ঢাকা নগর পরিবহন সেবা শুরু হতে যাচ্ছে ২৬ ডিসেম্বর। প্রথমে ৫০টি বাস দিয়ে দেয়া হবে এ সেবা।
কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর থেকে মতিঝিল হয়ে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর পর্যন্ত যাবে এ পরিবহনের বাস।
পরিবহন সেবায় যুক্ত হতে আটটি প্রতিষ্ঠান আবেদন করে। এর মধ্যে বিআরটিসিসহ পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে সুযোগ দেয়া হয়েছে।
নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে রোববার বিকেল ৩টায় বাস রুট র্যাশনালাইজেশন কমিটির ২০তম সভা শুরু হয়।
সভা শেষে বিকেল পৌনে ৫টায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়রদ্বয় সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন।
ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘বাস র্যাশনালাইজেশনের ২০তম সভা সম্পন্ন হয়েছে। আমরা ঢাকাবাসীকে সুখবর দিতে চাই। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বিজয়ের এ মাসে আমরা ঢাকাবাসীকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম শৃঙ্খলাবদ্ধ গণপরিবহন ব্যবস্থার, সেই লক্ষ্যে আমরা দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে করোনা মহামারির মধ্যে কাজ করে চলেছি।
‘সেটার একটা তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। বিজয়ের মাসে উপহার হিসেবে ঢাকাবাসীর জন্য ২৬ ডিসেম্বর সূচনা করতে যাচ্ছি দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ঢাকা নগর পরিবহন সেবা। ঘাটারচর থেকে মতিঝিল হয়ে সাইনবোর্ড, কাঁচপুর পর্যন্ত চলবে এই বাস।’
তিনি বলেন, ‘এই যাত্রাপথ আমরা নমুনা হিসেবে শুরু করব। মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী অসুস্থ থাকায় তিনি সরাসরি না পারলেও ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে বাস রুট র্যাশনালাইজেশনের শুভ উদ্বোধন করবেন। ২৬ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় শুভ উদ্বোধন করা হবে।’
বাস কোম্পানির সংখ্যা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গত সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে আমরা বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলাম। সেই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদন করেছিল আটটি প্রতিষ্ঠান। সেই আটটি প্রতিষ্ঠান থেকে আমরা যাচাই-বাছাই করে প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছি চারটি প্রতিষ্ঠানকে। এ ছাড়া বিআরটিসিসহ মোট পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে।’
বাসের সংখ্যা উল্লেখ করে মেয়র তাপস বলেন, ‘সব মিলিয়ে ১০০টি বাস দিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি। ট্রান্সসিলভার ২০টি বাসের সম্মতি দিয়েছি। আরেকটি প্রতিষ্ঠান মোস্তফা হেলাল কবিরের। তারা ছয়টির জন্য আবেদন করেছিল। তাদের পাঁচটি বাসের সম্মতি দেয়া হয়েছে। জাহান এন্টারপ্রাইজ ১০০ বাসের জন্য আবেদন করেছিল, তাদেরকে ৬০টি বাসের সম্মতি দেয়া হয়েছে। এইচআর এন্টারপ্রাইজ পাঁচটি বাসের জন্য আবেদন করেছিল। তাদের পাঁচটি বাসের সম্মতি দেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ৯০টি বাস। এ ছাড়া বিআরটিসির জন্য ১০টি বাস নির্ধারিত থাকবে। এভাবে ১০০টি বাস নিয়ে যৌথ মূলধনের অংশীদারত্ব চুক্তি হবে।
‘তবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর আমরা ট্রান্সসিলভার ২০টি বাস এবং বিআরটিসির পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩০টি ডাবল ডেকার বাস—এটা দিয়ে সূচনা করব। বাকি কার্যক্রম ৬০ দিবসের মধ্যে পূর্ণভাবে এই যাত্রাপথ বাস্তবায়ন করতে পারব বলে আমরা আশাবাদী। এই যাত্রাপথের সাথে সংশ্লিষ্ট গ্রিন ক্লাস্টার। এই গ্রিন ক্লাস্টারের কার্যক্রম শুরু করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।’
অন্যান্য বাসের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার বিষয়ে মেয়র বলেন, ‘আমরা যাতে তাদের সমন্বয় করতে পারি। আমরা যে পদক্ষেপ নিয়েছি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এক একটি নতুন বিনিয়োগকারী নেব এবং নতুন বাস দিয়ে সেগুলো পর্যায়ক্রমে চালু করব।’
১ হাজার ৬৪৬টি অনুমোদনহীন বাস চিহ্নিত করা হয়েছে জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র বলেন, ‘এই বাসগুলো আর কোনো দিন ঢাকায় চলবে না। ইতিমধ্যে যৌথ অভিযানের মাধ্যমে ২৯টি বাস জব্দ করা হয়েছে। বাকিগুলো যেখানেই পাওয়া যাবে এগুলোকে ধ্বংস করা হবে। এই যাত্রাপথে যাদের রোড পারমিট ছিল তাদেরকে গ্রিন ক্লাস্টারের বাইরে অন্য যাত্রাপথে সমন্বয় করে দেব। আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে এই কাজ সমন্বয় করে দেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘ট্রান্সসিলভার ২০টি নতুন বাস আনা হবে। বিআরটিসির ৩০টি বাস নতুন নয়। এগুলো মেরামত করে আনা হবে। এই যাত্রাপথে উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের যাত্রী ছাউনি, বাস বে নির্মাণ চলছে এবং ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
‘২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ কাজ হবে। এই বাসগুলো নির্ধারিত যাত্রী ছাউনি ও বাসস্ট্যান্ড ছাড়া থামবে না।’
ই-টিকেটিং
নগর পরিবহন সেবায় ই-টিকেটিং থাকবে জানিয়ে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ রুটে যারা থাকবে প্রত্যেকটা বাসের রেজিস্ট্রেশন থাকবে, রুট পারমিট থাকবে এবং ড্রাইভারের লাইসেন্স থাকবে। ড্রাইভারদের সবুজ রঙের পোশাক থাকবে এবং তারা আইডি কার্ড পরিহিত থাকবে। এই সেবা হবে ই-টিকিটিং।
‘অনুমোদনহীন বাস ও রুট পারমিট ছাড়া বাসগুলোকে জব্দ করা হবে। মাতুয়াইলে একটি ডাম্পিং স্টেশন করা হচ্ছে। এই বাসগুলোকে সেখানে নিয়ে ফেলা হবে। আমরা সবার সহযোগিতা চাই।’
বাসমালিকদের অসহযোগিতার কারণে নগর পরিবহন নামাতে দেরি হয়েছে বলে জানান মেয়র আতিক।
তিনি বলেন, ‘আগে যে ভাড়া ২টা ১৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছিল সেটাই থাকবে।’
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের মহেশখালীতে ৫৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মাতারবাড়ি ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ‘প্রকল্প বিলাস বলে উল্লেখ করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
শনিবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার হিলডাউন সার্কিট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
মাতারবাড়ি প্রকল্প থেকে সাধারণ মানুষ খুব বেশি উপকৃত হচ্ছে না মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, মূল প্রকল্পের ধারণা অনুসারে গভীর সমুদ্র বন্দর, শিল্প-কারখানা, রেল ও সড়ক সংযোগ না করেই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের বিলাসী প্রকল্প থেকে সরকার সরে আসবে। ছোট প্রকল্পে মনোযোগী হবে সরকার, যাতে তা মানুষের কাজে আসে।
ফাওজুল কবির খান জানান, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদনের জন্য মাত্র ৩০ দিনের কয়লা মজুদ আছে। খুব শিগগির এ সংকটের সমাধান করা হবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিব মো. নুরুল আলম, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার বণিক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এর আগে শনিবার সকালে ঢাকা থেকে বিমানযোগে কক্সবাজারে পৌঁছান। পরে তিনি মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শনে যান। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিদর্শন শেষে নির্মাণাধীন গভীর সমুদ্রবন্দর ও এসটিএম প্রকল্পসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করেন।
আরও পড়ুন:সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাও হত্যা মামলা অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতিশ্রুতির লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছে সম্পাদক পরিষদ। একইসঙ্গে বলেছে, এই প্রবণতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে।
শনিবার সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এমন মন্তব্য করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ঢালাও অভিযোগের ভিত্তিতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের এখনও অব্যাহত। সম্পাদক পরিষদ দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চায়, এ ধরনের মামলা প্রচলিত আইনের অপব্যবহারের শামিল। একইসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতিশ্রুতিরও লঙ্ঘন। সাংবাদিকরা কোনো অপরাধ করলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে যথাযথ ধারা অনুসরণ করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।
সম্পাদক পরিষদ আরও জোর দিয়ে বলে, পেশাদারত্ব বাদ দিয়ে নীতিবিবর্জিত ও লেজুড়বৃত্তির সাংবাদিকতা বর্জনীয়। যেসব সাংবাদিক বিগত সরকারের নানা নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ডে সাংবাদিকতার নামে সমর্থন দিয়েছেন, প্রেস কাউন্সিলে একটি কমিটি গঠন করে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও অনুসন্ধান হতে পারে।
দোষী সাব্যস্ত হলে প্রেস কাউন্সিল আইনে তাদের সাজা হতে পারে। তাদের অন্যান্য অপরাধের ক্ষেত্রে প্রেস কাউন্সিলের সুপারিশের ভিত্তিতে প্রচলিত আইনে বিচার চলতে পারে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিগত সরকারের সময়ে ডিএসএ বা সিএসএসহ নিবর্তনমূলক বিভিন্ন আইন ও হয়রানিমূলক আটক-গ্রেপ্তারের মাধ্যমে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধের যে প্রয়াস চালানো হয়েছিল, তা বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে অত্যন্ত নিন্দিত ও সমালোচিত হয়েছিল। আর বর্তমানে সাংবাদিকদের নামে এভাবে ক্রমাগত হত্যা মামলা দেয়ার প্রবণতাও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করছে বলে সম্পাদক পরিষদ মনে করে।
যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই করে অভিযুক্ত সাংবাদিকদের কোনো সংশ্লিষ্টতা না পাওয়া গেলে এসব মামলা থেকে দ্রুত তাদের অব্যাহতি দেয়ার আহ্বান জানায় সম্পাদক পরিষদ।
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু তিনদিনের ভারত সফর শেষে আজ শনিবার বিকেলে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন।
কূটনৈতিক সূত্র এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা অনুবিভাগের পরিচালক সামিয়া ইসরাত রনি ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ডোনাল্ড লু’কে স্বাগত জানান।
এর আগে শনিবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের আন্তর্জাতিক অর্থ বিষয়ক সহকারী সচিব ব্রেন্ট নেইম্যান ঢাকায় আসেন।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর এটিই ঢাকায় কোনো যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের প্রথম সফর।
যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলটির এই সফরে দুই দেশের মধ্যে বহুমাত্রিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হবে। তবে আলোচনার ফোকাস হবে আর্থিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আগামীকাল রোববার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
পরে প্রতিনিধি দলটি পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন। ওইদিন বিকেলে প্রতিনিধি দল প্রধান নেইম্যান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
নেইম্যানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দলে লু ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার (ইউএসএআইডি) উপ-সহকারী প্রশাসক অঞ্জলি কর ও যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চ রয়েছেন।
আরও পড়ুন:নির্দলীয় সরকার ছাড়া গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বস্ত্র ও পাট এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেছেন, যত শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করা হোক না কেন নির্দলীয় সরকার ছাড়া গ্রহণযোগ্য ভোট সম্ভব নয়।
শনিবার রাজধানীতে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল আয়োজিত ৱআলোচনা সভায় উপদেষ্টা সাখাওয়াত এসব কথা বলেন।
এই নির্বাচন বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনে বাছাই কমিটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে যত শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করা হোক না কেন, নির্দলীয় সরকার ছাড়া গ্রহণযোগ্য ভোট সম্ভব নয়।’
পুলিশকে দানব বানানো হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘৭.৬২ এমএম রাইফেল সংক্রান্ত বক্তব্য নিয়ে আমার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তদন্ত করবো বলেছি। কিন্তু এ নিয়ে আমাকে উদ্ধৃত করা হয়েছে যে আমি জানি না।
‘পুলিশের হাতে এমন অস্ত্র কারা দিয়েছে সেটা তদন্ত করা দরকার। আমি তদন্ত করতে বলেছি- কেন দেয়া হলো। উৎস জানি না তা বলিনি।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর শুরুতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা এম সাখাওয়াত হোসেন ১২ আগস্ট সিএমএইচ হাসপাতালে আহত আনসার সদস্যদের দেখতে যান। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আহত আনসার সদস্যদের বক্তব্য শুনে আমার কাছে আশ্চর্য লাগছে। পুলিশের ফায়ার (গুলি) কম লাগছে তাদের।
‘সিভিলিয়ান পোশাকে ৭.৬২ এমএম রাইফেলের গুলি লেগেছে। ম্যাসিভ ইনভেস্টিগেশন দরকার। এরা কারা। কাদের হাতে ৭.৬২ এমএম রাইফেল গেল। চিকিৎসকরা দেখালেন ৭.৬২ বুলেট। এটা খুবই উদ্বেগজনক।’
ওই দিন তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ সদস্যদের হাতে ৭.৬২ এমএম রাইফেল আছে সেটা মেনে নিলাম। কিন্তু সিভিল পোশাকে কারা আনসার গেটের মধ্যে গিয়ে গুলি করেছে, এটা খুবই মারাত্মক। তার মানে আমরা সিভিলিয়ানকেও আর্মড করেছি। যে অস্ত্র সিভিলিয়ানের হাতে যাওয়ার কথা নয়, যে অস্ত্র পুলিশ-র্যাবকে অথরাইজড করা হয়েছিল, সেই অস্ত্র কীভাবে বাইরে গেলো। আমি এই ধরনের স্বৈরাচারী ব্যবস্থা দেখিনি।’
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের আন্তর্জাতিক অর্থ বিষয়ক সহকারী সচিব ব্রেন্ট নেইম্যান আজ শনিবার সকালে ঢাকায় পৌঁছেছেন। তিনি ঢাকা-ওয়াশিংটন দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনায় তার দেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (উত্তর আমেরিকা) খন্দকার মাসুদুল আলম ব্রেন্ট নেইম্যানকে স্বাগত জানান।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানানোর জন্য ঢাকা একটি ব্যাপক ও বহুমুখী আলোচনার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু আজই প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যোগ দেবেন। তিনি বর্তমানে নয়াদিল্লি সফর করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলটির প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস, পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও অন্যান্য আনুষ্ঠানিক বৈঠকে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে।
পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন প্রতিনিধি দলের জন্য মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবেন। এতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।
পররাষ্ট্র সচিব সফর প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আলোচনায় শুধু একটি বিষয় নয়, বিস্তৃত বিষয় থাকবে।’
যুক্তরাষ্ট্রর পররাষ্ট্র দফতরের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, আর্থিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন অগ্রাধিকারে অবদান রাখতে পারে তা নিয়ে আলোচনা হবে।
স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, এই সফরকালে সহকারী সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল জুড়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও আর্থিক স্থিতিশীলতা জোরদারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করবেন। ঢাকায় লু অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বৈঠকের জন্য একটি আন্তঃসংস্থা প্রতিনিধি দলে যোগ দেবেন।
প্রতিনিধি দলে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ, ইউএসএআইডি ও দেশটির বাণিজ্য প্রতিনিধি অফিসের প্রতিনিধিরা থাকবেন।
আরও পড়ুন:দেশের বিভিন্ন স্থানে সূফি মাজারগুলোতে হামলার নিন্দা জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। হামলা-ভাঙচুরের পেছনে তাদের শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনারও ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
শনিবার উপদেষ্টার সহকারী একান্ত ব্যক্তিগত সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমাদের নজরে এসেছে যে, গত কয়েকদিন ধরে কিছু দুর্বৃত্ত দেশের সূফি মাজারগুলোতে হামলা চালাচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্থাপনা এবং সূফি মাজার সম্পর্কিত যে কোনো বিদ্বেষমূলক বক্তব্য এবং হামলার তীব্র নিন্দা জানায়।
এসব হামলার সঙ্গে জড়িতদের অতি দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ধর্মীয় উপাসনালয় ও সাংস্কৃতিক স্থাপনাসমূহ রক্ষায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দেশ। ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক সহিষ্ণুতা ও সম্প্রীতিকে বিঘ্নিত করার যেকোনো প্রচেষ্টা সরকার দৃঢ়ভাবে মোকাবেলা করবে।
সৌদি আরবের রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসে শুক্রবার প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ই-পাসপোর্ট সেবার উদ্বোধন করা হয়েছে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স এস এম রকিবুল্লাহ।
এ ছাড়া ঢাকা থেকে ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের কর্মকর্তা ও কারিগরি দল অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
দূতাবাস মিলনায়তনে উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে প্রবাসী প্রভাবশালী ব্যক্তি, পেশাজীবী, গণমাধ্যমকর্মী ও বিপুল প্রবাসী বাংলাদেশির অংশগ্রহণে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
সহকারী প্রকল্প পরিচালক মেজর সুমিরিয়ার সাদেকিন উপস্থিত বাংলাদেশিদের বাংলাদেশ ও বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা দেন।
তিনি বলেন, আবেদনকারীরা আবেদন করতে পারবেন পাঁচ বছর বা ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্টের জন্য। আবেদন পাওয়ার এক মাসের মধ্যে ই-পাসপোর্ট দেয়া সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে ই-পাসপোর্ট নিয়ে প্রবাসীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেয় কারিগরি দল।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য