ঢাকা নগর সেবা পরিবহন নাম দিয়ে রোববার থেকে চালু হয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজি বাসের পরীক্ষামূলক চলাচল। যাত্রীসেবায় এটি আমূল পরিবর্তন আনবে বলে মনে করা হলেও পরীক্ষামূলক অপারেশনে দায়সারা ভাব লক্ষ্য করা গেছে। সম্পূর্ণ নতুন বাস নামানোর কথা থাকলেও পুরনো বাসই মেরামত করে চালানো হচ্ছে।
সড়কের পাশে যাত্রীছাউনি থাকার কথা থাকলেও অনেক জায়গায় তা দেখা যায়নি। আবার অনেক জায়গায় যাত্রীছাউনি ভাঙাচোরা। নির্ধারিত বাস স্টপেজ থেকে যাত্রী তোলার কথা থাকলেও এর বাইরে কোথাও কোথাও নামানো হয়েছে যাত্রীদের।
দুই সিটি করপোরেশনের বাস রুট র্যাশনালাইজেশনের এই সেবা পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করা হয়েছে কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর থেকে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর পর্যন্ত রুটে। তবে এখনও বাস শেষ গন্তব্য কাঁচপুর পর্যন্ত যাচ্ছে না। এক স্টেশন আগে চিটাগাং রোড পর্যন্ত গিয়েই থেমে যাচ্ছে। নগরবাসী এখনও এই পরিবহন এবং বাস স্টপেজগুলোর সঙ্গে পরিচিত হয়ে উঠতে পারেনি। ফলে বাসে যাত্রী তত বেশি নেই।
এই সেবার নতুন দিক হলো ই-টিকিট। কিলোমিটার হিসেবে ই-টিকিটিং সেবা দেয়ার কারণে ভাড়া আসে ১৩, ১৪, ২২, ২৬, ৩৭ টাকা ইত্যাদি অংকের। ঢাকায় যাত্রীরা সাধারণত ৫, ১০, ১৫, ২০ ইত্যাদি সংখ্যার ভাড়া দিয়ে অভ্যস্ত। কোনো খুচরা ভাড়া দেন না যাত্রীরা।
এই সেবার চিত্র দেখতে সোমবার সকালে কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর থেকে শেষ স্টপেজ চিটাগাং রোড পর্যন্ত ঢাকা নগর পরিবহনের ট্রান্সসিলভা কোম্পানির একটি বাসে যাত্রা করেন নিউজবাংলার এই প্রতিবেদক।
ঘাটারচর থেকে চিটাগাং রোড পর্যন্ত ২১টি বাস স্টপেজে বাস থেকে যাত্রী ওঠেন। বাস সুশৃঙ্খলভাবে নির্ধারিত বাস স্টপেজ থেকে যাত্রী তোলে। বাসে ওঠার আগে কাউন্টার থেকে ই-টিকিট সংগ্রহ করতে হয় যাত্রীদের।
২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে সব যাত্রীছাউনির কাজ শেষ করার কথা থাকলেও কয়েকটির কাজ এখনও শেষ হয়নি। এ কারণে সব যাত্রীছাউনিতে বাস থামেনি। এ ছাড়া সায়দাবাদ থেকে চিটাগাং রোড পর্যন্ত বেশির ভাগ জায়গায় যাত্রীছাউনি নেই। এসব জায়গায় বড় ছাতা টাঙিয়ে টিকিট কাউন্টার করা হয়েছে।
ঢাকা নগর পরিবহন ও রুটের চিত্র
ঘাটারচর থেকে যাত্রা শুরু হয় বেলা ১১টা ৩৯ মিনিটে। কিছু কিছু বাস স্টপেজ আগের স্টপেজ থেকে একটু দূরে হওয়ায় যাত্রীরা এখনও কাউন্টার চিনে উঠতে পারেননি। তারা আগের বাস স্টপেজেই দাঁড়িয়ে থেকে ওঠার চেষ্টা করেছেন। এ সময় বাসের হেলপার তাদের সামনের স্টপেজ থেকে টিকিট সংগ্রহ করার জন্য অনুরোধ করেন। মোহাম্মদপুরে সিগন্যালে গাড়ি আটকে থাকায় কাউন্টারের বেশ আগে দুজন যাত্রী নামানো হয়।
মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে দুই ছাত্র বাসে ওঠেন। তাদের হাফ ভাড়া নেয়া হয়েছে। ভাড়ার অঙ্কের পাশে লেখা (ছাত্রছাত্রীদের জন্য)। শংকর বাস কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা দূরের শৌচাগারে যাওয়ার কারণে যাত্রীরা টিকিট কাটতে পারছিলেন না। এই স্ট্যান্ডের যাত্রীরা বলেন, কাউন্টারের পাশে শৌচাগার থাকা উচিত।
দুপুর ১২টা ৯ মিনিটে বাসটি ‘ধানমন্ডি ১৫’ নম্বর এলাকার কাউন্টারে পৌঁছায়। বাস দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেও টিকিট বিক্রেতাকে পাওয়া যায়নি। এ কারণে এই স্টপেজ থেকে কোনো যাত্রী উঠতে পারেননি।
সিটি কলেজের সামনে স্টপেজে যাত্রীছাউনি নেই। তবে কাউন্টার আছে। কাঁটাবন সিগন্যালে কাউন্টারের বাইরে ফাঁকা রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে যাত্রী নামানো হয়। শাহবাগের আগে বাস চলন্ত অবস্থায় গতি কমিয়ে গাড়ি থেকে তিন যাত্রীকে নামায়।
শাহবাগ মোড়ে সিগন্যাল থাকার কারণে কাউন্টারের আগেই যাত্রী নামানো হয়। শাহবাগের আগের যাত্রীছাউনির কাজ এখনও শেষ করে কাউন্টার দেয়া হয়নি। তাই সেখানে বাস থামেনি। শাহবাগের কাউন্টারেও যাত্রীছাউনি নেই। রমনা পার্ক এলাকায় দুজনকে নামানো হয় কাউন্টার ছাড়া। তখন সিগন্যালে গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল।
রমনা পার্ক এলাকার টিকিট কাউন্টার পেরোলে মতিঝিল শাপলা চত্বরের আগে কাউন্টার নেই। ফলে গুলিস্তানের যাত্রীদের পল্টনের আগে মেহেরবা প্লাজার সামনে নামানো হয়।
এক নারী যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, গুলিস্তান যেতে চেয়ে কাউন্টারে টিকিট চাইলে তাকে গুলিস্তানের কথা বলে টিকিট দেয়া হয়। কিন্তু গাড়ি গুলিস্তান রুটের না হওয়ায় ওই নারীকে পল্টনে নামতে হয়। এতে ওই নারী হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন।
মতিঝিল সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে তিনজনকে নামানো হয় স্টপেজ ছাড়া। মতিঝিল থেকে আরামবাগ মোড়ে গাড়ি ঘোরানোর সময় একজনকে নামানো হয় স্টপেজ ছাড়া। মতিঝিল ওভারব্রিজের নিচে কাউন্টার আছে, যাত্রীছাউনি নেই।
মতিঝিল আইসিবি ব্যাংকের বিপরীত পাশে সামনে যাত্রীছাউনির কাজ এখনও শেষ করে কাউন্টার দেয়া হয়নি, তাই বাস এই স্টপেজে থামেনি। সায়েদাবাদ লেভেল ক্রসিংয়ের আগে কাউন্টার আছে, যাত্রীছাউনি নেই। উত্তর যাত্রাবাড়ীতেও (সায়েদাবাদ ব্রিজের উত্তর-পূর্ব পাশে) কাউন্টার আছে, যাত্রীছাউনি নেই।
যাত্রাবাড়ী বিটিসিএলের সামনে কাউন্টারের সামনে আবর্জনার স্তূপ। অন্য পরিবহনের গাড়ির কারণে এই কাউন্টারের সামনে জটলা বেঁধে ছিল। বেলা ১টা ২০ মিনিটে কাউন্টারে টিকিট বিক্রেতা ছিলেন না। তাই দুজন টিকিট ছাড়া গাড়িতে ওঠেন। ড্রাইভার নিষেধ করলে তারা বলেন, হেলপার উঠতে বলেছে। পরে রায়েরবাগ স্টপেজ থেকে তাদের টিকিট দেয়া হয়।
শনির আখড়ায় কাউন্টার আছে, যাত্রীছাউনি নেই। বেলা ১টা ৩৮ মিনিটে বাস কাউন্টারে পৌঁছালে যাত্রী নিতে পারেনি। কারণ কাউন্টারে টিকিট বিক্রেতা ছিলেন না। তবে সেখানে অন্য সব পরিবহনের কাউন্টারে টিকিট বিক্রেতা ছিলেন।
মাতুয়াইল মেডিক্যাল বাসস্ট্যান্ডে কাউন্টার আছে, যাত্রীছাউনি নেই। এখানে একটু সামনে গিয়ে যাত্রী নামানো হয় চলন্ত বাস থামিয়ে। কারণ হিসেবে ড্রাইভার হেলপারকে বলেন, সামনে কাউন্টার নেই। সাইনবোর্ড স্টপেজে কাউন্টার আছে, যাত্রীছাউনি নেই। শিমরাইলে কাউন্টার ছাড়া চলন্ত গাড়ি থামিয়ে যাত্রী নামানো হয়।
চিটাগাং রোড পর্যন্ত গাড়ি গিয়ে সব যাত্রী নামিয়ে একটু সামনে ব্রিজের নিচে দিয়ে গাড়ি ইউটার্ন করে ঘাটারচর ফেরার উদ্দেশে লাইনে দাঁড়ায়। তখন সময় বেলা ২টা।
কী বলছেন এই বাসের ড্রাইভার
সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা হয় এই বাসের চালকের সঙ্গে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্টপেজগুলো মেইন বাসস্ট্যান্ড থেকে একটু সামনে হওয়ায় যাত্রীরা এখনও টিকিট কাউন্টার ওভাবে চিনে উঠতে পারেনি। এ কারণে যাত্রী কম হচ্ছে, গাড়ি ফাঁকা থাকছে।’
স্টপেজ ছাড়া যাত্রী নামানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কয়েকটি জায়গায় স্টপেজ ছাড়া যাত্রী নামাতে হয়েছে। কারণ যাত্রীরা এখনও সেবাটা বুঝে উঠতে পারেননি। আমরাও ঝামেলা না করে কিছু কিছু জায়গায় নামিয়েছি। রমনা পার্কের পরে টিকিট স্টপেজ মতিঝিলে। এই লম্বা জায়গায় স্টপেজ না থাকায় কয়েক জায়গায় যাত্রী নামাতে হয়েছে। না হলে যাত্রীদের হয়রানি হতো।’
নতুন জায়গায় কাউন্টারের সমস্যার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যাত্রাবাড়ী থেকে চিটাগাং রোড পর্যন্ত বেশির ভাগ জায়গায় বড় ছাতা টাঙিয়ে টিকিট কাউন্টার করা হয়েছে। এই জায়গায় রাস্তার পাশে বাস দাঁড়িয়ে থাকায় টিকিট কাউন্টার চিনতে ঝামেলা হয়েছে। এ কারণে কয়েকটি কাউন্টারের একটু সামনে গিয়ে থামাতে হয়েছে বাস। যদি চিহ্ন হিসেবে একটা উঁচু নিশান টানিয়ে রাখত, তাহলে কাউন্টার চিনতে সুবিধা হতো।’
মেয়রের কথায় যাত্রীদের ক্ষোভ
নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে ১৯ ডিসেম্বর বাস রুট র্যাশনালাইজেশন কমিটির ২০তম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘সব মিলিয়ে ১০০টি বাস দিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি। আগামী ২৬ ডিসেম্বর আমরা ট্রান্সসিলভার নতুন ২০টি বাস এবং বিআরটিসির ৩০টি ডাবল ডেকার বাস মেরামত করে সূচনা করব। বাকি কার্যক্রম ৬০ দিবসের মধ্যে পূর্ণভাবে এই যাত্রাপথ বাস্তবায়ন করতে পারব বলে আমরা আশাবাদী।’
তবে ট্রান্সসিলভার বাসগুলো নতুন নয় বলে দাবি করছেন যাত্রীরা। এই রুটের বেশ কয়েকজনের অভিজ্ঞতার কথা জানতে চাইলে তারা বলেন, ট্রান্সসিলভার বাসগুলো সব পুরোনো। এগুলো রং করে রাস্তায় নামানো হয়েছে।
মোহাম্মদপুর থেকে সায়েন্সল্যাব যাবেন মো. আহাদ। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘গতকাল থেকে আজ পর্যন্ত এই রাস্তায় ছয়বার যাওয়া-আসা হয়েছে আমার। এর মধ্যে চারবার ট্রান্সসিলভার কোম্পানির বাসে উঠেছি। সবগুলো বাস পুরোনো।’
এই পরিবহন সেবায় যুক্ত হতে আটটি প্রতিষ্ঠান আবেদন করে। এর মধ্যে বিআরটিসিসহ পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে সুযোগ দেয়া হয়েছে। ঢাকা নগর পরিবহনের চালকদের শনাক্তে দেয়া হয়েছে ইউনিফর্ম ও আইডি কার্ড।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে রোববার দুপুর ১২টার দিকে ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ বাস রুট পাইলটিংয়ের উদ্বোধন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে সচিবালয় থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ধীরে ধীরে এ সেবার বিস্তার হবে। আরও নতুন রুট যুক্ত হবে। রাজধানী ও আশপাশের এলাকার জন্য ৪২টি রুট করার পরিকল্পনা আছে।’
ঢাকা নগর পরিবহনে ঘাটারচর-কাঁচপুর রুটে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরত্বে সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা; সর্বোচ্চ ভাড়া ৫৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি কিলোমিটার ২ টাকা ১৫ পয়সা হিসেবে ভাড়া পরিশোধ করতে হবে।
আরও পড়ুন:উপজেলা নির্বাচন থেকে মন্ত্রী ও এমপিদের স্বজনরা সরে না দাঁড়ালে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বুধবার দলের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
কাদের বলেন, ‘দলীয় সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রীদের নিকটাত্মীয় এবং স্বজনদের প্রার্থী না হতে দলীয় যে নির্দেশনা, তা না মানলে সময়মতো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় পেরিয়ে গেছে। এদের মধ্যে অনেকেই বলেছেন যে, আমরা বিষয়টি আরও আগে অবহিত হলে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হতো। তারপরও কেউ কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন, কেউ কেউ করেননি।
‘নির্বাচন কমিশনে সময়সীমা শেষ হয়ে গেলে কেউ ইচ্ছা করলে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারেন। এ বিষয়টা চূড়ান্ত হতে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এখানে কেউ অমান্য করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে দলে; সময়মতো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়ে কাদের বলেন, ‘আমাদের দলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের বিষয়টি আছে। দল যার যার কর্মকাণ্ড বিবেচনায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নিয়ে থাকে। চূড়ান্ত পর্যায়ে যারা প্রত্যাহার করবে না, এ ব্যাপারে দলের সিদ্ধান্ত সময়মতো নেয়া হবে।’
চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেও কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে কি না, এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সাধারণ ক্ষমা একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে দলীয় রণকৌশল। সেটা হতেই পারে। সেটা দলের সভাপতি নিতে পারেন। নির্বাচন হওয়া পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ আছে।’
বিএনপির সমাবেশের দিনে আওয়ামী লীগেরও সমাবেশ থাকে—সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির সন্ত্রাস থেকে জনগণকে রক্ষায় কর্মসূচি দেয় আওয়ামী লীগ। বিএনপি একতরফা সমাবেশ করতে গেলে সন্ত্রাস, আগুন সন্ত্রাসের আশঙ্কা থেকেই যায়। জনগণের জানমাল রক্ষায় সরকারি দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব আছে।
‘আমরা মাঠে থাকলে তারা এসব অপকর্ম করতে মানসিকভাবে চাপে থাকবে। সে জন্য আমরা কর্মসূচি দিই। বিএনপির চোরাগোপ্তা হামলা প্রতিহত করতে জনগণের স্বার্থে আমাদের কর্মসূচি থাকা উচিত।’
আরও পড়ুন:গ্যাস পাইপলাইনের জরুরি কাজের জন্য বুধবার তিন ঘণ্টা রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় গ্যাস থাকবে না।
এদিন দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ অবস্থা বিরাজ করবে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের তথ্য অনুযায়ী, যেসব এলাকায় সব শ্রেণির গ্রাহকদের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে সেগুলো হলো- শনির আখড়া, বড়ইতলা, ছাপড়া মসজিদ, দনিয়া, জুরাইন, ধোলাইরপাড় ও কদমতলী।
আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহে চাপ কম থাকতে পারে জানিয়ে গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তিতাস গ্যাস।
রাজধানীর সদরঘাটের শ্যামবাজার ঘাটে একটি লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে ওই আগুনের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এমভি বাঙালি নামের লঞ্চটিতে কোনো যাত্রী ছিল না।
ফায়ার সার্ভিসের গণমাধ্যম কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানিয়েছেন, দুপুর ১টা ৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় চারটি ইউনিট। পরে যোগ দেয় আরও একটি ইউনিট।
তিনি জানান, দুপুর পৌনে ২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। লঞ্চটির তৃতীয় তলায় আগুনের সূত্রপাত। আগুনের কারণ ও বিস্তারিত তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, লঞ্চটি নোঙর করা ছিল। হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) গেছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি।
মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে শেখ হাসিনা আমিরকে টাইগার গেটে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান। খবর বাসসের
তারা সেখানে একান্ত বৈঠকেও মিলিত হবেন। পরে তারা দুই দেশের মধ্যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর প্রত্যক্ষ করবেন।
পিএমও ত্যাগের আগে আমির টাইগার গেটে রক্ষিত ভিজিটরস বুকেও সই করবেন। এরপর তিনি বঙ্গভবনে যাবেন যেখানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কাতার আমিরের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছেন।
সন্ধ্যায় আমির একটি বিশেষ বিমানে কাতারের উদ্দেশে যাত্রা করবেন।
রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ আমন্ত্রণে কাতারের আমির সোমবার দু দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা এসেছেন।
আগামী ২৬ এপ্রিলের (শুক্রবার) শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ স্থগিত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সমাবেশের অনুমতি চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন করা হয়েছিল, কিন্তু অনুমতি দেয়া হয়নি। ফলে সমাবেশ আপাতত স্থগিত। শান্তি সমাবেশের তারিখ পরে জানানো হবে।’
প্রসঙ্গতঃ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে এ শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
রোববার (২১ এপ্রিল) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের ঘোষণা দেয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বেলা ৩টা থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করা হবে।
অবশ্য এর আগে গত শনিবার (২০ এপ্রিল) চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ দলের নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে ২৬ এপ্রিল বিকেলে নয়াপল্টনে সমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। পরে তাপপ্রবাহের কারণ দেখিয়ে সোমবার তা স্থগিত করে দলটি।
রাজধানীর গুলিস্তানে গোলাপ শাহ মাজারের সামনে থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার সকাল ৯টার দিকে ৪০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে পাঠানো হয়।
শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আরিফ নেওয়াজ বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল গোলাপ শাহ মাজার সংলগ্ন ফুটপাত থেকে ওই মরদেহ উদ্ধার করি,পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে ঢাকা মেডিক্যালের মর্গে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, আশেপাশের লোকদের সাথে কথা বলে জানতে পারি, মৃত ব্যক্তি ভবঘুরে প্রকৃতির ছিলেন। ভিক্ষাবৃত্তি করতেন এবং সেখানে ঘুমাতেন। তার পরিচয় এখনো জানা যায়নি তবে জানার চেষ্টা চলছে।
এসআই বলেন, সিআইডির ক্রাইম সিনকে খবর দেয়া হয়েছে। ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে হয়তো তার পরিচয় জানা যেতে পারে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ মর্গে রাখা হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবসে নিম্ন মানে শীর্ষে না থাকলেও অস্বাস্থ্যকরই রয়ে গেছে ঢাকার বাতাস।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানি আইকিউ এয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ সময় সোমবার সকাল ৯টা ৫৯ মিনিটে ১২০ স্কোর নিয়ে ১২২টি শহরের মধ্যে বায়ুর নিম্ন মানে অষ্টম ছিল ঢাকা।
একই সময়ে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে ছিল নেপালের কাঠমান্ডু, চীনের বেইজিং, ও থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই।
আইকিউএয়ার জানিয়েছে, আজ দিনের ওই সময়ে ঢাকার বাতাসে অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ৮ দশমিক ৭ গুণ বেশি।
নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর, তা জানায় আইকিউএয়ার।
কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।
৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।
আইকিউএয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।
১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।
র্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।
তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।
আজ সকাল ৯টা ৫৯ মিনিটে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১২০। এর মানে হলো ওই সময়টাতে সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর ছিল ঢাকার বাতাস।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য