প্রায় প্রতি সপ্তাহের শুরুতে পতনের ধারা থেকে বের হতে পারেনি পুঁজিবাজার। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে আবারও সূচকের বড় পতন দেখল বিনিয়োগকারীরা। লেনদেন কিছুটা বাড়লেও এক দিনে তিন শ কোম্পানির দরপতনে বাজার ঘিরে যে হতাশা আছে, তা আরও বড় হলো।
গত ৭ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বিএসইসিকে নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বৈঠকের পর এ নিয়ে ১২ কর্মদিবসের মধ্যে ১০ দিনই সূচকের পতন দেখল পুঁজিবাজার। এই কয় দিনে সূচক পড়ল ৪১৯ পয়েন্ট।
রোববার লেনদেনের শুরুর প্রথম তিন মিনিটেই কেবল সূচক বেড়েছিল। কিন্তু এরপর কেবলই পড়েছে। বেলা ২ টা ৮ মিনিটে এক পর্যায়ে সূচক পড়ে যায় ৯২ পয়েন্ট। তবে সেখান থেকে ২০ পয়েন্ট পুনরুদ্ধার করে লেনদেন শেষ হয়।
৭২ পয়েন্ট হারিয়ে সূচকের অবস্থান এখন ৬ হাজার ৬২৯ পয়েন্ট। গত ৯ আগস্ট সূচক ছিল এর চেয়ে এক পয়েন্ট কম।
আগের দিন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান শিবলী-রুবাইয়াত উল ইসলাম বিনিয়োগকারীদেরকে আতঙ্কিত না হয়ে কম দামে শেয়ার বিক্রি না করার পরামর্শ দেন। বলেন, এখন শেয়ার বিক্রির নয়, কেনার সময়। আর সবাই মিলে শেয়ার কেনা শুরু করলেই বাজার আরও ঘুরে দাঁড়াবে।
কিন্তু সেটি হয়নি। বড় বিনিয়োগকারীরা নতুন করে শেয়ার না কিনে পর্যবেক্ষণে থাকছেন- এ বিষয়টি স্পষ্ট। মাস তিনেক আগে এক ঘণ্টায় যে পরিমাণ লেনদেন হতো, সেটিও হচ্ছে না এখন।
দিন শেষে লেনদেন আগের দিন বৃহস্পতিবারের তুলনায় কিছুটা বেশি হলেও সেটি নয় শ কোটি টাকাও ছাড়াতে পারেনি।
দিন শেষে দর কমেছে ৩০০ কোম্পানির শেয়ারের। দর বেড়েছে ৪৭টির আর দর ধরে রাখতে পারে ৩১টি কোম্পানি।
২০২০ সালের মাঝামাঝি শিবলী রুবাইয়াতের নেতৃত্বে বিএসইসির নতুন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে পুঁজিবাজার এক দশকের মন্দাভাব কাটিয় ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। জুন থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত টানা উত্থানের পর এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বাজার সংশোধনে প্রায় ৯০০ পয়েন্ট সূচক কমে।
দৈনিক লেনদেন ২ হাজার কোটি টাকার ঘর থেকে নেমে আসে ৪০০ কোটি টাকার ঘরে।
৫ থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আরেক দফা উত্থানে সূচক বাড়ে প্রায় ২ হাজার পয়েন্ট। নিয়মিত লেনদেন হতে থাকে ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা।
তবে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে দর সংশোধন শুরু হয়। এর মধ্যেও একটি নতুন প্রবণতা দেখা দেয়। সংশোধনে স্বল্প মূলধনি ও লোকসানি কোম্পানির শেয়ারদরে পতন হলেও বড় মূলধনি কোম্পানিগুলোর দর বাড়ার কারণে সূচক বাড়তে থাকে।
পুঁজিবাজারে এই দরপতনের পেছনে বাজার নিয়ে বিএসইসির সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতভিন্নতার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। বাজারে ব্যাংকের যে বিনিয়োগসীমা, সেটি শেয়ারের ক্রয়মূল্যে নাকি বাজার মূল্যে বিবেচনা হবে, বন্ডে বিনিয়োগ এই সীমার ভেতরে থাকবে, না কি বাইরে থাকবে- এই বিষয়ে একমত হতে পারছে না দুই পক্ষ।
গত ৩০ নভেম্বর দুই পক্ষের বৈঠকে বিষয়টির সুরাহা না হওয়ার পর ৭ ডিসেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ে দুই পক্ষের উপস্থিতিতে আরও একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠক শেষে আরও একটি আলোচনার কথা জানানো হয়। চলতি মাসে বা আগামী জানুয়ারির শুরুতে বৈঠক শেষে দৃশ্যমান পরিবর্তন আসবে বলে জানানো হয়।
তবে সেদিনের আলোচনায় বিনিয়োগকারীরা হতাশ হয়েছেন। তবে এই পতনের মধ্যেও পরের বৈঠক কবে হবে-সে বিষয়ে কোনো কিছুই বলছে না মন্ত্রণালয় বা কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা বিএসইসি।
সূচক পতনে প্রধান ভূমিকায় যেসব কোম্পানি
এমন কোনো খাত নেই, যেটি দরপতনের মধ্য দিয়ে যায়নি। তবে বিমায় পতন তুলনামূলক কিছুটা কম। লেনদেনেও সেরা ছিল এই খাত। বেশ কয়েক মাস পরে এই চিত্র দেখা গেছে পুঁজিবাজারে।
লেনদেনে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে কাগজ ও প্রকাশনা খাত। প্রথমবারের মতো এই ঘটনাটি দেখা গেল গত এক বছরে।
অক্টোবর ও নভেম্বরে আগ্রহ ফিরে পেলেও ব্যাংক খাতের শেয়ারের দর এখন পড়তির দিকে, পাশাপাশি কমছে লেনদেন। ৬০ কোটি টাকার কম শেয়ার হাতবদল হয়েছে এই খাতে।
সূচক পতনের তালিকায় সবার ওপরে ছিল রবি। ৪.২১ শতাংশ দর কমার পর ১১.৭১ পয়েন্ট সূচক কমিয়েছে কোম্পানিটি।
দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ওয়ালটন, যার ১.৩৩ শতাংশ দরপতনে সূছক কমেছে ৭ পয়েন্ট। একই পরিমাণ সূচক কমিয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো। কোম্পানিটির দর কমেছে ১.৩৭ শতাংশ।
গত এক বছরে শতকরা হিসেবে সবয়েয়ে বেশি শেয়ারদর বাড়া বেক্সিমকো লিমিটেডের কারণে সূচক কমেছে ৩.৯২ পয়েন্ট। টানা পতনের মধ্যে থাকা কোম্পানিটি দর হারিয়েছে ১.৯৯ শতাংশ।
এছাড়া ইউনাইটেড পাওয়ার, স্কয়ার ফার্মা, বেক্সিমকো ফার্মা, ইউনিলিভার, রেনাটা ও ওরিয়ন ফার্মার দর পতনও সূচক কমাতে প্রধান ভূমিকায় ছিল।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানির কারণে সূচক কমেছে ৩৯.৭৫ পয়েন্ট।
বিপরীতে ৩.৭৫ শতাংশ দর বৃদ্ধির কারণে সূচকে সবচেয়ে বেশি ১.৪৬ পয়েন্ট যোগ করেছে বহুজাতিক কোম্পানি রেকিট বেনজিনজার।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১.৪৪ পয়েন্ট যোগ করেছে বিকন ফার্মা। কোম্পানিটির দর বেড়েছে ১.৭১ শতাংশ।
লভ্যাংশ ঘোষণার পর ১২.৩৫ শতাংশ দর বৃদ্ধি পাওয়া ১.৩৯ পয়েন্ট যোগ করেছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।
এ ছাড়া আইসিবি, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ সাবমেরিন কোম্পানি, এটলাস, এশিয়ান ইন্স্যুরেন্স, এনভয় টেক্সটাইল ও ডেফোডিল কম্পিউটার্সের দর বৃদ্ধির কারণেও সূচকে কিছু পয়েন্ট যোগ হয়েছে।
তবে এই কোম্পানিগুলো সম্মিলিতভাবেই খুব বেশি পয়েন্ট যোগ করতে পারেনি। ১০টি কোম্পানি মিলিয়ে সূচকে যোগ করতে পেরেছে কেবল ৬.৯৭ পয়েন্ট।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ কোম্পানি
লভ্যাংশ ঘোষণার কারণে কারণে মূল্য বৃদ্ধির সীমা না থাকার দিন বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ারদর বেড়েছে ১২.৩৪ শতাংশ। কোম্পানিটির এদিন ৫১ কোটি ৩২ লাখ টাকার ৯১ লাখ ৭০ হাজার ৬০টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
কোম্পানিটি গত জুনে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য শেয়ার প্রতি ১ টাকা ২০ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। গত বছর লভ্যাংশ ছিল এক টাকা। তবে বিনিয়োগকারীরা চমৎকৃত হয়েছেন কোম্পানির আয়ে। গত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ আয় হয়েছে এই বছরে।
২০২১ সালে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি আয় করেছে ৪ টাকা ৭১ পয়সা। আগের বছরে যা ছিল ২ টাকা ৭২ পয়সা। আবার চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৪ টাকা ৩৪ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৫৮ পয়সা।
এই একটি কোম্পানি ছাড়া আর কোনো কোম্পানির দর দিনের সর্বোচ্চ সীমায় দেখা যায়নি। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা প্রকৌশল ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের শেয়ার দর বেড়েছে ৬.৮৩ শতাংশ।
আগের দিন ১০ টাকা ২০ পয়সা দরের বিক্রি হওয়া শেয়ার দর পৌঁছে ১০ টাকা ৯০ পয়সায়। ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা লেনদেনে ১৬ লাখ ৪৪ হাজার ৭৪০টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা ড্যাফোডিল কম্পিউটারের শেয়ার দর ৫.৪১ শতাংশ, জিল বাংলা সুগার মিলের দর ৫ শতাংশ, এটলাস বাংলাদেশের দর ৪.৭৪ শতাংশ, এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের দর ৪.৩১ শতাংশ বেড়েছে।
এনভয় টেক্সটাইলের দর ৩.৭৫৮ শতাংশ, রেকিট বেনকিনজারের দর ৩.৭৫ শতাংশ, সিলকো ফার্মার দর ৩.২৬ শতাংশ এবং তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল ৩.১৮ শতাংশ বেড়েছে।
আরও চারটি কোম্পানির দর ৩ শতাংশের বেশি, ৬টির দর ২ শতাংশের বেশি, ৬ টির দর এক শতাংশের বেশি বেড়েছে।
দর পতনের ১০ কোম্পানি
দর পতনে থাকা ১০ কোম্পানির মধ্যে শীর্ষে ছিল ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস। এই কোম্পানিটির লভ্যাংশ সংক্রান্ত ঘোষণায় বিনিয়োগকারীরা খুশি হতে পারেনি।
কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি ১৪ টাকা নগদ ও ২০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিয়েছে। এই লভ্যাংশ ২০১৬ সালের পর সর্বোচ্চ। তারপরেও কোম্পানিটি ৫০৩ টাকা ৯০ পয়সা বা ১৫.১৬ শতাংশ দর হারিয়েছে লভ্যাংশ সংক্রান্ত আরও উচ্চাশার কারণে।
কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন এক কোটি টাকারও কম। আগামী এক বছরের মধ্যে সেটি ৩০ কোটি টাকায় নিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা আছে। এ কারণে বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি বোনাস শেয়ার আশা করেছিল। এই প্রত্যাশায় গত ৬ মাসে শেয়ারদর তিন গুণ হয়ে গিয়েছিল।
কোম্পানিটির ৪৪ হাজার ৬৪৫টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে ১৩ কোটি ৩১ লাখ টাকায়।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬.৯১ শতাংশ দর হারিয়েছে ফু ওয়াং ফুডস। ৯০ লাখ ১৩ হাজার টাকায় ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭১৮টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা অ্যাপোলো ইস্পাতের দর ৬.৭৪ শতাংশ, চতুর্থ অবস্থানে থাকা স্টাইলক্রাফটের দর ৬.৬৯ শতাংশ ও পঞ্চম অবস্থানে থাকা লিব্রা ইনফিউশনের দর কমেছে ৬.১৩ শতাংশ।
এছাড়া তাল্লু স্পিনিংয়ের দর ৬.০৬ শতাংশ, প্রিমিয়ার লিজিংয়ের দর ৫.৯৫ শতাংশ, সাভার রিফ্যাক্টরিজের দর ৫.৯৩ শতাংশ, এডিএন টেলিকমের দর ৫.৭৬ শতাংশ, ফার্মা এইডের দর কমেছে ৫.৪৭ শতাংশ।
সর্বোচ্চ পরিমাণ দরপতনের তালিকায় ছিল সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্স, সোনালী আঁশ, স্টান্ডার্ড সিরামিকস, কে অ্যান্ড কিউ, কাট্টালি টেক্সটাইল, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক।
শীর্ষ ১০ ছাড়াও আরও ৭টি কোম্পানির দর ৫ শতাংশের বেশি, ১৯টির দর ৪ শতাংশের বেশি, ৪৯টির দর ৩ শতাংশের বেশি, ৫৪টির দর কমেছে ২ শতাংশের বেশি।
লেনদেনে সেরা দশ কোম্পানি
এই তালিকায় শীর্ষে ছিল সোনালী পেপার। রোববার কোম্পানিটির ১৫৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। হাতবদল হয়েছে ১৭ লাখ ৩৪ হাজার ১৪১টি শেয়ার।
গত ১০ কর্মদিবসে মাত্র একদিন মাত্র দর কমেছে কোম্পানিটির। বেড়েছে বাকি নয়দিন।
দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা বেক্সিমকো লিমিটেডে লেনদেন হয়েছে ৬২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ৪২ লাখ ২৮ হাজার ৫৫৯টি শেয়ার।
এছাড়া এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের লেনদেন হয়েছে ৬১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ৫২ লাখ ৮৭ হাজার শেয়ার।
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনে লেনদেন হয়েছে ৫১ কোটি ৩২ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ৯১ লাখ ৭০ হাজার ৬০টি শেয়ার।
ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সে ২১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টে ১৩ কোটি ৩১ লাখ টাকার, ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকোতে ১৩ কোটি ১ লাখ টাকা, ওয়ান ব্যাংকে ১২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, ফরচুন সুজে লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
এশিয়া প্যাসিফিকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ১১ লাখ টাকার। শেয়ার হাতবদল হয়েছে ১৫ লাখ ১৬ হাজার ১৩৩টি।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
মন্তব্য