লভ্যাংশের কারণে কোম্পানির শ্রেণি উন্নত হলে মার্জিন ঋণ মিলবে- নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি এমন নির্দেশনা জারির তিন কর্মদিবস পর সূচক বাড়ল পুঁজিবাজারে। তবে লেনদেন কমে গেছে আরও।
আগের দিন ৭২ পয়েন্ট সূচক পতনের স্মৃতি নিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবস সকালে লেনদেন শুরুই হয় সূচক বেড়ে। সাড়ে চার ঘণ্টার কোনো একটি সময়ও সূচক কমে লেনদেন হয়নি।
তবে বেলা ১১টা ৩ মিনিটে আগের দিনের তুলনায় সূচক ৬৫ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হলেও দিন শেষে সেই অবস্থান ধরে রাখা যায়নি। শেষ পর্যন্ত ৩৯ পয়েন্ট বেড়ে শেষ হয় লেনদেন।
গত ৭ ডিসেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসিকে নিয়ে বৈঠকের পর ১৩ কর্মদিবসে সূচক পড়েছে ১০ দিন। বাকি তিন দিন বেড়েছে সামান্যই।
সেই বৈঠকে জানানো হয়, ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আবার বৈঠকে বসলে একটি ঘোষণা আসবে। তবে ডিসেম্বরে এই বৈঠক আর হচ্ছে না, এটা নিশ্চিত। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেও হবে কি না, তা নিয়েও সুনির্দিষ্ট তথ্য মিলছে না।
এক বছরেরও বেশি সময় চাঙাভাবের পর ১২ সেপ্টেম্বর থেকে পুঁজিবাজারে যে দরপতন শুরু হয়, তার মধ্যে বাজার নিয়ে বিএসইসির সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতভিন্নতার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে।
পুঁজিবাজারে ব্যাংকের যে বিনিয়োগসীমা, সেটি শেয়ারের ক্রয়মূল্যে নাকি বাজারমূল্যে বিবেচনা হবে, বন্ডে বিনিয়োগ এই সীমার ভেতরে থাকবে, নাকি বাইরে থাকবে- এ বিষয়ে একমত হতে পারছে না দুই পক্ষ। আবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি ব্যাংকগুলোকে পারপেচুয়াল বন্ড ছেড়ে মূলধন বাড়ানোর যে ইঙ্গিত দিয়েছে, তা দিয়ে ব্যাসেল-থ্রি এর শর্ত পূরণ করা যাবে না।
দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে এই দূরত্বের কারণে বহু বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি করে বসে আছেন। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও নতুন বিনিয়োগে যাচ্ছেন না। সেই সঙ্গে অর্থবছর শেষের বিক্রয় চাপ আছেই।
তিন কর্মদিবস পর সূচকে পয়েন্ট যোগ হলেও লেনদেনে খরা কাটেনি, বরং আগের দিন যে পরিমাণ লেনদেন হয়েছিল, তার চেয়ে দেড় শ কোটি টাকার কম শেয়ার হাতবদল হয়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অস্বস্তি রয়ে গেছে।
হাতবদল হয়েছে ৭৪৫ কোটি ১০ লাখ ১৮ হাজার টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ৮৮৫ কোটি ৬১ লাখ ৩৭ লাখ টাকা।
সেই পাঁচ কোম্পানির কী চিত্র
আগের দিন বিএসইসি এক আদেশে জানায়, জেড ক্যাটাগরির কোনো কোম্পানি যদি ক্যাটাগরি পরিবর্তন করে উচ্চতর ক্যাটাগরিতে উন্নীত হয়, তাহলে সে কোম্পানির বিপরীতে ঋণসুবিধা দেয়া যাবে।
এত দিন ক্যাটাগরি পাল্টালে ৩০ কর্মদিবস ঋণ পাওয়া যেত না, এখন থেকে পাওয়া যাবে ৭ কর্মদিবস পড়েই।
কোনো কোম্পানি লভ্যাংশ না দিলে বা ওটিসি মার্কেট থেকে মূল মার্কেটে এলে সেটি ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন হয়। যেসব কোম্পানি ১ থেকে ৯ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়, সেগুলো ‘বি’ ক্যাটাগরিতে, যেগুলো নতুন তালিকাভুক্ত হয়, সেগুলো ‘এন’ ক্যাটাগরিতে এবং যেগুলো কমপক্ষে ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়, সেগুলো ‘এ’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন হয়।
বিএসইসির এই আদেশের পর গত জুনে লভ্যাংশ ঘোষণা করা পাঁচ কোম্পানির শ্রেণি পরিবর্তন হয়ে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে উন্নীত হবে। এর মধ্যে বেক্সিমকো ছাড়া বাকিগুলোর অবশ্য সূচকে প্রভাব নেই তেমন। বাকি এই কোম্পানিগুলো হলো বিকন ফার্মা, ভিএসএফ থ্রেডও, ম্যাকসন্স স্পিনিং ও তওফিকা ফুডস।
এর মধ্যে চারটি কোম্পানি ‘বি’ শ্রেণি থেকে ‘এ’ শ্রেণিতে উন্নীত হবে। আর তওফিকা ‘এন’ থেকে আসবে ‘এ’তে।
এর মধ্যে বেক্সিমকোর শেয়ারদর বেড়েছে ৩ টাকা ৪০ পয়সা। কয়েক দিন পর লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে কোম্পানিটি।
অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে তওফিকা ফুডসের শেয়ারদর ১০ পয়সা কমেছে, ভিএসএফ ফ্রেডের বেড়েছে ৩০ পয়সা, ম্যাকসন্স স্পিনিংয়ের বেড়েছে ৫০ পয়সা। সর্বোচ্চ ৭ টাকা ৮০ পয়সা বেড়েছে বিকন ফার্মার।
সূচক বৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকায় যেসব কোম্পানি
সূচকে সবচেয়ে বেশি ৭.৮৭ পয়েন্ট যোগ করেছে স্কয়ার ফার্মা। কোম্পানিটির শেয়ারদর বেড়েছে ১.৭৪ শতাংশ।
দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল বেক্সিমকো লিমেটেড। ২.৩ শতাংশ দর বৃদ্ধিতে কোম্পানিটি সূচকে যোগ করেছে ৭.১৫ পয়েন্ট।
রবি, ম্যারিকো, ইউনাইটেড পাওয়ার, আইসিবি, ওরিয়ন ফার্মা, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ব্র্যাক ব্যাংক ও সিটি ব্যাংকও সূচকে বেশ ভালো পয়েন্ট যোগ করতে পেরেছে। সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানিই সূচক বাড়িয়েছে ৩৪.৩৩ পয়েন্ট।
অন্যদিকে ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো সূচক নিচের দিকে টেনে ধরার চেষ্টা করেছে। কোম্পানিটির শেয়ারদর ০.৫৪ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ৪.৩৪ পয়েন্ট। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪.১৪ পয়েন্ট সূচক ফেলেছে ওয়ালটন। কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে ০.৫০ শতাংশ।
অন্যান্য কোম্পানির মধ্যে লাফার্জ হোলসিম, গ্রামীণ ফোন, বেক্সিমকো ফার্মা, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স, এনবিএল, ব্যাংক এশিয়া, গ্রিনডেল্টা ইন্স্যুরেন্স ও ট্রাস্ট ব্যাংকও সূচক নিচের দিকে টেনে ধরেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক ফেলেছে ২০.৩৬ পয়েন্ট।
সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে যে ১০ কোম্পানি
সবচেয়ে বেশি ১০ শতাংশ দর বেড়েছে প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের। এর আগে তিন কর্মদিবস শেয়ার দর কমেছিল শেয়ারের। ১০ কোটি ১৪ লাখ টাকার ১৩ লাখ ৯১ হাজার ১৭১টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা রাষ্ট্রায়াত্ত বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৯১ শতাংশ। ৫৫ টাকা ৫০ পয়সা দরের শেয়ার পৌঁছেছে ৬১ টাকায়।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা আরেক সরকারি কোম্পানি এটলাস বাংলাদেশের শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৮৩ শতাংশ।
চতুর্থ অবস্থানে থাকা শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজের দর বেড়েছে ৭.৩০ শতাংশ। ২৬ টাকার শেয়ার বেড়ে হয়েছে ২৭ টাকা ৯০ পয়সা। ৩১ লাখ ৭৮ হাজার টাকায় হাতবদল হয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার ২৩৯টি শেয়ার।
পঞ্চম অবস্থানে থাকা বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমের দর বেড়েছে ৬.৭৯ শতাংশ।
এছাড়া অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের দর যার ১৪ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ৬.৭১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১৫ টাকা ৯০ পয়সা। ওরিয়ান ফার্মার দর যার ৫.৮৯ শতাংশ, জেনারেশন নেক্সেটের দর ৫.৪৫ শতাংশ এবং বিডি ফাইনান্সের দর বেড়েছে ৪.৮৯ শতাংশ।
আরও তিনটি কোম্পানির দর ৪ শতাংশের বেশি, ১৩টি কোম্পানির দর ৩ শতাংশের বেশি, ২৯টি কোম্পানির দর ২ শতাংশের বেশি এবং ৬৪টি কোম্পানির দর বেড়েছে এক শতাংশের বেশি।
দর হারানোর শীর্ষ ১০
পতনের সবচেয়ে বেশি এগিয়ে ছিল রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স। ৬.৩৫ শতাংশ কমে ৮৯ টাকা ৭০ পয়সা দরের শেয়ার নেমে এসেছে ৮৪ টাকায়।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা মেঘনা কনডেন্সড মিল্কের দর কমেছে ৪.৭৩ শতাংশ। ১৪ টাকা ৮০ পয়সা দরের শেয়ার নেমে এসেছে ১৪ টাকা ১০ পয়সায়।
মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজের দর কমেছে ৪.১২ শতাংশ। গত তিন কর্মদিবস ধরে ধারাবাহিকভাবে কমেছে কোম্পানিটির দর।
চতুর্থ অবস্থানে থাকা আমান কটন ফেব্রিক্সের দর কমেছে ৪.০৮ শতাংশ। ৩২ লাখ ১০ হাজার টাকায় ১ লাখ ১২ হাজার ১৯৪টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
পঞ্চম অবস্থা থাকা এএমসিএল (প্রাণ) এর দর কমেছে ৩.৮৫ শতাংশ।
এছাড়া প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের দর ৩.৮৩ শতাংশ, প্রগতি লাইফের দর ৩.৭৫ শতাংশ, জিমিনি সি ফুডের দর ৩.৫৭ শতাংশ, এপেক্স ফুডের দর ৩.৪২ শতাংশ, ঢাক্কা ডাইংয়ের দর ৩ শতাংশ দর কমেছে।
এছাড়া দুই শতাংশ থেকে দুই শতাংশের বেশি শেয়ার দর হারিয়েছে এমন কোম্পানি ছিল ২১টি। আর এক শতাংশ থেকে এক শতাংশের বেশি শেয়ার দর হারিয়েছে এমন কোম্পানি ছিল ৪৫টি।
সবচেয়ে বেশি লেনদেন যে ১০ কোম্পানি
এদিন লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে বিবিধ খাত। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল আগের দিন শীর্ষে থাকা বিমা খাত। তৃতীয় অবস্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত এবং চতুর্থ অবস্থানে ব্যাংক।
এর মধ্যে একশ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে কেবল দুটি খাতে।
একক কোম্পানি হিসেবে সবচেয়ে বেশি ৬৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেডে। ৪৫ লাখ ৪৩ হাজার ৭৪২টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে ছিল বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, যার ৫৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকার ৮৯ লাখ ৫২ হাজার ৫৯৮টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
এছাড়া এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের ২৮ কোটি ১৫ লাখ টাকায় ২২ লাখ ৩২ হাজার ৪৭৪টি শেয়ার, জেনেক্স ইনফোসিসের ২৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকায় ১৪ লাখ ৫৩ হাজার ৪৭৯ টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
দশ কোটি থেকে বিশ কোটি পর্যন্ত শেয়ার লেনদেন হয়েছে এমন কোম্পানি ছিল আটটি। এর মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মার ১৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। হাতবদল হয়েছে ৯ লাখ ৭৫ হাজার ৬৭৭টি শেয়ার।
ওয়ান ব্যাংকের ১৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকার ১ কোটি ২৮ লাখ ৯৩ হাজার ২০০টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
বিকন ফার্মায় ১৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, সোনালী পেপারে ১৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা, আইএফআইসি ব্যাংকে ১৩ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, ফরচুন সুজে ১৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা, স্কয়ার ফার্মায় ১২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকোতে ১০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ও প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের লেনদেন হয়েছে ১০ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
মন্তব্য