ঢাকা নগর সেবা পরিবহন নাম দিয়ে রোববার থেকে চালু হয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজি বাসের পরীক্ষামূলক চলাচল। যাত্রীসেবায় এটি আমূল পরিবর্তন আনবে বলে মনে করা হলেও পরীক্ষামূলক অপারেশনে দায়সারা ভাব লক্ষ্য করা গেছে। সম্পূর্ণ নতুন বাস নামানোর কথা থাকলেও পুরনো বাসই মেরামত করে চালানো হচ্ছে।
সড়কের পাশে যাত্রীছাউনি থাকার কথা থাকলেও অনেক জায়গায় তা দেখা যায়নি। আবার অনেক জায়গায় যাত্রীছাউনি ভাঙাচোরা। নির্ধারিত বাস স্টপেজ থেকে যাত্রী তোলার কথা থাকলেও এর বাইরে কোথাও কোথাও নামানো হয়েছে যাত্রীদের।
দুই সিটি করপোরেশনের বাস রুট র্যাশনালাইজেশনের এই সেবা পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করা হয়েছে কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর থেকে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর পর্যন্ত রুটে। তবে এখনও বাস শেষ গন্তব্য কাঁচপুর পর্যন্ত যাচ্ছে না। এক স্টেশন আগে চিটাগাং রোড পর্যন্ত গিয়েই থেমে যাচ্ছে। নগরবাসী এখনও এই পরিবহন এবং বাস স্টপেজগুলোর সঙ্গে পরিচিত হয়ে উঠতে পারেনি। ফলে বাসে যাত্রী তত বেশি নেই।
এই সেবার নতুন দিক হলো ই-টিকিট। কিলোমিটার হিসেবে ই-টিকিটিং সেবা দেয়ার কারণে ভাড়া আসে ১৩, ১৪, ২২, ২৬, ৩৭ টাকা ইত্যাদি অংকের। ঢাকায় যাত্রীরা সাধারণত ৫, ১০, ১৫, ২০ ইত্যাদি সংখ্যার ভাড়া দিয়ে অভ্যস্ত। কোনো খুচরা ভাড়া দেন না যাত্রীরা।
এই সেবার চিত্র দেখতে সোমবার সকালে কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর থেকে শেষ স্টপেজ চিটাগাং রোড পর্যন্ত ঢাকা নগর পরিবহনের ট্রান্সসিলভা কোম্পানির একটি বাসে যাত্রা করেন নিউজবাংলার এই প্রতিবেদক।
ঘাটারচর থেকে চিটাগাং রোড পর্যন্ত ২১টি বাস স্টপেজে বাস থেকে যাত্রী ওঠেন। বাস সুশৃঙ্খলভাবে নির্ধারিত বাস স্টপেজ থেকে যাত্রী তোলে। বাসে ওঠার আগে কাউন্টার থেকে ই-টিকিট সংগ্রহ করতে হয় যাত্রীদের।
২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে সব যাত্রীছাউনির কাজ শেষ করার কথা থাকলেও কয়েকটির কাজ এখনও শেষ হয়নি। এ কারণে সব যাত্রীছাউনিতে বাস থামেনি। এ ছাড়া সায়দাবাদ থেকে চিটাগাং রোড পর্যন্ত বেশির ভাগ জায়গায় যাত্রীছাউনি নেই। এসব জায়গায় বড় ছাতা টাঙিয়ে টিকিট কাউন্টার করা হয়েছে।
যাত্রী উঠানামায় একাধিক নির্ধারিত স্থানে দেখা গেছে যাত্রী ছাউনি নেই। কিন্তু টিকিট কাউন্টার আছে। ছবি: নিউজবাংলা
ঢাকা নগর পরিবহন ও রুটের চিত্র
ঘাটারচর থেকে যাত্রা শুরু হয় বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে। কিছু কিছু বাস স্টপেজ আগের স্টপেজ থেকে একটু দূরে হওয়ায় যাত্রীরা এখনও কাউন্টার চিনে উঠতে পারেননি। তারা আগের বাস স্টপেজেই দাঁড়িয়ে থেকে ওঠার চেষ্টা করেছেন। এ সময় বাসের হেলপার তাদের সামনের স্টপেজ থেকে টিকিট সংগ্রহ করার জন্য অনুরোধ করেন। মোহাম্মদপুরে সিগন্যালে গাড়ি আটকে থাকায় কাউন্টারের বেশ আগে দুজন যাত্রী নামানো হয়।
মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে দুই ছাত্র বাসে ওঠেন। তাদের হাফ ভাড়া নেয়া হয়েছে। ভাড়ার অঙ্কের পাশে লেখা (ছাত্রছাত্রীদের জন্য)। শংকর বাস কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা দূরের শৌচাগারে যাওয়ার কারণে যাত্রীরা টিকিট কাটতে পারছিলেন না। এই স্ট্যান্ডের যাত্রীরা বলেন, কাউন্টারের পাশে শৌচাগার থাকা উচিত।
দুপুর ১২টা ৯ মিনিটে বাসটি ‘ধানমন্ডি ১৫’ নম্বর এলাকার কাউন্টারে পৌঁছায়। বাস দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেও টিকিট বিক্রেতাকে পাওয়া যায়নি। এ কারণে এই স্টপেজ থেকে কোনো যাত্রী উঠতে পারেননি।
ধানমন্ডি-১৫ নম্বরে নগর পরিবহনের যাত্রী ছাউনি দেখা গেছে। কিন্তু কোনও টিকিট কাউন্টার পাওয়া যায়নি। ছবি: নিউজবাংলা
সিটি কলেজের সামনে স্টপেজে যাত্রীছাউনি নেই। তবে কাউন্টার আছে। কাঁটাবন সিগন্যালে কাউন্টারের বাইরে ফাঁকা রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে যাত্রী নামানো হয়। শাহবাগের আগে বাস চলন্ত অবস্থায় গতি কমিয়ে গাড়ি থেকে তিন যাত্রীকে নামায়।
শাহবাগ মোড়ে সিগন্যাল থাকার কারণে কাউন্টারের আগেই যাত্রী নামানো হয়। শাহবাগের আগের যাত্রীছাউনির কাজ এখনও শেষ করে কাউন্টার দেয়া হয়নি। তাই সেখানে বাস থামেনি। শাহবাগের কাউন্টারেও যাত্রীছাউনি নেই। রমনা পার্ক এলাকায় দুজনকে নামানো হয় কাউন্টার ছাড়া। তখন সিগন্যালে গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল।
রমনা পার্ক এলাকার টিকিট কাউন্টার পেরোলে মতিঝিল শাপলা চত্বরের আগে কাউন্টার নেই। ফলে গুলিস্তানের যাত্রীদের পল্টনের আগে মেহেরবা প্লাজার সামনে নামানো হয়।
এক নারী যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, গুলিস্তান যেতে চেয়ে কাউন্টারে টিকিট চাইলে তাকে গুলিস্তানের কথা বলে টিকিট দেয়া হয়। কিন্তু গাড়ি গুলিস্তান রুটের না হওয়ায় ওই নারীকে পল্টনে নামতে হয়। এতে ওই নারী হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন।
মতিঝিল সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে তিনজনকে নামানো হয় স্টপেজ ছাড়া। মতিঝিল থেকে আরামবাগ মোড়ে গাড়ি ঘোরানোর সময় একজনকে নামানো হয় স্টপেজ ছাড়া। মতিঝিল ওভারব্রিজের নিচে কাউন্টার আছে, যাত্রীছাউনি নেই।
মতিঝিল আইসিবি ব্যাংকের বিপরীত পাশে সামনে যাত্রীছাউনির কাজ এখনও শেষ করে কাউন্টার দেয়া হয়নি, তাই বাস এই স্টপেজে থামেনি। সায়েদাবাদ লেভেল ক্রসিংয়ের আগে কাউন্টার আছে, যাত্রীছাউনি নেই। উত্তর যাত্রাবাড়ীতেও (সায়েদাবাদ ব্রিজের উত্তর-পূর্ব পাশে) কাউন্টার আছে, যাত্রীছাউনি নেই।
যাত্রাবাড়ী বিটিসিএলের সামনে কাউন্টারের সামনে আবর্জনার স্তূপ। অন্য পরিবহনের গাড়ির কারণে এই কাউন্টারের সামনে জটলা বেঁধে ছিল। বেলা ১টা ২০ মিনিটে কাউন্টারে টিকিট বিক্রেতা ছিলেন না। তাই দুজন টিকিট ছাড়া গাড়িতে ওঠেন। ড্রাইভার নিষেধ করলে তারা বলেন, হেলপার উঠতে বলেছে। পরে রায়েরবাগ স্টপেজ থেকে তাদের টিকিট দেয়া হয়।
যাত্রাবাড়ীতে নগর পরিবহনের টিকিট কাউন্টার বসানো হয়েছে পুরনো যাত্রী ছাউনিতে। আশপাশে ছড়িয়ে আছে ময়লা-আবর্জনা আর অচল গাড়ি। ছবি: নিউজবাংলা
শনির আখড়ায় কাউন্টার আছে, যাত্রীছাউনি নেই। বেলা ১টা ৩৮ মিনিটে বাস কাউন্টারে পৌঁছালে যাত্রী নিতে পারেনি। কারণ কাউন্টারে টিকিট বিক্রেতা ছিলেন না। তবে সেখানে অন্য সব পরিবহনের কাউন্টারে টিকিট বিক্রেতা ছিলেন।
মাতুয়াইল মেডিক্যাল বাসস্ট্যান্ডে কাউন্টার আছে, যাত্রীছাউনি নেই। এখানে একটু সামনে গিয়ে যাত্রী নামানো হয় চলন্ত বাস থামিয়ে। কারণ হিসেবে ড্রাইভার হেলপারকে বলেন, সামনে কাউন্টার নেই। সাইনবোর্ড স্টপেজে কাউন্টার আছে, যাত্রীছাউনি নেই। শিমরাইলে কাউন্টার ছাড়া চলন্ত গাড়ি থামিয়ে যাত্রী নামানো হয়।
চিটাগাং রোড পর্যন্ত গাড়ি গিয়ে সব যাত্রী নামিয়ে একটু সামনে ব্রিজের নিচে দিয়ে গাড়ি ইউটার্ন করে ঘাটারচর ফেরার উদ্দেশে লাইনে দাঁড়ায়। তখন সময় বেলা ২টা।
কী বলছেন এই বাসের ড্রাইভার
সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা হয় এই বাসের চালকের সঙ্গে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্টপেজগুলো মেইন বাসস্ট্যান্ড থেকে একটু সামনে হওয়ায় যাত্রীরা এখনও টিকিট কাউন্টার ওভাবে চিনে উঠতে পারেনি। এ কারণে যাত্রী কম হচ্ছে, গাড়ি ফাঁকা থাকছে।’
স্টপেজ ছাড়া যাত্রী নামানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কয়েকটি জায়গায় স্টপেজ ছাড়া যাত্রী নামাতে হয়েছে। কারণ যাত্রীরা এখনও সেবাটা বুঝে উঠতে পারেননি। আমরাও ঝামেলা না করে কিছু কিছু জায়গায় নামিয়েছি। রমনা পার্কের পরে টিকিট স্টপেজ মতিঝিলে। এই লম্বা জায়গায় স্টপেজ না থাকায় কয়েক জায়গায় যাত্রী নামাতে হয়েছে। না হলে যাত্রীদের হয়রানি হতো।’
নতুন জায়গায় কাউন্টারের সমস্যার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যাত্রাবাড়ী থেকে চিটাগাং রোড পর্যন্ত বেশির ভাগ জায়গায় বড় ছাতা টাঙিয়ে টিকিট কাউন্টার করা হয়েছে। এই জায়গায় রাস্তার পাশে বাস দাঁড়িয়ে থাকায় টিকিট কাউন্টার চিনতে ঝামেলা হয়েছে। এ কারণে কয়েকটি কাউন্টারের একটু সামনে গিয়ে থামাতে হয়েছে বাস। যদি চিহ্ন হিসেবে একটা উঁচু নিশান টানিয়ে রাখত, তাহলে কাউন্টার চিনতে সুবিধা হতো।’
মেয়রের কথায় যাত্রীদের ক্ষোভ
নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে ১৯ ডিসেম্বর বাস রুট র্যাশনালাইজেশন কমিটির ২০তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘সব মিলিয়ে ১০০টি বাস দিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি। আগামী ২৬ ডিসেম্বর আমরা ট্রান্সসিলভার নতুন ২০টি বাস এবং বিআরটিসির ৩০টি ডাবল ডেকার বাস মেরামত করে সূচনা করব। বাকি কার্যক্রম ৬০ দিবসের মধ্যে পূর্ণভাবে এই যাত্রাপথ বাস্তবায়ন করতে পারব বলে আমরা আশাবাদী।’
তবে ট্রান্সসিলভার বাসগুলো নতুন নয় বলে দাবি করছেন যাত্রীরা। এই রুটের বেশ কয়েকজনের অভিজ্ঞতার কথা জানতে চাইলে তারা বলেন, ট্রান্সসিলভার বাসগুলো সব পুরোনো। এগুলো রং করে রাস্তায় নামানো হয়েছে।
ঢাকা নগর পরিবহনের আওতায় ট্রান্সসিলভা পরিবহনের বাসের বাইরের দিক ঝকঝকে হলেও ভেতরে জরাজীর্ণ অবস্থা। ছবি: নিউজবাংলা
মোহাম্মদপুর থেকে সায়েন্সল্যাব যাবেন মো. আহাদ। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘গতকাল থেকে আজ পর্যন্ত এই রাস্তায় ছয়বার যাওয়া-আসা হয়েছে আমার। এর মধ্যে চারবার ট্রান্সসিলভার কোম্পানির বাসে উঠেছি। সবগুলো বাস পুরোনো।’
এই পরিবহন সেবায় যুক্ত হতে আটটি প্রতিষ্ঠান আবেদন করে। এর মধ্যে বিআরটিসিসহ পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে সুযোগ দেয়া হয়েছে। ঢাকা নগর পরিবহনের চালকদের শনাক্তে দেয়া হয়েছে ইউনিফর্ম ও আইডি কার্ড।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে রোববার দুপুর ১২টার দিকে ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ বাস রুট পাইলটিংয়ের উদ্বোধন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে সচিবালয় থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ধীরে ধীরে এ সেবার বিস্তার হবে। আরও নতুন রুট যুক্ত হবে। রাজধানী ও আশপাশের এলাকার জন্য ৪২টি রুট করার পরিকল্পনা আছে।’
ঢাকা নগর পরিবহনে ঘাটারচর-কাঁচপুর রুটে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরত্বে সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা; সর্বোচ্চ ভাড়া ৫৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি কিলোমিটার ২ টাকা ১৫ পয়সা হিসেবে ভাড়া পরিশোধ করতে হবে।
আরও পড়ুন:বেশ কয়েক দিন পর বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকার শীর্ষস্থানে রদবদল হয়েছে। আজ রবিবার সকালে চিরচেনা লাহোর, দিল্লির কোনো শহরই শীর্ষ দশের ধারেকাছে নেই। তবে এই তালিকায় আজ চলে এসেছে ব্রাজিলের সাও পাউলোর নাম।
রবিবার (২৪ আগস্ট) সকাল সোয়া ৯টার দিকে ১২৩ একিউআই স্কোর নিয়ে অষ্টম শীর্ষ দূষিত বাতাসের শহর হয়ে ওঠে সাও পাউলো। আইকিউ এয়ারের সূচক অনুযায়ী যার মান ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’।
তবে এই সময়ে ১৬৪ একিউআই স্কোর নিয়ে সবচেয়ে দূষিত বাতাসে শ্বাস নিচ্ছিল ইন্দোনেশিয়ার বাতাম শহরের বাসিন্দারা। ১৬৩ ও ১৫২ স্কোর নিয়ে তার পরেই ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই এবং কঙ্গোর কিনশাসার অবস্থান।
আর দিল্লির বাতাসের একিউআই সূচক ছিল ৯৫। লাহোরের বাতাসে দূষণের মান তখন আরও কম, ৮৪। অর্থাৎ প্রতিবেশী দুই দেশের শহরদুটির বাতাসের মান ছিল ‘মাঝারি’।
ঠিক সেই সময়ে তালিকার উপরের দিকে খুঁজেও ঢাকার নাম পাওয়া যায়নি। যাবে কীভাবে? ঢাকার অবস্থান তখন তলানির দিকে, বিশ্বের স্বাস্থ্যকর বায়ুর শহরগুলো মধ্যে। ৪২ একিউআই স্কোর নিয়ে সেই সময় স্বাস্থ্যকর বাতাস গ্রহণ করছে ঢাকাবাসী। তালিকার ৬৮তম স্থানে ছিল ঢাকার নাম।
কণা দূষণের এই সূচক ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ বলে গণ্য করা হয়। আর স্কোর ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
তবে এই স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
জামালপুরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল তারা এখন মুক্তিযুদ্ধকে চ্যালেঞ্জ করার সাহস পাচ্ছে। শেখ হাসিনার জন্যই এটা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ না হলে, জিয়াউর রহমান যুদ্ধের ঘোষণা না করলে এই ভূখন্ড হতো না। কিন্তু বাপের সম্পত্তি বানিয়ে হাসিনা এটাকে পঁচিয়ে দিয়েছে। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানকে একটা শ্রেণী বলার চেষ্টা করে এটা দ্বিতীয় স্বাধীনতা। সন্তান একবারই জন্মগ্রহণ করে। যে মুক্তিযুদ্ধ আমাদের মানচিত্র দিয়েছে সেটাই স্বাধীনতা, দ্বিতীয় স্বাধীনতা হতে পারে না। জামালপুর জেলা বিএনপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, একটা নতুন আবিষ্কার হয়েছে পিআর পদ্ধতি। আমাদের বাংলাদেশের মানুষ যারা ভোট দেয় তারা তাদের প্রার্থীকে দেখতে চায়। যার ভোট সে দিবে, একজনকে ভোট দিবে, যাকে ভোট দিবে তাকে চিনতে হবে। পিআর মানুষ খায়ও না পড়েও না বিশ্বাসও করে না।
শনিবার (২৩ আগষ্ট) শহরের বেলটিয়া এলাকায় স্থানীয় একটি মাঠে জামালপুর জেলা বিএনপি এই ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করে। সম্মেলনের উদ্বোধক হিসেবে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল। জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদুল কবির তালুকদার শামীমের সভাপতিত্বে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, সাংগঠনিক সম্পাদক মো: শরিফুল আলম, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ, অ্যাডভোকেট শাহ মো: ওয়ারেছ আলী মামুনসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন। এবারের সম্মেলনে ৭টি উপজেলা ও ৮টি পৌর শাখা বিএনপির ১ হাজার ৫১৫ জন কাউন্সিলরসহ কয়েক হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন। ৯ বছর পর আয়োজিত জেলা বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ, উদ্দীপনা ও উৎসবের আমেজ বিরাজ করে।
আজ সোমবার, সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবস। আজ সকালে ঢাকার আকাশে উঁকি দিয়েছে রোদ। বৃষ্টি কমে রোদ উঠতেই ঢাকার বাতাসের মানে অবনতি দেখা গেছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ৬৬। বায়ুমান সূচক অনুযায়ী, এই স্কোর নিয়ে শহরটির বাতাসের মান ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত হয়েছে।
গতকাল একই সময়ে ঢাকার বাতাসের মান ছিল ‘ভালো’, দূষণ-মান ছিল ৫০। এই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকার ৭৪তম স্থানে নেমে গিয়েছিল ঢাকা। তবে আজ আবার তালিকার ২৬তম স্থানে উঠে এসেছে শহরটি।
এদিকে, গতকালের তুলনায় পাকিস্তানের লাহোরের বাতাসের মানে উন্নতি দেখা গেছে। ৮৩ স্কোর নিয়ে তালিকার ১২ তম স্থানে রয়েছে লাহোর। তবে ভারতের দিল্লির বায়ুদূষণ আজও অব্যাহত রয়েছে। ১২৩ স্কোর নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে দিল্লি।
একই সময়ে ১৬৬ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার শীর্ষে রয়েছে সৌদি আরবের রিয়াদ এবং ১৪৯ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কঙ্গোর কিনশাসা।
কণা দূষণের এই সূচক ৫০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘ভালো’ বলে গণ্য করা হয়। আর স্কোর ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে তা ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
তবে এই স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে ৩০০-এর বেশি যেকোনো সূচক।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
রাজধানীর লালবাগের শহীদনগর এলাকায় গণপিটুনিতে তৌফিকুল ইসলাম নামে এক যুবকের (২৬) মৃত্যু হয়েছে। তিনি স্থানীয়ভাবে ‘কিলার বাবু’ ওরফে ‘টেরা বাবু’ নামেও পরিচতি।
রোববার সকাল পৌনে ৮টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় সেনা সদস্যরা ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লালবাগ থানার ওসি মোস্তফা কামাল খান সমকালকে বলেন, ‘নিহত বাবুর বিরুদ্ধে চুরি ও মাদকের ১০-১২টি মামলা রয়েছে। তিনি এলাকার চিহ্নিত চোর এবং মাদক চোরাকারবারী। শনিবার রাত ২টার পরে শহীদ নগর এলাকায় লোকজন তাকে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তার মৃত্যু হয়।’
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে গত দুই দিনে ২ হাজার ২৪৬টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩২২টি গাড়ি ডাম্পিং ও ৯৯টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সোমবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এসব মামলা করে।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
ঢাকা মহানগরীতে দরিদ্র ও অসচ্ছল মানুষের জন্য ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হয়েছে আজ সকাল থেকে।
ঢাকার সচিবালয়ের সামনে থেকে শুরু করে যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, ধোলাইপাড়, ধোলাইখাল, রামপুরাসহ বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি করছেন নির্বাচিত ডিলাররা।
প্রতিটি ট্রাক থেকে দরিদ্র একটি পরিবার ২ কেজি ভোজ্যতেল, ১ কেজি চিনি ও ২ কেজি মসুর ডাল ন্যায্য মূল্যে কিনতে পারছেন।
টিসিবির উপ পরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, স্বল্প আয়ের মানুষের সুবিধার্থে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) উদ্যোগে রোববার থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। ভর্তুকি মূল্যে রাজধানীতে ৬০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। পণ্যগুলো হল ভোজ্যতেল, চিনি ও মসুর ডাল।
জানা যায়, ঢাকা মহানগরীতে আজ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩০ দিন (শুক্রবার ছাড়া) টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হবে।
এছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২৫টি, গাজীপুর মহানগরীতে ৬টি, কুমিল্লা মহানগরীতে ৩টি এবং ঢাকা জেলায় ৮টি, কুমিল্লা জেলায় ১২টি, ফরিদপুর জেলায় ৪টি, পটুয়াখালী জেলায় ৫টি ও বাগেরহাট জেলায় ৫টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে আজ থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ১৯ দিন (শুক্রবার ছাড়া) পণ্য বিক্রি করা হবে।
দৈনিক প্রতিটি ট্রাক থেকে ৫শ’ জন সাধারণ মানুষের কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে। একজন ভোক্তা একসঙ্গে সর্বোচ্চ ২ লিটার ভোজ্যতেল, ১ কেজি চিনি ও ২ কেজি মসুর ডাল কিনতে পারবেন। ভোজ্যতেল ২ লিটার ২৩০ টাকা, চিনি ১ কেজি ৮০ টাকা এবং মসুর ডাল ২ কেজি ১৪০ টাকায় বিক্রি করা হবে। যে কোনো ভোক্তা ট্রাক থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ডধারী পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি এসব পণ্য বিক্রি করা হবে।
ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অভিযান চালিয়ে ধাক্কামারা চক্রের দুই সক্রিয় সদস্যকে শুক্রবার বিকেলে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন জুথী আক্তার শ্রাবন্তী ওরফে যুথী আক্তার জ্যোতি ওরফে লিমা আক্তার (২২) এবং শাহনাজ বেগম (৪২)।
ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রোববার এ তথ্য জানানো হয়।
গত শুক্রবার বিকাল আনুমানিক ৫টার দিকে তেজগাঁও থানাধীন বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আসামিরা বসুন্ধরা সিটি শপিং মলের সপ্তম তলার লিফটের সামনে কৌশলে এক নারীকে ধাক্কা মেরে তার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে নগদ ৪০ হাজার টাকা চুরি করে। এ সময় সন্দেহ হলে তিনি তার ব্যাগ পরীক্ষা করে টাকা খোয়া যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন। এরপর ভুক্তভোগী ও তার স্বামী চিৎকার দিলে শপিং মলের নিরাপত্তা প্রহরীরা এগিয়ে আসেন। তাদের সহায়তায় ওই দুই নারীকে আটক করা হয়। তবে তাদের সঙ্গে থাকা অপর দু’জন কৌশলে পালিয়ে যান।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত আরও দুই নারী ভুক্তভোগী জানান, তাদের যথাক্রমে এক লাখ টাকা ও ৪.৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণের টিকলি (মূল্য আনুমানিক ৬৪ হাজার ৫০০ টাকা) এবং ১০ হাজার টাকা চুরি হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা চুরির কথা স্বীকার করেছে।
তেজগাঁও থানা পুলিশ ও নারী পুলিশের সহায়তায় আসামি যুথী আক্তারের ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে চুরি হওয়া নগদ এক লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং স্বর্ণের টিকলি উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, যুথী আক্তার আন্তঃজেলা পকেটমার চক্রের নেতা। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৪টি মামলা রয়েছে।
এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় মামলা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানানো হয়।
মন্তব্য