ২০০৪ সালের ২ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

চতুর্দশ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ জে আর মোদাচ্ছির হোসেন ২০০৪-এর ২৭ জানুয়ারি থেকে ২০০৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন।

পঞ্চদশ প্রধান বিচারপতি মো. রুহুল আমিন ২০০৭-এর ১ মার্চ থেকে ২০০৮ সালের ৩১ মে পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

ষোড়শ প্রধান বিচারপতি এম এম রুহুল আমিন ২০০৮-এর ১ জুন থেকে ২০০৯ সালের ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

সপ্তদশ প্রধান বিচারপতি মো. তাফাজ্জাল ইসলাম ২০০৯-এর ২৩ ডিসেম্বর থেকে ২০১০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন।

অষ্টাদশ প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করীম দায়িত্বে ছিলেন ২০১০-এর ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

ঊনবিংশ প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ২০১০-এর ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১১ সালের ১৭ মে পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন। তার দায়িত্বে থাকার সময়েই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অসাংবিধানিক ঘোষিত হয়।

বিংশতম প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন দায়িত্বে ছিলেন ২০১১-এর ১৮ মে থেকে ২০১৫ সালের ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত।

একবিংশতম প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত হয়েছেন। তিনি ২০১৫-এর ১৭ জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার রায় দেন। পদত্যাগের আগে ওই বছরের ১৪ অক্টোবর তিনি দেশের বাইরে যান। ফেরার কথা ছিল নভেম্বরে।

ওই বছরের ২ অক্টোবর তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে এক মাসের ছুটির আবেদন করেন। এরপর ১৩ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের বাইরে অবস্থানের অনুমতি চেয়ে আরেকটি আবেদন করেন।

ফেরার কথা ছিল যেদিন, তার পরদিনই তিনি সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন।

সাবেক ফারমার্স ব্যাংক থেকে ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে করা মামলায় গত ৯ নভেম্বর তার ১১ বছরের সাজা ও ৪৫ লাখ টাকা জরিমানা হয়। তবে দুটি সাজা একই সঙ্গে চলবে বলে তাকে কারাগারে থাকতে হবে সাত বছর।

সিনহা পদত্যাগ করার পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহহাব মিঞা। ২০১৭-এর ১২ নভেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের পর তিনিও পদত্যাগ করেন। সে সময় ধারণা করা হয়, তাকে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব না দেয়ায় তিনি এই সিদ্ধান্ত নেন।

২২তম প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি শপথ নেন। পৌনে তিন বছরের কিছু বেশি সময় তিনি দায়িত্ব পালন করলেন।

আরও পড়ুন:
নতুন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী
অবসরে সাক্ষাৎকার দেব না: প্রধান বিচারপতি
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধান বিচারপতির বিদায়ী সাক্ষাৎ
প্রধান বিচারপতি নিয়োগে সরকারের ভূমিকা নেই: আইনমন্ত্রী
প্রধান বিচারপতি নিয়োগে নির্দেশনা আসেনি

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Police will be arrested in court within 24 hours Chief Prosecutor

গ্রেপ্তার করবে পুলিশ, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে আনতে হবে: চিফ প্রসিকিউটর

গ্রেপ্তার করবে পুলিশ, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে আনতে হবে: চিফ প্রসিকিউটর

কোন জায়গাকে কারাগার ঘোষণা করা হচ্ছে, সেটা তাদের বিবেচ্য বিষয় নয় বলে উল্লেখ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, আসামিকে গ্রেপ্তার করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে আনতে হবে।
গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম এ কথা বলেন। ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা করে রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকেরা।
এ সময় চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত জানি না যে আদৌ কোনো সাবজেল ঘোষণা হয়েছে কি না। কোনো ডকুমেন্ট আমার হাতে নেই, যেহেতু আপনারা বলছেন। যদি সরকার কোনো নির্দিষ্ট জায়গাকে সাবজেল ডিক্লেয়ার (উপকারাগার ঘোষণা) করে, সরকারের সেই ক্ষমতা আছে। কোন জায়গাটাকে তারা জেল ঘোষণা করবেন, প্রিজন অথরিটির আওতায় নিয়ে আসবেন, সেটা সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত। সুতরাং এটা আমাদের কোনো কনসার্ন হওয়ার কোনো বিষয় নয়।’
সরাসরি কাউকে জেলে নেওয়ার বিধান নেই উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আইন হচ্ছে আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে আনতে হবে। আদালতে আনার পর আদালত যদি ফারদার অর্ডার (পরবর্তী আদেশ) দিয়ে বলেন—কারাগারে পাঠান, তখন কারাগার বলতে সেটা কেন্দ্রীয় কারাগারও হতে পারে, সেটা জাতীয় সংসদ ভবনের মধ্যেও হতে পারে, এমপি হোস্টেল হতে পারে বা অন্য কোনো জায়গাকেও যদি সরকার কারাগার ঘোষণা করেন, সে জায়গায় পাঠানো যেতে পারে। কিন্তু সেটা জেল বা কারাগার হিসেবে গণ্য হবে।’

সুতরাং কোন জায়গাকে কারাগার ঘোষণা করা হচ্ছে, তা ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের (রাষ্ট্রপক্ষ) বা তদন্ত সংস্থার বিবেচ্য বিষয় নয় বলে উল্লেখ করেন চিফ প্রসিকিউটর। তিনি বলেন, ‘আমাদের বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে, আইন অনুযায়ী কাজটা করতে হবে। আসামিকে গ্রেপ্তার যদি করা হয়, করা মাত্রই উইদিন টোয়েন্টি ফোর আওয়ার্স (২৪ ঘণ্টার মধ্যে) তাকে আদালতে আনতে হবে। এটা হচ্ছে মোদ্দাকথা। সেটা সংবিধানে যেমন আছে, আইসিটির আইনে আছে, সিআরপিসিতে (ফৌজদারি কার্যবিধি) আছে।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মানেই পুলিশ উল্লেখ করে ব্রিফিংয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, আর্মির (সেনাবাহিনী) হাতে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা নেই।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম-নির্যাতনের মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলা এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় ২৫ জন সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জনকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

ওই সেনা কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, এই আদেশ (গ্রেপ্তারি পরোয়ানা) পালনের ব্যাপারে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের অফিসকে অবহিত করা হয়েছে। তারা কিন্তু গ্রেপ্তার করবে না। তারা অবহিত থাকার অর্থ হচ্ছে যখন পুলিশ এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল করতে যাবে, তারা অবহিত থাকলে এই পরোয়ানা তামিল করতে তাদের সাহায্য করবে। সুতরাং অ্যারেস্টিংয়ের পাওয়ার (গ্রেপ্তারের ক্ষমতা) কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর, অন্য কারও নয়।

তাহলে হেফাজতে থাকার ব্যাখ্যা কী, এ প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, যখনই গ্রেপ্তার দেখানো হবে, গ্রেপ্তার করা হবে, তখন থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অবশ্যই তাকে আদালতে আনতে হবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Twenty four mass uprising became inevitable Chief Prosecutor

চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান অনিবার্য হয়ে পড়েছিল : চিফ প্রসিকিউটর

চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান অনিবার্য হয়ে পড়েছিল : চিফ প্রসিকিউটর চব্বিশের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন পর্বে বিগত প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। ছবি: বাসস

গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্রমান্বয়ে দানবে পরিণত হওয়ার কারণেই চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান অনিবার্য হয়ে পড়েছিল বলে উল্লেখ করেছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন জনের বিরুদ্ধে চব্বিশের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন পর্বে বিগত প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি একথা বলেন।

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ চিফ প্রসিকিউটর বলেন, গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্রমান্বয়ে দানবে পরিণত হয়েছিল। প্রথমে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে তারা আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মেরুদণ্ডটাকে ভেঙ্গে দেয়। পরবর্তীতে গুম-খুনের কালচার চালু করে। এরপর তারা আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়। তত্ত্বাবধান ব্যবস্থা বাতিল করে দেওয়া হয়। দেশে দুর্নীতি সর্বগ্রাসী রূপ পায়। এ সবের মাধ্যমেই তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) ক্রমান্বয়ে একটা দানবীয় সরকারে পরিণত হয়েছিল।

চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম আরো বলেন, ‘জনগণকে নির্যাতন করা, হত্যা করা ও একটা ভয়ের রাজত্ব কায়েম করা ছিলো তাদের (আওয়ামী লীগ সরকারের) টার্গেট। এই দানবীয় শাসকই একটা পর্যায়ে ২০২৪ সালে আমাদের তরুণ-তরতাজা প্রজন্মের ওপর সর্বাত্মক আক্রমণ চালায়।’

আজ যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের আগে গত বুধবার এই মামলার শেষ সাক্ষী (৫৪তম) তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের জেরা শেষ হলে, যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়।

ঐতিহাসিক এই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের পিতাসহ স্বজনহারা পরিবারের অনেকে। এছাড়া স্টার উইটনেস হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক ও জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। সর্বমোট সাক্ষ্য দিয়েছেন ৫৪ জন সাক্ষী।

এই মামলায় প্রসিকিউসন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এসএইচ তামিম শুনানি করছেন।

সেই সাথে অপর প্রসিকিউটররা শুনানিতে উপস্থিত থাকেন।

পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন আর এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। একপর্যায়ে এই মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্র্যাইব্যুনাল। পরবর্তীতে এই মামলার রাজসাক্ষী হয়ে সাক্ষ্য দেন পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

এই মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে।

এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে।

অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে। সূত্র: বাসস

মন্তব্য

বাংলাদেশ
A fine of 2 unemployed in a mobile court operation

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ২ বেকারিকে জরিমানা

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ২ বেকারিকে জরিমানা

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য প্রস্তুতের অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ২টি বেকারিকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তারাশী গ্রামের লোকনাথ বেকারি ও শ্রী দুর্গা বেকারিতে এ অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুম বিল্লাহ।

জানা যায়, বেকারি ২টিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্যপণ্য উৎপাদন করা হচ্ছিল। শ্রমিকরা কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই কাজ করে আসছিল। উৎপাদন কক্ষে খোলা জায়গায় পাওয়া যায ময়লা-আবর্জনা ও ধুলাবালিযুক্ত কাঁচামাল এবং ছত্রাকযুক্ত ট্রে ।

এ অবস্থায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ও খাদ্য নিরাপত্তা আইনের বিভিন্ন ধারা অনুযায়ী লোকনাথ বেকারিকে ৮০ হাজার টাকা এবং শ্রী দুর্গা বেকারিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

অভিযান পরিচালনাকারী এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চলবে। কোনোভাবেই খাদ্যপণ্যে ভেজাল ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বরদাশত করা হবে না। ব্যবসায়ীদের স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ বজায় রেখে খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও বিক্রি করতে হবে।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The husband of the husband to kill a wife without getting dowry

যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

সুনামগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়ে়ছে। রোববার সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ এই রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন- সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার পৈলনপুর গ্রামের বাসিন্দা শাহীন মিয়া (৪৮)। তিনি পলাতক আছেন।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. শামছুর রহমান।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ছাতক উপজেলার পৈলনপুর গ্রামের শাহীন মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল একই উপজেলার মৈশাপুর গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী ছবদর আলীর মেয়ে সুহেনা বেগমের। বিয়ের পর থেকেই শাহীন মিয়া ব্যবসার জন্য বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে সুহেনা বেগম চাপ দিতে থাকেন। বিভিন্ন সময় এ জন্য তাকে শারীরিক নির্যাতন করতেন। শাহীন ও সুহেনার দুই সন্তান আছে। সুহেনার বাবা ছবদর আলী মেয়ের সংসার টিকিয়ে রাখতে বিভিন্ন সময় টাকাও দিয়েছেন। এক পর্যায়ে শাহীন পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। কিন্তু সুহেনা বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে অস্বীকার করেন। ২০১২ সালে ২০ মার্চ সন্ধ্যায় সুহেনা বেগম তার মা হালিমা বেগমকে ফোন করে জানান যৌতুকের টাকার জন্য তার স্বামী তাকে মারধর করেছেন। এরপর রাত ২টার দিকে শাহীন মিয়া হালিমা বেগমেক ফোন করে বলেন, সুহেনাকে পাওয়া যাচ্ছে না। হালিমার স্বামী তখন প্রবাসে। পরদিন সকালে তিনি পৈলনপুর গ্রামে মেয়ের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাননি। তখন শাহীনও বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে তিনি থানায় একটি জিডি করেন। এর দুদিন পর গ্রামের পাশের সুরমা নদীতে সুহেনার লাশ পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় সুহেনার মা হালিমা বেগম ছাতক থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় আটজন সাক্ষ্য দেন। মামলার দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে রোববার রায় ঘোষণা করেন আদালতের বিচারক।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The tribunal took three charges against Inu

ইনুর বিরুদ্ধে ৮ অভিযোগ আমলে নিল ট্রাইব্যুনাল

মানবতাবিরোধী অপরাধ
ইনুর বিরুদ্ধে ৮ অভিযোগ আমলে নিল ট্রাইব্যুনাল

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মিত্র জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদের) সভাপতি হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে ‘আনুষ্ঠানিক অভিযোগ’ আমলে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
তার বিরুদ্ধে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিভিন্ন পর্যায়ে উসকানি, ষড়যন্ত্র, হত্যা, আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র প্রয়োগ ও নিপীড়নমূলক কৌশলে সমর্থনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের আটটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২-এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন প্রসিকিউশন। শুনানির পর তা আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।
এই ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার।
অভিযোগ আমলে নেওয়ার পর প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক অভিযোগটি ৩৯ পৃষ্ঠার। চারটি ভলিউমে এক হাজার ৬৭৯ পৃষ্ঠার ডকুমেন্টারি এভিডেন্স আমরা দাখিল করেছি। সঙ্গে তিনটি অডিও ও ছয়টি ভিডিও দাখিল করা হয়েছে। এই মামলায় ২০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। মামলার একমাত্র আসামি হাসানুল হক ইনু। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর এই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখাতে ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
প্রথম অভিযোগ (গণমাধ্যমে প্ররোচনা): জুলাই আন্দোলনকারীদের বিএনপি-জামায়াত, সন্ত্রাসী ট্যাগ দিয়ে আন্দোলন দমন এবং আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে আসামি হাসানুল হক ইনু জাসদের প্রধান হিসেবে গত বছর ১৮ জুলাই ‘মিরর নাও’ নামের একটি ভারতীয় গণমাধ্যমে উসকানি দিয়েছেন।
দ্বিতীয় অভিযোগ (দেখামাত্র গুলি) : গত বছর ১৯ জুলাই গণভবনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ১৪ দলীয় জোটের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ইনু উপস্থিত ছিলেন। ওই সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে দেশব্যাপী সেনা মোতায়েন, কারফিউ জারি এবং আন্দোলনকারীদের ‘শুট অ্যাট সাইট’ অর্থাৎ দেখামাত্র গুলি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। হাসানুল হক ইনু ওই সিদ্ধান্ত গ্রহণ, বাস্তবায়নে প্ররোচনা ও উসকানি দেওয়ার পাশাপাশি তাতে সহায়তা করেছেন।

তৃতীয় অভিযোগ (কুষ্টিয়ায় দমন-পীড়ন): গত বছর ২০ জুলাই হাসানুল হক ইনু তার নিজ জেলা কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপারকে ফোন করে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছাত্র-জনতার ছবি দেখে তালিকা তৈরি এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশের ফলে কুষ্টিয়া পুলিশের একটি অংশ এবং ১৪ দলীয় জোটের সশস্ত্র ক্যাডাররা গত বছর ৫ আগস্ট পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালালে ছয়জন নিহত হন।
চতুর্থ অভিযোগ (লিথাল উয়েপন): সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে আন্দোলন দমনে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র’ ব্যবহার, ছত্রীসেনা নামিয়ে ও হেলিকপ্টার দিয়ে বোম্বিং করে আন্দোলনকারীদের হত্যা ও নির্যাতনের ষড়যন্ত্র করেন ইনু। গত বছর ২০ জুলাই তিনি এ নিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।

পঞ্চম অভিযোগ (টিভি চ্যানেলে উসকানি): গত বছরের ২৭ জুলাই আসামি হাসানুল হক ইনু নিউজ টোয়েন্টিফোর চ্যানেলে আন্দোলনকারীদের বিএনপি, জামায়াত, সন্ত্রাসী ও জঙ্গি আখ্যা দিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। ওইসময় তিনি দেশে সরকারের কারফিউ জারি, আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার ও নির্যাতনের কৌশলকে সমর্থন করেন তিনি।

ষষ্ঠ অভিযোগ (জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব): গত বছর ২৯ জুলাই অনুষ্ঠিত ১৪ দলীয় জোটের সভায় হাসানুল হক ইনু আন্দোলনকারীদের বিএনপি, জামায়াত, সন্ত্রাসী ও সাম্প্রদায়িক বলে আখ্যা দেন। তিনি জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী জোটের ক্যাডারদের পরিচালিত হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনকে বৈধতা দেন।

সপ্তম অভিযোগ (কারফিউ ও গুলিবর্ষণে সমর্থন): গত বছর ৪ আগস্ট বিকেলে শেখ হাসিনার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে আন্দোলন দমনে কারফিউ জারি ও আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণের সিদ্ধান্ত সমর্থন ব্যক্ত করে তার দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেন ইনু।

অষ্টম অভিযোগ (কুষ্টিয়ায় আন্দোলনে হত্যা): সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং হাসানুল হক ইনুর ষড়যন্ত্র ও নির্দেশে গত বছর ৫ আগস্ট কুষ্টিয়ায় ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ক্যাডাররা পুলিশের উপস্থিতিতে নিরীহ আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালায়। তাদের গুলিতে শ্রমিক আশরাফুল ইসলাম, সুরুজ আলী বাবু, শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মুস্তাকিন, মো. উসামা, ব্যবসায়ী বাবলু ফরাজী এবং চাকরিজীবী ইউসুফ শেখ শহীদ হন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Order issuing the Red Notice to Interpol against three persons including S Alam Group Chairman

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির আদেশ

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির আদেশ

ঢাকার একটি আদালত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ ও পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির আদেশ দিয়েছেন।

আজ দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজ এ আদেশ দেন। দুদকের জনসংযোগ বিভাগের উপ-পরিচালক আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

আবেদনে বলা হয়, সাইফুল আলম, আব্দুস সামাদ ও আব্দুল্লাহ হাসান পরস্পরের যোগসাজশে অপরাধমূলক অসদাচরণ ও বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে ‘এএম ট্রেডিং’ নামে একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে জাল নথি তৈরি ও ব্যবহার করেছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঋণের নামে ১০৪ কোটি ২০ লাখ ৭৭ হাজার ৭০৮ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সাইফুল আলম দুর্নীতির মাধ্যমে এই অর্থ এস আলম সুপার ইডিবল ওয়েলের স্বার্থে স্থানান্তর বা পুনর্বিন্যাস বা রূপান্তর করেছেন, যার পরিমাণ ৩৪০ কোটি টাকা বলে অভিযোগে উল্লেখ আছে।

তদন্ত চলাকালে আসামিরা বিদেশে পলাতক থাকায় তাদের আটক করা যায়নি। তাই আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেন এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ইন্টারপোলের কাছে আবেদন করে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Demanding the expulsion of lawyers in protest of media workers
আদালতে সাংবাদিককে মারধর

গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতিবাদ, আইনজীবীকে বহিষ্কারের দাবি

গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতিবাদ, আইনজীবীকে বহিষ্কারের দাবি

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে এজলাসকক্ষে সময় টিভির প্রতিবেদক আসিফ হোসাইনকে মারধরের প্রতিবাদে গতকাল রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গণমাধ্যমকর্মীরা মানববন্ধন করেন।

মানববন্ধনে অভিযুক্ত আইনজীবীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ তাঁকে আদালত থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান গণমাধ্যমকর্মীরা।

গণমাধ্যমকর্মীরা বলেছেন, সাংবাদিকদের মারধর করা এখন প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। এজলাসের মতো জায়গায় বিচারকের সামনে সাংবাদিককে মারধর করা হলো, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

৪ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার সাংবাদিক মনজুরুল আলমের (পান্না) জামিন শুনানি চলাকালে মারধরের শিকার হন আসিফ হোসাইন। তিনি অভিযোগ করেন, আইনজীবী মহিউদ্দিন মাহি তাকে মারধর করেছেন। তবে আইনজীবী তা অস্বীকার করেছেন।

মানববন্ধনে অভিযুক্ত আইনজীবীর শাস্তি দাবি করে সময় টিভির সাংবাদিক ফারুক ভূঁইয়া বলেন, ‘আদালতের এজলাসে মব সৃষ্টি করে হামলা একটি নজিরবিহীন ঘটনা। এই ঘটনা দেখিয়ে দিল বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে। এত বড় ঘটনা ঘটে গেল, কিন্তু কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেখা গেল না।’ এই ঘটনায় কোনো বিচার হবে কি না, সে ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।

সময় টিভির আরেক সাংবাদিক হারুনর রশীদ বলেন, অপরাধীকে আদালত থেকে বহিষ্কার করা হোক। সাংবাদিকদের সুরক্ষা দিতে হবে।

একাত্তর টিভির সাংবাদিক শাহনাজ শারমিন বলেন, সাংবাদিকেরা নির্যাতিত হলে কেউ প্রতিবাদ করে না। সবার কাছেই সাংবাদিকেরা মার খায়। সাংবাদিক মারা এখন প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। একসময় সাংবাদিকেরা মার খেলে সরকারের উচ্চপর্যায় পর্যন্ত এসে সুরাহা করত। কিন্তু এখন প্রতিবাদটুকুও হয় না। কারণ, সাংবাদিকদের মধ্যে সেই ঐক্য নেই। সাংবাদিকদের এক হতে হবে।

মানববন্ধনে গণমাধ্যমকর্মীরা বলেন, সাংবাদিকেরা এখন আদালতেও মার খাচ্ছেন। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দিতে হবে, স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। এজলাসে হামলার মতো ঘটনা লজ্জার।

মানববন্ধনে বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

p
উপরে