মালদ্বীপে ছয় দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ দেশে ফিরছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে সন্ধ্যায় ঢাকায় পৌঁছাবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিমের বরাতে বাসস জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিশেষ ভিভিআইপি ফ্লাইট স্থানীয় সময় সোমবার বেলা ১টায় মালদ্বীপের ভেলানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে।
ফ্লাইটটি ঢাকার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহর আমন্ত্রণে গত ২২ ডিসেম্বর দ্বীপ রাষ্ট্রটি সফরে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরের দিন তার সফরের দ্বিতীয় দিন, যোগ্য স্বাস্থ্য পেশাদারদের নিয়োগ এবং যুব ও ক্রীড়া উন্নয়নের ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে দুটি সমঝোতা স্মারক এবং দ্বৈত আয়কর বিলোপের জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
এ ছাড়া বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) নবায়ন করা হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে বাংলাদেশ মালদ্বীপকে ১৩টি সামরিক যান উপহার দিয়েছে।
দ্বিপক্ষীয় আলোচনা এবং উপকরণ হস্তান্তর অনুষ্ঠানের পর একটি যৌথ ইশতেহার ঘোষণা করা হয়।
সফরকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ, ভাইস প্রেসিডেন্ট ফয়সাল নাসিম, পিপলস মজলিসের স্পিকার (জাতীয় সংসদ) মোহাম্মদ নাশিদ ও প্রধান বিচারপতি উজ আহমেদ মুথাসিম আদনানের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন।
২৩ ডিসেম্বর বিকেলে মালদ্বীপের সংসদে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা তার সম্মানে মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ও দেশটির ফার্স্ট লেডি আয়োজিত রাষ্ট্রীয় ভোজসভায় যোগ দেন।
পরের দিন মালেতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেয়া একটি সংবর্ধনায় ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন:শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড় ঘেরা গজনী পর্যটন কেন্দ্র। এখন পর্যটন কেন্দ্রটি চরম পরিবেশ সংকটে রয়েছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি গারো পাহাড় ও পার্শ্ববর্তী নদী-নালা, খাল-বিল, ঝরনা থেকে দিনের পর দিন পাথর ও বালু লুটপাট করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে হুমকির মুখে পড়েছে পর্যটন শিল্প।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ১৯৯৩ সালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গারো পাহাড়ের কোলে গড়ে তোলা হয় ‘গজনী অবকাশ বিনোদন কেন্দ্র’। গজনী মৌজার নামানুসারে এ নামকরণ করা হয়। প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষাধিক ভ্রমণপিপাসু এ পর্যটন কেন্দ্রে ভিড় করেন। সরকারও এখান থেকে রাজস্ব আয় করে থাকে।
তবে সম্প্রতি এই পর্যটন কেন্দ্রের আশেপাশের পাহাড়, নদী ও ঝর্ণা এলাকা অবৈধভাবে দখল করে চলছে পাথর ও বালু উত্তোলন। স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র—যাদের বলা হচ্ছে ‘বালুদস্যু’—তারা দিনের আলো ও রাতের অন্ধকারে ট্রাক, মাহিন্দ্রা ও ট্রলিগাড়ি ব্যবহার করে লাখ লাখ টাকার পাথর ও বালু পাচার করছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের কালঘেষা নদীর হালচাটি, মালিটিলা, গান্ধীগাঁও, বাঁকাকুড়া, দরবেশতলা, মঙ্গল ঝুড়া, পশ্চিম বাঁকাকুড়া, ছোটগজনী, গজনীসহ আশপাশের এলাকা থেকে বালু ও পাথর উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, এ অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না কেউ। প্রতিবাদ করলেই হুমকি, গালিগালাজ এমনকি হামলারও শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষ ও সাংবাদিকদের।
সম্প্রতি ঈদের আগে এক সপ্তাহে বনবিভাগ পাঁচটি মাহিন্দ্রা গাড়ি আটক করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বালুদস্যুরা রাংটিয়া ফরেস্ট রেঞ্জ কার্যালয়ে হামলা চালায় ও কর্মকর্তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। গত ৪ জুন রাতে উপজেলা সদরের বাজারে বালু ভর্তি মাহিন্দ্রা গাড়ির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করলে এক সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকিও দেয় বালুদস্যুরা।
এমনকি, এর আগেও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বালু শ্রমিকদের শাস্তি দেয়ায় বালুদস্যুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিরুদ্ধেও আন্দোলনে নামে। যদিও মাঝে মাঝে অভিযান চালানো হয়, কিন্তু তাতে বন্ধ হচ্ছে না এই অবৈধ কার্যকলাপ।
গজনী ফরেস্ট বিট কর্মকর্তা সালেহীন নেওয়াজ বলেন, ‘লোকবলের অভাব ও নিরাপত্তা জণিত কারণে আমরা রাতে অভিযান চালাতে পারি না। এই কারণে বালুদস্যুরা রাতের অন্ধকারে সুযোগ নিচ্ছে।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর সহায়তা নেওয়া হবে।’
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিবেশবাদী বলেন, ‘গারো পাহাড় শুধু একটি ভূখণ্ড নয়, এটি আমাদের প্রাকৃতিক নিরাপত্তার দেয়াল। এখানকার জীববৈচিত্র্য, জলবায়ু এবং পর্যটন—সবই আজ হুমকির মুখে। এই লুটপাট যদি এখনই বন্ধ না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে পুরো এলাকা মরুভূমিতে রূপ নিতে পারে।’
স্থানীয় সচেতন মহল অবিলম্বে এই অবৈধ বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
নিপুণ বাসা তৈরির দক্ষ করিগর বাবুই পাখি ও এর বাসা এখন আর আগের মতো চোখে পড়ে না। পরিবেশ বিপর্যয়, জলবায়ু পরিবর্তন, বন উজাড়, নতুন বণায়নে বাসযোগ্য পরিবেশ ও খাদ্যের অভাব, নির্বিচারে তালগাছ কর্তন, অসাধু শিকারীর ফাঁদসহ বহুবিধ কারণে কালের আবর্তে প্রকৃতির স্থপতি, বয়ন শিল্পী এবং সামাজিক বন্ধনের প্রতিচ্ছবি বাবুই পাখি ও এর দৃষ্টিনন্দন বাসা ক্রমান্বয়ে হারিয়ে যাচ্ছে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে।
আজ থেকে ১৫-২০ বছর আগেও গ্রামগঞ্জে ব্যাপকভাবে বাবুই পাখির বাসা চোখে পড়ত। কিচিরমিচির শব্দ আর এদের শৈল্পিক বাসা মানুষকে পুলকিত করত। অপূর্ব শিল্প শৈলীতে প্রকৃতির অপার বিস্ময় এদের সেই ঝুলন্ত বাসা বাড়ির তালগাছসহ নদীর পাড়ে, পুকুর পাড়ে, বিলের ধারে এখন আর সচরাচর চোখে পড়ে না। আগের মতো বাবুই পাখির কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত হয় না গ্রাম বাংলার জনপদ।
নিরীহ, শান্ত প্রকৃতির এই বাবুই পাখি উচু এবং নিরিবিলি পরিবেশে বাসা তৈরি করে। গ্রামগঞ্জের তাল, সুপারি, নাড়িকেল, খেজুর গাছে বাসা তৈরি করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে এরা। এসব গাছের সংকটে মাঝে মাঝে হিজল গাছেও বাসা বাধতে দেখা যায় তাদের।
এই পাখি বাসা তৈরির কাজে ব্যবহার করে খড়ের ফালি, ধানের পাতা, তালের কচি পাতা, ঝাউ ও কাঁশবনের লতা। চমৎকার আকৃতির এই বাসা বিশেষ করে তাল গাছের ডালে এমনভাবে সাটানো থাকে যাতে কোনো ঝড়-তুফানে সহসাই ছিড়ে না পড়ে। এদের বাসা শুধু শৈল্পিক নিদর্শনই নয়, মানুষের মনে চিন্তার খোরাক জোগায় এবং স্বাবলম্বী হতে উৎসাহিত করে। এটি দেখতে যেমন আকর্ষণীয় তেমই মজবুত ও টেকসই । ঠোট দিয়ে বাবুই পাখি আস্তর ছড়ায়। পেট দিয়ে ঘঁষে তা আবার মসৃণ করে। বাসা বানাতে শুরুতেই দুটি নিম্নমুখী গর্ত করে থাকে। পরে তা একদিকে বন্ধ করে ডিম পাড়ার জায়গা করে।
অন্যদিকে লম্বা করে প্রবেশ ও প্রস্থান পথ তৈরি করে। ব্যালেন্স করার জন্য বাসার ভিতরে কাদার প্রলেপ দেয়। এমন বাসাও তৈরি করে যেখানে বসে দোলনার মতো দোল খায়। আধুনিক যুগে যা বড়ই যুক্তি সংগত। বাসার ভিতরে ঠিক মাঝখানে একটি আড়া তৈরি করে বাবুই পাখি। যে আড়াতে পাশাপাশি বসে এরা প্রেম আলাপসহ নানা রকম গল্প করে। এ আড়াতেই এরা নিদ্রা যায়। কি অপূর্ব বিজ্ঞান সম্মত চেতনাবোধ। ছোট হলেও বুদ্ধিতে সব পাখিকে হার মানায়।
এক গাছ থেকে আরেক গাছ, এক বাসা থেকে আরেক বাসায় এরা সঙ্গী খুঁজতো। পছন্দ হলে সঙ্গী বানানোর জন্য কত কিছুই না করে। পুরুষ বাবুই নিজের প্রতি আকর্ষণ করার জন্য ডোবার গোসল সেরে ফুর্তিতে নেচে নেচে উড়ে বেড়ায় এক ডাল থেকে অন্য ডালে। এরপর উচুঁ গাছের ডালে বাসা তৈরির কাজ শুরু করে। অর্ধেক কাজ হলে কাঙ্খিত স্ত্রী বাবুইকে ডেকে সেই বাসা দেখায়। বাসা পছন্দ হলেই কেবল পুরো কাজ শেষ করে। তা না হলে অর্ধেক কাজ করেই নতুন করে আরেকটি বাসা তৈরির কাজ শুরু করে। অর্ধেক বাসা বাঁধতে সময় লাগে ৪-৫ দিন।
কাঙ্খিত স্ত্রী বাবুই পাখির পছন্দ হলে বাকিটা শেষ করতে সময় লাগে আরো ৪ দিন। পুরুষ বাবুই এক মৌসুমে ৬ টি পর্যন্ত বাসা বুনতে পারে। তাছাড়া এরা ঘর করতে পারে ৬ টির সঙ্গে। স্ত্রী বাবুইদের এতে কোনো বাঁধা নেই। প্রজনন প্রক্রিয়ায় স্ত্রী বাবুই ডিমে তা দেয়ার দুসপ্তাহের মধ্যে বাচ্চা ফোটে। আর বাচ্চা বাসা ছেড়ে প্রথম উড়ে যায় জন্মের তিন সপ্তাহের মধ্যে।
কৃষকের ধান ঘরে ওঠার মৌসুম হলো বাবুই পাখির প্রজনন মৌসুম। দুধ ধান সংগ্রহ করে এনে স্ত্রী বাবুই বাচ্চাদের খাওয়ায়। তবে এখন সঙ্গত কারণেই বাবুই পাখি তালগাছ ছেড়ে ভিন্ন গাছে নীড় বেঁধেছে। এই দক্ষ স্থপতি বাবুই পাখির নীড় ভেঙে দিচ্ছে এক শ্রেণীর অসাধু মানুষ। এক সময় গাজীপুরের বিভিন্ন উপজেলার গ্রামে গ্রামে দেখা যেতো অগণিত বাবুই পাখির বাসা। এই এলাকার গাঁও গ্রাম ঘুরেও এখন আর দৃষ্টি নন্দন বাবুই পাখির ঝুলন্ত বাসা আগের মতো দেখা যায় না।
উপজেলার আধবই গ্রামের পাখি প্রেমিক নওশীন বাবু ঐশী বলেন, সারাবিশ্বে বাবুই পাখির প্রজাতির সংখ্যা ১১৭টি। তবে বাংলাদেশে তিন প্রজাতির বাবুই পাখির বাস। তিনি আরও বলেন, বাবুই পাখির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো রাতের বেলায় ঘর আলোকিত করার জন্য এরা জোনাকি পোকা ধরে নিয়ে বাসায় রাখে এবং সকাল হলে আবার তাদের ছেড়ে দেয়। ধান, চাল, গম ও পোকা-মাকড় প্রভৃতি তাদের প্রধান খাবার।
উপজেলা কৃষক ইব্রাহিম বলেন, নিপুণ কারিগর বাবুই পাখি ও তার বাসা টিকিয়ে রাখতে হলে বৃক্ষ নিধনকারীদের হাত থেকে উক্ত গাছ রক্ষা করতে হবে। প্রকৃতিক সোন্দর্য বৃদ্ধিতে বাবুই পাখির বাসা তৈরির পরিবেশ সহজ করে দিতে হবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, পরিবেশবান্ধব বাঁশের আসবাবপত্রের ব্যবহার বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, দেশে কাঠের ওপর চাপ দিন দিন বাড়ছে। এই চাপ কমাতে আসবাবপত্র তৈরিতে কাঠের বিকল্প হিসেবে বাঁশ ব্যবহারে উদ্যোগী হতে হবে। বাঁশ সহজলভ্য, দ্রুত বেড়ে ওঠে এবং পরিবেশবান্ধব।
আজ পরিবেশ উপদেষ্টা বাংলাদেশ সচিবালয়ে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঈদুল আজহা পরবর্তী ১ম কর্মদিবসে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এসময় তিনি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং পরিবেশ রক্ষায় নতুন উদ্যমে কাজ করার আহ্বান জানান।
তিনি বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানকে বাঁশ দিয়ে আসবাবপত্রের উৎপাদন বাড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেন। একইসঙ্গে তিনি বাঁশগবেষণা কেন্দ্রে বাঁশ প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রযুক্তির উন্নয়ন ও আধুনিক পণ্য উদ্ভাবনের ওপর জোর দেন। উপদেষ্টা বলেন, আধুনিক, টেকসই ও রুচিশীল বাঁশের আসবাবপত্র তৈরি করে অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদা পূরণ ও আন্তর্জাতিক বাজারেও সম্ভাবনা তৈরি করা সম্ভব।
সভায় মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, অতিরিক্ত সচিববৃন্দ, মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তর সমূহের প্রধানগণ, এবং মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
দেশে নতুন করে করোনা সংক্রমণ বাড়তে না বাড়তে এরইমধ্যে পাইকারি পর্যায়ে মাস্কের দাম বাড়িয়ে দ্বিগুণ করেছেন এক দল ব্যবসায়ী। এতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। অতিরিক্ত দামে মাস্ক কিনে পরতে হচ্ছে তাদের।
সরজমিনে রাজধানীর বাবুবাজার মাস্কের পাইকারি দোকানগুলো ঘুরে এমন দৃশ্যই দেখা গেছে। করোনা সংক্রমণে মাস্কের চাহিদা বাড়ায় ভিড় বাড়ছে খুচরা ব্যবসায়ীদের।
কম দামে মাস্ক পাওয়ার প্রত্যাশা থাকলেও রীতিমতো উল্টোচিত্রের মুখোমুখি হোন তারা—প্রতি বক্স সার্জিক্যাল মাস্ক রীতিমতো দ্বিগুণ দাম বিক্রি হচ্ছে।
শাহজাহানপুর রেলওয়ের কাছে মাস্ক ব্যবসা করেন মিঠু। তিনি জানান, এতদিন ৬০-৬৫ টাকা দামে প্রতি বক্স মাস্ক কিনলেও আজকে বাজারে একই মাস্ক বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। কোনো ধরনের দামাদামির ধার ধারছেন না পাইকারি ব্যবসায়ীরা।
মালিবাগ মোড়ের আরেক মাস্ক ব্যবসায়ী শাহ আলি বলেন, ‘আগে হাজারে সার্জিক্যাল মাস্কের দাম ছিল ৯০০ টাকা। আজকে বাজারে হাজারে মাস্কের দাম বেড়ে হয়েছে ১৬০০ টাকা।’
‘পাইকারি বাজারে মাস্কের দাম বাড়ায় খুচরা বাজারেও দাম বাড়িয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে। আগে ১০ টাকায় পাঁচটি সার্জিক্যাল মাস্ক বিক্রি করলেও এখন তিনটি করে বিক্রি করতে হচ্ছে,’ বলেন তিনি।
সার্জিক্যাল মাস্কের পাশাপাশি দাম বেড়েছে এন-৯৫ মাস্কেরও। এতদিন ১০ টাকা দরে এই মাস্ক বিক্রি হলেও হঠাৎ করে প্রতি পিস মাস্কের দাম হয়েছে ১৫-২০ টাকা।
হঠাৎ করে মাস্কের দাম বাড়ায় ক্রেতাদের মধ্যে চাপা আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন, এখনই মাস্কের দাম নাগালে আনতে না পারলে সামনে দাম বেড়ে দ্বিগুণ-তিনগুণ হবে।
এ প্রসঙ্গে মগবাজারের বাসিন্দা মোহতাসিম বলেন, ‘২০২০ সালে করোনাসময়ে প্রতিপিস সার্জিক্যাল মাস্ক ১০-১৫ টাকায় কিনতে হয়েছে। তখন ১০ টাকার এন-৯৫ মাস্কের দাম বেড়ে হয়েছিল ১৫০ টাকা। এবার মাস্কের সিন্ডিকেট ভাঙতে এখনই পদক্ষেপ নেয়া উচিত।’
মতিঝিলে কাপড়ের মাস্ক কিনতে এসেছেন সুবাহ হোসেন। বলেন, ‘এতদিন কাপড়ের মাস্কের দাম ২০-৩০ টাকা হলেও এখন দাম বেড়ে ৫০-৮০ টাকা হয়েছে। হঠাৎ করে মাস্কের দাম বাড়ায় ভয় লাগছে, পরিস্থিতি আবার ২০২০ এর মতোন হবে কিনা।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সংক্রমণ বাড়ায় ইতোমধ্যে মহাখালীর কোভিড বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে। ১৩ জন করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ইতোমধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে শনাক্তকরণ কিট সরবরাহ শুরু করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
সূত্র: ইউএনবি
কোরবানি ঈদ উপলক্ষে টানা ১০ দিন বন্ধ থাকার পর আজ রবিবার (১৫ জুন) সকাল থেকে পঞ্চগড়ের চতুর্দেশীয় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
তবে এ সময়েও ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে বৈধ পাসপোর্টধারী যাত্রীদের পারাপার ছিল স্বাভাবিক। ঈদের ছুটিতেও যাত্রী চলাচলে কোনো বিঘ্ন ঘটেনি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের আহ্বায়ক রেজাউল করিম শাহীন জানান, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে গত ৫ জুন (বৃহস্পতিবার) থেকে ১৪ জুন (শনিবার) পর্যন্ত স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল।% আজ রবিবার থেকে আবারও স্বাভাবিক নিয়মে বাণিজ্য কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এতে বন্দরে ফের প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের সংশ্লিষ্ট কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টদের আগেই এ বিষয়ে চিঠির মাধ্যমে অবহিত করা হয়েছিল।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লিমিটেডের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ব্যবসায়ীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঈদের ছুটিতে ১০ দিন স্থলবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছিল। আজ থেকে চার দেশের মধ্যে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু হয়েছে।
ইমিগ্রেশন পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফিরোজ কবীর জানান, বাণিজ্য কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও ঈদের ছুটিতে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক ছিল। এতে কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি।
কক্সবাজারের চকরিয়া-লামা-আলীকদম সড়কের চকরিয়া অংশে গাছ ফেলে পর্যটকের লাশ আনতে যাওয়া স্বজনবোঝাই অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ডাকাতদলের এক সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এ সময় অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে থাকা যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা, কয়েকটি মোবাইল ছিনিয়ে নেয় ডাকাতেরা। তবে পুলিশ দাবি করছে- এটি নিছক ছিনতাইয়ের ঘটনা ছিল।
শনিবার আনুমানিক ভোর সাড়ে ৪টার দিকে চকরিয়া থেকে আলীকদম গিয়ে পর্যটকের লাশ আনতে যাওয়ার পথে আলোচিত করইল্যারশিয়া এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি ডাকাতের কবলে পড়ে।
তবে ডাকাত দলে থাকা আরাফাত নামের এক ডাকাত ঘটনার সময় লুট করে নেওয়া একটি মোবাইল সরিয়ে জঙ্গলের ভেতর লুকিয়ে রাখে। ওই মোবাইল খুঁজতে সকালে ফের ঘটনাস্থলে যায় আরাফাত। এ সময় স্থানীয় জনগণের সন্দেহ হলে তাকে আটক করে গাছের সঙ্গে বেঁধে পিটুনি দিতে থাকে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এ সময় অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে আরাফাত নিজেসহ বেশ কয়েকজন অংশ নেয় বলে স্বীকার করে এবং তাদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে।
আরাফাতের দেওয়া তথ্যানুযায়ী অ্যাম্বুলেন্স ডাকাতিতে আরও যারা অংশ নেয় তারা হলেন- ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছড়ারকূলের ছাদেক, উচিতার বিলের ফারুক, আরিফ, সাগর ছাড়াও বেশ কয়েকজন।
গ্রেফতার আরাফাত (২৮) চকরিয়া পৌরসভার সাত নাম্বার ওয়ার্ডের মোহাম্মদীয়াপাড়ার আবুল কালামের ছেলে।
চকরিয়া থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, চকরিয়া-লামা-আলীকদম সড়কের চকরিয়া অংশে অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতি নয়, ছিনতাই হয়েছিল। সেই ঘটনায় স্থানীয় জনতার সহায়তায় আটককৃত একজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে মামলা রুজু করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে দুটি মোবাইল। এ ঘটনায় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণসহ ঘটনায় জড়িত অন্যদের ধরতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।
ঈদের ১০ দিনের লম্বা ছুটি শেষে রবিবার লেনদেনে ফিরেছে দেশের পুঁজিবাজার। তবে ছুটি শেষে প্রথম কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হয়েছে দরপতনের মধ্য দিয়ে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক কমেছে, পাশাপাশি বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দামও কমে গেছে।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দেখা যায় নিম্নমুখী প্রবণতা। প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২৬ পয়েন্ট। পাশাপাশি শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ বা বাছাইকৃত কোম্পানির সূচক ডিএস৩০ উভয়ই কমেছে ৮ পয়েন্ট করে।
লেনদেন শুরুর পরই ঢাকার বাজারে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর কমে যায়। প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে মোট ২১২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে, মাত্র ৪৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে এবং ৫০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এই সময়ের মধ্যে ডিএসইতে মোট লেনদেনের পরিমাণ ছাড়িয়েছে ৩০ কোটি টাকা।
ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) ঈদের পর লেনদেন শুরু হয়েছে পতনের মধ্য দিয়ে। লেনদেনের শুরুতেই সিএসইর সার্বিক সূচক কমেছে ৪৪ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় চট্টগ্রামের বাজারে ১৭টি কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৮টি কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে, ৭টি বেড়েছে এবং ২টি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত রয়েছে।
এই সময় সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে প্রায় ৯ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
মন্তব্য