অভিজাত এলাকায় পাঁচ থেকে আট হাজার বর্গফুটের বিশাল একটি ফ্ল্যাটে বসে আছেন আপনি, চারপাশে খোলামেলা জায়গা, বারান্দায় সবুজের গালিচা। ফ্ল্যাটের এক কোনায় একটি মিনি হোম থিয়েটার, যেখানে বন্ধুবান্ধবসহ পরিবারের আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে আপনি পছন্দের যেকোনো ছবি দেখতে পারবেন সিনেমা হলের মতো করেই।
সিনেমা শেষ করে রোদ্রোজ্জ্বল দিনে চাইলেই ফ্ল্যাটের অন্য অংশে থাকা হাজার বর্গফুটের সুইমিংপুলে শরীর জুড়িয়ে নিতে পারেন।
শুধু তা-ই নয়, করোনার এই সময়ে আপনি কাউকে আপনার বাসায় আনতে চাচ্ছেন না, কিন্তু অফিসের কাজে বাইরে আসতেই হয় তখন আপনার ফ্ল্যাটের একটি অংশে থাকা বিশেষ লাউঞ্জে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ছোটখাটো একটা সভার আয়োজন করতে পারেন, করতে পারেন ঘরোয়া অনুষ্ঠানও।
এমন সব বিলাসবহুল সুযোগ-সুবিধার ফ্ল্যাটের খবর নিয়ে আবাসন ব্যবসায়ীরা হাজির হয়েছেন এবারের রিহ্যাব ফেয়ারে।
বাসায় আপনি ও পরিবারের সদস্য ছাড়া অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। কারণ দরজায় লাগানো আছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর আর বাসার প্রত্যেকটি আসবাবপত্র, দরজা-জানালা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন আপনার মোবাইলের মাধ্যমেই। তবে আয়েশি নানা প্রযুক্তিসহ এসব ফ্ল্যাটের জন্য খরচও করতে হবে দেদার অর্থ। এলাকা ভেদে গুনতে হবে ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকা।
রিহ্যাব মেলায় অভিজাত প্রকল্প এসেছে এমন একটি প্রতিষ্ঠান রূপায়ন গ্রুপ। তাদের রূপায়ন সিটি উত্তরায় রয়েছে নানা ধরনের অভিজাত ফ্ল্যাট। এ সিটিকে তারা বলছে টোটাল আবাসন।
এখানে ‘স্কাই ভিলা’ নামে ডুপ্লেক্স টাইপ ফ্ল্যাটের আকার ৫ হাজার ৭০০ থেকে ৫ হাজার ৮০০ বর্গফিটের এবং পেন্টহাউস ধরনের ফ্ল্যাট রয়েছে ৭ হাজার ৩০০ বর্গফুটের। তবে প্রতি বর্গফুটের দাম পড়বে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।
প্রতিষ্ঠানটির সেলস বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক সজিব আহমেদ সায়ান বলেন, ‘আমাদের এ সিটি ১৪০ বিঘা জমির ওপর গড়ে উঠেছে। শুধু ফ্ল্যাটেই অভিজাত নয়, এ সিটিতে থাকবে জীবনধারণের প্রয়োজনীয় সবকিছুই।
‘ভিলায় আলাদা সুইমিংপুল তো থাকছেই। এর পুরো সিটির জন্য থাকবে বড় আকারের পুল, জিম, প্লে গ্রাউন্ড, কমিউনিটি স্পেস, মসজিদ, স্কুল, শপিংমল থেকে শুরু করে নাগরিক জীবনের প্রায় সবকিছুই। এটি একটি লাইফ স্টাইল প্রজেক্ট।’
ক্রেতাদের অভিজাত ফ্ল্যাটের জোগান দিচ্ছে আরেক প্রতিষ্ঠান র্যাংগস প্রপার্টিজ লিমিটেড। তাদের বারিধারা প্রিমিয়াম ফ্ল্যাট রয়েছে ৪ হাজার ৮০০ থেকে ৫ হাজার স্কয়ার ফুটের। প্রতি বর্গফুটের দাম পড়বে ২৮ থেকে ৩০ হাজার টাকা। ১৫ থেকে ১৮ শতাংশ কমন স্পেস বাদ দিলে বাকিটা নিজের ব্যবহারের জন্য পাবেন ক্রেতারা।
রিহ্যাব মেলায় এই ধরনের একটি ফ্ল্যাট নিতে চাইলে ক্রেতাকে মোট দামের ২০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিতে হবে। তবে মেলা উপলক্ষে ডাউন পেমেন্টের ওপর কিছুটা ছাড় রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির সেলস টিমের প্রধান কে এম স্বাপ্নিক মাহমুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাধারণত প্রিমিয়াম রেঞ্জের ফ্লাটগুলোয় সবাই জিমনেসিয়াম ও সুইমিংপুল দেয়। তবে আমাদের ফ্ল্যাটে হোম থিয়েটারের ব্যবস্থা আছে। আপনি চাইলেই পরিবার নিয়ে হলের পরিবেশে মুভি দেখতে পারেন।
‘সেখানে একটা এক্সক্লুসিভ লাউঞ্জ থাকবে, যেখানে কোভিড-পরবর্তী সিচুয়েশনে অফিসের কাজ বা বৈঠক সেরে নিতে পারবেন। সব মিলিয়ে একটা ফ্ল্যাট হবে এক একটা স্পেশাল ইউনিট।’
তিনি বলেন, ‘আরেকটি বিষয়, প্রতিটি ফ্ল্যাট হবে অটোমেটেড। মোবাইলের অ্যাপস দ্বারা বাসার প্রত্যেকটি জিনিস আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। পর্দা থেকে শুরু করে দরজার সিকিউরিটি ব্যবস্থা থাকবে যথেষ্ট উন্নত মানের। সবকিছু আপনার মোবাইলের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে ডোর-উইন্ডো লক-ওপেন হবে, আপনি ছাড়া অন্য কেউ ঘরে প্রবেশ করার সুযোগই নেই।’
ফ্ল্যাটগুলোর দাম এত বেশি কেন- এমন প্রশ্নে স্বাপ্নিক মাহমুদ বলেন, ‘এই প্রজেক্টটি বারিধারা ডিপ্লোমেটিক জোনে, সেখানে জমির দাম এমনিতেই বেশি। তাই ফ্ল্যাটের দামটা বেশি। তবে দাম অনুসারে আপনি আধুনিক সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা সেখানে পাবেন।’
গুলশান-বনানী, ধানমন্ডিতে প্রায় একই ধরনের সুযোগ-সুবিধার কিছু ফ্ল্যাট রয়েছে বিভিন্ন কোম্পানির। জমির দাম কম হওয়ায় সেগুলোর দাম একটু কম।
যেমন ধানমন্ডিতে প্রতি বর্গফুট ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকার, বনানীতে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা এবং গুলশানে হচ্ছে ২৫ থেকে ২৭ হাজার টাকা পড়বে প্রতি বর্গফুটের দাম।
তবে শুধু প্রিমিয়াম শ্রেণিরই নয়, বিভিন্ন কোম্পানি মধ্য ও উচ্চ মধ্যবিত্তের জন্যও ফ্ল্যাট রয়েছে রিহ্যাব মেলায়। রেডি এসব ফ্ল্যাটের বেশির ভাগই মোহাম্মদপুর ও মিরপুরের দিকে। এক থেকে দেড় হাজার স্কয়ার ফুটের এসব ফ্ল্যাটের প্রতি বর্গফুটের দামও ৪ হাজার ৫০০ থেকে ৬ হাজার টাকার মধ্যে।
দীর্ঘদিন আবাসন ব্যবসা করলেও আবাসন মেলায় প্রথমবারের মতো অংশ নিয়েছে ইছহাক ডেভেলপারস লিমিটেড। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ১ হাজার ৮০ থেকে ২ হাজার ১৩০ স্কয়ার ফুটের বিভিন্ন সাইজের ফ্ল্যাট স্বল্পদামে রেডি ফ্ল্যাট বিক্রি করছে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতি স্কয়ার ফুটের দাম ঠিক করেছে সাড়ে ৫ হাজার টাকা। প্রায় একই দামের ফ্ল্যাট রয়েছে উত্তরা ও এলিফ্যান্ট রোডেও।
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক প্রকৌশলী ফরহাত আফজা লুবনা বলেন, ‘মধ্যবিত্তের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আমরা ফ্ল্যাটের দাম নির্ধারণ করেছি। যেন মানসম্মত ফ্ল্যাট নিলে পরবর্তী সময়ে আমাদের খোঁজে।
‘আমরা করোনাকালে ফ্ল্যাটের নির্মাণকাজ অব্যাহত রেখেছি। তখন খরচ তুলনামূলক কম হয়েছে। তাই আমরা স্বল্পদামে ফ্ল্যাট বিক্রি করছি। গ্রাহককে আমরা ভালো মানের ফ্ল্যাট দিতে চাই। আমাদের মূল লক্ষ্যই হলো গ্রাহকের আস্থা তৈরি করা।’
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে কেন্দ্রে ২৩ ডিসেম্বর শুরু হওয়া রিহ্যাব ফেয়ার শেষ হবে সোমবার। এবারের আয়োজনে মোট ২২০টি স্টল রয়েছে। সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ক্রেতা-দর্শনার্থীরা মেলায় প্রবেশ করতে পারছেন।
মেলায় সিঙ্গেল এন্ট্রি টিকিট ৫০ টাকা। পাঁচবারের মাল্টিপল এন্ট্রি টিকিট ১০০ টাকা।
আরও পড়ুন:সাবেক সিনিয়র সচিব আবু আলম শহীদ খানকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শাহবাগ থানার মামলায় আজ সোমবার রাজধানীর রমনা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে শাহবাগ থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় সাবেক সিনিয়র সচিব আবু আলম শহীদ খানসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আবু আলম শহীদ খান ১৯৯৬-২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৫৬৭টি মামলা করেছে ঢাকা
মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩২০টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১৩৫টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার এ তথ্য জানানো হয়।
এতে আরও বলা হয়, রোববার ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করে।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
দূষিত বায়ুদূষণ বাংলাদেশিদের গড় আয়ু ৫ বছর ৫ মাস কমিয়ে দিচ্ছে। বিষাক্ত বায়ুর এই প্রভাব রাজধানী ঢাকায় বিশেষভাবে তীব্র। বায়ুদূষণ এই শহরের মানুষের গড় আয়ু ৬ বছর ৯ মাস কমিয়ে দেয়।
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের গত সপ্তাহের এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে বাংলাদেশকে বায়ুদূষণে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বায়ু দূষণ হলো আয়ুর জন্য সবচেয়ে বড় বহিরাগত হুমকি। বাংলাদেশে, যা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ।
রিপোর্ট অনুসারে, বাংলাদেশের ১৬ কোটির বেশি মানুষের সবাই এমন এলাকায় বাস করে, যেখানে বাতাসে ফাইন পার্টিকুলেট দূষণের বার্ষিক গড় মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা (৫ মাইক্রোগ্রাম প্রতি ঘনমিটার) এবং দেশের জাতীয় সীমা (৩৫ মাইক্রোগ্রাম) উভয়ই ছাড়িয়ে গেছে। রাজধানী ঢাকার মতো জায়গায় এই মাত্রা ৭৬ মাইক্রোগ্রামের ওপরে দেখা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশিকা মেনে চললে বাংলাদেশিদের গড় আয়ু ৫.৫ বছর বেশি হতে পারে।’
প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, সরকার সমস্যা সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বায়ুর মান দ্রুত খারাপ হচ্ছে।
ঢাকার স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য খুবই উদ্বেগের। আমার সন্দেহ আছে, বিশ্বের আর কোনো দেশ এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সাক্ষী আছে কিনা।’
তিনি বলেন, ‘এখানে বায়ু দূষণ এতটাই মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে, এটি শনাক্ত করার জন্য কোনো গবেষণার প্রয়োজন নেই, কারণ এটি খালি চোখেই দেখা যায়।’
বাংলাদেশের শহরগুলোর বাসিন্দাদের জন্য ‘ধোঁয়াশা’ একটি নিত্যদিনের বাস্তবতা। প্রায় প্রতিদিন সকালেই তাদের ঢেকে রাখে এই ‘ধোঁয়াশা’। কিন্তু আরও বিপজ্জনক হলো, দূষণ যেগুলো চোখ দেখতে পায় না: কণা পদার্থ, PM2.5 — ২.৫ মাইক্রোমিটারের কম প্রশস্ত বায়ুবাহিত ক্ষুদ্র কণা- এগুলো ফুসফুস এবং রক্তপ্রবাহের গভীরে প্রবেশ করে মারত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
১৯৯০-এর দশকের শেষের দিক থেকে বাংলাদেশে PM2.5-এর মাত্রা তীব্রভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২২ সালে করোনা ভাইরাস মহামারির সময়ই কেবল এই মাত্রা কমেছিল। কিন্তু সেই প্রবণতা স্থায়ী হয়নি।
ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘গত বছরের AQLI রিপোর্টে, আমাদের গড় আয়ু ৪.৮ বছর কমেছে, এবং এই বছর তা ৫.৫ বছর হিসাবে রিপোর্ট করা হয়েছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। এটি দেখায় যে, রাষ্ট্র তার জনগণের সুরক্ষার জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ এই প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করেনি, যার অর্থ বাংলাদেশ সরকারও এই প্রতিবেদনের ফলাফলের সঙ্গে একমত। রাষ্ট্র এখানে দায়িত্ব এড়াতে পারে না।’
দূষণের প্রধান উৎস হিসেবে তিনি জীবাশ্ম জ্বালানি এবং ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়ার ক্রমবর্ধমান ব্যবহারকে তালিকাভুক্ত করেন, বিশেষত ইটের জন্য কয়লা বা কাঠ পোড়ানো।
তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর ঢাকার রাস্তায় অতিরিক্ত ১ লাখ যানবাহন চলাচল করে। এই যানবাহনগুলোর অনেকগুলো যথাযথ ফিটনেস পরীক্ষা ছাড়াই চলে। এটি বায়ু দূষণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আন্তঃসীমান্ত বায়ুদূষণও আমাদের ওপর প্রভাব ফেলছে। খোলা জায়গায় পোড়ানোসহ সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অভাবও একটি বড় কারণ।’
সর্বশেষ বায়ুদূষণ প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় সরকার বছরের শেষ নাগাদ তার প্রচেষ্টা আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যদিও কাজটি সহজ নয়, তবুও পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ু মান ব্যবস্থাপনার পরিচালক ড. জিয়াউল হক স্বীকার করেছেন, ‘বায়ু দূষণের প্রতিটি উৎস’ বাংলাদেশের পরিবেশে বিদ্যমান।
তিনি আরব নিউজকে বলেন, ‘আমরা রাস্তা থেকে ফিটনেস পরীক্ষা ছাড়াই যানবাহনগুলো সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু এই খাতে আমরা এখনো কোনো সাফল্য দেখতে পাচ্ছি না।’
ড. জিয়াউল হক বলেন, ‘যেসব বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান বায়ুদূষণের জন্য দায়ী, আমরা তাদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের আওতায় আনব। তাদের কারখানার চুল্লিতে একটি যন্ত্র স্থাপন করা হবে এবং আমাদের কর্মকর্তারা কেন্দ্রীয়ভাবে নির্গমনের ফলাফল নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করবেন। যদি কোনো বিচ্যুতি পাওয়া যায়, তাহলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে হস্তক্ষেপ করব। ‘বাংলাদেশ পরিষ্কার বায়ু’ প্রকল্পের আওতায় আগামী দুই মাসের মধ্যে এই কাজ শুরু হবে।’
যদিও দূষণের সমস্ত উৎস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, তবুও কিছু উৎস এখন পর্যন্ত সঠিকভাবে মোকাবিলা করা হয়নি। তিনি বলেন, ‘ঢাকার ক্ষেত্রে আন্তঃসীমান্ত দূষণ ৩০ শতাংশ থেকে ৩৫ শতাংশ বায়ুদূষণের জন্য দায়ী। এই পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকার ৩৫ শতাংশ বায়ু দূষণ দেশের বাইরে থেকে আসে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ঢাকার বায়ু দূষণের ২৯ শতাংশই বর্জ্য এবং জ্বালানি কাঠ পোড়ানোর কারণে হয়। আমরা এই সমস্যাটি সঠিকভাবে সমাধান করতে পারিনি। আমাদের প্রচেষ্টা সেখানেই আছে।’
সূত্র: আরব নিউজ
রাজধানীর শাহবাগে ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ঘটেছে। এ ঘটনায় ২ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
ব্যারিকেড ভেঙে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’র দিকে অগ্রসর হতে চাইলে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। একপর্যায়ে সংঘর্ষ বেঁধে গেলে পুলিশের পক্ষ থেকে সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়।
পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)- সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একদল শিক্ষার্থী সকাল ১০টার দিকে পূর্বঘোষিত ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি পালনের উদ্দেশ্যে সড়কে অবস্থান নেন। এতে শাহবাগ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
দুপুর দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে স্থাপিত ব্যারিকেড ভেঙে যমুনার দিকে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশ পানি ছোড়ার পাশাপাশি লাঠিচার্জ শুরু করে। এ সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দুই পুলিশ সদস্যও আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ সময় পুলিশ সদস্যদের সাউন্ড গ্রেনেডও নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। পরে বাধা পেয়ে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ের মেট্রোরেল স্টেশনের কাছে অবস্থান নেন।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো— ইঞ্জিনিয়ারিং নবম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং ন্যূনতম বিএসসি ডিগ্রিসম্পন্ন হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোনো পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
টেকনিক্যাল দশম গ্রেড বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদের নিয়োগ পরীক্ষা ন্যূনতম ডিপ্লোমা এবং একই ডিসিপ্লিনে উচ্চতর ডিগ্রিসম্পন্ন বিএসসিদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি ব্যতীত প্রকৌশলী পদবি ব্যবহারকারীদের বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। নন-অ্যাক্রিডেট বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সগুলোকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইইবি-বিএইটিই অ্যাক্রিডেশনের আওতায় আনতে হবে।
বুয়েট শিক্ষার্থী জাহিদুল হক বলেন, আমাদের স্পষ্ট দাবি, প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের ৩ দফা বাস্তবায়নের জন্য নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। এ ছাড়া প্রকৌশলী রোকনুজ্জামানকে হত্যার হুমকি দেওয়া ডিপ্লোমা সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
তিন দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো শাহবাগ অবরোধ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ‘মার্চ টু ঢাকা’ অনুযায়ী আজ (বুধবার) সকাল ১০টা থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা প্রকৌশলের শিক্ষার্থীরা শাহবাগে জড়ো হন। এর ফলে সড়কটির যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো— ইঞ্জিনিয়ারিং নবম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবাইকে নিয়োগ পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং ন্যূনতম বিএসসি ডিগ্রিসম্পন্ন হতে হবে। কোটার মাধ্যমে কোনো পদোন্নতি নয়, এমনকি অন্য নামে সমমান পদ তৈরি করেও পদোন্নতি দেওয়া যাবে না।
টেকনিক্যাল দশম গ্রেড বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী বা সমমান পদের নিয়োগ পরীক্ষা ন্যূনতম ডিপ্লোমা এবং একই ডিসিপ্লিনে উচ্চতর ডিগ্রিসম্পন্ন বিএসসিদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি ব্যতীত প্রকৌশলী পদবি ব্যবহারকারীদের বিষয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। নন-অ্যাক্রিডেট বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সগুলোকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আইইবি-বিএইটিই অ্যাক্রিডেশনের আওতায় আনতে হবে।
বুয়েট শিক্ষার্থী জাহিদুল হক বলেন, আমাদের স্পষ্ট দাবি, প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের ৩ দফা বাস্তবায়নের জন্য নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। এ ছাড়া প্রকৌশলী রোকনুজ্জামানকে হত্যার হুমকি দেওয়া ডিপ্লোমা সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৩৪৪টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
এছাড়াও অভিযানকালে ৩১৩টি গাড়ি ডাম্পিং ও ১১৪টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
ডিএমপি’র মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, মঙ্গলবার ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি’র ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
রাজধানীর মুগদায় মায়ের সঙ্গে অভিমানে ইঁদুর মারার বিষ পান করে সামিয়া আক্তার (১৫) নামে এক স্কুল শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
রোববার (২৪ আগস্ট) দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত সামিয়া মুগদা মাল্টিমিডিয়া স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী ও উত্তর মান্ডার এলাকার আজিজুল হকের মেয়ে।
সামিয়ার ভাই সাহিম জানান, সামিয়া একটু রাগী স্বভাবের ছিল। রাতে মায়ের সঙ্গে তুচ্ছ বিষয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে অভিমানে বাসায় রাখা ইঁদুর মারার বিষ পান করে। পরে দ্রুত ঢামেকে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক মিয়া বলেন, ‘নিহত শিক্ষার্থীর মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি মুগদা থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।
মন্তব্য