স্বপ্নের মেট্রোরেলের পরীক্ষামূলক যাত্রা শুরু হয়েছে। এখন বাণিজ্যিকভাবে চলার অপেক্ষা। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে মেট্রোরেলে চড়ে যাতায়াত করতে পারবেন ঢাকাবাসী।
মেট্রোরেল চালু হলে রাজধানীর যানজট সহনীয় হবে বলে আশা করছে সরকার। এটা জনগণের জন্য স্বস্তির খবর হলেও প্রশ্ন উঠেছে মেট্রোরেল এলে বাস-মিনিবাসসহ গণপরিবহন চাপের মুখে পড়বে কি না।
মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) কর্তৃপক্ষ বলেছে, মেট্রোরেল চালু হলে গণপরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।
বাসমালিকরা মনে করেন, ঢাকায় যাত্রীসংখ্যার তুলনায় যানবাহন অপ্রতুল। কাজেই গণপরিবহন খাতে যাত্রীস্বল্পতার কোনো প্রভাব পড়বে না।
ডিএমটিসিএল অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকায় ছয়টি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে সরকার।
উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের যে লাইনটি নির্মিত হচ্ছে, সেটির কাজ ৮০ শতাংশ শেষ। এমআরটি-৬ নামে পরিচিত এ রুটটি সবার আগে চালু হবে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে।
কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর এবং নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত লাইনের কাজ আগামী জুলাইয়ে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
এটি মেট্রোরেল লাইন-১ রুট নামে পরিচিত। কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত মেট্রোরেল হবে পাতালপথে। আর নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত অংশ হবে উড়ালপথে। সাড়ে ৫২ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ ২০২৬ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
আগামী বছরের ডিসেম্বরে লাইন-৫-এর উত্তরের রুটের কাজও শুরু হওয়ার কথা। এটি সাভারের হেমায়েতপুর থেকে শুরু হয়ে গাবতলী, মিরপুর ও গুলশান হয়ে ভাটারায় শেষ হবে।
ডিএমটিসিএলের পরিসংখ্যানে বলে, সব লাইন চালু হলে ঢাকায় মেট্রোরেলে প্রতিদিন ৬০ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবেন। রাজধানীতে এর চেয়ে কয়েক গুণ বেশি যাত্রী প্রতিদিন গণপরিবহনে যাতায়াত করেন।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ঢাকায় বাস-মিনিবাস চলে সাড়ে ৪ হাজার। সিএনজি ৩০ হাজার, হিউম্যান হলার ও লেগুনা মিলে ৮ হাজার ও রিকশা প্রায় সাড়ে ৭ লাখের মতো। এসব যানবাহনের মাধ্যমে রাজধানীতে প্রতিদিন সাড়ে ৩ কোটি যাত্রীর ট্রিপ হয়। এর মধ্যে ৭৮ শতাংশ যাত্রী যাতায়ত করেন বাসে।
বাণিজ্যিকভাবে মেট্রোরেল চালু হলে রাজধানীর গণপরিবহন ব্যবসায় প্রভাব পড়বে কি না, জানতে চাইলে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ রুটে বাস কীভাবে চলবে, এটা তাদের বিষয়। যেখানে ভালো সেবা ও দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানো যাবে, সেখানেই যাতায়াত করবেন যাত্রীরা।
‘গণপরিবহন খাতে বিশৃঙ্খলা চলছে। এটা কেউ চায় না। ফ্রাঞ্চাইজি বাস চালানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল একবার, কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। সারা দুনিয়াতে এভাবেই বাস চলে। অভিজ্ঞতায় তাই বলে।’
সাবেক এই যোগাযোগসচিব আরও বলেন, ‘এখন যার যা খুশি, সেভাবে একটা বাস কিনে রাস্তায় নামিয়ে দেন। এ রকমভাবে বাস দুনিয়ার কোথাও চলে না। ফ্রাঞ্চাইজি বাস চলাচল করলে গণপরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।’
সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব এনায়েত উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রায় ৯০ শতাংশ যাত্রী গণপরিবহনের ওপর নির্ভরশীল। মেট্রোরেল চালু হলে এ খাতে কোনো চাপ আসবে না। এ ছাড়া বাসের যাত্রী আর মেট্রোরেলের যাত্রী এক নয়। মেট্রোরেলের ভাড়া অনেক বেশি হবে।’
এদিকে গণপরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হলে দুই-তিনটি বড় কোম্পানি গঠন (ফ্রাঞ্চাইজি) করে পরিবহন ব্যবস্থা পরিচালনার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, এটা করা হলে বাসমালিকরা আর্থিকভাবে বেশি লাভবান হবেন। অপরদিকে যাত্রীরাও এর সুফল পাবেন।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষক ও গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. শামছুল হক বলেন, ‘কম সময়ে আরামদায়ক ও দ্রুতগতির জন্য যাত্রীরা অগ্রাধিকার দেবেন মেট্রোরেলকে। মেট্রোরেলে যে সুবিধা পাওয়া যাবে, বাস সে ধরনের সেবা দিতে পারবে না। ফলে কিছুটা চাপে পড়বে গণপরিবহন খাত।’
তিনি মনে করেন, মেট্রো চালুর আগে ফ্রাঞ্চাইজি বাস সার্ভিসের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। এটা করা হলে ট্রিপের সংখ্যা আরও বাড়বে। ফলে বাসমালিকদের আয় বাড়বে। তখন অনেকেই বিনিয়োগে উৎসাহিত হবেন। এতে করে পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।
শামছুল হক আরও জানান, অভ্যন্তরীণ রুটে সেবার মান খারাপ। তার ওপর রয়েছে যানজট। মেট্রোরেল চালু হলে সুন্দর একটা পরিবেশ তৈরি হবে। ফলে গণপরিবহনে যাত্রী কিছুটা কমে যাবে।
প্রতি বছর ঢাকা শহরে যাত্রী বাড়ছে প্রায় ৩ শতাংশ করে। তবে করোনার কারণে এটি কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে। ঢাকা শহরে যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি চড়ে বাস-মিনিবাসে। তার পর রিকশায়।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, প্রতিদিন ঢাকা শহরে গণপরিবহনে সাড়ে ৩ কোটি যাত্রীর ট্রিপ হয়। আর মেট্রোরেল চালু হলে ৬০ লাখ যাত্রী পরিবহন করতে পারবে। কাজেই মেট্রোরেল এলে গণপরিবহনে চাপ আসবে না।
তিনি বলেন, যেটা নিয়ে শঙ্কা তা হলো, বাংলাদেশে পরিবহন খাত নিয়ে যারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, বাস্তবতার বাইরে তারা। ফলে অনেক ক্ষেত্রে যাত্রীবান্ধব সিদ্ধান্ত আসে না।
তার মতে, মেট্রোরেলের ভাড়া বেশি নির্ধারণ করলে এর পুরো সক্ষমতা কাজে লাগানো যাবে না। এটা করা হলে হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তারপরও তিনি মনে করেন, ৯৫ ভাগ যাত্রী গণপরিবহনের ওপর নির্ভরশীল থাকবে।
আরও পড়ুন:ঈদুল আজহায় টানা ছুটির মাঝে বৃষ্টি হওয়ায় ঢাকার বাতাস মোটামুটি স্বাস্থ্যকর ছিল। তবে গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিহীন শুষ্ক পরিবেশ আর ক্রমেই রাজধানীর পুরনো ভিড় বাড়তে থাকায় দূষণও বাড়ছে সমান তালে।
রবিবার (১৫ জুন) সকাল ৯টার দিকে দেখা যায়, বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় ফের শীর্ষস্থানগুলোতে জায়গা করে নিয়েছে ঢাকা। এ সময়ে ১৪২ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় দূষিত বাতাসের শহর ছিল বাংলাদেশের রাজধানী, সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য যা অস্বাস্থ্যকর।
এ সময় ১৫৩ স্কোর নিয়ে শীর্ষ দূষিত শহর ছিল ইন্দোনেশিয়ার মেদান। এ ছাড়া ১২৬ ও ১২৪ স্কোর নিয়ে ঢাকার পরেই ছিল যথাক্রমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ও মিসরের কায়রো।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
রাজধানীর উত্তরায় র্যাব পরিচয়ে মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান ‘নগদের’ এক পরিবেশকের এক কোটি ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৪ জুন) সকাল ৮টা ৫২ মিনিটে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর সড়কে এই ঘটনা ঘটেছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানায়, ‘আব্দুল খালেক নয়ন নগদের একজন পরিবেশক। তিনি উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের একটি ফ্লাটে থাকেন। শনিবার সকালে তিনি তার চারজন এমপ্লয়িকে দুইটি মোটরসাইকেলযোগে বাসার পাশেই পরিবেশক অফিসে পাঠাচ্ছিলেন। সাথে এক কোটি টাকার বেশি ছিল।’
‘তাদের বহনকারী মোটরসাইকেল দুটি বারো নম্বর রোড ক্রস করে যখন তেরো নম্বর রোডে ঢুকছিল, তখন ওৎপেতে থাকা একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাস তাদের গতি রোধ করে। মাইক্রোবাস থেকে র্যাবের পোশাক পরিহিত তিন থেকে চারজন নেমে এসে টাকার ব্যাগ বহনকারী মোটরসাইকেল আরোহীদের ধাওয়া করে।’
পুলিশ আরও জানায়, এদের মধ্যে একজন আরোহী দৌড়ে পালিয়ে গেলেও তিনজনকে টাকার ব্যাগসহ তারা মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। পরবর্তীতে তারা উত্তরা সতেরো নম্বর সেক্টরে নগদ মাইক্রোবাস থেকে তাদের ফেলে দিয়ে টাকার ব্যাগ সহ পালিয়ে যায়।
যোগাযোগ করা হলে উত্তরা ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার মইদুল ইসলাম ইউএনবিকে জানান, ‘ঘটনার পরপরই তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সিসিটিভির ফোটেজ সংগ্রহ করেছেন। ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।’
ঈদ উপলক্ষে লম্বা ছুটিতে বেশ কিছুদিন ধরে একপ্রকার ফাঁকা হয়ে গেছে শহর ঢাকা। সড়কগুলোতে নেই যানবাহনের চাপ; স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালতও বন্ধ; রাস্তায় লোকজনও হাতেগোনা। এই অবস্থায় গত কয়েকদিন বৃষ্টি কমে গেলেও রাজধানীর বাতাসের মানে খুব বেশি অবনতি হয়নি।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকাল ১০টার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল মাত্র ৬৬। আর দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান আরও অবাক হওয়ার মতো। প্রতিনিয়ত বায়ুদূষণে শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় জায়গা করে নিলেও ঢাকার অবস্থান আজ ৫৫তম।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’। ঢাকার বাতাস আজ মাঝারি হলেও ‘ভালো’ থেকে খুব বেশি দূরে নয়।
এই সময়ে ৬৭ একিউআই স্কোর নিয়ে দূষিত শহরের তালিকার ৫২তম স্থানে ছিল স্পেনের বার্সেলোনা, ৫০তম স্থানে সুইজারল্যান্ডের বেয়ার্ন, ৬৮ স্কোর নিয়ে ৪৯তম স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের সল্ট লেক সিটি, ৭০ ও ৭১ স্কোর নিয়ে ৪৪ ও ৪৩তম স্থানে নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসি, ৭৩ স্কোর নিয়ে ৩৮তম স্থানে কানাডার টরেন্টো, ৮০ স্কোর নিয়ে ২৭তম দূষিত শহর শিকাগো, ৯৯ স্কোর নিয়ে ১৫তম স্থানে ইতালির রোম এবং ১২৮ স্কোর নিয়ে তালিকার সপ্তম স্থানে রয়েছে মিলান।
তবে ১৬৮ একিউইউ স্কোর নিয়ে এই সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর ছিল ভারতের দিল্লি। ১৬২, ১৫৬ ও ১৩৭ স্কোর নিয়ে এর পরের তিন দূষিত শহর যথাক্রমে ইরাকের বাগদাদ, পাকিস্তানের লাহোর ও সৌদি আরবের রিয়াদ।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
এডিস মশার বিস্তার রোধে তাৎক্ষণিক ফল পেতে ১৪ জুন থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন(ডিএসসিসি) এলাকায় দ্বিগুণহারে কীটনাশক প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এডিস মশার বিস্তার রোধে করণীয় নির্ধারণ ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও করোনা প্রতিরোধে ডিএসসিসি প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে আজ রাজধানীর ওয়াসা ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় অ্যাডাল্টিসাইডিং কার্যক্রমে (ফগার মেশিন দ্বারা পরিচালিত) বর্তমানে ব্যবহৃত ৩০ লিটার কীটনাশকের পরিবর্তে দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থাৎ ৬০ লিটার কীটনাশক প্রতিদিন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ ছাড়া অঞ্চলভিত্তিক ডেঙ্গু মনিটরিং টিম গঠন ও জনবল ঘাটতি পূরণে উদ্যোগসহ জনগুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সভায় মশক কর্মীদের সকাল ও বিকেলে নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করা, সঠিক অনুপাতে কীটনাশক প্রয়োগ যাচাই, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা এবং মশক কর্মী দ্বারা বাড়ির ভিতর, আঙিনা ও ছাদের জমানো পানিসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকরণে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক এবং সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে অঞ্চল ভিত্তিক ডেঙ্গু মনিটরিং টিম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
এছাড়া, ডেঙ্গু ও করোনা বিষয়ে ডিএসসিসি সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফারিয়া ফয়েজকে ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসেবে মনোনীত করা হয়।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি মাসের মধ্যে কীটতত্ত্ববিদদের সমন্বয়ে নগর ভবনে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে এবং প্রতিদিনের ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের হালনাগাদ তথ্য ডিএসসিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। মশক নিধনে জনবল ঘাটতি পূরণে নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখাসহ ডেঙ্গু ও করোনা রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় ডিএসসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. জিল্লুর রহমান, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নিশাত পারভীনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) এ কে এম মেহেদী হাসান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- সেলিম (৪৫), রফিক (৪০), সাদ্দাম (৩০), উজ্জ্বল (৩২) ও শামীম (২৫)।
গতকাল সোমবার (৯জুন) মোহাম্মদপুর থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদের মধ্যে রয়েছে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ১জন, মাদক মামলায় ১জন, দূস্যতার মামলায় ১জন এবং অন্যান্য মামলায় ২জন।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
রাজধানীর পল্লবী থানার মিল্লাত ক্যাম্প এলাকায় পূর্বশত্রুতার জেরে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে পুলিশ খবর পেয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে।
নিহত ওই যুবকের নাম রাকিবুল হাসান সানি (২৯)। ভোর ৪টা থেকে ৫টার মধ্যেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও মাদক চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সকাল সাতটার দিকে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছি। পরে মরদেহ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে এবং পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হবে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদক বিক্রির আধিপত্য বিস্তার ও দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে হত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে রাতের আঁধারে হত্যাকারীরা কীভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছে; তা এখনও স্পষ্ট নয়।
নিহতের পরিবারের দাবি, সানি একজন অটোরিকশাচালক ছিলেন। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, গেল রমজান মাসেও একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্র তার ওপর হামলা চালিয়েছিল।
ঘটনার পর থেকে মিল্লাত ক্যাম্প এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং এলাকায় পুলিশ ও সিআইডি সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
গতকাল শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে বন্ধ থাকার পর আজ রোববার থেকে ফের চালু হয়েছে মেট্রোরেল। তবে মেট্রোতে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না।
রোববার সকাল ৮টা থেকে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে জানা যায়, আজ (রোববার) প্রতি ৩০ মিনিট পরপর ট্রেন চলছে। আগামীকাল সোমবার থেকে মেট্রোরেল সরকারি ছুটির দিনের সময়সূচি অনুযায়ী চলাচল করবে।
গত মঙ্গলবার ডিএমটিসিএলের পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম খায়রুল আলমের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মেট্রোরেলে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না। মেট্রো স্টেশনের প্রতিটি গেটে যাত্রীদের যথাযথভাবে তল্লাশি করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোনো যাত্রীর কাছে কাঁচা বা রান্না করা মাংস পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক তার মেট্রো স্টেশনে প্রবেশ আটকে দেওয়া হবে। মেট্রোরেলের নিরাপত্তা কর্মীদের এসব নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতেও বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য