বিবাহিত হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলে এক শিক্ষার্থীর সিট কেটে দিয়েছে হল প্রশাসন। বিবাহিত হওয়ায় আরও কয়েকটি হলেও নারী শিক্ষার্থীদের সিট বাতিল করা হচ্ছে।
ভুক্তভোগীদের একজন জানান, ১২ নভেম্বর হলের সিট বরাদ্দ কমিটির একজন শিক্ষক বিবাহিত হওয়ায় তার সিট কেটে দেন। ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তবে তিনি তার নাম প্রকাশে অনিচ্ছা জানিয়েছেন।
ঘটনার বিষয়ে ওই শিক্ষার্থী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি সনাতন ধর্মাবলম্বী। করোনার বন্ধে আমার বিয়ে হয়। বন্ধের পর যখন আমি হলে আসি তখন ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী স্বামীর মঙ্গল কামনায় শাখা-পলা-সিঁদুর পরি।
‘হল খোলার প্রথম দিন বিষয়টি একজন ম্যামের নজরে আসার পর তিনি আমি বিবাহিত কি না জানতে চান। আমি বিবাহিত বললে তিনি আমার নাম মার্ক করে রাখেন। এরপর ১২ নভেম্বর আমার ফ্লোরের ইলা ইসমাইল ম্যাম আমার সিট কেটে দেন। যখন আমার সিট কাটা হয় তখন আমার পরীক্ষা চলছিল।’
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি ম্যামের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করি। তবে সেটি সম্ভব হয়নি। পরে আমি হলের অন্য এক ম্যামকে বলি, ম্যাম আমার সিটটা বেশি প্রয়োজন। ঢাকায় আমার থাকার জায়গা নেই। আমার হাজবেন্ড পটুয়াখালীর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। সেও শিক্ষার্থী। সে সেখানেই থাকে। আমাকে একটু হলে রাখার ব্যাপারে সাহায্য করা যায় কি না। তবে ওই ম্যামও কোনো সাহায্য না করে উল্টো অপমানসূচক কথা বলেন।’
ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘হলের অনেকেই বিবাহিত, কিন্তু বিয়ের বিষয়টি তাদের গোপন রাখতে হয়। কেবল হলের সিট বাঁচিয়ে রাখতে। বিয়ে তো কোনো অপবিত্র কাজ নয়, যে কেউ বিবাহিত হলে সেটি লুকিয়ে রেখে তাকে চলতে হবে।’
এ বিষয়ে কুয়েত মৈত্রী হলের সিট কমিটির সদস্য এবং পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ইলা ইসমাইল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের যে রকম নির্দেশনা দিয়েছেন, সেভাবেই আমরা হলটি চালাই।’
এ রকম নিয়ম কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই নিয়ম আমরা বানাইনি। এটি প্রশাসন থেকে আসা এমন একটি নিয়ম যেটি অনেক আগে থেকেই হয়ে আসছে। আমরা শুধু সেটি অনুসরণ করি।’
শুধু কুয়েত মৈত্রী হলের ঘটনায় নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ছাত্রী হলে বিবাহিত হওয়ার বিষয়টি প্রকাশিত হলে শিক্ষার্থীদের সিট হারাতে হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হল সংসদের সাবেক সহসভাপতি তাসনিম আফরোজ ইমি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে হলের একজন আবাসিক ছাত্রীকে বিবাহিত হওয়ার কারণে হল প্রশাসন দ্বারা হেনস্তার অভিযোগ করেন।
সেখানে তিনি লেখেন, ‘সেই ছাত্রীর বোন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি হলে আবাসিক হওয়ার সাক্ষাৎকার প্রদান করতে এলে তার বড় বোন বিবাহিত এবং হলে থাকে, এটি তিনি প্রকাশ করেন আর এতে হলের হাউস টিউটর ক্ষেপে যান। পরবর্তী সময়ে এই হাউস টিউটর নির্দেশ প্রদান করেন বড় বোন হল না ছাড়লে ছোট বোন হলে উঠতে পারবে না।’
কোন শিক্ষক এই নির্দেশ দিয়েছেন জানতে চাইলে তাসনিম আফরোজ ইমি নিউজবাংলাকে বলেন, দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক নুসরাত তাসনীম।
অভিযোগের বিষয়ে নুসরাত তাসনীম বলেন, ‘কথাটা আসলে সেভাবে বলা হয়নি। প্রথম বর্ষের সেই শিক্ষার্থী যেহেতু মেধা তালিকায় সিট পেয়েছে তার সিট হবে। আমি সেদিনই এই শিক্ষার্থীকে বলেছি, তার বড় বোনের বিষয়টি আমরা আপাতত স্কিপ করছি। সে যদি লোকাল গার্ডিয়ান নিয়ে আসতে পারে তার সিট হবে।’
লোকাল গার্ডিয়ান বড় বোন হলে সমস্যা কী জানতে চাইলে তিনি হলটির প্রাধ্যক্ষ ড লাফিফা জামালকে ফোন দিতে বলেন।
ড. লাফিফা জামালকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তার ফোন সংযোগ পাওয়া যায়নি।
বিবাহিত হওয়ার কারণে হল খোলার পর অক্টোবরে আরও এক শিক্ষার্থীর সিট কেটে দেয় শামসুন্নাহার হল প্রশাসন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘অক্টোবরে হল খোলার পর আমার ফ্লোরের হাউস টিউটরের সঙ্গে আমার দেখা হয়। উনাকে আমি বিবাহিত হওয়ার কথাটা বলি। তিনি বলেন, যেহেতু তুমি বিবাহিত, তোমার ব্যাপারটা প্রাধ্যক্ষ ম্যামের সঙ্গে কথা বলে দেখতে হবে।
‘আমি বলেছি, ম্যাম আমার পরীক্ষা চলছে। এই পরীক্ষার সময়টা আমাকে একটু কনসিডার করার জন্য আমি ম্যামকে অনুরোধ করি। এরপর একদিন তিনি আমাকে ফোন করে জানান, আমার সিট কাটা হয়েছে। পরে আমি আর হলে থাকতে পারিনি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের জন্য পাঁচটি আবাসিক হল রয়েছে।
এসব হলের আসন বণ্টন সম্পর্কিত নীতিমালার একটি ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ছাত্রী বিবাহিত হলে অবিলম্বে কর্তৃপক্ষকে জানাবেন। অন্যথায় নিয়মভঙ্গের কারণে তার সিট বাতিল হবে। শুধু বিশেষ ক্ষেত্রে বিবাহিত ছাত্রীকে চলতি সেশনে হলে থেকে অধ্যয়নের সুযোগ দেয়া হবে। অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রী হলে থাকতে পারবেন না।’
বিবাহিত হওয়ায় সম্প্রতি শামসুন্নাহার হল এবং বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের দুই ছাত্রীর সিট নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। সেই প্রেক্ষাপটে এ নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পাঁচ ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার এসব হলের শিক্ষার্থীদের কয়েকজন প্রতিনিধি এই নিয়ম বাতিলের আবেদন জানিয়ে উপাচার্যের কাছে যান।
শিক্ষার্থীরা এই নিয়ম ছাড়া আরও কয়েকটি দাবি উপাচার্যের কাছে উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো, শিক্ষার্থীদের প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের মর্যাদা রক্ষায় সব ছাত্রী হলে ‘লোকাল গার্ডিয়ান’ বা ‘স্থানীয় অভিভাবকের’ পরিবর্তে ‘ইমার্জেন্সি কন্টাক্ট’ বা ‘জরুরি যোগাযোগ’ শব্দটি রাখা, আবাসিক শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দ্বারা যেকোনো ধরনের হয়রানি এবং অসহযোগিতামূলক আচরণ বন্ধ করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়া এবং শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকা সাপেক্ষে অনাবাসিক ছাত্রীদের হলে প্রবেশের অধিকার পুনর্বহাল করা ও জরুরি প্রয়োজনে তাদের হলে অবস্থান করতে দেয়া।
শিক্ষার্থীরা জানান এসব দাবির প্রেক্ষিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান তাদের বলেছেন, হল কর্তৃপক্ষ ও ডিনস কমিটির সভায় আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কোনো পরিবর্তন না আসা পর্যন্ত এ নিয়মটিই বহাল থাকবে।
এমন নিয়মের বিষয়ে বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নাজমুন নাহার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একজন মেয়ে যখন বিবাহিত হয় তখন তার একটি সোশ্যাল লাইফ হয়। সে কিন্তু একজন স্বাভাবিক ছাত্রীর মতো থাকতে পারে না। আর অন্তঃসত্ত্বা হলে তো আরও অনেক রকম পরিবর্তন আসে। যেটি হলে থেকে করা সম্ভব নয়। এই নিয়মটা অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। আমরা শুধু পুরোনো জিনিসটাই প্র্যাকটিস করে যাচ্ছি।’
প্রাধ্যক্ষ বলেন, ‘একটি রুমে সাতজন শিক্ষার্থীর মধ্যে যদি একজন অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে থাকে, তখন মেয়েটির পাশাপাশি বাকি শিক্ষার্থীদেরও সমস্যা হয়। অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটি বাসায় থাকলে যে রকম রিল্যাক্সে থাকতে পারবে, হলে কিন্তু সেটি সম্ভব নয়। আর বিবাহিত মেয়েরা থাকবে স্বামীর সংসারে। সে কেন হলে থাকবে? স্বামী যদি অন্য কোথাও থাকে তাহলে স্বামীকে স্ত্রীর জন্য কোনো শেল্টার খুঁজে দিতে হবে।’
এই অধ্যাপক বলেন, ‘আমি এই নিয়মের পক্ষে। কারণ হলগুলো এক-একটি হোস্টেল, বাসা না। হোস্টেলটা হোস্টেলের মতোই থাকতে হবে। তাই আমরা বিবাহিত এবং অন্তঃসত্ত্বা মেয়েদের হলে থাকাকে ডিসকারেজ করছি।’
হলের নীতিমালায় বলা আছে, ‘শুধু বিশেষ ক্ষেত্রে বিবাহিত ছাত্রীকে চলতি সেশনে হলে থেকে অধ্যয়নের সুযোগ দেয়া হবে।’
এই বিশেষ ক্ষেত্র কখন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনো মাস্টার্সের শিক্ষার্থী যদি তার অ্যাকাডেমিক জীবনের শেষ মুহূর্তে থাকে আর সে যদি বিবাহিত হয় তখন আমরা তাকে থাকার সুযোগ দেব। কারণ আমরা যদি তাকে থাকার সুযোগ না দিই, হয়তো তার ডিগ্রিটা কমপ্লিট হবে না। এসব ক্ষেত্রে আমরা এটিকে কনসিডার করি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হলগুলো সুনির্দিষ্ট কিছু নীতিমালার আলোকে পরিচালিত হয়। সমাজ, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ ধারণ করে সে নিয়মনীতি করা। শিক্ষার্থীরা যেহেতু দাবি তুলেছে, আমরা সেগুলোকে আমলে নিয়েছি। সুতরাং যুগের সঙ্গে কতটুকু সামঞ্জস্যপূর্ণ বা কোথাও কোনো অসংগতি আছে কি না, সেগুলো পর্যালোচনা করে আমাদের বুঝতে হবে।’
আরও পড়ুন:পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আজ থেকে ঢাকায় শুরু হচ্ছে পাঁচ দিনব্যাপী পার্বত্য ফল উৎসব ও মেলা।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র মেলার সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকছে।
আজ বিকেলে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
রাজধানীর বেইলি রোডে পার্বত্য কমপ্লেক্সে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন পাহাড়ি সংস্থা পাহাড়ি ফলমূল নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছেন।
মেলা উপলক্ষে ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান- বিজয় সরণি, সার্ক ফোয়ারা, রমনা পার্ক, বেইলি রোডের পশ্চিম পাশে রমনা পার্ক সংলগ্ন ও পূর্ব পাশে অফিসার্স ক্লাব সংলগ্ন, টিএসসি ও দোয়েল চত্বরে পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন স্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স-এর সম্মুখে একটি বেলুন স্থাপন করা হয়েছে।
রাজধানীর ৩৩ বেইলি রোডে অবস্থিত পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রতিদিন এই মেলা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৩৮৪১.৩৮ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করলো ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পরিচালনা কমিটির ৭ম (সপ্তম) কর্পোরেশন সভা
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৩৮৪১.৩৮ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করলো ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পরিচালনা কমিটির ৭ম (সপ্তম) কর্পোরেশন সভা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের এর প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর সংস্থার প্রতিনিধির সমন্বয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পরিচালনা কমিটির ২৫ (পঁচিশ) জন সদস্য আজ সোমবার নগর ভবনে উপর্যুক্ত সভায় অংশগ্রহণ করেন।
সভার শুরুতে ০৫ মে ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ কর্পোরেশনের সভার কার্য বিবরণী দৃঢ়ীকরণ এবং বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হয়। পরবর্তীতে সভার আলোচ্য সূচি অনুযায়ী আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা (অতি. দা.) জনাব আলী মনসুর। পরবর্তীতে, পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ বাজেট আলোচনায় অংশগ্রহণ এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৩৮৪১.৩৮ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন প্রদান করেন।
বাজেট আলোচনায় অংশগ্রহণ ও অনুমোদন প্রদান করায় পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের এর প্রশাসক বলেন, “ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বাজেট কেবল গাণিতিক সংখ্যা নয়। এই বাজেট আমাদের কাছে সম্মানীত করদাতাদের আমানত। এই বাজেট সফলভাবে প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উপর নির্ভর করছে আমাদের সবার প্রিয় এই নগরীর ব্যবস্থাপনা এবং আমাদের দৈনন্দিন নাগরিক সমস্যার সমাধান।”
সভায় ১৯৯৮ সাল থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বসবাসকারী নগরবাসীকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও মাতৃত্বকালীন বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী ‘আরবান প্রাইমারী হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারী প্রকল্প-২ পর্যায়’ শীর্ষক প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এবং বিদ্যমান প্রকল্পের আওতায় সেবা প্রদানকারী এনজিওসমূহের মধ্যে সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
পরবর্তীতে, অর্থ বিভাগের পরিপত্র অনুযায়ী ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োজিত সাময়িক শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ৬০০/- (ছয় শত) টাকা হতে ৮০০/- (আট শত) টাকা পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া, মন্ত্রীপাড়ায় অবস্থিত অস্থায়ী মসজিদটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক একটি তিনতলাবিশিষ্ট নান্দনিক মসজিদে রূপান্তরের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।
সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. জিল্লুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সচিব জনাব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ সকল বিভাগীয়গণ উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর মতিঝিলে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ীর ৩০ লক্ষ টাকা ডাকাতির ঘটনায় তিন ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি’র মতিঝিল থানা পুলিশ। এ সময় ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত হাইয়েস গাড়ি ও নগদ ৮৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. শামিম রহমান (২৯), মো. মিজান রহমান (৫১) ও রবিউল ইসলাম জুয়েল (৪২)।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, গত ২৭-২৯ জুন ঢাকা ও ঝালকাঠিতে পৃথক অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের সময় শামিমের হেফাজতে থাকা ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত হাইয়েস গাড়ি, মিজানের কাছ থেকে নগদ ৮০ হাজার টাকা ও জুয়েলের কাছ থেকে নয় হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
ডিএমপি’র মতিঝিল থানা সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ জুন রাজধানীর ওয়ারীর নবাবপুরের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে মো. খলিল মিয়া (২৬) ও ইব্রাহীম হোসেন রিফাত (২৪) নামের দুই ব্যক্তি নগদ ৩০ লক্ষ টাকা মতিঝিল সিটি ব্যাংক শাখায় জমা দেওয়ার জন্য একটি স্কুটিতে করে রওয়ানা দেন।
দুপুর পৌনে ১টার দিকে মতিঝিলের ঘরোয়া হোটেলের সামনে পৌঁছা মাত্রই ৬/৭ জনের একটি দল নিজেদের ডিবি পরিচয়ে তাদেরকে ডিবি লেখা একটি হাইয়েস মাইক্রোবাসে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে যায়।
পরে দুজনকে মারধর করে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ৩০ লক্ষ টাকা নিয়ে হাত-পা বেঁধে সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি ময়লার ডাস্টবিনে ফেলে পালিয়ে যান।
স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে সাইনবোর্ডের প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক সাইদুল ইসলামের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডিএমপি’র মতিঝিল থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু হয়।
থানা সূত্রে আরও জানা যায়, গ্রেফতারকৃত মিজানের নামে ঝালকাঠির রাজাপুর ও নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার থানায় আরো দুটি ডাকাতির মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও লুন্ঠন হওয়া অন্যান্য টাকা উদ্ধারসহ আত্মগোপনে থাকা ডাকাতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
রাজধানীর হাজারীবাগের একটি বাসায় পানির ট্যাংক পরিষ্কারের সময় বিস্ফোরণে দুই শিশুসহ একই পরিবারের চারজন দগ্ধ হয়েছেন।
শনিবার (২৮ জুন) সন্ধ্যায় হাজারীবাগের জিগাতলা ট্যানারি মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। দগ্ধদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়।
আহতরা হলেন- মো. জিয়াউর রহমান (৪৫) ও তার দুই মেয়ে ফারিয়া (৮) ও রাইফা (৪) এবং ট্যাংক পরিষ্কারের কাজে নিয়োজিত শ্রমিক বেলাল হোসেন (২৮)।
আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া শাহপরান জানান, চাচার বাসায় বেলাল হোসেন নামের এক শ্রমিক ট্যাংক পরিষ্কার করছিলেন, এ সময় চাচা জিয়াউর রহমান ট্যাংকে পর্যাপ্ত আলো না থাকায় একটি বৈদ্যুতিক বাল্ব চালু করার পরই এ বিস্ফোরণ ঘটে। ধারণা করা হচ্ছে, ট্যাংকের ভেতরে জমে থাকা গ্যাস থেকে এমনটা হয়েছে।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের রেসিডেন্ট সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান বলেন, ‘বেলাল হোসেনের শরীরের ১৭ শতাংশ, জিয়াউর রহমানের ৪ শতাংশ, ফারিয়ার ৫ শতাংশ এবং রাইফার ৬ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।’
বর্তমানে তারা সবাই শঙ্কামুক্ত এবং জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
রাজধানীর উত্তরা এলাকায় দ্রুতগামী ট্রাকের ধাক্কায় একই পরিবারের তিন সদস্য নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন, আহসানুল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী অমিত (২৩), তার আত্মীয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী নাইমুল হক (৩২) এবং জাবেদ আলম খান (৫৫)।
উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম মোস্তফা জানান, শনিবার (২৯ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে উত্তরা পূর্ব থানাধীন আজমপুর মোড়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তারা। এ সময় ময়মনসিংহ থেকে আসা পাথরবোঝাই একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়।
এতে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন বলে জানান তিনি। ওসি বলেন, অপরজনকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেই মারা যান।
তিনি আরও জানান, মরদেহগুলো শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।
নিহতরা কাছাকাছি একটি হাসপাতালে রোগী দেখতে গিয়েছিলেন এবং সেখান থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে এবং এর চালক রাকিবুল ইসলামকে (৪২) আটক করা হয়েছে বলে জানান ওসি।
রাজধানীর উত্তরায় ‘মব’ সৃষ্টি করে ‘হোটেল মিলিনা’ নামের একটি আবাসিক হোটেল দখলের চেষ্টা করা হয়। এমন অভিযোগে ৯ জনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১)।
রোববার র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, শনিবার দুপুরে শফিক মোল্লা নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে হোটেল মিলিনিার মালিক আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে পূর্বের ব্যবসায়িক সূত্র ধরে ‘মব’ সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। সেসময় ১০টি মোটরসাইকেলে করে কমপক্ষে ২৪ জন জোরপূর্বক হোটেলটি দখল করতে যায়।
এ সময় দূর থেকে ওই ঘটনার কিছু ছবি ধারণ করেন র্যাব-১ এর এক গোয়েন্দা সদস্য। ছবি ধারণের সময় ‘মব’ সৃষ্টিকারীরা র্যাব সদস্যদের ঘেরাও করে এবং ছবি তুলতে বাধা দেয়। এ ঘটনার পর র্যাব-১ এবং উত্তরা পূর্ব থানা পুলিশের টহল দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ‘মব’ নিয়ন্ত্রণ করে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজে বাধা দেওয়া এবং ‘মব’ সৃষ্টির অভিযোগে ঘটনাস্থল থেকে মোট ৯ জনকে আটক করা হয়। তারা হলেন, মো. সাজ্জাদ হোসেন (২৮), মো. শফিক মোল্লা (৩০), মো. আরিফুল ইসলাম (৩০), মো. তন্ময় হোসেন শাওন (২৭), মো. রবিউল ইসলাম (২৫), মো. আনোয়ার হোসেন আশিক (২৭), মো. সাইফুল ইসলাম সাগর (২৭), মো. জালাল খান (৩০) ও মো. আমির (২১)।
আটকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
আয়কর অফিসসহ সরকারি বিভিন্ন অফিসে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য বিএনপির নামে আন্দোলন চালিয়ে একটি ‘কুচক্রী মহল’র বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টার সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘যারা আয়কর অফিসে বা অন্যান্য বিভাগে বিএনপির নামে আন্দোলন করছেন—তারা বিএনপির অংশ নয়। তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্যই এটা করছে।’
শুক্রবার (২৭ জুন) রথযাত্রা উৎসব উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনের ভাসানী ভবনে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট আয়োজিত এক আলোচনা সভায় রিজভী এই মন্তব্য করেন।
তিনি সতর্ক করে বলেন, কিছু ব্যক্তি বিভিন্ন ক্ষেত্র এবং সরকারি অফিসে তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপির নামে নতুন নতুন কার্যকলাপ শুরু করার চেষ্টা করছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যারা জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী তাদের সকলেরই তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত। তারেক রহমান তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন। কিন্তু তারপরও অনেকে বিএনপির নাম ব্যবহার করে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন।’
রিজভী বলেন, তিনি এমন একজনের কথা শুনেছেন যিনি বিএনপির নাম ব্যবহার করে আয়কর অফিসে আন্দোলন করছেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘তিনি (সেই ব্যক্তি) এখন (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে অপসারণের চেষ্টা করছেন এবং ভবিষ্যতে অন্য কাউকে অপসারণের চেষ্টা করবেন। কে তাকে এই দায়িত্ব দিয়েছে? আমি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব—আমি এ বিষয়ে জানি না। আপনি নিজেই বিএনপির নাম ব্যবহার করে একটি অফিসে আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেখানে আরও অনেক বিএনপি নেতা আছেন, কেউ এ সম্পর্কে জানেন না।’
বিএনপির নামে যারা অপকর্ম করছে তাদের সম্পর্কে সতর্ক থাকার জন্য বিএনপি নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানান রিজভী। বলেন, ‘রক্তপাত এবং সংগ্রামের মাধ্যমে সৃষ্ট সুযোগ আগামী দিনে একটি উন্নত রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ত্রুটি-বিচ্যুতির সমালোচনা করলেও সরকারের ভালো কাজের প্রতি সমর্থন জানায় বিএনপি।
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে আলোচনা অনুসারে, সরকার যুক্তিসঙ্গত সময়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে বলে আশা প্রকাশ করেন রিজভী।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল স্বীকার করেছেন যে, ২০২৪ সালের নির্বাচন ছিল একটি ভুয়া নির্বাচন। ‘তার এই মন্তব্য স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে (শেখ) হাসিনার আমলে সমস্ত নির্বাচন অবৈধভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।’
বিএনপি নেতা দাবি করেন, প্রশাসনের ভেতরে লুকিয়ে থাকা কিছু লোক—যারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী। তারা বিভিন্ন বিভাগে বিভিন্নভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের তাদের সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।’
মন্তব্য