ঢাকা থেকে কক্সবাজার বেড়াতে গিয়ে এক গৃহবধূর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত চার যুবকের মধ্যে তিনজনকে শনাক্ত করার কথা জানিয়েছে র্যাব। আটক করা হয়েছে সংশ্লিষ্ট হোটেলের ম্যানেজারকে।
ওই নারীর ভাষ্য অনুযায়ী, স্বামী-সন্তান নিয়ে বুধবার সকালে তারা কক্সবাজার পৌঁছান। এরপর শহরের হলিডে মোড়ের একটি হোটেলের কক্ষ ভাড়া নেন। বিকেলে সৈকতে গেলে সাড়ে ৫টার দিকে তার স্বামীর সঙ্গে এক যুবকের বাগ্বিতণ্ডা হয়।
এর জের ধরে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার কিছু পর পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে তার আট মাসের সন্তান ও স্বামীকে কয়েকজন তুলে নিয়ে যায়। আর তাকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় জোর করে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
তারপর ওই নারীকে শহরের একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানে নিয়ে প্রথমে তিনজন ধর্ষণ করে। তারপর নেয়া হয় হোটেল-মোটেল জোনের জিয়া গেস্ট ইন নামের একটি হোটেলে।
সেখানে মাদক সেবনের পর সন্তান ও স্বামীকে হত্যার ভয় দেখিয়ে আবার ধর্ষণ করে এক যুবক। এরপর হোটেল কক্ষ বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়ে সে চলে যায়।
ওই নারীর দাবি অনুযায়ী, জিয়া গেস্ট ইনের তৃতীয় তলার জানালা দিয়ে রাস্তায় হেঁটে যাওয়া এক যুবকের সহায়তা চান। পরে ওই যুবক এসে কক্ষের দরজা খুলে তাকে বের করেন। এর কিছুক্ষণ পর ওই নারী ফোন দেন ৯৯৯-এ।
তিনি বলছেন, ‘৯৯৯-এ ফোন করার পর আমাকে ফোন দেন কক্সবাজার সদর মডেল থানার এক কর্মকর্তা। তাকে নাম-পরিচয় না বললেও পুরো বিষয়টি জানাই। কিন্তু তিনি আমার কাছে না এসে উল্টে থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরামর্শ দেন।
‘একপর্যায়ে আমি হোটেলে-মোটেল জোনে বসানো সাইনবোর্ড থেকে র্যাবের নম্বর পাই। যোগাযোগ করা হলে তারা দ্রুত এগিয়ে আসেন।’
অভিযোগকারী নারীর বক্তব্যের সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার দিনভর কক্সবাজারের বিভিন্ন জায়গায় অনুসন্ধান করেছে নিউজবাংলা। ঘটনার ধারাবাহিকতা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তির বক্তব্য নেয়া হয়েছে।
ওই নারীর বক্তব্য অনুযায়ী, সৈকতের লাবনী পয়েন্টের যে জায়গায় তার স্বামীর সঙ্গে প্রথমে এক যুবকের বাগ্বিতণ্ডা হয়, সেখানে বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রচুর পর্যটকের সমাগম দেখা গেছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, বাগ্বিতণ্ডার পর অভিযুক্ত যুবক ওই দম্পতির পিছু নিয়ে লাবনী পয়েন্টের ঝিনুক মার্কেট পর্যন্ত যায়। সেখানে তার সঙ্গে যোগ দেয় আরও দুজন। এই বিতণ্ডা চলতে থাকে গলফ মাঠের কাছাকাছি পর্যন্ত। সেখানে যুবকদের সঙ্গে যোগ দেয় আরও কয়েকজন।
এরপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে একটি সিএনজি অটোরিকশায় স্বামী ও সন্তানকে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। আরেকটি অটোরিকশায় তিন যুবক ওই নারীকে জোর করে তুলে নেয়।
এই অভিযোগ র্যাবকে জানিয়েছেন ওই নারী। তবে লাবনী পয়েন্টে বুধবারের এই ঘটনার কোনো প্রত্যক্ষদর্শী বক্তব্য জানতে পারেনি নিউজবাংলা।
ওই নারীর অভিযোগ, শহরের বিভিন্ন অলিগলি ঘুরিয়ে তাকে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানে নিয়ে যায় তিন যুবক। নিউজবাংলার অনুসন্ধানে সেই চায়ের দোকানটি চিহ্নিত করা গেছে।
গলফ মাঠের পশ্চিম দিকে ঝাউবনের পাশেই চা দোকানটি পাওয়া গেছে। এর উল্টো দিকে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইএমও) সাব-অফিসের অবস্থান।
ঝুপড়ি দোকানটি চালান ছেনুয়ারা বেগম নামের এক নারী। দোকানের পেছনের দিকে কয়েকটি কক্ষ দূরপাল্লার বাসের চালক-সহকারীদের রাতযাপনের জন্য ভাড়া দেয়া হয়। ভাঙাচোরা রাস্তার কারণে এলাকাটি সন্ধ্যার পর থেকেই অনেকটা নির্জন।
ছেনুয়ারা বেগম স্বীকার করেছেন বুধবার রাত ৮টার দিকে এক নারীকে নিয়ে আসেন স্থানীয় আশিক ও জয়। তাদের সঙ্গে আরও এক যুবক থাকলেও তিনি তার পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেননি।
ছেনুয়ারা বেগম জানান, আশিক ও জয়ের বাড়ি দোকানের আধ কিলোমিটারের মধ্যে। প্রায়ই তারা আসত বলে দুজনেই ছেনুয়ারার পরিচিত।
ছেনুয়ারা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বুধবার রাত সোয়া ৮টার দিকে আশিক, জয়সহ তিনজন সিএনজি অটোরিকশায় এসেছিল। তাদের সঙ্গে একটি মেয়েও ছিল। তারপর আমার দোকানের পেছনের দিকে গাড়ির হেলপারদের ঘুমানোর রুমে মেয়েটিকে নিতে দেখেছি।’
ছেনুয়ারা বলেন, ‘প্রায় আধ ঘণ্টা পর রুম থেকে এসে আশিকরা নিজেদের মধ্যে কথা বলতে আমার দোকান থেকে একটু দূরে যায়। তখন ওই মেয়েটি আমার কাছে এসে তার স্বামী ও সন্তানকে ফিরিয়ে দিতে আশিককে সুপারিশ করতে বলে। এর কয়েক মিনিট পরেই তারা মেয়েটিকে নিয়ে ওই একই অটোরিকশায় চড়ে কবিতা চত্বরের দিকে চলে যায়।’
ছেনুয়ারা ঘটনাটি কেন আর কাউকে জানাননি, সে ব্যাপারে কোনো ব্যাখ্যা তার কাছে পাওয়া যায়নি।
ওই নারীর অভিযোগ অনুযায়ী, ঝুপড়ি চা দোকানটি থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় জিয়া গেস্ট ইন হোটেলে।
জিয়া গেস্ট ইনের রেজিস্ট্রার খাতার তথ্য অনুযায়ী, ওই নারীকে নিয়ে আশিক বুধবার রাত ৯টা ৮ মিনিটে হোটেলে আসেন। খাতায় দুজনের নামই এন্ট্রি করার পর তাদের তৃতীয় তলার ২০১ নম্বর কক্ষ দেয়া হয়।
ওই সময়ে হোটেল ম্যানেজারের দায়িত্বে ছিলেন রিয়াজউদ্দিন ছোটন। তাকে বুধবার গভীর রাতে আটক করে র্যাব। র্যাবের দাবি, আশিকের সঙ্গে ছোটনের আগে থেকেই সখ্য ছিল।
ওই নারীকে হোটেলে নিয়ে যাওয়া এবং বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে লবির সিসিটিভি ফুটেজ পেয়েছে নিউজবাংলা। এতে দেখা যায়, হোটেলে যাওয়ার প্রায় ৪০ মিনিট পর রাত ৯ টা ৪৫ মিনিটের দিকে বেরিয়ে যাচ্ছে আশিক। তার কিছু সময় পর নেমে আসেন ওই নারী।
ওই নারীর অভিযোগ, রুমের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দেয়ায় তিনি আটকে পড়েছিলেন। এরপর কক্ষের জানালা দিয়ে টেলিভিশনের রিমোটের একটি ব্যাটারি ছুড়ে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া এক যুবকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পরে ওই যুবক এসে দরজা খুলে তাকে বের করেন।
তবে জিয়া গেস্ট ইন-এর আরেক ম্যানেজার আমির হোসেনের দাবি, তাদের হোটেলের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করা সম্ভব নয়। এটি শুধু ভেতর থেকে বন্ধ করার ব্যবস্থা রয়েছে।
তিনি দাবি করেন, কক্ষ ভাড়া নেয়ার সময়ে আশিকসহ দুজনকেই ‘স্বাভাবিক’ মনে হয়েছে হোটেল কর্মীদের।
নিয়ম অনুযায়ী কক্ষ ভাড়া দেয়ার সময় দুজনের পরিচয়সূচক নথি কেন জমা রাখেনি হোটেল কর্তৃপক্ষ, তেমন প্রশ্নের জবাব দেননি আমির। তবে তিনি বলেন, ‘আশিকের সঙ্গে ম্যানেজার ছোটনের আগে থেকেই পরিচয় ছিল। এর আগেও আশিক হোটেলে রাত্রিযাপন করেছে।’
ওই নারী র্যাবকে জানিয়েছেন, আশিক হোটেলে ঢোকার পর তার ভ্যানিটি ব্যাগ ও মোবাইল ফোন ম্যানেজার ছোটনের কাছে জমা রেখেছিল। তিনি কক্ষ থেকে বের হওয়ার পর সেই মোবাইল ফোন নিয়ে প্রথমে স্বামীকে ফোন করেন। দুর্বৃত্তরা ইতোমধ্যে তার স্বামী ও সন্তানকে ছেড়ে দিয়েছিল।
ফোন করার পর সন্তানকে নিয়ে তার স্বামী ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর তারা আলোচনা করে ৯৯৯-এ ফোন করেন।
তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে না এসে থানায় গিয়ে জিডি করতে বললে তারা র্যাবকে ঘটনাটি জানান। এরপর রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে র্যাব ওই হোটেলে আসে।
র্যাবের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওই নারীর স্বামীকে আটকে রাখা যুবক বাবুকেও শনাক্ত করা হয়েছে। তবে চায়ের দোকানে আশিক ও জয়ের সঙ্গে থাকা তৃতীয় যুবক এখনও চিহ্নিত হয়নি। আশিক, জয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব থাকার কথা স্বীকার করেছে হোটেল ম্যানেজার ছোটন। যার ফলে হোটেলে এসে নানা অপরাধ করত তারা।’
এ ঘটনায় ওই নারীর স্বামী বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন। এতে আশিক, জয়, বাবু, ছোটনের নাম উল্লেখসহ মোট সাতজনকে আসামি করা হয়েছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীরুল গিয়াস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওই নারীকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর মোহনায় জেলের জালে এবার ধরা পড়েছে ২৬ কেজি ২৫০ গ্রাম ওজনের একটি কোরাল মাছ।
পরে সেই মাছটি কুয়াকাটা পৌর মাছ বাজারে বিক্রি করা হয়েছে ৩২ হাজার ৭৫০ টাকায়।
কুয়াকাটা পৌর মাছ বাজারের ‘কুয়াকাটা ফিস পয়েন্টের’ পরিচালক নাসির উদ্দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে মাছটি কেনেন।
তিনি বলেন, ‘সাগর মোহনায় সচরাচর এত বড় মাছ পাওয়া যায় না। আজ দুপুরে মাছটি মার্কেটে আসার পর এক হাজার ২৫০ টাকা কেজি দরে কিনে নেই।’
স্থানীয় জেলেরা জানান, গত মঙ্গলবার কুয়াকাটার বাবলাতলা এলাকার জেলে রাসেল ‘মায়ের দোয়া’ নামের তার ট্রলারটি নিয়ে গভীর সমুদ্রে ইলিশ মাছ ধরতে রওনা হন। পরবর্তীতে বলেশ্বর নদীর সাগর মোহনায় রাত ২টার দিকে রাসেলের জালে এ বিশাল কোরাল মাছটি ধরা পড়ে।
রাসেল বলেন, ‘তীব্র তাপদাহ শুরুর পর থেকে সাগরে মাছ পড়ে না। ভাগ্য সহায় বলে এত বড় মাছ আল্লাহ দিয়েছেন। মাছটি তীরে নিয়ে আসলে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীরা মাছটি ক্রয় করতে চেয়েছেন। পরে কুয়াকাটা মাছ বাজারে এক হাজার ২৫০ টাকা কেজি দরে মাছটি বিক্রি করেছি।’
জানতে চাইলে কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, নদ-নদী এবং সাগরে বিভিন্ন মাছ পাওয়া যায়। সব সময় বড় মাছ ধরা পড়ছে না। সামুদ্রিক কোরাল এর চেয়েও অনেক বড় হয়।
সরকারের দেয়া ৬৫ দিন সাগরে সব ধরনের মাছ ধরার সফল কার্যক্রমের কারণেই এ ধরনের মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:পাবনার সাঁথিয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখার ভোল্ট থেকে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ওই ব্যাংকের প্রধান তিন কর্মকর্তাকে আটক করেছে পুলিশ।
অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। দিনভর নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে তাদের সাঁথিয়া থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
আটক তিনজন হলেন অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার আবু জাফর, ব্যবস্থাপক হারুন বিন সালাম ও ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী। তাদের তিনজনেরই বাড়ি পাবনা জেলায়।
পুলিশের ভাষ্য, টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী।
আরও আসছে…
আরও পড়ুন:
কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপে ঘরে ঢুকে এক নারী ও তার মেয়েকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
গত সোমবারের ঘটনায় বৃহস্পতিবার টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগটি করেন ছেনুয়ারা বেগম নামের নারী।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত সোমবার রাত দুইটার দিকে শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব উত্তরপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগমের ঘরের দরজা ভেঙে আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন প্রবেশ করেন। তারা ছেনুয়ারা ও তার মেয়ের হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় ঢুকিয়ে এলোপাতাড়ি লাথি ও ঘুষি মারেন। একপর্যায়ে মা ও মেয়ে উভয়কে বিবস্ত্র করেন আয়ুব ও তার লোকজন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্বর্ণ ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের বিষয়ে কাউকে জানানো হলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান৷
এ বিষয়ে ছেনুয়ারা বেগম বলেন, ‘সন্ত্রাসী আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন যুবক আমার বাড়িতে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রবেশ করে। পরে বাড়ি থেকে আমাকে জোরপূর্বক কয়েকজন লোক বের করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং আমার মেয়েকে নির্যাতন করে স্বর্ণ ও টাকা নিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া বিষয়ে কাউকে বললে মেরে ফেলা হবে বলে চলে যায়।’
থানায় অভিযোগের পর আয়ুব হুমকি দিয়েছে জানিয়ে ছেনুয়ারা বলেন, ‘সেই আয়ুব খান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বলে, মামলা হলে কী হবে? জামিন নিয়ে বাহির হয়ে আমাকে আর আমার মেয়েকে মেরে ফেলা হবে বলে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমি টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’
এ বিষয়ে সাবরাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজাউল করিম রেজু বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি এবং সঠিক তদন্তে পুলিশকে সহযোগিতা করব।’
অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘আমি ঘটনার সত্যতা পেয়েছি এবং আমি মামলা করার জন্য ওসি বরাবর সুপারিশ করেছি।’
টেকনাফ মডেল থানার ওসি ওসমান গণি বলেন, ‘আরও গভীরভাবে তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজারে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা নাশকতা মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এমএ মুহিতসহ ১৪ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উচ্চ আদালতের মঞ্জুরকৃত জামিন শেষ হওয়ায় তারা আদালতে হাজির হন।
মৌলভীবাজার মডেল থানায় ২০২৩ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে করা দুটি রাজনৈতিক মামলার ১৪ জন আসামি হাজির হলে আদালত তাদের সবার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহিতুর রহমান হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলে সাবেক সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আহমেদ আহাদ, যুবদলের এমএ নিশাদ, যুবদলের সিরাজুল ইসলাম পিরুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নুরুল ইসলাম, যুবদলের ওয়াহিদুর রহমান জুনেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুল হান্নান, স্বেচ্ছাসেবক দলের রোহেল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের মামুনুর রশিদ ও যুবদলের জাহেদ আহমেদ।
মৌলভীবাজার জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. ইউনুছ মিয়া জানান, ২০২৩ সালে নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন আসামিরা। আদালত শুনানি শেষে আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি থানাধীন সাজেকে শ্রমিকবাহী ডাম্প ট্রাক খাদে পড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
বাঘাইছড়ি থানার সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল আওয়াল বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তিনজনকে মৃত বলে জানান।
এর আগে বিকেলে সাজেকের উদয়পুর সীমান্ত সড়কের ৯০ ডিগ্রি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশের ভাষ্য, খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের উদয়পুর সীমান্তবর্তী সড়ক নির্মাণের জন্য ডাম্প ট্রাকে ১৪ জন শ্রমিক জামান ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির সেতুর কাজে যাচ্ছিলেন। পথে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ের ঢালে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ছয়জনের মৃত্যু হয়।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার সাংবাদিকদের জানান, যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি খুবই দুর্গম এলাকা। আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী, তবে তাৎক্ষণিকভাবে কারও নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলায় ৭ (সাত) বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সৈয়দ সরাফত আলী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআইয়ের পরিদর্শক রিপন চন্দ্র গোপের নেতৃত্বে একটি অভিযানিক দল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
৬০ বছর বয়সী সৈয়দ সরাফত আলী রাজনগর থানার করিমপুর চা বাগান এলাকার বাসিন্দা।
পিবিআই জানায়, শিশুটিকে বাঁশের বাঁশি বানিয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে গত ১৪ এপ্রিল বেলা পৌনে দুইটার দিকে সৈয়দ সরাফত আলী তার বাড়ির পাশের বাঁশ ঝাড়ের নিচে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হলে তিনি আত্নগোপন করেন।
অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে গত প্রথমে রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভর্তি করে চিকিৎসা করানো হয়।
এ বিষয়ে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে রাজনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
পিবিআই মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, ‘শিশু ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীর পার পাওয়ার সুযোগ নেই। আইনের আওতায় এনে তাদের বিচার করা হবে। মামলার খুঁটিনাটি বিষয় বিবেচনায় রেখে নিখুঁত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।’
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে দায়িত্ব পালনকালে রুহুল আমিন নামে এক ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি যশোরের বেনাপোলে। বাবার নাম কোরবান আলী।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের অধীন সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
শিবগঞ্জ থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, সোনামসজিদ স্থলবন্দরের পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের মধ্যে ট্রাক পরিদর্শন শেষে দুপুর পৌনে ১টার অফিস কক্ষে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন রুহুল আমিন। সহকর্মীরা তাকে দ্রুত শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন এসএম মাহমুদুর রশিদ জানান, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর রুহুল আমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই মারা যান। হাসপাতালে যারা নিয়ে এসেছিলেন তারা বলেছেন যে তিনি তৃষ্ণার্ত ছিলেন, পানি খেতে চেয়েছিলেন।
তবে তার মৃত্যু যে হিট স্ট্রোকে হয়েছে এটা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাবে না। অন্য কোনো রোগেও তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে এখন যেহেতু প্রচণ্ড গরম চলছে তাই এটার প্রভাব থাকতে পারে।
মন্তব্য