সিটি ব্যাংকের ডিজিটাল ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ বেশ সাড়া ফেললেও বার বার চেষ্টা করেও এই ঋণ না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন বিকাশের অনেক গ্রাহক। এর কারণ হিসেবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এবং বিকাশ বলছেন, বেঁধে দেয়া কিছু শর্তের জন্যই অনেকে এই ঋণ নিতে পারছেন না।
সেবাটি চালুর পাঁচ দিনে বিকাশের সাড়ে তিন হাজার গ্রাহককে ঋণ দিয়েছে সিটি ব্যাংক। বিতরণ করা ঋণের অঙ্ক এক কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এই ঋণ দেয়া হচ্ছে কেবল বিকাশ গ্রাহকদের।
দেশে প্রথমবারের মতো বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংকের এই ডিজিটাল ক্ষুদ্রঋণ সেবা চালু হয় গত ১৫ ডিসেম্বর। এই ঋণ পেতে বিকাশ গ্রাহকদের কোথাও যেতে হচ্ছে না। এমনকি কোনো নথিতে সইয়ের প্রয়োজন নেই, দিতে হচ্ছে না জামানত। সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে ঘরে বসেই মোবাইল ফোনে এক ক্লিকে ঋণ পাচ্ছেন গ্রাহক।
তবে বিকাশের সব গ্রাহক এ ঋণ পাচ্ছেন না। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে গ্রাহকের কিছু যোগ্যতা নির্ধারণ করেছে সিটি ব্যাংক।
যারা ব্যর্থ হচ্ছেন, তাদের বিকাশের অ্যাপে দেখানো হচ্ছে, ‘দুঃখিত... আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ প্রদানের নীতিমালা অনুযায়ী আপনার বিকাশ হিসাব এখনও ঋণসেবার জন্য উপযুক্ত নয়।’
আবেদন করে ব্যর্থ হয়ে এমন ম্যাসেজ পাওয়া বিকাশ গ্রাহক সারোয়ার প্রতীক ক্ষোভ জানিয়ে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হঠাৎ করেই কিছু টাকার খুব প্রয়োজন হয়েছিল; ভাবলাম বিকাশের মাধ্যমে সিটি ব্যাংক থেকে ঋণ নিই। কিন্তু আবেদন করেও ব্যর্থ হয়েছি।
‘তাহলে কারা এ ঋণ পাচ্ছেন বুঝতে পারছি না।’
জানা গেছে, ডিজিটাল ক্ষুদ্রঋণ বিতরণে সিটি ব্যাংক আবেদন করার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি নির্দেশনা দেয়। এতে বলা হয়, বায়োমেট্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে ই-কেওয়াইসির মাধ্যমে যারা বিকাশ গ্রাহক হয়েছেন, তারাই শুধু ঋণ পাবেন।
তবে বিকাশের প্রচুর গ্রাহক এখনও ই-কেওয়াইসি নিবন্ধনের আওতায় আসেননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিকাশের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রচলিত পদ্ধতিতে কেওয়াইসিতে যারা গ্রাহক হয়েছেন, তাদের ই-কেওয়াইসির মাধ্যমে পুনরায় নিবন্ধনের উদ্যোগ নিচ্ছে বিকাশ। এ প্রক্রিয়া শেষ হলে আরও অনেকে ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবেন।’
অন্যদিকে সিটি ব্যাংক কর্মকতারা বলছেন, ঋণ পেতে গ্রাহককে দীর্ঘদিন বিকাশ অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে। বিকাশের লেনদেন পর্যালোচনা করে কারা ঋণ পাবেন সেটি নির্ধারণ করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)। তাই গ্রাহক যত বেশি বিকাশে লেনদেন করবেন, ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে ততই তারা অগ্রাধিকার পাবেন।
সিটি ব্যাংকের জনসংযোগ ও গণমাধ্যমপ্রধান মির্জা গোলাম ইয়াহিয়া সোমবার দুপুরে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘১৫ ডিসেম্বর বুধবার দুপুর ১২টা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে সেবাটি। ১৯ ডিসেম্বর রোববার সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ৮৫ লাখ ৮১ হাজার টাকা ৩৯৯ টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে। ঋণ পেয়েছেন মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের ৩ হাজার ২৩২ গ্রাহক। গড় ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ৬৫৫ টাকা।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিটি ব্যাংকের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বুধবার দুপুরে এই সেবা চালু হবার পরের তিন দিন (বিজয় দিবস এবং শুক্র ও শনিবার) ছুটি ছিল। অনেকেই ভেবেছিলেন, ছুটির মধ্যে হয়তো ঋণ সেবা বন্ধ থাকবে। তাই, ওই তিন দিন কম সংখ্যক বিকাশ গ্রাহক আবেদন করেছিলেন।
‘তবে রোববার সপ্তাহের প্রথম দিনে প্রচুর গ্রাহক আবেদন করেছেন। ঋণও দেয়া হয়েছে ছুটির দিনের চেয়ে বেশি।’
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘রোববার সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত প্রায় ৮৬ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছিল; পেয়েছিলেন ৩ হাজার ২৩২ জন গ্রাহক। তবে রাত ১২টা পর্যন্ত মোট ঋণের পরিমাণ ১ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। আর ঋণগ্রহীতার সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার অতিক্রম করেছে।’
বিকাশ কর্তৃপক্ষ বলছে, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে তথ্য সরবরাহ করে (ই-কেওয়াইসি) যেসব গ্রাহক বিকাশ হিসাব খুলেছেন, শুরুতে তারাই ডিজিটাল ঋণ পাচ্ছেন। এর পাশাপাশি প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে নিয়মিত লেনদেনকারীদের।
নানা মানদণ্ড বিবেচনায় যোগ্য গ্রাহকদের ৯ শতাংশ সুদে ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ দিচ্ছে সিটি ব্যাংক। এর মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ তিন মাস। তিনটি মাসিক কিস্তিতে বিকাশ অ্যাপ থেকেই ঋণ পরিশোধ করা যাবে।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন আর্থিক লেনদেন সেবা চালু থাকলেও এত দিন ঋণ নেয়ার সুযোগ ছিল না। বছরজুড়ে পাইলট প্রকল্প সফলভাবে শেষ করার পর প্রথমবারের মতো দেশে জামানতহীন ইনস্ট্যান্ট ‘ডিজিটাল ক্ষুদ্রঋণ’ নামের সেবাটি চালু করে সিটি ব্যাংক।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে এই সেবার উদ্বোধন করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের ও সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এই ঋণে দৈনিক হারে সুদহার নির্ধারিত হবে। একজন গ্রহীতা মেয়াদ পূর্তির আগেও ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে তাকে কেবল সেই কদিনের সুদ দিতে হবে। অগ্রিম নিষ্পত্তির জন্য বাড়তি খরচ দিতে হবে না।
আরও পড়ুন:বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, তরুণ উদ্যোক্তা ও পেশাজীবীদের সক্রিয় অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হলো ‘দ্য ওয়ে’ বা ‘আগামীর পথ’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। দিনব্যাপী আয়োজনে ছিল অংশগ্রহণমূলক বক্তৃতা, প্যানেল আলোচনা, বিতর্ক, তরুণদের উদ্ভাবিত উদ্যোগের পাশাপাশি ব্র্যাকের বিভিন্ন কর্মসূচির প্রদর্শন, চলচ্চিত্র প্রদর্শন, মিউজিক থেরাপিসহ নানা অনুষ্ঠান। ২৪শে আগস্ট ২০২৫, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির মেরুল বাড্ডা ক্যাম্পাসে ব্র্যাক ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত দিনব্যাপী এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য ছিল তরুণ প্রজন্মকে নেতৃত্ব, উদ্ভাবন ও অ্যাডভোকেসির মতো নানা কাজে যুক্ত হতে উৎসাহিত করা এবং তাদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করা।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থীর পাশাপাশি ব্র্যাক ইয়ুথ প্রোগ্রামের সদস্য, তরুণ পেশাজীবী, উন্নয়ন সহযোগী, গণমাধ্যম এবং ব্র্যাক ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরাও এতে অংশ নেন।
দিনের শুরুতে ‘দ্য সায়েন্স অফ ফাইন্ডিং আ ওয়ে’ শীর্ষক সেশনে ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ বলেন, সমাজ যা বলছে সেই গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ না থেকে তরুণরা যে যেই পেশাতেই থাকুক না কেন, তারা পরিবর্তনের পথ দেখাতে পারেন।
তিনি বলেন, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে লক্ষ্য অনুসরণ করতে হবে কারণ পরিবর্তনের উদ্যোগগুলো নিয়ে কাজ শুরু হলে তা স্বাভাবিকভাবেই অংশীদার এবং রিসোর্সকে আকৃষ্ট করে। ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত স্যার ফজলে হাসান আবেদের যাত্রা এবং ব্র্যাকের ‘সল্যুশন ইকোসিস্টেম’ বা সমাধান কাঠামো, যেখানে উন্নয়ন কর্মসূচি এবং সামাজিক উদ্যোগগুলো একসাথে কাজ করছে, সেই অভিজ্ঞতার আলোকে আসিফ সালেহ্ বলেন, উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তনে অঙ্গীকারবদ্ধ থাকাটা খুবই জরুরি। সত্যিকারের পরিবর্তন আনতে হলে তার জন্য দীর্ঘ অধ্যবসায় প্রয়োজন এবং দীর্ঘ মেয়াদে টেকসই অগ্রগতি নিশ্চিত করতে হলে একই সাথে অ্যাকটিভিজম, পলিসি, উন্নয়ন এবং এর বাণিজ্যিক দিকগুলোকেও সন্নিবেশিত করতে হবে।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার এই অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে বলেন, দানেই প্রকৃত পরিতৃপ্তি। আমরা যখন নিজেদের ঘাটতিগুলো চিহ্নিত করতে পারি এবং সেগুলো পূরণের জন্য সৃজনশীল সমাধান খুঁজে পাই, তখনই এটি সম্ভব হয়। নিজের, সমাজের এবং দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে প্রায়ই হতাশা জন্ম নেয়। তবে অন্যদের সঙ্গে তুলনায় না গিয়ে নিজের ভেতরের স্বকীয়তাকে খুঁজে বের করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। কারণ অন্যের মঙ্গলে অবদান রাখার মাধ্যমেই নিজেকে সমৃদ্ধ করা যায়।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের পিপল, কালচার অ্যান্ড কমিউনিকেশনস-এর ঊর্ধ্বতন পরিচালক মৌটুসী কবীর এবং শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন ও অভিবাসন কর্মসূচির পরিচালক সাফি রহমান খান। অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ট্রেজারার আরিফুল ইসলাম, রেজিস্ট্রার ড. ডেভিড ডাউল্যান্ড, লার্নিং অ্যান্ড টিচিং ইনোভেশন সেন্টারের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. গোলাম সামদানী ফকির, ডিরেক্টর অফ কমিউনিকেশন্স খায়রুল বাশার, অপারেশনস ডিরেক্টর সাজেদুল করিম, স্টুডেন্ট লাইফ-এর জয়েন্ট ডিরেক্টর তাহসিনা রহমান।
‘স্পার্কটক’ পর্বে বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়ন থেকে আসা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ঐতি রায় তুলে ধরেন তার জীবন ও সংগ্রামের গল্প। এ ছাড়া ব্র্যাকের নগর উন্নয়ন কর্মসূচির প্রোগ্রাম ম্যানেজার মাহিনুর সাইফ এ সময় বক্তব্য রাখেন।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ডিবেট ক্লাবের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় সংসদীয় ব্যবস্থার আদলে বিতর্ক প্রতিযোগিতা। পরে ‘বিয়ন্ড ওয়ান ওয়ে’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। দ্য ডেইলি স্টারের চিফ বিজনেস অফিসার তাজদীন হাসান, মাম্মিকিডস এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত আনজুম পলকা এবং ইটস হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বাশিরা হারুন এতে অংশ নেন। ‘দ্য ওয়ে অফ হারমনি’ শীর্ষক সেশনে ছিল আরমিন মুসা ও তাঁর দলের সম্মিলিত মিউজিক থেরাপি পরিবেশনা। এ ছাড়া ‘ডিজাইন কোয়েস্ট: সলভ ফর সোসাইটি’ শীর্ষক সেশন পরিচালনা করে শিশুদের জন্য খেলাভিত্তিক শিক্ষার সোশ্যাল স্টার্ট ‘মেকা টিম’।
এ ছাড়াও ছিল তরুণ উদ্ভাবকদের পাশাপাশি ব্র্যাকের নানা উদ্যোগের প্রদর্শন। ব্র্যাকের পক্ষ থেকে ওয়াটার হ্যাকাথন এবং আমরা নতুন নেটওয়ার্কের অংশগ্রহণকারীরা উপস্থাপন করেন তিনটি প্রকল্প—যত্নের দোকান, ইকো কেয়ার এবং উজ্জীবন। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবোটিক্স ক্লাব এবং এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ইনোভেশন ক্লাবের উদ্যোগে প্রদর্শিত হয় প্রযুক্তি ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়ে পাঁচটি প্রকল্প।
ব্র্যাকের জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচি (সিসিপি); নগর উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউডিপি), ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অফ এডুকেশনাল ডেভেলপন্ট (বিআইইডি), ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট কর্মসূচি (আইডিপি) ও আল্ট্রা পুওর গ্র্যাজুয়েশন (ইউপিজি) কর্মসূচি, সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনগত সুরক্ষা কর্মসূচি (সেলপ) এবং ব্র্যাক লিম্ব অ্যান্ড ব্রেস সেন্টারের (বিএলবিসি) নানা উদ্যোগ ও সেবাগুলো এখানে তুলে ধরা হয়। এ ছাড়া মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সহায়তার জন্য ‘মনের যত্ন’ এবং ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে তাদের বৈশ্বিক কার্যক্রমের সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হয়।
‘অলওয়েজ অ্যা ওয়ে-দ্য হিউম্যান লাইব্রেরি’ শীর্ষক আয়োজনে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষার্থীরা এবং ব্র্যাক ইয়াং প্রফেশনাল প্রোগ্রাম ও আমরা নতুন নেটওয়ার্কের সদস্যরা তাদের অভিজ্ঞতা ও জীবনের গল্পগুলো তুলে ধরেন। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ফিল্ম ক্লাব দেশি ও আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি আর্ট অ্যান্ড ফটোগ্রাফি ক্লাবের উদ্যোগে স্থাপিত গ্রাফিতি ওয়ালে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা ইচ্ছেমতো রং দিয়ে তাদের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষাগুলো তুলে ধরেন। অন্যদিকে ‘ব্র্যাক-ইউ এক্সপ্রেস’-এর পক্ষ থেকে তরুণদের মতামতগুলো ভিডিও সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে ধারণ করা হয়, যেখানে তরুণরা খোলামেলাভাবে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন।
অনুষ্ঠানস্থলে স্থাপিত ‘দ্য ওয়ে’ বুথগুলো তরুণদের ব্র্যাকের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, সহনশীল ও সৃজনশীল উদ্ভাবনের দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে তরুণদের পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে প্রস্তুত করার জন্য ব্র্যাকের প্রতিশ্রুতিকেই পুনর্ব্যক্ত করে ‘দ্য ওয়ে’।
পদ্মা ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের ১২৯ তম সভা ২১ আগস্ট বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। মোঃ শওকত আলী খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পদ্মা ব্যাংকের পর্ষদ সভায় অন্যান্য পরিচালকবৃন্দের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান, অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম, রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মোঃ ওয়াহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান, তামিম মারজান হুদা, স্বতন্ত্র পরিচালক মোঃ রুকুনুজ্জামান, ব্যারিস্টার-এট-‘ল এবং এএইচএম আরিফুল ইসলাম এফসিএ। সভা পরিচালনা করেন পদ্মা ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোঃ তালহা (চলতি দায়িত্বে)।
বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড সম্প্রতি সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ডিলার মিট আয়োজন করেছে। নলেজ শেয়ারিং সেশনের মাধ্যমে বিশ্বের নতুন নতুন টেকনোলজি, ওয়ালটনের নতুন ও আপকামিং প্রযুক্তিপণ্য, ব্যবসায়িক সুবিধা এবং আকর্ষণীয় অফারসহ কিভাবে ক্রেতাদের আরো বেশি সেবা দেয়া যায়, সেসব বিষয় নিয়ে প্রযুক্তিপণ্যের ব্যবসায়ীদের বিশেষভাবে অবহিত করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যেই রাজধানী ঢাকাসহ বিভাগীয় শহর চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, কক্সবাজার, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও কুমিল্লায় এসব অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী ডিলাররা ওয়ালটনের কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মনিটর, প্রিন্টারসহ বিভিন্ন আইটি পণ্যের বিস্তারিত তথ্য জানার সুযোগ পাচ্ছেন। পাশাপাশি বিশেষ ছাড়, প্রোমোশনাল সুবিধা ও ডিলারশিপের সুযোগ সম্পর্কেও তাঁদের অবহিত করা হচ্ছে। রিফারব্রিশড পণ্য সম্পর্কে ক্রেতাদের সচেতন করার ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, এই আয়োজন ডিলারদের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করার পাশাপাশি দেশের আইটি ব্যবসার গতি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানগুলোতে ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ছাড়াও আইটি ব্যবসায়ী সমিতির সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থাকছেন। তাঁরা মনে করেন, ওয়ালটনের এ ধরনের উদ্যোগ দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অগ্রযাত্রায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
ওয়ালটন কম্পিউটারের চিফ বিজনেস অফিসার তৌহিদুর রহমান রাদ বলেন, "গ্রাহকদের সর্বোচ্চমানের সর্বাধুনিক প্রযুক্তিপণ্য সাশ্রয়ী মূল্যে প্রদানের পাশাপাশি তাদের কাঙিক্ষত সেবা দেয়াই আমাদের লক্ষ্য। ক্রেতাদের সঙ্গে আমাদের সেতুবন্ধন হিসেবে ডিলারগণ কাজ করেন। ক্রেতাদের চাহিদা আরো ভালো করে বুঝতে এবং তাদের সর্বোচ্চ সেবা প্রদান করতে এই আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি রিফারব্রিশড পণ্য সম্পর্কে ক্রেতাদের সচেতন করার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। সারা বছরব্যাপী আমাদের এই কার্যক্রম চলমান থাকবে।”
যমুনা ব্যাংক টেকসই ও পরিবেশ বান্ধব অর্থায়ন, শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তি, সেবার বিস্তৃতি এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে গৃহীত বহুমুখী সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রমের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ২০২৪ সালের শীর্ষ ১০ টেকসই ব্যাংকের তালিকায় পরপর ৩ বার স্থান করে নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক আয়োজিত সাসটেইনেবিলিটি রেটিং রিকগনিশন অনুষ্ঠানে যমুনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মির্জা ইলিয়াস উদ্দীন আহম্মদ -এর হাতে সম্মাননাপত্র ও ক্রেস্ট তুলে দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ. মনসুর। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন্নাহার, সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টের (এসএফডি) পরিচালক চৌধুরী লিয়াকত আলী, যমুনা ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ প্রসান্ত সামিরসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মির্জা ইলিয়াস বলেন: “যমুনা ব্যাংকের গৃহীত টেকসই ও পরিবেশবান্ধব উদ্যোগগুলো শুধু সামাজিক দায়বদ্ধতার নিদর্শন নয়; বরং এগুলো আমাদের ব্যাংকের আর্থিক ভিত্তি সুদৃঢ় করার দিকেও একটি সুপরিকল্পিত কৌশল। যমুনা ব্যাংক মনে করে, এই রেটিং শুধু একটি স্বীকৃতি নয়; বরং আমাদের দায়িত্বশীল ও ভবিষ্যৎমুখী ব্যাংকিংয়ের প্রতিফলন”।
দেশীয় ও আন্তর্জাতিক দুটি প্রতিষ্ঠান থেকে মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি অর্জনের মাধ্যমে টেকসই ব্যাংকিং-যাত্রায় আরও নিজের অবস্থান শক্তিশালী করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
ব্লুমবার্গ ইএসজি রেটিং ২০২৪-এ বাংলাদেশের সকল প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংক প্রথম স্থান অর্জন করেছে। এ নিয়ে ধারাবাহিকভাবে তৃতীয় বছর শীর্ষ দশে থাকার গৌরব অর্জন করেছে ব্যাংকটি। একই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকও পঞ্চমবারের মতো ব্র্যাক ব্যাংককে দেশের অন্যতম শীর্ষ টেকসই ব্যাংক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
ব্লুমবার্গ ইএসজি স্বীকৃতি
ব্লুমবার্গ ইএসজি রেটিং ২০২৪-এ ব্র্যাক ব্যাংক সর্বোচ্চ ৩.৮ সামগ্রিক স্কোর অর্জন করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে পরিবেশ (১.৭৬), সামাজিক (৫.৮৩) এবং সুশাসন (৩.০৭)-এর স্কোর। এর মাধ্যমে ব্যাংকটি দেশীয় প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি ফাইন্যান্স (৩.৫১) ও সিটি ব্যাংক (২.৬৪)-কে ছাড়িয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশে পরিচালিত বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকেও ছাড়িয়ে গেছে।
এই স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক ধারাবাহিকভাবে তৃতীয় বছরের মতো ব্লুমবার্গের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে জায়গা করে নিতে সমর্থ্য হয়েছে।
ব্লুমবার্গের এই বৈশ্বিক স্বীকৃতি এসেছে ব্র্যাক ব্যাংকের পূর্ণাঙ্গ কার্বন নিঃসরণ রিপোর্ট, সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড ইমপ্যাক্ট রিপোর্ট ২০২৪, আইএফআরএস এস-১ ও এস-২ রিপোর্ট এবং অ্যানুয়াল রিপোর্ট ২০২৪ প্রকাশের মধ্য দিয়ে। এই প্রতিবেদনগুলো প্রকাশের মাধ্যমে ব্যাংকটি সুশাসনে নতুন বেঞ্চমার্ক তৈরি করেছে। ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংকের টেকসই অর্থায়নের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫০,২১৫ কোটি টাকায়, যা ব্যাংকটির মোট অ্যাসেট পোর্টফোলিওর ৮২%।
বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ বাজার মূলধন (১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) এবং সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ারহোল্ডিং (৩২%) আর্থিক খাতে ব্র্যাক ব্যাংকের নেতৃত্বস্থানের প্রতিফলন। এছাড়াও, তিন ধরনের গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ তথ্য (জিএইচজি স্কোপ ১, ২, ৩) প্রকাশের মধ্য দিয়ে দেশের প্রথম প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংক নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের টেকসই ব্যাংক রেটিং ২০২৪
বাংলাদেশ ব্যাংক পঞ্চম বছরের মতো ব্র্যাক ব্যাংককে দেশের অন্যতম শীর্ষ টেকসই ব্যাংক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। পাশাপাশি ব্যাংকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে ‘এক্সেলেন্ট’ রেটিং অর্জন করেছে, যা দেশে মাত্র আরও দুটি ব্যাংক অর্জন করতে পেরেছে।
সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ইনডেক্স, সিএসআর অ্যাক্টিভিটিস, গ্রিন রিফাইন্যান্স, কোর ব্যাংকিং সাসটেইনেবিলিটি ইনডেক্স এবং ব্যাংকিং সার্ভিসেস কাভারেজ— এই পাচটি পাঁচটি সূচকের ওপর ভিত্তি করে রেটিং করে থাকে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ব্র্যাক ব্যাংকই বাংলাদেশের প্রথম ব্যাংক, যারা পার্টনারশিপ ফর কার্বন অ্যাকাউন্টিং ফাইন্যান্সিয়ালস (পিসিএএফ) ফ্রেমওয়ার্কের অধীনে স্কোপ ১, ২, ৩ কার্বন নিঃসরণ তথ্য প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি ব্যাংকটি ইন্টারন্যাশনাল সাসটেইনেবিলিটি স্ট্যান্ডার্ডস বোর্ড (আইএসএসবি) মানদণ্ড অনুযায়ী স্বতন্ত্র আইএফআরএস এস-১ ও এস-২ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। আন্তর্জাতিক বেস্ট প্র্যাকটিসের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ব্যাংকটি ১,০০০ কোটি টাকার সোশ্যাল বন্ড ইস্যুরও প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা হবে ইন্টারন্যাশনাল ক্যাপিটাল মার্কেট অ্যাসোসিয়েশন (আইসিএমএ) প্রিন্সিপালস অনুযায়ী।
টেকসই অর্থায়নকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে ব্র্যাক ব্যাংক দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৫০টি সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স হেল্পডেস্ক স্থাপন করেছে, যাতে গ্রাহকদের জন্য গ্রিন ফাইন্যান্স ও পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা আরও সহজলভ্য হয়। ব্যাংকিংয়ের বাইরেও ব্র্যাক ব্যাংকের সিএসআর উদ্যোগগুলো সমাজে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলছে। শুধু ২০২৪ সালেই ব্যাংকটি স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচির আওতায় ৫০,০০০ মানুষকে সেবা, জলবায়ু সহনশীল কৃষি প্রকল্পের আওতায় ৪৬,০০০ কৃষককে সহায়তা এবং শিক্ষা খাতের আওতায় ৭০০ সুবিধাবঞ্চিত নারীকে উচ্চশিক্ষায় বৃত্তি দিয়েছে।
ব্র্যাক ব্যাংকের এমন মর্যাদাপূর্ণ অর্জন সম্পর্কে ব্যাংকটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও (কারেন্ট চার্জ) তারেক রেফাত উল্লাহ খান বলেন, “সাসটেইনেবিলিটি এখন আর কোনো ঐচ্ছিক বিষয় নয়, বরং এটি এখন দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা, প্রবৃদ্ধি ও প্রাসঙ্গিকতার ভিত্তি। ব্লুমবার্গ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের এই স্বীকৃতি আমাদের দায়িত্বশীল ব্যাংকিং, স্বচ্ছতা ও ইমপ্যাক্ট তৈরির প্রতিশ্রুতিকে আরও সুদৃঢ় করেছে। ব্র্যাক ব্যাংকে আমরা বিশ্বাস করি, ইএসজি শুধু পরিবেশ রক্ষা বা সামাজিক উন্নয়নের বিষয়ই নয়, বরং এটি একটি ভবিষ্যতমুখী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার প্রক্রিয়া, যেখানে বিনিয়োগকারী, রেগুলেটর, সহকর্মী ও গ্রাহকেরা আস্থা রাখতে পারেন। আমরা সবুজ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়ন আরও বাড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যাতে জাতীয় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমরা তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখতে পারি।”
ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি.:
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেয়ার ভিশন নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি. ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত দেশের অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একটি ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘BRACBANK’ প্রতীকে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন হয়। ১৯১টি শাখা, ৯৭টি উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১,১২৩টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং ৯ হাজারেরও বেশি মানুষের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট ও রিটেইল সেগমেন্টেও সার্ভিস দিয়ে আসছে। ব্যাংকটি দৃঢ় ও শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে এখন সকল প্রধান প্রধান মাপকাঠিতেই ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে অবস্থান করছে। বিশ লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বিগত ২৪ বছরেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়মানুবর্তিতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে বাংলাদেশে সফররত পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তারা চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নতি ও অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
গত শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম সরেজমিন পরিদর্শনের পূর্বে বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান বাণিজ্য উপিদেষ্টা ও পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রীকে বন্দরের সার্বিক অবস্থা, কনটেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিং, শ্রম ব্যবস্থাপনা, বিদেশি বিনিয়োগ ও অটোমেশনসহ নানা বিষয়ে অবহিত করেন।
বন্দর চেয়ারম্যান তাদের সাম্প্রতিক অগ্রগতি তুলে ধরে জানান, গত বছর রেকর্ডসংখ্যক কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। জাহাজের ওয়েটিং টাইম শূন্য থেকে দুই দিনে নামিয়ে আনা হয়েছে। পাশাপাশি জাহাজের গড় অবস্থানকাল (টার্নঅ্যারাউন্ড টাইম) কমে এসেছে এবং অটোমেশন ও ডিজিটালাইজেশনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।
পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নতি ও অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, করাচি পোর্ট ট্রাস্টে হাচিসন পোর্ট গ্রুপ একটি কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনা করছে, আবুধাবি পোর্ট কর্তৃপক্ষ একটি বাল্ক টার্মিনাল চালাচ্ছে এবং পোর্ট কাশিমে ডিপি ওয়ার্ল্ড দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে কার্যক্রম চালাচ্ছে। তিনি বাংলাদেশ-পাকিস্তান আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধি, সরাসরি জাহাজ চলাচলসহ পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদারের আশ্বাস দেন।
এসময় অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।
পরিদর্শনকালে পাকিস্তানি প্রতিনিধি দল বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম সরেজমিনে ঘুরে দেখেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তান দূতাবাসের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ দূত জেইন আজিজ, বাণিজ্যিক সহযোগী ওয়াকাস ইয়াসিন, বাংলাদেশের অতিরিক্ত সচিব (ডব্লিউটিও অনুবিভাগ) ড. নাজনিন কাউসার চৌধুরী, বে টার্মিনালের প্রকল্প পরিচালক কমডোর মো. মাহফুজুর রহমানসহ বন্দরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে ব্যবসায় ১০ শতাংশ শেয়ার দিতে সম্মত হয়েছে চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইনটেল। গত শুক্রবার ইন্টেল ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তির ঘোষণা দেন।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি। বাইডেন প্রশাসনের সময় ঘোষিত বিশাল অঙ্কের অনুদানের বিনিময়ে ওয়াশিংটনের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে ট্রাম্প প্রশাসনের চাপের পর এই চুক্তি সম্পন্ন হয়। চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র সরকার ইনটেলের ৪৩৩.৩ মিলিয়ন সাধারণ শেয়ার পাবে, যা কোম্পানির ৯.৯ শতাংশ অংশীদারিত্বের সমান।
ইনটেল জানায়, এ বিনিয়োগের মোট অঙ্ক দাঁড়াবে ৮.৯ বিলিয়ন ডলার। যার মধ্যে ৫.৭ বিলিয়ন ডলার আসবে বাইডেন আমলে পাস হওয়া ‘চিপস অ্যান্ড সায়েন্স অ্যাক্ট’ থেকে ঘোষিত অনুদান থেকে। যা এখনো প্রদান করা হয়নি। বাকি ৩.২ বিলিয়ন ডলার আসবে ‘সিকিউর এনক্লেভ প্রোগ্রামের আওতায় প্রদত্ত পুরস্কার থেকে।
ইনটেল আরও জানায়, এই ৮.৯ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের সঙ্গে কোম্পানি পূর্বে পাওয়া ২.২ বিলিয়ন ডলারের অনুদান যোগ হলে মোট অঙ্ক দাঁড়াবে ১১.১ বিলিয়ন ডলার।
ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন ইন্টেলের ১০ শতাংশের পূর্ণ মালিক ও নিয়ন্ত্রণকারী। তিনি দাবি করেছেন যে ইন্টেলের সিইও লিপ-বু ট্যানের সঙ্গে আলোচনার পর দেশটি এই শেয়ারের জন্য কিছুই পরিশোধ করেনি।
ইন্টেল অবশ্য জানিয়েছে, সরকারের মালিকানা সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় হবে, তাদের কোনো বোর্ড প্রতিনিধি বা শাসন সংক্রান্ত অধিকার থাকবে না।
ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে অংশীদার হিসেবে পাওয়া তাদের জন্যও ভালো। আমি তাদের বলেছিলাম, আমার মনে হয় কোম্পানির ১০ শতাংশ আমাদের দেওয়া উচিত।
বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক এক্সে বলেন, ‘এই ঐতিহাসিক চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের সেমিকন্ডাকটর খাতের নেতৃত্বকে আরও শক্তিশালী করবে।’
ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ: সিলিকন ভ্যালির অন্যতম কোম্পানি ইনটেল এশীয় জায়ান্ট টিএসএমসি ও স্যামসাংয়ের কাছে প্রতিযোগিতায় অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। বাইডেন আমলে পাস হওয়া ‘চিপস অ্যান্ড সায়েন্স অ্যাক্টের লক্ষ্য ছিল মার্কিন সেমিকন্ডাকটর শিল্পকে শক্তিশালী করা, যার আওতায় বিলিয়ন ডলারের অনুদান দেওয়া হয়।
তবে স্বাধীন প্রযুক্তি বিশ্লেষক রব এন্ডারলে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ইন্টেলের শেয়ার নেওয়া এক ধরনের বিপজ্জনক পদক্ষেপ, যা বেসরকারি ব্যবসাকে জাতীয়করণের পথে নিয়ে যেতে পারে।’
ওয়াশিংটনের গবেষণা প্রতিষ্ঠান কেটো ইনস্টিটিউটের স্কট লিনসিকোমও বলেন, এই সিদ্ধান্ত ‘প্রায় সবার জন্য খারাপ’। ইন্টেলের দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্বের জন্যও ক্ষতিকর। কারণ, এখানে বাণিজ্যিক সিদ্ধান্তের চেয়ে রাজনৈতিক প্রভাব বেশি পড়বে।
ইন্টেল সিইও লিপ-বু ট্যান এক বিবৃতিতে বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তি যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি নিশ্চিত করাই আমাদের অঙ্গীকার। কোম্পানিটি জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সাইট সম্প্রসারণে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে।
এর আগে চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্প জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে ট্যানের পদত্যাগ দাবি করেছিলেন।
সম্প্রতি জাপানভিত্তিক সফটব্যাংক গ্রুপও ইন্টেলে ২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।
মন্তব্য