যুগে যুগে বিজ্ঞানীরা মানব জীবনের সব সীমাবদ্ধতা নিয়েই ভেবেছেন। অনেক সমস্যার সমাধান তারা করেছেন। তেমনি অনেক বিষয় এখনও অমীমাংসিত রয়ে গেছে। তাদের এই প্রচেষ্টাকে যেমন যুগে যুগে মানুষ সমর্থন করেছে। ঠিক তেমনি তাদের কর্মকাণ্ড বুঝতে পারেনি বিধায় বিজ্ঞানের বিষয়ে এক ধরনের ভীতিও সাধারণ মানুষের মধ্যে কাজ করেছে। যার মূল্য দিতে হয়েছিল গ্যালিলিও কোপার্নিকাসের নাম না জানা আরও অনেক বিজ্ঞানীর।
গল্প ঔপন্যাসিকরাও অনেক ভৌতিক ও বিজ্ঞান কল্পকাহিনিতে দেখিয়েছেন, বৈজ্ঞানিক চরিত্রগুলো প্রায়ই ঈশ্বর হতে চান।
ঠিক এমন একটি চরিত্র ড. ফ্রাঙ্কেস্টাইন। তিনি মৃতকে জীবিত করার মাধ্যমে নতুন একটি দানব সৃষ্টি করেন। শেষতক যার পরিণতি ভালো হয়নি।
কল্পজগতে যাই হোক। মৃতকে জীবিত করার চেষ্টা বিজ্ঞানীরা এখনো অব্যাহত রেখেছেন। তারা সফলতাও পেয়েছেন। কাজগুলো মোটেও ড. ফ্রাঙ্কেস্টাইনের মতো বিতর্কিত নয়।
সর্বশেষ ১০ বছরে পাঁচবার বিজ্ঞানীরা হাজার বছর ধরে মৃতের মতো পড়ে থাকা প্রাণকে জীবিত করেছেন।
প্লাইস্টোসিন যুগের উদ্ভিদকে পুনর্জীবিত করা
রাশিয়ার অঞ্চলে ৬৫ শতাংশ এলাকা সারা বছর হিমায়িত থাকে। কেউ যদি হাজার বছর ধরে জমে থাকা প্রাণীর সন্ধান করে, তার জন্য রাশিয়া হলো সেরা জায়গা।
২০১২ সালে রাশিয়ার বিজ্ঞানীদের একটি দল গবেষণাপত্র প্রকাশ করে। সেই গবেষণা পত্রে তারা দেখায়, কিভাবে ৩২ হাজার বছর আগের প্লাইস্টোসিন যুগের একটি উদ্ভিদকে তারা পুনর্জীবিত করেছিল।
সাদা রঙের ফুল হওয়া এই উদ্ভিদের নাম সিলিন স্টেনোফিলা। গবেষকদের মতে, গাছপালা হলো পৃথিবীব সবচেয়ে প্রাচীন বহুকোষী প্রাণ।
গবেষক দল পারমাফ্রস্টের ৪০ মিটার নিচ থেকে উদ্ভিদের অপরিপক্ব ফলের টিস্যু উদ্ধার করে। সেই টিস্যু থেকে বিজ্ঞানীরা ফুল ও ফল আনতে সক্ষম হন। এমনকি এই উদ্ভিদের পরবর্তী প্রজন্মও চালিয়ে যাওয়ার মতো কার্যকর বীজও তৈরি করতে সক্ষম হয়।
১ হাজার ৫০০ বছরের পুরোনো শ্যাওলা থেকে নতুন শ্যাওলার জন্ম
রাশিয়ান বিজ্ঞানীরা সাইবেরিয়ান পারমাফ্রস্ট থেকে ফুলের উদ্ভিদ পুনরুত্পাদন করার মাত্র দুই বছর পরে, ব্রিটিশ গবেষকদের একটি দল বিশ্বের অন্য প্রান্ত এন্টার্কটিকায় ১ হাজার ৫৩০ বছর আগে চাপা পড়া শ্যাওলার খোঁজ পায়।
যা ক্রিপ্টোবায়োসিসের মাধ্যমে বরফের মধ্যে জমাট বেঁধেছিল, এই পদ্ধতিতে একটি কোষের বিপাকীয় কার্যাবলি বন্ধ হয়ে যায়। সাধারণত হিমবাহের মতো কঠিন পরিবেশে নিজের বাঁচাতে অনেক উদ্ভিদ ও প্রাণী ক্রিপ্টোবায়সিসে প্রবেশ করে জীবগুলো শুধু হিমায়িত পারমাফ্রস্টের মতো অত্যন্ত কঠোর পরিবেশ থেকে নিজেদের বাঁচাতে ক্রিপ্টোবায়োসিসে প্রবেশ করে।
সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হলো গবেষকরা প্রাচীন শ্যাওলাগুলোতে নতুন শ্যাওলা জন্মাতে সক্ষম হয়েছেন।
গুটি বসন্তের হারিয়ে যাওয়া প্রজাতিকে ফিরিয়ে আনা
২০১৭ সালে আলবার্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক সিন্থেটিক বায়োলজিই ব্যবহার করে হর্সপক্স ভাইরাসের নতুন জিনোম তৈরি করেন। একে মারাত্মক গুটি বসন্তের কাজিন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে মানুষের জন্য ভাইরাসটি ক্ষতিকর নয়।
বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন, সম্ভবত ভাইরাসটি প্রকৃতি থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
তবে উদ্বেগের বিষয় হলো, এই ধরনের প্রযুক্তি যদি ভুল হাতে পড়ে, তাহলে বড় ধরনের বিপদ হতে পারে। কেউ খারাপ উদ্দেশে এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করলে কোটি মানুষের মৃত্যু সম্ভব। কারণ গুটি বসন্তের জীবাণু অত্যন্ত সংক্রামক ও প্রাণঘাতী ভাইরাস।
জার্মানির মিউনিখের লুডভিগ ম্যাক্সিমিলিয়ান ইউনিভার্সিটির ভাইরোলজিস্ট গার্ড সাটার এই বিষয়ে একটি বিজ্ঞান নিবন্ধে বলেছেন, ‘কোনো সন্দেহ নেই। যদি হর্সপক্সের সঙ্গে এটি সম্ভব হয়, তবে গুটি বসন্তের সঙ্গে এটি সম্ভব।’
গুটি বসন্তের ভাইরাস হলো পৃথিবীর একমাত্র ভাইরাস। যেটিকে ১৯৭৭ সালে টিকা দেয়ার মাধ্যমে বিশ্ব থেকে নির্মূল করা হয়েছিল।
বিলুপ্ত পর্বতের ছাগল বুকার্ডোকে ফিরিয়ে আনা
২০০০ সালে পৃথিবীর শেষ বুকার্ডো গাছের নিচে চাপা পড়ে মারা যায়। বুকার্ডোটির নাম ছিল সেলিয়া। এরা পাইরেনিয়ান আইবেক্স বা পর্বত ছাগল নামেও পরিচিত।
বিজ্ঞানীরা সেলিয়ার কোষগুলোকে সংরক্ষণ করেছিলেন। পুনরায় একে ফিরিয়ে আনার জন্য। পরবর্তীতে তার কোষ থেকে নিউক্লিয়াস সংগ্রহ করে স্যারোগেট প্রজাতির ছাগলের মাতৃগর্ভের ভ্রূণে স্থাপন করা হয়। গবেষকরা প্রথম ক্লোন করা ভেড়া ডলিকে যেভাবে ক্লোন করা হয়েছিল। সেই কৌশলেই বিজ্ঞানীরা বুকার্ডো প্রজাতিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিলেন।
বিজ্ঞানীরা সফলভাবে এই কাজটি করতে সক্ষম হন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেলিয়ার ক্লোনটি মাত্র ১০ মিনিট বেঁচেছিল। পৃথিবীর একমাত্র প্রজাতি হিসেবে দুবার বিলুপ্ত হয় বুকার্ডো।
বিজ্ঞানীরা ২০১৩ সালে, সেলিয়ার কোষগুলো পরীক্ষা করার জন্য তহবিল পেয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে সেলিয়াকে পুনরায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেননি তারা।
হাজার বছরের পুরাতন আর্কটিক রোটিফারকে ফিরিয়ে আনা
সাইবেরিয়ান হিমবাহের নিচে ২৪ হাজার বছর ধরে চাপা পড়ে থাকা বিডেলইডিয়াকে বের করে নিয়ে আসেন বিজ্ঞানীরা। বিডেলেইডা মূলত আণুবিক্ষণিক প্রাণী। এ ধরনের প্রজাতিকে রোটিফারের গণতে ফেলা হয়। আর্কটিক প্রাণ হওয়ায় বিজ্ঞানীর নাম দেয়া হয় আর্কটিক রোটিফায়ার।
বিডেলেইডা রোটিফায়ার একটি বহুকোষী প্রাণী। তবে এতই ছোট যে একে অণুবীক্ষণ যন্ত্রে দেখতে হয়। তাদের আকারের বিচারে উত্তাপের মধ্যে, শীতের মধ্যে, খাদ্যের অভাবের মধ্যে এমনকি কম অক্সিজেনের মধ্যেও বেঁচে থাকার সুখ্যাতি আছে এর।
ইউএস ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে গবেষকদের একটি দল দেখতে পায়, তারা যে শুধু বরফের মধ্যেই বেঁচে থাকতে পারে, এমনটি নয়। বিডেলেইডা রোটিফার ২৪ হাজার বছর ধরে সাইবেরিয়ান হিমবাহের নিচে চাপা পড়ে থাকার পরেও বেঁচে রয়েছে। এ ধরনের রোটিফায়ারের বেঁচে থাকার পদ্ধতিকে ‘সাসপেনডেড এনিমেশন’ বলে। শারীরিক ক্রিয়াকলাপ বন্ধ করে দীর্ঘ মেয়াদে প্রাণীদের বেঁচে থাকার প্রক্রিয়াটিকে সাসপেনডেট অ্যানিমেশন বলে।
বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল, এই হিমায়িত অবস্থায় রোটিফারগুলো শুধু ছয় থেকে ১০ বছর বেঁচে থাকতে পারে। এখন গবেষকরা রেডিওকার্বন ডেটিং পদ্ধতিতে জানতে পারেন যে এই রোটিফারের বয়স জানতে পারে। পার্থজেনেসিস প্রক্রিয়ায় একে ক্লোন করে বংশবিস্তার করতেও সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
বরফ থেকে একটি জীবন্ত প্রাণীকে পুনরুত্থিত করার এবং ক্লোন করার সম্ভাবনা একটি বিজ্ঞান কল্পকাহিনি চলচ্চিত্রের মতো মনে হতে পারে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা একেই বাস্তব করেছেন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানির সব ধরনের ইন্টারনেটের দাম ১০ শতাংশ কমছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
শনিবার কোম্পানির বোর্ড সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। এর ফলে মোবাইল ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড সার্ভিস দুই ক্ষেত্রেই কোম্পানিগুলোর খরচ কমে আসবে বলে জানান তিনি।
ফয়েজ আহমদ জানান, ইন্টারনেটের দাম কমানোর জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। মানুষ যেন সাশ্রয়ে ইন্টারনেট পায় সেজন্য বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পাইকারি পর্যায়ে ইন্টারনেটের দাম কমানো এই উদ্যোগগুলোর মধ্যে অন্যতম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ সিদ্ধান্তের ফলে ইন্টারনেটের আন্তর্জাতিক গেটওয়ে লেভেলে সব ব্যান্ডউইথের দাম ১০ শতাংশ কমে আসবে। এছাড়া ব্যাকবোন পর্যায়ে মোবাইল কোম্পানিগুলোকে ডিডাব্লিউডিএম সুবিধা দেওয়ার কথা হচ্ছে।’
এতে ট্রান্সমিশন বাবদ টেলিকম কোম্পানিগুলোর খরচ ৩৯ শতাংশ কমে যাবে বলে মত দেন প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী।
তিনি বলেন, 'ইতোমধ্যে টেলিকম অপারেটরদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। অপারেটররা ভোক্তা পর্যায়ে ইন্টারনেটের দাম ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।'
তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ আরও জানান, আগামী বছরের মাঝামাঝিতে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সিমিউই-৬ এর সঙ্গে যুক্ত হবে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন:অনলাইন শিক্ষার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে যাচ্ছে টুইনপোস্ট বিডি। এটি পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, যেখানে কবিতা, অনুচ্ছেদ, বাংলা প্রবন্ধ, ছড়া, সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর, আবহাওয়ার আপডেট এবং শিক্ষাবিষয়ক সংবাদ একসঙ্গে পাওয়া যাবে।
উচ্চমানের ও আকর্ষণীয় কনটেন্ট সরবরাহের লক্ষ্যে চালু হওয়া ওয়েবসাইটটি শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং জ্ঞানসন্ধানীদের জন্য এক অনন্য গন্তব্য হয়ে উঠবে বলে আশা উদ্যোক্তার।
শিক্ষা ও সৃজনশীলতার নতুন মঞ্চ
উদ্যোক্তার ভাষ্য, টুইনপোস্ট বিডি বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট সরবরাহ করে, যা পাঠকদের বহুমুখী চাহিদা পূরণে সক্ষম। মনোমুগ্ধকর কবিতা থেকে শুরু করে শিক্ষামূলক প্রবন্ধ, কাঠামোবদ্ধ প্রশ্নোত্তর এবং সর্বশেষ আবহাওয়া সংক্রান্ত আপডেটসহ নানা বিষয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য প্রদান করছে এটি। শিক্ষাবিষয়ক সংবাদের একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবেও পরিচিতি লাভ করছে প্ল্যাটফর্মটি।
‘টক অফ দ্য সিরিজ’: স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংলাপের কেন্দ্রবিন্দু
উদ্যোক্তার মতে, টুইনপোস্ট বিডির অন্যতম আকর্ষণীয় বিভাগ হলো ‘টক অফ দ্য সিরিজ’, যেখানে তিনটি বিশেষ অংশ রয়েছে। সেগুলো হলো ‘টক অফ দ্য টাউন’, ‘টক অফ দ্য কান্ট্রি’ এবং ‘টক অফ দ্য ওয়ার্ল্ড’।
এ বিভাগ স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে পাঠকদের সম্পৃক্ত করতে সাহায্য করবে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও সম্ভাবনা
টুইনপোস্ট বিডি ক্রমাগত উন্নতির প্রতিশ্রুতি নিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও নতুন বিভাগ সংযোজন এবং সমৃদ্ধ কনটেন্ট লাইব্রেরি তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। ডিজিটাল শিক্ষার জগতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার লক্ষ্যে কাজ করছে প্ল্যাটফর্মটি।
কেন টুইনপোস্ট বিডি অনন্য
উদ্যোক্তার মতে, কিছু কারণে টুইনপোস্ট বিডি অনন্য। সেগুলো হলো কবিতা, প্রবন্ধ, ছড়া ও শিক্ষামূলক কনটেন্টের সমৃদ্ধ সংগ্রহ, নির্ভুল ও সময়োপযোগী আবহাওয়া আপডেট, শিক্ষা সংবাদ, ‘টক অফ দ্য সিরিজ’-এর মাধ্যমে আকর্ষণীয় আলোচনা, শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং সাহিত্যপ্রেমীদের জন্য ব্যবহারকারী-বান্ধব প্ল্যাটফর্ম।
যুক্ত হতে পারেন আপনিও
টুইনপোস্ট বিডি শিক্ষার্থী, শিক্ষক, লেখক ও কনটেন্ট অনুরাগীদের জন্য একটি উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম, যেখানে জ্ঞানের আদান-প্রদান সহজ ও কার্যকরী। উচ্চমানের ও আকর্ষণীয় কনটেন্ট প্রদানের অঙ্গীকার নিয়ে ওয়েবসাইটটি ডিজিটাল বিশ্বে একটি স্থায়ী প্রভাব রাখতে প্রস্তুত।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক প্রযুক্তি কোম্পানি মেটা ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ প্ল্যাটফর্মগুলোতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অ্যাপ যুক্ত করার পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছে সিএনবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে বলেছে, এআইকে শক্তিশালী করার মডেলের ক্ষেত্রে মেটা অ্যামাজন, ওপেনএআই, গুগল ও মাইক্রোসফটের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে। ২০২৩ সালে নিজস্ব এআই চ্যাটবট চালু করার পর থেকে তারা ক্রমবর্ধমানভাবে প্রযুক্তিটিকে নিজস্ব প্ল্যাটফর্মগুলোতে ব্যবহার করছে।
সিএনবিসি বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত ব্যক্তিদের উদ্ধৃত করে জানায়, মেটা এ বছরের মাঝামাঝি নাগাদ একটি স্বতন্ত্র এআই অ্যাপ চালু করার পরিকল্পনা করছে।
ওপেনএআইয়ের সিইও স্যাম অল্টম্যান এক্সে এক পোস্টে সিএনবিসির লিংকসহ লিখেছেন, ‘ঠিক আছে, ঠিক আছে। হয়তো আমরা একটি সামাজিক অ্যাপ তৈরি করব।’
মেটা সম্প্রতি ২০২৪ সালের জন্য ক্রমবর্ধমান মুনাফা ও রাজস্বের কথা জানিয়েছে। আগামী বছরে তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অবকাঠামো সম্প্রসারণের উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।
মেটা সিইও মার্ক জাকারবার্গ বলেন, ‘আমি আশা করছি এ বছর এমন একটি বছর হবে, যখন একটি অত্যন্ত বুদ্ধিমান ও ব্যক্তিগতকৃত এআই সহকারী ১ বিলিয়নেরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাবে এবং মেটা এআই সেই শীর্ষস্থানীয় সহকারী হবে।’
গবেষকরা এআইনিয়ন্ত্রিত এমন ক্যালকুলেটর তৈরি করেছেন যা বলে দিতে পারে আপনি আপনার মৃত্যুর ঠিক কতটা কাছে। ল্যানসেট ডিজিটাল হেলথ-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় এমনটা জানানো হয়েছে।
এআই-চালিত ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম (AI-ECGs) একজন ব্যক্তির ভবিষ্যতের স্বাস্থ্য সমস্যা এবং এমনকি মৃত্যুর ঝুঁকির পূর্বাভাস দিতে পারে। অবশ্য দৈনন্দিন চিকিৎসা পরিষেবায় সেগুলো এটি ব্যবহার করা হয়নি।
বর্তমানে এআই ক্যালকুলেটরের এই ভবিষ্যদ্বাণী পৃথক রোগীদের জন্য স্পষ্ট কার্যক্রম পরিচালনা করে না। সেসঙ্গে জীববিজ্ঞানের সঙ্গে এর কার্যকারিতা সারিবদ্ধ নয়। এই সমস্যাগুলো মোকাবেলায় ল্যানসেট গবেষকরা AI-ECG রিস্ক এস্টিমেটর (AIRE) নামে একটি নতুন টুল তৈরি করেছেন।
মৃত্যুর পূর্বাভাস দিয়ে AIRE ভবিষ্যতে হৃদযন্ত্র বিকল হওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে। এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে হৃৎপিণ্ড পাম্প করা বন্ধ করে দেয়, যার ফলে দশটির মধ্যে প্রায় আটটি ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সমস্যা এবং প্রাথমিকভাবে রোগীর মৃত্যু ঘটে।
গবেষকরা বলছেন, ‘আমরা AI-ECG রিস্ক এস্টিমেটর (AIRE) প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে পূর্ববর্তী AI-ECG পদ্ধতির সীমাবদ্ধতাগুলো সমাধানের চেষ্টা করেছি।
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য সংস্থা ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের অধীনে দুটি হাসপাতাল আগামী বছরের মাঝামাঝি থেকে এই প্রযুক্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত। আর বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন যে এটি পাঁচ বছরের মধ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা জুড়ে ব্যবহার করা সম্ভব হবে।
হাসপাতালে আসা রোগীরা এআই ‘ডেথ ক্যালকুলেটর’ থেকে আনুমানিক আয়ুষ্কালের পূর্বাভাস পেতে পারে। এই টুলটি একটি একক ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম (ECG) পরীক্ষা ব্যবহার করে, যা কয়েক মিনিটের মধ্যে হার্টের কার্যকলাপ রেকর্ড করে অজানা স্বাস্থ্য সমস্যাগুলো শনাক্ত করতে পারে। AI-ECG বা AIRE নামে পরিচিত এই প্রোগ্রামটি ৭৮ শতাংশ পর্যন্ত নির্ভুলতার সঙ্গে ECG-এর পর ১০ বছরের মধ্যে মৃত্যুর ঝুঁকি সঠিকভাবে শনাক্ত করতে পারে বলে গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে।
ল্যানসেট গবেষকরা এক লাখ ৮৯ হাজার ৫৩৯ রোগীর ১ দশমিক ১৬ মিলিয়ন ইসিজি পরীক্ষার ফলাফলের ডেটাসেট ব্যবহার করে প্রযুক্তিটির প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তারা দেখেছেন, এটি তিন-চতুর্থাংশ (৭৬ শতাংশ) ক্ষেত্রে এবং ভবিষ্যতের এথেরোস্ক্লেরোটিক কার্ডিওভাসকুলার রোগের মতো গুরুতর হৃদযন্ত্রের সমস্যা (যেখানে ধমনি সংকীর্ণ, রক্তপ্রবাহকে কঠিন করে তোলে) দশটির মধ্যে সাতটি ক্ষেত্রে শনাক্ত করেছে।
শুধু রোগ নির্ণয় নয়, ‘এআই ডেথ ক্যালকুলেটর’ স্বাস্থ্য ঝুঁকির একটি পরিসরও জানাবে যা রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি AIRE শনাক্ত করে যে আপনি একটি নির্দিষ্ট হৃদযন্ত্রের ছন্দের সমস্যার উচ্চ ঝুঁকিতে আছেন, তাহলে আপনি এটিকে প্রতিরোধ করতে আরও বেশি সক্রিয় হবেন।
রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনের থাকা বা না-থাকার বিষয় নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে অন্তর্বর্তী সরকার।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্তর্বর্তী সরকারের একটি বিশ্বস্ত সূত্র নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানায়।
সূত্র জানায়, উপদেষ্টা পরিষদের বৃহস্পতিবারের বৈঠকে অন্যান্য ইস্যুর পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির বিষয়টিও আলোচনায় আসে। এ সময় সিদ্ধান্ত হয় রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করবেন কিনা বা তিনি এ পদে থাকবেন কিনা সে বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে মতামত নেয়া হবে এবং সে অনুযায়ী পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনের থাকা না-থাকা নিয়ে দেশজুড়ে নানা আলোচনার মধ্যে গতকাল বুধবার দেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপির শীর্ষপর্যায়ের তিন নেতা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে তাদের অবস্থান জানিয়েছেন। দলটি এ মুহূর্তে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চায় না। বিএনপি মনে করে, রাষ্ট্রপতি পদে শূন্যতা হলে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট তৈরি হবে।
দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে রাষ্ট্রপতির ‘ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দালিলিক প্রমাণ নেই’ মর্মে বক্তব্য প্রকাশ হওয়ার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের দাবি তুলে গত মঙ্গলবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ করে। ইনকিলাব মঞ্চ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে মঙ্গলবার রাতে বঙ্গভবনের সামনেও বিক্ষোভ করা হয়।
এর আগে গত সোমবার রাষ্ট্রপতির মন্তব্যের ব্যাপারে সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছিলেন, ‘রাষ্ট্রপতি যে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি, এটা হচ্ছে মিথ্যাচার এবং এটা হচ্ছে ওনার শপথ লঙ্ঘনের শামিল।
‘কারণ, তিনি নিজেই ৫ আগস্ট রাত ১১টা ২০ মিনিটে পেছনে তিন বাহিনীর প্রধানকে নিয়ে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ওনার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং উনি তা গ্রহণ করেছেন।’
আরও পড়ুন:জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) মুনীরা সুলতানা।
এ নিয়োগ দিয়ে সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর ১৯৬৫ সালের ২৬ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় আসে।
জাদুঘরটি বাংলাদেশের একমাত্র বিজ্ঞান জাদুঘর এবং জাতীয় পর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে।
প্রোটিন নিয়ে গবেষণা করে ২০২৪ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন রসায়নবিদ।
নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে বুধবার জানানো হয়, এ বছর তিন গবেষকের মধ্যে একজনকে পুরস্কারের অর্ধেক এবং বাকি দুজনকে অর্ধেক দেয়া হয়েছে।
সাইটে উল্লেখ করা হয়, কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইন নিয়ে গবেষণার জন্য এ বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে ডেভিড বেকারকে। অন্যদিকে প্রোটিনের কাঠামো নিয়ে পূর্বাভাসের জন্য ডেমিস হ্যাসাবিস ও জন এম. জাম্পারকে এ পুরস্কারের অর্ধেক দেয়া হয়।নো হ বু এ
তিন গবেষকের মধ্যে হ্যাসাবিস ও জাম্পার জ্ঞাত প্রায় সব প্রোটিনের কাঠামো নিয়ে পূর্বাভাস দিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে (এআই) সফলভাবে কাজে লাগান। অন্যদিকে ডেভিড বেকার প্রোটিনের বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ জানার পাশাপাশি সম্পূর্ণ নতুন কিছু প্রোটিন উদ্ভাবন করেন।
মন্তব্য