বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা নিয়ে সিলেট-৬ সংসদীয় আসন। টানা তিন মেয়াদে এই আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ। গত দুই মেয়াদে শিক্ষামন্ত্রীও ছিলেন তিনি।
সংসদ নির্বাচনগুলোর ভোটের হিসাব সাক্ষ্য দেয়, বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জে আওয়ামী লীগের শক্ত অবস্থান রয়েছে। তবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র।
সদ্যসমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এই দুই এলাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের ভরাডুবি ঘটেছে।
গত রোববার সিলেটের এই দুই উপজেলার ২০টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ হয়। এর মধ্যে মাত্র সাতটিতে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। বাকি ১৩ ইউপির মধ্যে তিনটিতে জামানত হারিয়েছেন নৌকার প্রার্থী। অন্যদিকে চারটি ইউনিয়নে জয়ী হয়েছেন জামায়াতের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।
চলমান ইউপি নির্বাচনে আগের তিন দফায় এতসংখ্যক জামায়াত নেতা সিলেটের কোথাও বিজয়ী হতে পারেননি।
অনেক ইউনিয়নে জামায়াতের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়তে পারেননি আওয়ামী লীগের প্রার্থী। গোলাপগঞ্জের ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন জামায়াত নেতা এম আব্দুর রহিম। এ ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী নজরুল ইসলাম ৪৭৮ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন।
দীর্ঘদিন ধরেই দেশের রাজনীতিতে কোণঠাসা যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামী। প্রকাশ্যে তেমন কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রমও নেই। নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারিয়ে দল হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগও হারিয়েছে দলটি। এমন পরিস্থিতিতে কী করে চারটি ইউনিয়নে জয়ী হলেন জামায়াত নেতারা?
গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজনের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ ও গোষ্ঠীভিত্তিক দ্বন্দ্বের কারণে এখানে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে জামায়াত। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেক নেতাও জামায়াতকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছেন- এমন অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় অনেকে বলছেন, প্রকাশ্যে তেমন কোনো তৎপরতা না থাকলেও গ্রামগঞ্জে নানা কৌশলে সংগঠিত হচ্ছে জামায়াত। অন্য দলগুলোর রাজনৈতিব কার্যক্রম খুব একটা না থাকার সুযোগে তৃণমূলে শক্তি সঞ্চয় করছে ধর্মভিত্তিক দলটি।
ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ে ভুল ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের থামাতে না পারার খেসারতও আওয়ামী লীগকে দিতে হয়েছে বলে মনে করেন তারা।
তবে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান ইউপি নির্বাচনের এই ফলকে সন্তোষজনক বলেই মনে করেন।
তিনি বলেন, ‘২০টি ইউনিয়নের মধ্যে সাতটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং পাঁচটিতে বিদ্রোহীরা জয়ী হয়েছেন। সে হিসাবে ১২টি ইউপিতেই কিন্তু আমাদের লোকেরা জিতেছেন।
‘যেসব ইউনিয়নে জামায়াত প্রার্থীরা জিতেছেন সেগুলোয় ‘এন্টি-আওয়ামী ভোট’ সব এক হয়ে গিয়েছিল। বিএনপিসহ প্রতিক্রিয়াশীল সব ভোট তারা পেয়েছে। ফলে এককভাবে জামায়াত জিতেছে এটা বলা যাবে না।
আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব
গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরেই একাধিক ভাগে বিভক্ত। স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) নুরুল ইসলাম নাহিদ আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীও ছিলেন। টানা তিন মেয়াদের এমপিও তিনি। তবে এলাকায় তার অবস্থান অনেকটাই নড়বড়ে।
নাহিদ মন্ত্রী থাকার সময়েই গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার আওয়ামী লীগে বিভক্তি দেখা দেয়। গত সংসদ নির্বাচনেও এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন কানাডা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সিলেটের প্রভাবশালী নেতা সারোয়ার হোসেন।
এই এলাকায় আওয়ামী লীগ নাহিদ ও সারোয়ার গ্রুপে বিভক্ত। এ ছাড়া আছে উপদলীয় কোন্দল। বিয়ানীবাজার উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আবুল কাশেম পল্লব নাহিদ বিরোধী বলয়ের নেতা হিসেবে পরিচিত। গোলাপগঞ্জেও রয়েছে এমন উপদলীয় কোন্দল। ইউপি নির্বাচনে এই কোন্দলের প্রভাব পড়েছে।
গোলাপগঞ্জের এক স্কুলশিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এখানে আওয়ামী লীগ বহু ধারায় বিভক্ত। নিজেদের গ্রুপ ভারী করতে অনেক নেতা জামায়াতকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে থাকেন। ফলে এই দুই উপজেলা জামায়াতের শক্ত ঘাঁটি হয়ে উঠেছে।
গোলাপগঞ্জের লক্ষণাবন্দ ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী ছিলেন আব্দুল করিম খান। নির্বাচনে ২৩ হাজার ভোটের মধ্যে সাকল্যে তিনি পেয়েছেন ১৩৯ ভোট। স্বভাবতই হারিয়েছেন জামানত।
এই শোচনীয় পরাজয়ের জন্য দলের কোন্দলকে দায়ী করে আব্দুল করিম খান বলেন, ‘দলের বেশির ভাগ নেতাকর্মী আমার সঙ্গে ছিল না। যারা ছিল তারা শুধু লোক দেখানোর জন্য ছিল। দলের নেতাকর্মী আমার সঙ্গে থাকলে জয়ী না হলেও সম্মানজনক সংখ্যার ভোট পেতাম।
সিলেট জেলা যুবলীগ নেতা ও গোলাপগঞ্জ আমুড়া এলাকার বাসিন্দা ফজলুর রহমান জসিম বলেন, ‘অনেক জায়গায় দলের বিরোধের কারণেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী হেরেছেন। দুই উপজেলায়ই আওয়ামী লীগে কোন্দল রয়েছে। কিছু ইউনিয়নে প্রার্থী বাছাইয়েও ভুল ছিল।’
গোলাপগঞ্জ আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি লুৎফুর রহমান বলেন, ‘দলীয় প্রতীকে না হলেও উপজেলায় বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীরা তাদের প্রার্থীর পক্ষে ব্যাপক সক্রিয় ছিলেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা দলীয় প্রার্থীর ক্ষতি করেছেন। দলেও বিভক্তি রয়েছে। এসবের প্রভাব পড়েছে ভোটের ফলে।
গোষ্ঠীভিত্তিক দ্বন্দ্ব
গত জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত গোলাপগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে প্রার্থী দেয়া হয় পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রুহেল আহমদকে। সেবার দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন এই পৌরসভার সাবেক দুই মেয়র উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া আহমদ ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. আমিনুল ইসলাম। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হন তারা। নির্বাচনে হারতে হয় নৌকার প্রার্থীকে।
স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, গোলাপগঞ্জ আওয়ামী লীগে দলীয় কোন্দলের চেয়েও গোষ্ঠীভিত্তিক দ্বন্দ্ব প্রবল। এখানে চৌধুরী, তালকুদার ও কিরান- এই তিন গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব রয়েছে। রাবেল, পাপলু ও রুহেল এই তিন গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আর সেই দ্বন্দ্বের জের ধরেই মেয়র পদে প্রার্থী হন তারা তিনজন।
একই ধরনের গোষ্ঠীভিত্তিক দ্বন্দ্ব রয়েছে বিয়ানীবাজার উপজেলায়ও। এখানে যেকোনো নির্বাচনেই গোষ্ঠিভিত্তিক দ্বন্দ্ব আরও প্রবল হয়ে ওঠে। এবারের ইউপি নির্বাচনেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, নির্বাচন এলেই আওয়ামী লীগের ভোট গোষ্ঠীভিত্তিক ভাগ হয়ে যায়। আর এর সুযোগ নেয় জামায়াত।
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান নিউজবাংলাকে বলেন, এই দুই উপজেলায় আঞ্চলিকতা ও গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব প্রবল। আর এই দ্বন্দ্বের প্রভাব পড়ে ভোটে।
নাসির উদ্দিনেরও বাড়ি বিয়ানীবাজার উপজেলায়। নিজ এলাকার গোষ্ঠীভিত্তিক দ্বন্দ্ব কমিয়ে আনার চেষ্টা করছেন জানিয়ে এ নেতা বলেন, ‘আগের থেকে অনেকটা কমিয়ে এনেছি। তার পরও কিছুটা রয়ে গেছে। আর এখানকার ভোট যতটা আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের লড়াই; তারচেয়েও বেশি গোষ্ঠী ও এলাকাভিত্তিক লড়াই।’
প্রার্থী বাছাইয়ে ‘ভুল’
বিয়ানীবাজারের তিলপাড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এমাদ উদ্দিন ৯২০ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন। এ ইউনিয়নে ৩ হাজার ৫১৩ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপির সাবেক সহসম্পাদক মাহবুবুর রহমান।
তিলপাড়ায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন বিবেকানন্দ দাস। তা না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন তিনি। এই বিদ্রোহী ২ হাজার ৭২৬ ভোট পেয়ে মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলেন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, তৃণমূল থেকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে বিবেকানন্দ দাসের নামই প্রস্তাব করা হয়েছিল। তবে কেন্দ্র থেকে নৌকা দেয়া হয় এমাদ উদ্দিনকে। দুই উপজেলায় তৃণমূলের পছন্দের অন্তত পাঁচ প্রার্থী কেন্দ্রে গিয়ে ছিটকে পড়েন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নেতারা।
এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ড নানা কিছু হিসাব-নিকাশ করেই মনোনয়ন দেয়। দলের প্রতি কার কী অবদান, আগে কেউ বিদ্রোহী হয়েছিলেন কি না- এসব এবার বিবেচনা করা হয়েছে। ফলে তৃণমূলের ভোটে এগিয়ে থেকেও কেউ কেউ দলীয় মনোনয়ন পাননি।
আগে থেকেই জামায়াতের আস্তানা
গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার উপজেলায় দীর্ঘদিন থেকে জামায়াতের শক্ত অবস্থান রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় অনেকে। অন্য ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোরও ভোট রয়েছে এখানে।
২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে এই আসনে জেলা দক্ষিণ জামায়াতের আমির মাওলানা হাবিবুর রহমানকে প্রার্থী করেছিল চারদলীয় জোট। গত নির্বাচনেও ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন তিনি। শেষ মুহূর্তে নানা হিসাব-নিকাশে সেবার মনোনয়ন পাননি হাবিব।
এখানকার ধর্মভিত্তিক গোষ্টীর ভোট টানতে ২০০৬ সালের বাতিল হওয়া নির্বাচনে নুরুল ইসলাম নাহিদের বদলে খেলাফত মজলিশের নেতা প্রয়াত প্রিন্সিপাল হাবীবুর রহমানকে মনোনয়ন দিয়েছিল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট। লেখিকা তসলিমা নাসরিনের মাথার দাম ঘোষণা করে দেশব্যাপী আলোচনায় উঠে এসেছিলেন এই হাবীবুর রহমান।
বিয়ানীবাজারের স্থানীয় এক সাংবাদিক বলেন, উপজেলার মুড়িয়া ইউনিয়নে জামায়াতে ইসলামীর নেতা ফরিদ আল মামুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এ ইউনিয়নে দীর্ঘদিন ধরেই জামায়াত জিতে আসছে।
জেলা যুবলীগ নেতা ফজলুর রহমান জসিম বলেন, এখানকার কিছু এলাকা দীর্ঘদিন ধরেই জামায়াত-বিএনপির দখলে। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকেও তাদের এই দুর্গ ভাঙতে পারেনি আওয়ামী লীগ। ফলে আগামীতেও এসব ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা কম।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান বলেন, এখানকার অনেক ইউনিয়নে জামায়াত-বিএনপি আগে থেকেই শক্তিশালী। আমরা তাদের ভোটব্যাংকে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছি।
আরও পড়ুন:সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।
এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদকাসক্ত হয়ে মাতলামি করার প্রতিবাদ করায় ইয়াছিন (৩৮) ও সিপন( ৩২) নামে দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপরজনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মুড়াপাড়া টঙ্গীরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ইয়াছিন মুড়াপাড়ার হাউলিপাড়া এলাকার ইদু মিয়ার ছেলে এবং সিপন টঙ্গীরঘাট এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে ইয়াছিন তার স্ত্রীকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে খালাতো বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয় সোহরাব নামের এক যুবক মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করলে ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। পরে তিনি খালাতো ভাই সিপনকে নিয়ে স্থানীয় অহিদুল্লার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। সেখানেই সোহরাব ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ইয়াছিনের মাথায় ও সিপনের পায়ে গুলি লাগে।
তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইয়াছিনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
নোয়াখালীতে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক সচরতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশ গ্রহণের সমন্বিত পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বুধবার সকাল ১১ টার দিকে (২৫ জুন) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় তৃতীয় তলায় মিনি কনফারেন্স হলরুমে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন,নোয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইয়াসিন, গ্রাম আদালত নোয়াখালী ম্যানেজার আহসানুল্লাহ চৌধুরী মামুনসহ এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ,সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি বিচারাধীন মামলার নথি থেকে এজাহারের কপি রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে। আদালতের নথি থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই কাগজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে মামলার বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির ও আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুলকে শোকজ করেছেন বিচারক। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত ২২ জুন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে। ওই দিন মামলাটির (এসসি-১৬৬৯/২০১৮) সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ছিল। আদালতে আসামি, রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ও আসামিপক্ষের আইনজীবী—সবাই উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে বিচারক মো. সালেহুজ্জামান মামলার নথি পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পান, নথিতে মামলার এজাহারের কপি নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি জানান, সাক্ষ্য গ্রহণের আগে আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল তার কাছ থেকে নথি নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এজাহার দেখে প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে নিয়েছিলেন। এরপর তিনি আবার নথি বিচারকের কাছে জমা দেন।
এরপর এজলাসেই বিচারক আইনজীবীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারাসহ সিনিয়র আইনজীবীরা এজলাসে হাজির হন। একপর্যায় বিচারক ওই দুইজনকে শোকজ করে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিচারক এজলাসে ওঠার আগে আইনজীবী মামলার নথি নিয়েছিলেন। পরে ফেরত দেন। আমি নিজে নথিতে কোনো হেরফের করিনি। আইনজীবী কিংবা আইনজীবীর সহকারীর মাধ্যমে এই ঘটনা ঘটতে পারে।’
অন্যদিকে, আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল জানান, তিনি নথি নিয়েছিলেন ঠিকই, তবে বিচারক এজলাসে চলে আসায় তা যথাযথভাবে বেঞ্চ সহকারীর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি আসামির চালান কপি থেকে তথ্য নিয়েছেন। এজাহার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও দাবি করেন।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ গফুর বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। একজন আইনজীবী এমন কাজ করতে পারেন না। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি।’
আদালত ও আইনজীবী সমিতি সূত্র আরও জানায়, আদালতে থাকা মামলার মুল কপি থেকে মামলার এজাহারের কপি সরিয়ে নিয়ে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া এজাহার কপি হারিয়ে গেলেও মামলার বিচারের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ ওই মামলার এজাহারের ফটোকপি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির কাছে সংরক্ষিত থাকে। এর বাইরেও অনেক মাধ্যমে মামলার এজাহারের কপি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তবে, মুল নথিতে এজাহারের কপি না থাকাটা সমীচীন নয়। এ বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানায় সূত্র।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে মিজানুর রহমান রিপন (৪৮) নামের এক স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীকে মারধর ও লাঞ্চিতের ঘটনা ঘটেছে। মিজানুর রহমান রিপন ফিলিপনগর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে।
গত রবিবার সন্ধার দিকে দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ বাজারে এই ঘটনা ঘটে। মিজানুর রহমান রিপন ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আমর সংবাদ পত্রিকার দৌলতপুর উপজেলা প্রতিনিধি ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল ডেইলি নিউজ বাংলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে কাজ করে আসছেন। এঘটনায় ওই দিন রাতে ভূক্তভুগী নিজে বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন।
এযাহার সূত্রে জানাযায়, গত ৮ জুন উপজেলার তারাগুনিয়া থানার মোড় এলাকার তারাগুনিয়া ক্লিনিকে আখি খাতুন (২২) নামের এক প্রশুতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় তিনি সহ উপজেলার বেশ কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী সংবাদ প্রকাশ করে। তারি জের ধরে উপজেলা বাজারে থাকা সরকার নিষিদ্ধ ক্লিনিক বেবি নার্সিং হোম এর মালিক আহসান হাবিব কালুর ছোট ছেলে খালিদ হাসান আর্জু উপজেলা বাজারে তাকে মারধর করে।
এবিষয়ে মিজানুর রহমান নামের ওই গণমাধ্যম কর্মী বলেন, গতকাল বিকেলে আমি উপজেলা বাজারে বাড়ির দৈনন্দিন বাজার করছিলাম এসময় খালিদ হাসান আর্জু উপজেলা বাজারের বেবী ক্লিনিক মালিকের ছেলে আমার উপর হামলা চালায়। এসময় সে আমাকে বলে আমার হাসপাতালে যে ডাক্তার আসে সেই ডাক্তারের নামে তুরা নিউজ করেছিস বলে আমার উপর হামলা চালিয়ে বেদড়ক মারধর করে। এঘটনার পর আমি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
গণমাধ্যম কর্মীকে মারধরের বিষয়ে, দৌলতপুর উপজেলার একজন প্রবীন গণমাধ্যম কর্মী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে এটি কখনই কাম্য নয়। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেওয়া উচিৎ।
এঘটনায় দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নাজমুল হুদা জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
অভিযুক্ত খালিদ হাসান আর্জু
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী কর্তৃক ফেনী এলাকায় গত '২৪ এর ভয়াবহ বন্যা পরবর্তী বিভিন্ন উন্নয়নমূলক, সংস্কার ও পুর্নগঠন কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে।
সোমবার (২৩ জুন) সকাল ১১ টায় ফেনী ছাগলনাইয়া উপজেলার ঘোপাল ইউনিয়নের দুর্গাপুরে হাবিব উল্যাহ খাঁন উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ উপলক্ষে এক আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন, বিবিপি, ওএসপি, জিইউপি, এনএসডব্লিউসি, পিএসসি।
বিমান বাহিনী প্রধান ফেনী এলাকায় বন্যা পরবর্তী উন্নয়নমূলক সংস্কার ও পুর্নগঠন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন। হাবিব উল্যাহ খান উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে বৃক্ষরোপণ ও পরে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেন। উদ্বোধন উপলক্ষে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সহায়তায় ছাগলনাইয়া উপজেলার হাবিব উল্যাহ খান উচ্চ বিদ্যালয় এর নবনির্মিত শাহীন ভবন উদ্বোধন এবং দুর্গাপুর সিংহনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নুরুল কোরআন ইসলামিয়া মাদ্রাসার উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করেন।
এ ছাড়া বিমান বাহিনী কর্তৃক ফেনী জেলার বন্যা দুর্গতদের সহায়তায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম, বন্যা দুর্গতদের জন্য মেডিকেল সেবা পরিচালনা ও চিকিৎসা সেবা সহায়তা প্রদান কার্যক্রম পরিদর্শন ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন বিমান বাহিনী প্রধান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিমান বাহিনী প্রধান ফেনী জেলায় ২০২৪ সালের আকস্মিক বন্যাকালীন ও বন্যা পরবর্তী সময়ে বিমান বাহিনীর ভুমিকার ভূয়সী প্রসংশা করেন এবং পাশাপাশি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে যে সকল প্রতিষ্ঠান আর্থিক, ত্রাণ ও বিভিন্নভাবে সার্বিক সহায়তা প্রদান করেছেন তাদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি বিমান বাহিনীর উন্নয়ন কার্যক্রমে স্থানীয় প্রশাসন ও এলাকাবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতেও বিমান বাহিনী দেশ ও জনগণের পাশে থাকবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।
তিনি আরো বলেন, বন্যার সাথে তৎকালীন বৈরী আবহাওয়া ও বিছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী পেশাদারিত্বের সাথে বন্যার্তদের সাহায্যে এগিয়ে আসে, যা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং ছিল। এ পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা দিকনির্দেশনায় এবং বিমান বাহিনী প্রধানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ভয়াবহ এ বন্যাদুর্গত কুমিল্লা, নোয়াখালী এবং বিশেষ করে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ফেনী জেলায় হেলিকপ্টার ও ইউএভি এর মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে এরিয়াল রেকোনাইসেন্স মিশন পরিচালনা করে বন্যা দুর্গত মানুষের সহায়তায় প্রয়োজনীয় জরুরী উদ্ধার, ত্রাণ বিতরণ ও চিকিৎসা কার্যক্রমে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
বিমান বাহিনীর সূত্র জানায়, সামগ্রিকভাবে বিমান বাহিনী বন্যা পরবর্তী এ পুনর্বাসন কার্যক্রমের আওতায় ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া ও ফুলগাজী উপজেলার বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এতিমখানা, ধর্মীয় উপাসনালয় ও রাস্তা-ঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ এবং সংস্কার কার্যক্রম ইতিমধ্যে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া, দূর্গাপুর, ছাগলনাইয়্যা-এ অবস্থিত হাবিব উল্যাহ্ খান উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্রমবর্ধমান ছাত্র-ছাত্রী ও স্থানীয় জনসাধারণের চাহিদা বিবেচনা করতঃ শাহীন ভবন নামে একটি চারতলা ভিত বিশিষ্ট দুইতলা ভবন আসবাবপত্রসহ নির্মাণ করা হয়েছে, যেটি দুর্যোগকালীন সময়ে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহৃত হতে পারে। এ উন্নয়নমূলক কার্যক্রমগুলো মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন করেছে ঢাকাস্থ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বাশার ও বিমান বাহিনী ঘাঁটি একে খন্দকার।
অনুষ্ঠানে সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (প্রশাসন), বিমান ঘাঁটি বাশারের এয়ার অধিনায়ক, বিমান বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকতাবৃন্দ, ফেনী জেলা প্রশাসক, সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য