চতুর্থ ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অন্যতম ঘাঁটি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ৯ ইউনিয়নে হেরেছেন নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। নৌকা জিতেছে মাত্র এক ইউপিতে।
দলের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের এমন হারের পর উঠেছে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের অভিযোগ। বুধবার নৌকার পরাজিত পাঁচ প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলনে ফের উঠে এসেছে সেই অভিযোগ। হারের জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদেরই দুষেছেন তারা।
পৌর সদরের ওয়াপদা মোড়ে কাজী হারুন শপিং কমপ্লেক্সে বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনটি করেন ওই প্রার্থীরা।
সেখানে বক্তব্য দেন নৌকার পরাজিত প্রার্থী চতুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খন্দকার আবুল বাশার, রূপাপাত ইউনিয়নের জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি মহব্বত আলী, ময়না ইউনিয়নের জেলা মৎস্যজীবী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পলাশ বিশ্বাস, দাদপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ সাজ্জাদুর রহমান হাই ও বোয়ালমারী সদর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল ওহাব মোল্যা।
পরাজিত ওই পাঁচ প্রার্থীর অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউপি নির্বাচনে তাদের মনোনয়ন দেয়ার পর পরই তারা উপজেলা আওয়ামী লীগ ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
এরপর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এম এম মোশাররফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মীরদাহ পিকুল নির্বাচনি সভা-সমাবেশ করলেও বিভিন্ন ইউনিয়নে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরানোর তেমন কোনো ব্যবস্থা নেননি। এতেই নৌকার ভরাডুবি হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বোয়ালমারী সদর ইউনিয়নে নৌকার পরাজিত প্রার্থী আবদুল ওহাব মোল্যা অভিযোগ করেন, তার ইউপিতে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের প্রার্থী ছিলেন ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল হক শেখ।
এ জন্য বারবার বলার পরও উপজেলা আওয়ামী লীগের ওই দুই নেতা আব্দুল হককে বসানোর কোনো চেষ্টা করেননি। তাকেও নির্বাচনে সার্বিক সহযোগিতা করেননি। শুধু কয়েকবার নির্বাচনি সভা-সমাবেশ করে দিয়েছেন।
চতুল ইউনিয়নের প্রার্থী খন্দকার আবুল বাশারের অভিযোগ, চতুল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকা ভোট পেয়েছে পাঁচটি। অথচ ওই কেন্দ্রের পাশে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাজাহান মীরদাহ ও সহসভাপতি মলয় বোসের বাড়ি।
এ ছাড়া ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. জালাল সিকদারসহ কোনো ওয়ার্ডের নেতাকর্মীই নৌকার পক্ষে ভোট চাননি। তারা বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলামের চশমা প্রতীকের পক্ষে কাজ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘তাদের কোনোরূপ সহযোগিতা আমি পাইনি। ওয়ার্ড কমিটির সদস্য সংখ্যা ৫১ জন। অথচ ওই সব ইউনিয়নের বিভিন্ন কেন্দ্রে নৌকার ভোট দুই অঙ্ক স্পর্শ করেনি। আমরা পরাজিত ৯ প্রার্থী এ বিষয়গুলো জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে লিখিত অভিযোগ করব।’
রূপাপাত ইউনিয়নের প্রার্থী মাহব্বত আলী বলেন, ‘ইউনিয়নের সভাপতি কোবাদ হোসেন মোল্যা আমার পক্ষে কাজ না করে পাশের ইউনিয়নের চায়ের দোকানে বসে থাকতেন। আর তার ছেলে শহিদুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু মোল্যার ছেলে মিজানুর রহমান সোনার পক্ষে কাজ করেছেন।’
ময়না ইউনিয়নে নৌকার পরাজিত প্রার্থী পলাশ বিশ্বাসের অভিযোগ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির মো. সেলিম, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক আবুল খায়ের, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা পরিষদ সদস্য আবু জাফর সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের প্রথম থেকে তারা আমাকে সহযোগিতা করেননি। পরে ওপরে ওপরে নৌকার ভোট চাইলেও ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা প্রতীকের পক্ষে কাজ করে নৌকাকে হারিয়ে দিয়েছেন।’
মনোনয়ন বাণিজ্য নিয়ে এ প্রার্থী বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে কি টাকা দিয়ে কেনা যায়? যায় না। জননেত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূলের কর্মী হিসেবে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন।’
দাদপুর ইউনিয়নের প্রার্থী শেখ সাজ্জাদুর রহমানের অভিযোগ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, সদস্য আবদুর রহমান মিটিং-মিছিলে থেকেও ভেতরে ভেতরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে নৌকাকে হারিয়েছেন।
পরাজিত প্রার্থীদের এসব অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মীরদাহ পিকুল।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ইউনিয়নে বিদ্রোহীদের চিঠি দিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। পরে ৯ জনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে এবং চূড়ান্ত বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
‘এমনকি নির্বাচনের কয়েক দিন আগে ময়না ইউনিয়নে বিদ্রোহীরা সরে দাঁড়ালেও ভেতরে ভেতরে নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এসব নেতাকে চিহ্নিত করে কেন্দ্রের কাছে শৃঙ্খলাভঙ্গের সাজা দেয়ার জন্য সুপারিশ পাঠানো হবে।’
আরও পড়ুন:গাইবান্ধায় ভাঙারির দোকানে চুরি করা রেলপাত (রেললাইন) বিক্রির সময় এক অটোচালকসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এসময় দোকান মালিক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের ব্রিজ রোড এলাকার আশা ভাঙারি দোকানে সরকারি এসব রেলপাত বিক্রির সময় তাদের হাতেনাতে আটক করে গাইবান্ধার রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি)।
এ সময় চুরি করে বিক্রি করতে নিয়ে আসা রেলপাত এবং সেসব পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি অটোরিকশাও জব্দ করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- সদর উপজেলার পশ্চিম দুর্গাপুর এলাকার ৩০ বছর বয়সী সাগর মিয়া, ফুলছড়ি উপজেলার উত্তর কঞ্চিপাড়া এলাকার ৪০ বছর বয়সী ওয়াহেদ মিয়া ও আশা ভাঙারি দোকানের শ্রমিক সদর উপজেলার বালুয়া বাজারের পাকারখুটি এলাকার ৩৩ বছর বয়সী মোকলেছুর রহমান। এদের মধ্যে ওয়াহেদ মিয়ার অটোরিকশায় এসব মালামাল পরিবহন করা হয়েছিল।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বোনারপাড়া রেলওয়ে পুলিশের ওসি খাইরুল ইসলাম তালুকদার।
তিনি বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের ব্রিজ রোডের একটি ভাঙারির দোকানে সরকারি রেলপাত অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয়কালে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় দোকান মালিক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘এ সময় তাদের কাছ থেকে খণ্ড খণ্ড তিন ফুট দৈর্ঘ্যের ৯ টুকরা রেললাইনের পাত উদ্ধার করা হয়, যা সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দেয়া হবে।’
রেলপাতগুলো বালাসিঘাটের পরিত্যক্ত রেলপথ থেকে খুলে আনা হয়েছে বলে জানান রেলওয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এ সময় এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আটককৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পদ অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া এদের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তাও খতিয়ে দেখবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।’
নাটোরের সিংড়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ ও মারধরের অভিযোগে অপর প্রার্থী মো. লুৎফুল হাবিবকে তলব করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান বৃহস্পাতবার অভিযুক্তকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছেন।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের ৮ মে অনুষ্ঠেয় নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক দেলোয়ার হোসেন ও তার ভাইসহ তিনজনকে অপহরণের সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এ ঘটনায় আপনি লুৎফুল হাবীবকে দায়ী করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে বর্ণিত বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা থেকে প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। এছাড়া সব জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সচিত্র বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে।
উল্লেখিত প্রতিবেদন ও পত্রিকান্তে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা প্রমাণ হয়েছে। এরূপ ঘটনার জন্য কেন আপনার প্রার্থিতা বাতিল অথবা আপনার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সে বিষয়ে লিখিত জবাবসহ নির্বাচন কমিশনে ২২ এপ্রিল সোমবার বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর নাটোর জেলা নির্বাচন অফিসে গেলে দেলোয়ার হোসেনকে গাড়িতে তুলে নিয়ে আহত অবস্থায় তাকে তার বাড়ির পাশে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা।
ভুক্তভোগী প্রার্থীর পরিবার এ ঘটনার জন্য আরেক প্রার্থী লুৎফুল হাবীব রুবেল ও তার সমর্থকদের দায়ী করেছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল হাবীব তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক। দেলোয়ার হোসেন মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে লুৎফুল হাবীব ছিলেন একক প্রার্থী।
আরও পড়ুন:অপহরণের ৬ ঘণ্টার মধ্যে সিরাজগঞ্জ থেকে তামিম হোসেন নামের ৭ বছরের এক শিশুকে উদ্ধার করেছে র্যাব। এ সময় এ মামলার আসামি আল-আমিন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ভোরে বেলকুচি উপজেলার চন্দনগাতী গ্রাম থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে র্যাব ১২-এর একটি দল। বুধবার দুপুর তিনটার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলার হানুরবাড়াদি গ্রাম থেকে তাকে অপহরণ করা হয়।
অপহৃত তামিম হোসেন চুয়াডাঙ্গার হানুরবাড়াদি গ্রামের মো. সুন্নত আলীর ছেলে। অপরদিকে গ্রেপ্তার হওয়া ২৯ বছর বয়সী আল-আমিন কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানায় মেষতলী বাজারের বাসিন্দা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব ১২-এর অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মারুফ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, অপহরণের পর শিশুটির বাবা সুন্নত আলী চুয়াডাঙ্গা থানায় মামলা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিষয়টি র্যাবকে জানালে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামির অবস্থান নির্ণয় করা হয়। পরে অভিযান চালিয়ে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, তামিমের বাবার সঙ্গে আল আমিনের দুই মাস আগে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়েই সুকৌশলে তামিমকে অপহরণ করা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মুক্তিপণের জন্যই শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছিল।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় হস্তান্তর করার আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বৃহস্পতিবার সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ১১ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরের কোয়ার্টার গার্ড পরিদর্শন শেষে বিজিবি কার্যালয় পরিদর্শন করেন। দুপুরে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া প্রতিবেশী দেশটির জান্তা বাহিনীর সদস্যদের খোঁজখবর নেন তিনি।
পরে তিনি ১১ বিজিবির অধীন চাকঢালা বিওপি (বর্ডার অবজারবেশন পোস্ট) পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি মিয়ানমার থেকে জান্তা বাহিনীর সদস্যদের পালিয়ে আসার স্পটগুলো সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। সীমান্তে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেন।
পরিদর্শনকালে বিজিবি মহাপরিচালকের সঙ্গে ছিলেন কক্সবাজার রিজিয়ন কমন্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোরশেদ আলমসহ বিজিবি রামুর সেক্টর ও অধীনস্ত বিজিবি ব্যাটালিয়নে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি’র জোন কমন্ডার ও অধিনায়ক লে. কর্নেল সাহল আহমদ এসিসহ বিজিবির কর্মকর্তারা।
বান্দরবানে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ৫৩জনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। রুমা থানার দুটি মামলায় বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি এক নারীকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদসহ মামলায় ৫৭জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বান্দরবান সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নাজমুল হোছাইন বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
আদালতে আসামি পক্ষে একাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। আইনজীবীরা জানান, রুমা থানার জিআর মামলা নং- ৪ ও ৭ মামলায় পুলিশ আসামিদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ৫৩জনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এর মধ্যে ৫২জনকে দু’দিন করে রিমান্ড এবং একজনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়া হয়।
এর আগে বান্দরবান জেলা কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তায় ১৮জন নারী ও ৩৯জন পুরুষ বন্দিকে দুটি গাড়িতে করে আদালতে হাজির করা হয়। সম্প্রতি বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে লুটের ঘটনায় তাদেরকে রুমা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে বান্দরবানে চলমান যৌথ অভিযানে সন্দেহভাজন আরও একজনকে আটক করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৬৬জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গায় গত দুই দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। জেলায় বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটার দিকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক চার ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এমন বাস্তবতায় হিট অ্যালার্ট জারি করেছে জেলা প্রশাসন।
টানা দাবদাহে অতিষ্ঠ সীমান্তবর্তী জেলাটির মানুষ। হাসপাতালে বাড়ছে গরমজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা।
তীব্র দাবদাহে হিট অ্যালার্ট জারি করে জেলা প্রশাসনের ভাষ্য, খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে।
জেলায় দিনের বেশির ভাগ সময় তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে। এতে কম আয়ের শ্রমজীবী মানুষরা পড়েছেন চরম বিপাকে। নির্মাণশ্রমিক, কৃষিশ্রমিক, ইজিবাইকচালক ও ভ্যান-রিকশাচালকদের গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে। হতাশ হতে দেখা গেছে তাদের।
প্রয়োজনের তাগিদে ঘর থেকে বেরিয়েও কাজ করতে পারছেন না অনেকে।
দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ড এলাকার ভ্যানচালক আবদুর রহিম বলেন, ‘যে তাপ পড়চি, তাতে বাইরি বের হওয়া যাচ্চি না। তাপে হাত-পা জ্বালাপুড়া করচি। ছায়ায় গিয়িও শান্তি নেই।’
আবহাওয়া অফিসের চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘তীব্র দাবদাহ আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে, তবে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।’
আরও পড়ুন:মাদারীপুরের কালকিনিতে এক কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে তিনজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
ওই কলেজছাত্রীর মা এ মামলা করেন বলে বৃহস্পতিবার সকালে জানিয়েছে থানা পুলিশ।
মামলার প্রধান আসামি ও তার পরিবারের সদস্যরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন।
স্থানীয়, পুলিশ ও কলেজছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার একটি গ্রামের নাজমুছ সাকিবের সঙ্গে একই এলাকার কলেজছাত্রীর প্রায় দুই বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এর জেরে গত শুক্রবার রাতে ওই কলেজছাত্রীকে তার বসতঘরে একা পেয়ে ধর্ষণ করেন নাজমুছ সাকিব।
এ ঘটনা জানতে পেরে স্থানীয় লোকজন সালিশ করে নাজমুছ সাকিবকে জিজ্ঞাসা করলে ওই কলেজছাত্রীকে বিয়ে করবেন বলে তিনি আশ্বাস দেন, কিন্তু সালিশের বেশ কয়েক দিন পার হলেও ওই কলেজছাত্রীকে বিয়ে না করে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান সাকিব।
পরে কলেজছাত্রীর মা বাদী হয়ে নাজমুছ সাকিবসহ তার পরিবারের তিনজনকে আসামি করে আদালতে ধর্ষণের মামলা করেন। এর প্রেক্ষাপটে থানা পুলিশ ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে চিকিৎসা পরীক্ষার জন্য সদর হাসপাতালে পাঠায়।
মামলার বাদী কলেজছাত্রীর মা বলেন, ‘আমার মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ধর্ষণ করেছে নাজমুছ সাকিব, কিন্তু এখন আমার মেয়েকে বিয়ে করতে চায় না বলে ধর্ষণকারীসহ তার পরিবারের তিনজনের নামে আমি মামলা করেছি। আমি এর বিচার চাই।’
বিষয়টি জানার জন্য অভিযুক্ত পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের এলাকায় পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘এই ঘটনা জানতে পেরে আমরা নাজমুছ সাকিবকে জিজ্ঞেস করলে ওই কলেজছাত্রীকে বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দেয়, কিন্তু ঘটনার বেশ কয়েক দিন পার হলেও ওই কলেজছাত্রীকে বিয়ে না করে ধর্ষণকারী ও তার পরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়, তবে ওই যুবকের বিরুদ্ধে এই ধরনের ঘটনা আরও আছে।’
কালকিনি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, ‘কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় আদালতে একটি মামলা হয়েছে। পরে ওই ছাত্রীকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং আসামিকে গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য