করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর ব্যাংক ঋণ পরিশোধে বিশেষ যে সুবিধা ছিল, সেটি প্রত্যাহারের ঘোষণার দুই দিন পরেই উল্টো সিদ্ধান্ত নিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যবসায়ী নেতারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে গিয়ে আলোচনার পর এই ঘোষণা দেয়া হয়।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চলতি বছর একজন ঋণগ্রহীতার যে পরিমাণ পরিশোধ করার কথা তার মধ্যে ১৫ শতাংশ পরিশোধ করলে কেউ আর খেলাপি হবেন না। ছোট ঋণগ্রহীতাদের পাশাপাশি বড় ঋণগ্রহীতারাও এ সুবিধা পাবেন।
বৃহস্পতিবার ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়।
দুই দিন আগে ২৮ ডিসেম্বর ব্যাংকার্স সভা থেকে জানানো হয়, সবার জন্য সুবিধা আর বাড়বে না। শুধু সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তারা ১৫ শতাংশ পরিশোধ করলে আর খেলাপি হবেন না।
ঘোষণাটি ব্যবসায়ীদের জন্য ছিল এক বড় ধাক্কা। এর কারণ, কিস্তিু না দিলে খেলাপির তালিকায় নাম উঠলে আমদানি-রপ্তানিতে নানা ঝক্কিঝামেলা পোহাতে হয়, নতুন ঋণও পাওয়া যায় না।
এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ী নেতারা বিকেলে ছুটে যান কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান, আবু ফরাহ মো. নাছেরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তারা বৈঠক করেন।
এতে ব্যবসায়ী নেতাদের নেতৃত্ব দেন এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অন্যান্য সব ঋণের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ শোধ করে ঋণ নিয়মিত করার যে সুবিধা ছিল সেটা ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।’
অর্থাৎ চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের শেষ কর্মদিবস পর্যন্ত কেউ ঋণের ১৫ শতাংশ শোধ করলে খেলাপি হবেন না। ইতিমধ্যে অনেকে এ সুবিধা নিয়ে ঋণ নিয়মিতকরণ করেছেন।’
বৈঠকে ব্যবসায়ীরা রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের ঋণসীমা বাড়ানো ও স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণ পরিশোধের দাবি জানান। এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না জানিয়ে পর্যালোচনা করে পরে সিদ্ধান্ত দেয়ার কথা জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ হলে সাধারণ ছুটিতে ব্যবসা-বাণিজ্যে অচলাবস্থা দেখা দেয়। সে সময় ঋণ নিয়ে ব্যবসায়ী উদ্যোগ শুরু করা মানুষদের জন্য নীতিসহায়তা ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সিদ্ধান্ত হয়, ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের কিস্তি জমা না দিলেও কেউ খেলাপির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবেন না।
পরে এই মেয়াদ বাড়ানো হয় ধাপে ধাপে। তবে ঢালাও সুবিধা ধীরে ধীরে কমায় বাংলাদেশ ব্যাংক।
ডিসেম্বর পর্যন্ত কিস্তির কোনো অংশ জমা না দিয়েও খেলাপিমুক্ত থাকার সুযোগ থাকলেও পরে তা কমানো হয়।
সবশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী করোনার কারণে চলতি বছর একজন ঋণগ্রহীতার যে পরিমাণ পরিশোধ করার কথা ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে কেউ ২৫ শতাংশ পরিশোধ করলে আর খেলাপি হবেন না।
ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো এ সুবিধা আরও বাড়ানোর দাবিতে চিঠি দিয়েছিল। তাদের যুক্তি হলো, বিশ্বে করোনা আবার বাড়ছে। ইউরোপ-আমেরিকায় ভাইরাসটি আবার ছড়াচ্ছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভালো হলেও রপ্তানির প্রধান কেন্দ্রে আবার নানা বিধিনিষেধ আসছে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দাভাব তৈরি হবে। আর এটা হলে ব্যবসায়ীদের জন্য ঋণের কিস্তি জমা দেয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে।
কিন্তু গত ২৮ ডিসেম্বর ব্যাংকার্স সভায় উল্টো সিদ্ধান্ত জানান গভর্নর ফজলে কবির। তিনি তাদের অবস্থান জানিয়ে বলেন, এবার আর ঢালাও সুবিধা নয়। আর এই সিদ্ধান্ত পাল্টাবে না।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে সংস্কারসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংক সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজারের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা ব্যাংকিং সেক্টরে যে রিফর্ম করেছি, এক্সপোর্ট ও প্রমোশনে বিশ্বব্যাংক আমাদের সহায়তা করবে। তারা আমাদের সংস্কারে সহায়তা করবে এবং আমরা সহায়তা পাব।’
বৈঠকে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের সমস্যাগুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা।
তিনি জানান, বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও তার টিমের সঙ্গে কথা হয়েছে। বাজেট সহায়তা, জ্বালানি খাতে সহযোগিতা, সার আমদানি, খাদ্য, বন্যা পরবর্তী সহযোগিতা নিয়ে কথা হয়েছে।
এ ছাড়া রোহিঙ্গাদের সমর্থন নিয়েও কথা হয়েছে বলে জানান সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘আমরা যেসব প্রস্তাব দিয়েছি, সবগুলোর ব্যাপারেই তারা খুবই ইতিবাচক এবং মোটামুটি কনক্রিট। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে অন্যান্যরাও কো-অর্ডিনেট করবে। ফান্ড এবং অন্যান্য কোনো ব্যাপারে তাদের কার্পণ্য থাকবে না।’
আরও পড়ুন:চাহিদার চেয়ে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের খোলা বাজারে কমেছে ইউএস ডলারের দাম।
বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যবসায়ী ও মানি চেঞ্জারদের ভাষ্য, বর্তমানে খোলা বাজারে এক ডলার বিক্রি হচ্ছে ১২১ থেকে ১২২ টাকায়, যা তিন সপ্তাহ আগেও ছিল ১২৫ টাকা।
গত ৫ আগস্ট দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিদেশ ভ্রমণের চাহিদা কমে যাওয়া এবং খোলাবাজারে ডলারের প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় ডলারের বিনিময় হার নিম্নমুখী হয়েছে।
সাধারণত ভ্রমণকারীরা খোলা বাজার থেকে বৈদেশিক মুদ্রা কিনে থাকেন। তাদের চাহিদা কমে যাওয়ায় ডলারের দামও কমতির দিকে।
দুই দিনের সফরে বুধবার ঢাকায় এসেছেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার।
সফরকালে তিনি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরসহ সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশকে সহায়তাকারী প্রথম সারির উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে অন্যতম বিশ্বব্যাংক।
এ পর্যন্ত বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে প্রায় ৪৪ বিলিয়ন ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যার বেশির ভাগই অনুদান বা রেয়াতি ঋণে।
বর্তমানে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) সহায়তায় বড় কর্মসূচি চলমান।
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে নতুন শুল্কায়নে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা।
এর ফলে পেঁয়াজের দাম শিগগিরই কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
হিলি স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফেরদৌস রহমান মঙ্গলবার রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাত আটটা নাগাদ নতুন শুল্কায়নে ভারতীয় চারটি ট্রাকে ১২৩ টন পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করেছে।
হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতে পেঁয়াজের সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ এবং রপ্তানিমূল্য টনপ্রতি ৫৫০ ডলার থেকে ১৪৫ ডলার কমিয়ে ৪০৫ ডলার নির্ধারণ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি কাস্টমস সার্ভারে সংযুক্ত না হওয়ায় গত ১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল। মঙ্গলবার ভারতের সার্ভারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি সংযুক্ত হওয়ায় সেই জটিলতা কাটিয়ে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বেড়ে দাম কমবে বলে প্রত্যাশা আমদানি-রপ্তানিকারক বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের।
এর আগে গত বছরের ৮ ডিসেম্বর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ সংকটের অজুহাতে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত সরকার। এরপর গত মার্চ মাসে অনির্দিষ্টকালের জন্য দ্বিতীয় দফায় নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত সরকার।
ভারতের ওই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশে পেঁয়াজের সংকট দেখা দেয়ায় দফায় দফায় দাম বাড়তে থাকে। এরপর প্রায় ৫ মাস পর গত ৪ মে ন্যূনতম ৫৫০ ডলার রপ্তানি মূল্য এবং ৪০ শতাংশ হারে শুল্ক নির্ধারণ করে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে ভারত সরকার।
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক শহিদুল ইসলাম শহিদ জানান, নতুন নিয়ম সার্ভারে সংযুক্ত হওয়ায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ শুল্ক কমে আসবে বলে তারা আশা করছেন। ফলে পেঁয়াজের দাম বাজারে অনেকাংশে কমে আসবে।
স্থলবন্দর উদ্ভিদ বিভাগের উপসহকারী কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলী জানান, হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ আমদানিতে আগ্রহ বাড়িয়েছেন। মঙ্গলবার নতুন করে আরও চার ব্যবসায়ী এলসি খুলেছেন। এসব পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করলে পণ্যটির বাজারদর নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইএসডিবি) ২০২৪-২৬ সালে তার সদস্য দেশ অংশীদারত্ব কৌশলের (এমসিপিএস) অংশ হিসেবে তিন বছরের জন্য বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশকে ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি ডলারের সামগ্রিক সহায়তা দেবে।
আইএসডিবির আঞ্চলিক কেন্দ্রের প্রধান মুহাম্মদ নাসিস সুলাইমান মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বাংলাদেশ সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে বৈঠক করেন।
ওই বৈঠক শেষে প্রশ্নের জবাবে নাসিস সুলাইমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘এমসিপিএসের অংশ হিসেবে এ পরিকল্পনার আওতায় আগামী তিন বছরের জন্য ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি ডলার সহায়তা দেয়া হবে।’
জ্বালানি তেল কেনার জন্য আইএসডিবি গ্রুপের বাণিজ্য অর্থায়নকারী শাখা ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইটিএফসি) বাংলাদেশকে ঋণ দেয়ার সীমা বাড়ানোর বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে সুলাইমান বলেন, ‘অবশ্যই এটি সরকারের সাথে সার্বিক আলোচনার একটি অংশ।’
আগামী কয়েক বছরে বাংলাদেশে আইটিএফসির সহায়তাসহ সংস্থাগুলোর সহায়তা ঠিক করার জন্য আইএসডিবির এমসিপিএসকে বিশদ কাঠামো তৈরি করতে হবে। আইএসডিবির আঞ্চলিক হাবের প্রধান বলেন, ‘সুতরাং আমরা প্রকৃতপক্ষেই বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত কিছু সমস্যা সমাধানের জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়নে সহায়তা করার অপেক্ষায় রয়েছি।’
আইএসডিবি গ্রুপের হস্তক্ষেপের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই। সরকারও সার্বিক সম্পৃক্ততার জন্য ব্যাংকের কাছ থেকে সহায়তা পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। বিশেষ করে, কীভাবে অধিকতর সহায়তা করে এগিয়ে যাওয়া যায়, সে ব্যাপারে আমরা আইটিএফসির সঙ্গে আলোচনা করব।’
আইএসডিবি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সহায়তা অব্যাহত রাখবে উল্লেখ করে সুলাইমান বলেন, ‘আইএসডিবির কৌশল এবং সরকারের অগ্রাধিকার বিবেচনা করে আমরা আশা করছি, অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গেও সম্পদ ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে সহায়তা করতে সক্ষম হব।’
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, যেহেতু আইএসডিবি বাংলাদেশের একটি বহুপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগী, তাই তারা বাংলাদেশকে স্বাস্থ্য খাত, সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ ইত্যাদিতে প্রকল্পে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দিচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশে সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামাঞ্চলের সড়ক পুনর্নির্মাণে সহায়তা করার জন্য সরকার তাদের অনুরোধ করেছে। তারা এরই মধ্যে সিলেটে এ বিষয়ে একটি জরিপ করেছে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে তারা (আইএসডিবি) ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামাঞ্চলের রাস্তা পুনর্নির্মাণে আমাদের সহায়তা করবে। তারা ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য খাত, সেতু নির্মাণ ও ভৌত অবকাঠামোতে আমাদের সহায়তা করছে।’
জ্বালানি তেল ক্রয়ে সহায়তার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, আইএসডিবি অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গে পরামর্শ করে বিদ্যমান সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য সম্ভাবনাগুলো অন্বেষণ করবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের আমাদের তহবিল সরবরাহ করার জন্য অনুরোধ করেছি এবং তারা সম্ভাবনাগুলি মূল্যায়ন করবে। এটি চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত ডিসেম্বরে আইএসডিবি বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে কিছুই বলা যাবে না।’
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘জেদ্দাভিত্তিক ঋণদানকারী সংস্থাটি দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশকে সহায়তা দেবে। কারণ তারা প্রকল্পগুলোর জন্য দেশের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সহায়তা প্রদান করবে।
‘সামগ্রিকভাবে আইএসডিবি আমাদের সহায়তা দেবে।’
এমসিপিএস সম্পর্কে তিনি জানান, সরকার সম্ভাব্য প্রকল্পগুলো মূল্যায়ন করবে। তারপর আইএসডিবি সেগুলোকে এগিয়ে নেয়ার জন্য বিবেচনা করবে।
আরও পড়ুন:দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৪ বিলিয়ন (দুই হাজার ৪০০ কোটি) ডলার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা মঙ্গলবার এক ভিডিওবার্তায় বলেন, ‘সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ২৪.৩ বিলিয়ন ডলার। এটি আইএমএফের বিপিএম-৬ ক্যালকুলেশন স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার।’
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের বিপিএম-৬ পরিমাপ অনুযায়ী নেট রিজার্ভ হিসাব করা হয়। মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বিয়োগ করলে নেট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ পাওয়া যায়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক আইএমএফের ঋণ অনুমোদনের পর ২০২৩ সালের জুলাই থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করছে।
রিজার্ভের পরিমাণ বাড়ছে উল্লেখ করে মুখপাত্র শিখা বলেন, ‘রেমিট্যান্স বাড়ছে বলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস রোধ করা সম্ভব হচ্ছে। রিজার্ভে গত অর্থবছরের তুলনায় এই অর্থবছরে ৬০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগস্ট ও জুলাই মাসের প্রবৃদ্ধি একত্রে বিবেচনা করলে এটি প্রায় ৯০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। আন্তব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন সচল করা হয়েছে।
‘ব্যাংকগুলো চাইলে নিজেরা নিজেদের মধ্যে লেনদেন করতে পারে এবং বিনিময় হার হবে বাজারভিত্তিক।’
এ কর্মকর্তা বলেন, ‘বর্তমানে (এক) ডলারের দাম ১১৮ থেকে ১২০ টাকা। ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলারের দামের সাথে খোলা বাজারমূল্যের পার্থক্য এখন মাত্র ১ শতাংশেরও কম।’
শিখা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি সক্রিয় আন্তব্যাংক লেনদেন বজায় থাকলে বৈদেশিক মুদ্রার বাজার বা ডলারের দাম স্থিতিশীল হবে।’
আরও পড়ুন:পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে এক দিনের সরকারি ছুটি থাকায় সোমবার বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে।
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে।
বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রয়েছে বলে নিশ্চিত করেন ইমিগ্রেশন পুলিশের পরিদর্শক ওমর ফারুক মজুমদার।
বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ভারত থেকে পণ্যবোঝাই ৩০০ থেকে ৩৫০টি ট্রাক আসে। বাংলাদেশ থেকেও ২০০ ট্রাকেরও বেশি পণ্য যায় ভারতে।
শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচামালের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য আসে এ বন্দর দিয়ে। ভারত থেকে বাংলাদেশে আমদানি করা পণ্যের ৮০ ভাগই আসে বেনাপোল বন্দর দিয়ে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, ‘ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আজ সোমবার সরকারি ছুটির কারণে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ থাকবে বলে দুই দেশের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে পত্র বিনিময় হয়েছে।’
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের পুলিশ পরিদর্শক ওমর ফারুক মজুমদার জানান, ছুটিতে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও দুই দেশের মধ্যে যাত্রী চলাচল স্বাভাবিক আছে।
বেনাপোল চেকপোস্ট কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, ‘ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে ছুটি থাকায় আজ দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে বলে ওপারের বন্দর কর্তৃপক্ষ ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে আবার স্বাভাবিকভাবেই আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য