হঠাৎ করেই পানির বিল বাড়িয়ে দ্বিগুণ করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন। গণশুনানি ছাড়াই একলাফে পানির বিল বাড়ানোকে অন্যায্য বলছেন নগরবাসী। এ নিয়ে প্রতিদিনই সিলেট নগরের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করছেন তারা। করপোরেশনের কাউন্সিলররাও অংশ নিচ্ছেন এসব কর্মসূচিতে।
নগরবাসীর এই ক্ষোভের কারণে বিপাকে পড়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন। সোমবারও বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর সিটি মেয়রের সঙ্গে দেখা করে পানির বিল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন।
এ অবস্থায় জরুরি সাধারণ সভা ডেকে পুনর্বিবেচনার কথা বলছেন মেয়র।
সিলেট নগরে খাবার পানি সরবরাহ করে থাকে সিটি করপোরেশন। তবে চাহিদামাফিক পানি সরবরাহ না হওয়ায় নগরের অনেক এলাকায় সংকট লেগে থাকে। পানির সরবরাহ নিশ্চিতের আগেই মূল্য বাড়ানোর কারণে নাগরিকদের ক্ষোভ আরও বেড়েছে।
নগরে দৈনিক পানির চাহিদা প্রায় ৮ কোটি লিটার। তবে সিটি করপোরেশন প্রতিদিন সাড়ে ৫ কোটি লিটারের মতো পানি সরবরাহ করতে পারে।
নগরের কাজীটুলা এলাকার মিসবাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা প্রয়োজনমতো পানি পাই না। বাইরে থেকে পানি কিনে ব্যবহার করতে হয়। তবু মাসে মাসে পানির বিল দিচ্ছি। পর্যাপ্ত পানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারলেও হঠাৎ করে পানির বিল বাড়ানো হয়েছে।’
করপোরেশন বলছে, বিদ্যুৎসহ সবকিছুর দাম বাড়ায় পানির উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এ কারণে বিলও বাড়াতে হয়েছে।
করপোরেশনের পানি শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর জানান, প্রতি মাসে পানি উৎপাদন বাবদ গড়ে ১ কোটি ৮ লাখ টাকা খরচ হয়। বিপরীতে গ্রাহকদের কাছ থেকে গড়ে প্রতি মাসে ৪৮ থেকে ৪৯ লাখ টাকা আদায় হয়। আর পানি বাবদ বকেয়া পড়ে আছে ১২-১৩ কোটি টাকা।
তিনি জানান, পানির দাম বাড়িয়ে শতভাগ টাকা গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায় করা গেলে প্রতি মাসে ১ কোটি ৭ লাখ টাকা করপোরেশনের কোষাগারে জমা হবে। এভাবে লোকসান থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে।
সিটি করপোরেশনের সাধারণ সভায় গত ২১ জুন পানির বিল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। ২ সেপ্টেম্বর করপোরেশন গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিষয়টি জানায়। অক্টোবর থেকে গ্রাহকদের বর্ধিত বিল আদায় শুরু করে করপোরেশন।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি মাসে আধা ইঞ্চি ব্যাসের লাইনের ক্ষেত্রে আবাসিক গ্রাহকদের ২০০ টাকার বদলে ৫০০ টাকা দিতে হবে। ৮০০ টাকা দিতে হবে বাণিজ্যিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও সরকারি গ্রাহকদের; আগে তারা গুনতেন ৪০০ টাকা।
পৌনে এক ইঞ্চি ব্যাসের লাইনের ক্ষেত্রে আবাসিক গ্রাহকদের ৮০০ টাকা গুনতে হবে, যা আগে ছিল ৪০০ টাকা।
বাণিজ্যিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও সরকারি গ্রাহকদের বিল ৫০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। ৭০০ টাকার বদলে এখন তারা গুনবেন ১২০০ টাকা।
এক ইঞ্চি ব্যাসের লাইনের ক্ষেত্রে আবাসিক ও সরকারি গ্রাহকদের জন্য ১ হাজার টাকার বদলে দেড় হাজার টাকা দিতে হবে।
দেড় হাজার টাকার পরিবর্তে ২২০০ টাকা দিতে হবে বাণিজ্যিক গ্রাহকদের। প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহকদের বিল ১০০০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৩০০০ টাকা।
পানির বিল বাড়ানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে প্রতিনিয়তই মেয়র বরাবর স্মারকলিপি দেয়া, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছে বিভিন্ন সংগঠন ও এলাকাবাসী।
নগরের ইলেকট্রিক সাপ্লাই এলাকায় সোমবার সকালেও ‘৫ নম্বর ওয়ার্ডের সর্বস্তরের নাগরিকবৃন্দের’ ব্যানারে মানববন্ধন হয়। এতে তিন কাউন্সিলরও সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন।
৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদ বলেন, ‘আমরা মাসিক সভা করেই পানির বিল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। যেহেতু এই সিদ্ধান্তে নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে, তাই এটি পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন বলে মনে করি। নাগরিকদের দাবির প্রতি সম্মান জানিয়েই আমি তাদের কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছি।’
এ বিষয়ে সোমবার দুপুরে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন ১০ কাউন্সিলর। তাদের একজন ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৌফিক বক্স লিপন বলেন, ‘পানির বিল দ্বিগুণ করে ফেলায় নাগরিকদের চাপ বেড়েছে। তারা এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
‘অনেক এলাকার বাসিন্দারা পানি পান না, কিন্তু তাদের বিল দিতে হয়। তাই জরুরি ভিত্তিতে একটি সাধারণ সভা ডেকে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন।’
এর আগে রোববার বিল বাড়ানোর প্রতিবাদ জানিয়ে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠানো হয়।
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেনের সই করা বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, কারও সঙ্গে পরামর্শ না করে এবং গণশুনানি না করে হঠাৎ পানির বিল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক ও অমানবিক।
তাতে আরও বলা হয়, করোনা মহামারির মধ্যে মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা যেখানে নাজুক, সেখানে তাদের কথা বিবেচনা না করে পানির বিল বাড়ানোর বিষয়টি জনবিরোধীও বটে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘পানির দাম না বাড়িয়ে বরং যে পরিমাণ টাকা গ্রাহকদের কাছে বকেয়া আছে, সেগুলো আদায় করা দরকার। নাগরিকদের নামমাত্র মূল্যে পানি সরবরাহ করা উচিত।’
এ বিষয়ে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘গত ১৫/১৬ বছরে আমরা কোনো ধরনের সেবার দাম বাড়াইনি, কিন্তু এই সময়ে বিদ্যুতের দাম কয়েক দফা বেড়েছে। যার প্রভাব পড়েছে পানির উৎপাদন খরচে। অন্যান্য সিটি করপোরেশন এবং ওয়াসাও পানির বিল বাড়িয়েছে। ব্যয় সমন্বয় করতেই আমরা পানির দাম বাড়িয়েছিলাম।
‘যেহেতু এই সিদ্ধান্তে নগরবাসীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে, তাই এই মাসেই সাধারণ সভা ডেকে এটি পুনর্বিবেচনা করা হবে। পানির দাম সহনীয় মাত্রায় আনার ব্যাপারে আমরা আলোচনা করব। তবে বছরের পর বছর ধরে যারা বিল পরিশোধ করছেন না এবং অবৈধ লাইন ব্যবহার করছেন তাদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না।’
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার হাকরইল গ্রামে ক্ষেতের পাশ খেকে কামরুল ইসলাম (৫০) নামের এক আওয়ামী লীগ নেতার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
কামরুল নাচোল উপজেলার সূর্যপুর গ্রামের প্রয়াত হোসেন আলীর ছেলে।
তিনি নাচোল ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।
পুুলিশ শুক্রবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, স্থানীয়দের দেয়া সংবাদের ভিত্তিতে কামরুল ইসলামের ধানক্ষেতের পাশে একটি নালা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে এটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলেই মনে হয়েছে।
ওসি আরও জানান, তিনি উচ্চ রক্তচাপের রোগী ছিলেন বলেও স্বজনরা জানিয়েছে। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন:নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার মেঘনা নদীতে মাছ ধরতে যাওয়ার পথে একটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় দুই জেলের মরদেহ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা।
২০ জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও এখনও নিখোঁজ দুই জেলে।
উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের বুড়ির দোনা ঘাটের দক্ষিণে মেঘনা নদীতে শুক্রবার ভোররাতের দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো দুজন হলেন বুড়িরচর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কালির চলের প্রয়াত আবদুল আলীর ছেলে আবুল হাসেম (৫০) এবং একই এলাকার মো. মোস্তফার ছেলে মো. জুয়েল (২৭)। সম্পর্কে তারা মামা ও ভাগ্নে।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, বুধবার রাতে ২৪ জন জেলে নিয়ে স্থানীয় রবিউল মাঝির একটি নৌকা হাতিয়ার বুড়ির দোনা ঘাটের দক্ষিণে মেঘনা নদীতে বেহুন্দী জাল বসাতে যায়। শুক্রবার ভোরে ডুবোচরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে নৌকাটি উল্টে যায়। ওই সময় ২০ জন জেলে সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও চারজন তা পারেননি।
পরে স্থানীয় জেলেরা নৌকার ভেতর থেকে আবুল হাসেম ও মো. জুয়েলের মরদেহ উদ্ধার করেন। দেলোয়ার ও ইরান নামে দুই জেলে এখনও নিখোঁজ।
এ ঘটনায় প্রাণ হারানো জেলেদের গ্রামের বাড়িতে মাতম চলছে।
নলচিরা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ টিটু কুমার নাথ জানান, খবর পেয়ে নৌ পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। প্রাণ হারানো জেলেদের মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন:দিনাজপুরে যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে ট্রাকের সংঘর্ষে দুই চালকসহ চারজন নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় আরও ২০ জন আহত হয়েছেন।
দিনাজপুর-পঞ্চগড় মহাসড়কের চকৈ মোড়ে শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানান বীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল গফুর।
ওসি জানান, নিহত চারজনের মধ্যে বাস ও ট্রাকের চালক এবং দুই বাসযাত্রী রয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
তিনি জানান, আহত যাত্রীদের প্রথমে বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। পরে তাদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ওসি গফুর আরও বলেন, ‘ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পঞ্চগড়গামী একটি বাসের সঙ্গে ধানবোঝাই ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।’
বাংলাদেশ নিয়ে ভারত কোনো ষড়যন্ত্র করলে বিষদাঁত ভেঙে দিতে প্রস্তুত আছেন বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মাদারীপুর জেলা শাখার উদ্যোগে বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের লেকপাড়ের স্বাধীনতা অঙ্গনে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
রেজাউল করিম বলেন, ‘বাংলাদেশকে নিয়ে যদি কোনো ষড়যন্ত্র করে থাকেন, তাহলে এ দেশের মানুষ সেই বিষদাঁত ভেঙে দেয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে অপেক্ষা করছে। শত শত মায়ের বুক খালি করা খুনি হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে।
‘ভারত বন্ধু রাষ্ট্র বললেও এখনও তারা বন্ধুর কোনো পরিচয়ই দিতে পারে নাই।’
দেশবাসীর উদ্দেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রধান বলেন, ‘সবাইকে সর্তক থাকতে হবে। আমাদের দেশকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র চলছে। আওয়ামী লীগ যারা করেছে তাদের দলের বড় নেতারা কর্মীদের ফেলে টুন টুনা টুন টুন হয়ে গেছে।
‘এমন নেতাদের পেছনে নেমে বারবার জীবনকে ধ্বংস করবেন না। এদের মাধ্যমে আমাদের দেশে বারবার অশান্তি তৈরি করবে আর আমরা একটা গোলাম রাষ্ট্র হিসেবে বসবাস করব, এটা হতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন করার জন্য এ দেশের লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছেন। গত ৫ আগস্টও আপনারা দেখেছেন। এ দেশ আমার ও আমাদের।
‘এ দেশ রক্ষার জন্য যদি প্রয়োজন হয়, রক্ত দেব, জান দেব। দেশ রক্ষার জন্য রাজপথে নামব, এতে কোনো সন্দেহ নাই।’
আরও পড়ুন:পঞ্চগড় সদর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে আনোয়ার হোসেন (৩৬) নামের এক বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন।
উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের মোমিনপাড়া ও ভারতের শিংপাড়া সীমান্তের মেইন পিলার ৭৫১ এর ৮/৯ নম্বর সাব পিলারের মাঝামাঝি এলাকায় শুক্রবার ভোরে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
প্রাণ হারানো আনোয়ারের বাড়ি তেতুঁলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের দেবনগর এলাকায়। তিনি ওই এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে।
নীলফামারী ৫৬ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ব্যাটালিয়ন সূত্রে জানা যায়, আনোয়ারসহ কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিক বৃহস্পতিবার রাতে ভারতে যান। ভোরের দিকে ফেরার পথে ভারতীয় সীমান্তের ভেতরে বিএসএফের ৯৩ ব্যাটালিয়নের চানাকিয়া ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের ধাওয়া করে। পরে গুলি চালায় বিএসএফ। ওই সময় ঘটনাস্থলে নিহত হন আনোয়ার। তার মরদেহও নিয়ে যায় বিএসএফ সদস্যরা।
বিজিবি আরও জানায়, সীমান্তে গুলির শব্দ পেয়ে চোরাকারবারিদের প্রতিহত করার জন্য আটটি ফাঁকা গুলি ছোড়েন ঘাগড়া বিজিবি ক্যাম্প সদস্যরা।
নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা বলেন, ‘পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে নিহতের মরদেহ ফেরত আনা হবে। এ ছাড়া এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হবে।
‘ঘটনার পর বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা থেকে চোরাচালানের একটি গরু জব্দ করে বিজিবি।’
আরও পড়ুন:বরিশালে কীর্তনখোলা নদীতে নোঙর করে রাখা বালুবাহী বলগেট ও যাত্রীবাহী স্পিডবোটের মুখোমুখি সংঘর্ষে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন স্পিডবোটের তিন যাত্রী।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে বরিশাল সদর উপজেলার বিশ্বাসের হাট সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীর মোহনায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
বরিশাল নৌ-থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সনাতন চন্দ্র সরকার বলেন, ‘ভোলা থেকে যাত্রী নিয়ে স্পিডবোটটি বরিশাল নৌ-বন্দরের দিকে আসছিল। স্পিডবোটটি দুর্ঘটনাকবলিত এলাকায় পৌঁছলে নদীতে নোঙর করে থাকা বালুবাহী বলগেটের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে স্পিডবোটে থাকা চার যাত্রী নিখোঁজ হন। বাকি চারজন সাঁতরে তীরে উঠে আসেন।
‘এলাকাবাসী নিখোঁজদের মধ্যে একজনকে উদ্ধার করে বরিশাল সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক ওই যাত্রীকে মৃত ঘোষণা করেন।’
ওসি জানান, নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্ধারে কাজ করছে পুলিশ। বিষয়টি ফায়ার সার্ভিসকে জানালেও রাত ৮টা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে কোনো উদ্ধারকারী দল পৌঁছায়নি।
সিলেট-ঢাকা মহাসড়ককে দুই লেন থেকে ছয় লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। উন্নয়ন কাজের জন্য সড়ক জুড়েই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের। তবে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ সিলেট নগরের প্রবেশমুখে।
সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের চণ্ডিপুল থেকে হুমায়ুন রশীদ চত্বর পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার পাড়ি দিতে যানবাহনগুলোর চালকদের রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়। চরম ভোগান্তির শিকার হন যাত্রীরা।
চণ্ডিপুল থেকেই সিলেট নগরের শুরু। আর হুমায়ুন রশীদ চত্বরে এসে বাস থেকে নেমে যাত্রীরা নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যান। এই তিন কিলোমিটার সড়ক পুরোটাই খানা-খন্দে ভরা।
যানজট নিরসনে পুরনো সড়কের বদলে সিলেট নগরে প্রবেশের জন্য এই বাইপাস সড়ক নির্মাণ করা হয়। তবে ভাঙাচোরা ও খানাখন্দে ভরা সড়কের এই অংশে প্রায় সময়ই লেগে থাকছে যানজট। ঘটছে দুর্ঘটনা।
সরেজমিনে দেখা যায়, চণ্ডিপুল থেকে হুমায়ুন রশীদ চত্বর পর্যন্ত সড়ক জুড়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আগের রাতে বৃষ্টি হওয়ায় এসব গর্তে জমে আছে পানি। ফলে গাড়ি চালাতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন চালকরা।
জানা যায়, গত বর্ষায় অতিবৃষ্টিতে সড়কের এমন দুরবস্থার সৃষ্টি হয়। তবে বর্ষা মৌসুম শেষ হলেও এখনও সংস্কার হয়নি সড়ক। ফলে দুর্ভোগের শেষ হচ্ছে না।
এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী সিলেট-হবিগঞ্জ বাস সার্ভিসের চালক লিটন আহমদ বলেন, ‘পুরো সড়কের মধ্যে এখানে এলেই ভয় পেয়ে যাই। এই তিন কিলোমিটার এলাকা পার হতে প্রাণ বেরিয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়। যাত্রীরাও আল্লাহর নাম জপতে থাকেন। দুর্ঘটনাও ঘটে নিয়মিত।’
মোটরসাইকেল চালক কায়সার আহমদ বলেন, ‘ভাঙাচোরা সড়কের কারণে প্রায়ই বাইকের যন্ত্রপাতি ভেঙে যায়। আর সবসময়ই যানজট লেগে থেকে। বৃষ্টি হলে তো অবস্থা আরও খারাপ হয়। সড়কের সব গর্তে ময়লা পানি জমে থাকে। ভিজে একাকার হতে হয়।’
এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী ব্যাংকার হোসেন আহমদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির এমন দুরবস্থা। সামান্য জায়গা, অথচ তা সংস্কার করা হচ্ছে না। ফলে আমাদের প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, ‘এই সড়কের দুরবস্থা নিয়ে অনেক যাত্রীই অভিযোগ করেন। সড়কটির অবস্থান নগরের ভেতরে হলেও এটি সড়ক ও জনপথের আওতাধীন। তাই তাদেরই সংস্কার করতে হবে।’
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন বলেন, ‘সড়কটি সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ হলেই সংস্কার কাজ শুরু হবে।’
মন্তব্য