পশ্চিমা বিশ্ব ও অন্যরা মিয়ানমারের সঙ্গে সামরিক-বেসামরিক ব্যবসা-বিনিয়োগ বাড়িয়ে চলায় দেশটির স্বেচ্ছাচারিতায় লাগাম টানা যাচ্ছে না। রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে পশ্চিমাদের কোনো পদক্ষেপ নেই। অথচ গত চার বছরে তারা দেশটির সঙ্গে সামরিক-বেসামরিক বিনিয়োগ সাড়ে চার গুণ বাড়িয়েছে।
সন্ত্রাসের কোনো বর্ডার নেই। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গজিয়ে ওঠা সন্ত্রাসীরাই একদিন তাদের ওই বিনিয়োগে বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন মঙ্গলবার এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। রাজধানীর একটি হোটেলে ‘রোহিঙ্গা সংকট ও প্রত্যাবাসন: কী করণীয়’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে ডিপ্লোম্যাট পত্রিকা। ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের সব এজেন্সি ও বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যে মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা বিষয়ে বাংলাদেশের চার বছরের পর্যবেক্ষণ ও বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে রেখে উন্নতি চাওয়ার আগে পশ্চিমা নেতৃত্ব ও মানবাধিকার নেতাদের মিয়ানমারের ওপর তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে চাপ প্রয়োগ করতে হবে। এজন্য প্রয়োজনে তাদের ওপর অস্ত্র ও বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা আরোপ করতে হবে।
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা আমাদের নয়। এর দায় ও উৎপত্তি মিয়ানমারে। এর সমাধানও মিয়ানমারেই হতে হবে। সেখানে রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিপীড়ন ও গণহত্যা চালানো হয়েছে। তাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। নারী ও শিশুদের ওপর অত্যাচার করা হয়েছে।
‘বিভীষিকাময় অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে ১১ লাখ রোহিঙ্গা বা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক সীমান্তে চলে আসে। কেউ তাদের আশ্রয় দেয়নি। কেবল শেখ হাসিনা মানবতা দেখিয়ে সীমানা খুলে দিয়েছেন। আমাদের স্থানীয়রাই প্রথম খাবার, কাপড় ও আশ্রয় দিয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।
‘মিয়ানমার আমাদের শত্রু নয়, প্রতিবেশি। তারা কথা দিয়েছিল তাদের নাগরিক রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার। কিন্তু কথা রাখেনি। তারা এই চার বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি।’
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এটা ভাবা কষ্টকর যে মিয়ানমার আরাকানের রাখাইন স্টেটে এথনিক ক্লিনজিং ও গণহত্যায় অভিযুক্ত হওয়ার পরও পশ্চিমা নেতৃত্ব, জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন ও মানবাধিকার কর্মীরা সেই জাতির সঙ্গে পাঁচ বছর ধরে ব্যবসা-বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে এবং ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে চলেছে।’
‘পশ্চিমারা আমাদেরও বন্ধু। রোহিঙ্গা ইস্যুতে তারা আমাদের সহায়তা করছে। তবে তা কেবল মানবিক ইস্যুতে। তাদের ফেরত নিতে এখন পর্যন্ত তাদের কোনো পদক্ষেপ দেখিনি। বরং তারা দেশটির সঙ্গে সামরিক-বেসমারিক বিনিয়োগ এই চার বছরে সাড়ে চার গুণ বাড়িয়েছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পশ্চিমা নেতৃত্ব ও মানবাধিকার কর্মীরা এতো বড় গণহত্যা চালানোর পরও মিয়ানমারের পাশ থেকে সরে যায়নি। এমনকি শান্তিতে নোবেল পাওয়া ইউরোপিয়ান ইউনিয়নও মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক বহু গুণ বাড়িয়েছে। কেবল সুচি সরকারই নয়, মিয়ানমারের নতুন সামরিক সরকারের সঙ্গেও তারা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। যদিও পশ্চিমা অনেক দেশ স্বীকার করেছে যে রোহিঙ্গাদের জাতিগত নিধন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, অতীতে আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গারা সেখানে ফেরত গেছে। এখনো আমরা আলোচনার মাধ্যমেই রোহিঙ্গাদের ফেরাতে চাই। রাখাইনে নিরাপদ পরিবেশ তৈরির জন্য মিয়ানমার প্রতিজ্ঞা করলেও সেটা রাখছে না।
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘রোহিঙ্গা পরিস্থিতি কেবল বাংলাদেশের জন্য হুমকি নয়। সেখানে তিন হাজার স্কুল আছে, যেগুলো জাতিসংঘের এজেন্সিগুলো চালায়। সেখানে কেবল মিয়ানমারের কারিকুলাম অনুযায়ী তাদের ভাষায় পাঠদান করার কথা। কিন্তু সেগুলো এখন মক্তবে রূপান্তরিত হয়েছে। ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা ওইসব মক্তবে ধর্মীয় গোঁড়ামি ও স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন জঙ্গি মতবাদের চর্চা হয়। আমরা এটা মেনে নিতে পারি না।
‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থানীয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী গড়ে উঠছে। তারা মানব ও মাদক পাচার করছে। ইদানীং মাদক পাচারের টাকার ভাগভাগি নিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটছে। ক্যাম্পের নিরাপত্তা বাড়াতে আমরা চারপাশে বেড়া দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটা আবার আমাদের অনেক বন্ধু স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেনি।’
‘সন্ত্রাসের কোনো বর্ডার নেই। আজ তারা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে রেখে মিয়ানমারকে ব্যবসা-বিনিয়োগের হাব হিসেবে গড়ে তুলতে চাচ্ছে। অথচ এক সময় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জন্ম নেয়া সন্ত্রাসীরাই মিয়ানমারে ভারত, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একদিকে মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, গণহত্যার অভিযোগ উঠছে; অন্যদিকে ভারত, চীন, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, উত্তর কোরিয়া, ফিলিপাইন তাদের কাছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি করছে। এগুলো বন্ধ করতে হবে। তা না হলে মিয়ানমারের স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ হবে না।
‘ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে সে দেশের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ঢাকায় এসেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন যে সপ্তাহখানেকের মধ্যে মিয়ানমার সফরে যাবেন। সেখানে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে তিনি কথা বলবেন। এটা ভালো খবর।’
মিয়ানমারে জার্মানির বিনিয়োগ না করার সিদ্ধান্তকেও ভালো খবর বলে উল্লেখ করেন মোমেন।
সবশেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের নাগরিকদের বাংলাদেশে রেখে ভালো রাখা যাবে না। তাদের ভালো রাখতে হলে দ্রুত নিজেদের বসতভিটায় ফেরত পাঠাতে হবে। এটাই বাংলাদেশের বিশ্বাস। এটাই সত্য।
আরও পড়ুন:বান্দরবানের রুমায় সেনাবাহিনীর একটি টহল দল কেএনএফের (কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট) সদর দপ্তরসহ একটি গোপন প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রুমা উপজেলার ছিলোপি পাড়া এলাকায় ওই অভিযানের সময় পুঁতে রাখা আইইডি (ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) বিস্ফোরণে এক সেনা সদস্য গুরুতর আহত হন।
সেনাসদস্যকে আশংকাজনক অবস্থায় হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে তিনি মারা যান।
৩০ বছর বয়সী নিহত সৈনিকের নাম তুজাম।
বৃহস্পতিবার বিকেলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আইএসপিআর জানায়, কেএনএফের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প এলাকার আশেপাশে বসবাসকারী স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সেখানে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী।
রুমা সেনা জোনের একটি টহল দল কেএনএফ প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের কাছাকাছি পৌঁছালে কেএনএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলটি পালিয়ে যায়।
তবে আনুমানিক ৯টা ২০ মিনিটের দিকে সন্ত্রাসীদের বিক্ষিপ্তভাবে পুঁতে রাখা আইইডি (ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) বিস্ফোরণে এক সেনাসদস্য আহত হন।
সাধারণ জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে সেনাবাহিনীর বিশেষায়িত দল এ ধরনের আরও সম্ভাব্য আইইডি সনাক্ত ও নিষ্ক্রিয়করণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে দেশের জন্য আত্মোৎসর্গকারী সেনা সদস্যকে শহীদ এবং তার মৃত্যুকে অনাকাঙ্খিত উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, এ ঘটনায় সেনাবাহিনী প্রধান গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং শহীদ সৈনিকের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।
আইএসপিআর আরও জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার পাহাড়ি জনপদে ক্রমাগত হত্যা, অপহরণ, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অরাজকতা সৃষ্টি করছে।
তাদের এ ধরণের মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিহত করতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে।
আরও পড়ুন:ঘন ঘন মোবাইল সেট পরিবর্তন যাদের ফ্যাশনের অংশ তাদের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে দুঃসংবাদ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মোবাইল সেটের ওপর ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব করায় বাড়তে পারে এ পণ্যটির দাম।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট পেশ করার সময় এই প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।
তবে মোবাইলের চার্জার উৎপাদন ও আমদানিতে কোনো পরিবর্তন না আনায় পণ্যটির দাম অপরিবর্তিত থাকবে।
বর্তমানে দেশে মোবাইল ফোন সেট উৎপাদনে ভ্যাট অব্যাহতি রয়েছে। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে ২ শতাংশ ভ্যাট বসানোর কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী।
এছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠান মুঠোফোন সংযোজন করে, তাদের ক্ষেত্রে দুভাবে ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
কমপক্ষে দুটি যন্ত্রাংশ দেশে উৎপাদন করে মোবাইল ফোন বানালে বর্তমানে ৩ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হয়। প্রস্তাবিত বাজেটে তা বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।
আর আমদানি করা যন্ত্রাংশ অ্যাসেম্বল করে তৈরি মোবাইল সেটের ওপর ভ্যাট ৩ শতাংশ থেকে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
২০১৭-১৮ সাল থেকে স্যামসাং, অপো, ভিভো, শাওমি, রিয়েলমি, টেকনোসহ ১৫টি কোম্পানি বাংলাদেশে মোবাইল উত্পাদন করে আসছে।
আরও পড়ুন:চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠানের (ফারুক) মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ঢাকা-১৭ শূন্য আসনে আগামী ১৭ জুলাই উপনির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এ উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
ইসি সচিব বলেন, ‘মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ১৫ জুন, মনোনয়নপত্র বাছাই ১৮ জুন, প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ জুন এবং ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১৭ জুলাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ব্যালটের মাধ্যমে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে এ উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে।’
দীর্ঘদিন নানান শারীরিক জটিলতায় ভুগে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ১৫ মে মৃত্যু হয় ফারুকের। এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে সংসদ সচিবালয়।
সংসদের কোনো আসন শূন্য হলে নব্বই দিনের মধ্যে উপনির্বাচন করতে হয়। এই হিসাবে আসনটিতে ১২ আগস্টের মধ্যে উপনির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা ছিল।
আরও পড়ুন:দেশের সব বিভাগে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, এ অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
দিনভর আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে জানানো হয, ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহের বিষয়ে বলা হয়, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী জেলা এবং রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দেশের অন্যান্য জায়গায় তা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
ঢাকায় বাতাসের গতি ও দিক নিয়ে বলা হয়, দক্ষিণ/দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় বাতাসের গতিবেগ ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার।
ঢাকায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা ৪২ মিনিটে সূর্য অস্ত যাবে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, ঢাকায় শুক্রবার সূর্যোদয় ভোর ৫টা ১১ মিনিটে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থা নিয়ে জানানো হয়, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু টেকনাফ উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হতে পারে।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করেছেন তুরস্কে সদ্য অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
বুধবার রাতে দুই দেশের সরকারপ্রধান ও রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে এ ফোনালাপ হয়।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বুধবার রাত সোয়া ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন কল দেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। দুই নেতা কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে ১০ মিনিট কথা বলেছেন।
বার্তা সংস্থা বাসসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ফোনালাপে দ্বিতীয় দফায় অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী এরদোয়ানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। তুরস্কের জনগণ যোগ্য নেতা নির্বাচন করায় তার সন্তোষের কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের সময়ের মতো ভবিষ্যতেও দৃঢ়ভাবে তুরস্কের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের পাশে দাঁড়াবে বাংলাদেশের মানুষ।
দ্বিতীয় দফা জয়ের পর তুরস্কের উচ্ছ্বসিত জনগণের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করায় বাংলাদেশের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এরদোয়ান।
বাংলাদেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তুরস্কের রাষ্ট্রপ্রধান। বাংলাদেশের সঙ্গে তুরস্কের বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে অন্য মাত্রায় নিতে শেখ হাসিনার সঙ্গে কাজ অব্যাহত রাখার ইচ্ছার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
তার এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ও তার পরিবারের প্রতি শুভকামনা জানান। একই সঙ্গে এরদোয়ানের নেতৃত্বে তুরস্কের জনগণের শান্তি, উন্নতি ও সমৃদ্ধি যাতে অব্যাহত থাকে, সেই কামনা করেন।
আরও পড়ুন:দেশের সাতটি বেসরকারি ব্যাংককে ‘নেতিবাচক’ রেটিং দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক ঋণমান প্রদানকারী সংস্থা মুডি’স ইনভেস্টর সার্ভিস। এর মধ্যে ছয়টির ‘দীর্ঘমেয়াদী ডিপোজিট’ ও ‘ইস্যুয়ার রেটিং’ অবনমন এবং আরেকটি ব্যাংকের প্রথম রেটিং করা হয়েছে, যা নেতিবাচক বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
বুধবার এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর রেটিং বা ঋণমান কমানোর কথা জানায় মুডি’স।
রেটিং কমানো ব্যাংকগুলো হলো- ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড, দ্য সিটি ব্যাংক লিমিটেড, ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, এনসিসি ব্যাংক লিমিটেড ও প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড। আর মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেডের রেটিং নিশ্চিত করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে এসব ব্যাংকের রেটিং পুনর্মূল্যায়নের ঘোষণা দিয়েছিল মুডি’স। পর্যালোচনার পর বুধবার নতুন রেটিংয়ের ঘোষণা এল।
মঙ্গলবার বাংলাদেশের ঋণমান কমানোর ঘোষণা দিলেও তাদের পূর্বাভাস স্থিতিশীল রাখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ঋণমান প্রদানকারী এ সংস্থাটি।
২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর মুডি’স জানায়, দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের সর্বভৌম রেটিং ‘বিএ৩’ থেকে পুনর্মূল্যায়ন করতে এসব ব্যাংকের রেটিং পুনর্মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
সে সময় সংস্থাটি জানিয়েছিল, বাংলাদেশের সার্বভৌম রেটিংয়ে ব্যাংক খাতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। ব্যাংকের ঋণ দেয়ার সক্ষমতা সরকারের সক্ষমতাতেও প্রভাব ফেলে।
সংস্থাটি বলেছিল, পুনর্মূল্যায়নের সময় বেশ কিছু বিষয় তারা বিবেচনায় নেবে; বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভও এর মধ্যে রয়েছে। পরিস্থিতির উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপগুলোও এক্ষেত্রে বিবেচনায় নেয়া হবে।
প্রতিষ্ঠানের সার্বিক আর্থিক অবস্থার ওপর রেটিং নিতে ব্যাংকগুলো আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থাগুলোর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। রেটিং পাওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট ফি দিয়ে থাকে ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলো। মুডি’স-এর সঙ্গে চুক্তি করেছিল বলে বাংলাদেশের শুধু এ সাত ব্যাংকেরই রেটিং করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
মুডি’স-এর রেটিং বা ঋণমান একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা প্রকাশ ও আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা নির্ধারণে সহায়ক হয়।
বিবৃতিতে মুডি’স জানিয়েছে, সাত ব্যাংকের মধ্যে চারটির ‘বেজলাইন ক্রেডিট অ্যাসেসমেন্ট’ করা হয়েছে। আর এনসিসি ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের রেটিং বি৩ থেকে বি২ এবং মার্কেন্টাইল ব্যাংকের দীর্ঘমেয়াদী আমানত ও ইস্যুয়ার রেটিং বি২ করা হয়েছে।
অপরদিকে এবারের রেটিং মূল্যায়নের প্রভাব সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের (সিএএ১ নেগেটিভ, সিএএ২) রেটিংয়ে পড়েনি বলে বিবৃতিতে বলা হয়।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার আগে বাংলাদেশের ঋণমান সূচক কমানোর ব্যাখ্যায় বেশ কিছু কারণ তুলে ধরে মুডি’স। এর মধ্যে ডলারের সংকট অব্যাহত থাকা, বিদেশি মুদ্রার মজুদ কমে যাওয়ায় বৈদেশিক লেনেদেনে চাপ তৈরি হওয়া ও আমদানি কার্যক্রম ব্যাহত, রাজস্ব আহরণে পিছিয়ে থাকা এবং জ্বালানি সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেয়ার মতো বিষয় রয়েছে বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি।
বিবৃতিতে মুডি’স বলছে, আগের মতোই একাধিক বিনিময় হার ও বেঁধে দেয়া সুদের হারের সীমা বহাল থাকায় তা সাধারণ কার্যক্রমকে বিঘ্নিত করছে।
দেশের রিজার্ভের পরিমাণ ৩০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে যেতে আরও দুই থেকে তিন বছর লাগবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
আরও পড়ুন:সরকারি ব্যয়ে আকাশ পথে বিজনেস ক্লাসে (প্রথম শ্রেণি) বিদেশ ভ্রমণ স্থগিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সংক্রান্ত সারসংক্ষেপে বুধবার স্বাক্ষর করেছেন তিনি। কোভিড-পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও বৈশ্বিক সংকটের প্রেক্ষাপটে নানামুখী পদক্ষেপের আওতায় এই নির্দেশনা দিয়েছেন সরকার প্রধান।
প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এম. এম. ইমরুল কায়েস বুধবার এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সরকারি খরচে আকাশ পথে বিজনেস ক্লাসে বিদেশ ভ্রমণ স্থগিত করা হয়েছে। আজ (বুধবার) এ সংক্রান্ত সারসংক্ষেপে প্রধানমন্ত্রী সই করেছেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এই সুবিধা স্থগিত থাকবে।
এদিকে বৃহস্পতিবার ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার। এবারের বাজেটে ডলার সংকট, রিজার্ভ কমে যাওয়া ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হয়েছে। মূলত ডলারের ব্যয় কমাতেই সরকারি খরচে আকাশ পথে বিজনেস ক্লাসে বিদেশ ভ্রমণ স্থগিত করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বন্ধের নির্দেশ দিয়ে গত বছরের ১২ মে একটি পরিপত্র জারি করেছিল অর্থ মন্ত্রণালয়।
পরে ওই বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর এক আদেশে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের শর্ত কিছুটা শিথিল করা হয়। সীমিত আকারে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে কর্মকর্তাদের বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দিয়ে আদেশ জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। ৯ নভেম্বর আবারও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
মন্তব্য