আস্থা জাগানোর যত উদ্যোগই নেয়া হচ্ছে কোনোটিতেই কাজ হচ্ছে না। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে সম্প্রতি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কাছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণে ৬টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাতে প্রত্যাশা ছিল সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনেও গতি ফিরবে, কিন্তু তাতেও আস্থা ফেরেনি।
সূচক বাড়লেও মঙ্গলবার ৮ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন দেখেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এর আগের গত ১৮ এপ্রিল পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছিল ৬০২ কোটি টাকা। তারপর ১৯ এপ্রিল লেনদেন হয়েছিল ৬৯৭ কোটি টাকা। এরপর আর পুঁজিবাজারের লেনদেন ৬ হাজারে নেমেনি।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক দেবব্রত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে জানান, এপ্রিলের শেষ সময় থেকে নভেম্বরের শেষ সময় পর্যন্ত পুঁজিবাজারে যে লেনদেন হয়েছে তাতে সূচক কমে গেলেও আতঙ্কের কিছু ছিল বলে মনে হয়নি।
তিনি বলেন, এখন যেহেতু সূচকের পাশাপাশি লেনদেনও কমে আসছে তাতে বলা যায়, কোনো পক্ষ শেয়ার বিক্রি করছে, কিন্তু নতুন বিনিয়োগ করছে না। এ বিষয়টি নজরদারি করা উচিত। পুঁজিবাজারে এমন অবস্থা আগেও হয়েছে। বর্তমান কমিশনের ওপর বিনিয়োগকারীদের অনেক আস্থা আছে। সেই আস্থার জায়গা থেকেই বিনিয়োগকারীরা করোনা মহামারির সময়ও বড় বিনিয়োগের মাধ্যমে পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা রেখেছে।
সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ার পর কেন পুঁজিবাজারের এমন অবস্থা হচ্ছে সেটির সঠিক যাচাই-বাছাই প্রয়োজন বলে মনে করেন দেবব্রত কুমার।
তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে পুঁজিবাজারে নজরদারি করা হচ্ছে, এটি ভালো দিক। আগে পুঁজিবাজার নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা হলেও এভাবে চিঠি দিয়ে নির্দেশনা প্রদান বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে সহায়ক হবে।
মঙ্গলবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২০ দশমিক ৭০ পয়েন্ট বেড়েছে। সূচক দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৭৫৭ দশমিক ২৫ পয়েন্টে। পাশাপাশি অপর দুই সূচকও বেড়েছে।
তবে আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে এসেছে লেনদেন, ৬৫২ কোটি টাকা। আগের দিনও লেনদেন হয়েছিল ৮০৭ কোটি টাকা। এক দিনের ব্যবধানে সূচক কমেছে ১৫৫ কোটি টাকা।
লেনদেনে বস্ত্র খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ দেখা গেছে। পাশাপাশি প্রকৌশল, বিবিধি, ব্যাংক খাতের প্রতি আগ্রহ ছিল বিনিয়োগকারীদের।
এদিন ডিএসই এসএমই বোর্ডের সূচক ডিএসএমইএক্স ২৩ দশমিক ৫১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫৯০ দশমিক ৬০ পয়েন্টে। তালিকাভুক্ত ছয়টি কোম্পানির মধ্যে চারটির দর কমেছে। দুটির দর বেড়েছে। মোট লেনদেন হয়েছে ৯ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।
যেসব কোম্পানির দর বদ্ধিতে বেড়েছে সূচক
মঙ্গলবার পুঁজিবাজারে সূচক বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি সহায়ক ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। এদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ২.১০ শতাংশ। এতে সূচক বেড়েছে ৫.৮৪ শতাংশ। লেনদেনে কোম্পানিটির শেয়ার দর ১৫২ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৫৫ টাকা ২০ পয়সা।
ব্যাংক খাতের আইএফআইসি ব্যাংকের শেয়ার দর ৪.৮৫ শতাংশ বৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে ২.৮৩ শতাংশ। ব্যাংকটির শেয়ার দর ১৬ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৭ টাকা ৩০ পয়সা। ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ১.৫১ শতাংশ। এতে সূচক বেড়েছে ২.৩২ শতাংশ।
সূচক বৃদ্ধিতে সহায়ক ছিল বেক্সিমকোফার্মা, যার শেয়ার দর বেড়েছে দশমিক ৮২ শতাংশ। এতে সূচক বেড়েছে ১.৪৯ শতাংশ।
ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির শেয়ার দর এদিন বেড়েছে দশমিক ৪৮ শতাংশ। ২৪৬ টাকা ৮০ পয়সা দরের শেয়ার হয়েছে ২৪৮ টাকা। এদিন কোম্পানিটির ৯৮ লাখ টাকার ৩৬ হাজার ৬৫৫টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো (বিএটিবিসি) শেয়ার দর বৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে ১.২৪ শতাংশ। এদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে দশমিক ১৭ শতাংশ।
লাফার্জ হোলসীম বাংলাদেশের শেয়ার দর বৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে দশমিক ৯৭ শতাংশ। যমুনা ব্যাংকের শেয়ার দর বৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে দশমিক ৯৪ শতাংশ। আর এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার দর বৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে দশমিক ৮২ শতাংশ।
লেনদেনে এগিয়ে থাকা ১০ কোম্পানি
লেনদেন এগিয়ে থাকা ১০ কোম্পানির মধ্যে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। গত ১০ কর্মদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে চারদিন। বাকি ছয় দিন থেমে থেমে শেয়ার দর কমেছে।
মঙ্গলবার বেক্সিমকো লিমিটেডের ১০২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। ৬৬ রাখ ৬২ হাজার ৮৯২টি শেয়ার এদিন হাতবদল হয়েছে।
লেনদেনে এগিয়ে থাকা দশ কোম্পানির মধ্যে এদিন ব্যাংক খাতের ছিল দুটি। এর মধ্যে ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার দর সোমবার বেড়েছিল। তার আগে টানা সাত দিন কমেছে।
মঙ্গলবার আবারও দশমিক এক শতাংশ কমেছে ব্যাংকটির শেয়ার দর। মোট লেনদেন হয়েছে ২৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এদিন ব্যাংকটির ১ কোটি ৮৪ লাখ ৯৬ হাজার ৯৭২টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
ব্যাংক খাতের আইএফআইসি ব্যাংকের মোট ১৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। হাতবদল হয়েছে ৮১ লাখ ২০ হাজার ৪২৫টি শেয়ার।
এছাড়া ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ৪০ হাজার ১৭৯টি শেয়ার।
জিএসপি ফিন্যান্সের লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। শেয়ার হাতবদল হয়েছে ৪৯ লাখ ১৭ হাজার ৯৮০টি শেয়ার।
সাইফ পাওয়ারের লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। শেয়ার হাতবদল হয়েছে ২৯ লাখ ৪ হাজার ৪৮টি শেয়ার।
এ তালিকায় ছিল বেক্সিমকো ফার্মা, যার ১১ কোটি ২৯ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। সোনালী পেপারের ১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। এছাড়া, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স, ফার্মা এইড ছিল সেরা দশে।
দর বেড়েছে যে ১০ কোম্পানি
দিনের সর্বোচ্চ ৯ শতাংশের বেশি বা ১০ শতাংশের কাছাকাছি দর বেড়েছে এমন কোম্পানি ছিল দুটি। এর মধ্যে একটি ছিল জেড ক্যাটাগরির তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল। গত ১০ কর্মদিবেস কোম্পানিটির টানা চার কর্মদিবস দর কমেছে। সোমবার ও মঙ্গলবারসহ বাকি চারদিনও দর বেড়েছে কোম্পানিটির।
এদিন তমিজউদ্দিন টেক্সটাইলের শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৯৫ শতাংশ। ১৪৭ টাকা ৬০ পয়সা দরের শেয়ার হয়েছে ১৬২ টাকা ৩০ পয়সা।
‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানি ফাইন ফুডসের শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৯১ শতাংশ। ৪৫ টাকা ৪০ পয়সা দরের শেয়ার হয়েছে ৪৯ টাকা ৯০ পয়সা।
এ ছাড়া, দর বৃদ্ধির তালিকায় থাকা সোনালী পেপারের শেয়ার দর বেড়েছে ৮.৭৩ শতাংশ। হাক্কানি পাল্পের শেয়ার দর বেড়েছে ৭.১৪ শতাংশ।
এদিন দর বৃদ্ধির দশ কোম্পানির মধ্যে খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের কোম্পানি ছিল ৫টি। ফাইন ফুড সহ জিলবাংলা সুগার, যার শেয়ার দর বেড়েছে ৬.৮৮ শতাংশ। এএমসিএল (প্রাণ), যার শেয়ার দর বেড়েছে ৬.৮০ শতাংশ। এমারেল্ড অয়েলের শেয়ার দর বেড়েছে ৬.৫২ শতাংশ এবং ন্যাশনাল টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে ৬.৪৮ শতাংশ।
এছাড়া মুন্নু এএমজিএলর শেয়ার দর বেড়েছে ৬.৫৭ শতাংশ। এতে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৫৭০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৬০৭ টাকা ৫০ পয়সা।
দর বৃদ্ধির তালিকায় থাকা দেশ গার্মেন্টের শেয়ার দর বেড়েছে ৬.৯১ শতাংশ। এপেক্স ফুডের শেয়ার দর বেড়েছে ৬.৩৫ শতাংশ।
দর পতনের ১০ কোম্পানি
এদিন সবচেয়ে বেশি শেয়ার দর কমেছে হাওয়েল টেক্সটাইলের ৮.৪৬ শতাংশ। এতে ৪৪ টাকা ৯০ পয়সা দরের শেয়ার কমে হয়েছে ৪১ টাকা ১০ পয়সা। ৬ লাখ ৮০ টাকা টাকার মোট ১৬ হাজার ৩৯টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সে কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে ৫.৬৫ শতাংশ। ৪০ লাখ ৩৬ হাজার টাকার মোট ৩১ হাজার ৪৬৩টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
সোনালী পেপার কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে ৪.৯৯ শতাংশ। এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৪.৬৭ শতাংশ। সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৪.৬৫ শতাংশ।
এদিন দর পতনের থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে সিলকো ফার্মার শেয়ার দর কমেছে ৩.৮৪ শতাংশ। পিপলস ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৩.৭৫ শতাংশ। এটলাস বাংলাদেশের শেয়ার দর কমেছে ৩.২২ শতাংশ। আরএসআরএম কোম্পানির শেয়ার দর ২২ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৩.১১ শতাংশ কমে হয়েছে ২১ টাকা ৮০ পয়সা।
প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৩ শতাংশ। এদিন কোম্পানিটির ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকার ২ লাখ ১ হাজার ২০৩টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
দর পতনে থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে জনতা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ২.৯৩ শতাংশ। মেঘনা পেট কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে ২.৮৯ শতাংশ। অনালিমা ইয়ার্ডের শেয়ার দর কমেছে ২.৮৫ শতাংশ।
আরও পড়ুন:ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ ২০ জনের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব জব্দ করেছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) নির্দেশে বৃহস্পতিবার তাদের বিও হিসাব স্থগিত করেছে বিএসইসি।
নির্দেশনায় বিএসইসি যাদের বিও হিসাব জব্দ করেছে তারা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তার স্ত্রী লুতফুল তাহমিনা খান, ছেলে সফি মুদাসসের খান ও মেয়ে শাফিয়া তাসনিম খান; সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, তার স্ত্রী নুরুন ফাতেমা হাসান ও মেয়ে নাফিসা জুমাইনা মাহমুদ; সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও তার স্ত্রী আরিফা জেসমিন কনিকা; সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত ও তার স্ত্রী শারমিন মুস্তারি; সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, তার স্ত্রী রুখমিলা জামান চৌধুরী, তার আত্মীয় জারা জামান, বোন রোকসানা জামান চৌধুরী, ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরী ও মেয়ে জেবা জামান চৌধুরী।
এছাড়া পিরোজপুর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন মহারাজ, তার স্ত্রী উম্মে কুলসুম, ছেলে সাম্মাম জুনাইদ ইফতির বিও হিসাব জব্দ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরদিন থেকে টানা চার দিন পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটতে দেখা যায় দেশের পুঁজিবাজারকে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও নতুন উদ্যমে শুরু করার প্রত্যয় চোখে পড়ে। অনেকে নতুন করে কিছু পুঁজি বিনিয়োগে এনেছেন। অনেকে আবার শেয়ার কিনে রাখতে অন্যদের পরামর্শ দিয়েছেন।
সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ধারণা হয়েছিল, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে পুঁজিবাজারে সুদিন ফিরবে। তবে সেই সুদিনের দেখা মিলছে না। ওই চার কর্মদিবসের পর থেকে পরের পাঁচ কর্মদিবসের গল্পটা পুরনো হতাশার।
গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-ডিএসইতে চার কর্মদিবসে ৭৮৬ পয়েন্ট সূচক বাড়ার পর বিনিয়োগকারীরা উৎফুল্ল হয়ে উঠেছিল। এরপর ৮ কর্মদিবসে সূচক পড়ল ৪০৮ পয়েন্ট। এর মধ্যে পাঁচদিনেই পড়ল ৩৪৫ পয়েন্ট।
সবশেষ বুধবারের পতন ছিলো অনেকটাই অনাকাঙ্ক্ষিত। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক হারিয়েছে ১০৮ পয়েন্ট।
বর্তমান ডিএসইর প্রধান সূচকটি নেমে এসেছে পাঁচ হাজার ৬০৬ পয়েন্টে। তবে সবচেয়ে বেশি হতাশা ছড়াচ্ছে মোট লেনদেনের পরিমাণ। সরকার পতনের পর একদিনে লেনদেন উঠে এসেছিলো দুহাজার কোটি টাকা, যা বর্তমানে নেমে এসেছে চার ভাগের এক ভাগে। সবশেষ কর্মদিবসে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৫৩৬ কোটি টাকার।
হঠাৎ এমন দরপতনে হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। প্রতিদিনই তাদের বিনিয়োগের অর্থ কমে আসছে।
ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী জসিম উদ্দিনের ব্যাখা ছিলো এমন- ‘আমরা তো ভাবছিলাম আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন হবে না। গত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সেটা করেও দেখাতে পারেনি। একের পর এক দুর্নীতি আর লুটপাটে বাজার থেকে নিঃস্ব হতে হয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের।
‘সবার মধ্যে আশা ছিলো ওদের পতনের পর পুঁজিবাজার অনেক উপরে উঠবে। প্রথম কয়েকদিন হলোও তাই। তবে এখন কী যে হচ্ছে বুঝতে পারছি না। সকাল শুরু হলেই দেখি পতন আর পতন। এগুলো আর কত দেখতে হবে। নতুন সরকারের উচিত আগে পুঁজিবাজার ঠিক করা।’
বুধবার দেখা যায়, লেনদেনে অংশ নেয়া প্রায় সব প্রতিষ্ঠানের দর কমেছে। অংশ নেয়া কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১১টির, কমেছে ৩৭১টির। আর অপরিবর্তিত ছিলো ১২টি কোম্পানির শেয়ার দর।
হতাশ আরেক বিনিয়োগকারী আনিস বলেন, ‘আমাদের কী করা উচিত তা জানি না ভাই। হতাশ হয়ে সবাই মার্কেট ছাড়তেছে। ভাবলাম সরকার পরিবর্তন হইছে, তাই অনেক দিন পর কিছু শেয়ার কিনলাম। তবে যা হচ্ছে তাতে আবার হতাশ হলাম।’
অন্তর্বর্তী সরকারের বেছে নেয়া মাশরুর রিয়াজ বিএসইসির চেয়ারম্যান হওয়া নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর গত সোমবার নেতৃত্বে আসেন খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। তিনি নেতৃত্বে আসার পর টানা তিন কর্মদিবসেই দরপতন হল পুঁজিবাজারে।
আরও পড়ুন:পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন ড. এম মাশরুর রিয়াজ।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ড. এম মাশরুর রিয়াজকে বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল। তবে পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট দু-একটি গোষ্ঠী তার সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকার তথা সালমান এফ রহমানের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে মর্মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার শুরু করে।
গত ১৩ আগস্ট তার নিয়োগের প্রজ্ঞাপন হলেও মাশরুর রিয়াজকে বিএসইসিতে যোগ দিতে দেখা যায়নি। পরে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে জানান, তার বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখছেন। তবে সরকারের খতিয়ে দেখার আগেই মাশরুর রিয়াজ নিজে থেকেই বিএসইসি চেয়ারম্যান পদে যোগ না দেয়ার কথা জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়কে।
ড. এম মাশরুর রিয়াজ বাংলাদেশের একজন অর্থনীতিবিদ। তিনি পলিসি এক্সচেঞ্জ নামক একটি গবেষণা সংস্থার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি বিশ্বব্যাংকেও চাকরি করেছেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান পদে যোগ না দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে সামনে বহু গবেষণার কাজ করার সুযোগ রয়েছে। আমি এই সময়টাকে কাজে লাগাতে চাই। দেশের অর্থনীতি নিয়ে একজন অর্থনীতিবিদ হিসেবে ভূমিকা রাখতে চাই।
‘বিশেষ করে সামষ্ট্রিক অর্থনীতি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও আর্থিক খাত নিয়ে নীতি প্রণয়ন ও সংস্কার বাস্তবায়নে ভূমিকা পালনের সুযোগ রয়েছে। এসব বিবেচনায় আমি বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এর আগে একটি ছবিকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাশরুর রিয়াজকে আগের সরকারের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে তুলে ধরেন অনেকে। এরপর বিএসইসির কিছু কর্মকর্তাও তাকে নিয়ে আপত্তি তোলে। তবে এরপর আবার তারা তাদের আপত্তি তুলে নেয়। এসব কারণে যোগদানে অনিচ্ছুক কিনা- এমন প্রশ্ন এড়িয়ে যান মাশরুর রিয়াজ।
এদিকে মাশরুর রিয়াজ যোগ দেবেন না জানতে পেরে নতুন করে বিএসইসির চেয়ারম্যান খুঁজতে শুরু করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে অনেকের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়েছে বলেও জানা গেছে।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরদিন থেকে টানা তিনদিন ব্যাপক উত্থান হয় দেশের দুই পুঁজিবাজারে। প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-ডিএসইতে গত সপ্তাহের শেষ তিনদিনে সাধারণ সূচক বেড়েছে প্রায় ৭ শ’ পয়েন্ট। পাশাপাশি লেনদেনেও বেশ গতি দেখা গিয়েছিলো সেই কয়েক দিনে।
চলতি সপ্তাহের শুরুতেও বাজারে ছিলো তেজিভাব। রোববার প্রথম কর্মদিবসে লেনদেন ছাড়িয়ে যায় দুই হাজার কোটি টাকার ঘর। এদিনও ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে প্রায় ৯০ পয়েন্ট। টানা চারদিন উড়তে থাকা পুঁজিবাজার ধাক্কা খায় সোমবার এসে। সেদিন সকালে সূচকের উত্থান হলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে বিক্রির চাপে কমতে থাকে মূল্যসূচক। সোমবারের ধারা অব্যাহত ছিলো মঙ্গলবারেও।
এদিন সকাল থেকেই কমতে থাকে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স। দুপুরে কিছুটা উত্থান হলেও দিনশেষে সূচকটি ৬৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান নিয়েছে ৫ হাজার ৮ শ ৬৭ পয়েন্টে। এ নিয়ে টানা দুই দিনে সূচকটি কমেছে ১৪৭ পয়েন্ট।
ডিএসইতে এদিন মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১৫ কোটি টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট, যা তার আগের দিনের চেয়ে প্রায় ১ শ ২৮ কোটি টাকা কম। প্রধান সূচকের পাশাপাশি এদিন কমেছে অপর দুই সূচক ডিএস-৩০ ও ডিএসইএস।
লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির দরপতন হয়েছে এদিন। ১০৬ টি প্রতিষ্ঠানের দর বাড়ার বিপরীতে কমেছে ২৬৯ টির আর অপরিবর্তিত দেখা গেছে ২৪ টি কে।
পুঁজিবাজারের মঙ্গলবারের আচরণকে স্বাভাবিক দর সংশোধন বলে মনে করছেন সাধারণ বিনিয়োগকারিরা। অনেকেই গত কয়েকদিনে দর বাড়তে দেখে মুনাফার জন্য হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করেছেন বলেও জানিয়েছেন।
জাহিদ হোসেন নামে পুঁজিবাজারের এক বিনিয়োগকারী বলেন, ‘স্বাভাবিক নিয়মেই বাজার সংশোধন হয়েছে। এখানে ভয় পাওয়ার কারণ নাই। ৮০০ সূচক বাড়ার পর দুইশ কমবে এটাই স্বাভাবিক, বরং না কমলেই বুঝতাম ব্যাপারটা অস্বাভাবিক।’
আরেক বিনিয়োগকারী ইন্দ্রজিৎ বলেন, ‘অনেকদিন ধরে কোন শেয়ার বিক্রি করি না লোকসান ছিলো বলে। এখন দেখলাম কিছুটা হলেও লোকসান কমে এসেছে। আবার টাকারও দরকার ছিলো। তাই কিছু শেয়ার আজকে বিক্রি করলাম।’
আরও পড়ুন:পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ এম মাশরুর রিয়াজ।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাবেক এই কর্মকর্তা বর্তমানে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
আজ মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘ড. এম মাশরুর রিয়াজকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন ১৯৯৩ এর ধারা ৫ ও ৬ বিধান প্রতিপালন ও উক্ত আইনের ধারা ৫(২) অনুসারে তাকে আগামী চার বছরের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হলো।’
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে দেশের আর্থিক খাতে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পর পদত্যাগ করেছেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন-বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। শনিবার তিনি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের কাছে ই-মেইলে তার পদত্যাগপত্র পাঠান।
চেয়ারম্যান পদ শূন্য হওয়ায় বর্তমান কমিশনার মোহাম্মদ মোহসীন চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। রোববার রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপ-সচিব ফরিদা ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত এই আদেশ জারি করা হয়েছে।
আদেশে বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কমিশনার মোহাম্মদ মোহসীন চৌধুরী বিএসইসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে। বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের পদত্যাগপত্র দাখিলের তারিখ অর্থাৎ ১০ আগস্ট থেকে এই আদেশ কার্যকর হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম করোনা মহামারির শুরুতে অর্থাৎ ২০২০ সালে বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পান। করোনার ছোবলে ভঙ্গুর এক পুঁজিবাজারে সাময়িক গতি ফেরাতে প্রথম দিকে বেশকিছু ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তবে দুর্বল শেয়ার যোগসাজশে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। পুঁজিবাজারে কয়েকটি কারসাজি চক্রকে ইন্ধন দেয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ২০২৪ সালের ২৮ মে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি পক্ষের আপত্তি থাকার পরও চেয়ারম্যান হিসেবে পুনরায় নিয়োগ পান তিনি।
দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে পুঁজিবাজার। ফলে দীর্ঘ মন্দা কাটিয়ে বর্তমান পুঁজিবাজার বাধাহীন গতিতে ছুটে চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের উভয় পুঁজিবাজারে বিদায়ী সপ্তাহে (৫ থেকে ৮ আগস্ট) সূচকের রেকর্ড উত্থানে লেনদেন হয়েছে।
একইসঙ্গে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে বাজার মূলধন বেড়েছে ৯০ হাজার ৯৩২ কোটি ৫ টাকা। তবে আলোচ্য সময়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) টাকার পরিমাণে লেনদেন বাড়লেও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) কমেছে।
ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় এ তথ্য জানা গেছে।
বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ৩৩৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৩৯৪ কোটি ৬০ লাখ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৯৪৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৩ হাজার ৯১৩ কোটি ৮ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৫৩ হাজার ৩৬৮ কোটি ১০ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ৫০ হাজার ৫৪৫ কোটি ২ লাখ টাকা।
সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৯০.৮৭ পয়েন্ট বা ১১.০৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৯২৪ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ২৩১.৮৮ পয়েন্ট বা ১২.২০ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ১৩২ পয়েন্টে, ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১০৯.৫৩ পয়েন্ট বা ৯.৪০ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ২৭৪ পয়েন্টে এবং ডিএসএমইএক্স সূচক ৭৪.৪৭ পয়েন্ট বা ৪.৯০ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৪৬ পয়েন্টে।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯৭টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৩৯টির, দর কমেছে ১১টির ও দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৭টির। আর লেনদেন হয়নি ১৬টির।
অন্য পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ২৬০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৩৯৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন কমেছে ১৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
গেল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ২৭ হাজার ২৫২ কোটি ২৬ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৮৩৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ৪০ হাজার ৩৮৭ কোটি ৩ লাখ টাকা কমেছে।
সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১ হাজার ৬৮০.৫২ পয়েন্ট বা ১১.১১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৭৯৯ পয়েন্টে। সিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে সিএসই-৩০ সূচক ১২.১৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৩৬৯ পয়েন্টে, সিএসসিএক্স ১১.১৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ১৩২ পয়েন্টে, সিএসআই সূচক ৮.৫০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৬ পয়েন্টে এবং এসইএসএমইএক্স ২.১৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১১৪ পয়েন্টে।
গত সপ্তাহে সিএসইতে মোট ৩২৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ২৫৬টির, দর কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৯টির শেয়ার ও ইউনিট দর।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য