পুঁজিবাজার নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে বৈঠক থেকে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না আসার পর টানা দরপতনের মধ্যে প্রথমবারের মতো পর পর দুই দিন বাড়ল সূচক। কিছুটা বেড়েছে লেনদেনও। তবে তা এক হাজার কোটি টাকার নিচেই রয়ে গেছে।
বছর শেষ হতে বাকি আর তিন কর্মদিবস। এই অবস্থায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নতুন করে শেয়ার কেনা শুরু করেনি। বড় বিনিয়োগকারীরাও হাত গুটিয়ে বসে।
গত কয়েক সপ্তাহের ধারাবাহিকতায় এবারও সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার লেনদেন শুরু হয় বড় পতনের মধ্য দিয়ে। সেদিন ৭২ পয়েন্ট সূচক হারালেও সোমবার বাড়ে ৩৯ পয়েন্ট। সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবস মঙ্গলবার তা বাড়ে আরও ৭৩ পয়েন্ট।
নিঃসন্দেহে বাজারের এই চিত্র বিনিয়োগকারীদেরকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে।
রোববার লেনদেনের শুরুর পর শেষ পর্যন্ত সূচক ক্রমেই যেভাবে পড়েছিল, তার বিপরীত চিত্র দেখা গেল দুই দিন পর। লেনদেনের শুরুতে সূচক যতটা বাড়ে, বেলা বাড়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ে আরও বেশি। শেষ সময়ে উঠে আরও উচ্চতায়।
গত ৭ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকে নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বৈঠক শেষে জানানো হয়, ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির শুরুতে আবার বৈঠক করে দৃশ্যমান একটি ঘোষণা আসবে।
গত ১২ সেপ্টেম্বরের থেকে শুরু হওয়া দর সংশোধন এক মাস চলার পর শুরু হয় পতন। সে সময় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বিএসইসির মধ্যে মতভিন্নতার বিষয়টি সামনে আসে। বন্ডে বিনিয়োগ ব্যাংকের বিনিয়োগসীমার মধ্যে থাকবে কি না, পুঁজিবাজারের বিনিয়োগসীমা শেয়ারের ক্রয়মূল্যে না কি বাজার মূল্যে হবে- এ নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে দুই সংস্থা। সঙ্গে আরও বেশি কিছু ইস্যু চলে আসে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরেক আদেশ দিয়ে জানায়, ব্যাংকের ইস্যু করা পারপেচুয়াল বন্ড দিয়ে ব্যাসেল-থ্রি এর শর্ত পূরণ হবে না।
দুই সংস্থার মধ্যে এই মতবিরোধের বিষয়টি সামনে আসার পর পুঁজিবাজারে লেনদেন ও সূচক কমতে থাকে। এর মধ্যে গত ৩০ নভেম্বর দুই পক্ষের বৈঠকে ইতিবাচক সিদ্ধান্তে আসার কথা জানায় বিএসইসি। পরদিন সূচক দেয় লাফ। কিন্তু সেই রাতেই বাংলাদেশ ব্যাংক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ছড়ায় আতঙ্ক। পরদিন সকালে বড় পতনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় লেনদেন। সেদিনই অর্থ মন্ত্রণালয় দুই পক্ষকে বৈঠকে ডাকার বিষয়টি প্রকাশ পায়, আর এরপর হারানো সূচক পুনরুদ্ধার করে বড় বড় উত্থান।
কিন্তু মন্ত্রণালয়ের সেই বৈঠক শেষে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না আবার পর আবার শুরু হয় পতন। সোমবার পর্যন্ত ১৩ কর্মদিবসের মধ্যে তিন দিন কেবল সূচক বাড়ে। কমে বাকি ১০ দিন।
সেই বৈঠক শেষে গত ৯ ডিসেস্বর ৩২ পয়েন্ট আর ১৫ ডিসেম্বর ৩২ পয়েন্ট এবং ২১ ডিসেম্বর সূচক বাড়ে ৩৯ পয়েন্ট। বাকি প্রতি দিনই সূচক কমে।
ফলে সোমবার সূচক বাড়লেও তা নিয়ে বিনিয়োগকারীরা আশাবাদী হয়ে উঠার মতো কিছু দেখেনি। এর মধ্যে মঙ্গলবার লেনদেন শুরুই হয় ২৭ পয়েন্ট বেড়ে। বেলা সোয়া ১০টা পর্যন্ত বাড়ে ৩৯ পয়েন্ট। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ সেখান থেকে কমে আরও ১৬ পয়েন্ট। এরপর থেকে সময় যত গড়িয়েছে সূচক বেড়েছে তত বেশি।
বেলা আড়াইটা বাজার চার মিনিট আগে সূচক বাড়ে আগের দিনের তুলনায় ৮০ পয়েন্ট। পরের চার মিনিটে সমন্বয়ের কারণে শেষ পর্যন্ত ৭ পয়েন্ট কমে শেষ হয় লেনদেন।
আগের দিনের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা। সোমবার হাতবদল হয়েছিল ৭৪৫ কোটি ১০ লাখ ১৮ হাজার টাকার শেয়ার। সেটি বেড়ে হয়েছে ৮৭২ কোটি ৩৯ লাখ ১১ হাজার টাকা।
বেড়েছে ২৮৬টি কোম্পানির শেয়ারদর। বিপরীতে কমেছে ৬৯টির। অপরিবর্তিত ছিল ২৩টির দর।
সবচেয়ে ভালো দিন গেছে বস্ত্র খাতে। টানা সংশোধনের মধ্যে হাতে গোড়া দুই একটি ছাড়া বাকিগুলোর দাম বেড়েছে। ভালো দিন গেছে ব্যাংক, আর্থিক, বিমা, প্রকৌশল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ও ওষুধ এবং রসায়ন খাতেও।
লেনদেনে সেরা বিমা খাত। এরপরের অবস্থান যথাক্রমে বিবিধ, ব্যাংক, ওষুধ ও রসায়ন এবং বস্ত্র।
উত্থানের নেপথ্যে যেসব কোম্পানি
সূচক বৃদ্ধিতে সূচক সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানি। শেয়ারদর ২.১৫ শতাংশ বৃদ্ধির কারণে কোম্পানিটি সূচকে যোগ করেছে ১০.২২ পয়েন্ট।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭.০৬ পয়েন্ট বাড়িয়েছে ওয়ালটন। কোম্পানিটির দর বেড়েছে ১.৪৫ শতাংশ।
লাফার্জ হোলসিম, রবি, পাওয়ারগ্রিড, ব্র্যাক ব্যাংক, গ্রামীণ ফোন, আইএফআইসি ব্যাংক, বিএসআরএম স্টিল ও বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন সূচক বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে।
এই ১০ টি কোম্পানির কারণেই সূচকে যোগ হয়েছে ৩১.০৫ পয়েন্ট।
বিপরীতে বেক্সিমকো লিমিটেডের কারণ সূচক কমেছে সবচেয়ে বেশি। কোম্পানিটি ২.৫৭ শতাংশ দর হারানোর কারণে সূচক কমেছে ৪.৮৩ পয়েন্ট।
ইউনিলিভার, রেকিড বেনকিনজার, বার্জার পেইন্টস, পূবালী ব্যাংক, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ওরিয়ন ফার্মা, এশিয়ান ইন্স্যুরেন্স, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ও প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সও সূচক কমিয়েছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানির কারণে সূচক কমেছে ৯.৫৪ পয়েন্ট।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় বস্ত্রের প্রাধান্য
বেশ কয়েক মাস পর এই চিত্র দেখা গেল পুঁজিবাজারে। সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে এমন ১০টি কোম্পানির ৬টিই এই একটি খাতের। গত তিন মাসের দরপতনে এই খাতটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ দর বেড়েছে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের দর। ৩৮ টাকার শেয়ার বেড়ে বেড়ে হয়েছে ৪১ টাকা ৮০ পয়সা। লেনদেন হয়েছে ৭৩ লাখ ১২ হাজার, হাতবদল হয়েছে ১ লাখ ৭৭ হাজার ২৪ পয়সা।
সাত বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয় আর চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অভাবনীয় আয়ের তথ্য জানানোর পর রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের দর বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। লভ্যাংশ ঘোষণার পর রোববার ১২ শতাংশের বেশি এবং পরের দুই দিনে আরও ২০ শতাংশের বেশি দাম বাড়ল।
উত্থানের তৃতীয় দিনে শেয়ার দর ৬১ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৬৭ টাকা ১০ পয়সা। এ নিয়ে তিন দিনে শেয়ারদর ৪৯ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বাড়ল ১৭ টাকা ৭০ পয়সা।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা বস্ত্র খাতের আরেক কোম্পানি হামিদ ফেব্রিক্সের দর বেড়েছে ৯.৯০ শতাংশ।
আরও তিনটি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে নয় শতাংশের বেশি। এগুলো হচ্ছে ঢাকা ডাইং, সালভো ক্যামিকেল এবং আইসিবি এএমসিএল ফার্স্ট অগ্রণী ব্যাংক মিউচ্যুয়াল ফান্ড।
আট শতাংশের বেশি শেয়ার দর বেড়েছে দুটি কোম্পানির। এগুলোর মধ্যে আইসিবি ইমপ্লয়ি প্রভিডেন্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৮.৬৯ শতাংশ এবং ড্রাগন সোয়েটারের শেয়ার দর বেড়েছে ৮ শতাংশ।
দশম অবস্থানে থাকা আমান কটনের শেয়ার দর বেড়েছে ৭.৭১ শতাংশ। কোম্পানিটির শেয়ার ২৮ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩০ টাকা ৭০ পয়সা।
আরও তিনটি কোম্পানির দর ছয় শতাংশের বেশি, ১৪টির দর ৫ শতাংশের বেশি, ২৪টির দর ৪ শতাংশের বেশি, ৩৭টির দর ৩ শতাংশের বেশি, ৪৮টির দর ২ শতাংশের বেশি, ৯৪টির দর বেড়েছে এক শতাংশের বেশি।
দর পতনের ১০ কোম্পানি
এই তালিকার শীর্ষে ছিল এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, যার দর কমেছে ৪.৪৭ শতাংশ। ১২৩ টাকার শেয়ার নেমে এসেছে ১১৭ টাকা ৫০ পয়সায়।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা এএমসিএল প্রাণ এর দর কমেছে ৩.৭৪ শতাংশ। এছাড়া ইস্টার্ন ক্যাবলসের দর কমেছে ৩.৬০ শতাংশ। ৮ লাখ ৭৬ হাজার টাকার মোট ৬ হাজার ৫৬৯টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৩.৫০ শতাংশ। ২ কোটি ৫৯ লাখ টাকার হাতবদল হয়েছে ২ লাখ ৯ হাজার ৭৬৭টি শেয়ার।
ফার্মা এইডের দর ৩.৩৯ শতাংশ, এশিয়া প্যাসিফিক ইন্সুরেন্সের শেয়ার দর ৩.২৪ শতাংশ, আইএফআইসি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট প্রতি ৩.১২ শতাংশ, জুট স্পিনার্সের দর ৩.০৩ শতাংশ কমেছে।
নবম স্থানে থাকা কে অ্যান্ড কিউয়ের দর ২.৯০ শতাংশ এবং দশম অবস্থানে থাকা এটলাস বাংলাদেশ দর হারিয়েছে ২.৬৩ শতাংশ।
আরও ৯টি কোম্পানির দর ২ শতাংশের বেশি, ১৩টির দর এক শতাংশের বেশি কমেছে।
লেনদেনে শীর্ষ ১০
শীর্ষে থাকা বেক্সিমকো লিমিটেডে লেনদেন হয়েছে ৭১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। ৪৮ লাখ ১৯ হাজার ৬টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে কোম্পানিটির।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনে লেনদেন হয়েছে ৫৫ কোটি ৭২ লাখ টাকার। শেয়ার হাতবদল হয়েছে ৮৪ লাখ ৬০ হাজার ৭৮৮টি ।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা এশিয়া ইন্স্যুরেন্সে লেনদেন হয়েছে ৪৬ কোটি ৮ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ৩৭ লাখ ৫৫ হাজার ৫৯১টি শেয়ার।
চতুর্থ অবস্থানে থাকা সোনালী পেপারের লেনদেন হয়েছে ৪৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা, হাতবদল হয়েছে ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৬৩৬টি শেয়ার।
২১ কোটি ২৯ লাখ টাকায় ওয়ান ব্যাংকে হাতবদল হয়েছে ১ কোটি ৫২ লাখ ২১ হাজার ১৪০টি শেয়ার। ১৯ কোটি ২৩ লাখ টাকায় ফরচুন সুজে হাতবদল হয়েছে ২০ লাখ ১৯ হাজার ৪৯৬টি শেয়ার।
এছাড়া বেক্সিমকো ফার্মায় ১৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, বিকন ফার্মায় ১৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলে ১১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে।
আরও পড়ুন:
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
মন্তব্য