নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে আইন প্রণয়নের দাবি রাজনৈতিক দলগুলোর দীর্ঘদিনের। এ বিষয়ে একমত রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদও। সোমবার বঙ্গভবনে তরিকত ফেডারেশনের সঙ্গে সংলাপে রাষ্ট্রপতি এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন।
বঙ্গভবনে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের এমন তথ্য জানিয়েছেন তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী। এর আগে বিকেল ৪টায় বঙ্গভবনে সংলাপে অংশ নেয় দলের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
ঘণ্টাব্যাপী সংলাপ শেষে বেরিয়ে এসে নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা চার দফা প্রস্তাব দিয়েছি। তার মধ্যে আইন প্রণয়নের কথাও রয়েছে। সংবিধানের ১১৮ (১) ধারায় আইনের মাধ্যমে ইসি গঠনের কথা বলা আছে।
‘আমাদের হাতে এক মাস সময় আছে। এই মুহূর্তে আইন করা না গেলেও ভবিষ্যতে আইন করতে হবে। এটা ইতোমধ্যে জনগণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। আইনমন্ত্রীও বলেছেন যে তিনি এ বিষয়ে একমত। এর যেন ব্যত্যয় না ঘটে তার জন্য রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ করেছি।’
মাইজভাণ্ডারী বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি আমাদের মতামতকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি নিজেও চান দ্রুত আইন হোক। একই সঙ্গে বলেছেন- এতে আইনের যে প্রক্রিয়া আছে তাতে আলাপ-আলোচনার ব্যাপার আছে। তিনি এ বিষয়ে কথা বলবেন।
‘আইনের পক্ষে মতামত দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, যেহেতু একটু সময় দরকার। এটি সময় নিয়ে করলেই ভালো। আলোচনা করে…, প্রয়োজনে আমিও বসতে পারি। সরকারও বসতে পারে। আলোচনা করে একটি খসড়া তৈরি করে সংসদে পাস হলো।’
ইসি গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপ ছাড়াও সুশীল সমাজের সঙ্গেও সংলাপ চায় তরিকত ফেডারেশন। একই সঙ্গে ইসি গঠনের সার্চ কমিটিতে একজন সাংবাদিক রাখার প্রস্তাব তাদের।
সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি গঠন হতে পারে- এমন ইঙ্গিত রাষ্ট্রপতি দিয়েছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মাইজভাণ্ডারী বলেন, ‘উনি ইঙ্গিত না দিলেও, আমি মনে করি সার্চ কমিটির মাধ্যমেই ইসি গঠন হবে।’
এমনটা মনে করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি নিজে একজন আইনপ্রণেতা। বহুকাল ধরে সংসদে আছি। আইন করাটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। কারণ কাল আইন করলে পরশুই প্রশ্ন উঠবে।’
নজিবুল বশর বলেন, ‘আমাদের দ্বিতীয় প্রস্তাব হলো- নিবন্ধিত দলগুলো ছাড়াও সুশীল সমাজের সঙ্গে সংলাপ করা। এতে সব পেশাজীবীর মানুষ রয়েছে। তবে সেটা অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের মতাদর্শের হতে হবে। তাহলে ইসি গঠন প্রক্রিয়া অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য হবে। আর মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী বা তাদের পরিবারের কাউকে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেয়া যাবে না।’
নজিবুল বশর ভাণ্ডারী বলেন, ‘লিখিত প্রস্তাবের বাইরে রাষ্ট্রপতিকে বলেছি- নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনেকের গঠনতন্ত্র সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এদের কেউ নিবন্ধন পেতে পারে না। উনি কোনো ব্যবস্থা না নিলে আমরা মামলা করব। এটা ওনাকে জানিয়েছি।’
অতীতে গত দুই সংলাপেও আইন প্রণয়নের কথা বলেছিলেন। কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। একজন সংসদ সদস্য হিসেবে আমি এ জন্য দুঃখিত। বঙ্গবন্ধু সংবিধানে আইনের কথা বলেছিলেন। কিন্তু সেটার বাস্তবায়ন কোনো সরকারই করেনি।’
আরও পড়ুন:চুরি হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস অফিসের মঙ্গলবার রাতের এক বিবৃতিতে সরকারের এই অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘আমরা জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচারের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ এবং চুরি হওয়া অর্থ বাংলাদেশের জনগণের কাছে ফেরত আনতে বিশ্বজুড়ে অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করব।’
অর্থ পাচারের ঘটনায় বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ ন্যায়বিচার দাবি করে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, জনগণের অর্থ ও সম্পদ চুরির ঘটনা এবং বিগত সরকারের লোকজন যারা এ সম্পদ চুরির সঙ্গে জড়িত, তা পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আওতায় আনা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘যদি আত্মসাৎ থেকে লাভবান হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে আমরা আশা করি সেই সম্পদ বাংলাদেশে ফেরত দেওয়া হবে, যেখানে জনগণ এর ন্যায্য মালিক।’
লন্ডনের দ্য সানডে টাইমস পত্রিকাকে এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস টিউলিপ সিদ্দিক সম্পর্কে বলেন, তিনি হয়তো লন্ডনে সুনির্দিষ্ট অর্থ ও সম্পত্তির উৎস সম্পর্কে সচেতন ছিলেন না, তবে এখন তিনি তা জানেন। তাকে অবশ্যই বাংলাদেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে সরকার কাজ করছে, যাতে জনগণের অর্থ চুরি হওয়ার ঘটনা চিহ্নিত ও তা উদ্ধার করা যায়।
এ ধরনের সহযোগিতা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অপরাধের নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘আমরা আশা করি এবং বিশ্বাস করি, যুক্তরাজ্যসহ সব বন্ধুপ্রতিম সরকার এই অপরাধগুলোর জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়াবে। দুর্নীতি, যারা এটি করে, তারা এবং তাদের কিছু প্রিয় আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব ছাড়া বাকি সকলকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে।
‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ৫ বিলিয়ন ডলারের দুর্নীতির তদন্ত পূর্ববর্তী সরকারের দুর্নীতির মাত্রা কেমন ছিল, তা চিহ্নিত করেছে। এ ধরনের প্রকল্পে জনগণের সম্পদের অপব্যবহার শুধু বাংলাদেশের জনগণকে বঞ্চিত করেনি, বরং দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতার পথেও বাধা সৃষ্টি করেছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কোটি কোটি ডলারের সরকারি তহবিল চুরি বাংলাদেশকে একটি উল্লেখযোগ্য আর্থিক ঘাটতির মধ্যে ফেলেছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বাংলাদেশ থেকে চুরি করা তহবিল তার জনগণের। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য আমরা আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সাথে কাজ চালিয়ে যাব।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে অবস্থানরত অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
৩১ জানুয়ারির মধ্যে বৈধ কাগজপত্র করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরীর স্বাক্ষর করা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘অনেক বিদেশি নাগরিক অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন/কর্মরত আছেন। এমতাবস্থায় অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত/কর্মরত ভিনদেশি নাগরিক যারা ইতোপূর্বে সতর্কীকরণে বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আগামী ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখের মধ্যে বাংলাদেশে অবস্থানের বা কর্মরত থাকার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বৈধতা অর্জন করবেন না তাদের বিরুদ্ধে The foreigners Act, 1946 অনুসারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
গায়ে কাফনের কাপড় জড়িয়ে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো অনশন কর্মসূচি পালন করছেন পুলিশের ৪০তম ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) ব্যাচ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্তরা।
সচিবালয়ে ১ নম্বর গেটের বিপরীতে উসমানী উদ্যান সংলগ্ন রাস্তায় মঙ্গলবার অনশন কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
এর আগে সোমবার বিকেল সাড়ে তিনটায় সংবাদ সম্মেলনে তারা আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন।
অব্যাহতি পাওয়া ক্যাডেট এসআই নিশিকান্ত বলেন, ‘মনে হচ্ছে আমাদের কোনো অভিভাবক নেই। রাষ্ট্র আমাদের নাগরিক মনে করে কি না, জানি না। দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মসূচি চলতে থাকবে।
‘৪৩তম বিসিএসে যারা বঞ্চিত তাদের দাবিগুলো পুলিশের মাধ্যমে ভেতরে পৌঁছাচ্ছে, কিন্তু আমাদের মেসেজগুলো সেভাবে পৌঁছাচ্ছে কি না, জানি না।’
সুবীর নামে অব্যাহতি পাওয়া আরেক ক্যাডেট এসআই বলেন, ‘একটা চাকরির জন্য আজ আমরা রাস্তায়। আমাদের কী দোষে এত বড় শাস্তি দিচ্ছে, জানি না। আমাদের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত।
‘আমরা এখনও অনশন করছি। দাবি পূর্ণ না হওয়া অবধি এটা চলবে। আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি এখনও নির্ধারিত হয়নি।’
রাজশাহীর সারদায় পুলিশ একাডেমিতে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ৩১০ এসআইকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
অব্যাহতি দিয়ে ক্যাডেট এসআইদের যে চিঠি দেওয়া হয়েছিল, তাতে বলা হয়েছিল, ‘আপনি বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৪০তম ক্যাডেট এসআই/২০২৩ ব্যাচে গত ২০২৩ সালে ৫ মে এক বছর মেয়াদি মৌলিক প্রশিক্ষণরত আছেন। বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি প্যারেড মাঠে গত ১ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল ৭টা ২৫ মিনিট থেকে ৪০তম বিসিএস (পুলিশ) প্রফেশনালস ব্যাচ-২০২৩-এর সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুশীলন প্যারেড কার্যক্রম চলমান ছিল।
‘এ সময়ে পুলিশ একাডেমি কর্তৃক পূর্বনির্ধারিত মেন্যু অনুযায়ী প্যারেডে অংশগ্রহণকারী সব প্রশিক্ষণার্থীকে প্যারেড বিরতিতে সকালের নাশতা পরিবেশন করা হয়। কিন্তু আপনি (প্রশিক্ষণার্থী এসআই) ওই সরবরাহ করা নাশতা না খেয়ে হইচই করে মাঠে চরম বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করেন।
‘আপনি অন্য প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআইদের পরস্পর সংগঠিত করে একাডেমি কর্তৃপক্ষকে হেয় প্রতিপন্ন করে চরম বিশৃঙ্খলা ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করতে থাকেন। এ ছাড়াও আপনি অন্যদের সঙ্গে হইচই করতে করতে নিজের খেয়াল খুশিমতো প্রশিক্ষণ মাঠ থেকে বের হয়ে নিজ ব্যারাকে চলে যান।’
আরও পড়ুন:দেশের বৃহত্তর স্বার্থে চলতি বছরের আগস্টের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা মনে করি এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব।’
দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পরের দিন মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবির কথা জানান।
এর আগে সোমবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অংশ নেন নেতারা।
চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন আয়োজনে পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, নির্বাচন কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, যেহেতু নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং প্রশাসনে আপেক্ষিক স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে, তাই নির্বাচন পেছানোর কোনো কারণ নেই।’
বিএনপির বর্ষীয়ান এ রাজনীতিক বলেন, সরকার গঠিত নির্বাচন সংস্কার কমিশনও বুধবার তাদের প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে।
ফখরুল বলেন, ‘তাই নির্বাচন পেছানোর কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে আমরা মনে করি না। যত বিলম্ব হবে, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট তত গভীর হবে।’
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন যে, নির্বাচিত সরকারের কোনো বিকল্প নেই। কারণ এটি গণতন্ত্রের ভিত্তি।
আরও পড়ুন:চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে ফের সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন পুলিশের ৪০তম ব্যাচের অব্যাহতিপ্রাপ্ত শিক্ষানবিশ উপপরিদর্শকরা (এসআই)।
আব্দুল গনি রোডে সচিবালয়ের ১ ও ২ নম্বর গেটের বিপরীত পাশে সোমবার সকাল থেকে অবস্থান নেন তারা।
বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে তারা শান্তিপূর্ণভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তারা দাবি পূরণে কোনো আশ্বাস না পেলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানান।
অব্যাহতি পাওয়া এসআইদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘ট্রেনিং থেকে অন্যায়ভাবে অব্যাহতি দেওয়ার প্রতিবাদ ও চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে আমরা ৩২১ জন সাব-ইন্সপেক্টর গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করি। আমাদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র সচিব দেখা করে আমাদের দাবির বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
‘এখন পর্যন্ত আমাদের বিষয়ে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে না পাওয়ায় আমরা সবাই (৩২১ জন) আজ আবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলমান থাকবে।’
অব্যাহতি পাওয়া এসআই অম্লান মিত্র বলেন, ‘আমি ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর ট্রেনিংয়ে অংশ নিই। অব্যাহতি দেওয়া হয় ২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর। আমাকে বলা হচ্ছে ক্লাসে অমনোযোগী এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী। কিন্তু আমি অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষায় ৮০৪ জনে ১০০ জনের মধ্যে ছিলাম। অমনোযোগী থাকলে তো এমন ফলাফল হওয়ার কথা না।’
কর্মসূচিতে আসা আরেকজন নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘আমরা এক বছর অনেক ত্যাগ স্বীকার করে প্রায় বিনা বেতনে ট্রেনিং করেছি। যখন চাকরিতে নিয়মিত হব, তখনই আমাদের বাদ দেওয়া হলো। এর থেকে কষ্টের আর কিছু হতে পারে না।’
৪০তম ক্যাডেট এসআই ব্যাচে প্রশিক্ষণের জন্য মোট ৮২৩ জন ছিলেন। তারা গত বছরের ৪ নভেম্বর থেকে রাজশাহীর সারদায় পুলিশ একাডেমিতে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ শুরু করেন।
তাদের মধ্যে তিন ধাপে ৩১৩ জন এসআইকে মাঠে ও ক্লাসে বিশৃঙ্খলার অভিযোগ তুলে শোকজ করে একাডেমি। এরই মধ্যে তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি) সদ্য নিয়োগ পাওয়া ছয় সদস্যের নিয়োগ বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল হায়াত মো. রফিকের সই করা প্রজ্ঞাপনে সোমবার এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি কর্মকমিশনে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত নিম্ন বর্ণিত ছয় সদস্যের নিয়োগ আদেশ বাতিল করা হলো।
নিয়োগ বাতিল করা ছয় সদস্য হলেন অধ্যাপক ড. শাহনাজ সরকার, মো. মুনির হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. এ এফ জগলুল আহমেদ, ড. মো. মিজানুর রহমান, সাব্বির আহমেদ চৌধুরী ও অধ্যাপক ডা. সৈয়দা শাহিনা সোবহান।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।
দেশে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসের (এইচএমপিভি) প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এক বিজ্ঞপ্তিতে অধিদপ্তর জানায়, চীনসহ উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে ভাইরাসটি উদ্বেগজনকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে ১৪ বছরের কম বয়সী শিশু ও ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের মধ্যে এ সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘সেই সাথে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা, যেমন: হাঁপানি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, গর্ভবতী নারী ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য উচ্চ ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে।’
পৃথিবীর অন্যান্য অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও এই রোগের সংক্রমণ দেখা গেছে। কিন্তু রোগটি যাতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সে জন্য বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সংক্রমণ প্রতিরোধে নির্দেশনা
১. শীতকালীন শ্বাসতন্ত্রের রোগ থেকে বাঁচতে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে
২. হাঁচি-কাশির সময় বাহু/টিস্যু দিয়ে নাক মুখ ঢেকে রাখুন
৩. ব্যবহৃত টিস্যুটি অবিলম্বে ঢাকনাযুক্ত ময়লা ফেলার ঝুড়িতে ফেলুন এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার অথবা সাবান পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন
৪. আক্রান্ত হয়েছেন এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন এবং কমপক্ষে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন
৫. ঘন ঘন সাবান ও পানি কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুইতে হবে(অন্তত ২০ সেকেন্ড)
৬. অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক, মুখ ধরবেন না
৭. আপনি জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে থাকুন। প্রয়োজনে কাছের হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা রোববার জানান, বাংলাদেশের এক নারী এইচএমপিভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এইচএমপিভি না, নিউমোনিয়ার কারণে তার স্বাস্থ্যের অবস্থার অবনতি ঘটেছে। বর্তমানে ঢাকার একটি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন।
চীনের উত্তরাঞ্চলে রোগটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে এতে আরেকটি মহামারির ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ ভাইরাস থেকে সুরক্ষায় নাগরিকদের পূর্ব সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছে চীনের রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (সিডিসি)।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিয়াং জানান, শীত মৌসুমে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগটির সংক্রমণ বেশি ঘটে। তবে আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার কমই ছড়িয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য