নানা অনিয়মে ডুবতে বসেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের কোম্পানি ন্যাশনাল টি। কোম্পানিটির সম্পদের পরিমাণ অঢেল হলেও বছর শেষে সেখান থেকে আয় নেই বললেই চলে। ফলে গত দুই বছর ধরে ধারাবাহিক লোকসান গুনছে কোম্পানিটি।
ন্যাশনাল টি কোম্পানির ৫১ শতাংশ মালিকানায় আছে সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অফ বাংলাদেশ, সাধারণ বিমা করপোরেশন ও সরকারি ব্যাংক। বাকি অংশ উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে।
কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকসহ সরকারের কাছে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রায় ৬৬ লাখ শেয়ারের বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৫৭৪ টাকা। কোম্পানিটির আওতায় ১৩টি চা বাগানের মোট ১১ হাজার হেক্টর জমিসহ গাছের প্রকৃত মূল্য প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি।
মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেটে অবস্থিত ন্যাশনাল টি কোম্পানির ১৩টি চা বাগানের মধ্যে সবচেয়ে বড়টির আয়তন ১ হাজার ৮০০ হেক্টর। আর সবচেয়ে ছোটটির আয়তন ৩০৫ হেক্টর। তারপরও ২০২১ সালে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি লোকসান দিয়েছে ৩১ টাকা। আগের বছর লোকসান ছিল ৫৫ টাকা।
কোম্পানিটির প্রথম প্রান্তিকে জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৩ টাকা ৪৫ পয়সা। এই আয় নিয়েও রয়েছে অভিযোগ। বলা হয়েছে, কারসাজি করে আগের লোকসান ঢাকতে এই সময় আয় বেশি দেখানো হয়েছে, যা পরবর্তী সময়ে সমন্বয় করা হবে।
শুধু শেয়ারপ্রতি আয় নয়, কোম্পানিটির একজন পরিচালক, বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কোম্পানি সচিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে নিজেদের মতো করে কোম্পানি পরিচালনা এবং নিজেদের ইচ্ছামতো চা বাগানের গাছ কাটা, হিসাবে গরমিল করাসহ নানা অনিয়মের।
সম্প্রতি এমন অনেক অভিযোগের ফর্দ জমা হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। পাশাপাশি ন্যাশনাল টি কোম্পানিতেও দেয়া হয়েছে অভিযোগপত্র।
অভিযোগে বলা হয়েছে, কোম্পানির পরিচালক সরোয়ার কামাল কোম্পানিকে কুক্ষিগত করতে আগের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির দায়ে অব্যাহতিপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউল আহসানকে পুনরায় নিয়োগ দিয়েছেন, যিনি নিজেও একবার কোম্পানির পরিচালক পদ থেকে অপসারিত হন। কোম্পানির শেয়ার বিভাগে এ কে আজাদ চৌধুরীকে কোম্পানির সচিবের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত তিনজনের নানা অনিয়মের আলাদা হিসাব এসেছে নিউজবাংলার কাছে। এ অবস্থায় সরকারি সম্পত্তি সুরক্ষায় দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
পরিচালক সরোয়ার কামালকে নিয়ে অভিযোগে যা আছে
সরোয়ার কামাল ২০১৭ সালে ন্যাশনাল টি কোম্পানির পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হন। অভিযোগে আছে, তিনি কোরামহীন অবৈধভাবে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভার মাধ্যমে এই পদে আসেন।
তার আগেও তিনি কোম্পানিটির পরিচালক ছিলেন। সে সময় তিনি মেসার্স নিপ্পন লিমিটেডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন। কোম্পানি আইনের ১০৮(১) (জ) ধারা অনুযায়ী, একটি কোম্পানির চেয়ারম্যান পদে থেকে কোনো ব্যক্তি অন্য একটি কোম্পানির পরিচালক হতে পারেন না।
এ অভিযোগে ২০১২ সালে কোম্পানি আইনের ১০৮(চ) ধারায় তাকে অপসারণ করা হয় এবং কোম্পানি আইনের ১০৬(২) ধারা অনুসারে অপসারিত ব্যক্তিকে পরিচালক হিসেবে পুনরায় নিযুক্ত করা যায় না।
সরোয়ার কামাল কোম্পানি থেকে অপসারিত হওয়া ব্যবস্থাপনা পরিচালককে আবারও একই পদে নিয়ে এসেছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের অক্টোবরে বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউল আহসানকে পুনরায় অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছেন সরোয়ার। জিয়াউল আহসান ২০১৬ সালের ১ আগস্ট দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে অপসারিত হন।
অভিযোগে বলা হয়, সরোয়ার কামাল কোম্পানিকে কুক্ষিগত করার অপচেষ্টায় জিয়াউল আহসানের মাধ্যমে বোর্ডকে পাশ কাটিয়ে এমডির মাধ্যমে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, তিনি বিএনপি জামায়াতপন্থি আব্দুল আউয়াল মিন্টুর চাচাতো ভাই। তা ছাড়া তিনি তৎকালীন জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা আবুল হারিছ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউল আহসানকে নিয়ে অভিযোগে যা আছে
ব্যাপক দুর্নীতি ও আনিয়মের অভিযোগে ২০১৬ সালে তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সভাপতিত্বে এক সভায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউল আহসানকে অপসারণ করা হয়।
তিনি এখনও ‘টিভানা বাংলাদেশ লিমিটেডের (রেজিট্রেশন নং- সি-১৩৬০৩০")’ ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন।
কোম্পানি আইনের ১০৯(১) ধারায় বলা হয়েছে যে, কোনো পাবলিক কোম্পানি এবং পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির অধীন কোনো প্রাইভেট কোম্পানি, কোনো ব্যক্তিকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ করবে না, যদি তিনি অন্তত অপর একটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা ম্যানেজার হিসাবে কর্মরত থাকেন।
এ অবস্থায় ন্যাশনাল টি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে জিয়াউল আহসানের নিয়োগ পাওয়ার যোগ্যতা নেই বলেও অভিযোগে বলা হয়েছে।
২০১২ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত কোম্পানির এমডি থাকাকালীন চণ্ডিছড়া চা বাগানে গাছ বিক্রি অনিয়মের অভিযোগ ওঠে জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে। বলা হয়েছে, ১ কোটি ৭০ লাখ টাকার বিক্রয় চুক্তি হলেও নির্দিষ্ট পরিমাণের অনেক বেশি গাছ কর্তন করা হয়েছে। তারপর মাত্র ৭০ লাখ টাকা কোম্পানির তহবিলে জমা দেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হলে পরবর্তী সময়ে বোর্ডকে না জানিয়ে গোপনে ২০১৩ সালে কোম্পানির হিসাবে বাকি ১০০ কোটি টাকা সমন্বয় করেন তিনি।
এই সময়ে চা বাগনের বালি বিক্রিতে সরকারি এবং সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও জিয়াউল আহসান চণ্ডিছড়া, তেলিয়াপাড়া, সাতছড়ি ও জগদীশপুর চা বাগানের বালি বিক্রয় করে বাগানের ক্ষতি সাধন করেন। পরবর্তী সময়ে তাকে অপসারণের পর ওই বালি বিক্রয় চুক্তি বাতিল করা হয়।
আহসান এমডি হিসেবে পুনরায় নিয়োগ পাওয়ার পর কোম্পানির এনআরসি অনুমোদন ছাড়াই বাগানের তিন কর্মকর্তাকে প্রধান কার্যালয়ে ওএসডি হিসেবে বদলি করেন এবং বাগানের তিন সহকারী ব্যবস্থাপকের ওপর বাগান ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব অর্পণ করেন। এটি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের করপোরেট গভর্ন্যান্স গাইডলাইনের পরিপন্থি বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০২১ সালে বোর্ডের অনুমোদন ছাড়াই জিয়াউল আহসান বাগানের জন্য ৩০০ টন ডোলামাইট পাউডার সরবরাহকারীর সঙ্গে যোগসাজশে ক্রয় করেন। সরবরাহকৃত ডোলামাইট পাউডারের গুণগত মান খুবই খারাপ ছিল বলে তিনি বাগান কর্মকর্তাদের দ্রুত তা প্রয়োগের নির্দেশ দেন। নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, উক্ত পাউডারের গুণগত মান কার্যাদেশে উল্লিখিত গুনগত মানের ৫০ শতাংশের কম ছিল।
এ পাউডার ক্রয়ের দুই দিনে প্রতিটি ৯ লাখ টাকা করে তিনটি কার্যাদেশে মোট ২৭ লাখ টাকার কার্যাদেশ প্রদান করেন, যদিও তিনি বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া ৫ লাখ টাকার বেশি কার্যাদেশ দিতে পারেন না।
কোম্পানি সচিব এ কে আজাদ চৌধুরীকে নিয়ে অভিযোগে যা আছে
অভিযোগে বলা হয়েছে, কোম্পানির বর্তমান সচিব এ কে আজাদ চৌধুরীর দুর্নীতির কারণে একসময়ে লাভজনক ন্যাশনাল টি কোম্পানি লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছে।
কোম্পানি সচিব হিসেবে তার দায়িত্ব বোর্ডে এবং বোর্ডের বিভিন্ন কমিটির সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে লিপিবদ্ধ করা। কিন্তু তিনি ইচ্ছাকৃত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে কার্যবিবরণী লিপিবদ্ধ করে থাকেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ২৩ মে ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত একটি নির্বাহী কমিটিতে ঢেউ টিন এবং টুলি ক্রয় কমিটি অনুমোদন ও সুপারিশ করা সত্ত্বেও তিনি পরিচালক সরোয়ার কামাল ও শাকিল রিজভীর পারস্পরিক যোগসাজশে ভিন্ন বক্তব্য লিপিবদ্ধ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন।
বার্ষিক সাধারণ সভায় কোম্পানির এক শ্রেণির অসাধু শেয়ারহোল্ডারের সঙ্গে জোট বেঁধে প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা লুটপাট করে আসছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে এ বাবদ কোম্পানির ২৭ লাখ টাকারও বেশি আত্মসাৎ করা হয়। বিষয়টি অডিট পর্যবেক্ষণে আসার পর তিনি ফেরত দিয়েছেন, যা অডিটরের পর্যবেক্ষণেও উল্লেখ আছে।
কোম্পানি সচিব ডিজিএম পদমর্যাদার হওয়া সত্ত্বেও তিনি নিয়মিত কোম্পানির দুটি গাড়ি ও ড্রাইভার ব্যবহার করছেন। কিন্তু কোম্পানির বিধি মোতাবেক সার্বক্ষণিক গাড়ি ব্যবহারের অধিকারী কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জিএম। কোম্পানি সচিবের এই গাড়ি বিলাসিতার জন্য ড্রাইভারদের টিএ/ডিএসহ সব খরচ কোম্পানি বহন করছে।
ন্যাশনাল টি কোম্পানিতে হারিছ চৌধুরী যখন চেয়ারম্যান ছিলেন তখন আজাদ চৌধুরী হারিছ চৌধুরীকে নামে-বেনামে কোম্পানির প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার শেয়ার ক্রয় করে দেয়। পরে বিপুল পরিমাণ শেয়ার তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।
এসব অভিযোগ নিয়ে ন্যাশনাল টি কোম্পানির সচিব ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কারও কাছ থেকে এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অভিযোগের বিষয়টি বিস্তারিত বলার পর কোম্পানি সচিব এ কে আজাদ চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কোনো বক্তব্য দিতে পারব না। কথা বলার জন্য আমাদের এমডি সাহেব আছেন। তার সঙ্গে যোগাযোগ করুন।’
কোম্পানির বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউল আহসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি এখন ভিজিটে আছি।’
কী বিষয় জানতে চাইলে বিস্তারিত বলার পর তিনি আবারও ‘আমি ভিজিটে আছি’ বলে কল কেটে দেন। পরবর্তী সময়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
বিএসইসির বক্তব্য
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে এ মুহূর্তে কিছু বলা যাচ্ছে না। চিঠি এলেও এর জন্য আলাদা বিভাগ আছে। সেখানে এসেছে কি না সেটি আমার জানা নেই।’
তিনি বলেন, ‘এ ধরনের চিঠি এসে থাকলে সেটি যাচাই-বাছাই করেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ৪ পয়েন্ট।
দিনের শুরুতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৮৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১২৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে ১৩০ কোটি টাকার ওপরে শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
প্রথম ঘণ্টায় লেনদেনে অংশ নেয়া ৭৯ কোম্পানির মধ্যে ৪৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রামে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
মন্তব্য