২০২০ সালের শেষ কর্মদিবসের দিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের অবস্থান ছিল ৫ হাজার ৪০২ পয়েন্ট। ঠিক এক বছর পর ২০২১ সালের শেষ কর্মদিবসে সূচকের অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৭৫৬ পয়েন্ট। পার্থক্য এক হাজার ৩৫৪ পয়েন্ট। উচ্ছ্বসিত হওয়ার কথা ছিল বিনিয়োগকারীদের, কিন্তু আসলে হয়েছে উল্টো।
অর্থবছরের শেষ তিন মাসে, সুনির্দিষ্টভাবে বললে গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া দর সংশোধনের এক মাস পর পতনে শেয়ারদর, সূচক, লেনদেনে ক্রমাগত অধোগতিতে হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে।
এই সময়ে আর্থিক ও পুঁজিবাজারে দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির মধ্যে দ্বন্দ্বের বিষয়টি সামনে আসার পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা, আস্থায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে, যে কারণে একটি বড় অংশই নিষ্ক্রিয় হয়ে লেনদেন থেকে দূরে থাকছেন।
অর্থবছরের প্রথমে তিন মাস আর শেষ আড়াই মাস বাদ দিলে বাকি সময় স্বপ্নের মতো দিন গেছে বিনিয়োগকারীদের। ২০১০ সালের মহাধসের পর এই প্রথম বাজারে দেখা দেয় আলোড়ন। হাজার হাজার বিনিয়োগকারীর বছরের পর বছরের লোকসানি বিও হিসাবগুলো মুনাফার মুখ দেখে। এক দশকের সবচেয়ে বেশি লেনদেন, ১১ বছরের সর্বোচ্চ সূচকও দেখেছেন বিনিয়োগকারীরা।
লেনদেন পৌনে ৩ হাজার কোটি টাকা ছুঁয়ে ফেলার পর তা ৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়াবে, এমন আশাবাদ করা হয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির পক্ষ থেকে। বলাবলি হচ্ছিল, সূচক ছাড়াবে ১০ হাজার পয়েন্ট।
২০২০ সালের মাঝামাঝিতে শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলামের নেতৃত্বে বিএসইসির নতুন কমিশন গঠনের পর থেকে ২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত এক দফা এবং ওই বছরের ৪ এপ্রিল থেকে ৩০ মে পর্যন্ত দ্বিতীয় দফা, এরপর ১ জুলাই থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তৃতীয় দফা উত্থানে সূচক ৭ হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়ে যায়।
কিন্তু এর পরের দিন থেকেই দেখা দেয় উল্টোচিত্র। সামনে আসে নানা বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির দ্বন্দ্বের বিষয়টি।
গত ৩০ নভেম্বর ও পরে ৭ ডিসেম্বর দুই পক্ষে দুইবার বৈঠকেও ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা গণনা বা এক্সপোজার লিমিটের গণনা বাজারমূল্যের বদলে ক্রয়মূল্যে হবে কি না, তা নিয়ে সিদ্ধান্তে আসা যায়নি। বন্ডে বিনিয়োগ ব্যাংকের বিনিয়োগসীমার বাইরে রাখতে বিএসইসির অনুরোধ রাখেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
৭ ডিসেম্বরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষে জানানো হয়েছিল, ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আবার বৈঠক শেষে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা আসবে। কিন্তু ডিসেম্বরে বৈঠক হয়নি। আর আগামী সপ্তাহে হবে কি না, সেই নিশ্চয়তাও পাওয়া যায়নি।
অর্থবছরের শেষ দিন বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ২৫ পয়েন্ট। এর মধ্যে ২০ পয়েন্টই বেড়েছে শেষ ৩৩ মিনিটে।
আগের দিন দিনের ধারাবাহিকতায় সকাল ১০টায় লেনদেন শুরু হয় সূচক বাড়ার মধ্য দিয়ে। সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে আগের দিনের চেয়ে ৫১ পয়েন্ট সূচক বেড়ে বছরের শেষ দিনটা ভালো যাওয়ার ইঙ্গিতই দেয় পুঁজিবাজার।
তবে গত প্রায় তিন মাস ধরে যে চিত্র, সেটি আবার দেখা দেয়, শুরুতে সূচক বাড়লেও পরে কমে যায়। বেলা ১টা ৫৭ মিনিটে সূচকের অবস্থান আগের দিনের চেয়ে বেশি ছিল ৫ পয়েন্ট। এর আগের ২০ মিনিটে সূচক আর এর আগের ২০ মিনিটে সূচক কমে ১৯ পয়েন্ট।
তবে শেষ দিনের শেষ আধা ঘণ্টায় এরপর থেকে শেয়ারদর বাড়তে থাকে, সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে সূচক। লেনদেনও গতি পায় এই সময়টায়।
লেনদেনও হয়েছে ১১ কর্মদিবসের সর্বোচ্চ। গত ১৪ ডিসেম্বর লেনদেন ছিল এক হাজার ৮০ কোটি ৭৯ লাখ ৭০ হাজার টাকা। বছরের শেষ কর্মদিবসে তা হলো ৯২১ কোটি ৫৩ লাখ ১৯ হাজার টাকা।
দিন শেষে বেড়েছে ১৭৮টি কোম্পানির দর, কমেছে ১৪৯টির। অপরিবর্তিত ছিল ৫০টি কোম্পানির দর।
চলতি বছরের প্রথম দিনের মতো শেষ দিনেও সবচেয়ে বেশি ভালো করেছে বিমা খাত। প্রায় ছয় মাস ধরে মন্দাভাব কাটিয়ে সম্প্রতি এই খাতটি আবার ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছে।
হঠাৎ করেই চাঙা হয়ে ওঠা কাগজ ও প্রকাশনা খাতেও গেছে ভালো দিন। টেলিকমিউনিকেশন ও ভ্রমণ খাতেও সব কোম্পানির দর বেড়েছে।
অন্য প্রধান খাতগুলোর মধ্যে ব্যাংক, ওষুধ ও রসায়ন, প্রকৌশল, আর্থিক, খাদ্য খাতে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা।
অন্যদিকে বস্ত্র ও বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতে কমেছে বেশির ভাগ শেয়ার।
শেয়ারদরে চাঙাভাবের মতো লেনদেনেও সেরা ছিল বিমা। এরপর ৬ কোম্পানি নিয়ে কাগজ খাত। তৃতীয় অবস্থানে আলোচিত কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেডকে নিয়ে গঠিত বিবিধ, এরপর ব্যাংক ও পঞ্চম স্থানে ওষুধ ও রসায়ন খাত।
সূচক বাড়িয়েছে যেসব কোম্পানি
এই তালিকার শুরুতেই ছিল রাষ্ট্রায়াত্ত কোম্পানি আইসিবি। কোম্পানিটির দর ৫.৬৩ শতাংশ বাড়ায় সূচকে যোগ হয়েছে ৬.২৪ পয়েন্ট।
দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল গ্রামীণ ফোন, যার দর ০.৩২ শতাংশ বাড়ায় সূচকে যোগ হয়েছে ১.৭৪ পয়েন্ট।
তৃতীয় অবস্থানে ছিল ব্র্যাক ব্যাংক, যার দর ১.৮৪ পয়েন্ট বাড়ায় সূচকে যোগ হয়েছে ১.৬৩ পয়েন্ট।
ইউনিলিভার, ব্যাংক এশিয়া, ইস্টার্ন ব্যাংক, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, বাটা শু, ওয়ালটন ও একমি ল্যাবরেটরিজ সূচকে সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট যোগ করা ১০ কোম্পানির তালিকায়।
এই ১০ কোম্পানি সূচকে যোগ করেছে মোট ১৬.৫২ পয়েন্ট।
বিপরীতে ৫ শতাংশ দর হারানো সাউথবাংলা ব্যাংকের কারণে সূচক থেকে কমেছে ০.৭৪ পয়েন্ট। ০.৪২ শতাংশ দর হারানো লাফার্জ হোলসিম সিমেন্টের কারণে সূচক কমেছে ০.৪১ পয়েন্ট।
আইএফআইসি ব্যাংক, মেরিকো, বিএনআইসিএল, এনআরবিসি, ট্রাস্ট ব্যাংক, এশিয়ার ইন্স্যুরেন্স, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও ওরিয়ন ফার্মার কারণেও সূচক কমেছে।
তবে এই ১০টি কোম্পানি মিলিয়েও সূচক খুব বেশি টেনে ধরতে পারেনি।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকা
বছরের শেষ কর্মদিবসে সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ দর বেড়েছে আরএমআরএম স্টিলের। কোম্পানির শেয়ার দর ২১ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২৩ টাকা ১০ পয়সা।
দ্বিতীয় অবস্থানে পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৯৯ শতাংশ। ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকায় হাতবদল হয়েছে ৮৭ হাজার ৭৬৭টি শেয়ার।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা মনোস্পুল পেপারের দর বেড়েছে ৯.৯০ শতাংশ। ১ কোটি ৫ লাখ টাকায় ৫৬ হাজার ২৩১টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
বেশ কিছুদিন পর এই তালিকায় একটি মিউচ্যুয়াল ফান্ড দেখা গেল। রিলায়েন্স ওয়ান ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ন্ডের দর বেড়েছে ৭.৪০ শতাংশ। জীবন বিমা কোম্পানি ফারইস্ট ইসলামী লাইফের দর বেড়েছে ৭.১৮ শতাংশ।
এর পরের চারটি কোম্পানির দর বেড়েছে ছয় শতাংশের বেশি। এর মধ্যে বাটা সুর দর বেড়েছে ৬.২২ শতাংশ, ন্যাশনাল টিউবের ৬.১৭ শতাংশ, আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ৬.১২ শতাংশ এবং আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের ৬.০৯ শতাংশ।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় দশম কোম্পানিটি হলো মাইডাস ফাইন্যান্স, যার দর বেড়েছে ৫.৯৫ শতাংশ।
আরও ৪টি কোম্পানির দর ৫ শতাংশের বেশি, ১১টি কোম্পানি দর ৪ শতাংশের বেশি, ১৪টির দর ৩ শতাংশের বেশি, ২১টির দর ২ শতাংশের বেশি, ৫৪টির দর বেড়েছে এক শতাংশের বেশি।
দরপতনের ১০ কোম্পানি
বছরের শেষ কর্মদিবসে সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছে সাউথবাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক। ৫ শতাংশ দর হারিয়ে দাম ১৬ টাকা থেকে কমে হয়েছে ১৫ টাকা ২০ পয়সা। ২ কোটি টাকা লেনদেন হওয়া কোম্পানিটির হাতবদল হয়েছে মোট ১৩ লাখ ২৩ হাজার ৬৬৮টি শেয়ার।
চলতি বছর তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটির শেয়ারদর সর্বোচ্চ ২৮ টাকা ১০ পয়সায় উঠেছিল। অর্থাৎ সর্বোচ্চ এই দর থেকে এখনকার দর প্রায় ৫০ শতাংশ কম।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের দর কমেছে ৪.৮৯ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে থাকা ফাইন ফুডস ৪.১৮ শতাংশ এবং চতুর্থ অবস্থানে থাকা এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের দর কমেছে ৪.১৬ শতাংশ।
তিন শতাংশের বেশি শেয়ার দর বেড়েছে তিনটি কোম্পানির। এর মধ্যে হামিদ ফেব্রিক্সের ৩.৭৫ শতাংশ, অ্যাপোলো ইস্পাতের ৩.৪৪ শতাংশ ও ফু ওয়াং ফুডের ৩.১৬ শতাংশ দর হারিয়েছে।
এ ছাড়া ফার্স্ট ফাইন্যান্সের দর ২.৮৯ শতাংশ, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের ২.৩৩ শতাংশ ও কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের দর ২.৩২ শতাংশ কমেছে।
অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১০টি কোম্পানি ২ শতাংশের বেশি, ৫৬টি কোম্পানির দর এক শতাংশের বেশি কমেছে।
লেনদেনে শীর্ষ ১০
এদিক সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে কাগজ ও প্রকাশনা খাতের সোনালী পেপারের শেয়ার। ১১১ কোটি ৯০ লাখ টাকার মোট ১১ লাখ ৭৬ হাজার ৭৮৫টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৩.২৭ শতাংশ।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বিমা খাতের এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকার। হাতবদল হয়েছে ৩৮ লাখ ৬৫ হাজার ৩৫৭টি শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার দর ৪.১৭ শতাংশ বা ৫ টাকা কমেছে।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা বিবিধ খাতের বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার দর বেড়েছে ১.১৩ শতাংশ। কোম্পানির শেয়ার দরে যোগ হয়েছে ৮০ পয়সা। ৩৯ কোটি ১৩ লাখ টাকায় ৫৪ লাখ ৫ হাজার ৭২১টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
চতুর্থ অবস্থানে থাকা জেনেক্স ইনফোসিসে লেনদেন হয়েছে ৩৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। শেয়ার হাতবদল হয়েছে ২০ লাখ ৮৮ হাজার ৪৭৭টি।
আলোচিত কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। শেয়ার হাতবদল হয়েছে ২২ লাখ ৭১ হাজার ৪২৭টি।
এছাড়া ১০ থেকে ২০ কোটি টাকার মধ্যে লেনদেন হয়েছে ১১টি কোম্পানির।
এর মধ্যে ডেল্টা লাইফের ১৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানিতে ১৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা, ফরচুন সুজে ১৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে।
পিপলস ইন্স্যুরেন্স, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, হোটেল পেনিনসুলা, আইএফআইসি ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, বেক্সিমকো ফার্মা, লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ, পাওয়ারগ্রিডেও লেনদেন ১০ কোটি টাকার বেশি হয়েছে।
আরও পড়ুন:পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
মন্তব্য