মাঝ পথে এসে আবারও সময় ও ব্যয় বাড়ছে সরকারের অগ্রাধিকার পাওয়া পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে। বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
সম্প্রতি প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সভায়ও এর কারণ এবং যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয়। বাড়তি দেড় বছর সময় ও ১ হাজার ১৭৮ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানোর কথা বলা হয় সভায়। এ জন্য দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাবের প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
নভেম্বরের মাঝামাঝিতে রেল ভবনে অনুষ্ঠিত পিআইসি সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে রেলপথে রাজধানীর যোগাযোগের এ প্রকল্পের কাজ অর্ধেক শেষ হয়েছে। ২০১৬ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পাওয়া এ প্রকল্পের ব্যয় ছিল ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এতে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে। ২০১৮ সালে প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে প্রকল্পটির ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। নতুন করে সংশোধনী আনা হলে প্রকল্পের ব্যয় ৪০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
এ ছাড়া একই দিনে পদ্মার ওপর সড়ক সেতু ও রেল সেতু চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করায়ও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। প্রকল্পটির কাজ ২০২৪ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন তা শেষ করতে বাড়তি সময় প্রয়োজন বলে মনে করে রেলওয়ে। এ জন্য আরও দেড় বছর বা ২০২৬ পর্যন্ত সময় চাইবে সংস্থাটি।
তবে রেলওয়ে জানিয়েছে, প্রকল্প সংশোধনী প্রস্তাবের কাজ মাত্র শুরু হয়েছে। এখনও চূড়ান্ত হয়নি প্রস্তাব। সময় ও ব্যয় কম বা বেশি হতে পারে। প্রথমে প্রস্তাব রেল মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে, তারপরই চূড়ান্তভাবে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে।
পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, এই প্রকল্পের বিষয়ে তাদের কাছে এখনও কোনো প্রস্তাব বা তথ্য আসেনি। কমিশন জানিয়েছে, প্রকল্পটিতে গত নভেম্বর পর্যন্ত আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৫১.৮২ শতাংশ। এ পর্যন্ত প্রকল্পটিতে খরচ হয়েছে ২০ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকা। প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে ৪৮ শতাংশ।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মামুন-অর-রশিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ প্রকল্পের বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব এখনও আমাদের হাতে আসেনি। এমনকি এই বিষয়ে কোনো চিঠিও আমরা পাইনি। প্রস্তাব পেলে সময় ও ব্যয় বিষয়ে কমিশন যাচাই-বাছাই করে মতামত দেবে।’
পিআইসি সভায় প্রকল্পের বেশ কিছু জটিলতার কথা তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, মাঝপথে এলো প্রকল্পটি ভূমি অধিগ্রহণে এখনও সমস্যা রয়ে গেছে। প্রকল্পের আওতায় নতুন করে ১৫২ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে।
এখন পর্যন্ত ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মাদারীপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও যশোরের জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে জমি পাওয়া যায়নি। তাই তা ঠিকাদারকে বুঝিয়ে দেয়া যায়নি। জমি পেতে বিলম্ব হওয়ায় এরই মধ্যে ঠিকাদার অভিযোগ দিয়েছেন।
বাড়তি জমির প্রয়োজন এর কারণ হিসেবে বলা হয়, মৌজা ম্যাপের সঙ্গে প্রকল্প অধিগ্রহণ পরিকল্পনার অসামঞ্জস্যতা, জিও রেফারেন্সিং সমস্যা, নেভিগেশন ক্লিয়ারেন্স বৃদ্ধি, স্টেশন নির্মাণকাজের পরিমাণ বৃদ্ধি, স্টেশন এক্সেস রোডের জন্য বাড়তি জমি লাগবে।
তা ছাড়া প্রকল্প এলাকায় ইউটিলিটি শিফটিং (বিভিন্ন সংস্থার সেবা অন্যত্র সরিয়ে নেয়া) কাজেও সমস্যা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক কোড পরিবর্তন হওয়ায় ব্যয় পরিশোধ করা যাচ্ছে না। বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমতির জন্য পাঠানো হয়েছে।
এই প্রকল্পে পরামর্শক সেবাসংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে। পরামর্শকের সঙ্গে বর্তমান চুক্তি রয়েছে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। প্রথম সংশোধনীতে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হলেও পরামর্শকের মেয়াদ বাড়ানো হয়নি। তাই পরামর্শক্রমে আত্মগর্ব মেয়াদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে বানানো প্রয়োজন। একই প্রকল্প এলাকায় কাজের ধরন বৃদ্ধি এবং সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত পালনের জন্য নতুন করে পরামর্শকের পদ সৃষ্টি করতে হবে বলে সভায় আলোচনা হয়। তবে দ্বিতীয় সংশোধনীতে পরামর্শ ব্যয় আরও যৌক্তিক করার বিষয়ে বলা হয়।
প্রকল্প সংশোধনীর কারণ হিসেবে বলা হয়, ঢাকা থেকে গেণ্ডারিয়া তৃতীয় ডুয়েলগেজ লাইন, ভাঙ্গা জংশনে ওভারহেড স্টেশন, কমলাপুরের টিটিপাড়াতে আন্ডারপাস, নড়াইলের তুলারামপুরে নতুন আন্ডারপাস, ভায়াডাক্টের পিয়ারের (সেতু কর্তৃপক্ষ বা বিবিএর চাহিদা মোতাবেক) নকশা পরিবর্তন, ১০০টি বিজি কোচের ডিজাইন পরিবর্তন, মাওয়া-পদ্মবিলা-কাশিয়ানি-রুপদিয়া স্টেশনগুলোতে অপারেশনাল ফ্যাসিলিটি বৃদ্ধি, নদীর নেভিগেশন ক্লিয়ারেন্স বৃদ্ধির কারণে অতিরিক্ত সম্ভাব্য ব্যয় প্রায় ১৩৮.৫৮ মার্কিন ডলার বা প্রায় ১ হাজার ১৭৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা প্রয়োজন হবে।
আবার নির্মাণকাজের চুক্তি অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়নকাল ডিসেম্বর ২০২২ এবং ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড বিবেচনায় ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত। ঠিকাদার কর্তৃক দাখিলকৃত সর্বশেষ ওয়ার্ক প্রোগ্রাম (এফ) অনুযায়ী বাস্তবায়নকাল জুলাই ২০২৪ পর্যন্ত।
ভূমি অধিগ্রহণ, ইউটিলিটি শিফটিং, ভেরিয়েশন, বর্ষাকাল, করোনা প্রকোপ ইত্যাদি কারণে ঠিকাদার কর্তৃক প্রায় ১.৫ বছর প্রকল্প বাস্তবায়নকাল বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।
আগামী বছরের জন্য চালু হবে পদ্মা সেতু। সেতুর ওপরে বাসসহ অন্যান্য যানবাহন এবং নিচে রেল চলবে। তবে ওপরে যানবাহন চলার কারণে সৃষ্ট কম্পন বা ভাইব্রেশনে নিচে রেল সেতুতে স্থাপনসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ স্থাপনে কোনো সমস্যায় পড়তে হবে কি না, তা জানতে প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরামর্শক দলের বিশেষজ্ঞ মতামত নিতে হবে বলে সভায় মত দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশের নামে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ বেড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি) বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে ২০২৪ সালে তাদের দেশের ব্যাংকগুলোর দায় ও সম্পদের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে।
প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সাল শেষে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে বাংলাদেশের নামে পাওনা রয়েছে ৫৯ কোটি ৮২ লাখ সুইস ফ্রাঁ। বাংলাদেশি মুদ্রায় ( প্রতি ফ্রাঁ ১৫০ টাকা ধরে ) যার পরিমাণ ৮ হাজার ৯৭২ কোটি টাকা। ২০২৩ সাল শেষে যার পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৬৪ লাখ ফ্রাঁ। এখনকার বিনিময় হার ধরলে যার পরিমাণ ৩৯৬ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের নামে থাকা অর্থের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ২৩ গুণ। ২০২২ সাল শেষে বাংলাদেশের কাছে সুইজারল্যান্ডের দায় ছিল ৫ কোটি ৮৪ লাখ সুইস ফ্রাঁ বা প্রায় ৮৭৬ কোটি টাকা।
সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে দায়ের মধ্যে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর পাওনা, আমনাতকারীদের পাওনা এবং পুঁজিবাজারে বাংলাদেশের নামে বিনিয়োগের অর্থ রয়েছে। এর মধ্যে ৯৫ শতাংশের বেশি বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর পাওনা, যা বাণিজ্য কেন্দ্রিক অর্থ বলে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে থাকা অর্থের একটি অংশ পাচার করা সম্পদ হতে পারে বলে ধারণা রয়েছে। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। কয়েক বছর ধরে সুইজারল্যান্ড বার্ষিক ব্যাংকিং পরিসংখ্যান প্রকাশ করছে। বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বা বিএফআইইউ সুইজারল্যান্ডের এফআইইউর সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগও করেছিল। কিন্তু ব্যক্তির তালিকা সম্বলিত কোনো তথ্য তারা দেয়নি।
সুইজারল্যান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, অবৈধভাবে কেউ অর্থ নিয়ে গেছে এমন প্রমাণ সরবরাহ করলে তারা তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের কোনো নাগরিক বা প্রতিষ্ঠান যদি নিজের বদলে অন্য দেশের নামে অর্থ গচ্ছিত রাখে তাহলে তা সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশের নামে থাকা পরিসংখ্যানের মধ্যে আসেনি। একইভাবে সুইস ব্যাংকে গচ্ছিত রাখা মূল্যবান শিল্পকর্ম, স্বর্ণ বা দুর্লভ সামগ্রীর আর্থিক মূল্যমান হিসাব করে এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। অনেক দেশের নাগরিকই মূল্যবান সামগ্রী সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকের ভল্টে রেখে থাকেন।
বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের শ্রীলঙ্কায় তথ্য-প্রযুক্তি ও ওষুধ খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার উপপররাষ্ট্র ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী আরুন হেমাচন্দ্র এবং উপ-অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী ড. হর্ষনা সুরিয়াপেরুমা।
গতকাল বৃহস্পতিবার কলম্বোয় শ্রীলঙ্কা সফররত ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এই আহ্বান জানান তারা। ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি দেশটির পররাষ্ট্র ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পৃথক দুটি বৈঠকে অংশ নেয়।
বাংলাদেশি ব্যবসায়ী নেতারা শ্রীলঙ্কার উপপররাষ্ট্র ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী আরুন হেমাচন্দ্র এবং উপঅর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী ড. হর্ষনা সুরিয়াপেরুমার সঙ্গে কলম্বোতে তাদের নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের দপ্তরে সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎকালে আরুন হেমাচন্দ্র বলেন, দুই দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হলে আগামীতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। শ্রীলঙ্কা ইতোমধ্যে থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করেছে এবং বাংলাদেশ সঙ্গে সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে।
বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কার সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে এলে সরকার পূর্ণ সহায়তা দেবে।
তিনি বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের তার দেশের সম্ভাবনাময় খাতসমূহে বিনিয়োগের আহ্বান জানান এবং এলক্ষ্যে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।
সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানসমূহে ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ জানান, ভূ-রাজনৈতিক কারণে বর্তমানে বৈশ্বিক বাণিজ্যের ধারা পরিবর্তন হচ্ছে এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, যদিও বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক, তবে প্রযুক্তি, পণ্যের মূল্য সংযোজন এবং উদ্ভাবনের দিক থেকে শ্রীলংকা বেশ এগিয়ে রয়েছে।
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যেও প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। যেখানে দুদেশের বেসরকারিখাতের যৌথ উদ্যোগে ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
তিনি আরো বলেন, বন্ধুত্বপূর্ণ উভয় দেশের মধ্যে একটি এফটিএ স্বাক্ষর হলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং জনগণের মধ্যকার সংযোগ আরও সুদৃঢ় হবে। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি জানান, বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো শ্রীলংকার ব্যবসায়িক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে অত্যন্ত আগ্রহী এবং শ্রীলংকার উদ্যোক্তারাও বাংলাদেশে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, বাংলাদেশ ও শ্রীলংঙ্কার অর্থনীতি প্রায় একই ধাঁচের যেখানে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) বাস্তবিক অর্থে ততটা কার্যকর হবে না। এক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষর হলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরও ত্বরান্বিত হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
ডিসিসিআই’র ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে পৃথক এক বৈঠকে শ্রীলংকার উপ-অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী ড. হর্ষনা সুরিয়াপেরুমা বলেন, আমাদের একসাথে কাজ করার অবারিত সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে তথ্য-প্রযুক্তি ও ডিজিটাল সেবা, ঔষধ, চা, জ্বালানি, আর্থিক সেবা ও পর্যটন খাত যৌথ বিনিয়োগের জন্য প্রচুর সম্ভাবনাময়।
তিনি জানান, শ্রীলংকা ইতোমধ্যেই একটি উচ্চাভিলাষী ডিজিটাল রোডম্যাপ প্রণয়ন করেছে এবং এই পরিকল্পনার অধীনে আগামী দুই বছরের মধ্যে দেশকে একটি পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল রাষ্ট্রে রূপান্তর এবং প্রতিটি সেবা স্বয়ংক্রিয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
তিনি বলেন, শ্রীলংকায় অত্যাধুনিক ডেটা সেন্টার স্থাপনের ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। যেখানে বাংলাদেশের উদ্যোক্তাবৃন্দ এগিয়ে আসতে পারেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের শ্রীলংকার ঔষধ শিল্পে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। যাতে দেশটির স্থানীয় চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।
ডিসিসিআই’র ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী ও সহ-সভাপতি মো. সালিম সোলায়মান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘর্ষ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বক্তব্য আরও কঠোর করার পর মঙ্গলবার ওয়াল স্ট্রিটের শেয়ারবাজারে পতন ঘটে, যা যুদ্ধকে আরও সম্প্রসারণ করার আশঙ্কা তৈরি করেছে।
নিউইয়র্ক থেকে এএফপি এ সংবাদ জানিয়েছে, ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের পঞ্চম দিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প ইরানের নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ দাবি করেন এবং মার্কিন হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত দেন।
ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ সূচক ০.৭ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৪২,২১৫.৮০ পয়েন্টে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ০.৮ শতাংশ কমে ৫,৯৮২.৭২ পয়েন্টে এবং প্রযুক্তি খাতভিত্তিক ন্যাশডাক কম্পোজিট ০.৯ শতাংশ কমে ১৯,৫২১.০৯ পয়েন্টে নেমে আসে।
ইরান-ইসরায়েল সংঘর্ষ এখন বিনিয়োগকারীদের প্রধান উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। একই সময়ে তারা ফেডারেল রিজার্ভের দিকে নজর রাখছে। যা বর্তমানে দুই দিনের আর্থিক নীতিমালা বৈঠকে রয়েছে।
ফেডারেল রিজার্ভ আপাতত সুদের হার অপরিবর্তিত রাখবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে, কারণ, তারা ট্রাম্পের শুল্কের প্রভাবে মুদ্রাস্ফীতির গতিপ্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করছে।
গতকাল বুধবার ফেড তাদের সর্বশেষ অর্থনৈতিক পূর্বাভাস প্রকাশ করবে, যাতে থাকবে প্রবৃদ্ধি, বেকারত্ব এবং মুদ্রাস্ফীতির হালনাগাদ তথ্য।
এদিকে, বিনিয়োগকারীরা দুর্বল অর্থনৈতিক তথ্যের প্রভাবও মূল্যায়ন করছেন। মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের মোট খুচরা বিক্রি এপ্রিলের তুলনায় ০.৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৭১৫.৪ বিলিয়ন ডলারে। এই তথ্য ইঙ্গিত দেয় যে, এপ্রিলে শুল্ক বৃদ্ধির আশঙ্কায় যে ভোক্তারা আগেভাগে পণ্য কিনে নিয়েছিলেন, মে মাসে সেই কেনাকাটার গতি কমে গেছে।
এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচকের ১১টি খাতের মধ্যে ১০টিতেই দরপতন হয়েছে। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল জ্বালানি খাত, যা তেলের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে ঊর্ধ্বমুখী ছিল।
প্রতিরক্ষা খাতভুক্ত কোম্পানিগুলোও লাভ করেছে। লকহিড মার্টিন ২.৬ শতাংশ এবং নর্থরপ গ্রুমান ১.২ শতাংশ বেড়েছে।
তরুণদের কাছে জনপ্রিয় টেক ব্র্যান্ড রিয়েলমি কোম্পানির স্মার্টফোনের খুচরা যন্ত্রাংশ ক্রয়ে সম্প্রতি ১০ শতাংশ ডিসকাউন্ট ঘোষণা করেছে। রিয়েলমি সার্ভিস ডে উপলক্ষ্যে এই ক্যাম্পেইনের অফার চলবে ১৮ জুন পর্যন্ত।
এ ক্যাম্পেইন চলাকালে ইউজাররা সকল অ্যাকসেসরিজ ও সেফগার্ড সার্ভিসে ১০ শতাংশ ডিসকাউন্ট লুফে নিতে পারবেন। শুধুমাত্র দেশজুড়ে অবস্থিত রিয়েলমি’র অথরাইজড সার্ভিস সেন্টারগুলো থেকে এই অফার পেতে পারবেন গ্রাহকরা।
এছাড়াও- স্মার্টফোনের ওয়ারেন্টি বিষয়ক সার্ভিস, ক্লিনিং ও মেইনটেন্যান্স, সফটওয়্যার আপগ্রেডেশন, প্রটেক্টিভ পেপার ফিল্মস ও প্রটেক্টিভ ফোন কেসে থাকবে বিভিন্ন ছাড়।
এখানে উল্লেখ্য যে- ঘোষিত অফারটি শুধুমাত্র রিয়েলমি’র অফিসিয়াল স্মার্টফোনগুলোর জন্যই প্রযোজ্য।
এসব অফার ছাড়াও- রিয়েলমি অথরাইজড সার্ভিস সেন্টারে ডিভাইস পাঠানোর ক্ষেত্রে গ্রাহকরা তাদের রিয়েলমি অথরাইজড কালেকশন পয়েন্টস ব্যবহার করতে পারবেন।
অফার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ইউজাররা ফেসবুকে রিয়েলমি’র অফিসিয়াল আফটার-সেল সার্ভিস পেজ "realme Service BD" ভিজিট করতে পারেন।
তাই ভিজিট করুন আপনার কাছেরই কোনো আউটলেট এবং ক্যাম্পেইন শেষের আগেই ডিসকাউন্ট উপভোগ করুন
১৬ জুন, ২০২৫ তারিখে ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি. এর নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদের ৪০তম সভা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, গুলশান-১, ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব মুঃ ফরীদ উদ্দীন আহমদ। সভায় পর্ষদের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মোঃ হুমায়ুন কবীর, স্বতন্ত্র পরিচালক ড. শহিদুল ইসলাম জাহীদ, জনাব মোহাম্মদ সাইফুল আলম এবং ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও জনাব মোঃ হুমায়ুন কবির উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক সর্বজনাব শফিউদ্দিন আহমেদ এবং মোহাম্মদ ইকবাল কার্যপোলক্ষ্যে সভায় যোগদান করেন। সভায় ব্যাংকের ব্যবসা বাণিজ্য, আমানত ও রেমিট্যান্স সংগ্রহ বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ আদায়ে বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়।
জনতা ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান ১৫ জুন রোববার জনতা ব্যাংক স্টাফ কলেজ ঢাকা কর্তৃক আয়োজিত ২৫ (পঁচিশ) দিন ব্যাপী ফাউন্ডেশন কোর্স ফর অফিসার্স (ব্যাচ ০৫/২০২৫) শীর্ষক প্রশিক্ষণ কোর্স উদ্বোধন করেন। উক্ত প্রশিক্ষণ কোর্সে জনতা ব্যাংকের ৫০ জন সিনিয়র অফিসার অংশগ্রহণ করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জনতা ব্যাংক স্টাফ কলেজের ডিজিএম-স্টাফ কলেজ ইনচার্জসহ অন্যান্য নির্বাহী ও অনুষদ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় উত্থান হয়েছে, দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির।
সারাদিনের লেনদেনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৯ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরিয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১৬ এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১৫ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১৫ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩৬ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৪৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই দাম বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির। বিশেষ করে লভ্যাংশ দেওয়া ভালো কোম্পানির এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ১৭৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪৬ কোম্পানির শেয়ারমূল্য।
ডিএসই ব্লক মার্কেটে ২৫ কোম্পানির ৪০ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। লাভেলো সর্বোচ্চ ১৭ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
গতদিনের তুলনায় ডিএসইতে লেনদেন প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। সারাদিনে ৪১৭ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ২৬৩ কোটি টাকা।
৯.৮৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষে ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স এবং সাড়ে ৩ শতাংশ দাম কমে তলানিতে শ্যামপুর সুগ্যার মিল।
চট্টগ্রামেও উত্থান
ঢাকার মতো সূচক বেড়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই), সারাদিনের লেনদেনে সার্বিক সূচক বেড়েছে ৬০ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে ১১৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ৫৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৯ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা এর আগের সবশেষ কার্যদিবসে ছিল ১০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে মাগুরা মাল্টিপ্লেক্স এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইসলামী ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট।
মন্তব্য