১০ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রাতের ফ্লাইট। ১০ জুন পর্যন্ত রাত ১২টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে দেশের সবচেয়ে ব্যস্ত এই বিমানবন্দরের রানওয়ে।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বলছে, বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের জন্য হাইস্পিড ট্যাক্সিওয়ে নির্মাণের জন্যই এ সিদ্ধান্ত। ফলে দেশের এই প্রবেশদ্বারে ২৪ ঘণ্টায় ফ্লাইট ওঠানামা করতে পারছে ১৬ ঘণ্টা।
অন্যদিকে কোভিড নিয়ন্ত্রণে আসায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে দেশের যে শ্রমবাজার রয়েছে, সেগুলোতেও প্রবাসীকর্মীরা যাওয়া শুরু করেছেন। ফলে এমনিতেই বাড়তি চাপ পড়ছে মধ্যপ্রাচ্যগামী ফ্লাইটগুলোতে।
আগে যেখানে যাত্রীদের শুধু ইমিগ্রেশনের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হতো, কোভিড সতর্কতার কারণে এখন সেখানে হেলথ ডেস্ক থেকেও নিতে হচ্ছে ছাড়পত্র। এই ছাড়পত্র নিতেও লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে যাত্রীদের। ফলে স্বাভাবিকের চেয়ে একজন ব্যক্তিকে বিমানবন্দরে থাকতে হচ্ছে বাড়তি সময়।
সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কয়েকটি দেশে যেতে হলে ফ্লাইট ছাড়ার ছয় ঘণ্টা আগে করতে হচ্ছে পিসিআর টেস্ট। ফলে একজন যাত্রীকে ফ্লাইটে ওঠার অন্তত আট ঘণ্টা আগে আসতে হচ্ছে বিমানবন্দরে। পিসিআর টেস্ট করার পর তিনিও অবস্থান করছেন বিমানবন্দর এলাকায়। এতেও বাড়তি চাপ তৈরি হচ্ছে বিমানবন্দরের ওপর।
এসব কারণে দেশের সবচেয়ে ব্যস্ত বিমানবন্দরটিতে এখন যাত্রী উপচে পড়ছে। অনেক সময় বিমানবন্দরে প্রবেশের লাইন চলে আসছে মূল সড়ক পর্যন্ত। অনেকে নির্ধারিত সময়ে উঠতে পারছেন না ফ্লাইটে। আবার যাত্রীর অপেক্ষায় প্রায়ই সূচি বিপর্যয়ে পড়ছে এয়ারলাইনসগুলো।
বিড়ম্বনার নাম পিসিআর টেস্ট
দুই মাসের ছুটি কাটিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে কর্মস্থলে যোগ দিতে ১৯ ডিসেম্বর রাতে বিমানবন্দরে আসেন প্রবাসীকর্মী জাবেদ আলী। এমিরেটস এয়ারলাইনসের ফ্লাইট ছাড়ার কথা ছিল রাত ৯টা ২০ মিনিটে।
সিলেট থেকে ভাইয়ের সঙ্গে ফ্লাইট ছাড়ার ৬ ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে আসেন জাবেদ। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে হেলথ ডেস্কে গেলে তাকে জানানো হয় পিসিআর টেস্ট না করার কারণে তিনি দুবাই যেতে পারছেন না।
জাবেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুবাই যাওয়ার ৬ ঘণ্টা আগে যে আরেকটি পিসিআর টেস্ট করতে হবে- এ তথ্য তাকে কেউই জানায়নি।’
আবার অনেকেই সময়মতো পিসিআর টেস্টের ফল না পাওয়ায় নির্ধারিত ফ্লাইটে যাত্রা করতে পারছেন না। দুবাইপ্রবাসী সুনামগঞ্জের ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘সন্ধ্যা ৬টার ফ্লাইট ধরার জন্য সকাল ৮টায় বিমানবন্দরে উপস্থিত হয়ে নমুনা দেয়ার লাইনে দাঁড়িয়েছি। ফ্লাইটের তিন ঘণ্টা আগে টেস্টের ফল দেয়ার কথা থাকলেও আমি পেয়েছি মাত্র এক ঘণ্টা আগে। আরেকটু দেরি হলেই আমার যাওয়া বাতিল হয়ে যেত।’
যাত্রীদের বিড়ম্বনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহরিয়ার সাজ্জাদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রতিদিন ২ থেকে ৩ হাজার যাত্রীর করোনা পরীক্ষা করা হতো ২৪ ঘণ্টায়, এখন সেটি ১৬ ঘণ্টায় করা হচ্ছে। এ কারণে এমন ভোগান্তি চোখে পড়ছে। একই সঙ্গে করোনা পরীক্ষা ও নমুনা দেওয়ার জন্য একটু চাপ তৈরি হচ্ছে। এই সমস্যা হয়তো আগামী সপ্তাহে আর থাকবে না।’
প্রবাসীকর্মীদের অভিযোগ
বিমানবন্দরে ছয়টি প্রতিষ্ঠানের ১২টি বুথ নমুনা সংগ্রহ করায় তাদের দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে নমুনা দিতে হয়। পরীক্ষার ফল পেতেও লাগছে অনেক বেশি সময়। তাই যাত্রার আগে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা তাদের বিমানবন্দরেই কাটিয়ে দিতে হচ্ছে। বেশি সময় লাগায় যাত্রীরা বিমানবন্দরের বোর্ডিং পাস সংগ্রহ, ইমিগ্রেশনসহ আনুষঙ্গিক কাজে পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছেন না।
সঠিক তথ্য পাচ্ছেন না বলে অনেকের যে অভিযোগ, সে বিষয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহরিয়ার সাজ্জাদ অবশ্য দায় যাত্রী ও ট্রাভেল এজেন্টদের ওপরই দিলেন।
শাহরিয়ার বলেন, ‘দেশে এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না, যে বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষা করতে জানে না। রাস্তার যানজটের কারণে অনেকেই সময়মতো বিমানবন্দরে আসতে পারে না। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় বাংলাদেশের শ্রমবাজার খুলে যাওয়ার কারণে আগের তুলনায় যাত্রীর চাপ বেড়েছে বিমানবন্দরে।’
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকায় প্রবাসে শ্রমবাজার খুলতে শুরু করেছে। শুধু নভেম্বর মাসেই বিদেশে গিয়েছেন ১ লাখ কর্মী। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ৬৪ হাজারের বেশি কর্মী বিদেশে কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন। আগামী বছরের জুন পর্যন্ত আরও অনন্ত ৯ লাখ কর্মী বিদেশে যাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যাত্রী ভোগান্তি কমাতে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিমান প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। তিনি বলেন, ‘ইমিগ্রেশন নিয়ে কয়েক দিন আগে আমরা মিটিং করেছি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে। সেখানে এই প্রসঙ্গ এসেছে। দ্রুততম সময়ে যাত্রীদের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছি। এখন ৪৮টি ডেস্ক আছে, প্রয়োজনে যেন আরও ২০টি ডেস্ক বাড়িয়ে দেয়া হয়। পরের দিনই এটা তারা বাড়িয়েছে, যাতে অসুবিধা না হয়।
‘আপনারা জানেন, পিসিআর টেস্ট করে আসার পরেও আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে আরেকটি টেস্ট প্রয়োজন হয়। এটি করতে গিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রীকে কিছুটা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ২০ হাজার যাত্রী যাওয়া-আসা করতে গিয়ে সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। এটা যাতে না হয়, আমরা কিন্তু যথেষ্ট চেষ্টা করছি।’
তিনি বলেন, ‘নিয়মিত বিমানবন্দর পরিদর্শন করছি। আমাদের মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব প্রতিদিনই যাচ্ছেন, কোথায় কী অসুবিধা হচ্ছে এগুলো তিনি দেখছেন এবং সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, যাতে কোনো অসুবিধা না হয়।’
আরও পড়ুন:আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ বিকেল ৫টায় সাতটি রাজনৈতিক দল ও একটি সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, বৈঠকে অংশ নেন- এবি পার্টি, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, এলডিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় গণফ্রন্ট এবং হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
এরআগে গত রোববার প্রধান উপদেষ্টা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি’র সঙ্গে বৈঠক করেন।
ধারাবাহিক এই বৈঠক আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতিতে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-৩ গঠন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
আজ সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ভবন ও সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় আইন উপদেষ্টা বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। বিগত সরকারের হত্যা, গুম, নির্যাতনসহ সব ধরনের অপরাধের বিচারের বিষয়ে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আইন উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবন সংলগ্ন টিনশেড ভবন খালি হয়ে গেলে আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-৩ গঠন করতে পারি। এটি করা গেলে গুমসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচার কাজ দ্রুত করা যাবে।
তিনি আরো বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা নিয়ে বেশ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন আমাদের বিচারকসহ প্রসিকিউশন ও তদন্ত টিম।
আইন উপদেষ্টা বলেন, দেশের ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের স্বার্থে আমাদের যে ন্যায়বিচার আছে, আইনের শাসন আছে ও মানবাধিকার আছে এটাকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বার্থে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে এক হাজারেরও বেশি ছাত্র-জনতাকে হত্যা এবং হাজারও মানুষকে পঙ্গু করার ভয়াবহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার অপরিহার্য-অনিবার্য। সেই বিচারকার্যের প্রথম থেকেই আমরা অবিচল আছি। বিচারের যে গতি আছে সেটা নিয়েও আমরা সন্তুষ্ট আছি।
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবন আজ পরিদর্শন করেন। এসময় তাদের সঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ অপর প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।
অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে জনগণই মুখ্য ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।
উপদেষ্টা আজ সিলেট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় সিলেট বিভাগের সকল জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি), আনসার-ভিডিপি, কারা অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সিলেট জেলার বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
উপদেষ্টা বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য। তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে মাঠ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য শুধু নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি যথেষ্ট নয়, মাঠ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে যথাযথ প্রস্তুতি নিতে হবে। জনগণ যেন নির্ভয়ে নির্বাচন কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোট প্রদান করতে পারে সেরকম পরিবেশ তৈরি করতে প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে একযোগে কাজ করতে হবে। সকলের সহযোগিতায় সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভবপর হবে।
পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়োগ ও পদায়ন সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, এবার বিভিন্ন বাহিনীর নিয়োগ প্রক্রিয়া ও পদায়ন অনেক স্বচ্ছ হয়েছে। তাই সবাইকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। মাদককে দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য অন্যতম হুমকি উল্লেখ করে তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে মাদক ব্যবসায়ীদের প্রতি জিরো টলারেন্স দেখানোর নির্দেশনা দেন। এছাড়া পরিবেশ রক্ষায় সিলেটের পাথরখেকোদের বিরুদ্ধে সবসময় সজাগ থাকার কথা বলেন।
দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে কৃষির গুরুত্ব তুলে ধরে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেন, কৃষকরাই এদেশের খাদ্য নিরাপত্তার মূল কারিগর। তাই উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষকেরা যেন তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। উপদেষ্টা এসময় পতিত কৃষিজমিগুলো আবাদের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান।
সভায় উপস্থিত কর্মকর্তাবৃন্দ সিলেটের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও এর চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে বিভিন্ন মতামত প্রদান করেন। উপদেষ্টা সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যৌক্তিক পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। মতবিনিময় সভা শেষে উপদেষ্টা উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।
উপদেষ্টা এর আগে বিজিবি'র সিলেট সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স এবং সিলেট পুলিশ লাইন পরিদর্শন করেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে সচিব সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘আমরা যে কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) করেছি, সে কর্মপরিকল্পনাটা আপনাদের জানাবো। আমি ঢাকার বাইরে থাকায় একটু পিছিয়ে পড়েছি। এটা আমার টেবিলে এখন আছে। আগামীকাল পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করেন।’
এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব আজ এক বৈঠকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) অনুমোদন করেছে কমিশন।
এখন যেকোনো সময় নির্বাচনের এই রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হতে পারে বলে ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অনুমোদন হয়েছে, এখন শুধু টাইপিং চলছে।’
উল্লেখ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইসির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে দল নিবন্ধন, সীমানা নির্ধারণ, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংস্কার, বিধিমালা ও নীতিমালা জারি, প্রবাসীদের জন্য আইটি সাপোর্টেড নিবন্ধন ও পোষ্টাল ব্যালট পদ্ধতি ও নির্বাচনী সরঞ্জাম কেনাকাটা বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে রোডম্যাপে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) অনুমোদন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
যে কোনো সময় এই নির্বাচনের রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করতে পারে ইসি।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন, চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব এ নিয়ে বৈঠকও করেছেন।
বৈঠকে কর্মপরিকল্পনার (রোডম্যাপ) অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। এখন, যে কোনো সময় নির্বাচনের এই রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হতে পারে বলে ইসি’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অনুমোদন হয়েছে, এখন শুধু টাইপিং চলছে।’
এদিকে সংসদীয় আসনের পুনঃনির্ধারিত সীমানার বিষয়ে ইসি’র শুনানি আজ বিকেলে শেষ হচ্ছে।
শুনানি শেষে বিকেলে সার্বিক বিষয় নিয়ে ইসি’র সিনিয়র সচিব আকতার আহমেদের ব্রিফিং করার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘আমরা ব্রিফিংয়ে আসব। তখন সীমানার শুনানির বিষয়টির পাশাপাশি এ বিষয়টিও (রোডম্যাপ) দেখা যাবে।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি কর্মকর্তা বৈঠক করেন।
ওই দিন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছিলেন, বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে ইসি সচিব ব্রিফ করবেন।
গত ১৮ আগস্ট ইসি’র সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়ে ছিলেন, ‘একটা কর্মপরিকল্পনার (নির্বাচনী রোডম্যাপ) বিষয়ে বলেছিলাম, আমরা এই সপ্তাহে এটা করবো। কর্মপরিকল্পনার তো আমাদের আন্তঃঅনুবিভাগ সম্পর্কিত এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে। কর্মপরিকল্পনার ড্রাফ্ট করা হয়েছে। ড্রাফ্টটি এখন কমিশনে দিয়ে আমরা অ্যাপ্রুভ করবো।’
শ্রম আইন, ২০০৬ সংশোধনের লক্ষ্যে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ (টিসিসি)-এর ৮৯তম সভায় শ্রমিক, মালিক ও সরকারের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গত এক বছরের পর্যালোচনা ও সকল পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে শ্রম আইন ২০০৬ সংশোধনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার এক হোটেলে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, "শ্রমিক ও মালিক পক্ষের পরামর্শের ভিত্তিতে শ্রম আইন যুগোপযোগী করা হবে। এটি বাংলাদেশের শ্রমখাতের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হবে এবং আন্তর্জাতিক মানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হবে।’
সভায় শ্রমিক ও মালিক পক্ষের প্রতিনিধিরা তাদের মতামত তুলে ধরেন। একটি সুসমন্বিত ও আন্তর্জাতিক মানের শ্রম আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা উপস্থিত সকলেই করেন। অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত এ সভায় সংশোধিত শ্রম আইন দ্রুত সম্পন্ন করার তাগিদ দেওয়া হয়।
সভায় বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন দূতাবাস, কানাডা হাই কমিশন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর প্রতিনিধিরা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত জনাব লুৎফে সিদ্দিকী।
এছাড়াও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) এর নির্বাহী পরিচালক এবং শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন (বিইএফ)-এর সভাপতি, টিসিসি সদস্যবৃন্দের মধ্যে তাসলিমা আক্তার, কোহিনুর মাহমুদ, বাবুল আকতার , নাজমা আক্তার, রাজেকুজ্জামান রতন, এডভোকেট আতিকুর রহমান, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সংশোধনী বাংলাদেশের শ্রমবাজারকে আরও গতিশীল ও আন্তর্জাতিক মানসম্মত করবে এবং শ্রমিক-মালিক সম্পর্কের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সারাদেশে কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থা আয়োজিত প্রযুক্তি সুবিধাপ্রাপ্ত লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা মোকাবেলায় নীতিগত সুপারিশ শীর্ষক জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা একথা বলেন।
সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, সারাদেশে প্রযুক্তিগত সুবিধা নিয়ে বিভিন্ন স্থানে নারীদের সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। এ সকল অপকর্ম প্রতিরোধে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরিচালিত কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাল্য বিয়ের সংজ্ঞা পাল্টে গেছে। এর মূল কারণ হচ্ছে মোবাইল নামক যন্ত্রটি। মোবাইল প্রযুক্তির অপব্যবহারের ফলে ছোট ছোট মেয়েরা প্রেমের ফাঁদে পড়ে নারী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
মেয়েরা অবুঝ এজন্য অভিভাবকদেরকে এ বিষয়ে আরো সচেতন হতে হবে। যাতে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েরা প্রেমের ফাঁদে পড়ে নারী সহিংসতা শিকার না হয়।
উপদেষ্টা বলেন, জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থা, নারী পক্ষ, হিউম্যান রাইটস বাংলাদেশ, সাইবার টিনস ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), ব্র্যাকসহ বাইশটি সংগঠন আজ নারী নির্যাতন প্রতিরোধে একযোগে কাজ করছে। তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
উপদেষ্টা বলেন এই ২২ টি সংগঠনের প্ল্যাটফর্মে যে সমস্ত শিক্ষিত তরুন যুবক যুবতীরা আছেন তাদেরকে টেকনোলজির মাধ্যমে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন ব্যক্তিগত এবং সামাজিক ও পরিবারের সচেতনতাই পারে একটি মেয়েকে নির্যাতন থেকে রক্ষা করতে। এজন্য সবাইকে আরো সচেতন হতে হবে।
মন্তব্য