এইচএসসি পরীক্ষার ১১তম দিনে দেশের ৯টি শিক্ষা বোর্ডে সাড়ে তিন হাজারের বেশি পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন।
সোমবার পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
এদিন সকালের পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলেন ৩ হাজার ৭৮৪ জন। বিকেলে অনুপস্থিত ৫ জন।
জীববিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) দ্বিতীয়পত্র এবং উচ্চতর গণিত (তত্ত্বীয়) দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা ছিল সকালে। এতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে অনুপস্থিত ছিলেন ১ হাজার ১৩ জন, চট্টগ্রামে ২৩৫, রাজশাহীতে ৭৫১, বরিশালে ২৩৪, সিলেটে ১৫৪, দিনাজপুরে ৫৩৮, কুমিল্লায় ৩৩৮, ময়মনসিংহে ২০৫ এবং যশোর বোর্ডে ৩১৬ জন।
বিকেলে ছিল গৃহ ব্যবস্থাপনা ও শিশুবর্ধন এবং পারিবারিক সম্পর্ক (তত্ত্বীয়) দ্বিতীয় পত্র, গৃহ ব্যবস্থাপনা ও পারিবারিক জীবন দ্বিতীয়পত্র এবং ইসলাম শিক্ষা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা। এতে রাজশাহী বোর্ডে অনুপস্থিত ছিলেন তিনজন, বরিশালে দুইজন।
প্রতি বছর এপ্রিলে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হলেও এ বছর করোনা মহামারির কারণে পরীক্ষা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নেয়ার ঘোষণা দেয় সরকার।
এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিতে নিবন্ধন করেছেন ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯০ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ২৯ হাজার ৭৩৮ এবং ছাত্রী ৬ লাখ ৬৯ হাজার ৯৫২।
সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করেছেন ১১ লাখ ৩৮ হাজার ১৭ জন। এদের মধ্যে ছাত্র ৫ লাখ ৬৩ হাজার ১১৩ এবং ছাত্রী ৫ লাখ ৭৪ হাজার ৯০৪।
মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিমের জন্য নিবন্ধন করেছেন ১ লাখ ১৩ হাজার ১৪৪ জন। এদের মধ্যে ছাত্র ৬১ হাজার ৭৩৮ এবং ছাত্রী ৫১ হাজার ৪০৬।
এইচএসসি (বিএম/ভোকেশনাল) পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করেছেন ১ লাখ ৪৮ হাজার ৫২৯ জন। এদের মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ৪ হাজার ৮২৭ এবং ছাত্রী ৪৩ হাজার ৬৪২।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। দেড় বছর পর ১২ সেপ্টেম্বর খুলে দেয়া হয় প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের তিনটি গ্রুপের মধ্যে ভিন্ন ঘটনায় ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় চারজন আহত হয়েছেন।
পূর্বরোষের জেরে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সংঘর্ষে জড়ায় শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ সিক্সটি নাইন ও সিএফসি গ্রুপের একাংশের (সহ-সভাপতির অনুসারী) কর্মীরা। অপরদিকে একই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটে নেতার লাইনে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ায় বিজয় ও সিএফসি গ্রুপের আরেকাংশের (সভাপতির অনুসারী) কর্মীরা।
বিবাদমান গ্রুপগুলোর মধ্যে সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীরা সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী এবং সিএফসি ও বিজয় গ্রুপের কর্মীরা শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসাবে ক্যাম্পাসে পরিচিত৷
সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতৃত্ব দেন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু। অন্যদিকে সিএফসির একাংশের নেতৃত্বে রয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল, অন্য অংশের নেতৃত্বে আছেন সহ-সভাপতি সাদাফ খান। বিজয় গ্রুপের নেতৃত্বে দিচ্ছেন শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস।
চবি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষের জের ধরে শুক্রবার দুপুর থেকেই দুই গ্রুপের মধ্য উত্তেজনা বিরাজ করে; সন্ধ্যায় তা সংঘর্ষে রুপ নেয়। এসময় সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীরা শাহজালাল হল ও সিএফসির কর্মীরা শাহ আমানত হলে অবস্থান নিয়ে একে অপরের দিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।
সংঘর্ষের পর ক্যাম্পাসে বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।
জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও সিএফসি গ্রুপের সদস্য মোহাম্মদ শরীফ উদ্দীন বলেন, ‘আগের ঘটনার জের ধরে জুম’আর নামাজের পর সিক্সটি নাইন গ্রুপের আকিব জাবেদ আবারও আমাদের গ্রুপের সিনিয়রদের গালিগালাজ করে। এই ঘটনার রেশ ধরেই সন্ধ্যায় ঝামেলা হয়।’
সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, ‘দুই গ্রুপের মধ্য উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। সমাধানের জন্য আলোচনা চলছে।’
লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে দুই গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ
এদিকে সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটে লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় সিএফসির একাংশ ও বিজয় গ্রুপের কর্মীরা।
ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা জানান, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে অভ্যর্থনা জানাতে রাস্তায় অবস্থান নেয় দুটি গ্রুপের কর্মীরা। এসময় দুই গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারি শুরু হয়।
এ বিষয়ে সিএফসি গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, ‘কোনো ঝামেলা হয়নি। প্রোগ্রাম শেষে জুনিয়রদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হতে পারে, আমার জানা নেই।’
তবে বিজয় গ্রুপের নেতা শখা ও ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
থমথমে ক্যাম্পাস
বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষের পর থেকে ক্যাম্পাস জুড়ে উত্তেজনা ও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। শুক্রবার দুপুরেও সিক্সটি নাইন ও সিএফসি গ্রুপের কর্মীদের পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে শোনা যায়। সন্ধ্যায় চলে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ।
বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারের ভারপ্রাপ্ত প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আবু তৈয়ব বলেন, ‘মারামারিতে আহত চারজন আমাদের এখানে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।’
সার্বিক বিষয়ে সহকারী প্রক্টর নাজেমুল আলম বলেন, ‘উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি৷ দুই পক্ষকে শান্ত করে হলে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির বৈঠক চলছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:দীর্ঘ ৮ বছর পর আগামী ১৬ অক্টোবর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সিনেট শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও সিনেট নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবু হাসান বৃহস্পতিবার তার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচনের সাময়িক ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে ২৪ সেপ্টেম্বর। সাময়িক ভোটার তালিকার ব্যাপারে আপত্তি জমার সময় ২৬ সেপ্টেম্বর। এ ছাড়া চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ ২৭ সেপ্টেম্বর, মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময় ২ অক্টোবর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ৪ অক্টোবর ও বৈধ প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ হবে ৫ অক্টোবর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৮ অক্টোবর ও ৯ অক্টোবর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।
১৬ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-অফিসার ক্লাবে ভোটগ্রহণ হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আবু হাসান বলেন, ‘এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। দীর্ঘদিন নির্বাচন না হলেও এখন নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
‘ভোটগ্রহণে যতটুকু প্রস্তুতি প্রয়োজন, তা নেয়া হবে। নির্বাচনের দিন যথাযথ প্রক্রিয়ায় ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হবে বলে আমরা আশাবাদী।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট ১৯৭৩-এর ১৯(১)(জে) ধারা অনুযায়ী সিনেট সদস্য হিসেবে ৩৩ জন শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন করা হয়ে থাকে। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মেয়াদ তিন বছর হলেও পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচিত সব সদস্য সিনেটর হিসেবে বহাল থাকেন।
২০১৫ সালের অক্টোবরে সর্বশেষ জাবির সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন হয়েছিল।
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই উপগ্রুপের কর্মীরা। সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের অন্তত ছয় জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যালের চিকিৎসক।
বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে এই সংঘর্ষ শুরু হয়।
সংঘর্ষে জড়ানো শাখা ছাত্রলীগের গ্রুপ দুটি হলো সিক্সটি-নাইন ও সিএফসি। প্রক্টরিয়াল টিম ও পুলিশের হস্তক্ষেপে ছয়টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
সিক্সটি নাইন সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দিন এবং সিএফসি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতৃত্ব দেন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু, অন্যদিকে সিএফসির নেতৃত্বে আছেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল ও সহ-সভাপতি সাদাফ খান।
সংর্ষের সময় সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীরা শাহ জালাল হল ও সিএফসির কর্মীরা শাহ আমানত হলে অবস্থান নিয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। এ সময় দুই গ্রুপের কর্মীদের লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া দিতে দেখা যায়।
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিক্সটি নাইন ও সিএফসির দুই কর্মীর মধ্যে বাদানুবাদ ও কথা-কাটাকাটি থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত।
বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. আবু তৈয়ব বলেন, ‘ছয়জন আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। পাঁচজনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পাথরের আঘাতে কয়েকজনের মাথা ফেটে গেছে।
সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, ‘কি নিয়ে ঝামেলা, সেটা খোঁজ খবর নিচ্ছি।’
সিএফসি গ্রুপের একাংশের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদাফ খান বলেন, ‘সিক্সটি নাইনের ছেলেরা উস্কানি দিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করেছে। আকিব জাভেদ নামের ওদের এক কর্মী আমাদের হলের (শাহ আমানত) এসে মাতলামি শুরু করে। এরপর এটা নিয়ে কথা-কাটাকাটি, ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে দুই গ্রুপে সংঘর্ষ শুরু হয়। আমাদের তিন কর্মী আহত হয়েছে।’
সহকারী প্রক্টর নাজেমুল আলম বলেন, ‘দুই পক্ষ এখন শান্ত আছে। সবাইকে হলে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। আহত ৬ জন, তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে।
সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) এক বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ২৭ নভেম্বর থেকে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রে এক সঙ্গে পরীক্ষা হবে। পরীক্ষার হল ও আসনসহ সব বিষয়ে পিএসসির ওয়েবসাইটে জানানো হবে।
এর আগে গত ৬ জুন ৪৫তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এতে মোট ১২ হাজার ৭৮৯ জন উত্তীর্ণ হন।
তার আগে ১৯ মে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ কেন্দ্রে একযোগে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ৩ লাখ ৪৬ হাজার আবেদনকারীর মধ্যে এতে অংশ নেন ২ লাখ ৬৮ হাজার ১১৯ জন।
শিক্ষার্থীদের চাকরিসহ বিনামূল্যে তিন মাসের কোর্স করার সুযোগ দিচ্ছে ররিয়েল স্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ-রিহ্যাব।
প্রতি বছরের মতো এবারও বুধবার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ-কোরিয়া টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে (বিকেটিটিসি) রিহ্যাবের দিনব্যাপী জব ফেয়ার আয়োজন করা হয়। এতে ওই উদ্যোগ নেয়া হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইআইপি)-এর আওতাধীন এসইআইপি-রিহ্যাব প্রকল্প এই জব ফেয়ারের আয়োজন করে।
দেশের বিভিন্ন শিল্প গ্রুপ এই জব ফেয়ারে স্টল নিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে মেলায় আসা শিক্ষার্থীদের দিক নির্দেশনা দেয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে এসইআইপি-রিহ্যাব জবপ্লেসমেন্ট ও প্রকিউরমেন্ট কো-অর্ডিনেটর লোকমান হোসেন প্রকল্পের কার্যক্রমের অগ্রগতি তুলে ধরেন।
ফেয়ারে আসা শিক্ষার্থীরা তাদের সিভি জমা দেয়ার মাধ্যমে তিন মাসের প্রশিক্ষণে অংশ নেয়ার সুযোগ পাবেন। এদের মধ্য থেকে বাছাই করে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণের সুযোগ দেয়া হবে প্রশিক্ষণের।
তিন মাস শেষে সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ প্রশিক্ষণ নেয়া শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে যোগ্য প্রার্থীদের চাকরির সুযোগ দেবে। এই সুযোগকে সাধুবাদ জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, বর্তমান সময়ে চাকরি পাওয়ার সহজ পথ তৈরি হচ্ছে এ ধরনের জব ফেয়ারের মাধ্যমে।
প্রধান অতিথির হিসেবে বক্তব্যে এসইআইপি প্রকল্পের উপ-নির্বাহী প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) ড. সানোয়ার জাহান ভূঁইয়া প্রকল্পের প্রশংসা করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে এর মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থী সহ সবার সাফল্য কামনা করেন। পরে জব ফেয়ার ২০২৩-এর উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি।
আরও পড়ুন:
‘তালেবানি কালচার নিয়ে নিজে খুব গৌরবান্বিত’ বলে মন্তব্য করেছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক অনুষ্ঠানে উপাচার্য বলেন, ‘সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, এখানে (বিশ্ববিদ্যালয়) ওপেন কালচার ছিল। ছেলেমেয়েরা যা খুশি তাই করতে পারত; কেউ কিছু বলতে পারত না, কারণ তাদের বয়স ১৮ বছর। কিন্তু আমি বলেছি- সাড়ে ১০টার মধ্যে হলে ঢুকতে হবে। এ কারণে তারা (শিক্ষার্থী) এটার নাম দিয়েছে তালেবানি কালচার। এটা যদি তালেবানি কালচার হয়, তাহলে আমি এই কালচার নিয়ে খুবই গৌরবান্বিত, এটা নিয়েই আমি থাকতে চাই। আমি ওপেন কালচার চাই না।’
বুধবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটরিয়ামে আয়োজিত তথ্য অধিকারবিষয়ক এক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আলমগীর। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী উপাচার্য মো. কবির হোসেন, কোষাধ্যক্ষ আমিনা পারভীন ও ইউজিসির সচিব ফেরদৌস জামান।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, ‘আপনারা চান কি না, আমি জানি না। আমি চাই না, আমার ছেলেমেয়েরা, সন্তানেরা...ঘুরে বেড়াক। তাদের বাবা-মায়েরা সারা রাত ঘুরে বেড়ানোর জন্য পাঠাননি। বাবা–মায়েরা কিন্তু উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকেন, টেনশনে থাকেন- আমার মেয়ে কোথায় আছে, ছেলে কোথায় আছে। সেজন্য তাদের দায়িত্ব আমরা নিয়েছি। আমরা তাদের গার্ডিয়ান, আমরা তাদের হেফাজতকারী। আমরা কিন্তু ওই জিনিসটা অ্যালাউ করব না, কোনোভাবেই করব না।’
সেমিনারে মূল আলোচকের বক্তব্য দেন ইউজিসির জনসংযোগ ও তথ্য অধিকার বিভাগের উপপরিচালক মো. আবদুল মান্নান। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘দেশকে পরিবর্তন করতে হলে, দেশের টেকসই উন্নয়ন করতে হলে নিজেদের ভূমিকা রাখতে হবে।’
শাবির ভূয়সী প্রশংসা করে ড. আলমগীর বলেন, ‘নিজেদের কীভাবে পরিবর্তন করতে হয়, দেশের জন্য ভূমিকা রাখতে হয়, তা শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় দেখিয়ে দিয়েছে। কারণ গত বছর ইউজিসির মূল্যায়নে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ছিল ৩৬তম, কিন্তু এ বছর তারা ইউজিসির সব লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে দ্বিতীয় অবস্থানে চলে এসেছে। তাই আমি বলব, আমাদের যে রিসোর্স আছে তা কাজে লাগিয়ে দেশের পরিবর্তনে কাজ করতে হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ও গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিটি শিক্ষকের পিএইচডি ফেলোশিপ থাকা প্রয়োজন। শিক্ষার্থীদের গবেষক হিসেবে তৈরি করতে হবে। অনেকে বলবে, আমাদের দেশ থেকে শিক্ষার্থী বিদেশে পিএইচডি করতে চলে যাচ্ছে, আমার কীভাবে তাদের ধরে রাখব? এজন্য পিএইচডি শিক্ষার্থীদের জন্য আমাদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। তাই দেশের সম্পদ কেমন আছে না আছে, সেটার ওপর জোর না দিয়ে নিজেদের কাজ ও দায়িত্বকে সঠিকভাবে পালন করতে হবে, তাহলেই দেশ এগিয়ে যাবে।’
তথ্য মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে আসে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে আমাদের দেশে তথ্য অধিকার আইন পাস হয়। এটি দেশের জন্য অনেক গুরুত্ব বয়ে নিয়ে এসেছে। তথ্য অধিকার বাস্তবায়নের ফলে যেকোনো প্রতিষ্ঠান সুশাসন প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে থাকে। আশা করি, এ বিশ্ববিদ্যালয় তাদের গুণগত কাজের জন্য অনেক দূর এগিয়ে যাবে।’
আরও পড়ুন:শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) শাখা ছাত্রলীগে কমিটি নেই দীর্ঘ ১০ বছর। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রায়ই সংঘাতে জড়াচ্ছে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত নেতাকর্মীরা। তাদের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরাও। বার বার অশান্ত হয়ে উঠছে ক্যাম্পাস।
শাবি ছাত্রলীগে দীর্ঘদিন ধরে কমিটি না থাকায় ক্যাম্পাসে সংগঠনে দেখা দিয়েছে চরম বিশৃঙ্খলা। নেতৃত্বহীনতায় বিভিন্ন গ্রুপ-উপগ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছে সংগঠনটি। ক্যাম্পাসে আধিপত্য ধরে রাখা নিয়ে প্রায়ই দ্বন্দ্ব-সংঘাতে জড়াচ্ছে বিবদমান গ্রুপপগুলোর নেতাকর্মীরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েও ছাত্রলীগকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না।
সবশেষ সোমবার হলের ক্যান্টিন থেকে বের হওয়ার সময় শরীরে ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে শাবি ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এর জের ধরে ক্যাম্পাসে শাহপরান হলে এক নেতার কক্ষ ভাংচুর করা হয়।
এর আগে ৩১ আগস্ট রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে শাবি ছাত্রলীগের দু’পক্ষে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের তিন কর্মী আহত হন। এক ছাত্রীকে নিয়ে দুই ছাত্রের তর্কের জের ধরে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত বলে জানা গেছে।
শাবি ছাত্রলীগে এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও বিশৃঙ্খলায় জড়াচ্ছে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এজন্য দীর্ঘদিন কমিটি না থাকাকে দায়ী করা হচ্ছে।
১০ বছর ধরে কমিটিহীন
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সবশেষ কমিটি হয়েছিল ২০১৩ সালে। ওই বছরের ৮ মে এক বছর মেয়াদি ৭ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠিত হয়। মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ারও দুই বছর পর ২০১৬ সালের ৮ মে ওই কমিটিকে ১৫১ সদস্যে পূর্ণাঙ্গ করা হয়।
২০২১ সালের ১৭ জুন এই কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এরপর থেকে শাবিতে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। কমিটি না থাকায় সংগঠনে অস্থিরতা ও হতাশা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারাও।
দীর্ঘদিন ধরে কমিটি না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে শাবি ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের নেতা সজিবুর রহমান বলেন, ‘সংগঠনের জন্য আমি এতোকিছু করলাম, কিন্তু দেয়ার মতো কোনো পরিচয় নেই। আমাদের তো ছাত্রত্বও শেষ হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার পর রাজনৈতিক কোনো পরিচয়ই থাকবে না। তাছাড়া দলে শৃঙ্খলার জন্যও কমিটি প্রয়োজন।’
কমিটি না থাকায় নেতৃত্ব তৈরি হচ্ছে না জানিয়ে শাবি ছাত্রলীগের আরেক গ্রুপের নেতা মামুন শাহ বলেন, ‘কারও কোনো সাংগঠনিক পরিচয় নেই। এতে অনেকেই সংগঠনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। নতুন নেতৃত্ব না আসার হতাশায় অনেকে ক্যাম্পাসই ছেড়ে দিচ্ছে।’
জানা যায়, সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতৃত্বে থাকার সময়ে শাবি ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়। সে সময় পদপ্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্তও নেয়া হয়। এরপর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কমিটি পরিবর্তন হয়েছে চার দফা। কিন্তু শাবি ছাত্রলীগের কমিটি আর হয়নি।
সাত গ্রুপে বিভক্ত
দীর্ঘদিন কমিটিহীন থাকার কারণে শাবি ছাত্রলীগে দেখা দিয়েছে বিভক্তি। নানা গ্রুপ-উপগ্রুপে বিভক্ত হয়ে আছে নেতাকর্মীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাবি ছাত্রলীগের সাতটি গ্রুপ বর্তমানে ক্যাম্পাসে সক্রিয়। এসব গ্রুপের নেত্বত্বে রয়েছেন- হাফিজ আল আসাদ, খলিলুর রহমান, সজিবুর রহমান, মামুন শাহ, মেহেদী হাসান স্বাধীন, সুমন ও তারেক হালিমী।
এর বাইরে কয়েকটি উপগ্রুপও ক্যাম্পাসে সক্রিয়।
শাবি ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, কমিটি না থাকায় ছাত্রলীগের শীর্ষ পদপ্রত্যাশীরা নিজেদের প্রভাব ধরে রাখতে আলাদা আলাদা গ্রুপ সৃষ্টি করেছেন। পদপ্রত্যাশীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় ক্যাম্পাসে গ্রুপ-উপগ্রুপের সংখ্যাও বাড়ছে।
একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেয়া সজিবুর বলেন, ‘নিয়মিত কমিটি হলে নেতৃত্ব বেরিয়ে আসত। একটা সাংগঠনিক কাঠামো ও শৃঙ্খলা থাকত। কমিটি না থাকায় কর্মী ধরে রাখার জন্যও বিভিন্ন বলয়ের সৃষ্টি হয়েছে।’
ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের ছয়টি গ্রুপ আছে জানিয়ে আরেক গ্রুপের নেতা খলিলুর রহমান বলেন, ‘ছাত্রলীগ অনেক বড় সংগঠন। তাই আলাদা বলয় হতেই পারে। তবে কমিটি না থাকার কারণে গ্রুপিং বেড়েছে। সংগঠনে চেইন অফ কমান্ডও অনেকটাই নেই।’
বাড়ছে বিশৃঙ্খলা
শাবি ছাত্রলীগে দ্রুতই কমিটি আসবে- এমন ধারণা থেকে নতুন কমিটিতে পদ বাগিয়ে নিতে তৎপর বিবদমান গ্রুপগুলো। ক্যাম্পাসে আধিপত্য ধরে রাখতে তারা মরিয়া। আর এই আধিপত্যের দ্বন্দ্বে বাড়ছে বিশৃঙ্খলা, সংঘাত।
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হচ্ছেন- এমন অভিযোগও উঠছে মাঝেমধ্যেই। গত ৬ মাসে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ বিরোধে মারামারি ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের অন্তত ১৬টি ঘটনা ঘটেছে।
প্রশাসনিক পদক্ষেপেও অবস্থার উন্নতি নেই
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিলেও অবস্থার কোনো উন্নতি হচ্ছে না। ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-সংঘাতও কমছে না।
গত ১৬ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ মুজতবা আলী হলের কক্ষ থেকে দুই আবাসিক শিক্ষার্থীকে গালিগালাজ ও মারধর করে বের করে দেন ছাত্রলীগ নেতা আজিজুল ইসলাম সীমান্ত ও তার অনুসারীরা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকায় ৩১ আগস্ট শাহপরান হলের আবাসিক ছাত্র আজিজুল ইসলাম সীমান্তকে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ছাত্রলীগ নেতা রিশাদ ঠাকুর তার কক্ষে ডেকে এনে সংগঠনের কর্মী নূর মোহাম্মদ বায়েজিদকে বেধড়ক মারধর করেন। ১৮ আগস্ট এ ঘটনা ঘটে। ২০ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্ত রিশাদ ঠাকুরকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আজীবনের জন্য অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরান হলে ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সানজিদ চৌধুরী ও ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. দেলোয়ার হোসেনকে মারধর করে বের করে দেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
এ ছাড়া গত সাড়ে ৭ মাসে হলের আসন দখল ও আধিপত্য বজায় রাখা নিয়ে ছাত্রলীগ নিজেদের মধ্যে বেশ কয়েকটি পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটিয়েছে।
এদিকে ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ মুজতবা আলী হলের ১১১ নম্বর কক্ষে ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রথম বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ১০ শিক্ষার্থীকে ডেকে নিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী র্যাগ দিয়েছিলেন। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় ২২ মার্চ ১৬ শিক্ষার্থীকে সব হল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বহিষ্কৃত ওইসব শিক্ষার্থীর মধ্যে পাঁচজন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তারা হলেন- আপন মিয়া, আল আমিন, পাবন মিয়া, রিয়াজ হোসেন ও আশিক হোসেন।
ব্যবস্থা নেয়ার পরও শাবি ছাত্রলীগ বার বার সংঘাতে জড়ানো প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘কোনো অভিযোগ পেলেই আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছি। কে কোন দলের তা আমরা বিবেচনায় নেই না। একইসঙ্গে এটাও বলতে হয়, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের থেকে আমাদের ক্যাম্পাস অনেক শান্ত রয়েছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য