মহান বিজয় দিবসে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে এসে মোবাইল ফোন হারিয়েছেন অনেকে। তাদের মধ্যে সরকারি কর্মকর্তাও আছেন।
মূলত বিএনপির নেতা-কর্মীদের আগমন ঘিরে হট্টগোলের সময় ফোন চুরি যাওয়ার ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
জাতীয় স্মৃতিসৌধের শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, বিজয় দিবসে লাখ লাখ মানুষের সমাগম হওয়ায় এ ধরনের অপরাধীদের তাৎক্ষণিক শনাক্ত করা সম্ভব হয়। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সিসিটিভি ক্যামেরা দেখে অপরাধীদের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
বুধবার ভোরে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবদনের পর সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় সৌধ এলাকা। এরপরই রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের ঢল নামে সৌধ প্রাঙ্গণে।
সকাল পৌনে ১০টার দিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুলের আগমনের সময় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। হট্টগোল ও মারামারির ঘটনাও ঘটে ওই সময়ে। এক ব্যক্তিকে মোবাইল চুরির অভিযোগে কয়েকজনকে মারধর করতে দেখা যায়।
এ সময় ভিড়ের মধ্যে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার মোজাফফর হোসাইন জয় ও রাশেদ বাপ্পীর মোবাইলফোন পকেট থেকে চুরি যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এর পরপরই ঢাকা পোস্টের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আলকামা আজাদের ফোন চুরি যাওয়ার খবর মেলে।
কিছুক্ষণ পর গণপূর্ত বিভাগ মিরপুর শাখার উপসহকারী প্রকৌশলী আজহারুল ইসলাম ফোন চুরি যাওয়ার কথা জানান সংবাদকর্মীদের। সাধারণ মানুষদের অনেকেই তাদের মূল্যবান জিনিস খোয়া যাওয়ার অভিযোগ তুলে ক্ষোভ জানান।
সাংবাদিক মোজাফফর হোসাইন জয় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মহান বিজয় দিবসের শ্রদ্ধা নিবেদনের অনুষ্ঠান কাভারেজ করতে গিয়েছিলাম। এ সময় হঠাৎ হট্টগোলের মাঝে পড়ে যাই আমরা। পরে পকেট থেকে আমার ফোন ও তিন হাজার টাকা কে বা কারা বের করে নেয়।
‘একই সময় আমার সহকর্মী রাশেদেরও মোবাইলটি তার পকেট থেকে চুরি হয়ে যায়। স্মৃতিসৌধের মতো স্থানে মোবাইল ও মূল্যবান জিনিস চুরি হয়ে যাওয়ার ঘটনা সত্যি দুঃখজনক। স্মৃতিসৌধের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ ও সৌধ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। তাদের কাছে অভিযোগ দিলেও গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখেনি।’
নিউজ টোয়েন্টিফোরের সাংবাদিক নাজমুল হুদা বলেন, ‘আজ মোবাইলসহ নানা মূল্যবান জিনিসপত্র হারানোর অন্তত ২০টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। স্মৃতিসৌধে হকার প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলে তা মানা হয়নি। যারা স্মৃতিসৌধের দায়িত্বে আছেন, তাদের এ বিষয়ে আরও সজাগ হওয়া প্রযোজন।’
গণপূর্ত বিভাগের মিরপুর শাখার উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিজয় দিবসে শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে যাচ্ছিলাম।
‘এ সময় অনেক ভিড় ছিল। হঠাৎ পকেটে হাত দিয়ে দেখি আমার ফোন নেই। স্মৃতিসৌধ এলাকায় এমন ঘটনা কোনো ভাবেই কাম্য নয়। নিরাপত্তায় নিয়োজিত কিছু পুলিশ চোখে পড়লেও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন।’
গণপূর্ত বিভাগের সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিজয় দিবসের মূল আনুষ্ঠানিকতা ঘিরে গত দুই দিন ধরেই আমরা রাত-দিন জেগে কাজ করছি। কিন্তু বৃহস্পতিবার সৌধ এলাকায় লাখ লাখ মানুষের সমাগম হয়েছে। এর মাঝে অপরাধী কারা তা শনাক্ত করা সম্ভব নয়। তবে যদি স্পেসিফিক (সুনির্দিষ্ট) অভিযোগ পাই তাহলে সিসিটিভি দেখে আমরা পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেব।’
আরও পড়ুন:কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় মাইক্রোবাসে ট্রাকের ধাক্কায় দুইজন নিহত হয়েছেন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি উপজেলার শহীদনগর এম এ জলিল হাইস্কুলের দক্ষিণ পাশে রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিদের নাম, পরিচয় পাওয়া যায়নি।
দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ‘চট্টগ্রামমুখী মাইক্রোবাসকে একটি ট্রাক পেছন থেকে ধাক্কা দিলে দুটো বাহন সড়কের পাশে উল্টে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও অন্তত ৩ জন আহত হয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘উদ্ধার কাজ চলছে। নিহতদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত করতে পারিনি। কিছুক্ষণ পর বিস্তারিত জানাতে পারব।’
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনিয়ম ও পেশিশক্তির ব্যবহার অত্যন্ত কঠোরভাবে দমন করা হবে জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, কোনো কর্মী অসদাচরণ করলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন প্রার্থী।
বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে শনিবার রাতে সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনিয়ম, মাস্তানি, পেশিশক্তির ব্যবহার আমরা অত্যন্ত কঠোরভাবে দমন করব। কোনো প্রার্থীর কর্মী যদি অসদাচারণ করেন, তাহলে সেই প্রার্থী কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাবেন।
‘যদি কেউ নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করেন কিংবা নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে যদি কেউ অপকর্মে লিপ্ত হন, তিনি যদি চিহ্নিত হন, তাহলে তার বিরুদ্ধে এবং যার পক্ষে সেটা করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধেও নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নেবে আইনগতভাবে।’
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম নিয়ে এক মেয়র পদপ্রার্থীর প্রশ্নের উত্তরে সিইসি বলেন, ‘এখন ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন করার কোনো অবকাশ নেই। কারণ আমরা তফসিল ঘোষণা করেছি। তফসিল ঘোষণার সময় আপনারা যদি ইভিএমে নির্বাচন করবেন না, এই বলে নির্বাচন বর্জন করতেন, তাহলে একটি কথা ছিল, কিন্তু নির্বাচন আর কয়েক দিন পরে।
‘এখন যদি আপনারা বলেন, তাহলেও ইভিএম বাদ দিয়ে ব্যালট সংযুক্ত করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। যদি আপনারা মনে করেন আমরা খুব অসাধু দুর্নীতিপরায়ণ, ইভিএম দিয়ে আমরা কারচুপি করব, তাহলে মনে হয় কথাটা ঠিক না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ইভিএম সম্পূর্ণ আইসোলেটেড। এটা পৃথিবীর আর কোথাও হয়নি যে, আপনাকে আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে ব্যালট ওপেন করতে হবে। আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্ট যদি ম্যাচ না করে, তাহলে ডিজিটাল ব্যালট ওপেন হবে না। আর ম্যাচ করলে অটোমেটিক্যালি আপনার ডিজিটাল ব্যালটটি ওপেন হয়ে যাবে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমাদের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে, কিন্তু আমাদের সদিচ্ছা, আন্তরিকতা নিয়ে আপনাদের মধ্যে কোনো দ্বিধা-দ্বন্দ্ব থাকা উচিত নয়।’
আরও পড়ুন:সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল নিজেকে ‘স্বশিক্ষিত’ বলে জানিয়েছেন মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেয়া হলফনামায়। প্রার্থীদের মধ্যে সম্পদে এগিয়ে থাকা বাবুলের নামে জিডিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলাও রয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান স্নাতক পাস। যুক্তরাজ্যপ্রবাসী এ ব্যবসায়ী নিজের বার্ষিক আয় ২ লাখ ৯৫ হাজার ৮৪ টাকা বলে উল্লেখ করেছেন হলফনামায়।
সিসিক নির্বাচনে মেয়র পদে ১১ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। তাদের মধ্যে যাছাই-বাছাইকালে ৫ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আর ছয় প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।
মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়া প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল, ইসলামী আন্দোলনের হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান, জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু ও মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন।
এবারের সিটি নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি। তাই দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে প্রার্থী হননি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
আরিফ প্রার্থী না হওয়ায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার সঙ্গে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসানের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে বলেও মনে করছেন স্থানীয়রা।
এ তিন প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্পদশালী জাতীয় পার্টির প্রার্থী শিল্পপতি মো. নজরুল ইসলাম বাবুল। হলফনামায় দেয়া তথ্য অনুযায়ী, তার বার্ষিক আয় ৬৭ লাখ ৪৯ হাজার ৫৬৯ টাকা। আর শিক্ষাগত যোগ্যতায় এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসান। আনোয়ারুজ্জামান বিএ (সম্মান) এবং মাহমুদুল হাসান এলএলবি পাস।
নির্বাচন কমিশনে (ইসি) মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় প্রার্থীরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তাদের হলফনামায় সম্পদের হিসাব দিয়েছেন। এতে তারা ব্যক্তিগত তথ্যের পাশাপাশি তাদের আয়, আয়ের উৎস, স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, শিক্ষাগত যোগ্যতা, মামলা, দেনাসহ বেশ কিছু তথ্য দিয়েছেন।
হলফনামায় প্রার্থীদের ব্যক্তিগত সমস্ত তথ্য প্রদানকে ইতিবাচক উল্লেখ করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এর ফলে প্রার্থীদের সম্পর্কে ভোটাররা একটি স্পষ্ট ধারণা পেতে পারেন, তবে প্রার্থীরা হলফনামায় সঠিক তথ্য দিয়েছেন কি না, সেগুলোও যাচাই-বাছাই করা উচিত। কারণ সিলেটে অনেক প্রবাসীও প্রার্থী হন। প্রবাসেও তাদের অনেক সম্পদ থাকে। সেসব তথ্যও হলফনামায় আসা উচিত।’
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী
হলফনামায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী নিজের পেশা ব্যবসা উল্লেখ করে বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ২ লাখ ৯৫ হাজার ৮৪ টাকা। এ ছাড়া আনোয়ারুজ্জামানের অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদই আছে ৪১ লাখ ৮৪ হাজার ৮৪৮ টাকা। এর বাইরে অস্থাবর সম্পদের মধ্যে দুটি টিভি, একটি রেফ্রিজারেটর, দুটি এয়ার কন্ডিশনার (এসি) এবং দুই সেট সোফা, চারটি খাট, একটি টেবিল, ১০টি চেয়ার ও দুটি আলমারি আছে। তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে ৪৭ ভরি স্বর্ণালংকার।
আনোয়ারুজ্জামানের স্থাবর সম্পদের মধ্যে তিন বিঘা কৃষি জমি, ২৩ শতক অকৃষি জমি, একটি দালান ও একটি বাড়ি বা ফ্ল্যাট আছে, তবে তার কোনো দায় বা দেনা নেই। তার নামে কোনো ফৌজদারি মামলাও নেই।
নজরুল ইসলাম বাবুল
জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম বাবুলও পেশায় ব্যবসায়ী। তিনি ফিজা অ্যান্ড কোং লিমিডেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মেসার্স ফিজা এক্সিমের ব্যবস্থাপনা অংশীদার, পাথর আমদানিকারক ও ‘দৈনিক একাত্তরের কথা’র প্রকাশক। বাবুলের বার্ষিক আয় ৬৭ লাখ ৪৯ হাজার ৫৬৯ টাকা।
বাবুলের ২ কোটি ৩৪ লাখ ৫১ হাজার ৯৬৩ টাকার অস্থাবর সম্পদ আছে। পাশাপাশি অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তার একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি, একটি টয়োটা প্রাডো, চারটি কার্গো ভ্যান, আটটি কাভার্ড ভ্যান ও একটি মোটরসাইকেল আছে। এ ছাড়া তার স্ত্রীর নামে ২১ লাখ ১২ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ আছে।
নজরুলের স্থাবর সম্পদের মধ্যে ১৩৫ দশমিক ৭৮ শতক অকৃষি জমি, একটি ফ্ল্যাট এবং চারটি পাকা ও টিনশেড বাড়ি আছে। এ ছাড়া তার ব্যাংক ঋণ আছে পাঁচ কোটি ২৯ লাখ ৪৩ হাজার ৯৯৭ টাকা।
বাবুলের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা তদন্তাধীন। এ ছাড়া অতীতে তার নামে তিনটি মামলা হলেও সেগুলো থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন।
মাহমুদুল হাসান
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসানও পেশায় ব্যবসায়ী। তার বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। অতীতে তার নামে একটা মামলা হলেও বেকসুর খালাস পেয়েছেন। কোনো দায় বা দেনা না থাকা মাহমুদুল হাসানের ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ আছে।
তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে ২০ ভরি স্বর্ণালংকার। স্থাবর সম্পদের মধ্যে মাহমুদুলের যৌথ মালিকানায় বাণিজ্যিক দোকান ও বাড়ি আছে। এসব সম্পদের ৬ ভাগের ১ অংশ তার।
আরও পড়ুন:বজ্রপাতে একদিনেই দেশের চার জেলায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে মুন্সিগঞ্জে পৃথক বজ্রপাতের ঘটনায় ২ জন প্রাণ হারান। এছাড়া সিরাজগঞ্জ, বাগেরহাট ও ময়মনসিংহে একজন করে নিহত হয়েছেন।
শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে এ ঘটনাগুলো ঘটে। এ সময় আরও একজন আহত হয়েছেন।
সিরাজগঞ্জে ধান কাটতে গিয়ে প্রাণ গেল শ্রমিকের
ধান কাটতে গিয়ে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় বজ্রপাতে সুলতান প্রামানিক নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের চর আঙ্গারু গ্রামে শনিবার সকাল ১০ টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
৬০ বছর বয়সী সুলতান ওই গ্রামের মৃত ফয়জাল প্রামানিকের ছেলে।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কায়েমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউল আলম ঝুনু।
তিনি বলেন, ‘ধান কাটার সময় হঠাৎ ঝড় শুরু হলে শ্রমিকেরা মাঠ থেকে দৌড়ে পাশে আশ্রয় নিলেও বৃদ্ধ সুলতান প্রামানিক আস্তে আস্তে হেঁটে আসছিলেন। এসময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি।’
এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম মৃধা বলেন, ‘ধান কাটতে গিয়ে ও শ্রমিকের বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।’
মুন্সিগঞ্জে বজ্রপাতে নিহত ২
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় বজ্রপাতে দুইজন নিহত হয়েছেন।
শনিবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলার কুসুমপুর এলাকার লেবুতলায় এ দূর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কনকশার গ্রামের শাহজাহানের ছেলে মোহাম্মদ কাউসার ও উপেন সর্দারের ছেলে জুম্মন সর্দার।
প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় চড়ে ওই দুই ব্যক্তি কুসুমপুর লেবুতলা গ্রামের সড়কে এসে অটো থেকে নামেন। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে তারা নিহত হন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মিজানুল হক বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।’
মোংলায় বালু শ্রমিক নিহত
বাগেরহাটের মোংলায় ড্রেজারে কাজ করার সময় বজ্রপাতে এনামুল শেখ নামে এক বালু শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ সময় মিলন শেখ নামে আরও এক শ্রমিক আহত হয়েছেন।
শনিবার দুপুরে উপজেলার বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নের বালুর মাঠ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বুড়িরডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান উদয় শংকর বিশ্বাস নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
৩৫ বছর বয়সী এনামুল শেখ রামপাল উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের কালেখার বেড় গ্রামের ফজিলত শেখের ছেলে। আহত ২২ বছরের মিলন শেখ মোংলা উপজেলার গোয়ালের মাঠ এলাকার রেজাউল শেখের ছেলে।
মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মাদ সামসুদ্দীন বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
ময়মনসিংহে বজ্রপাতে প্রাণ গেল শিক্ষার্থীর
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে বজ্রপাতে নয়ন মিয়া নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার বিকেলে উপজেলার জুগলী ইউনিয়নের রান্ধুনীকুড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
১৩ বছর বয়সী নয়ন মিয়া রান্ধুনীকুড়ার রাসেল মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় জুগলী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হালুয়াঘাট থানার (ওসি) সুমন চন্দ্র রায়।
তিনি বলেন, ‘মেঘলা আকাশের নিচে বিকেলে নয়ন বাড়ির পাশের ফসলি জমিতে বক শিকার করার জন্য একপর্যায়ে আকস্মিক বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার।’
এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলেও জানান ওসি সুমন চন্দ্র রায়।
আরও পড়ুন:ভোটে জিতে কাউন্সিলর হওয়ার একদিন পর ভোটারদের শুভেচ্ছা জানাতে বের হয়ে হেরে যাওয়া প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে গাজীপুরের টঙ্গীর এক কাউন্সিলরের সমর্থকরা। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন সমর্থক আহত হয়েছেন।
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের বড় দেওড়া পুরোনো মসজিদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে টঙ্গীর পশ্চিম থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের উদ্ধার করে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তা (ওসি) শাহ আলম।
ভোটে পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী সেলিম হোসেনের আহত সমর্থকরা হলেন ৩৩ বছর বয়সী আলমাস, ১৯ বছরের শাহজালাল মোল্লা, ২৬ বছর বয়সী আজাহার, ৩২ বছর বয়সী হেলাল উদ্দিন, ২৫ বছর বয়সী সাইফুল ইসলাম সাগর, ২৪ বছরের নিয়ামত, ২১ বছরের তানভীর ও ৩১ বছর বয়সী মর্জিনা আক্তার।
বিজয়ী কাউন্সিলর সোলেমান হায়দারের আহত সমর্থকরা হলেন ৩২ বছর বয়সী রাজিব হায়দার সাদিম, ৩৫ বছর বয়সী আজিম হায়দার আদিম, ৩০ বছর বয়সী ঝলক হায়দার, ২৮ বছরের বিজয় হায়দার ও আরিফ মণ্ডল।
আহতদের স্বজন ও স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডে ঠেলাগাড়ি প্রতীকে সেলিম হোসেন ও লাটিম প্রতীকে সোলেমান হায়দার কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে সেলিম হোসেনকে পরাজিত করে সোলেমান হায়দার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।
নির্বাচনে জয়ের পর শুক্রবার সন্ধ্যায় ভোটার ও সমর্থকদের ফুল দিয়ে বরণ করে নিতে বের হন কাউন্সিলর সোলেমান হায়দার। এ সময় বড় দেওড়া আদর্শপাড়া এলাকায় পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী সেলিম হোসেনের সমর্থক আলমাসের সঙ্গে সোলেমান হায়দারের সমর্থকদের ঝগড়া হয়। পরে তা সংঘাতে রূপ নেয়।
এক পর্যায়ে সেলিম হোসেনের ভাই মামুন ও তাদের সমর্থক হারুন, অনিক ও মানিকসহ বেশ কয়েকজন দেশি অস্ত্র নিয়ে ওই এলাকার পুরোনো মসজিদের সামনে সোলেমান হায়দারের সমর্থকদের ওপর পাল্টা হামলা চালান। এ সময় সাদিম, আদিম, ঝলক, বিজয় ও আরিফ আহত হন।
এ নিয়ে জানতে চাইলে পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী সেলিম হোসেন বলেন, ‘আমার লোকেদের মারধর করে আহত করা হয়েছে। আমি এ নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করব।’
এ বিষয়ে কাউন্সিলর সোলেমান হায়দার বলেন, ‘ভোটে হেরে সেলিমের লোকজন এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। এ বিষয়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলেছি। আহতরা সুস্থ হয়ে ফিরলেই সালিশের মাধ্যমে এর সমাধান করা হবে।’
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফের জমির হোসেন রুবেল তিনটি বিয়ে করেও সংসার টেকাতে পারেননি। চতুর্থ বিয়ের জন্য উদগ্রীব রুবেল সন্ধান পান এক রোহিঙ্গা নারীর। তাকে দেখতে দুই বন্ধুকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন।
কিন্তু রোহিঙ্গা নারীকে স্ত্রী হিসেবে পাওয়ার শখ পূরণ হয়নি রুবেলের। তিন বন্ধু ২৫ দিন নিখোঁজের পর বুধবার রাতে টেকনাফের দমদমিয়া এলাকার পাহাড় থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাদের অপহরণ করা হয়েছে বলে দাবি পরিবারের।
এদিকে ভুক্তভোগীদের উদ্ধারে পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওই রোহিঙ্গা নারীর নাম কোহিনুর আক্তার, মামলা সুরাহা করতে যাকে খুঁজছে পুলিশ। এ ছাড়া মিনা নামে আরেক রোহিঙ্গা নারীর নামও বলছেন পরিবারের সদস্যরা।
২৮ এপ্রিল নিখোঁজ হন তিন বন্ধু জমির হোসেন রুবেল, শেখ ইমরান সরকার ও মোহাম্মদ ইউছুপ। পরদিন রুবেলের মোবাইল ফোন নম্বর থেকে কল করে পরিবারের কাছে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবিসহ অপহৃতদের ওপর নিযার্তনের ভিডিও পাঠানো হয়।
ইউসুফের ভাই মো. ইউনুছ জানান, তার ভাই গত ২৮ এপ্রিল বিকেল ৪টার দিকে বাড়ি থেকে বের হন। এর তিন দিন পর একটি নম্বর থেকে একের পর এক কল করে ৫০ হাজার টাকা পাঠাতে করা হয়।
সর্বশেষ গত ১৫ মে পাঁচ লাখ টাকা পাঠাতে বলে তার ভাই জানান, ‘টাকা না দিলে আমাকে মেরে ফেলবে অপহরণকারীরা।’ এরপর আর কোনো যোগাযোগ হয়নি।
রুবেলের ভাগনি রূপা আক্তার অভিযোগ করেন, ‘রুবেল মামা এর আগে তিনটি বিয়ে করেন, তবে সব বিয়ে ভেঙে যায়। তাই বিয়ের জন্য তিনি নতুন পাত্রী খুঁজছিলেন। এর মধ্যে মামা কোহিনুর নামে এক রোহিঙ্গা নারীর ফাঁদে পড়েন। ওই নারীই কৌশলে মামা ও তার বন্ধুদের টেকনাফ নিয়ে অপহরণকারীদের হাতে তুলে দেন।’
পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ
এদিকে ইমরানের বাবা মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ‘২৮ এপ্রিল থেকে ইমরানের খোঁজ নেই। সন্ধান চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলে আমাদের গুরুত্ব দেয়নি দুই থানার ওসি ও অফিসাররা। আমার ছেলেসহ তিনজনকে অপহরণের পর পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অপহরণকারীরা নির্যাতন করছে, এমন ফুটেজ দেখিয়ে জিডি করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছি। রহস্যজনক আচরণ করছে কক্সবাজার সদর থানা ও টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ। ওই দুই থানায় ঘুরতে ঘুরতে আমাদের পাঁচদিন সময় চলে গেছে। অভিযোগ এবং এর সপক্ষে কোনো প্রমাণকেই পাত্তা দিল না থানা। যদি তারা দ্রুত জিডি নিয়ে অভিযান চালাত ছেলেকে ফিরিয়ে পেতাম। এদের গাফিলতির কারণে এ অবস্থা।’
কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তিন বন্ধুর স্বজনরা মামলা ও জিডি করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তিনজন তো এখান থেকে নিখোঁজ হননি। তারা যেখান থেকে নিখোঁজ হয়েছেন, সেখানের থানায় মামলা করতে বলেছি। সর্বশেষ আমার থানায় জিডি এন্ট্রি করেছি। আমার থানায় তাদেরকে কোন হয়রানি করা হয়নি।’
নিহত ইমরানের মা হামিদা বেগম বলেন, ‘গত ২৯ এপ্রিল অপহরণকারীরা ইমরানের মোবাইল ফোন নম্বর থেকে কল করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আমরা ধার করে ইমরান ও রুবেলের নম্বরে বিকাশের মাধ্যমে এক লাখ এক হাজার টাকা দেই। বাকি টাকা দিতে না পারায় তাদের খুন করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘টেকনাফ থানায় আমার স্বামী ইব্রাহিম অন্তত সাতবার গিয়েছেন। কোনোবারই পুলিশ জিডি বা মামলা নেয়নি। কক্সবাজার সদর থানা কর্তৃপক্ষও জিডি বা মামলা রেকর্ড করেনি। এটাই কষ্ট আমাদের।’
অভিযোগ অস্বীকার করে টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হালিম বলেন, ‘তাদের সঙ্গে আমার একবার দেখা হয়। তারা সদর থানায় জিডি করায় আমরা জিডি না নিয়ে স্বজনদের অভিযোগের পরপরই অপহৃত তিনজনকে উদ্ধারে কাজ শুরু করি। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পরপরই স্বজনদের অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়।’
আরও পড়ুন:কাদিয়ানিদের ‘ঈমানবিধ্বংসী অপতৎপরতা’ বন্ধ ও রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে সিলেটে সমাবেশ করেছে উলামা পরিষদ বাংলাদেশ। এতে ধর্মীয় নেতাদের দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবং সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
শনিবার দুপুরে সিলেট শহরের রেজিস্ট্রারি মাঠে ‘বিভাগীয় খমতে নবুয়ত মহাসমাবেশ’ নামে ওই কর্মসূচিতে লক্ষাধিক মানুষ অংশ নেয়।
সমাবেশে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘হযরত মোহাম্মদ (স.) ইসলামের শেষ নবী। এর পর যারা নিজেদের নবী দাবি করে তারা ইসলামের শত্রু। আমি আজকের এই সমাবেশের উলামা মাশায়েখদের দাবির প্র্রতি একাত্মতা পোষণ করছি।’
রেজিস্ট্রারি মাঠে বেলা ১২টা থেকে সমাবেশ শুরু হয়। তার আগে সকাল থেকে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন উপজেলা থেকে বাস ও ট্রাকযোগে সমাবেশে লোকজন আসতে থাকেন। নগর থেকে মিছিল নিয়েও আসেন অনেকে। বিশেষ করে সিলেট অঞ্চলের বেশিরভাগ মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এই সমাবেশে যোগ দেন।
দুপুরের পর রেজিস্ট্রারি মাঠ ছাপিয়ে আশপাশের সড়কেও ছড়িয়ে পড়ে জনতা। এতে আশপাশের কয়েকটি সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এ সময় উপস্থিত জনতা স্লোগান দেয় ‘নবীর পরে নবী নাই, সংসদে আইন চাই’, ‘কাদিয়ানিদের কাফের ঘোষণা করতে হবে’ ইত্যাদি। অনেকে এসব দাবি লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়েও হাজির হন সমাবেশে।
আযাদ দ্বীনি এদারায়ে তা’লীম বাংলাদেশের সভাপতি ও উলামা পরিষদ বাংলাদেশের উপদেষ্টা মাওলানা শায়খ জিয়া উদ্দিনের সভাপতিত্বে বিভাগীয় খমতে নবুয়ত মহাসমাবেশে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উলামা পরিষদ বাংলাদেশের উপদেষ্টা ও পূর্ব সিলেট আযাদ দ্বীনি আরবী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের সভাপতি মাওলানা শায়খ আলিম উদ্দিন দুর্লভপুরী, বেফাকুল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহ-সভাপতি ও উলামা পরিষদ বাংলাদেশের উপদেষ্টা মুফতি রশিদুর রহমান ফারুক বরুণা, উলামা পরিষদ বাংলাদেশের মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী ও মাওলানা শায়খ নুরুল ইসলাম খান সুনামগঞ্জী প্রমুখ।
বিকাল ৫টায় মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয় সমাবেশ।
প্রসঙ্গত, সুন্নি মুসলিমদের অনেকে আহমদিয়া মুসলিম জামাতের অনুসারীদের অমুসলিম বলে মনে করেন। আহমদিয়াদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিও দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে আসছেন তারা।
ভারতের পাঞ্জাবের কাদিয়ান থেকে এই দর্শনের জন্ম বলে অনেকে এই সম্প্রদায়ের লোকজনকে কাদিয়ানি বলে থাকেন। এই সম্প্রদায়কে নিয়ে বিশ্বের অনেক দেশেই বিরোধ রয়েছে।
আহমদিয়া মুসলিম জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মির্জা গোলাম আহমদ নিজেকে ইসলামের একজন নবী ঈসা ও ইমাম মাহদি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার দাবি থেকে এই বিরোধের সূত্রপাত।
পাকিস্তানে আহমদিয়াদের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
মন্তব্য